সারাংশ : খেয়া কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত চৈতালি কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। রবীন্দ্রনাথ পতিসরের নাগর নদী ভ্রমণকালে থাকা অবস্থায় এই কবিতা রচনা করেছিলেন। কবি নদীর তীরে গড়ে ওঠা সরল গ্রাম্য জীবনধারা এই কবিতার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। খেয়া রবীন্দ্রনাথের একটি উল্লেখযোগ্য কবিতা। এই কবিতায় সভ্যতার দুইটিRead more
সারাংশ :
খেয়া কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত চৈতালি কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। রবীন্দ্রনাথ পতিসরের নাগর নদী ভ্রমণকালে থাকা অবস্থায় এই কবিতা রচনা করেছিলেন। কবি নদীর তীরে গড়ে ওঠা সরল গ্রাম্য জীবনধারা এই কবিতার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
খেয়া রবীন্দ্রনাথের একটি উল্লেখযোগ্য কবিতা। এই কবিতায় সভ্যতার দুইটি দিক; কোলাহল মগ্ন নগর এবং শান্তি প্রবন গ্রামাঞ্চলের জীবনের চরিত্র ফুটে উঠেছে।
কবিতার প্রথমেই সহজ সরল গ্রামাঞ্চলের শান্তিপ্রিয় মানুষের জীবনের বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। নদীর দুই তীরে দুইটি গ্রাম কিন্তু এই দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক, জানাশোনা। নিত্যদিন ওরা খেয়ার মাধ্যমে এক গ্রাম হইতে অন্য গ্রামে আসা-যাওয়া করে। তাই খেয়ে নৌকা হয়ে উঠেছে দুই পাড়ের মানুষের আত্মীয়তার অনন্য বাহন।
গ্রামের মানুষ গুলি এতই সহজ যে ওরা বাইরের জগৎ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। বহির্বিশ্বে কত না যুদ্ধ-বিগ্রহ লড়াই অবিরাম হয়ে যাচ্ছে আর কত না ইতিহাস নিত্যদিনে গড়ে উঠছে। ক্ষমতার লড়াই এর ফলে হচ্ছে রক্তপাত, যুদ্ধ। আর সেই যুদ্ধে কেহ বা ক্ষমতা অর্জন করছে আর কেহ ক্ষমতাচ্যুত হয়ে যাচ্ছে।
রক্তপ্রবাহের মাঝে ফেনাইয়া উঠে সোনার মুকুট কত ফুটে আর টুটে
অর্থাৎ কত রাজা বা ক্ষমতাবান সরকার যুদ্ধে পরাজিত হচ্ছে আর যুদ্ধে জয় লাভ করছে। এ সবকিছুই যেন এই গ্রামের মানুষদের ছুইতে পারে নাই।
মানুষের সভ্যতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে সৃষ্টি হচ্ছে নতুনত্বের। বিজ্ঞানের অগ্রগতি মানব সভ্যতাকে নিয়ে এসেছে এক নতুন স্থানে। মানুষের মনে তৃষ্ণা জেগেছে না জানাকে জানার, অসম্ভবকে সম্ভব করার। তাই আবিষ্কৃত হচ্ছে নতুন পদ্ধতি নতুন প্রযুক্তি। আর তার সঙ্গে উঠছে অনেক হলাহল অর্থাৎ বিশৃঙ্খলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কিন্তু নদীর এই দুই তীরবর্তী গ্রাম তার ব্যতিক্রম। এখানে নেই কোনো নতুনত্ব, নেই কোনো অগ্রগতি, নেই কোন বহির্বিশ্বের খবর।
এই খেয়া চিরদিন চলে নদীস্রোতে
তাদের সরল জীবনযাত্রায় কোন বাধাপ্রাপ্ত হয় নাই। গ্রামের দুই পারের মানুষের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব-সংঘাত ঘটেনি বরং ওদের মধ্যে রয়েছে মিলন, ভালোবাসা এবং আদান প্রদান। তাদের জীবনের নদীস্রোত নদীর খেয়ার মত চলে যাচ্ছে অবলীলায়।
মূলভাব :
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই কবিতার মাধ্যমে নগরজীবনের বা উন্নত সভ্যতার অন্ধকার দিক কে তুলে ধরেছেন। যদিও নগরজীবন বা আধুনিক সভ্যতা গ্রামাঞ্চলের মানুষ থেকে অনেক উন্নত কিন্তু তাদের মধ্যে মিল নেই, মায়া নেই বরং সংঘাত এবং দ্বন্দ্বে পরিপূর্ণ। আর তার বিপরীতে গ্রাম্য জীবনযাত্রা অনুন্নত হওয়া সত্বেও তাদের মধ্যে রয়েছে নিবিড় মিলন, ভালোবাসা একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা।
Helaye matha dater aage
Mishta hashi tani
Bolite ami paribo na to
bhadrotar bani
Ucchoshito rakta aashi
Bakkhatal feliche grashi
prokashhin chintarashi
Koriche hanahani.
Kothao jadi chutite pai
bachiya jai tabe-
Bhovyotar gandimajhe
Shanti nahi mani
ছোটোবড়ো- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখনো তো বড়ো হই নি আমি, ছোটো আছি ছেলেমানুষ ব'লে। দাদার চেয়ে অনেক মস্ত হব বড়ো হয়ে বাবার মতো হলে। দাদা তখন পড়তে যদি না চায়, পাখির ছানা পোষে কেবল খাঁচায়, তখন তারে এমনি বকে দেব! বলব, "তুমি চুপটি ক'রে পড়ো।' বলব, "তুমি ভারি দুষ্টু ছেলে' -- যখন হব বাবার মতো বড়ো। তখন নিয়ে দাদার খাঁRead more
ছোটোবড়ো- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
এখনো তো বড়ো হই নি আমি,
ছোটো আছি ছেলেমানুষ ব’লে।
দাদার চেয়ে অনেক মস্ত হব
বড়ো হয়ে বাবার মতো হলে।
দাদা তখন পড়তে যদি না চায়,
পাখির ছানা পোষে কেবল খাঁচায়,
তখন তারে এমনি বকে দেব!
বলব, “তুমি চুপটি ক’রে পড়ো।’
বলব, “তুমি ভারি দুষ্টু ছেলে’ —
যখন হব বাবার মতো বড়ো।
তখন নিয়ে দাদার খাঁচাখানা
ভালো ভালো পুষব পাখির ছানা।
সাড়ে দশটা যখন যাবে বেজে
নাবার জন্যে করব না তো তাড়া।
ছাতা একটা ঘাড়ে ক’রে নিয়ে
চটি পায়ে বেড়িয়ে আসব পাড়া।
গুরুমশায় দাওয়ায় এলে পরে
চৌকি এনে দিতে বলব ঘরে,
তিনি যদি বলেন “সেলেট কোথা?
দেরি হচ্ছে, বসে পড়া করো’
আমি বলব, “খোকা তো আর নেই,
হয়েছি যে বাবার মতো বড়ো।’
গুরুমশায় শুনে তখন কবে,
“বাবুমশায়, আসি এখন তবে।’
খেলা করতে নিয়ে যেতে মাঠে
ভুলু যখন আসবে বিকেল বেলা,
আমি তাকে ধমক দিয়ে কব,
“কাজ করছি, গোল কোরো না মেলা।’
রথের দিনে খুব যদি ভিড় হয়
একলা যাব, করব না তো ভয় —
মামা যদি বলেন ছুটে এসে
“হারিয়ে যাবে, আমার কোলে চড়ো’
বলব আমি, “দেখছ না কি মামা,
হয়েছি যে বাবার মতো বড়ো।’
দেখে দেখে মামা বলবে, “তাই তো,
খোকা আমার সে খোকা আর নাই তো।’
আমি যেদিন প্রথম বড়ো হব
মা সেদিনে গঙ্গাস্নানের পরে
আসবে যখন খিড়কি-দুয়োর দিয়ে
ভাববে “কেন গোল শুনি নে ঘরে।’
তখন আমি চাবি খুলতে শিখে
যত ইচ্ছে টাকা দিচ্ছি ঝিকে,
মা দেখে তাই বলবে তাড়াতাড়ি,
“খোকা, তোমার খেলা কেমনতরো।’
আমি বলব, “মাইনে দিচ্ছি আমি,
হয়েছি যে বাবার মতো বড়ো।
ফুরোয় যদি টাকা, ফুরোয় খাবার,
যত চাই মা, এনে দেব আবার।’
আশ্বিনেতে পুজোর ছুটি হবে,
মেলা বসবে গাজনতলার হাটে,
বাবার নৌকো কত দূরের থেকে
লাগবে এসে বাবুগঞ্জের ঘাটে।
বাবা মনে ভাববে সোজাসুজি,
খোকা তেমনি খোকাই আছে বুঝি,
ছোটো ছোটো রঙিন জামা জুতো
কিনে এনে বলবে আমায় “পরো’।
আমি বলব, “দাদা পরুক এসে,
আমি এখন তোমার মতো বড়ো।
দেখছ না কি যে ছোটো মাপ জামার–
পরতে গেলে আঁট হবে যে আমার।’
Ekhono to boro hoini ami
Choto aachi chelemanush bolo.
Dadar cheye onek mosto hobo
Boro hoye babar moto hole.
Dada takhan jodi porte na chay
Pakhir chana poshe kebol khachay,
Takhan tare emni boke debo!
Bolbo, “Tumi chupti kore poro”
Bolbo, “tumi bhari dusto chele”
Jakhan hobo babar moto boro
Takhan niye dadar khachakhana
Valo valo pushbo pakhir chana
Share dashta jakhan jabe beje
Nabar jonno korbo na to tara.
Chata ekta ghare kore niye
Choti paye beriye aashbo para
Gurumoshay daway ele pore
chouki ene dite bolobo ghore,
Tini jadi bolen “selet kutha”?
Deri hocche, “boshe pora koro.
Amo bolbo, “khoka to ar nei,
hoyechi je babar moto boro”
Gurumoshay shune takhan kobe,
“babumoshay, aashi ekhon tobe.
Khela korte niye jete mathe
Bhulu jakhan aashbe bikelbela,
Ami take dhamak diye kobo,
“kaj korchi, gol koro na mela”
rather din khub bhir hoy
Ekla jabo korbo na to bhoy
Mama jadi bolen chute eshe
“hariye jabe, amar kole choro”
Bolbo ami, “Dekhcho na ki mama,
Hoyechi je babar moto boro”
dekhe dekhe mama bolbe, “tai to,
Khoka amar she khoka aar nai to”
Ami jedin prothom boro hobo
Maa shedine gongasnaner pore
Aashbe jakhan Khirki-duwar diye
Bhabbe “Keno gol shuni ne ghore”
takhan ami chabi khulte shikhe
joto icche taka dicchi jhike,
Maa dekhe tai bolbe taratari,
“khoka, tomar khela kemontoro”
Ami bolbo, maine dicchi ami,
Hoyechi je babar moto boro
Furoy jadi taka, furoy khabar,
Jata chai maa, ene debo abar
Aashinete pujor chuti hobe,
Mela boshbe gajantalar hate,
Babar nouko koto durer theke
Lagbe eshe babuganjer ghate.
Baba mone bhabbe shujashuji,
Khoka temni khoka i aache bujhi,
Choto choto rangin jama juto
Kine ene bolbe amay “porp”
Ami bolbo, “dada paruk eshe,
Ami ekhon tumar moto boro.
Dekhcho na ki je choto map jamar-
porte gele aat hobe je amar.
একই অর্থে ব্যবহৃত বিভিন্ন শব্দকে সমার্থক শব্দ বলে। দিন এর বিভিন্ন সমার্থক শব্দ হচ্ছে। দিবস- ৫রা সেপ্টেম্বর কে শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করা হয়। দিবা- দিবা নিশি আমি আকুল চিত্তে ভাবনায় মত্ত থাকি। অহ- অহর্নিশি তুমি কোথায় থাক আমারে ছাড়িয়া। বার- আজ কি বার ? রোজ- আমি রোজ বাজারে যাই। অষ্টপ্রহর- অষ্টপ্রহরRead more
একই অর্থে ব্যবহৃত বিভিন্ন শব্দকে সমার্থক শব্দ বলে।
দিন এর বিভিন্ন সমার্থক শব্দ হচ্ছে। দিবস– ৫রা সেপ্টেম্বর কে শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করা হয়। দিবা– দিবা নিশি আমি আকুল চিত্তে ভাবনায় মত্ত থাকি। অহ– অহর্নিশি তুমি কোথায় থাক আমারে ছাড়িয়া। বার– আজ কি বার ? রোজ– আমি রোজ বাজারে যাই। অষ্টপ্রহর– অষ্টপ্রহর মানে একদিন যেহেতু এক প্রহর তিন ঘণ্টা। অহ্ন– দিনমান–
Days- দিন/কয়েকদিন , to go- বাকি Days to go- কয়েকদিন বাকি , হইতে অনেক বাকি For example- Days to go- It's a mega project, its complication is days to go matter. Days to go- I am excited, my vacation is just two days to go.
Days- দিন/কয়েকদিন , to go- বাকি
Days to go- কয়েকদিন বাকি , হইতে অনেক বাকি
For example-
Days to go- It’s a mega project, its complication is days to go matter.
Days to go- I am excited, my vacation is just two days to go.
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মদিন নিয়ে অনেক কবিতা লিখেছেন। তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থের নাম "জন্মদিনে" সেই কাব্যে রয়েছে ২৯ টি কবিতা। এখানে তিনটি কবিতা দেয়া হলো যেগুলি তার অন্যান্য কাব্যের অন্তর্গত। জন্মদিন (তোমরা রচিলে যারে) কাব্যগ্রন্থ-নবজাতক জন্মদিন (আজ মম জন্মদিন। সদ্যই প্রাণের প্রান্তপথে) কাব্যগ্রন্থ-সেঁজুতিRead more
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মদিন নিয়ে অনেক কবিতা লিখেছেন। তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থের নাম “জন্মদিনে” সেই কাব্যে রয়েছে ২৯ টি কবিতা।
এখানে তিনটি কবিতা দেয়া হলো যেগুলি তার অন্যান্য কাব্যের অন্তর্গত।
তোমরা রচিলে যারে
নানা অলংকারে
তারে তো চিনি নে আমি,
চেনেন না মোর অন্তর্যামী
তোমাদের স্বাক্ষরিত সেই মোর নামের প্রতিমা।
বিধাতার সৃষ্টিসীমা
তোমাদের দৃষ্টির বাহিরে।
কালসমুদ্রের তীরে
বিরলে রচেন মূর্তিখানি
বিচিত্রিত রহস্যের যবনিকা টানি
রূপকার আপন নিভৃতে।
বাহির হইতে
মিলায়ে আলোক অন্ধকার
কেহ এক দেখে তারে, কেহ দেখে আর।
খণ্ড খণ্ড রূপ আর ছায়া,
আর কল্পনার মায়া
আর মাঝে মাঝে শূন্য, এই নিয়ে পরিচয় গাঁথে
অপরিচয়ের ভূমিকাতে।
সংসারখেলার কক্ষে তাঁর
যে-খেলেনা রচিলেন মূর্তিকার
মোরে লয়ে মাটিতে আলোতে,
সাদায় কালোতে,
কে না জানে সে ক্ষণভঙ্গুর
কালের চাকার নিচে নিঃশেষে ভাঙিয়া হবে চুর।
সে বহিয়া এনেছে যে-দান
সে করে ক্ষণেকতরে অমরের ভান–
সহসা মুহূর্তে দেয় ফাঁকি,
মুঠি-কয় ধূলি রয় বাকি,
আর থাকে কালরাত্রি সব-চিহ্ন-ধুয়ে-মুছে-ফেলা।
তোমাদের জনতার খেলা
রচিল যে পুতুলিরে
সে কি লুব্ধ বিরাট ধূলিরে
এড়ায়ে আলোতে নিত্য রবে।
এ কথা কল্পনা কর যবে
তখন আমার
আপন গোপন রূপকার
হাসেন কি আঁখিকোণে,
সে কথাই ভাবি আজ মনে
জন্মদিন
দৃষ্টিজালে জড়ায় ওকে হাজারখানা চোখ,
ধ্বনির ঝড়ে বিপন্ন ওই লোক।
জন্মদিনের মুখর তিথি যারা ভুলেই থাকে,
দোহাই ওগো, তাদের দলে লও এ মানুষটাকে–
সজনে পাতার মতো যাদের হালকা পরিচয়,
দুলুক খসুক শব্দ নাহি হয়।
সবার মাঝে পৃথক ও যে ভিড়ের কারাগারে
খ্যাতি-বেড়ির নিরন্ত ঝংকারে।
সবাই মিলে নানা রঙে রঙিন করছে ওরে,
নিলাজ মঞ্চে রাখছে তুলে ধরে,
আঙুল তুলে দেখাচ্ছে দিনরাত;
কোথায় লুকোয় ভেবে না পায়, আড়াল ভূমিসাৎ।
দাও-না ছেড়ে ওকে
স্নিগ্ধ -আলো শ্যামল-ছায়া বিরল-কথার লোকে,
বেড়াহীন বিরাট ধূলি-‘পর,
সেই যেখানে মহাশিশুর আদিম খেলাঘর।
ভোরবেলাকার পাখির ডাকে প্রথম খেয়া এসে
ঠেকল যখন সব-প্রথমের চেনাশোনার দেশে,
নামল ঘাটে যখন তারে সাজ রাখে নি ঢেকে,
ছুটির আলো নগ্ন গায়ে লাগল আকাশ থেকে–
যেমন করে লাগে তরীর পালে,
যেমন লাগে অশোক গাছের কচি পাতার ডালে।
নাম ভোলা ফুল ফুটল ঘাসে ঘাসে
সেই প্রভাতের সহজ অবকাশে।
ছুটির যজ্ঞে পুষ্পহোমে জাগল বকুলশাখা,
ছুটির শূন্যে ফাগুনবেলা মেলল সোনার পাখা।
ছুটির কোণে গোপনে তার নাম
আচম্কা সেই পেয়েছিল মিষ্টিসুরের দাম;
কানে কানে সে নাম ডাকার ব্যথা উদাস করে
চৈত্রদিনের স্তব্ধ দুইপ্রহরে।
আজ সবুজ এই বনের পাতায় আলোর ঝিকিঝিকি
সেই নিমেষের তারিখ দিল লিখি।
তাহারে ডাক দিয়েছিল পদ্মানদীর ধারা,
কাঁপন-লাগা বেণুর শিরে দেখেছে শুকতারা;
কাজল-কালো মেঘের পুঞ্জ সজল সমীরণে
নীল ছায়াটি বিছিয়েছিল তটের বনে বনে;
ও দেখেছে গ্রামের বাঁকা বাটে
কাঁখে কলস মুখর মেয়ে চলে স্নানের ঘাটে;
সর্ষেতিসির খেতে
দুইরঙা সুর মিলেছিল অবাক আকাশেতে;
তাই দেখেছে চেয়ে চেয়ে অস্তরবির রাগে–
বলেছিল, এই তো ভালো লাগে।
সেই-যে ভালো-লাগাটি তার যাক সে রেখে পিছে,
কীর্তি যা সে গেঁথেছিল হয় যদি হোক মিছে,
না যদি রয় নাই রহিল নাম–
এই মাটিতে রইল তাহার বিস্মিত প্রণাম।
জন্মদিন
আজ মম জন্মদিন। সদ্যই প্রাণের প্রান্তপথে
ডুব দিয়ে উঠেছে সে বিলুপ্তির অন্ধকার হতে
মরণের ছাড়পত্র নিয়ে। মনে হতেছে কী জানি
পুরাতন বৎসরের গ্রন্থিবাঁধা জীর্ণ মালাখানি
সেথা গেছে ছিন্ন হয়ে; নবসূত্রে পড়ে আজি গাঁথা
নব জন্মদিন। জন্মোৎসবে এই-যে আসন পাতা
হেথা আমি যাত্রী শুধু, অপেক্ষা করিব, লব টিকা
মৃত্যুর দক্ষিণ হস্ত হতে, নূতন অরুণলিখা
যবে দিবে যাত্রার ইঙ্গিত।
আজ আসিয়াছে কাছে
জন্মদিন মৃত্যুদিন, একাসনে দোঁহে বসিয়াছে,
দুই আলো মুখোমুখি মিলিছে জীবনপ্রান্তে মম
রজনীর চন্দ্র আর প্রত্যুষের শুকতারাসম–
এক মন্ত্রে দোঁহে অভ্যর্থনা।
প্রাচীন অতীত, তুমি
নামাও তোমার অর্ঘ্য; অরূপ প্রাণের জন্মভূমি,
উদয়শিখরে তার দেখো আদিজ্যোতি। করো মোরে
আশীর্বাদ, মিলাইয়া যাক তৃষাতপ্ত দিগন্তরে
মায়াবিনী মরীচিকা। ভরেছিনু আসক্তির ডালি
কাঙালের মতো; অশুচি সঞ্চয়পাত্র করো খালি,
ভিক্ষামুষ্টি ধূলায় ফিরায়ে লও, যাত্রাতরী বেয়ে
পিছু ফিরে আর্ত চক্ষে যেন নাহি দেখি চেয়ে চেয়ে
জীবনভোজের শেষ উচ্ছিষ্টের পানে।
হে বসুধা,
নিত্য নিত্য বুঝায়ে দিতেছ মোরে– যে তৃষ্ণা, যে ক্ষুধা
তোমার সংসাররথে সহস্রের সাথে বাঁধি মোরে
টানায়েছে রাত্রিদিন স্থুল সূক্ষ্ম নানাবিধ ডোরে
নানা দিকে নানা পথে, আজ তার অর্থ গেল কমে
ছুটির গোধূলিবেলা তন্দ্রালু আলোকে। তাই ক্রমে
ফিরায়ে নিতেছ শক্তি, হে কৃপণা, চক্ষুকর্ণ থেকে
আড়াল করিছ স্বচ্ছ আলো; দিনে দিনে টানিছে কে
নিষ্প্রভ নেপথ্যপানে। আমাতে তোমার প্রায়োজন
শিথিল হয়েছে, তাই মূল্য মোর করিছ হরণ,
দিতেছ ললাটপটে বর্জনের ছাপ। কিন্তু জানি,
তোমার অবজ্ঞা মোরে পারে না ফেলিতে দূরে টানি।
তব প্রয়োজন হতে অতিরিক্ত যে মানুষ তারে
দিতে হবে চরম সম্মান তব শেষ নমস্কারে।
যদি মোরে পঙ্গু কর, যদি মোরে কর অন্ধপ্রায়,
যদি বা প্রচ্ছন্ন কর নিঃশক্তির প্রদোষচ্ছায়ায়,
বাঁধ বার্ধক্যের জালে, তবু ভাঙা মন্দিরবেদীতে
প্রতিমা অক্ষুণ্ন রবে সগৌরবে; তারে কেড়ে নিতে
শক্তি নাই তব।
ভাঙো ভাঙো, উচ্চ করো ভগ্নস্তূপ,
জীর্ণতার অন্তরালে জানি মোর আনন্দস্বরূপ
রয়েছে উজ্জ্বল হয়ে। সুধা তারে দিয়েছিল আনি
প্রতিদিন চতুর্দিকে রসপূর্ণ আকাশের বাণী;
প্রত্যুত্তরে নানা ছন্দে গেয়েছে সে “ভালোবাসিয়াছি’।
সেই ভালোবাসা মোরে তুলেছে স্বর্গের কাছাকাছি
ছাড়ায়ে তোমার অধিকার। আমার সে ভালোবাসা
সব ক্ষয়ক্ষতিশেষে অবশিষ্ট রবে; তার ভাষা
হয়তো হারাবে দীপ্তি অভ্যাসের ম্লানস্পর্শ লেগে,
তবু সে অমৃতরূপ সঙ্গে রবে যদি উঠি জেগে
মৃত্যুপরপারে। তারি অঙ্গে এঁকেছিল পত্রলিখা
আম্রমঞ্জরীর রেণু, এঁকেছে পেলব শেফালিকা
সুগন্ধি শিশিরকণিকায়; তারি সূক্ষ্ম উত্তরীতে
গেঁথেছিল শিল্পকারু প্রভাতের দোয়েলের গীতে
চকিত কাকলিসূত্রে; প্রিয়ার বিহ্বল স্পর্শখানি
সৃষ্টি করিয়াছে তার সর্বদেহে রোমাঞ্চিত বাণী,
নিত্য তাহা রয়েছে সঞ্চিত। যেথা তব কর্মশালা
সেথা বাতায়ন হতে কে জানি পরায়ে দিত মালা
আমার ললাট ঘেরি সহসা ক্ষণিক অবকাশে,
সে নহে ভৃত্যের পুরস্কার; কী ইঙ্গিতে কী আভাসে
মুহূর্তে জানায়ে চলে যেত অসীমের আত্মীয়তা
অধরা অদেখা দূত, বলে যেত ভাষাতীত কথা
অপ্রয়োজনের মানুষেরে।
সে মানুষ, হে ধরণী,
তোমার আশ্রয় ছেড়ে যাবে যবে, নিয়ো তুমি গণি
যা-কিছু দিয়েছ তারে, তোমার কর্মীর যত সাজ,
তোমার পথের যে পাথেয়, তাহে সে পাবে না লাজ;
রিক্ততায় দৈন্য নহে। তবু জেনো অবজ্ঞা করি নি
তোমার মাটির দান, আমি সে মাটির কাছে ঋণী–
জানায়েছি বারংবার, তাহারি বেড়ার প্রান্ত হতে
অমূর্তের পেয়েছি সন্ধান। যবে আলোতে আলোতে
লীন হত দড়যবনিকা, পুষ্পে পুষ্পে তৃণে তৃণে
রূপে রসে সেই ক্ষণে যে গূঢ় রহস্য দিনে দিনে
হত নিঃশ্বসিত, আজি মর্তের অপর তীরে বুঝি
চলিতে ফিরানু মুখ তাহারি চরম অর্থ খুঁজি।
যবে শান্ত নিরাসক্ত গিয়েছি তোমার নিমন্ত্রণে
তোমার অমরাবতী সুপ্রসন্ন সেই শুভক্ষণে
মুক্তদ্বার; বুভুক্ষুর লালসারে করে সে বঞ্চিত;
তাহার মাটির পাত্রে যে অমৃত রয়েছে সঞ্চিত
নহে তাহা দীন ভিক্ষু লালায়িত লোলুপের লাগি।
ইন্দ্রের ঐশ্বর্য নিয়ে হে ধরিত্রী, আছ তুমি জাগি
ত্যাগীরে প্রত্যাশা করি, নির্লোভেরে সঁপিতে সম্মান,
দুর্গমের পথিকেরে আতিথ্য করিতে তব দান
বৈরাগ্যের শুভ্র সিংহাসনে। ক্ষুব্ধযারা, লুব্ধ যারা,
মাংসগন্ধে মুগ্ধ যারা, একান্ত আত্মার দৃষ্টিহারা
শ্মশানের প্রান্তচর, আবর্জনাকুণ্ড তব ঘেরি
বীভৎস চীৎকারে তারা রাত্রিদিন করে ফেরাফেরি,
নির্লজ্জ হিংসায় করে হানাহানি।
শুনি তাই আজি
মানুষ-জন্তুর হুহুংকার দিকে দিকে উঠে বাজি।
তবু যেন হেসে যাই যেমন হেসেছি বারে বারে
পণ্ডিতের মূঢ়তায়, ধনীর দৈন্যের অত্যাচারে,
সজ্জিতের রূপের বিদ্রূপে। মানুষের দেবতারে
ব্যঙ্গ করে যে অপদেবতা বর্বর মুখবিকারে
তারে হাস্য হেনে যাব, বলে যাব, “এ প্রহসনের
মধ্য-অঙ্কে অকস্মাৎ হবে লোপ দুষ্ট স্বপনের;
নাট্যের কবররূপে বাকি শুধু রবে ভস্মরাশি
দগ্ধশেষ মশালের, আর অদৃষ্টের অট্টহাসি।’
বলে যাব, “দ্যূতচ্ছলে দানবের মূঢ় অপব্যয়
গ্রন্থিতে পারে না কভু ইতিবৃত্তে শাশ্বত অধ্যায়।’
বৃথা বাক্য থাক্। তব দেহলিতে শুনি ঘন্টা বাজে,
শেষপ্রহরের ঘন্টা; সেই সঙ্গে ক্লান্ত বক্ষোমাঝে
শুনি বিদায়ের দ্বার খুলিবার শব্দ সে অদূরে
ধ্বনিতেছে সূর্যাস্তের রঙে রাঙা পূরবীর সুরে।
জীবনের স্মৃতিদীপে আজিও দিতেছে যারা জ্যোতি
সেই ক’টি বাতি দিয়ে রচিব তোমার সন্ধ্যারতি
সপ্তর্ষির দৃষ্টির সম্মুখে; দিনান্তের শেষ পলে
রবে মোর মৌন বীণা মূর্ছিয়া তোমার পদতলে।
আর রবে পশ্চাতে আমার, নাগকেশরের চারা
ফুল যার ধরে নাই, আর রবে খেয়াতরীহারা
এ পারের ভালোবাসা– বিরহস্মৃতির অভিমানে
ক্লান্ত হয়ে রাত্রিশেষে ফিরিবে সে পশ্চাতের পানে।
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান জয় গোস্বামী অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো পায়ে আমি এখন হাজার হাতে পায়ে এগিয়ে আসি , উঠে দাড়াই হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়াই গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে গান তো জানি একটা দুটো আঁকড়ে ধরে সে-খরকুটো রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে মাথায় কত শকুন বা চিল আমার শুধু একটা কোকিল গান-বাঁধবে সহস্র উপাRead more
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান
জয় গোস্বামী
অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো পায়ে
আমি এখন হাজার হাতে পায়ে
এগিয়ে আসি , উঠে দাড়াই
হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়াই
গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে
গান তো জানি একটা দুটো
আঁকড়ে ধরে সে-খরকুটো
রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে
মাথায় কত শকুন বা চিল
আমার শুধু একটা কোকিল
গান-বাঁধবে সহস্র উপায়ে
অস্ত্র রাখো অস্ত্র ফ্যালো পায়ে
বর্ম খুলে দেখো আদুরে গায়ে
গান দাঁড়াল ঋষি বালক
মাথায় গোঁজা ময়ূর পালক
তোমায় নিয়ে বেড়াবে গান
নদীতে , দেশে গায়ে
অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো গানের দুটি পায়ে
In English Script:
Aster biruddhe gan
Joy Goswami
Astra felo, Astra rakho paye
Ami ekhon hajar hate paye
Egiye aashi, Uthe darai
hat nariye bulet tarai
ganer barma aaj porechi paye.
gan to jani ekta duto
Akre dhore she-kharkuto
rakta muchi sudhu ganer gaye
mathay koto shakun ba chil
Amar sudhu ekta Kukil
Gaan badhbe shohosro upaye.
একটি সংলাপ - সুভাষ মুখোপাধ্যায় মেয়ে: তুমি কি চাও আমার ভালবাসা ? ছেলে: হ্যাঁ, চাই ! মেয়ে: গায়ে কিন্তু তার কাদা মাখা ! ছেলে: যেমন তেমনিভাবেই চাই । মেয়ে: আমার আখেরে কী হবে বলা হোক । ছেলে: বেশ! মেয়ে: আর আমি জিগ্যেস করতে চাই । ছেলে: করো । মেয়ে: ধরো’ আমি কড়া নাড়লাম । ছেলে: আমি হাত ধরে ভেতরে নিয়ে যাবRead more
একটি সংলাপ – সুভাষ মুখোপাধ্যায়
মেয়ে: তুমি কি চাও আমার ভালবাসা ?
ছেলে: হ্যাঁ, চাই !
মেয়ে: গায়ে কিন্তু তার কাদা মাখা !
ছেলে: যেমন তেমনিভাবেই চাই ।
মেয়ে: আমার আখেরে কী হবে বলা হোক ।
ছেলে: বেশ!
মেয়ে: আর আমি জিগ্যেস করতে চাই ।
ছেলে: করো ।
মেয়ে: ধরো’ আমি কড়া নাড়লাম ।
ছেলে: আমি হাত ধরে ভেতরে নিয়ে যাব !
মেয়ে: ধরো’ তোমাকে তলব করলাম ।
ছেলে: আমি হুজুরে হাজির হব ।
মেয়ে: তাতে যদি বিপদ ঘটে ?
ছেলে: আমি সে বিপদে ঝাঁপ দেব ।
মেয়ে: যদি তোমার সঙ্গে প্রতারণা করি?
ছেলে: আমি ক্ষমা করে দেব ।
মেয়ে: তোমাকে তর্জনী তুলে বলব, গান গাও ।
ছেলে: আমি গাইব ।
মেয়ে: বলব,কোনো বন্ধু এলে তার মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দাও।
ছেলে: বন্ধ করে দেব ।
মেয়ে: তোমাকে বলব, প্রাণ নাও ।
ছেলে: আমি নেব ।
মেয়ে: বলব, প্রাণ দাও ।
ছেলে: দেব ।
মেয়ে: যদি তলিয়ে যাই ?
ছেলে: আমি টেনে তুলবো ।
মেয়ে: তাতে যদি ব্যথা লাগে ?
ছেলে: সহ্য করব ।
মেয়ে: আর যদি থাকে বাধার দেয়াল ?
ছেলে: ভেঙ্গে ফেলব ।
মেয়ে: যদি থাকে একশো গিঠঁ ?
ছেলে: তাহলেও ।
মেয়ে: তুমি চাও আমার ভালবাসা ?
ছেলে: হ্যাঁ, তোমার ভালবাসা ।
মেয়ে: তুমি কখনোই পাবে না ।
ছেলে: কিন্তু কেন ?
মেয়ে: কারণ, যারা ত্রীতদাস আমি তাদের কখনই ভালবাসি না ।
In English Font:
Ekti Songlap
Subhash Mukopadhay
Meye- Tumi ki chao amar valobasha
Chele- Ha, chai!
Meye- Gaye kintu tar kada makha
Chele- Jemon temnibhabei chai.
Meye- Amar aakher ki hobe bola houk.
Chele- Besh!
Meye- Aar ami jiggesh korte chai.
Chele- koro
Meye- Dhoro ami kora narlam.
Chele- Ami hath dhore vitore niye jabo
Meye- Dhoro tumake talab korlam.
Chele- Ami huzure hajir hobo.
Meye- Tate jadi bipod ghote?
Chele-Ami she bipode jhap debo
Meye- Jadi tumar shange protarona kori?
Chele- Ami gaibo
Meye- Bolobo, Kuno bandhu eletar mukher upar darja bandha kore dao.,
Chele- bandha kore debo.
Meye- Tumake balbo pran nao.
Chele- Ami nebo.
Meye- Balbo pran dao.
Chele- Debo.
Meye- Jadi taliye jai?
Chele- Ami tene tulbo
Meye- Tate jadi betha lage?
Chele- shojyo karbo
Meye- Ar jadi thake badhar deyal?
Chele- Venge felbo
Meye- Jadi thake eksho gith?
Chele- taholeo.
Meye- tumi chao amar valobasha?
Chele- ha, Tumar valobasha
Meye- Tumi khakhonoi pabe na.
chele- kintu keno?
Meye- Karon, Jara tritidash ami tader kakhanoi valobashi na.
খেয়া কবিতার সারাংশ ও বিষয়বস্তু (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) kheya poem summary in bengali
Hridoy
সারাংশ : খেয়া কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত চৈতালি কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। রবীন্দ্রনাথ পতিসরের নাগর নদী ভ্রমণকালে থাকা অবস্থায় এই কবিতা রচনা করেছিলেন। কবি নদীর তীরে গড়ে ওঠা সরল গ্রাম্য জীবনধারা এই কবিতার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। খেয়া রবীন্দ্রনাথের একটি উল্লেখযোগ্য কবিতা। এই কবিতায় সভ্যতার দুইটিRead more
সারাংশ :
খেয়া কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত চৈতালি কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। রবীন্দ্রনাথ পতিসরের নাগর নদী ভ্রমণকালে থাকা অবস্থায় এই কবিতা রচনা করেছিলেন। কবি নদীর তীরে গড়ে ওঠা সরল গ্রাম্য জীবনধারা এই কবিতার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
খেয়া রবীন্দ্রনাথের একটি উল্লেখযোগ্য কবিতা। এই কবিতায় সভ্যতার দুইটি দিক; কোলাহল মগ্ন নগর এবং শান্তি প্রবন গ্রামাঞ্চলের জীবনের চরিত্র ফুটে উঠেছে।
কবিতার প্রথমেই সহজ সরল গ্রামাঞ্চলের শান্তিপ্রিয় মানুষের জীবনের বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। নদীর দুই তীরে দুইটি গ্রাম কিন্তু এই দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক, জানাশোনা। নিত্যদিন ওরা খেয়ার মাধ্যমে এক গ্রাম হইতে অন্য গ্রামে আসা-যাওয়া করে। তাই খেয়ে নৌকা হয়ে উঠেছে দুই পাড়ের মানুষের আত্মীয়তার অনন্য বাহন।
গ্রামের মানুষ গুলি এতই সহজ যে ওরা বাইরের জগৎ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। বহির্বিশ্বে কত না যুদ্ধ-বিগ্রহ লড়াই অবিরাম হয়ে যাচ্ছে আর কত না ইতিহাস নিত্যদিনে গড়ে উঠছে। ক্ষমতার লড়াই এর ফলে হচ্ছে রক্তপাত, যুদ্ধ। আর সেই যুদ্ধে কেহ বা ক্ষমতা অর্জন করছে আর কেহ ক্ষমতাচ্যুত হয়ে যাচ্ছে।
রক্তপ্রবাহের মাঝে ফেনাইয়া উঠে
সোনার মুকুট কত ফুটে আর টুটে
অর্থাৎ কত রাজা বা ক্ষমতাবান সরকার যুদ্ধে পরাজিত হচ্ছে আর যুদ্ধে জয় লাভ করছে। এ সবকিছুই যেন এই গ্রামের মানুষদের ছুইতে পারে নাই।
মানুষের সভ্যতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে সৃষ্টি হচ্ছে নতুনত্বের। বিজ্ঞানের অগ্রগতি মানব সভ্যতাকে নিয়ে এসেছে এক নতুন স্থানে। মানুষের মনে তৃষ্ণা জেগেছে না জানাকে জানার, অসম্ভবকে সম্ভব করার। তাই আবিষ্কৃত হচ্ছে নতুন পদ্ধতি নতুন প্রযুক্তি। আর তার সঙ্গে উঠছে অনেক হলাহল অর্থাৎ বিশৃঙ্খলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কিন্তু নদীর এই দুই তীরবর্তী গ্রাম তার ব্যতিক্রম। এখানে নেই কোনো নতুনত্ব, নেই কোনো অগ্রগতি, নেই কোন বহির্বিশ্বের খবর।
এই খেয়া চিরদিন চলে নদীস্রোতে
তাদের সরল জীবনযাত্রায় কোন বাধাপ্রাপ্ত হয় নাই। গ্রামের দুই পারের মানুষের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব-সংঘাত ঘটেনি বরং ওদের মধ্যে রয়েছে মিলন, ভালোবাসা এবং আদান প্রদান। তাদের জীবনের নদীস্রোত নদীর খেয়ার মত চলে যাচ্ছে অবলীলায়।
মূলভাব :
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই কবিতার মাধ্যমে নগরজীবনের বা উন্নত সভ্যতার অন্ধকার দিক কে তুলে ধরেছেন। যদিও নগরজীবন বা আধুনিক সভ্যতা গ্রামাঞ্চলের মানুষ থেকে অনেক উন্নত কিন্তু তাদের মধ্যে মিল নেই, মায়া নেই বরং সংঘাত এবং দ্বন্দ্বে পরিপূর্ণ। আর তার বিপরীতে গ্রাম্য জীবনযাত্রা অনুন্নত হওয়া সত্বেও তাদের মধ্যে রয়েছে নিবিড় মিলন, ভালোবাসা একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা।
See lessদুরন্ত আশা (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Duranta Asha Poem in Bengali lyrics?
Hridoy
দুরন্ত আশা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থ - মানসী মর্মে যবে মত্ত আশা সর্পসম ফোঁষে অদৃষ্টের বন্ধনেতে দাপিয়া বৃথা রোষে তখনো ভালোমানুষ সেজে বাঁধানো হুঁকা যতনে মেজে মলিন তাস সজোরে ভেঁজে খেলিতে হবে কষে! অন্নপায়ী বঙ্গবাসী স্তন্যপায়ী জীব জন-দশেকে জটলা করি তক্তপোষে ব'সে। ভদ্র মোরা, শান্ত বড়ো, পোষ-মানা এ প্রাRead more
দুরন্ত আশা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ – মানসী
মর্মে যবে মত্ত আশা
সর্পসম ফোঁষে
অদৃষ্টের বন্ধনেতে
দাপিয়া বৃথা রোষে
তখনো ভালোমানুষ সেজে
বাঁধানো হুঁকা যতনে মেজে
মলিন তাস সজোরে ভেঁজে
খেলিতে হবে কষে!
অন্নপায়ী বঙ্গবাসী
স্তন্যপায়ী জীব
জন-দশেকে জটলা করি
তক্তপোষে ব’সে।
ভদ্র মোরা, শান্ত বড়ো,
পোষ-মানা এ প্রাণ
বোতাম-আঁটা জামার নীচে
শান্তিতে শয়ান।
দেখা হলেই মিষ্ট অতি
মুখের ভাব শিষ্ট অতি,
অসল দেহ ক্লিষ্টগতি–
গৃহের প্রতি টান।
তৈল-ঢালা স্নিগ্ধ তনু
নিদ্রারসে ভরা,
মাথায় ছোটো বহরে বড়ো
বাঙালি সন্তান।
ইহার চেয়ে হতেম যদি
আরব বেদুয়িন!
চরণতলে বিশাল মরু
দিগন্তে বিলীন।
ছুটেছে ঘোড়া, উড়েছে বালি,
জীবনস্রোত আকাশে ঢালি
হৃদয়তলে বহ্নি জ্বালি
চলেছি নিশিদিন।
বর্শা হাতে, ভর্সা প্রাণে,
সদাই নিরুদ্দেশ
মরুর ঝড় যেমন বহে
সকল বাধাহীন।
বিপদ-মাঝে ঝাঁপায়ে প’ড়ে
শোণিত উঠে ফুটে,
সকল দেহে সকল মনে
জীবন জেগে উঠে–
অন্ধকারে সূর্যালোতে
সন্তরিয়া মৃত্যুস্রোতে
নৃত্যময় চিত্ত হতে
মত্ত হাসি টুটে।
বিশ্বমাঝে মহান যাহা
সঙ্গী পরানের,
ঝঞ্ঝামাঝে ধায় সে প্রাণ
সিন্ধুমাঝে লুটে।
নিমেষতরে ইচ্ছা করে
বিকট উল্লাসে
সকল টুটে যাইতে ছুটে
জীবন-উচ্ছ্বাসে–
শূন্য ব্যোম অপরিমাণ
মদ্যসম করিতে পান
মুক্ত করি রুদ্ধ প্রাণ
ঊর্ধ্ব নীলাকাশে।
থাকিতে নারি ক্ষুদ্র কোণে
আম্রবনছায়ে
সুপ্ত হয়ে লুপ্ত হয়ে
গুপ্ত গৃহবাসে।
বেহালাখানা বাঁকায়ে ধরি
বাজাও ওকি সুর–
তবলা-বাঁয়া কোলেতে টেনে
বাদ্যে ভরপুর!
কাগজ নেড়ে উচ্চ স্বরে
পোলিটিকাল তর্ক করে,
জানলা দিয়ে পশিছে ঘরে
বাতাস ঝুরুঝুর।
পানের বাটা, ফুলের মালা,
তবলা-বাঁয়া দুটো,
দম্ভ-ভরা কাগজগুলো
করিয়া দাও দূর!
কিসের এত অহংকার!
দম্ভ নাহি সাজে–
বরং থাকো মৌন হয়ে
সসংকোচ লাজে।
অত্যাচারে মত্ত-পারা
কভু কি হও আত্মহারা?
তপ্ত হয়ে রক্তধারা
ফুটে কি দেহমাঝে?
অহর্নিশি হেলার হাসি
তীব্র অপমান
মর্মতল বিদ্ধ করি
বজ্রসম বাজে?
দাস্যসুখে হাস্যমুখ,
বিনীত জোড়-কর,
প্রভুর পদে সোহাগ-মদে
দোদুল কলেবর!
পাদুকাতলে পড়িয়া লুটি
ঘৃণায় মাখা অন্ন খুঁটি
ব্যগ্র হয়ে ভরিয়া মুঠি
যেতেছ ফিরি ঘর।
ঘরেতে ব’সে গর্ব কর
পূর্বপুরুষের,
আর্যতেজ-দর্প-ভরে
পৃথ্বী থরথর।
হেলায়ে মাথা, দাঁতের আগে
মিষ্ট হাসি টানি
বলিতে আমি পারিব না তো
ভদ্রতার বাণী।
উচ্ছ্বসিত রক্ত আসি
বক্ষতল ফেলিছে গ্রাসি,
প্রকাশহীন চিন্তারাশি
করিছে হানাহানি।
কোথাও যদি ছুটিতে পাই
বাঁচিয়া যাই তবে–
ভব্যতার গণ্ডিমাঝে
শান্তি নাহি মানি।
In English Font:
Duranta Aasha
Rabindranath Tagore
Morme jobe motto aasha
Sharpa momo fushe
Odrister bondhonete
Dapia britha rushe
Takhano valo manush sheje
Badhano hukka jatane meje
Molin tar shojore veje
Khelite hobe koshe!
Annapayi Bangabashi
Stonnopayi jib
Jon dosheke jatola kori
Taktaposhe boshe
Bhadro mora, Shanto boro
Posh-man ei pran
Botam ata jamar niche
Shantite shoyan
Dekha holei misti oti
Mukher bhav shisto oti,
Olosh deho klistogati
Griher proti taan
Toil-dhala snigdo tanu
Nidrarashe bhora,
Mathay choto bahre boro
Bangali shontan
Ihar cheye hotam jadi
Arab beduin
Charantole bishal maru
digonte bilin
Chuteche ghura, ureche bali,
Jibonsrut aakahse dali
Hridoytole banni jali
cholechi nishidin.
borsha hate, bhorsha prane
shodai niruddesh
Marur jhar jemon bohe
Shakal badhahin
Bipod majhe japaye pore
Shonit uthe fute,
Shakal dehe shakal mone
Jibon jege uthe
Ondhokare shurjalote
shantoriya mrityosrute
Nrittyomoy chitta hote
matta hashi tute
Bissho majhe mohan jaha
Shangi poraner
Jhanjhamajhe dhay she pran
Shindhumajhe lute
Nimeshtore iccha kore
Bikot ullashe
Shakal tute jaite chute
Jibon ucchashe
shunno Byom oporiman
Modyo shomo korite paan
Mukta kori ruddha pran
urdha nilakashe
Thakite nari khudra khone
ambrobonochaye
Shupta hoye lupta hoye
Gupta grihobashe
Behalakhana bakaye dhari
bajao oki shur-
Tabla baya kulete tene
badye bharpur
Kagoj nere uccha share
Political tarko kore
Janla diye poshiche ghore
Batash jhurujhur.
Paner bata fuler mala,
tabla-baya duto,
Dambha bhora kagajgulo
Koria dao dur!
Kisher eto ohongkar
dambha nahi shaje
Barong thako mouno hoye
Shashangkuch laje
ottachare motto-para
kabhu ki ho aatmohara?
tapta hoye raktadhara
Fute ki dehomajhe?
Aharnishi helay hashi
tibro opoman
Marmotal biddho kori
Bajroshomo baje?
Dashyoshuke hashyomukh
Biniti Jor-kar
Prabhur pode shohag-mode
Dodul kalebor!
Padukatole podiya luti
Grinay makha onno khuti
Bygro hoye bhariya muthi
jetecho firi ghar
Gharete boshe garba kar
Purbapurusher,
Aarjatej-dorpe-bhore
Prithbi tharthora
Helaye matha dater aage
See lessMishta hashi tani
Bolite ami paribo na to
bhadrotar bani
Ucchoshito rakta aashi
Bakkhatal feliche grashi
prokashhin chintarashi
Koriche hanahani.
Kothao jadi chutite pai
bachiya jai tabe-
Bhovyotar gandimajhe
Shanti nahi mani
ফাল্গুনে বিকশিত কাঞ্চন ফুল (রবীন্দ্রসঙ্গীত) Falgune Bikoshito Kanchan full lyrics in Bengali?
Hridoy
ফাল্গুন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থ - চিত্রবিচিত্র ফাল্গুনে বিকশিত কাঞ্চন ফুল, ডালে ডালে পুঞ্জিত আম্রমুকুল। চঞ্চল মৌমাছি গুঞ্জরি গায়, বেণুবনে মর্মরে দক্ষিণবায়। স্পন্দিত নদীজল ঝিলিমিলি করে, জ্যোৎস্নার ঝিকিমিকি বালুকার চরে। নৌকা ডাঙায় বাঁধা, কাণ্ডারী জাগে, পূর্ণিমারাত্রির মত্ততা লাগে। খেয়াঘাটে ওঠে গRead more
ফাল্গুন
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ – চিত্রবিচিত্র
ফাল্গুনে বিকশিত
কাঞ্চন ফুল,
ডালে ডালে পুঞ্জিত
আম্রমুকুল।
চঞ্চল মৌমাছি
গুঞ্জরি গায়,
বেণুবনে মর্মরে
দক্ষিণবায়।
স্পন্দিত নদীজল
ঝিলিমিলি করে,
জ্যোৎস্নার ঝিকিমিকি
বালুকার চরে।
নৌকা ডাঙায় বাঁধা,
কাণ্ডারী জাগে,
পূর্ণিমারাত্রির
মত্ততা লাগে।
খেয়াঘাটে ওঠে গান
অশ্বথতলে,
পান্থ বাজায়ে বাঁশি
আন্মনে চলে।
ধায় সে বংশীরব
বহুদূর গাঁয়,
জনহীন প্রান্তর
পার হয়ে যায়।
দূরে কোন্ শয্যায়
একা কোন্ ছেলে
বংশীর ধ্বনি শুনে
ভাবে চোখ মেলে–
যেন কোন্ যাত্রী সে,
রাত্রি অগাধ
জ্যোৎস্নাসমুদ্রের
তরী যেন চাঁদ।
চলে যায় চাঁদে চ’ড়ে
সারা রাত ধরি,
মেঘেদের ঘাটে ঘাটে
ছুঁ’য়ে যায় তরী।
রাত কাটে, ভোর হ|য়,
পাখি জাগে বনে–
চাঁদের তরণী ঠেকে
ধরণীর কোণে।
In English Font:
Falgun
Falgune bikoshito
kanchon ful
dale dale punjito
Amromukul
Chonchol Moumachi
gunjuri gay
Benubone mormore
Dokkhinbay
Spandito nadijol
jhilimili kore
Josnar Jhikimiki
balukar chore
Nouka Dangay badha
Kandari jage
Purnimaratrir
Mottota lage.
Kheyaghate othe gaan
Osshothtole
Pantho bajay bashi
Anmone chole
Dhay she bangshidhar
bahudur gay
Janahin prantar
par hoye jay
Dure kono shojjay
eka kuno chele
bongshir dhani shune
Bhabe chokh mele
Jeno kuno jatri she
Ratri ogadh
Josnashamudrer
Tari jeno chada
Chole jay chade chore
Shara raat dhori
Megheder ghate ghate
Chuye jay tari
Raat kate, Vor hay
Pakhi jage bone
Chader tarani theke
Dharanir kune.
কবিতাঃ এখনো তো বড় হয়নি আমি | Ekhono to Boro Hoini Ami Kobita lyrics?
Hridoy
ছোটোবড়ো- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখনো তো বড়ো হই নি আমি, ছোটো আছি ছেলেমানুষ ব'লে। দাদার চেয়ে অনেক মস্ত হব বড়ো হয়ে বাবার মতো হলে। দাদা তখন পড়তে যদি না চায়, পাখির ছানা পোষে কেবল খাঁচায়, তখন তারে এমনি বকে দেব! বলব, "তুমি চুপটি ক'রে পড়ো।' বলব, "তুমি ভারি দুষ্টু ছেলে' -- যখন হব বাবার মতো বড়ো। তখন নিয়ে দাদার খাঁRead more
ছোটোবড়ো- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
এখনো তো বড়ো হই নি আমি,
ছোটো আছি ছেলেমানুষ ব’লে।
দাদার চেয়ে অনেক মস্ত হব
বড়ো হয়ে বাবার মতো হলে।
দাদা তখন পড়তে যদি না চায়,
পাখির ছানা পোষে কেবল খাঁচায়,
তখন তারে এমনি বকে দেব!
বলব, “তুমি চুপটি ক’রে পড়ো।’
বলব, “তুমি ভারি দুষ্টু ছেলে’ —
যখন হব বাবার মতো বড়ো।
তখন নিয়ে দাদার খাঁচাখানা
ভালো ভালো পুষব পাখির ছানা।
সাড়ে দশটা যখন যাবে বেজে
নাবার জন্যে করব না তো তাড়া।
ছাতা একটা ঘাড়ে ক’রে নিয়ে
চটি পায়ে বেড়িয়ে আসব পাড়া।
গুরুমশায় দাওয়ায় এলে পরে
চৌকি এনে দিতে বলব ঘরে,
তিনি যদি বলেন “সেলেট কোথা?
দেরি হচ্ছে, বসে পড়া করো’
আমি বলব, “খোকা তো আর নেই,
হয়েছি যে বাবার মতো বড়ো।’
গুরুমশায় শুনে তখন কবে,
“বাবুমশায়, আসি এখন তবে।’
খেলা করতে নিয়ে যেতে মাঠে
ভুলু যখন আসবে বিকেল বেলা,
আমি তাকে ধমক দিয়ে কব,
“কাজ করছি, গোল কোরো না মেলা।’
রথের দিনে খুব যদি ভিড় হয়
একলা যাব, করব না তো ভয় —
মামা যদি বলেন ছুটে এসে
“হারিয়ে যাবে, আমার কোলে চড়ো’
বলব আমি, “দেখছ না কি মামা,
হয়েছি যে বাবার মতো বড়ো।’
দেখে দেখে মামা বলবে, “তাই তো,
খোকা আমার সে খোকা আর নাই তো।’
আমি যেদিন প্রথম বড়ো হব
মা সেদিনে গঙ্গাস্নানের পরে
আসবে যখন খিড়কি-দুয়োর দিয়ে
ভাববে “কেন গোল শুনি নে ঘরে।’
তখন আমি চাবি খুলতে শিখে
যত ইচ্ছে টাকা দিচ্ছি ঝিকে,
মা দেখে তাই বলবে তাড়াতাড়ি,
“খোকা, তোমার খেলা কেমনতরো।’
আমি বলব, “মাইনে দিচ্ছি আমি,
হয়েছি যে বাবার মতো বড়ো।
ফুরোয় যদি টাকা, ফুরোয় খাবার,
যত চাই মা, এনে দেব আবার।’
আশ্বিনেতে পুজোর ছুটি হবে,
মেলা বসবে গাজনতলার হাটে,
বাবার নৌকো কত দূরের থেকে
লাগবে এসে বাবুগঞ্জের ঘাটে।
বাবা মনে ভাববে সোজাসুজি,
খোকা তেমনি খোকাই আছে বুঝি,
ছোটো ছোটো রঙিন জামা জুতো
কিনে এনে বলবে আমায় “পরো’।
আমি বলব, “দাদা পরুক এসে,
আমি এখন তোমার মতো বড়ো।
দেখছ না কি যে ছোটো মাপ জামার–
পরতে গেলে আঁট হবে যে আমার।’
আরও পড়ুনঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত কবিতাসমূহ
In English font:
Chotoboro
Rabindranath Tagore
Ekhono to boro hoini ami
Choto aachi chelemanush bolo.
Dadar cheye onek mosto hobo
Boro hoye babar moto hole.
Dada takhan jodi porte na chay
Pakhir chana poshe kebol khachay,
Takhan tare emni boke debo!
Bolbo, “Tumi chupti kore poro”
Bolbo, “tumi bhari dusto chele”
Jakhan hobo babar moto boro
See lessTakhan niye dadar khachakhana
Valo valo pushbo pakhir chana
Share dashta jakhan jabe beje
Nabar jonno korbo na to tara.
Chata ekta ghare kore niye
Choti paye beriye aashbo para
Gurumoshay daway ele pore
chouki ene dite bolobo ghore,
Tini jadi bolen “selet kutha”?
Deri hocche, “boshe pora koro.
Amo bolbo, “khoka to ar nei,
hoyechi je babar moto boro”
Gurumoshay shune takhan kobe,
“babumoshay, aashi ekhon tobe.
Khela korte niye jete mathe
Bhulu jakhan aashbe bikelbela,
Ami take dhamak diye kobo,
“kaj korchi, gol koro na mela”
rather din khub bhir hoy
Ekla jabo korbo na to bhoy
Mama jadi bolen chute eshe
“hariye jabe, amar kole choro”
Bolbo ami, “Dekhcho na ki mama,
Hoyechi je babar moto boro”
dekhe dekhe mama bolbe, “tai to,
Khoka amar she khoka aar nai to”
Ami jedin prothom boro hobo
Maa shedine gongasnaner pore
Aashbe jakhan Khirki-duwar diye
Bhabbe “Keno gol shuni ne ghore”
takhan ami chabi khulte shikhe
joto icche taka dicchi jhike,
Maa dekhe tai bolbe taratari,
“khoka, tomar khela kemontoro”
Ami bolbo, maine dicchi ami,
Hoyechi je babar moto boro
Furoy jadi taka, furoy khabar,
Jata chai maa, ene debo abar
Aashinete pujor chuti hobe,
Mela boshbe gajantalar hate,
Babar nouko koto durer theke
Lagbe eshe babuganjer ghate.
Baba mone bhabbe shujashuji,
Khoka temni khoka i aache bujhi,
Choto choto rangin jama juto
Kine ene bolbe amay “porp”
Ami bolbo, “dada paruk eshe,
Ami ekhon tumar moto boro.
Dekhcho na ki je choto map jamar-
porte gele aat hobe je amar.
দিন এর সমার্থক শব্দ | Synonyms of day in Bengali?
Hridoy
একই অর্থে ব্যবহৃত বিভিন্ন শব্দকে সমার্থক শব্দ বলে। দিন এর বিভিন্ন সমার্থক শব্দ হচ্ছে। দিবস- ৫রা সেপ্টেম্বর কে শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করা হয়। দিবা- দিবা নিশি আমি আকুল চিত্তে ভাবনায় মত্ত থাকি। অহ- অহর্নিশি তুমি কোথায় থাক আমারে ছাড়িয়া। বার- আজ কি বার ? রোজ- আমি রোজ বাজারে যাই। অষ্টপ্রহর- অষ্টপ্রহরRead more
একই অর্থে ব্যবহৃত বিভিন্ন শব্দকে সমার্থক শব্দ বলে।
See lessদিন এর বিভিন্ন সমার্থক শব্দ হচ্ছে।
দিবস– ৫রা সেপ্টেম্বর কে শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করা হয়।
দিবা– দিবা নিশি আমি আকুল চিত্তে ভাবনায় মত্ত থাকি।
অহ– অহর্নিশি তুমি কোথায় থাক আমারে ছাড়িয়া।
বার– আজ কি বার ?
রোজ– আমি রোজ বাজারে যাই।
অষ্টপ্রহর– অষ্টপ্রহর মানে একদিন যেহেতু এক প্রহর তিন ঘণ্টা।
অহ্ন–
দিনমান–
বাংলা অর্থ | Days to go meaning in Bengali?
Hridoy
Days- দিন/কয়েকদিন , to go- বাকি Days to go- কয়েকদিন বাকি , হইতে অনেক বাকি For example- Days to go- It's a mega project, its complication is days to go matter. Days to go- I am excited, my vacation is just two days to go.
Days- দিন/কয়েকদিন , to go- বাকি
Days to go- কয়েকদিন বাকি , হইতে অনেক বাকি
For example-
Days to go- It’s a mega project, its complication is days to go matter.
Days to go- I am excited, my vacation is just two days to go.
কবিতাঃ জন্মদিন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ) Jonmodin Poem by Rabindranath Tagore in Bengali
Hridoy
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মদিন নিয়ে অনেক কবিতা লিখেছেন। তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থের নাম "জন্মদিনে" সেই কাব্যে রয়েছে ২৯ টি কবিতা। এখানে তিনটি কবিতা দেয়া হলো যেগুলি তার অন্যান্য কাব্যের অন্তর্গত। জন্মদিন (তোমরা রচিলে যারে) কাব্যগ্রন্থ-নবজাতক জন্মদিন (আজ মম জন্মদিন। সদ্যই প্রাণের প্রান্তপথে) কাব্যগ্রন্থ-সেঁজুতিRead more
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মদিন নিয়ে অনেক কবিতা লিখেছেন। তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থের নাম “জন্মদিনে” সেই কাব্যে রয়েছে ২৯ টি কবিতা।
এখানে তিনটি কবিতা দেয়া হলো যেগুলি তার অন্যান্য কাব্যের অন্তর্গত।
আরও পড়ুনঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত কবিতাসমূহ
জন্মদিন
তোমরা রচিলে যারে
নানা অলংকারে
তারে তো চিনি নে আমি,
চেনেন না মোর অন্তর্যামী
তোমাদের স্বাক্ষরিত সেই মোর নামের প্রতিমা।
বিধাতার সৃষ্টিসীমা
তোমাদের দৃষ্টির বাহিরে।
কালসমুদ্রের তীরে
বিরলে রচেন মূর্তিখানি
বিচিত্রিত রহস্যের যবনিকা টানি
রূপকার আপন নিভৃতে।
বাহির হইতে
মিলায়ে আলোক অন্ধকার
কেহ এক দেখে তারে, কেহ দেখে আর।
খণ্ড খণ্ড রূপ আর ছায়া,
আর কল্পনার মায়া
আর মাঝে মাঝে শূন্য, এই নিয়ে পরিচয় গাঁথে
অপরিচয়ের ভূমিকাতে।
সংসারখেলার কক্ষে তাঁর
যে-খেলেনা রচিলেন মূর্তিকার
মোরে লয়ে মাটিতে আলোতে,
সাদায় কালোতে,
কে না জানে সে ক্ষণভঙ্গুর
কালের চাকার নিচে নিঃশেষে ভাঙিয়া হবে চুর।
সে বহিয়া এনেছে যে-দান
সে করে ক্ষণেকতরে অমরের ভান–
সহসা মুহূর্তে দেয় ফাঁকি,
মুঠি-কয় ধূলি রয় বাকি,
আর থাকে কালরাত্রি সব-চিহ্ন-ধুয়ে-মুছে-ফেলা।
তোমাদের জনতার খেলা
রচিল যে পুতুলিরে
সে কি লুব্ধ বিরাট ধূলিরে
এড়ায়ে আলোতে নিত্য রবে।
এ কথা কল্পনা কর যবে
তখন আমার
আপন গোপন রূপকার
হাসেন কি আঁখিকোণে,
সে কথাই ভাবি আজ মনে
জন্মদিন
দৃষ্টিজালে জড়ায় ওকে হাজারখানা চোখ,
ধ্বনির ঝড়ে বিপন্ন ওই লোক।
জন্মদিনের মুখর তিথি যারা ভুলেই থাকে,
দোহাই ওগো, তাদের দলে লও এ মানুষটাকে–
সজনে পাতার মতো যাদের হালকা পরিচয়,
দুলুক খসুক শব্দ নাহি হয়।
সবার মাঝে পৃথক ও যে ভিড়ের কারাগারে
খ্যাতি-বেড়ির নিরন্ত ঝংকারে।
সবাই মিলে নানা রঙে রঙিন করছে ওরে,
নিলাজ মঞ্চে রাখছে তুলে ধরে,
আঙুল তুলে দেখাচ্ছে দিনরাত;
কোথায় লুকোয় ভেবে না পায়, আড়াল ভূমিসাৎ।
দাও-না ছেড়ে ওকে
স্নিগ্ধ -আলো শ্যামল-ছায়া বিরল-কথার লোকে,
বেড়াহীন বিরাট ধূলি-‘পর,
সেই যেখানে মহাশিশুর আদিম খেলাঘর।
ভোরবেলাকার পাখির ডাকে প্রথম খেয়া এসে
ঠেকল যখন সব-প্রথমের চেনাশোনার দেশে,
নামল ঘাটে যখন তারে সাজ রাখে নি ঢেকে,
ছুটির আলো নগ্ন গায়ে লাগল আকাশ থেকে–
যেমন করে লাগে তরীর পালে,
যেমন লাগে অশোক গাছের কচি পাতার ডালে।
নাম ভোলা ফুল ফুটল ঘাসে ঘাসে
সেই প্রভাতের সহজ অবকাশে।
ছুটির যজ্ঞে পুষ্পহোমে জাগল বকুলশাখা,
ছুটির শূন্যে ফাগুনবেলা মেলল সোনার পাখা।
ছুটির কোণে গোপনে তার নাম
আচম্কা সেই পেয়েছিল মিষ্টিসুরের দাম;
কানে কানে সে নাম ডাকার ব্যথা উদাস করে
চৈত্রদিনের স্তব্ধ দুইপ্রহরে।
আজ সবুজ এই বনের পাতায় আলোর ঝিকিঝিকি
সেই নিমেষের তারিখ দিল লিখি।
তাহারে ডাক দিয়েছিল পদ্মানদীর ধারা,
কাঁপন-লাগা বেণুর শিরে দেখেছে শুকতারা;
কাজল-কালো মেঘের পুঞ্জ সজল সমীরণে
নীল ছায়াটি বিছিয়েছিল তটের বনে বনে;
ও দেখেছে গ্রামের বাঁকা বাটে
কাঁখে কলস মুখর মেয়ে চলে স্নানের ঘাটে;
সর্ষেতিসির খেতে
দুইরঙা সুর মিলেছিল অবাক আকাশেতে;
তাই দেখেছে চেয়ে চেয়ে অস্তরবির রাগে–
বলেছিল, এই তো ভালো লাগে।
সেই-যে ভালো-লাগাটি তার যাক সে রেখে পিছে,
কীর্তি যা সে গেঁথেছিল হয় যদি হোক মিছে,
না যদি রয় নাই রহিল নাম–
এই মাটিতে রইল তাহার বিস্মিত প্রণাম।
জন্মদিন
আজ মম জন্মদিন। সদ্যই প্রাণের প্রান্তপথে
See lessডুব দিয়ে উঠেছে সে বিলুপ্তির অন্ধকার হতে
মরণের ছাড়পত্র নিয়ে। মনে হতেছে কী জানি
পুরাতন বৎসরের গ্রন্থিবাঁধা জীর্ণ মালাখানি
সেথা গেছে ছিন্ন হয়ে; নবসূত্রে পড়ে আজি গাঁথা
নব জন্মদিন। জন্মোৎসবে এই-যে আসন পাতা
হেথা আমি যাত্রী শুধু, অপেক্ষা করিব, লব টিকা
মৃত্যুর দক্ষিণ হস্ত হতে, নূতন অরুণলিখা
যবে দিবে যাত্রার ইঙ্গিত।
আজ আসিয়াছে কাছে
জন্মদিন মৃত্যুদিন, একাসনে দোঁহে বসিয়াছে,
দুই আলো মুখোমুখি মিলিছে জীবনপ্রান্তে মম
রজনীর চন্দ্র আর প্রত্যুষের শুকতারাসম–
এক মন্ত্রে দোঁহে অভ্যর্থনা।
প্রাচীন অতীত, তুমি
নামাও তোমার অর্ঘ্য; অরূপ প্রাণের জন্মভূমি,
উদয়শিখরে তার দেখো আদিজ্যোতি। করো মোরে
আশীর্বাদ, মিলাইয়া যাক তৃষাতপ্ত দিগন্তরে
মায়াবিনী মরীচিকা। ভরেছিনু আসক্তির ডালি
কাঙালের মতো; অশুচি সঞ্চয়পাত্র করো খালি,
ভিক্ষামুষ্টি ধূলায় ফিরায়ে লও, যাত্রাতরী বেয়ে
পিছু ফিরে আর্ত চক্ষে যেন নাহি দেখি চেয়ে চেয়ে
জীবনভোজের শেষ উচ্ছিষ্টের পানে।
হে বসুধা,
নিত্য নিত্য বুঝায়ে দিতেছ মোরে– যে তৃষ্ণা, যে ক্ষুধা
তোমার সংসাররথে সহস্রের সাথে বাঁধি মোরে
টানায়েছে রাত্রিদিন স্থুল সূক্ষ্ম নানাবিধ ডোরে
নানা দিকে নানা পথে, আজ তার অর্থ গেল কমে
ছুটির গোধূলিবেলা তন্দ্রালু আলোকে। তাই ক্রমে
ফিরায়ে নিতেছ শক্তি, হে কৃপণা, চক্ষুকর্ণ থেকে
আড়াল করিছ স্বচ্ছ আলো; দিনে দিনে টানিছে কে
নিষ্প্রভ নেপথ্যপানে। আমাতে তোমার প্রায়োজন
শিথিল হয়েছে, তাই মূল্য মোর করিছ হরণ,
দিতেছ ললাটপটে বর্জনের ছাপ। কিন্তু জানি,
তোমার অবজ্ঞা মোরে পারে না ফেলিতে দূরে টানি।
তব প্রয়োজন হতে অতিরিক্ত যে মানুষ তারে
দিতে হবে চরম সম্মান তব শেষ নমস্কারে।
যদি মোরে পঙ্গু কর, যদি মোরে কর অন্ধপ্রায়,
যদি বা প্রচ্ছন্ন কর নিঃশক্তির প্রদোষচ্ছায়ায়,
বাঁধ বার্ধক্যের জালে, তবু ভাঙা মন্দিরবেদীতে
প্রতিমা অক্ষুণ্ন রবে সগৌরবে; তারে কেড়ে নিতে
শক্তি নাই তব।
ভাঙো ভাঙো, উচ্চ করো ভগ্নস্তূপ,
জীর্ণতার অন্তরালে জানি মোর আনন্দস্বরূপ
রয়েছে উজ্জ্বল হয়ে। সুধা তারে দিয়েছিল আনি
প্রতিদিন চতুর্দিকে রসপূর্ণ আকাশের বাণী;
প্রত্যুত্তরে নানা ছন্দে গেয়েছে সে “ভালোবাসিয়াছি’।
সেই ভালোবাসা মোরে তুলেছে স্বর্গের কাছাকাছি
ছাড়ায়ে তোমার অধিকার। আমার সে ভালোবাসা
সব ক্ষয়ক্ষতিশেষে অবশিষ্ট রবে; তার ভাষা
হয়তো হারাবে দীপ্তি অভ্যাসের ম্লানস্পর্শ লেগে,
তবু সে অমৃতরূপ সঙ্গে রবে যদি উঠি জেগে
মৃত্যুপরপারে। তারি অঙ্গে এঁকেছিল পত্রলিখা
আম্রমঞ্জরীর রেণু, এঁকেছে পেলব শেফালিকা
সুগন্ধি শিশিরকণিকায়; তারি সূক্ষ্ম উত্তরীতে
গেঁথেছিল শিল্পকারু প্রভাতের দোয়েলের গীতে
চকিত কাকলিসূত্রে; প্রিয়ার বিহ্বল স্পর্শখানি
সৃষ্টি করিয়াছে তার সর্বদেহে রোমাঞ্চিত বাণী,
নিত্য তাহা রয়েছে সঞ্চিত। যেথা তব কর্মশালা
সেথা বাতায়ন হতে কে জানি পরায়ে দিত মালা
আমার ললাট ঘেরি সহসা ক্ষণিক অবকাশে,
সে নহে ভৃত্যের পুরস্কার; কী ইঙ্গিতে কী আভাসে
মুহূর্তে জানায়ে চলে যেত অসীমের আত্মীয়তা
অধরা অদেখা দূত, বলে যেত ভাষাতীত কথা
অপ্রয়োজনের মানুষেরে।
সে মানুষ, হে ধরণী,
তোমার আশ্রয় ছেড়ে যাবে যবে, নিয়ো তুমি গণি
যা-কিছু দিয়েছ তারে, তোমার কর্মীর যত সাজ,
তোমার পথের যে পাথেয়, তাহে সে পাবে না লাজ;
রিক্ততায় দৈন্য নহে। তবু জেনো অবজ্ঞা করি নি
তোমার মাটির দান, আমি সে মাটির কাছে ঋণী–
জানায়েছি বারংবার, তাহারি বেড়ার প্রান্ত হতে
অমূর্তের পেয়েছি সন্ধান। যবে আলোতে আলোতে
লীন হত দড়যবনিকা, পুষ্পে পুষ্পে তৃণে তৃণে
রূপে রসে সেই ক্ষণে যে গূঢ় রহস্য দিনে দিনে
হত নিঃশ্বসিত, আজি মর্তের অপর তীরে বুঝি
চলিতে ফিরানু মুখ তাহারি চরম অর্থ খুঁজি।
যবে শান্ত নিরাসক্ত গিয়েছি তোমার নিমন্ত্রণে
তোমার অমরাবতী সুপ্রসন্ন সেই শুভক্ষণে
মুক্তদ্বার; বুভুক্ষুর লালসারে করে সে বঞ্চিত;
তাহার মাটির পাত্রে যে অমৃত রয়েছে সঞ্চিত
নহে তাহা দীন ভিক্ষু লালায়িত লোলুপের লাগি।
ইন্দ্রের ঐশ্বর্য নিয়ে হে ধরিত্রী, আছ তুমি জাগি
ত্যাগীরে প্রত্যাশা করি, নির্লোভেরে সঁপিতে সম্মান,
দুর্গমের পথিকেরে আতিথ্য করিতে তব দান
বৈরাগ্যের শুভ্র সিংহাসনে। ক্ষুব্ধযারা, লুব্ধ যারা,
মাংসগন্ধে মুগ্ধ যারা, একান্ত আত্মার দৃষ্টিহারা
শ্মশানের প্রান্তচর, আবর্জনাকুণ্ড তব ঘেরি
বীভৎস চীৎকারে তারা রাত্রিদিন করে ফেরাফেরি,
নির্লজ্জ হিংসায় করে হানাহানি।
শুনি তাই আজি
মানুষ-জন্তুর হুহুংকার দিকে দিকে উঠে বাজি।
তবু যেন হেসে যাই যেমন হেসেছি বারে বারে
পণ্ডিতের মূঢ়তায়, ধনীর দৈন্যের অত্যাচারে,
সজ্জিতের রূপের বিদ্রূপে। মানুষের দেবতারে
ব্যঙ্গ করে যে অপদেবতা বর্বর মুখবিকারে
তারে হাস্য হেনে যাব, বলে যাব, “এ প্রহসনের
মধ্য-অঙ্কে অকস্মাৎ হবে লোপ দুষ্ট স্বপনের;
নাট্যের কবররূপে বাকি শুধু রবে ভস্মরাশি
দগ্ধশেষ মশালের, আর অদৃষ্টের অট্টহাসি।’
বলে যাব, “দ্যূতচ্ছলে দানবের মূঢ় অপব্যয়
গ্রন্থিতে পারে না কভু ইতিবৃত্তে শাশ্বত অধ্যায়।’
বৃথা বাক্য থাক্। তব দেহলিতে শুনি ঘন্টা বাজে,
শেষপ্রহরের ঘন্টা; সেই সঙ্গে ক্লান্ত বক্ষোমাঝে
শুনি বিদায়ের দ্বার খুলিবার শব্দ সে অদূরে
ধ্বনিতেছে সূর্যাস্তের রঙে রাঙা পূরবীর সুরে।
জীবনের স্মৃতিদীপে আজিও দিতেছে যারা জ্যোতি
সেই ক’টি বাতি দিয়ে রচিব তোমার সন্ধ্যারতি
সপ্তর্ষির দৃষ্টির সম্মুখে; দিনান্তের শেষ পলে
রবে মোর মৌন বীণা মূর্ছিয়া তোমার পদতলে।
আর রবে পশ্চাতে আমার, নাগকেশরের চারা
ফুল যার ধরে নাই, আর রবে খেয়াতরীহারা
এ পারের ভালোবাসা– বিরহস্মৃতির অভিমানে
ক্লান্ত হয়ে রাত্রিশেষে ফিরিবে সে পশ্চাতের পানে।
কবিতাঃ অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান | Aster Biruddhe Gan by Joy Goswami in Bengali
Hridoy
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান জয় গোস্বামী অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো পায়ে আমি এখন হাজার হাতে পায়ে এগিয়ে আসি , উঠে দাড়াই হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়াই গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে গান তো জানি একটা দুটো আঁকড়ে ধরে সে-খরকুটো রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে মাথায় কত শকুন বা চিল আমার শুধু একটা কোকিল গান-বাঁধবে সহস্র উপাRead more
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান
জয় গোস্বামী
অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো পায়ে
আমি এখন হাজার হাতে পায়ে
এগিয়ে আসি , উঠে দাড়াই
হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়াই
গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে
গান তো জানি একটা দুটো
আঁকড়ে ধরে সে-খরকুটো
রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে
মাথায় কত শকুন বা চিল
আমার শুধু একটা কোকিল
গান-বাঁধবে সহস্র উপায়ে
অস্ত্র রাখো অস্ত্র ফ্যালো পায়ে
বর্ম খুলে দেখো আদুরে গায়ে
গান দাঁড়াল ঋষি বালক
মাথায় গোঁজা ময়ূর পালক
তোমায় নিয়ে বেড়াবে গান
নদীতে , দেশে গায়ে
অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো গানের দুটি পায়ে
In English Script:
Aster biruddhe gan
Joy Goswami
Astra felo, Astra rakho paye
Ami ekhon hajar hate paye
Egiye aashi, Uthe darai
hat nariye bulet tarai
ganer barma aaj porechi paye.
gan to jani ekta duto
Akre dhore she-kharkuto
rakta muchi sudhu ganer gaye
mathay koto shakun ba chil
Amar sudhu ekta Kukil
Gaan badhbe shohosro upaye.
Astra felo, Astra rakho paye
See lessBarma khule dekho aadure gaye
Gan daralo rishi balok
Mathay guja mayur palok
Tumay niye berabe gaan
Nadite, deshe gaye
Astra felo, Astra rakho duti paye.
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা (শামসুর রহমান) কবিতার সারমর্ম ও বিষয়বস্তু | shadhinota tumi summary in bengali
Hridoy
একটি সংলাপ (সুভাষ মুখোপাধ্যায়) Ekti Songlap Kobita lyrics in Bengali?
Hridoy
একটি সংলাপ - সুভাষ মুখোপাধ্যায় মেয়ে: তুমি কি চাও আমার ভালবাসা ? ছেলে: হ্যাঁ, চাই ! মেয়ে: গায়ে কিন্তু তার কাদা মাখা ! ছেলে: যেমন তেমনিভাবেই চাই । মেয়ে: আমার আখেরে কী হবে বলা হোক । ছেলে: বেশ! মেয়ে: আর আমি জিগ্যেস করতে চাই । ছেলে: করো । মেয়ে: ধরো’ আমি কড়া নাড়লাম । ছেলে: আমি হাত ধরে ভেতরে নিয়ে যাবRead more
একটি সংলাপ – সুভাষ মুখোপাধ্যায়
মেয়ে: তুমি কি চাও আমার ভালবাসা ?
ছেলে: হ্যাঁ, চাই !
মেয়ে: গায়ে কিন্তু তার কাদা মাখা !
ছেলে: যেমন তেমনিভাবেই চাই ।
মেয়ে: আমার আখেরে কী হবে বলা হোক ।
ছেলে: বেশ!
মেয়ে: আর আমি জিগ্যেস করতে চাই ।
ছেলে: করো ।
মেয়ে: ধরো’ আমি কড়া নাড়লাম ।
ছেলে: আমি হাত ধরে ভেতরে নিয়ে যাব !
মেয়ে: ধরো’ তোমাকে তলব করলাম ।
ছেলে: আমি হুজুরে হাজির হব ।
মেয়ে: তাতে যদি বিপদ ঘটে ?
ছেলে: আমি সে বিপদে ঝাঁপ দেব ।
মেয়ে: যদি তোমার সঙ্গে প্রতারণা করি?
ছেলে: আমি ক্ষমা করে দেব ।
মেয়ে: তোমাকে তর্জনী তুলে বলব, গান গাও ।
ছেলে: আমি গাইব ।
মেয়ে: বলব,কোনো বন্ধু এলে তার মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দাও।
ছেলে: বন্ধ করে দেব ।
মেয়ে: তোমাকে বলব, প্রাণ নাও ।
ছেলে: আমি নেব ।
মেয়ে: বলব, প্রাণ দাও ।
ছেলে: দেব ।
মেয়ে: যদি তলিয়ে যাই ?
ছেলে: আমি টেনে তুলবো ।
মেয়ে: তাতে যদি ব্যথা লাগে ?
ছেলে: সহ্য করব ।
মেয়ে: আর যদি থাকে বাধার দেয়াল ?
ছেলে: ভেঙ্গে ফেলব ।
মেয়ে: যদি থাকে একশো গিঠঁ ?
ছেলে: তাহলেও ।
মেয়ে: তুমি চাও আমার ভালবাসা ?
ছেলে: হ্যাঁ, তোমার ভালবাসা ।
মেয়ে: তুমি কখনোই পাবে না ।
ছেলে: কিন্তু কেন ?
মেয়ে: কারণ, যারা ত্রীতদাস আমি তাদের কখনই ভালবাসি না ।
In English Font:
Ekti Songlap
Subhash Mukopadhay
Meye- Tumi ki chao amar valobasha
See lessChele- Ha, chai!
Meye- Gaye kintu tar kada makha
Chele- Jemon temnibhabei chai.
Meye- Amar aakher ki hobe bola houk.
Chele- Besh!
Meye- Aar ami jiggesh korte chai.
Chele- koro
Meye- Dhoro ami kora narlam.
Chele- Ami hath dhore vitore niye jabo
Meye- Dhoro tumake talab korlam.
Chele- Ami huzure hajir hobo.
Meye- Tate jadi bipod ghote?
Chele-Ami she bipode jhap debo
Meye- Jadi tumar shange protarona kori?
Chele- Ami gaibo
Meye- Bolobo, Kuno bandhu eletar mukher upar darja bandha kore dao.,
Chele- bandha kore debo.
Meye- Tumake balbo pran nao.
Chele- Ami nebo.
Meye- Balbo pran dao.
Chele- Debo.
Meye- Jadi taliye jai?
Chele- Ami tene tulbo
Meye- Tate jadi betha lage?
Chele- shojyo karbo
Meye- Ar jadi thake badhar deyal?
Chele- Venge felbo
Meye- Jadi thake eksho gith?
Chele- taholeo.
Meye- tumi chao amar valobasha?
Chele- ha, Tumar valobasha
Meye- Tumi khakhonoi pabe na.
chele- kintu keno?
Meye- Karon, Jara tritidash ami tader kakhanoi valobashi na.