স্বপ্ন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু- “চেয়ে দেখো” “চেয়ে দেখো” বলে যেন বিনু। চেয়ে দেখি, ঠোকাঠুকি বরগা-কড়িতে, কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে। ইঁটে-গড়া গণ্ডার বাড়িগুলো সোজা চলিয়াছে, দুদ্দাড় জানালা দরজা। রাস্তা চলেচে যত অজগর সাপ, পিঠে তার ট্রামগাড়ি পড়ে ধুপ্ ধাপ্। দোকান বাজার সব নামে আরRead more
স্বপ্ন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু-
“চেয়ে দেখো” “চেয়ে দেখো” বলে যেন বিনু।
চেয়ে দেখি, ঠোকাঠুকি বরগা-কড়িতে,
কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে।
ইঁটে-গড়া গণ্ডার বাড়িগুলো সোজা
চলিয়াছে, দুদ্দাড় জানালা দরজা।
রাস্তা চলেচে যত অজগর সাপ,
পিঠে তার ট্রামগাড়ি পড়ে ধুপ্ ধাপ্।
দোকান বাজার সব নামে আর উঠে,
ছাদের গায়েতে ছাদ মরে মাথা কুটে।
হাওড়ার ব্রিজ চলে মস্ত সে বিছে,
হ্যারিসন্ রোড চলে তার পিছে পিছে।
মনুমেণ্টের দোল যেন ক্ষ্যাপা হাতি
শূন্যে দুলায়ে শুঁড় উঠিয়াছে মাতি।
আমাদের ইস্কুল ছোটে হন্ হন্,
অঙ্কের বই ছোটে, ছোটে ব্যাকরণ।
ম্যাপগুলো দেয়ালেতে করে ছট্ ফট্,
পাখি যেন মারিতেছে পাখার ঝাপট।
ঘণ্টা কেবলি দোলে, ঢঙ্ ঢঙ্ বাজে—
যত কেন বেলা হোক তবু থামে না যে।
লক্ষ লক্ষ লোক বলে, “থামো থামো”,
কোথা হতে কোথা যাবে, একী পাগ্লামো।”
কলিকাতা শোনে না কো চলার খেয়ালে;
নৃত্যের নেশা তার স্তম্ভে দেয়ালে।
আমি মনে মনে ভাবি চিন্তা তো নাই,
কলিকাতা যাক নাকো সোজা বোম্বাই।
দিল্লি লাহোরে যাক, যাক না আগরা-
মাথায় পাগ্ড়ি দেব পায়েতে নাগ্রা।
কিম্বা সে যদি আজ বিলাতেই ছোটে
ইংরেজ হবে সবে বুট-হ্যাট্-কোটে।
কিসের শব্দে ঘুম ভেঙে গেল যেই-
কবিতা সম্মন্দে
“একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু” রবীন্দ্রনাথের লিখিত একটি কৌতুকপূর্ণ কবিতা । কবি তাঁর স্বপ্নে তাঁর প্রিয় কলকাতা শহরকে দেখেছেন একটি চলমান শহর হিসাবে। কলকাতার বিভিন্ন বিখ্যাত জায়গাগুলি যেমন হাওড়া ব্রিজ, হ্যারিসন রোড সহ জায়গার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি স্বপ্নে সব কিছুকে চলতে দেখেছেন।
দেখি, কলিকাতা আছে কলিকাতাতেই॥
স্বপ্ন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু- “চেয়ে দেখো” “চেয়ে দেখো” বলে যেন বিনু। চেয়ে দেখি, ঠোকাঠুকি বরগা-কড়িতে, কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে। ইঁটে-গড়া গণ্ডার বাড়িগুলো সোজা চলিয়াছে, দুদ্দাড় জানালা দরজা। রাস্তা চলেচে যত অজগর সাপ, পিঠে তার ট্রামগাড়ি পড়ে ধুপ্ ধাপ্। দোকান বাজার সব নামে আরRead more
স্বপ্ন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু-
“চেয়ে দেখো” “চেয়ে দেখো” বলে যেন বিনু।
চেয়ে দেখি, ঠোকাঠুকি বরগা-কড়িতে,
কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে।
ইঁটে-গড়া গণ্ডার বাড়িগুলো সোজা
চলিয়াছে, দুদ্দাড় জানালা দরজা।
রাস্তা চলেচে যত অজগর সাপ,
পিঠে তার ট্রামগাড়ি পড়ে ধুপ্ ধাপ্।
দোকান বাজার সব নামে আর উঠে,
ছাদের গায়েতে ছাদ মরে মাথা কুটে।
হাওড়ার ব্রিজ চলে মস্ত সে বিছে,
হ্যারিসন্ রোড চলে তার পিছে পিছে।
মনুমেণ্টের দোল যেন ক্ষ্যাপা হাতি
শূন্যে দুলায়ে শুঁড় উঠিয়াছে মাতি।
আমাদের ইস্কুল ছোটে হন্ হন্,
অঙ্কের বই ছোটে, ছোটে ব্যাকরণ।
ম্যাপগুলো দেয়ালেতে করে ছট্ ফট্,
পাখি যেন মারিতেছে পাখার ঝাপট।
ঘণ্টা কেবলি দোলে, ঢঙ্ ঢঙ্ বাজে—
যত কেন বেলা হোক তবু থামে না যে।
লক্ষ লক্ষ লোক বলে, “থামো থামো”,
কোথা হতে কোথা যাবে, একী পাগ্লামো।”
কলিকাতা শোনে না কো চলার খেয়ালে;
নৃত্যের নেশা তার স্তম্ভে দেয়ালে।
আমি মনে মনে ভাবি চিন্তা তো নাই,
কলিকাতা যাক নাকো সোজা বোম্বাই।
দিল্লি লাহোরে যাক, যাক না আগরা-
মাথায় পাগ্ড়ি দেব পায়েতে নাগ্রা।
কিম্বা সে যদি আজ বিলাতেই ছোটে
ইংরেজ হবে সবে বুট-হ্যাট্-কোটে।
কিসের শব্দে ঘুম ভেঙে গেল যেই-
কবিতা সম্মন্দে
“একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু” রবীন্দ্রনাথের লিখিত একটি কৌতুকপূর্ণ কবিতা । কবি তাঁর স্বপ্নে তাঁর প্রিয় কলকাতা শহরকে দেখেছেন একটি চলমান শহর হিসাবে। কলকাতার বিভিন্ন বিখ্যাত জায়গাগুলি যেমন হাওড়া ব্রিজ, হ্যারিসন রোড সহ জায়গার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি স্বপ্নে সব কিছুকে চলতে দেখেছেন।
দেখি, কলিকাতা আছে কলিকাতাতেই॥
ব্যান্ড-পৃথিবী গান -লজ্জা আমার শরীর আজ ভিজে যায় রক্তে নাকি ভারী বর্ষায়, কিছু চোখ গিলছে আমায় ভীষন সস্তায়, ফাঁকা রাস্তায়। জন্মের আগে মৃত্যুকে দেখি বার-বার সময় কি আছে আমাকে নিয়ে ভাববার? আগুনে পুড়ে প্রমাণ করেছি কতবার শুধু বাঁচবার নেই কোনো অধিকার। তুমি ফানুস হয়েই ফেটে যাও আমি আগুন ফাগুনে ধর্ষিতা, ফুলশয্যRead more
ব্যান্ড-পৃথিবী
গান -লজ্জা
আমার শরীর আজ ভিজে যায়
রক্তে নাকি ভারী বর্ষায়,
কিছু চোখ গিলছে আমায়
ভীষন সস্তায়, ফাঁকা রাস্তায়।
জন্মের আগে মৃত্যুকে দেখি বার-বার
সময় কি আছে আমাকে নিয়ে ভাববার?
আগুনে পুড়ে প্রমাণ করেছি কতবার
শুধু বাঁচবার নেই কোনো অধিকার।
জন্মান্তর (পৃথিবী ব্যান্ড) ব্যান্ড-পৃথিবী গান -জন্মান্তর লিরিক্স -কৌশিক চক্রবর্তী পথের ধারে পড়ে পাওয়া, ছেঁড়া খাতায় হাজার বছর কেটেছে অনেক, যাওয়া আসায়। হিসেবে নিকেশ নিয়ম করে, রেখেছি তুলে পথ হারাবো পথেই নেমে, পথেরই ভুলে.. গত জন্মান্তরের হিসেব লিখে রাখা সেই খাতায়, তুমি দেখতে চাইলেই পাবে সময়ের ঝরাপাতায়..Read more
জন্মান্তর (পৃথিবী ব্যান্ড)
ব্যান্ড-পৃথিবী
গান -জন্মান্তর
লিরিক্স -কৌশিক চক্রবর্তী
পথের ধারে পড়ে পাওয়া, ছেঁড়া খাতায়
হাজার বছর কেটেছে অনেক, যাওয়া আসায়।
হিসেবে নিকেশ নিয়ম করে, রেখেছি তুলে
পথ হারাবো পথেই নেমে, পথেরই ভুলে..
গত জন্মান্তরের হিসেব
লিখে রাখা সেই খাতায়,
তুমি দেখতে চাইলেই পাবে
সময়ের ঝরাপাতায়..
সময়ের ঝরাপাতায় ..
আলোকিত এই নগরে
কোনায় কোনায় অন্ধকার,
পোড়া সভ্যতার শেষ বন্দরে..
আমি পুড়েছি বহু রাত ….
তবু কেন বারেবারে, ফিরে আসা
আমার চারপাশ নিচ্ছে নিঃশ্বাস,
গানের ভাষায়।
পথের ধরে তোমায় খুঁজি,
সময় অসময়,
কেন জানি আমার আজকাল
বাড়ছে মৃত্যু ভয় …
গত জন্মান্তরের শেষে,
অমরত্ব পাওয়া যায়
তুমি চাইলেই পেতে পারো
সময়ের ঝরাপাতায়..
সময়ের ঝরাপাতায় …
বারুদ (পৃথিবী ব্যান্ড) আমি বারুদ বুনেছি আমার হৃদয়ে অলিন্দে আমার অস্তিত্ব বিপন্ন প্রতিনিয়ত ছুরির আঘাতে আমার মায়ের শরীর পুড়ছে ভালো লাশকাটা ঘরে আমার বোনের কচি গাল আজ বাজারে নিলাম ধরে কিসের যন্ত্রণা আমি শুয়েছি সারাক্ষণ লাশে ছড়া শুয়োরের মতো বেইমান প্রজনন।. আমার শিরায় শিরায় রক্তের মিছিল সংশয় এই প্রRead more
বারুদ (পৃথিবী ব্যান্ড)
আমি বারুদ বুনেছি
আমার হৃদয়ে অলিন্দে
আমার অস্তিত্ব বিপন্ন
প্রতিনিয়ত ছুরির আঘাতে
আমার মায়ের শরীর পুড়ছে
ভালো লাশকাটা ঘরে
আমার বোনের কচি গাল
আজ বাজারে নিলাম ধরে
কিসের যন্ত্রণা আমি শুয়েছি সারাক্ষণ
লাশে ছড়া শুয়োরের মতো
বেইমান প্রজনন।.
আমার শিরায় শিরায় রক্তের মিছিল
সংশয় এই প্রাণে
যত নির্বাচন আজ ভাগাড়ে যাক
আমি জন্ম নেব আগুনে।
এসো আমরা গড়ি নতুন পৃথিবী এই আশায়
যেখানে মানুষ বাঁচতে চায়,
বাঁধতে চায় ভালোবাসায় ।
ধ্বংস হোক যত মানব শত্রু সব
এখানে জন্ম নিক নবজাতক।
আমি স্বপ্ন বেঁধেছি
আমার পিস্তলের ট্রিগারে।
আমার বালিশে বারুদ
আমার ঘুম নেই দুচোখে
আমি বিষ ঢেলেছি
আমার প্রেমিকার বুক জুড়ে।
আমি কসাই সেজে নিজের মাংস
বিক্রি করেছি বাজারে।
কিসের এ যন্ত্রনা আমার নিথর শরীরে
আজো শুনি গোগানি
প্রতিবন্ধকতার বিচারে
আমি বিশ্বাসঘাতক দাঁতের বিষে
কত মানুষ মেরেছি
আমার ঝলসানো প্রাণের বারুদ বাগানে
একটা বিপ্লব দেখেছি।
এসো আমরা গড়ি নতুন পৃথিবী এই আশায়
যেখানে মানুষ বাঁচতে চায়,
বাঁধতে চায় ভালোবাসায় ।
ধ্বংস হোক যত মানব শত্রু সব
এখানে জন্ম নিক নবজাতক।
রথযাত্রা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রথযাত্রার দিন কাছে। তাই রানী রাজাকে বললে, ‘চলো, রথ দেখতে যাই।’ রাজা বললে, ‘আচ্ছা।’ ঘোড়াশাল থেকে ঘোড়া বেরোল, হাতিশাল থেকে হাতি। ময়ূরপংখি যায় সারে সারে, আর বল্লম হাতে সারে সারে সিপাইসান্ত্রি। দাসদাসী দলে দলে পিছে পিছে চলল। কেবল বাকি রইল একজন। রাজবাড়ির ঝাঁটার কাঠি কুড়িযRead more
রথযাত্রা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রথযাত্রার দিন কাছে।
তাই রানী রাজাকে বললে, ‘চলো, রথ দেখতে যাই।’
রাজা বললে, ‘আচ্ছা।’
ঘোড়াশাল থেকে ঘোড়া বেরোল, হাতিশাল থেকে হাতি। ময়ূরপংখি যায় সারে সারে, আর বল্লম হাতে সারে সারে সিপাইসান্ত্রি। দাসদাসী দলে দলে পিছে পিছে চলল।
কেবল বাকি রইল একজন। রাজবাড়ির ঝাঁটার কাঠি কুড়িয়ে আনা তার কাজ।
সর্দার এসে দয়া করে তাকে বললে, ‘ওরে, তুই যাবি তো আয়।’
সে হাত জোড় করে বললে, ‘আমার যাওয়া ঘটবে না।’
রাজার কানে কথা উঠল, সবাই সঙ্গে যায়, কেবল সেই দুঃখীটা যায় না।
রাজা দয়া করে মন্ত্রীকে বললে, ‘ওকেও ডেকে নিয়ো।’
রাস্তার ধারে তার বাড়ি। হাতি যখন সেইখানে পৌঁছল মন্ত্রী তাকে ডেকে বললে, ‘ওরে দুঃখী, ঠাকুর দেখবি চল্।’
সে হাত জোড় করে বলল, ‘কত চলব। ঠাকুরের দুয়ার পর্যন্ত পৌঁছই এমন সাধ্য কি আমার আছে।’
মন্ত্রী বললে, ‘ভয় কী রে তোর, রাজার সঙ্গে চলবি।’
সে বললে, ‘সর্বনাশ! রাজার পথ কি আমার পথ।’
মন্ত্রী বললে, ‘তবে তোর উপায়? তোর ভাগ্যে কি রথযাত্রা দেখা ঘটবে না।’
সে বললে, ‘ঘটবে বই কি। ঠাকুর তো রথে করেই আমার দুয়ারে আসেন।’
ভক্তিভাজন- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম, ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম। পথ ভাবে আমি দেব রথ ভাবে আমি, মূর্তি ভাবে আমি দেব–হাসে অন্তর্যামী।
ভক্তিভাজন- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম,
ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম।
পথ ভাবে আমি দেব রথ ভাবে আমি,
মূর্তি ভাবে আমি দেব–হাসে অন্তর্যামী।
ছন্নছাড়া | chonnochara অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া — আঁকাবাঁকা শুকনো কতকগুলি কাঠির কঙ্কাল শূন্যের দিকে এলোমেলো তুলে দেওয়া, রুক্ষ রুষ্ট রিক্ত জীর্ণ লতা নেই পাতা নেই ছায়া নেই ছাল-বাকল নেই নেই কোথাও এক আঁচড় সবুজের প্রতিশ্রুতি এক বিন্দু সরসের সম্ভাবনাRead more
ছন্নছাড়া | chonnochara
অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত
গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে
গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া —
আঁকাবাঁকা শুকনো কতকগুলি কাঠির কঙ্কাল
শূন্যের দিকে এলোমেলো তুলে দেওয়া,
রুক্ষ রুষ্ট রিক্ত জীর্ণ
লতা নেই পাতা নেই ছায়া নেই ছাল-বাকল নেই
নেই কোথাও এক আঁচড় সবুজের প্রতিশ্রুতি
এক বিন্দু সরসের সম্ভাবনা |
ওই পথ দিয়ে
জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি ক’রে |
ড্রাইভার বললে, ওদিকে যাব না |
দেখছেন না ছন্নছাড়া ক’টা বেকার ছোকরা
রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে–
চোঙা প্যান্ট, চোখা জুতো, রোখা মেজাজ, ঠোকা কপাল–
ওখান দিয়ে গেলেই গাড়ি থামিয়ে লিফট চাইবে,
বলবে, হাওয়া খাওয়ান |
ওরা কারা ?
চেনেন না ওদের ?
ওরা বিরাট এক নৈরাজ্যের –এক নেই রাজ্যের বাসিন্দে |
ওদের কিছু নেই
ভিটে নেই ভিত নেই রীতি নেই নীতি নেই
আইন নেই কানুন নেই বিনয় নেই ভদ্রতা নেই
শ্লীলতা-শালীনতা নেই |
ঘেঁষবেন না ওদের কাছে |
কেন নেই ?
ওরা যে নেই রাজ্যের বাসিন্দে–
ওদের জন্যে কলেজে সিট নেই
অফিসে চাকরি নেই
কারখানায় কাজ নেই
ট্রামে-বাসে জায়গা নেই
মেলায়-খেলায় টিকিট নেই
হাসপাতালে বেড নেই
বাড়িতে ঘর নেই
খেলবার মাঠ নেই
অনুসরণ করবার নেতা নেই
প্রেরণা-জাগানো প্রেম নেই
ওদের প্রতি সম্ভাষণে কারু দরদ নেই–
ঘরে-বাইরে উদাহরণ যা আছে
তা ক্ষুধাহরণের সুধাক্ষরণের উদাহরণ নয়,
তা সুধাহরণের ক্ষুধাভরণের উদাহরণ–
শুধু নিজের দিকে ঝোল- টানা |
এক ছিল মধ্যবিত্ত বাড়ির এক চিলতে ফালতু এক রক
তাও দিয়েছে লোপট ক’রে |
তাই এখন পথে এসে দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে |
কোথ্বকে আসছে সেই অতীতের স্মৃতি নেই |
কোথায় দাঁড়িয়ে আছে সেই বর্তমানের গতি নেই
কোথায় চলেছে নেই সেই ভবিষ্যতের ঠিকানা |
আমি বললুম, না ওদিক দিয়েই যাব,
ওখান দিয়েই আমার শর্টকাট |
ওদের কাছাকাছি হতেই মুখ বাড়িয়ে
জিজ্ঞেস করলুম,
তোমাদের ট্যাক্ সি লাগবে ? লিফট চাই ?
আরে এই তো ট্যাক্ সি, এই তো ট্যাক্ সি, লে হালুয়া
সোল্লাসে চেঁচিয়ে উঠল ওরা
সিটি দিয়ে উঠল
পেয়ে গেছি পেয়ে গেছি চল পানসি বেলঘরিয়া |
তিন-তিনটে ছোকরা উঠে পড়ল ট্যাক্ সীতে,
বললুম কদ্দুর যাবে |
এই কাছেই | ওই দেখতে পাচ্ছেন না ভিড় ?
সিনেমা না, জলসা না, নয় কোনো ফিল্মি তারকার অভ্যর্থনা |
একটা নিরীহ লোক গাড়িচাপা পড়েছে,
চাপা দিয়ে গাড়িটা উধাও–
আমাদের দলের কয়েকজন গাড়িটার পিছে ধাওয়া করেছে
আমরা খালি ট্যাক্ সি খুঁজছি |
কে সে লোক ?
একটা বেওয়ারিশ ভিখিরি |
রক্তে-মাংসে দলা পাকিয়ে গেছে |
ওর কেউ নেই কিছু নেই
শোবার জন্য ফুটপাথ আছে তো মাথার উপরে ছাদ নেই,
ভিক্ষার জন্য পাত্র একটা আছে তো
তার মধ্যে প্রকান্ড একটা ফুটো |
রক্তে মাখামাখি সেই দলা-পাকানো ভিখিরিকে
ওরা পাঁজাকোলা করে ট্যাক্ সির মধ্যে তুলে নিল |
চেঁচিয়ে উঠল সমস্বরে –আনন্দে ঝংকৃত হয়ে–
প্রাণ আছে, এখনো প্রাণ আছে |
রক্তের দাগ থেকে আমার ভব্যতা ও শালীনতাকে বাঁচাতে গিয়ে
আমি নেমে পড়লুম তাড়াতাড়ি |
তারপর সহসা শহরের সমস্ত কর্কশে-কঠিনে
সিমেন্টে-কংক্রিটে |
ইটে-কাঠে-পিচে-পাথরে দেয়ালে-দেয়ালে
বেজে উঠল এক দুর্বার উচ্চারণ
এক প্রত্যয়ের তপ্ত শঙ্খধ্বনি–
প্রাণ আছে, এখনো প্রাণ আছে
সমস্ত বাধা-নিষেধের বাইরেও
আছে অস্তিত্বের অধিকার |
ফিরে আসতেই দেখি
গলির মোড়ে গাছের সেই শুকনো বৈরাগ্য বিদীর্ণ ক’রে
বেরিয়ে পড়েছে হাজার-হাজার সোনালি কচি পাতা
মর্মরিত হচ্ছে বাতাসে,
দেখতে দেখতে গুচ্ছে গুচ্ছে উথলে উঠছে ফুল
ঢেলে দিয়েছে বুকের সুগন্ধ,
উড়ে এসেছে রঙ-বেরঙের পাখি
শুরু করেছে কলকন্ঠের কাকলি,
ধীরে ধীরে ঘন পত্রপুঞ্জে ফেলেছে স্নেহার্দ্র দীর্ঘছায়া
যেন কোনো শ্যামল আত্মীয়তা |
অবিশ্বাস্য চোখে চেয়ে দেখলুম
কঠোরের প্রচ্ছন্নে মাধুর্যের বিস্তীর্ণ আয়োজন |
প্রাণ আছে, প্রাণ আছে– শুধু প্রাণই আশ্চর্য সম্পদ
এক ক্ষয়হীন আশা
এক মৃত্যুহীন মর্যাদা |
কবিতা সম্মন্দে
এই কবিতাটি ’পুব-পশ্চিম’ কবিতা গ্রন্থের অন্তর্গত । অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত ‘কল্লোল’ গোষ্ঠীর অন্যতম লেখক হিসেবে বাংলা সাহিত্যে অতি আধুনিক ধারা সৃষ্টিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯২৫-এ তিনি ‘কল্লোল’ পত্রিকা পত্রিকা প্রকাশের সামগ্রিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন। একদিকে রোমান্টিকতা, অন্যদিকে গণচেতনা তাঁর কবিতার ভাববস্তু নির্মাণে বৈচিত্র্য এনেছে।এইসব কবির সমবায়ে বাংলা কবিতায় প্রকৃত আধুনিকতার সৃষ্টি হয়।
লিরিক্স -নিষিদ্ধ পরোয়ানা (পৃথিবী ব্যান্ড) nisiddho poroyana lyrics in bengali
Hridoy
ব্যান্ড-পৃথিবী গান -নিষিদ্ধ পরোয়ানা রাতজাগা নারীর শোকে, দেখছি প্রথম কালো যৌনতা শুধু কালো রঙে সেজে রাত, দালালবৃত্তি ভালো দেহবিক্রির সাজানো বাগানে ফুটেছে নতুন ফুল পুরুষপিতার ভুল তুমি জদিও রুক্সানা বুলবুল তবু বাড়ে বয়স অন্ধ গলিতে ছখের সামনে ধর্ষিত মায়ের বুকে একবাটি দুধ রুটি করছে তাড়া তৃপ্ত দেহের চিৎকারRead more
ব্যান্ড-পৃথিবী
গান -নিষিদ্ধ পরোয়ানা
রাতজাগা নারীর শোকে, দেখছি প্রথম কালো
যৌনতা শুধু কালো রঙে সেজে রাত, দালালবৃত্তি ভালো
দেহবিক্রির সাজানো বাগানে ফুটেছে নতুন ফুল
পুরুষপিতার ভুল তুমি জদিও রুক্সানা বুলবুল
তবু বাড়ে বয়স অন্ধ গলিতে
ছখের সামনে ধর্ষিত মায়ের বুকে
একবাটি দুধ রুটি করছে তাড়া
তৃপ্ত দেহের চিৎকার দিচ্ছে আস্কারা
ভেঙে দাও, চিবিয়ে খাও, এই নষ্ট কাঙালপনা
নষ্ট মায়ের স্পষ্ট ভ্রূণকে দেব নতুন ঠিকানা
যেখানে আলো কালো মিশে লাল হয়েছে এই আকাশে
সে লালে রক্তের পরিচয় বিনিময়ে জারি হয় নিষিদ্ধ পরোয়ানা…
অন্ধকারের অভিশাপ কুড়োনোয়, তুমি এখনও মত্ত
বাজি রেখে দাও নিজের জরায়ূ, বাঁচার এটাই শর্ত
সকাল হলে রাত নামে নিলামে, ভাঙতি পয়সা দিয়ে
খুচরো বয়স টুকরো স্বপ্ন চোখে, বিছানায় গা এলিয়ে
তবু চলে দরদাম ভদ্র বেশীদের
ময়লা দেহের খিস্তি খেউরে চাপা হাসিতে
ভেবে খুন বাড়ে সন্তান প্রমাদ গোনে
কি দেবে বর্ণপরিচয় না পিত্রিপরিচয়
ভেঙে দাও, চিবিয়ে খাও, এই নষ্ট কাঙালপনা
See lessনষ্ট মায়ের স্পষ্ট ভ্রূণকে দেব নতুন ঠিকানা
যেখানে আলো কালো মিশে লাল হয়েছে এই আকাশে
সে লালে রক্তের পরিচয় বিনিময়ে জারি হয় নিষিদ্ধ পরোয়ানা..
কবিতা : (স্বপ্ন) একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | ekdin rate ami swapno dekhinu poem lyrics
Hridoy
স্বপ্ন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু- “চেয়ে দেখো” “চেয়ে দেখো” বলে যেন বিনু। চেয়ে দেখি, ঠোকাঠুকি বরগা-কড়িতে, কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে। ইঁটে-গড়া গণ্ডার বাড়িগুলো সোজা চলিয়াছে, দুদ্দাড় জানালা দরজা। রাস্তা চলেচে যত অজগর সাপ, পিঠে তার ট্রামগাড়ি পড়ে ধুপ্ ধাপ্। দোকান বাজার সব নামে আরRead more
স্বপ্ন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু-
“চেয়ে দেখো” “চেয়ে দেখো” বলে যেন বিনু।
চেয়ে দেখি, ঠোকাঠুকি বরগা-কড়িতে,
কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে।
ইঁটে-গড়া গণ্ডার বাড়িগুলো সোজা
চলিয়াছে, দুদ্দাড় জানালা দরজা।
রাস্তা চলেচে যত অজগর সাপ,
পিঠে তার ট্রামগাড়ি পড়ে ধুপ্ ধাপ্।
দোকান বাজার সব নামে আর উঠে,
ছাদের গায়েতে ছাদ মরে মাথা কুটে।
হাওড়ার ব্রিজ চলে মস্ত সে বিছে,
হ্যারিসন্ রোড চলে তার পিছে পিছে।
মনুমেণ্টের দোল যেন ক্ষ্যাপা হাতি
শূন্যে দুলায়ে শুঁড় উঠিয়াছে মাতি।
আমাদের ইস্কুল ছোটে হন্ হন্,
অঙ্কের বই ছোটে, ছোটে ব্যাকরণ।
ম্যাপগুলো দেয়ালেতে করে ছট্ ফট্,
পাখি যেন মারিতেছে পাখার ঝাপট।
ঘণ্টা কেবলি দোলে, ঢঙ্ ঢঙ্ বাজে—
যত কেন বেলা হোক তবু থামে না যে।
লক্ষ লক্ষ লোক বলে, “থামো থামো”,
কোথা হতে কোথা যাবে, একী পাগ্লামো।”
কলিকাতা শোনে না কো চলার খেয়ালে;
নৃত্যের নেশা তার স্তম্ভে দেয়ালে।
আমি মনে মনে ভাবি চিন্তা তো নাই,
কলিকাতা যাক নাকো সোজা বোম্বাই।
দিল্লি লাহোরে যাক, যাক না আগরা-
মাথায় পাগ্ড়ি দেব পায়েতে নাগ্রা।
কিম্বা সে যদি আজ বিলাতেই ছোটে
ইংরেজ হবে সবে বুট-হ্যাট্-কোটে।
কিসের শব্দে ঘুম ভেঙে গেল যেই-
কবিতা সম্মন্দে
“একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু” রবীন্দ্রনাথের লিখিত একটি কৌতুকপূর্ণ কবিতা । কবি তাঁর স্বপ্নে তাঁর প্রিয় কলকাতা শহরকে দেখেছেন একটি চলমান শহর হিসাবে। কলকাতার বিভিন্ন বিখ্যাত জায়গাগুলি যেমন হাওড়া ব্রিজ, হ্যারিসন রোড সহ জায়গার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি স্বপ্নে সব কিছুকে চলতে দেখেছেন।
See lessদেখি, কলিকাতা আছে কলিকাতাতেই॥
একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু ((রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) kolikata choliyache norite norite lyrics
Hridoy
স্বপ্ন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু- “চেয়ে দেখো” “চেয়ে দেখো” বলে যেন বিনু। চেয়ে দেখি, ঠোকাঠুকি বরগা-কড়িতে, কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে। ইঁটে-গড়া গণ্ডার বাড়িগুলো সোজা চলিয়াছে, দুদ্দাড় জানালা দরজা। রাস্তা চলেচে যত অজগর সাপ, পিঠে তার ট্রামগাড়ি পড়ে ধুপ্ ধাপ্। দোকান বাজার সব নামে আরRead more
স্বপ্ন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু-
“চেয়ে দেখো” “চেয়ে দেখো” বলে যেন বিনু।
চেয়ে দেখি, ঠোকাঠুকি বরগা-কড়িতে,
কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে।
ইঁটে-গড়া গণ্ডার বাড়িগুলো সোজা
চলিয়াছে, দুদ্দাড় জানালা দরজা।
রাস্তা চলেচে যত অজগর সাপ,
পিঠে তার ট্রামগাড়ি পড়ে ধুপ্ ধাপ্।
দোকান বাজার সব নামে আর উঠে,
ছাদের গায়েতে ছাদ মরে মাথা কুটে।
হাওড়ার ব্রিজ চলে মস্ত সে বিছে,
হ্যারিসন্ রোড চলে তার পিছে পিছে।
মনুমেণ্টের দোল যেন ক্ষ্যাপা হাতি
শূন্যে দুলায়ে শুঁড় উঠিয়াছে মাতি।
আমাদের ইস্কুল ছোটে হন্ হন্,
অঙ্কের বই ছোটে, ছোটে ব্যাকরণ।
ম্যাপগুলো দেয়ালেতে করে ছট্ ফট্,
পাখি যেন মারিতেছে পাখার ঝাপট।
ঘণ্টা কেবলি দোলে, ঢঙ্ ঢঙ্ বাজে—
যত কেন বেলা হোক তবু থামে না যে।
লক্ষ লক্ষ লোক বলে, “থামো থামো”,
কোথা হতে কোথা যাবে, একী পাগ্লামো।”
কলিকাতা শোনে না কো চলার খেয়ালে;
নৃত্যের নেশা তার স্তম্ভে দেয়ালে।
আমি মনে মনে ভাবি চিন্তা তো নাই,
কলিকাতা যাক নাকো সোজা বোম্বাই।
দিল্লি লাহোরে যাক, যাক না আগরা-
মাথায় পাগ্ড়ি দেব পায়েতে নাগ্রা।
কিম্বা সে যদি আজ বিলাতেই ছোটে
ইংরেজ হবে সবে বুট-হ্যাট্-কোটে।
কিসের শব্দে ঘুম ভেঙে গেল যেই-
কবিতা সম্মন্দে
“একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু” রবীন্দ্রনাথের লিখিত একটি কৌতুকপূর্ণ কবিতা । কবি তাঁর স্বপ্নে তাঁর প্রিয় কলকাতা শহরকে দেখেছেন একটি চলমান শহর হিসাবে। কলকাতার বিভিন্ন বিখ্যাত জায়গাগুলি যেমন হাওড়া ব্রিজ, হ্যারিসন রোড সহ জায়গার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি স্বপ্নে সব কিছুকে চলতে দেখেছেন।
See lessদেখি, কলিকাতা আছে কলিকাতাতেই॥
লিরিক্স -লজ্জা (পৃথিবী ব্যান্ড) lajja prithibi lyrics in bengali
Hridoy
ব্যান্ড-পৃথিবী গান -লজ্জা আমার শরীর আজ ভিজে যায় রক্তে নাকি ভারী বর্ষায়, কিছু চোখ গিলছে আমায় ভীষন সস্তায়, ফাঁকা রাস্তায়। জন্মের আগে মৃত্যুকে দেখি বার-বার সময় কি আছে আমাকে নিয়ে ভাববার? আগুনে পুড়ে প্রমাণ করেছি কতবার শুধু বাঁচবার নেই কোনো অধিকার। তুমি ফানুস হয়েই ফেটে যাও আমি আগুন ফাগুনে ধর্ষিতা, ফুলশয্যRead more
ব্যান্ড-পৃথিবী
গান -লজ্জা
আমার শরীর আজ ভিজে যায়
রক্তে নাকি ভারী বর্ষায়,
কিছু চোখ গিলছে আমায়
ভীষন সস্তায়, ফাঁকা রাস্তায়।
জন্মের আগে মৃত্যুকে দেখি বার-বার
সময় কি আছে আমাকে নিয়ে ভাববার?
আগুনে পুড়ে প্রমাণ করেছি কতবার
শুধু বাঁচবার নেই কোনো অধিকার।
তুমি ফানুস হয়েই ফেটে যাও
আমি আগুন ফাগুনে ধর্ষিতা, ফুলশয্যায়
ভীষণ লজ্জায়, ফুলশয্যায়
ফাঁকা রাস্তায়, শরশয্যায়।
আমার দুচোখ আজ ভিজে যায়
কান্নায় নাকি মিথ্যে কোনো ভরসায়,
নিঃসঙ্গ আমি ফাঁকা রাস্তায়
করা হেটে যায়..
আমার পেতে চায়।
প্রতিদিন কি এইভাবে ঠিক লুটে নাও
মাছ-ভাত নয় আমার শরীর খেতে চাও,
আরো বেশি আরো দর কষাকষী করে যাও
হাসপাতালে, আমায় বেচে দাও।
তুমি অভিশাপ নিয়ে একবার শুধু
আমার মতোই জন্মাও, শরশয্যায়
ভীষণ লজ্জায়, ফুলশয্যায়
একা রাস্তায়, শরশয্যায়..
ভীষণ লজ্জায়, ফুলশয্যায়
See lessফাঁকা রাস্তায়, শরশয্যায়,
ভীষণ লজ্জায়, ফুলশয্যায়
একা রাস্তায়, ধরো সস্তায়।
লিরিক্স -জন্মান্তর (পৃথিবী ব্যান্ড) janmantar by prithibi lyrics
Hridoy
জন্মান্তর (পৃথিবী ব্যান্ড) ব্যান্ড-পৃথিবী গান -জন্মান্তর লিরিক্স -কৌশিক চক্রবর্তী পথের ধারে পড়ে পাওয়া, ছেঁড়া খাতায় হাজার বছর কেটেছে অনেক, যাওয়া আসায়। হিসেবে নিকেশ নিয়ম করে, রেখেছি তুলে পথ হারাবো পথেই নেমে, পথেরই ভুলে.. গত জন্মান্তরের হিসেব লিখে রাখা সেই খাতায়, তুমি দেখতে চাইলেই পাবে সময়ের ঝরাপাতায়..Read more
জন্মান্তর (পৃথিবী ব্যান্ড)
ব্যান্ড-পৃথিবী
গান -জন্মান্তর
লিরিক্স -কৌশিক চক্রবর্তী
পথের ধারে পড়ে পাওয়া, ছেঁড়া খাতায়
হাজার বছর কেটেছে অনেক, যাওয়া আসায়।
হিসেবে নিকেশ নিয়ম করে, রেখেছি তুলে
পথ হারাবো পথেই নেমে, পথেরই ভুলে..
গত জন্মান্তরের হিসেব
লিখে রাখা সেই খাতায়,
তুমি দেখতে চাইলেই পাবে
সময়ের ঝরাপাতায়..
সময়ের ঝরাপাতায় ..
আলোকিত এই নগরে
কোনায় কোনায় অন্ধকার,
পোড়া সভ্যতার শেষ বন্দরে..
আমি পুড়েছি বহু রাত ….
তবু কেন বারেবারে, ফিরে আসা
See lessআমার চারপাশ নিচ্ছে নিঃশ্বাস,
গানের ভাষায়।
পথের ধরে তোমায় খুঁজি,
সময় অসময়,
কেন জানি আমার আজকাল
বাড়ছে মৃত্যু ভয় …
গত জন্মান্তরের শেষে,
অমরত্ব পাওয়া যায়
তুমি চাইলেই পেতে পারো
সময়ের ঝরাপাতায়..
সময়ের ঝরাপাতায় …
রবীন্দ্রসংগীত- তুমি নব নব রূপে এসো প্রাণে | tumi nabo nabo rupe eso prane lyrics in bengali
Hridoy
তুমি নব নব রূপে এসো প্রাণে। এসো গন্ধে বরনে, এসো গানে। এসো অঙ্গে পুলকময় পরশে, এসো চিত্তে অমৃতময় হরষে, এসো মুগ্ধ মুদিত দু নয়ানে॥ এসো নির্মল উজ্জ্বল কান্ত, এসো সুন্দর স্নিগ্ধ প্রশান্ত, এসো এসো হে বিচিত্র বিধানে। এসো দু:খে সুখে, এসো মর্মে, এসো নিত্য নিত্য সব কর্মে; এসো সকল-কর্ম-অবসানে॥
তুমি নব নব রূপে এসো প্রাণে।
এসো গন্ধে বরনে, এসো গানে।
এসো অঙ্গে পুলকময় পরশে,
এসো চিত্তে অমৃতময় হরষে,
এসো মুগ্ধ মুদিত দু নয়ানে॥
এসো নির্মল উজ্জ্বল কান্ত,
এসো সুন্দর স্নিগ্ধ প্রশান্ত,
এসো এসো হে বিচিত্র বিধানে।
এসো দু:খে সুখে, এসো মর্মে,
এসো নিত্য নিত্য সব কর্মে;
এসো সকল-কর্ম-অবসানে॥
See lessলিরিক্স -বারুদ (পৃথিবী ব্যান্ড) barud by prithibi lyrics in bengali
Hridoy
বারুদ (পৃথিবী ব্যান্ড) আমি বারুদ বুনেছি আমার হৃদয়ে অলিন্দে আমার অস্তিত্ব বিপন্ন প্রতিনিয়ত ছুরির আঘাতে আমার মায়ের শরীর পুড়ছে ভালো লাশকাটা ঘরে আমার বোনের কচি গাল আজ বাজারে নিলাম ধরে কিসের যন্ত্রণা আমি শুয়েছি সারাক্ষণ লাশে ছড়া শুয়োরের মতো বেইমান প্রজনন।. আমার শিরায় শিরায় রক্তের মিছিল সংশয় এই প্রRead more
বারুদ (পৃথিবী ব্যান্ড)
আমি বারুদ বুনেছি
আমার হৃদয়ে অলিন্দে
আমার অস্তিত্ব বিপন্ন
প্রতিনিয়ত ছুরির আঘাতে
আমার মায়ের শরীর পুড়ছে
ভালো লাশকাটা ঘরে
আমার বোনের কচি গাল
আজ বাজারে নিলাম ধরে
কিসের যন্ত্রণা আমি শুয়েছি সারাক্ষণ
লাশে ছড়া শুয়োরের মতো
বেইমান প্রজনন।.
আমার শিরায় শিরায় রক্তের মিছিল
সংশয় এই প্রাণে
যত নির্বাচন আজ ভাগাড়ে যাক
আমি জন্ম নেব আগুনে।
এসো আমরা গড়ি নতুন পৃথিবী এই আশায়
যেখানে মানুষ বাঁচতে চায়,
বাঁধতে চায় ভালোবাসায় ।
ধ্বংস হোক যত মানব শত্রু সব
এখানে জন্ম নিক নবজাতক।
আমি স্বপ্ন বেঁধেছি
আমার পিস্তলের ট্রিগারে।
আমার বালিশে বারুদ
আমার ঘুম নেই দুচোখে
আমি বিষ ঢেলেছি
আমার প্রেমিকার বুক জুড়ে।
আমি কসাই সেজে নিজের মাংস
বিক্রি করেছি বাজারে।
কিসের এ যন্ত্রনা আমার নিথর শরীরে
আজো শুনি গোগানি
প্রতিবন্ধকতার বিচারে
আমি বিশ্বাসঘাতক দাঁতের বিষে
কত মানুষ মেরেছি
আমার ঝলসানো প্রাণের বারুদ বাগানে
একটা বিপ্লব দেখেছি।
এসো আমরা গড়ি নতুন পৃথিবী এই আশায়
See lessযেখানে মানুষ বাঁচতে চায়,
বাঁধতে চায় ভালোবাসায় ।
ধ্বংস হোক যত মানব শত্রু সব
এখানে জন্ম নিক নবজাতক।
কবিতা : রথযাত্রা (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Rath Yatra Poem in Bengali
Hridoy
রথযাত্রা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রথযাত্রার দিন কাছে। তাই রানী রাজাকে বললে, ‘চলো, রথ দেখতে যাই।’ রাজা বললে, ‘আচ্ছা।’ ঘোড়াশাল থেকে ঘোড়া বেরোল, হাতিশাল থেকে হাতি। ময়ূরপংখি যায় সারে সারে, আর বল্লম হাতে সারে সারে সিপাইসান্ত্রি। দাসদাসী দলে দলে পিছে পিছে চলল। কেবল বাকি রইল একজন। রাজবাড়ির ঝাঁটার কাঠি কুড়িযRead more
রথযাত্রা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রথযাত্রার দিন কাছে।
তাই রানী রাজাকে বললে, ‘চলো, রথ দেখতে যাই।’
রাজা বললে, ‘আচ্ছা।’
ঘোড়াশাল থেকে ঘোড়া বেরোল, হাতিশাল থেকে হাতি। ময়ূরপংখি যায় সারে সারে, আর বল্লম হাতে সারে সারে সিপাইসান্ত্রি। দাসদাসী দলে দলে পিছে পিছে চলল।
কেবল বাকি রইল একজন। রাজবাড়ির ঝাঁটার কাঠি কুড়িয়ে আনা তার কাজ।
সর্দার এসে দয়া করে তাকে বললে, ‘ওরে, তুই যাবি তো আয়।’
সে হাত জোড় করে বললে, ‘আমার যাওয়া ঘটবে না।’
রাজার কানে কথা উঠল, সবাই সঙ্গে যায়, কেবল সেই দুঃখীটা যায় না।
রাজা দয়া করে মন্ত্রীকে বললে, ‘ওকেও ডেকে নিয়ো।’
রাস্তার ধারে তার বাড়ি। হাতি যখন সেইখানে পৌঁছল মন্ত্রী তাকে ডেকে বললে, ‘ওরে দুঃখী, ঠাকুর দেখবি চল্।’
সে হাত জোড় করে বলল, ‘কত চলব। ঠাকুরের দুয়ার পর্যন্ত পৌঁছই এমন সাধ্য কি আমার আছে।’
মন্ত্রী বললে, ‘ভয় কী রে তোর, রাজার সঙ্গে চলবি।’
সে বললে, ‘সর্বনাশ! রাজার পথ কি আমার পথ।’
মন্ত্রী বললে, ‘তবে তোর উপায়? তোর ভাগ্যে কি রথযাত্রা দেখা ঘটবে না।’
সে বললে, ‘ঘটবে বই কি। ঠাকুর তো রথে করেই আমার দুয়ারে আসেন।’
মন্ত্রী হেসে উঠল। বললে, ‘তোর দুয়ারে রথের চিহ্ন কই।’
দুঃখী বললে, ‘তাঁর রথের চিহ্ন পড়ে না।’
মন্ত্রী বললে, ‘কেন বল্ তো।’
দুঃখী বললে, ‘তিনি যে আসেন পুষ্পকরথে।’
মন্ত্রী বললে, ‘কই রে সেই রথ।’
দুঃখী দেখিয়ে দিলে, তার দুয়ারের দুই পাশে দুটি সূর্যমুখী ফুটে আছে।
রথযাত্রা লোকারণ্য মহা ধুমধাম (ভক্তিভাজন) rath yatra lokaranya, maha dhum dham lyrics
Hridoy
ভক্তিভাজন- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম, ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম। পথ ভাবে আমি দেব রথ ভাবে আমি, মূর্তি ভাবে আমি দেব–হাসে অন্তর্যামী।
ভক্তিভাজন- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম,
See lessভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম।
পথ ভাবে আমি দেব রথ ভাবে আমি,
মূর্তি ভাবে আমি দেব–হাসে অন্তর্যামী।
ছন্নছাড়া (অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত) achintya kumar sengupta kobita chonnochara lyrics
Hridoy
ছন্নছাড়া | chonnochara অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া — আঁকাবাঁকা শুকনো কতকগুলি কাঠির কঙ্কাল শূন্যের দিকে এলোমেলো তুলে দেওয়া, রুক্ষ রুষ্ট রিক্ত জীর্ণ লতা নেই পাতা নেই ছায়া নেই ছাল-বাকল নেই নেই কোথাও এক আঁচড় সবুজের প্রতিশ্রুতি এক বিন্দু সরসের সম্ভাবনাRead more
ছন্নছাড়া | chonnochara
অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত
গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে
গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া —
আঁকাবাঁকা শুকনো কতকগুলি কাঠির কঙ্কাল
শূন্যের দিকে এলোমেলো তুলে দেওয়া,
রুক্ষ রুষ্ট রিক্ত জীর্ণ
লতা নেই পাতা নেই ছায়া নেই ছাল-বাকল নেই
নেই কোথাও এক আঁচড় সবুজের প্রতিশ্রুতি
এক বিন্দু সরসের সম্ভাবনা |
ওই পথ দিয়ে
জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি ক’রে |
ড্রাইভার বললে, ওদিকে যাব না |
দেখছেন না ছন্নছাড়া ক’টা বেকার ছোকরা
রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে–
চোঙা প্যান্ট, চোখা জুতো, রোখা মেজাজ, ঠোকা কপাল–
ওখান দিয়ে গেলেই গাড়ি থামিয়ে লিফট চাইবে,
বলবে, হাওয়া খাওয়ান |
ওরা কারা ?
চেনেন না ওদের ?
ওরা বিরাট এক নৈরাজ্যের –এক নেই রাজ্যের বাসিন্দে |
ওদের কিছু নেই
ভিটে নেই ভিত নেই রীতি নেই নীতি নেই
আইন নেই কানুন নেই বিনয় নেই ভদ্রতা নেই
শ্লীলতা-শালীনতা নেই |
ঘেঁষবেন না ওদের কাছে |
কেন নেই ?
ওরা যে নেই রাজ্যের বাসিন্দে–
ওদের জন্যে কলেজে সিট নেই
অফিসে চাকরি নেই
কারখানায় কাজ নেই
ট্রামে-বাসে জায়গা নেই
মেলায়-খেলায় টিকিট নেই
হাসপাতালে বেড নেই
বাড়িতে ঘর নেই
খেলবার মাঠ নেই
অনুসরণ করবার নেতা নেই
প্রেরণা-জাগানো প্রেম নেই
ওদের প্রতি সম্ভাষণে কারু দরদ নেই–
ঘরে-বাইরে উদাহরণ যা আছে
তা ক্ষুধাহরণের সুধাক্ষরণের উদাহরণ নয়,
তা সুধাহরণের ক্ষুধাভরণের উদাহরণ–
শুধু নিজের দিকে ঝোল- টানা |
এক ছিল মধ্যবিত্ত বাড়ির এক চিলতে ফালতু এক রক
তাও দিয়েছে লোপট ক’রে |
তাই এখন পথে এসে দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে |
কোথ্বকে আসছে সেই অতীতের স্মৃতি নেই |
কোথায় দাঁড়িয়ে আছে সেই বর্তমানের গতি নেই
কোথায় চলেছে নেই সেই ভবিষ্যতের ঠিকানা |
সেচ-হীন ক্ষেত
মণি-হীন চোখ
চোখ-হীন মুখ
একটা স্ফুলিঙ্গ-হীন ভিজে বারুদের স্তুপ |
আমি বললুম, না ওদিক দিয়েই যাব,
ওখান দিয়েই আমার শর্টকাট |
ওদের কাছাকাছি হতেই মুখ বাড়িয়ে
জিজ্ঞেস করলুম,
তোমাদের ট্যাক্ সি লাগবে ? লিফট চাই ?
আরে এই তো ট্যাক্ সি, এই তো ট্যাক্ সি, লে হালুয়া
সোল্লাসে চেঁচিয়ে উঠল ওরা
সিটি দিয়ে উঠল
পেয়ে গেছি পেয়ে গেছি চল পানসি বেলঘরিয়া |
তিন-তিনটে ছোকরা উঠে পড়ল ট্যাক্ সীতে,
বললুম কদ্দুর যাবে |
এই কাছেই | ওই দেখতে পাচ্ছেন না ভিড় ?
সিনেমা না, জলসা না, নয় কোনো ফিল্মি তারকার অভ্যর্থনা |
একটা নিরীহ লোক গাড়িচাপা পড়েছে,
চাপা দিয়ে গাড়িটা উধাও–
আমাদের দলের কয়েকজন গাড়িটার পিছে ধাওয়া করেছে
আমরা খালি ট্যাক্ সি খুঁজছি |
কে সে লোক ?
একটা বেওয়ারিশ ভিখিরি |
রক্তে-মাংসে দলা পাকিয়ে গেছে |
ওর কেউ নেই কিছু নেই
শোবার জন্য ফুটপাথ আছে তো মাথার উপরে ছাদ নেই,
ভিক্ষার জন্য পাত্র একটা আছে তো
তার মধ্যে প্রকান্ড একটা ফুটো |
রক্তে মাখামাখি সেই দলা-পাকানো ভিখিরিকে
ওরা পাঁজাকোলা করে ট্যাক্ সির মধ্যে তুলে নিল |
চেঁচিয়ে উঠল সমস্বরে –আনন্দে ঝংকৃত হয়ে–
প্রাণ আছে, এখনো প্রাণ আছে |
রক্তের দাগ থেকে আমার ভব্যতা ও শালীনতাকে বাঁচাতে গিয়ে
আমি নেমে পড়লুম তাড়াতাড়ি |
তারপর সহসা শহরের সমস্ত কর্কশে-কঠিনে
সিমেন্টে-কংক্রিটে |
ইটে-কাঠে-পিচে-পাথরে দেয়ালে-দেয়ালে
বেজে উঠল এক দুর্বার উচ্চারণ
এক প্রত্যয়ের তপ্ত শঙ্খধ্বনি–
প্রাণ আছে, এখনো প্রাণ আছে
সমস্ত বাধা-নিষেধের বাইরেও
আছে অস্তিত্বের অধিকার |
ফিরে আসতেই দেখি
গলির মোড়ে গাছের সেই শুকনো বৈরাগ্য বিদীর্ণ ক’রে
বেরিয়ে পড়েছে হাজার-হাজার সোনালি কচি পাতা
মর্মরিত হচ্ছে বাতাসে,
দেখতে দেখতে গুচ্ছে গুচ্ছে উথলে উঠছে ফুল
ঢেলে দিয়েছে বুকের সুগন্ধ,
উড়ে এসেছে রঙ-বেরঙের পাখি
শুরু করেছে কলকন্ঠের কাকলি,
ধীরে ধীরে ঘন পত্রপুঞ্জে ফেলেছে স্নেহার্দ্র দীর্ঘছায়া
যেন কোনো শ্যামল আত্মীয়তা |
অবিশ্বাস্য চোখে চেয়ে দেখলুম
কঠোরের প্রচ্ছন্নে মাধুর্যের বিস্তীর্ণ আয়োজন |
প্রাণ আছে, প্রাণ আছে– শুধু প্রাণই আশ্চর্য সম্পদ
এক ক্ষয়হীন আশা
এক মৃত্যুহীন মর্যাদা |
কবিতা সম্মন্দে
এই কবিতাটি ’পুব-পশ্চিম’ কবিতা গ্রন্থের অন্তর্গত । অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত ‘কল্লোল’ গোষ্ঠীর অন্যতম লেখক হিসেবে বাংলা সাহিত্যে অতি আধুনিক ধারা সৃষ্টিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯২৫-এ তিনি ‘কল্লোল’ পত্রিকা পত্রিকা প্রকাশের সামগ্রিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন। একদিকে রোমান্টিকতা, অন্যদিকে গণচেতনা তাঁর কবিতার ভাববস্তু নির্মাণে বৈচিত্র্য এনেছে।এইসব কবির সমবায়ে বাংলা কবিতায় প্রকৃত আধুনিকতার সৃষ্টি হয়।
See less