1. আজি দখিন-দুয়ার খোলা, এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো। দিব হৃদয়দোলায় দোলা, এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো॥ নব শ্যামল শোভন রথে এসো বকুল-বিছানো পথে, এসো বাজায়ে ব্যাকুল বেণু মেখে পিয়ালফুলের রেণু, এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো॥ এসো ঘনপল্লবপুঞ্জে এসো হে, এসো হে, এসো হে। এসো বনমল্লিকাকRead more

    আজি দখিন-দুয়ার খোলা,

    এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো।

    দিব হৃদয়দোলায় দোলা,

    এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো॥

    নব শ্যামল শোভন রথে এসো বকুল-বিছানো পথে,

    এসো বাজায়ে ব্যাকুল বেণু মেখে পিয়ালফুলের রেণু,

    এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো॥

    এসো ঘনপল্লবপুঞ্জে এসো হে, এসো হে, এসো হে।

    এসো বনমল্লিকাকুঞ্জে এসো হে, এসো হে, এসো হে।

    মৃদু মধুর মদির হেসে এসো পাগল হাওয়ার দেশে,

    তোমার উতলা উত্তরীয় তুমি আকাশে উড়ায়ে দিয়ো–

    এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত, এসো॥

    See less
  2. চৈত্র পবনে মন চিত্ত বনে বাণীমঞ্জরী সঞ্চলিতা ওগো ললিতা।। যদি বিজনে দিন বহে যায় খর তপনে ঝরে পড়ে হায়। অনাদরে হবে ধূলিদলিতা ওগো ললিতা।। তোমার লাগিয়া আছি পথ চাহি বুঝি বেলা আর নাহি নাহি। বনছায়াতে তারে দেখা দাও করুণ হাতে তুলে নিয়ে যাও। কণ্ঠহারে করো সঙ্কলিতা ওগো ললিতা।।

    চৈত্র পবনে মন চিত্ত বনে

    বাণীমঞ্জরী সঞ্চলিতা

    ওগো ললিতা।।

    যদি বিজনে দিন বহে যায়

    খর তপনে ঝরে পড়ে হায়।

    অনাদরে হবে ধূলিদলিতা

    ওগো ললিতা।।

    তোমার লাগিয়া আছি পথ চাহি

    বুঝি বেলা আর নাহি নাহি।

    বনছায়াতে তারে দেখা দাও

    করুণ হাতে তুলে নিয়ে যাও।

    কণ্ঠহারে করো সঙ্কলিতা

    ওগো ললিতা।।

    See less
  3. This answer was edited.

    আমাদের বিদ্যালয় সূচনা: আমাদের বিদ্যালয়ের নাম বিদ্যাসাগর উচ্চ বিদ্যালয়। ইহা পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় অবস্থিত। ইতিহাস ও ঐতিহ্য: আমাদের বিদ্যালয় আমাদের জেলার এক অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইহা ১৯৬৫ সনে স্থাপিত হয়। যাত্রারম্ভে ইহা একটি বেসরকারী প্রতিষ্টান ছিল কিন্তু পরবর্তীকালে সরকারি বিদ্যালয় পরRead more

    আমাদের বিদ্যালয়

    সূচনা: আমাদের বিদ্যালয়ের নাম বিদ্যাসাগর উচ্চ বিদ্যালয়। ইহা পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় অবস্থিত।

    ইতিহাস ও ঐতিহ্য: আমাদের বিদ্যালয় আমাদের জেলার এক অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইহা ১৯৬৫ সনে স্থাপিত হয়। যাত্রারম্ভে ইহা একটি বেসরকারী প্রতিষ্টান ছিল কিন্তু পরবর্তীকালে সরকারি বিদ্যালয় পরিণত হয়। আমাদের অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য জ্ঞানী ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় এই স্কুল স্থাপিত হয়।

    অবস্থান: আমাদের স্কুল বর্ধমান জেলার উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থিত। জেলার মহকুমা থেকে আমাদের স্কুলের দূরত্ব অতি সামান্য। জাতীয় রাস্তার পাশে থাকায় এই স্কুলের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই উন্নত।

    অবকাঠামো: আমাদের বিদ্যালয়ে আঠারো টি শ্রেণিকক্ষ, দুইটি শিক্ষকদের কক্ষ এবং একটি কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে। তাছাড়াও আমাদের বিদ্যালয়ে একটি লাইব্রেরী এবং একটি সাইন্স ল্যাবরেটরি ও আছে। ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার্থে আমাদের স্কুলের সম্মুখে একটি খেলার মাঠ ও পার্কিংয়ের ব্যবস্থা আছে।
    আমাদের স্কুলে প্রায় আট শত ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তাদেরকে সর্বমোট পনেরো জন শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়মিত শিক্ষা দান করেন।

    সহপাঠ ক্রমিক কার্যাবলী: প্রত্যেকদিন সমাবেশের মধ্যে দিয়েই আমাদের স্কুল আরম্ভ হয়। সমাবেশে শিক্ষকরা বিভিন্ন বিষয়ের উপর বক্তৃতা দিয়ে থাকেন এবং ছাত্ররা অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর তাদের মতামত উপস্থাপন করে। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে নানারকম সামাজিক এবং ধার্মিক উৎসব, বিশেষ বিশেষ দিবস খুব গুরুত্ব সহকারে পালন করা হয়।

    উপসংহার: আমাদের বিদ্যালয় ভালো শিক্ষা এবং ভালো ফলাফলের জন্য পুরো জেলায় শিক্ষানুরাগীদের মধ্যে এক বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। প্রকৃত অর্থে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সবাই বিদ্যালয়ের কল্যাণ কামনা করে। আমি এই বিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে অনেক গর্ববোধ করে থাকি।

    See less
  4. This answer was edited.

    দোল পূর্ণিমা বা দোল যাত্রা:- অসম, বাংলা এবং উড়িষ্যায় দোল পূর্ণিমা বা দোল যাত্রা একটি প্রধান উৎসব। ইহা একটি হিন্দু বৈষ্ণব উৎসব। বহির্বঙ্গে পালিত হোলি উৎসবটির সঙ্গে দোলযাত্রা উৎসবটি সম্পর্কযুক্ত। এই উৎসবের অপর নাম বসন্তোৎসব। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। দোলযাত্রা নিয়ে কুইজ দRead more

    দোল পূর্ণিমা বা দোল যাত্রা:-

    অসম, বাংলা এবং উড়িষ্যায় দোল পূর্ণিমা বা দোল যাত্রা একটি প্রধান উৎসব। ইহা একটি হিন্দু বৈষ্ণব উৎসব। বহির্বঙ্গে পালিত হোলি উৎসবটির সঙ্গে দোলযাত্রা উৎসবটি সম্পর্কযুক্ত। এই উৎসবের অপর নাম বসন্তোৎসব। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

    দোলযাত্রা নিয়ে কুইজ দেখুন এখানে

    বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, ফাল্গুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির বা গুলাল নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগণের সহিত রং খেলায় মেতেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হয়। দোলযাত্রার দিন সকালে তাই রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ আবির ও গুলালে স্নাত করে দোলায় চড়িয়ে কীর্তনগান সহকারে শোভাযাত্রায় বের করা হয়। এরপর ভক্তেরা আবির ও গুলাল নিয়ে পরস্পর রং খেলেন। দোল উৎসবের অনুষঙ্গে ফাল্গুনী পূর্ণিমাকে দোলপূর্ণিমা বলা হয়। আবার এই পূর্ণিমা তিথিতেই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম বলে একে গৌরপূর্ণিমা নামেও অভিহিত করা হয়।

    দোলযাত্রা উৎসবের একটি ধর্মনিরপেক্ষ দিকও রয়েছে। এই দিন সকাল থেকেই নারীপুরুষ নির্বিশেষে আবির, গুলাল ও বিভিন্ন প্রকার রং নিয়ে খেলায় মত্ত হয়। শান্তিনিকেতনে বিশেষ নৃত্যগীতের মাধ্যমে বসন্তোৎসব পালনের রীতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল থেকেই চলে আসছে। দোলের পূর্বদিন খড়, কাঠ, বাঁশ ইত্যাদি জ্বালিয়ে এক বিশেষ বহ্ন্যুৎসবের আয়োজন করা হয়। এই বহ্ন্যুৎসব হোলিকা দহন বা মেড়াপোড়া নামে পরিচিত। উত্তর ভারতে হোলি উৎসবটি বাংলার দোলযাত্রার পরদিন পালিত হয়।

    তাৎপর্য: দোলযাত্রা বা হোলি উৎসব সংক্রান্ত পৌরাণিক উপাখ্যান ও লোককথাগুলি মূলত দুই প্রকার: প্রথমটি দোলযাত্রার পূর্বদিন পালিত বহ্ন্যুৎসব হোলিকাদহন বা মেড়াপোড়া সংক্রান্ত, এবং দ্বিতীয়টি রাধা ও কৃষ্ণের দোললীলা বা ফাগুখেলা কেন্দ্রিক কাহিনী।

    সাংস্কৃতিক তাৎপর্য : ভারতবর্ষের বিভিন্ন হিন্দু ঐতিহ্যেই হোলি উৎসবের সাংস্কৃতিক তাৎপর্য রয়েছে। এটি একটি উৎসবমুখর দিন যখন একজন তার অতীতের ভুলগুলো ভুলে যায়। এই দিনে মানুষেরা একে অপরের মধ্যকার ঝগড়া-বিবাদ মিটমাট করে ফেলে, এই দিনে তারা এসব ঝগড়া বিবাদ ভুলে যায় ও ক্ষমা করে দেয়। তারা পুরনো ঋণ মাফ করে দেয়, এবং নতুন করে চুক্তি শুরু করে। হোলি উৎসব একই সাথে বসন্তের আগমন বার্তাও নিয়ে আসে। অনেকের কাছে এটা নতুন বছরের শুরুকে নির্দেশ করে। এটি মানুষের জন্য ঋতু পরিবর্তনকে উপভোগ করা ও নতুন বন্ধু বানাবার উৎসব

    শান্তিনিকেতনের বসন্তোৎসব : দোলযাত্রা উৎসব শান্তিনিকেতনে বসন্তোৎসব নামে পরিচিত। অতীতে শান্তিনিকেতনের বিদ্যালয়ে বসন্তের আগমন উপলক্ষে একটি ছোটো ঘরোয়া অনুষ্ঠানে নাচগান, আবৃত্তি ও নাট্যাভিনয় করা হত। পরবর্তীকালে এই অনুষ্ঠানটি পরিব্যপ্ত হয়ে শান্তিনিকেতনের অন্যতম জনপ্রিয় উৎসব বসন্তোৎসবের আকার নেয়। ফাল্গুনী পূর্ণিমা অর্থাৎ দোলপূর্ণিমার দিনই শান্তিনিকেতনে বসন্তোৎসবের আয়োজন করা হয়। পূর্বরাত্রে বৈতালিক হয়। দোলের দিন সকালে ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল গানটির মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। সন্ধ্যায় গৌরপ্রাঙ্গনে রবীন্দ্রনাথের কোনো নাটক অভিনীত হয়।

    See less
  5. দোল পূর্ণিমার নিশি নির্মল আকাশ। ধীরে ধীরে বহিতেছে মলয় বাতাস ।। লক্ষ্মীদেবী বামে করি বসি নারায়ণ। করিতেছে নানা কথা সুখে আলাপন || সেইকালে বীণা হস্তে নারদ মুনিবর। লক্ষ্মী নারায়ণে নমি কহিল বিস্তর। ঋষি বলে মাগাে তব কেমন বিচার। সর্বদা চঞ্চলা হয়ে ফির দ্বারে দ্বার ৷ মর্ত্যবাসী সদা তাই ভুগিছে দুর্গতি। ক্ষRead more

    দোল পূর্ণিমার নিশি নির্মল আকাশ।
    ধীরে ধীরে বহিতেছে মলয় বাতাস ।।
    লক্ষ্মীদেবী বামে করি বসি নারায়ণ।
    করিতেছে নানা কথা সুখে আলাপন ||
    সেইকালে বীণা হস্তে নারদ মুনিবর।
    লক্ষ্মী নারায়ণে নমি কহিল বিস্তর।
    ঋষি বলে মাগাে তব কেমন বিচার।
    সর্বদা চঞ্চলা হয়ে ফির দ্বারে দ্বার ৷
    মর্ত্যবাসী সদা তাই ভুগিছে দুর্গতি।
    ক্ষণেকের তরে তব নাহি কোথা স্থিতি।
    প্রতিদিন অন্নভাবে সবে দুঃখ পায়।
    প্রতি গৃহে অনশন জীর্ণ-শীর্ণকায় ॥
    নারদের বাক্য শুনি লক্ষ্মী ঠাকুরাণী।।
    সঘনে নিঃশ্বাস ত্যজি কহে মৃদুবাণী ।।
    বৃহস্পতিবারে মিলি যত এয়ােগণে।
    বাড়িবে ঐশ্বৰ্য্য তাহে তােমার কৃপায়।
    দুঃখ কষ্ট দূরে যাবে তােমার দয়ায় ॥
    শ্রীহরির বাক্য শুনি আনন্দিত মনে।
    মর্তে চলিলেন লক্ষ্মী ব্রত প্রচারণে।
    অবন্তী নগরে লক্ষ্মী হ’ল উপনীত।
    দেখিয়া শুনিয়া হ’ল বড়ই স্তম্ভিত।
    নগরের লক্ষপতি ধনেশ্বর রায়।
    অগাধ ঐশ্বৰ্য্য তার কুবেরের প্রায়।
    সােনার সংসার তার শূন্য হিংসা দ্বেষ ।
    প্রজাগণে পালিত সে পুত্র নির্বিশেষে ॥
    যথাকালে সসম্মানে গেল লােকান্তর ।।
    কভুনা কাহার প্রতি আমি করি রােষ।
    পিতার মৃত্যুর পর সপ্ত সহােদর।
    হইল পৃথক অন্ন সপ্ত সহােদর ||
    নরনারী দুঃখ পায় নিজ কর্মদোষ ॥
    যাও তুমি ঋষির ত্রিলােক ভ্রমণে।
    ইহার বিধান আমি করিব যতনে ॥
    অতঃপর চিন্তি লক্ষ্মী নারায়ণে কয়।।
    কিরূপে হরিব দুঃখ কই দয়াময় ।
    হরি কহে শুন সতী বচন আমার।
    মর্ত্যধামে লক্ষ্মী ব্রত করহ প্রচার ।।।

    বৃহস্পতিবারে মিলি যত এয়ােগণে।
    সন্ধ্যাবেলা পূজার কথা শুনি ভক্তিমনে।
    বাড়িবে ঐশ্বর্যা তাহে তােমার কৃপায়।।
    দুঃখ কষ্ট দূরে যাবে তােমার দয়ায় ||
    শ্রীহরির বাক্য শুনি আনন্দিত মনে।
    মর্তে চলিলেন লক্ষ্মী ব্রত প্রচারণে ॥
    অবন্তী নগরে লক্ষ্মী হ’ল উপনীত।
    দেখিয়া শুনিয়া হ’ল বড়ই স্তম্ভিত।
    নগরের লক্ষপতি ধনেশ্বর রায়।
    অগাধ ঐশ্বর্য তার কুবেরের প্রায়।
    সােনার সংসার তার শূন্য হিংসা দ্বেষ।
    প্রজাগণে পালিত সে পুত্র নির্বিশেষে ৷
    এক অন্নে সাত পুত্র রাখি ধনেশ্বর।
    যথাকালে সসম্মানে গেল লােকান্তর ||
    পিতার মৃত্যুর পর সপ্ত সহােদর।
    হইল পৃথক অন্ন সপ্ত সহােদর ।
    ক্রমে ক্রমে লক্ষ্মীদেবী ছাড়িল সবারে।
    সােনার সংসার সব গেল ছারখারে।
    বৃদ্ধা ধনেশ্বর পত্নী না পারি তিষ্ঠিতে।
    গহণ কাননে যায় জীবন ত্যজিতে।
    হেনকালে ছদ্মবেশে দেবী নারায়ণী।
    বন মাঝে উপনীত হলেন আপনি।

    মধুর বচনে দেবী জিজ্ঞাসে বৃদ্ধারে।
    কিজন্য এসেছ তুমি গহণ কান্তারে ।
    কাঁদিতে কাদিতে বৃদ্ধা অতি দুঃখভরে।
    তাহার ভাগ্যের কথা বলিল লক্ষ্মীরে।
    সহিতে না পারি আর সংসার যাতনা।
    ব্রতকথা শুনি তার ভক্তি উপজিল।
    ত্যজিব জীবন আমি করেছি বাসনা ।
    লক্ষ্মীদেবী বলে শুন আমার বচন।
    মহাপাপ আত্মহত্যা নরকে গমন।
    আমি বলি সাধবী তুমি কর লক্ষ্মীব্রত।
    দুঃখ রবি অস্ত যাবে হবে পূবমত।
    মনেতে লক্ষ্মীর মূর্তি করিয়া চিন্তন।
    একমনে ব্রতকথা করিবে শ্রবণ ।
    ঘরে গিয়ে এয়াে লয়ে কর লক্ষ্মীব্রত।
    যেই গৃহে লক্ষ্মীব্রত গুরুবারে হয়।
    বাঁধা থকে লক্ষ্মী তথা জানিও নিশ্চয় ।
    বলিতে বলিতে দেবী নিজ মূর্তি ধরি।
    দরশন দিল তারে লক্ষ্মী কৃপা করি ।
    মূর্তি হেরি বৃদ্ধা তারে প্রণাম করিল।
    আনন্দিত হয়ে বৃদ্ধা গৃহেতে ফিরিল ৷
    গৃহেতে ফিরিয়া বৃদ্ধা করিল বর্ণন।
    যেরূপে ঘটিল তার দেবী দরশন।
    ব্রতের বিধান সব বধূদের বলে ।
    শুনি বধুগণ ব্রত করে কৌতূহলে ॥
    বধূগণ লয়ে বৃদ্ধা করে লক্ষ্মীব্রত।
    হিংসা দ্বেষ-স্বার্থ ভাব হৈল তিরােহিত।

    মালক্ষ্মী করিল তথা পুনরাগমন।
    অচিরে হইল গৃহ শান্তি নিকেতন।
    দৈবযােগে একদিন বৃদ্ধার আলয়ে।
    উপনীত এক নারী ব্রতের সময়ে ||
    ব্রতকথা শুনি তার ভক্তি উপজিল ।
    লক্ষ্মীব্রত করিবারে মানস করিল ৷
    স্বামী তার চিররুগ্ন অক্ষম অর্জনে।
    ভিক্ষা করি যাহা পায় খায় দুইজনে।
    এই কথা চিন্তি নারী করিছে কামনা।
    নিরােগ স্বামীরে কর চরণে বাসনা ॥
    ঘরে গিয়ে এয়ো লয়ে করো লক্ষ্মীব্রত ।
    ভক্তিসহ সাধবী নারী পুজে বিধিমত ৷৷
    দেবীর কৃপায় তার দুঃখ হলাে দূর।
    পতি হলাে সুস্থ দেহ ঐশ্বৰ্য্য প্রচুর ॥
    কালক্রমে শুভদিনে জন্মিল তনয়।
    সংসার হইল তার সুখের আলয় ।
    দয়াময়ী লক্ষ্মীমাতা সদয় হইল।
    রূপবান পুত্র এক তাহার জন্মিল ||
    এইরূপে লক্ষ্মীব্রত করে ঘরে ঘরে।
    প্রচারিত হলো ক্রমে অবন্তী নগরে।।
    শুন শুন এয়ােগণ এক অপূর্ব ব্যাপার
    ব্রতের মাহাত্ম হ’ল যে ভাবে প্রচার ।

    অবন্তী নগরে এক গৃহস্থ ভবনে।
    এয়ােগণ লক্ষ্মীব্রত করে একমনে ||
    সহসা সেখানে এলাে বণিক তনয়।
    উপনীত হলাে তথা ব্রতের সময় ।
    ধনরত্ন আদি করি ভাই পঞ্চজন।
    পরস্পর অনুগত রয় সবর্জন ।
    ব্রত দেখি হেলা করি সাধুর তনয়।
    বলে একি ব্রত, ইথে কিবা ফলােদায় ॥
    সদাগর বাক্য শুনি বলে বামাগণ।
    করি লক্ষ্মীব্রত যাতে কামনা পূরণ ॥
    পুনরায় কৃপা দৃষ্টি দেন সদাগরে |
    এই ব্রত যে করিবে ধনে জনে তার।
    লক্ষ্মী বরে হবে তার সােনার সংসার
    শুনি তাহা সদাগর বলে অহঙ্কারে
    যে জন অভাবে থাকে সে পূজে উহারে ॥
    সাধুর সংসার হলাে পূর্বের মতন।
    ধনৈশ্বৰ্য ভােগ আদি যা কিছু সম্ভবে।
    সবই তাে আমার আছে আর কিবা হবে৷৷
    ভাগ্যে না থাকিলে লক্ষ্মী কিবা দিবে ধন।
    হেন কথা কভু আমি না শুনি কখন।
    অহঙ্কার বাক্য লক্ষ্মী সহিতে না পারে।
    গর্বের কারণে লক্ষ্মী ছাড়িল তাহারে ||
    অহঙ্কার বাক্য লক্ষ্মী সহিতে না পারে
    গর্বের কারণে লক্ষ্মী ছাড়িল তাহারে ॥
    ধনমদে মত্ত হয়ে লক্ষ্মী করি হেলা।
    নানা রত্ন পূর্ণ তরী বাণিজ্যেতে গেলা।।
    দৈবযােগে লক্ষ্মী কোপে সহ ধনজন।
    সপ্ততরী জলমধ্যে হইল নিমগন ।

    গৃহমধ্যে ধনৈশ্বর্য যা ছিল তাহার।
    বজ্রাঘাতে দগ্ধ হয়ে হলাে ছারখার।
    দূরে গেল ভ্রাতৃভাব হলাে ভিন্ন অন্ন।
    সােনার সংসারে তার সকলে বিপন্ন।
    ভিক্ষাজীবী হায়ে সবে ফিরে ঘরে ঘরে।
    পেটের জ্বালায় ঘােরে দেশ দেশান্তরে।
    এরূপ হইল কেন বুঝিতে পারিল।।
    কেঁদে কেঁদে লক্ষ্মীস্তব করিতে লাগিল৷৷
    সদয়া হইল লক্ষ্মী তাহার উপরে।
    পুনরায় কৃপা দৃষ্টি দেন সদাগরে ।
    মনে মনে মা লক্ষ্মীরে করিয়া প্রণাম
    ব্রতের সংকল্প করি আসে নিজ ধাম॥
    লক্ষ্মীব্রত করে সাধু লয়ে বধুগণ।।
    সাধুর সংসার হলাে পূর্বের মতন |
    এইভাবে লক্ষ্মীব্রত মর্ত্যেতে প্রচার।
    সদা মনে রেখাে সবে লক্ষ্মীব্রত সার।
    এই ব্রত যেই নারী করে একমনে।।
    লক্ষ্মীর কৃপায় সেই বাড়ে ধনে জনে ।
    করযােড় করি হাত ভক্তি যুক্ত মনে।
    করহ প্রণাম এবে যে থাক যেখানে।
    ব্রতকথা যেবা পড়ে যেবা রাখে ঘরে ।
    লক্ষ্মীর কৃপায় তার মনােবাঞ্ছা পুরে ॥
    লক্ষ্মীর ব্রতের কথা বড় মধুময়।
    প্রণাম করিয়া যাও যে যার আলয় ।
    লক্ষ্মী ব্রতকথা হেথা হৈল সমাপন।
    মনের আনন্দে বল লক্ষ্মীনারায়ণ।

    See less
  6. যাও যাও গিরি যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী, উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে, যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী, উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে। আমি দেখেছি স্বপন নারদ-বচন উমা মা-মা বলে কাঁদিছে, যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী, উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে। ভাঙর ভিখারী জামাই তোমার, সোনার ভ্রমরী গৌরী আমার- ভাঙর ভিখারী জামাই তোমার, সোনার ভ্রমরী গৌরী আমার। আমRead more

    যাও যাও গিরি

    যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী,
    উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে,
    যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী,
    উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে।
    আমি দেখেছি স্বপন নারদ-বচন
    উমা মা-মা বলে কাঁদিছে,
    যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী,
    উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে।

    ভাঙর ভিখারী জামাই তোমার,
    সোনার ভ্রমরী গৌরী আমার-
    ভাঙর ভিখারী জামাই তোমার,
    সোনার ভ্রমরী গৌরী আমার।
    আমার উমার যত বসন-ভূষণ,
    আমার উমার যত বসন-ভূষণ
    ভোলা তাও বেচে ভাঙ খেয়েছে।
    যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী,
    উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে।

    ভাঙেতে ভোলার তৃপ্তি বড়ো,
    ত্রিভুবনের ভাঙ করেছে জড়ো-
    ভাঙেতে ভোলার তৃপ্তি বড়ো,
    ত্রিভুবনের ভাঙ করেছে জড়ো।
    ধুতরার বীচি ভাঙেরই গুঁড়া,
    ভোলা, ধুতরার বীচি ভাঙেরই গুঁড়া,
    আমার উমার বদনে দিতেছে।
    যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী,
    উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে।

    See less
  7. দোল উৎসব সুচনাঃ- হোলি বা দোল রঙের উৎসব প্রায়ই সারা ভারত জুড়ে পালিত হয়। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, প্রতিবছর ফেব্রুয়ারী বা মার্চ মাসে পূর্ণিমাতে ফাগুন পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে প্রতিবছর হোলির উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনে মানুষ তাদের সব সমস্যা ভুলে,নতুন রঙে এবং নতুন ভাবে তাদের সম্পর্ক শক্তিশালী করে তোলে।Read more

    দোল উৎসব

    সুচনাঃ-
    হোলি বা দোল রঙের উৎসব প্রায়ই সারা ভারত জুড়ে পালিত হয়। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, প্রতিবছর ফেব্রুয়ারী বা মার্চ মাসে পূর্ণিমাতে ফাগুন পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে প্রতিবছর হোলির উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনে মানুষ তাদের সব সমস্যা ভুলে,নতুন রঙে এবং নতুন ভাবে তাদের সম্পর্ক শক্তিশালী করে তোলে। এই উৎসব মানুষের মধ্যে ভালবাসা বাড়ায়। এই দিনটি ঐতিহ্যবাহী ও সাংস্কৃতিক উৎসব, এই উৎসব শুধু হিন্দুদের উৎসব নয় এই উৎসব সর্বজনীন।

    হোলি রং এবং প্রেমের উত্সব। প্রতিবছর হিন্দুদের দ্বারা উদযাপন করা একটি বড় উৎসব। এই দিনে প্রেম ও স্নেহের প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বিভিন্ন ধর্ম স্থান তথা রাম জন্মভূমি, কৃষ্ণ জন্মভূমি এই দিনে বিশেষ ভাবে পালিত হয়।

    দোলযাত্রা নিয়ে কুইজ দেখুন এখানে

    হোলি উৎসবে সমাজের ভুমিকাঃ-

    হোলি উৎসব ভারতে প্রতি অঞ্চলে সুখের রঙ আনে, আনে প্রতিটি বাড়িতে, এই উৎসব সুখের রঙ দেয়, তাই এই উৎসব কে রং উৎসব বলা হয়। যেমন প্রকৃতি তার আলো, বায়ু, জল, সমস্ত জীবকে কোনও পার্থক্য ছাড়াই বিতরণ করে। অনুরূপভাবে, হোলির রংগুলি এমন কোনো বৈষম্য ছাড়াই সমস্ত জীবকুলে খেলা করে। আবীরের রঙে রঙিন রং সব রঙিন হয়ে যায়। সমাজের সব জীবকুলে এমনকি সমস্ত জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে এই রং সবারে মধ্যে ছরিয়ে পরে বন্ধুত্ব বৃদ্ধি করতে। তাই হোলি এক সমতা বৃদ্ধি, ও বন্ধুত্ব বৃদ্ধি করার উৎসব।

    মথুরা এবং বৃন্দাবনে হোলি উদযাপন মথুরা এবং বৃন্দাবনে হোলি উৎসবঃ

    মথুরা এবং বৃন্দাবন পবিত্র স্থান যেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সারা বছর ধরে এই পবিত্র জায়গায় দেশ বিদেশ থেকে পর্যটক ঘুরতে আসে। কিন্তু এই সময় দোল যাত্রার সময় প্রচুর মানুষ এই পবিত্র স্থানে ঘুরতে আসে। মথুরা ও বৃন্দাবনে হোলি উৎসব বিখ্যাত এই দিন আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করা হয়, সাত দিন ধরে এই সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলে। রাধা-কৃষ্ণকে নিয়ে লিলা খেলার নৃত্য হয়। জাত্রাপালার মাধ্যমে রাধা-কৃষ্ণর লিলা খেলা তুলে ধরা হয় নতুন প্রজন্মের কাছে। রামায়নের চরিত্র এই সময় তুলে ধরা হয়। বিভিন্ন প্রকারের খাবার, নৃত্য নতুন পোশাক রং মাখা গোটা শহর কিছুটা অন্য রকম। হাসি-খুশিতে কেটে যায় এই সাতদিন। আর এই ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করার জন্য এই দিনে মানুষ ভারতের অন্যান্য শহর থেকে মথুরা এবং বৃন্দাবনে আসে।

    হোলির গুরুত্ব হোলির ও তাৎপর্য :

    এই উৎসব অনেক অনুষ্টানের মাধ্যমে পালন করা হয়, পরিবারের সব সদস্য এবং আত্মীয় একসাথে হোলিকা পুড়িয়ে দেয় এবং হোলি দিবসের পালন করে। এই হোলিকার মৃত্যু এবং প্রতিবছর সে উপলক্ষে হোলিকা পুড়ান হোলির রং খেলার সঙ্গে জরিত।কেউ কেউ মনে করে যে হিরণ্যকশিপ রাজার বোন হোলিকার নাম থেকেই হোলি নাম হয়েছিল ।

    উপসংহারঃ-

    হোলি প্রেম এবং পারস্পরিক মিলনের একটি উৎসব যা একতা ক্রমাগত বৃদ্ধি করে। সবাই হাসে, এবং প্রত্যেক মানুষ হোলির রং পায়। পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের রং এ মিলে মিশে যায়। মানুষ সবার সাথে সুখ -শান্তি ভোগ করে নেয়। হোলি একটি পবিত্র ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে যুক্ত সুখের উৎসবের পাশাপাশি একটি সামাজিক উৎসব ও বটে । আসুন সবাই একসঙ্গে এই উৎসবের মর্যাদা রাখি এবং আনন্দে এই উৎসব উদযাপন করি। সুখশান্তি সবাই মিলে ভাগ করে নেই এবং হোলির রঙ্গে সবাই রঙ্গিন হই।

    See less
  8. শ্রী শ্রী লক্ষ্মীর প্রণাম মন্ত্র : ওঁ বিশ্বরূপস্য ভার্যাসি পদ্মে পদ্মালয়ে শুভে সর্বতঃ পাহি মাং দেবী মহালক্ষ্মী। শ্রী শ্রী লক্ষ্মীর ধ্যান মন্ত্র : ওঁ পাশাক্ষমালিকাম্ভোজ সৃণিভির্যাম্য সৌম্যয়োঃ পদ্মাসনাস্থাং ধায়েচ্চ শ্রীয়ং ত্রৈলোক্য মাতরং। গৌরবর্ণাং স্বরূপাঞ্চ সর্বালঙ্কার ভূষিতাম্, রৌক্নোপদ্মব্যগ্রকরাংRead more

    শ্রী শ্রী লক্ষ্মীর প্রণাম মন্ত্র :
    ওঁ বিশ্বরূপস্য ভার্যাসি পদ্মে পদ্মালয়ে শুভে
    সর্বতঃ পাহি মাং দেবী মহালক্ষ্মী।

    শ্রী শ্রী লক্ষ্মীর ধ্যান মন্ত্র :
    ওঁ পাশাক্ষমালিকাম্ভোজ সৃণিভির্যাম্য সৌম্যয়োঃ
    পদ্মাসনাস্থাং ধায়েচ্চ শ্রীয়ং ত্রৈলোক্য মাতরং।
    গৌরবর্ণাং স্বরূপাঞ্চ সর্বালঙ্কার ভূষিতাম্,
    রৌক্নোপদ্মব্যগ্রকরাং বরদাং দক্ষিণেন তু।

    শ্রী শ্রী লক্ষ্মীর স্তব মন্ত্র :
    ওঁ ত্রৈলোক্য-পূজিতে দেবী কমলে বিষ্ণুবল্লভে,
    যথা ত্বং সুস্থিরা কৃষ্ণে তথা ভব ময়ি স্থিরা।
    ঈশ্বরী কমলা লক্ষ্মীশ্চলা ভূতির্হরিপ্রিয়া,
    পদ্মা পদ্মালয়া সম্পৎপ্রদা শ্রী: পদ্মধারিণী।
    দ্বাদশৈতানি নামানি লক্ষীং সম্পূজ্য য: পঠেৎ,
    স্থিরা লক্ষীর্ভবেত্তস্য পুত্রদারাদিভি: সহ।

    See less
  9. শ্রী শ্রী লক্ষ্মীর প্রণাম মন্ত্র : ওঁ বিশ্বরূপস্য ভার্যাসি পদ্মে পদ্মালয়ে শুভে সর্বতঃ পাহি মাং দেবী মহালক্ষ্মী। শ্রী শ্রী লক্ষ্মীর ধ্যান মন্ত্র : ওঁ পাশাক্ষমালিকাম্ভোজ সৃণিভির্যাম্য সৌম্যয়োঃ পদ্মাসনাস্থাং ধায়েচ্চ শ্রীয়ং ত্রৈলোক্য মাতরং। গৌরবর্ণাং স্বরূপাঞ্চ সর্বালঙ্কার ভূষিতাম্, রৌক্নোপদ্মব্যগ্রকরাংRead more

    শ্রী শ্রী লক্ষ্মীর প্রণাম মন্ত্র :
    ওঁ বিশ্বরূপস্য ভার্যাসি পদ্মে পদ্মালয়ে শুভে
    সর্বতঃ পাহি মাং দেবী মহালক্ষ্মী।

    শ্রী শ্রী লক্ষ্মীর ধ্যান মন্ত্র :
    ওঁ পাশাক্ষমালিকাম্ভোজ সৃণিভির্যাম্য সৌম্যয়োঃ
    পদ্মাসনাস্থাং ধায়েচ্চ শ্রীয়ং ত্রৈলোক্য মাতরং।
    গৌরবর্ণাং স্বরূপাঞ্চ সর্বালঙ্কার ভূষিতাম্,
    রৌক্নোপদ্মব্যগ্রকরাং বরদাং দক্ষিণেন তু।

    শ্রী শ্রী লক্ষ্মীর স্তব মন্ত্র :
    ওঁ ত্রৈলোক্য-পূজিতে দেবী কমলে বিষ্ণুবল্লভে,
    যথা ত্বং সুস্থিরা কৃষ্ণে তথা ভব ময়ি স্থিরা।
    ঈশ্বরী কমলা লক্ষ্মীশ্চলা ভূতির্হরিপ্রিয়া,
    পদ্মা পদ্মালয়া সম্পৎপ্রদা শ্রী: পদ্মধারিণী।
    দ্বাদশৈতানি নামানি লক্ষীং সম্পূজ্য য: পঠেৎ,
    স্থিরা লক্ষীর্ভবেত্তস্য পুত্রদারাদিভি: সহ।

    See less
  10. লক্ষ্মী পাঁচালি ব্রতকথা ও মন্ত্র : শরৎ পূর্ণিমার নিশি নির্মল গগন, মন্দ মন্দ বহিতেছে মলয় পবন। লক্ষ্মীদেবী বামে করি বসি নারায়ণ, বৈকুন্ঠধামেতে বসি করে আলাপন। হেনকালে বীণা হাতে আসি মুনিবর, হরিগুণগানে মত্ত হইয়া বিভোর। গান সম্বরিয়া উভে বন্দনা করিল, বসিতে আসন তারে নারায়ণ দিল। মধুর বচনে লক্ষ্মী জিজ্ঞাসRead more

    লক্ষ্মী পাঁচালি ব্রতকথা ও মন্ত্র :

    শরৎ পূর্ণিমার নিশি নির্মল গগন,
    মন্দ মন্দ বহিতেছে মলয় পবন।
    লক্ষ্মীদেবী বামে করি বসি নারায়ণ,
    বৈকুন্ঠধামেতে বসি করে আলাপন।
    হেনকালে বীণা হাতে আসি মুনিবর,
    হরিগুণগানে মত্ত হইয়া বিভোর।
    গান সম্বরিয়া উভে বন্দনা করিল,
    বসিতে আসন তারে নারায়ণ দিল।
    মধুর বচনে লক্ষ্মী জিজ্ঞাসিল তায়,
    কিবা মনে করি মুনি আসিলে হেথায়।
    কহে মুনি তুমি চিন্ত জগতের হিত,
    সবার অবস্থা আছে তোমার বিদিত।
    সুখেতে আছয়ে যত মর্ত্যবাসীগণ,
    বিস্তারিয়া মোর কাছে করহ বর্ণন।
    লক্ষ্মীমার হেন কথা শুনি মুনিবর,
    কহিতে লাগিলা তারে জুড়ি দুই কর।
    অপার করুণা তোমার আমি ভাগ্যবান,
    মর্ত্যলোকে নাহি দেখি কাহার কল্যাণ।
    সেথায় নাই মা আর সুখ শান্তি লেশ,
    দুর্ভিক্ষ অনলে মাগো পুড়িতেছে দেশ।
    রোগ-শোক নানা ব্যাধি কলিতে সবায়,
    ভুগিতেছে সকলেতে করে হায় হায়।
    অন্ন-বস্ত্র অভাবেতে আত্মহত্যা করে,
    স্ত্রী-পুত্র ত্যাজি সবাই যায় দেশান্তরে।
    স্ত্রী-পুরুষ সবে করে ধর্ম পরিহার,
    সদা চুরি প্রবঞ্চনা মিথ্যা অনাচার।
    তুমি মাগো জগতের সর্বহিতকারী,
    সুখ-শান্তি সম্পত্তির তুমি অধিকারী।
    স্থির হয়ে রহ যদি প্রতি ঘরে ঘরে,
    তবে কি জীবের এত দুঃখ হতে পারে।
    নারদের বাক্য শুনি লক্ষ্মী বিষাদিতা,
    কহিলেন মুনি প্রতি দোষ দাও বৃথা।
    নিজ কর্মফলে সবে করে দুঃখভোগ,
    অকারণে মোর প্রতি কর অনুযোগ।
    শুন হে নারদ বলি যথার্থ তোমায়,
    মম অংশে জন্ম লয় নারী সমুদয়।
    তারা যদি নিজ ধর্ম রক্ষা নাহি করে,
    তবে কি অশান্তি হয় প্রতি ঘরে ঘরে।
    লক্ষ্মীর বচন শুনি মুনি কহে ক্ষুণ্ন মনে,
    কেমনে প্রসন্ন মাতা হবে নারীগণে।
    কিভাবেতে পাবে তারা তব পদছায়া,
    দয়াময়ী তুমি মাগো না করিলে দয়া।
    মুনির বাক্যে লক্ষ্মীর দয়া উপজিল,
    মধুর বচনে তারে বিদায় করিল।
    নারীদের সর্বদুঃখ যে প্রকারে যায়,
    কহ তুমি নারায়ণ তাহার উপায়।
    শুনিয়া লক্ষ্মীর বচন কহে লক্ষ্মীপতি,
    কি হেতু উতলা প্রিয়ে স্থির কর মতি।
    প্রতি গুরুবারে মিলি যত বামাগণে,
    করিবে তোমার ব্রত ভক্তিযুক্ত মনে।
    নারায়ণের বাক্যে লক্ষ্মী অতি হৃষ্টমন,
    ব্রত প্রচারিতে মর্ত্যে করিল গমন।
    মর্ত্যে আসি ছদ্মবেশে ভ্রমে নারায়ণী,
    দেখিলেন বনমধ্যে বৃদ্ধা এক বসিয়া আপনি।
    সদয় হইয়া লক্ষ্মী জিজ্ঞাসিল তারে,
    কহ মাগো কি হেতু এ ঘোর কান্তারে।
    বৃদ্ধা কহে শোন মাতা আমি অভাগিনী,
    কহিল সে লক্ষ্মী প্রতি আপন কাহিনী।
    পতি-পুত্র ছিল মোর লক্ষ্মীযুক্ত ঘর,
    এখন সব ছিন্নভিন্ন যাতনাই সার।
    যাতনা সহিতে নারি এসেছি কানন,
    ত্যাজিব জীবন আজি করেছি মনন।
    নারায়ণী বলে শুন আমার বচন,
    আত্মহত্যা মহাপাপ নরকে গমন।
    যাও মা গৃহেতে ফিরি কর লক্ষ্মী ব্রত,
    আবার আসিবে সুখ তব পূর্ব মত।
    গুরুবারে সন্ধ্যাকালে মিলি এয়োগণ,
    করিবে লক্ষ্মীর ব্রত করি এক মন।
    কহি বাছা পূজা হেতু যাহা প্রয়োজন,
    মন দিয়া শুনি লও আমার বচন।
    জলপূর্ণ ঘটে দিবে সিঁদুরের ফোঁটা,
    আম্রের পল্লব দিবে তাহে এক গোটা।
    আসন সাজায়ে দিবে তাতে গুয়া-পান,
    সিঁদুর গুলিয়া দিবে ব্রতের বিধান।
    ধূপ-দীপ জ্বালাইয়া রাখিবে ধারেতে,
    শুনিবে পাঁচালী কথা দূর্বা লয়ে হাতে।
    একমনে ব্রত কথা করিবে শ্রবণ,
    সতত লক্ষ্মীর মূর্তি করিবে চিন্তন।
    ব্রত শেষে হুলুধ্বনি দিয়ে প্রণাম করিবে,
    এয়োগণে সবে মিলি সিঁদুর পরিবে।
    দৈবযোগে একদিন ব্রতের সময়,
    দীন দুঃখী নারী একজন আসি উপনীত হয়।
    পতি তার চির রুগ্ন অক্ষম অর্জনে,
    ভিক্ষা করি অতি কষ্টে খায় দুই জনে।
    অন্তরে দেবীরে বলে আমি অতি দীনা,
    স্বামীরে কর মা সুস্থ আমি ভক্তি হীনা।
    লক্ষ্মীর প্রসাদে দুঃখ দূর হইলো তার,
    নীরোগ হইল স্বামী ঐশ্বর্য অপার।
    কালক্রমে শুভক্ষণে জন্মিল তনয়,
    হইল সংসার তার সুখের আলয়।
    এইরূপে লক্ষ্মীব্রত করি ঘরে ঘরে,
    ক্রমে প্রচারিত হলো দেশ দেশান্তরে।
    করিতে যে বা দেয় উপদেশ,
    লক্ষীদেবী তার প্রতি তুষ্ট সবিশেষ।
    এই ব্রত দেখি যে বা করে উপহাস,
    লক্ষীর কোপেতে তার হয় সর্বনাশ।

    পরিশেষে হল এক অপূর্ব ব্যাপার,
    যে ভাবে ব্রতের হয় মাহাত্ম্য প্রচার।
    বিদর্ভ নগরে এক গৃহস্থ ভবনে,
    নিয়োজিত বামাগণ ব্রতের সাধনে।
    ভিন্ন দেশবাসী এক বণিক তনয়,
    সি উপস্থিত হল ব্রতের সময়।
    বহুল সম্পত্তি তার ভাই পাঁচজন,
    পরস্পর অনুগত ছিল সর্বক্ষণ।
    ব্রত দেখি হেলা করি সাধুর তনয়,
    বলে এ কিসের ব্রত এতে কিবা ফলোদয়।
    বামাগণ বলে শুনি সাধুর বচন,
    লক্ষী ব্রত করি সবে সৌভাগ্য কারণ।
    সদাগর শুনি ইহা বলে অহঙ্কারে,
    অভাবে থাকিলে তবে পূজিব উহারে।
    ধনজন সুখভোগ যা কিছু সম্ভব,
    সকল আমার আছে আর কিবা অভাব।
    কপালে না থাকে যদি লক্ষ্মী দিবে ধন,
    হেন বাক্য কভু আমি না করি শ্রবণ।
    ধনমদে মত্ত হয়ে লক্ষ্মী করি হেলা,
    নানা দ্রব্যে পূর্ণ তরি বানিজ্যেতে গেলা।
    গর্বিত জনেরে লক্ষ্মী সইতে না পারে,
    সর্ব দুঃখে দুঃখী মাগো করেন তাহারে।
    বাড়ি গেল, ঘর গেল, ডুবিল পূর্ণ তরি,
    চলে গেল ভ্রাতৃভাব হল যে ভিখারী।
    কি দোষ পাইয়া বিধি করিলে এমন,
    অধম সন্তান আমি অতি অভাজন।
    সাধুর অবস্থা দেখি দয়াময়ী ভাবে,
    বুঝাইব কেমনে ইহা মনে মনে ভাবে।
    নানা স্থানে নানা ছলে ঘুরাইয়া ঘানি,
    অবশেষে লক্ষ্মীর ব্রতের স্থানে দিলেন আনি।
    মনেতে উদয় হল কেন সে ভিখারী,
    অপরাধ ক্ষম মাগো কুপুত্র ভাবিয়া।
    অহঙ্কার দোষে দেবী শিক্ষা দিলা মোরে,
    অপার করুণা তাই বুঝালে দীনেরে।
    বুঝালে যদি বা মাগো রাখগো চরণে,
    ক্ষমা কর ক্ষমাময়ী আশ্রিত জনেরে।
    সত্যরূপিনী তুমি কমলা তুমি যে মা,
    ক্ষমাময়ী নাম তব দীনে করি ক্ষমা।
    তুমি বিনা গতি নাই এ তিন ভুবনে,
    স্বর্গেতে স্বর্গের লক্ষ্মী ত্রিবিধ মঙ্গলে।
    তুমি মা মঙ্গলা দেবী সকল ঘরেতে,
    বিরাজিছ মা তুমি লক্ষ্মী রূপে ভূতলে।
    দেব-নর সকলের সম্পদরূপিনী,
    জগৎ সর্বস্ব তুমি ঐশ্বর্যদায়িনী।
    সর্বত্র পূজিতা তুমি ত্রিলোক পালিনী,
    সাবিত্রী বিরিঞ্চিপুরে বেদের জননী।
    ক্ষমা কর এ দাসের অপরাধ যত,
    তোমা পদে মতি যেন থাকে অবিরত।
    শ্রেষ্ঠ হতে শ্রেষ্ট তারা পরমা প্রকৃতি,
    কোপাদি বর্জিতা তুমি মূর্তিমতি ধৃতি।
    সতী সাধ্বী রমণীর তুমি মা উপমা,
    দেবগণ ভক্তি মনে পূজে সবে তোমা।
    রাস অধিষ্ঠাত্রী দেবী তুমি রাসেশ্বরী,
    সকলেই তব অংশ যত আছে নারী।
    কৃষ্ণ প্রেমময়ী তুমি কৃষ্ণ প্রাণাধিকা,
    তুমি যে ছিলে মাগো দ্বাপরে রাধিকা।
    প্রস্ফুটিত পদ্মবনে তুমি পদ্মাবতী,
    মালতি কুসুমগুচ্ছে তুমি মা মালতি।
    বনের মাঝারে তুমি মাগো বনরাণী,
    শত শৃঙ্গ শৈলোপরি শোভিত সুন্দরী।
    রাজলক্ষ্মী তুমি মাগো নরপতি পুরে,
    সকলের গৃহে লক্ষ্মী তুমি ঘরে ঘরে।
    দয়াময়ী ক্ষেমঙ্করী অধমতারিণী,
    অপরাধ ক্ষমা কর দারিদ্র্যবারিণী।
    পতিত উদ্ধার কর পতিতপাবনী,
    অজ্ঞান সন্তানে কষ্ট না দিও জননী।
    অন্নদা বরদা মাতা বিপদনাশিনী,
    দয়া কর এবে মোরে মাধব ঘরণী।
    এই রূপে স্তব করি ভক্তিপূর্ণ মনে,
    একাগ্র মনেতে সাধু ব্রত কথা শোনে।
    ব্রতের শেষে নত শিরে করিয়া প্রণাম,
    মনেতে বাসনা করি আছে নিজধাম।
    গৃহেতে আসিয়া বলে লক্ষ্মীব্রত সার,
    সবে মিলি ব্রত কর প্রতি গুরুবার।
    বধুরা অতি তুষ্ট সাধুর বাক্যেতে,
    ব্রত আচরণ করে সভক্তি মনেতে।
    নাশিল সাধুর ছিল যত দুষ্ট সহচর,
    দেবীর কৃপায় সম্পদ লভিল প্রচুর।
    আনন্দে পূর্ণিত দেখে সাধুর অন্তর,
    পূর্ণতরী উঠে ভাসি জলের উপর।
    সাধুর সংসার হল শান্তি ভরপুর,
    মিলিল সকলে পুনঃ ঐশ্বর্য প্রচুর।
    এভাবে নরলোকে হয় ব্রতের প্রচার,
    মনে রেখ সংসারেতে লক্ষ্মীব্রত সার।
    এ ব্রত যে রমণী করে এক মনে,
    দেবীর কৃপায় তার পূর্ণ ধনে জনে।
    অপুত্রার পুত্র হয় নির্ধনের ধন,
    ইহলোকে সুখী অন্তে বৈকুন্ঠে গমন।
    লক্ষ্মীর ব্রতের কথা বড়ই মধুর,
    অতি যতনেতে রাখ তাহা আসন উপর।

    যে জন ব্রতের শেষে স্তব পাঠ করে,
    অভাব ঘুচিয়া যায় লক্ষ্মীদেবীর বরে।
    লক্ষ্মীর পাঁচালী কথা হল সমাপন,
    ভক্তি করি বর মাগো যার যাহা মন।
    সিঁথিতে সিঁদুর দাও সব এয়োমিলে,
    উলুধ্বনি কর সবে অতি কৌতুহলে।
    দুই হাত জোড় করি ভক্তিযুক্ত মনে,
    নমস্কার করহ সবে দেবীর চরণে,
    নমস্কার করহ সবে দেবীর চরণে।

    See less