1. This answer was edited.

    স্বাধীনতা তুমি – শামসুর রাহমান | shadhinota tumi স্বাধীনতা তুমি রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান। স্বাধীনতা তুমি কাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো মহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা- স্বাধীনতা তুমি শহীদ মিনারে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির উজ্জ্বল সভা স্বাধীনতা তুমি পতাকা-শোভিত শ্লোগান-মুখর ঝাঁঝালোRead more

    স্বাধীনতা তুমি – শামসুর রাহমান | shadhinota tumi

    স্বাধীনতা তুমি
    রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।
    স্বাধীনতা তুমি
    কাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো
    মহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা-
    স্বাধীনতা তুমি
    শহীদ মিনারে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির উজ্জ্বল সভা
    স্বাধীনতা তুমি
    পতাকা-শোভিত শ্লোগান-মুখর ঝাঁঝালো মিছিল।
    স্বাধীনতা তুমি
    ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি।
    স্বাধীনতা তুমি
    রোদেলা দুপুরে মধ্যপুকুরে গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতার।
    স্বাধীনতা তুমি
    মজুর যুবার রোদে ঝলসিত দক্ষ বাহুর গ্রন্থিল পেশী।
    স্বাধীনতা তুমি
    অন্ধকারের খাঁ খাঁ সীমান্তে মুক্তিসেনার চোখের ঝিলিক।
    স্বাধীনতা তুমি
    বটের ছায়ায় তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীর
    শানিত কথার ঝলসানি-লাগা সতেজ ভাষণ।
    স্বাধীনতা তুমি
    চা-খানায় আর মাঠে-ময়দানে ঝোড়ো সংলাপ।
    স্বাধীনতা তুমি
    কালবোশেখীর দিগন্তজোড়া মত্ত ঝাপটা।
    স্বাধীনতা তুমি
    শ্রাবণে অকূল মেঘনার বুক
    স্বাধীনতা তুমি পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিন।
    স্বাধীনতা তুমি
    উঠানে ছড়ানো মায়ের শুভ্র শাড়ির কাঁপন।
    স্বাধীনতা তুমি
    বোনের হাতের নম্র পাতায় মেহেদীর রঙ।
    স্বাধীনতা তুমি বন্ধুর হাতে তারার মতন জ্বলজ্বলে এক রাঙা পোস্টার।
    স্বাধীনতা তুমি
    গৃহিণীর ঘন খোলা কালো চুল,
    হাওয়ায় হাওয়ায় বুনো উদ্দাম।
    স্বাধীনতা তুমি
    খোকার গায়ের রঙিন কোর্তা,
    খুকীর অমন তুলতুলে গালে
    রৌদ্রের খেলা।
    স্বাধীনতা তুমি
    বাগানের ঘর, কোকিলের গান,
    বয়েসী বটের ঝিলিমিলি পাতা,
    যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা।

    See less
    • 1
  2. বিরহ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Biroho By RabindraNath Tagore আমি      নিশি - নিশি কত রচিব শয়ন                    আকুলনয়ন রে !      কত       নিতি - নিতি বনে করিব যতনে                    কুসুমচয়ন রে !      কত       শারদ যামিনী হইবে বিফল ,                    বসন্ত যাবে চলিয়া !      কত       উদিবে তপন আশারRead more

    বিরহ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Biroho By RabindraNath Tagore

    আমি      নিশি – নিশি কত রচিব শয়ন
                       আকুলনয়ন রে !
         কত       নিতি – নিতি বনে করিব যতনে
                       কুসুমচয়ন রে !
         কত       শারদ যামিনী হইবে বিফল ,
                       বসন্ত যাবে চলিয়া !
         কত       উদিবে তপন আশার স্বপন ,
                        প্রভাতে যাইবে ছলিয়া !
         এই       যৌবন কত রাখিব বাঁধিয়া ,
                       মরিব কাঁদিয়া রে !
         সেই      চরণ পাইলে মরণ মাগিব
                       সাধিয়া সাধিয়া রে ।
         আমি      কার পথ চাহি এ জনম বাহি ,
                       কার দরশন যাচি রে !
         যেন      আসিবে বলিয়া কে গেছে চলিয়া ,
                       তাই আমি বসে আছি রে ।
         তাই      মালাটি   গাঁথিয়া পরেছি মাথায়
                       নীলবাসে তনু ঢাকিয়া ,
         তাই      বিজন আলয়ে প্রদীপ জ্বালায়ে
                       একেলা রয়েছি জাগিয়া ।
         ওগো     তাই কত নিশি চাঁদ ওঠে হাসি ,
                       তাই কেঁদে যায় প্রভাতে ।
         ওগো     তাই ফুলবনে মধুসমীরণে
                       ফুটে ফুল কত শোভাতে !

         ওই       বাঁশিস্বর তার আসে বার বার ,
                       সেই   শুধু কেন আসে না !
         এই       হৃদয় – আসন শূন্য যে থাকে ,
                       কেঁদে মরে শুধু বাসনা ।
         মিছে     পরশিয়া কায় বায়ু বহে যায় ,
                       বহে যমুনার লহরী ,
         কেন      কুহু কুহু পিক কুহরিয়া ওঠে —
                        যামিনী যে ওঠে শিহরি ।
         ওগো     যদি নিশিশেষে আসে হেসে হেসে ,
                        মোর হাসি আর রবে কি !
         এই       জাগরণে ক্ষীণ বদন মলিন
                       আমারে হেরিয়া কবে কী !
         আমি      সারা রজনীর গাঁথা ফুলমালা
                       প্রভাতে চরণে ঝরিব ,
         ওগো     আছে সুশীতল যমুনার জল —
                       দেখে তারে আমি মরিব ।

    See less
    • 0
  3. This answer was edited.

    মেঘবালিকার জন্য রুপকথা কবি: জয় গোস্বামী আমি যখন ছোট ছিলাম খেলতে যেতাম মেঘের দলে এক দিন এক মেঘবালিকা প্রশ্ন করল কৌতূহলে “এই ছেলেটা .        নাম কী রে তোর ?” আমি বললাম, .        “ফুসমন্তর!” মেঘবালিকা রেগেই আগুন, “মিথ্যে কথা । নাম কি অমন হয় কখনো ?” .        আমি বললাম, “নিশচয়ই হয়। আগে আমার গল্প শোনো।”Read more

    মেঘবালিকার জন্য রুপকথা

    কবি: জয় গোস্বামী

    আমি যখন ছোট ছিলাম
    খেলতে যেতাম মেঘের দলে
    এক দিন এক মেঘবালিকা
    প্রশ্ন করল কৌতূহলে

    “এই ছেলেটা
    .        নাম কী রে তোর ?”
    আমি বললাম,
    .        “ফুসমন্তর!”

    মেঘবালিকা রেগেই আগুন,
    “মিথ্যে কথা । নাম কি অমন
    হয় কখনো ?”

    .        আমি বললাম,
    “নিশচয়ই হয়। আগে আমার
    গল্প শোনো।”
    সে বলল, “শুনব না, যা—
    সেই তো রানি, সেই তো রাজা
    সেই তো একই ঢালতলোয়ার
    সেই তো একই রাজার কুমার
    পক্ষিরাজে—
    শুনব না আর।
    .        ওসব বাজে।”

    আমি বললাম “তোমার জন্যে
    নতুন ক’রে লিখব তবে।”

    সে বলল, “সত্যি লিখবি ?
    বেশ তা হলে
    মস্ত করে লিখতে হবে।
    মনে থাকবে ?
    লিখেই কিন্তু আমায় দিবি।”
    আমি বললাম, “তোমার জন্যে
    লিখতে পারি এক পৃথিবী।”

    লিখতে লিখতে লেখা যখন
    সবে মাত্র দু-চার পাতা
    হঠাৎ তখন ভূত চাপল
    আমার মাথায়—

    খুঁজতে খুঁজতে চলে গেলাম
    ছোটবেলার মেঘের মাঠে
    গিয়েই দেখি চেনা মুখ তো
    একটিও নেই এ-তল্লাটে

    একজনকো মনে হল
    ওরই মধ্যে অন্যরকম
    এগিয়ে গিয়ে বলি তাকেই!
    “তুমিই কি সেই ? মেঘবালিকা
    তুমি কি সেই ?”

    সে বলেছে, “মনে তো নেই
    আমার ও সব মনে তো নেই।”
    আমি বললাম, “তুমি আমায়
    লেখার কথা বলেছিলে—”
    সে বলল, “সঙ্গে আছে ?
    ভাসিয়ে দাও গাঁয়ের ঝিলে!
    আর হ্যাঁ, শোনো—এখন আমি
    মেঘ নেই আর, সবাই এখন
    বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়।”
    বলেই হঠাৎ এক পশলায়—
    চুল থেকে নখ—আমায় পুরো
    ভিজিয়ে দিয়ে—
    .                অন্য অন্য
    বৃষ্টি বাদল সঙ্গে নিয়ে
    মিলিয়ে গেল খরস্রোতায়
    মিলিয়ে গেল দূরে কোথায়

    দূরে দূরে . . .

    “বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়
    বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়—”
    আপন মনে বলতে বলতে
    আমি কেবল বসে রইলাম
    ভিজে একশা কাপড়জামায়
    গাছের তলায়
    .                বসে রইলাম
    বৃষ্টি নাকি মেঘের জন্য

    এমন সময়
    অন্য একটি বৃষ্টি আমায়
    চিনতে পেরে বলল, “তাতে
    মন খারাপের কী হয়েছে!
    যাও ফিরে যাও—লেখো আবার।
    এখন পুরো বর্ষা চলছে
    তাই আমরা সবাই এখন
    নানান দেশে ভীষণ ব্যস্ত।
    তুমিও যাও, মন দাও গে
    তোমার কাজে—
    বর্ষা থেকে ফিরে আমরা
    নিজেই যাব তোমার কাছে।”

    এক পৃথিবী লিখব আমি
    এক পৃথিবী লিখব বলে
    ঘর ছেড়ে সেই বেরিয়ে গেলাম
    ঘর ছেড়ে সেই ঘর বাঁধলাম
    গহন বনে
    সঙ্গী শুধু কাগজ কলম

    একাই থাকব। একাই দুটো
    ফুটিয়ে খাব—
    .                দু-এক মুঠো
    ধুলো বালি—যখন যারা
    আসবে মনে
    .                তাদের লিখব
    লিখেই যাব!

    এক পৃথিবীর একশোরকম
    স্বপ্ন দেখার
    সাধ্য থাকবে যে-রূপকথার—
    সে-রূপকথা আমার একার।

    ঘাড় গুঁজে দিন
    .                লিখতে লিখতে
    ঘাড় গুঁজে রাত
    .                লিখতে লিখতে
    মুছেছে দিন—মুছেছে রাত
    যখন আমার লেখবার হাত
    অসাড় হল,
    .                মনে পড়ল
    সাল কি তারিখ, বছর কি মাস
    সেসব হিসেব
    .                আর ধরিনি
    লেখার দিকে তাকিয়ে দেখি
    এক পৃথিবী লিখব বলে
    একটা খাতাও
    .                শেষ করিনি।

    সঙ্গে সঙ্গে ঝমঝমিয়ে
    বৃষ্টি এল খাতার উপর
    আজীবনের লেখার উপর
    বৃষ্টি এল এই অরণ্যে
    বাইরে তখন গাছের নীচে
    নাচছে ময়ূর আনন্দিত
    এ-গাছ ও-গাছ উড়ছে পাখি
    বলছে পাখি, “এই অরণ্যে
    কবির জন্য আমরা থাকি।”
    বলছে ওরা, “ কবির জন্যে
    আমরা কোথাও আমরা কোথাও
    আমরা কোথাও হার মানিনি—”

    কবি তখন কুটির থেকে
    তাকিয়ে আছে অনেক দূরে
    বনের পরে মাঠের পরে
    নদীর পরে
    সেই যেখানে সারাজীবন
    বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে
    সেই যেখানে কেউ যায় যায়নি
    কেউ যায় না কোনোদিনই—
    আজ সে কবি দেখতে পাচ্ছে
    সেই দেশে সেই ঝরনাতলায়
    এদিক-ওদিক ছুটে বেড়ায়
    সোনায় মোড়া মেঘহরিণী—
    কিশোরবেলার সেই হরিণী!

    See less
    • 0
  4. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে। পার হয়ে যায় গোরু, পার হয় গাড়ি, দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি। চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা, একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা। কিচিমিচি করে সেথা শালিকের ঝাঁক, রাতে ওঠে থেকে থেকে শেয়ালের হাঁক। আর-পারে আমবন তালবন চলে, গাঁRead more

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

    আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে
    বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।
    পার হয়ে যায় গোরু, পার হয় গাড়ি,
    দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি।

    চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা,
    একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা।
    কিচিমিচি করে সেথা শালিকের ঝাঁক,
    রাতে ওঠে থেকে থেকে শেয়ালের হাঁক।

    আর-পারে আমবন তালবন চলে,
    গাঁয়ের বামুন পাড়া তারি ছায়াতলে।
    তীরে তীরে ছেলে মেয়ে নাইবার কালে
    গামছায় জল ভরি গায়ে তারা ঢালে।

    সকালে বিকালে কভু নাওয়া হলে পরে
    আঁচল ছাঁকিয়া তারা ছোটো মাছ ধরে।
    বালি দিয়ে মাজে থালা, ঘটিগুলি মাজে,
    বধূরা কাপড় কেচে যায় গৃহকাজে।

    আষাঢ়ে বাদল নামে, নদী ভর ভর
    মাতিয়া ছুটিয়া চলে ধারা খরতর।
    মহাবেগে কলকল কোলাহল ওঠে,
    ঘোলা জলে পাকগুলি ঘুরে ঘুরে ছোটে।
    দুই কূলে বনে বনে পড়ে যায় সাড়া,
    বরষার উৎসব জেগে ওঠে পাড়া।।

    See less
    • 0
  5. কেন যে মন খারাপের নেমেছে রাত পাড়াতে বসেছি সব হারাতে খুঁজে দাও খুঁজে দাও যে পথে এগিয়েছে পা সেও আমায় চেনে না আমি তো ফিরে যেতে চাই আমাকে ফিরিয়ে নাও আমি যে কে তোমার তুমি তা বুঝে নাও ও... আমি যে কে তোমার তুমি তা বুঝে নাও আমি চিরদিন তোমারই তো থাকবো না জানিয়ে লোক, দেখা দিবে চোখ বলোনা এ কেমন বাতাস না পাড়িয়েRead more

    কেন যে মন খারাপের
    নেমেছে রাত পাড়াতে
    বসেছি সব হারাতে
    খুঁজে দাও খুঁজে দাও
    যে পথে এগিয়েছে পা
    সেও আমায় চেনে না
    আমি তো ফিরে যেতে চাই
    আমাকে ফিরিয়ে নাও

    আমি যে কে তোমার
    তুমি তা বুঝে নাও
    ও… আমি যে কে তোমার
    তুমি তা বুঝে নাও
    আমি চিরদিন তোমারই তো
    থাকবো

    না জানিয়ে লোক, দেখা
    দিবে চোখ
    বলোনা এ কেমন বাতাস
    না পাড়িয়ে ঘুম, হয়ে যাবে
    চুপ
    তুমি কি এতোই উদাস
    আমি যে কে তোমার
    তুমি তা বুঝে নাও
    ও… আমি যে কে তোমার
    তুমি তা বুঝে নাও
    আমি চিরদিন তোমারই তো
    থাকবো

    তোমাকেই রাত তোমাকেই
    ভোর
    প্রতিদিন ফিরে ফিরে চাই
    তোমাকেই সুর তোমাকেই
    গান
    বলো কেন একে একে যায়
    আমি যে কে তোমার
    তুমি তা বুঝে নাও
    ও… আমি যে কে তোমার
    তুমি তা বুঝে নাও
    আমি চিরদিন তোমারই তো
    থাকবো

    কেন যে মন খারাপের
    নেমেছে রাত পাড়াতে
    বসেছি সব হারাতে
    খুঁজে দাও খুঁজে দাও
    আমি যে কে তোমার
    তুমি তা বুঝে নাও
    ও… আমি যে কে তোমার
    তুমি তা বুঝে নাও
    আমি চিরদিন তোমারই তো
    থাকবো

    See less
    • 0