Bengali Forum Latest Questions

  1. চৈত্র পবনে মন চিত্ত বনে বাণীমঞ্জরী সঞ্চলিতা ওগো ললিতা।। যদি বিজনে দিন বহে যায় খর তপনে ঝরে পড়ে হায়। অনাদরে হবে ধূলিদলিতা ওগো ললিতা।। তোমার লাগিয়া আছি পথ চাহি বুঝি বেলা আর নাহি নাহি। বনছায়াতে তারে দেখা দাও করুণ হাতে তুলে নিয়ে যাও। কণ্ঠহারে করো সঙ্কলিতা ওগো ললিতা।।

    চৈত্র পবনে মন চিত্ত বনে

    বাণীমঞ্জরী সঞ্চলিতা

    ওগো ললিতা।।

    যদি বিজনে দিন বহে যায়

    খর তপনে ঝরে পড়ে হায়।

    অনাদরে হবে ধূলিদলিতা

    ওগো ললিতা।।

    তোমার লাগিয়া আছি পথ চাহি

    বুঝি বেলা আর নাহি নাহি।

    বনছায়াতে তারে দেখা দাও

    করুণ হাতে তুলে নিয়ে যাও।

    কণ্ঠহারে করো সঙ্কলিতা

    ওগো ললিতা।।

    See less
  1. ফিরায়ে দিও না গায়িকাঃ বেগম আক্তার ফিরায়ে দিও না মোরে শূন্য হাতে কুঞ্জে এখনও কুহু কুজনে মাতে, ফিরায়ে দিও না। নাই যদি দাও হাসি, তবু জেনো বাজে বাঁশি সুরেরই আঘাত দিও, সুরেরই আঘাত দিও, এ মধুরাতে। অবহেলা নয় প্রিয় চাহ যদি ব্যথা দিও অশ্রু-মাধুরী এনো, অশ্রু-মাধুরী এনো, এ আঁখিপাতে।   Phiraye diyo na moreRead more

    ফিরায়ে দিও না

    গায়িকাঃ বেগম আক্তার

    ফিরায়ে দিও না মোরে শূন্য হাতে
    কুঞ্জে এখনও কুহু কুজনে মাতে,
    ফিরায়ে দিও না।

    নাই যদি দাও হাসি, তবু জেনো বাজে বাঁশি
    সুরেরই আঘাত দিও, সুরেরই আঘাত দিও,
    এ মধুরাতে।

    অবহেলা নয় প্রিয় চাহ যদি ব্যথা দিও
    অশ্রু-মাধুরী এনো, অশ্রু-মাধুরী এনো,
    এ আঁখিপাতে।

     

    Phiraye diyo na more lyrics:

    Singer: Begum Akhtar

    Firaye dio na more shunno hate
    Kunje ekhono kuhu kujone mate
    Firaye dio na

    Nai jadi dao hashi, tabu jeno baje bashi
    Shureri aghat dio, Shureri aghat dio
    E modhurate

    Obohela noy prio chaho jadi byatha dio
    Asru-madhuri eno, Asru-madhuri eno
    E aakhipate

     

     

     

    See less
  1. যাও যাও গিরি যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী, উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে, যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী, উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে। আমি দেখেছি স্বপন নারদ-বচন উমা মা-মা বলে কাঁদিছে, যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী, উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে। ভাঙর ভিখারী জামাই তোমার, সোনার ভ্রমরী গৌরী আমার- ভাঙর ভিখারী জামাই তোমার, সোনার ভ্রমরী গৌরী আমার। আমRead more

    যাও যাও গিরি

    যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী,
    উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে,
    যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী,
    উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে।
    আমি দেখেছি স্বপন নারদ-বচন
    উমা মা-মা বলে কাঁদিছে,
    যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী,
    উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে।

    ভাঙর ভিখারী জামাই তোমার,
    সোনার ভ্রমরী গৌরী আমার-
    ভাঙর ভিখারী জামাই তোমার,
    সোনার ভ্রমরী গৌরী আমার।
    আমার উমার যত বসন-ভূষণ,
    আমার উমার যত বসন-ভূষণ
    ভোলা তাও বেচে ভাঙ খেয়েছে।
    যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী,
    উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে।

    ভাঙেতে ভোলার তৃপ্তি বড়ো,
    ত্রিভুবনের ভাঙ করেছে জড়ো-
    ভাঙেতে ভোলার তৃপ্তি বড়ো,
    ত্রিভুবনের ভাঙ করেছে জড়ো।
    ধুতরার বীচি ভাঙেরই গুঁড়া,
    ভোলা, ধুতরার বীচি ভাঙেরই গুঁড়া,
    আমার উমার বদনে দিতেছে।
    যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী,
    উমা বড়ো দুঃখে রয়েছে।

    See less
  1. দোল উৎসব সুচনাঃ- হোলি বা দোল রঙের উৎসব প্রায়ই সারা ভারত জুড়ে পালিত হয়। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, প্রতিবছর ফেব্রুয়ারী বা মার্চ মাসে পূর্ণিমাতে ফাগুন পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে প্রতিবছর হোলির উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনে মানুষ তাদের সব সমস্যা ভুলে,নতুন রঙে এবং নতুন ভাবে তাদের সম্পর্ক শক্তিশালী করে তোলে।Read more

    দোল উৎসব

    সুচনাঃ-
    হোলি বা দোল রঙের উৎসব প্রায়ই সারা ভারত জুড়ে পালিত হয়। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, প্রতিবছর ফেব্রুয়ারী বা মার্চ মাসে পূর্ণিমাতে ফাগুন পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে প্রতিবছর হোলির উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনে মানুষ তাদের সব সমস্যা ভুলে,নতুন রঙে এবং নতুন ভাবে তাদের সম্পর্ক শক্তিশালী করে তোলে। এই উৎসব মানুষের মধ্যে ভালবাসা বাড়ায়। এই দিনটি ঐতিহ্যবাহী ও সাংস্কৃতিক উৎসব, এই উৎসব শুধু হিন্দুদের উৎসব নয় এই উৎসব সর্বজনীন।

    হোলি রং এবং প্রেমের উত্সব। প্রতিবছর হিন্দুদের দ্বারা উদযাপন করা একটি বড় উৎসব। এই দিনে প্রেম ও স্নেহের প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বিভিন্ন ধর্ম স্থান তথা রাম জন্মভূমি, কৃষ্ণ জন্মভূমি এই দিনে বিশেষ ভাবে পালিত হয়।

    দোলযাত্রা নিয়ে কুইজ দেখুন এখানে

    হোলি উৎসবে সমাজের ভুমিকাঃ-

    হোলি উৎসব ভারতে প্রতি অঞ্চলে সুখের রঙ আনে, আনে প্রতিটি বাড়িতে, এই উৎসব সুখের রঙ দেয়, তাই এই উৎসব কে রং উৎসব বলা হয়। যেমন প্রকৃতি তার আলো, বায়ু, জল, সমস্ত জীবকে কোনও পার্থক্য ছাড়াই বিতরণ করে। অনুরূপভাবে, হোলির রংগুলি এমন কোনো বৈষম্য ছাড়াই সমস্ত জীবকুলে খেলা করে। আবীরের রঙে রঙিন রং সব রঙিন হয়ে যায়। সমাজের সব জীবকুলে এমনকি সমস্ত জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে এই রং সবারে মধ্যে ছরিয়ে পরে বন্ধুত্ব বৃদ্ধি করতে। তাই হোলি এক সমতা বৃদ্ধি, ও বন্ধুত্ব বৃদ্ধি করার উৎসব।

    মথুরা এবং বৃন্দাবনে হোলি উদযাপন মথুরা এবং বৃন্দাবনে হোলি উৎসবঃ

    মথুরা এবং বৃন্দাবন পবিত্র স্থান যেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সারা বছর ধরে এই পবিত্র জায়গায় দেশ বিদেশ থেকে পর্যটক ঘুরতে আসে। কিন্তু এই সময় দোল যাত্রার সময় প্রচুর মানুষ এই পবিত্র স্থানে ঘুরতে আসে। মথুরা ও বৃন্দাবনে হোলি উৎসব বিখ্যাত এই দিন আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করা হয়, সাত দিন ধরে এই সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলে। রাধা-কৃষ্ণকে নিয়ে লিলা খেলার নৃত্য হয়। জাত্রাপালার মাধ্যমে রাধা-কৃষ্ণর লিলা খেলা তুলে ধরা হয় নতুন প্রজন্মের কাছে। রামায়নের চরিত্র এই সময় তুলে ধরা হয়। বিভিন্ন প্রকারের খাবার, নৃত্য নতুন পোশাক রং মাখা গোটা শহর কিছুটা অন্য রকম। হাসি-খুশিতে কেটে যায় এই সাতদিন। আর এই ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করার জন্য এই দিনে মানুষ ভারতের অন্যান্য শহর থেকে মথুরা এবং বৃন্দাবনে আসে।

    হোলির গুরুত্ব হোলির ও তাৎপর্য :

    এই উৎসব অনেক অনুষ্টানের মাধ্যমে পালন করা হয়, পরিবারের সব সদস্য এবং আত্মীয় একসাথে হোলিকা পুড়িয়ে দেয় এবং হোলি দিবসের পালন করে। এই হোলিকার মৃত্যু এবং প্রতিবছর সে উপলক্ষে হোলিকা পুড়ান হোলির রং খেলার সঙ্গে জরিত।কেউ কেউ মনে করে যে হিরণ্যকশিপ রাজার বোন হোলিকার নাম থেকেই হোলি নাম হয়েছিল ।

    উপসংহারঃ-

    হোলি প্রেম এবং পারস্পরিক মিলনের একটি উৎসব যা একতা ক্রমাগত বৃদ্ধি করে। সবাই হাসে, এবং প্রত্যেক মানুষ হোলির রং পায়। পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের রং এ মিলে মিশে যায়। মানুষ সবার সাথে সুখ -শান্তি ভোগ করে নেয়। হোলি একটি পবিত্র ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে যুক্ত সুখের উৎসবের পাশাপাশি একটি সামাজিক উৎসব ও বটে । আসুন সবাই একসঙ্গে এই উৎসবের মর্যাদা রাখি এবং আনন্দে এই উৎসব উদযাপন করি। সুখশান্তি সবাই মিলে ভাগ করে নেই এবং হোলির রঙ্গে সবাই রঙ্গিন হই।

    See less
  1. This answer was edited.

    দোল পূর্ণিমা বা দোল যাত্রা:- অসম, বাংলা এবং উড়িষ্যায় দোল পূর্ণিমা বা দোল যাত্রা একটি প্রধান উৎসব। ইহা একটি হিন্দু বৈষ্ণব উৎসব। বহির্বঙ্গে পালিত হোলি উৎসবটির সঙ্গে দোলযাত্রা উৎসবটি সম্পর্কযুক্ত। এই উৎসবের অপর নাম বসন্তোৎসব। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। দোলযাত্রা নিয়ে কুইজ দRead more

    দোল পূর্ণিমা বা দোল যাত্রা:-

    অসম, বাংলা এবং উড়িষ্যায় দোল পূর্ণিমা বা দোল যাত্রা একটি প্রধান উৎসব। ইহা একটি হিন্দু বৈষ্ণব উৎসব। বহির্বঙ্গে পালিত হোলি উৎসবটির সঙ্গে দোলযাত্রা উৎসবটি সম্পর্কযুক্ত। এই উৎসবের অপর নাম বসন্তোৎসব। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

    দোলযাত্রা নিয়ে কুইজ দেখুন এখানে

    বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, ফাল্গুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির বা গুলাল নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগণের সহিত রং খেলায় মেতেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হয়। দোলযাত্রার দিন সকালে তাই রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ আবির ও গুলালে স্নাত করে দোলায় চড়িয়ে কীর্তনগান সহকারে শোভাযাত্রায় বের করা হয়। এরপর ভক্তেরা আবির ও গুলাল নিয়ে পরস্পর রং খেলেন। দোল উৎসবের অনুষঙ্গে ফাল্গুনী পূর্ণিমাকে দোলপূর্ণিমা বলা হয়। আবার এই পূর্ণিমা তিথিতেই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম বলে একে গৌরপূর্ণিমা নামেও অভিহিত করা হয়।

    দোলযাত্রা উৎসবের একটি ধর্মনিরপেক্ষ দিকও রয়েছে। এই দিন সকাল থেকেই নারীপুরুষ নির্বিশেষে আবির, গুলাল ও বিভিন্ন প্রকার রং নিয়ে খেলায় মত্ত হয়। শান্তিনিকেতনে বিশেষ নৃত্যগীতের মাধ্যমে বসন্তোৎসব পালনের রীতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল থেকেই চলে আসছে। দোলের পূর্বদিন খড়, কাঠ, বাঁশ ইত্যাদি জ্বালিয়ে এক বিশেষ বহ্ন্যুৎসবের আয়োজন করা হয়। এই বহ্ন্যুৎসব হোলিকা দহন বা মেড়াপোড়া নামে পরিচিত। উত্তর ভারতে হোলি উৎসবটি বাংলার দোলযাত্রার পরদিন পালিত হয়।

    তাৎপর্য: দোলযাত্রা বা হোলি উৎসব সংক্রান্ত পৌরাণিক উপাখ্যান ও লোককথাগুলি মূলত দুই প্রকার: প্রথমটি দোলযাত্রার পূর্বদিন পালিত বহ্ন্যুৎসব হোলিকাদহন বা মেড়াপোড়া সংক্রান্ত, এবং দ্বিতীয়টি রাধা ও কৃষ্ণের দোললীলা বা ফাগুখেলা কেন্দ্রিক কাহিনী।

    সাংস্কৃতিক তাৎপর্য : ভারতবর্ষের বিভিন্ন হিন্দু ঐতিহ্যেই হোলি উৎসবের সাংস্কৃতিক তাৎপর্য রয়েছে। এটি একটি উৎসবমুখর দিন যখন একজন তার অতীতের ভুলগুলো ভুলে যায়। এই দিনে মানুষেরা একে অপরের মধ্যকার ঝগড়া-বিবাদ মিটমাট করে ফেলে, এই দিনে তারা এসব ঝগড়া বিবাদ ভুলে যায় ও ক্ষমা করে দেয়। তারা পুরনো ঋণ মাফ করে দেয়, এবং নতুন করে চুক্তি শুরু করে। হোলি উৎসব একই সাথে বসন্তের আগমন বার্তাও নিয়ে আসে। অনেকের কাছে এটা নতুন বছরের শুরুকে নির্দেশ করে। এটি মানুষের জন্য ঋতু পরিবর্তনকে উপভোগ করা ও নতুন বন্ধু বানাবার উৎসব

    শান্তিনিকেতনের বসন্তোৎসব : দোলযাত্রা উৎসব শান্তিনিকেতনে বসন্তোৎসব নামে পরিচিত। অতীতে শান্তিনিকেতনের বিদ্যালয়ে বসন্তের আগমন উপলক্ষে একটি ছোটো ঘরোয়া অনুষ্ঠানে নাচগান, আবৃত্তি ও নাট্যাভিনয় করা হত। পরবর্তীকালে এই অনুষ্ঠানটি পরিব্যপ্ত হয়ে শান্তিনিকেতনের অন্যতম জনপ্রিয় উৎসব বসন্তোৎসবের আকার নেয়। ফাল্গুনী পূর্ণিমা অর্থাৎ দোলপূর্ণিমার দিনই শান্তিনিকেতনে বসন্তোৎসবের আয়োজন করা হয়। পূর্বরাত্রে বৈতালিক হয়। দোলের দিন সকালে ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল গানটির মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। সন্ধ্যায় গৌরপ্রাঙ্গনে রবীন্দ্রনাথের কোনো নাটক অভিনীত হয়।

    See less
  1. ব্রতকথা: লক্ষ্মীকে নিয়ে বাংলার জনসমাজে বিভিন্ন জনপ্রিয় গল্প প্রচলিত আছে। এই গল্পগুলি পাঁচালির আকারে লক্ষ্মীপূজার দিন পাঠ করা হয়। একে লক্ষ্মীর পাঁচালি বলে। লক্ষ্মীর ব্রতকথাগুলির মধ্যে "বৃহস্পতিবারের ব্রতকথা" সবচেয়ে জনপ্রিয়। এছাড়াও "বারোমাসের পাঁচালি"-তেও লক্ষ্মীকে নিয়ে অনেক লৌকিক গল্পের উল্লেখRead more

    ব্রতকথা:

    লক্ষ্মীকে নিয়ে বাংলার জনসমাজে বিভিন্ন জনপ্রিয় গল্প প্রচলিত আছে। এই গল্পগুলি পাঁচালির আকারে লক্ষ্মীপূজার দিন পাঠ করা হয়। একে লক্ষ্মীর পাঁচালি বলে। লক্ষ্মীর ব্রতকথাগুলির মধ্যে “বৃহস্পতিবারের ব্রতকথা” সবচেয়ে জনপ্রিয়। এছাড়াও “বারোমাসের পাঁচালি”-তেও লক্ষ্মীকে নিয়ে অনেক লৌকিক গল্পের উল্লেখ পাওয়া যায়।

    লক্ষ্মী পাঁচালি ব্রতকথা:

    শরৎ পূর্ণিমার নিশি নির্মল গগন,
    মন্দ মন্দ বহিতেছে মলয় পবন।
    লক্ষ্মীদেবী বামে করি বসি নারায়ণ,
    বৈকুন্ঠধামেতে বসি করে আলাপন।
    হেনকালে বীণা হাতে আসি মুনিবর,
    হরিগুণগানে মত্ত হইয়া বিভোর।
    গান সম্বরিয়া উভে বন্দনা করিল,
    বসিতে আসন তারে নারায়ণ দিল।
    মধুর বচনে লক্ষ্মী জিজ্ঞাসিল তায়,
    কিবা মনে করি মুনি আসিলে হেথায়।
    কহে মুনি তুমি চিন্ত জগতের হিত,
    সবার অবস্থা আছে তোমার বিদিত।
    সুখেতে আছয়ে যত মর্ত্যবাসীগণ,
    বিস্তারিয়া মোর কাছে করহ বর্ণন।
    লক্ষ্মীমার হেন কথা শুনি মুনিবর,
    কহিতে লাগিলা তারে জুড়ি দুই কর।
    অপার করুণা তোমার আমি ভাগ্যবান,
    মর্ত্যলোকে নাহি দেখি কাহার কল্যাণ।
    সেথায় নাই মা আর সুখ শান্তি লেশ,
    দুর্ভিক্ষ অনলে মাগো পুড়িতেছে দেশ।
    রোগ-শোক নানা ব্যাধি কলিতে সবায়,
    ভুগিতেছে সকলেতে করে হায় হায়।
    অন্ন-বস্ত্র অভাবেতে আত্মহত্যা করে,
    স্ত্রী-পুত্র ত্যাজি সবাই যায় দেশান্তরে।
    স্ত্রী-পুরুষ সবে করে ধর্ম পরিহার,
    সদা চুরি প্রবঞ্চনা মিথ্যা অনাচার।
    তুমি মাগো জগতের সর্বহিতকারী,
    সুখ-শান্তি সম্পত্তির তুমি অধিকারী।
    স্থির হয়ে রহ যদি প্রতি ঘরে ঘরে,
    তবে কি জীবের এত দুঃখ হতে পারে।
    নারদের বাক্য শুনি লক্ষ্মী বিষাদিতা,
    কহিলেন মুনি প্রতি দোষ দাও বৃথা।
    নিজ কর্মফলে সবে করে দুঃখভোগ,
    অকারণে মোর প্রতি কর অনুযোগ।
    শুন হে নারদ বলি যথার্থ তোমায়,
    মম অংশে জন্ম লয় নারী সমুদয়।
    তারা যদি নিজ ধর্ম রক্ষা নাহি করে,
    তবে কি অশান্তি হয় প্রতি ঘরে ঘরে।
    লক্ষ্মীর বচন শুনি মুনি কহে ক্ষুণ্ন মনে,
    কেমনে প্রসন্ন মাতা হবে নারীগণে।
    কিভাবেতে পাবে তারা তব পদছায়া,
    দয়াময়ী তুমি মাগো না করিলে দয়া।
    মুনির বাক্যে লক্ষ্মীর দয়া উপজিল,
    মধুর বচনে তারে বিদায় করিল।
    নারীদের সর্বদুঃখ যে প্রকারে যায়,
    কহ তুমি নারায়ণ তাহার উপায়।
    শুনিয়া লক্ষ্মীর বচন কহে লক্ষ্মীপতি,
    কি হেতু উতলা প্রিয়ে স্থির কর মতি।
    প্রতি গুরুবারে মিলি যত বামাগণে,
    করিবে তোমার ব্রত ভক্তিযুক্ত মনে।
    নারায়ণের বাক্যে লক্ষ্মী অতি হৃষ্টমন,
    ব্রত প্রচারিতে মর্ত্যে করিল গমন।
    মর্ত্যে আসি ছদ্মবেশে ভ্রমে নারায়ণী,
    দেখিলেন বনমধ্যে বৃদ্ধা এক বসিয়া আপনি।
    সদয় হইয়া লক্ষ্মী জিজ্ঞাসিল তারে,
    কহ মাগো কি হেতু এ ঘোর কান্তারে।
    বৃদ্ধা কহে শোন মাতা আমি অভাগিনী,
    কহিল সে লক্ষ্মী প্রতি আপন কাহিনী।
    পতি-পুত্র ছিল মোর লক্ষ্মীযুক্ত ঘর,
    এখন সব ছিন্নভিন্ন যাতনাই সার।
    যাতনা সহিতে নারি এসেছি কানন,
    ত্যাজিব জীবন আজি করেছি মনন।
    নারায়ণী বলে শুন আমার বচন,
    আত্মহত্যা মহাপাপ নরকে গমন।
    যাও মা গৃহেতে ফিরি কর লক্ষ্মী ব্রত,
    আবার আসিবে সুখ তব পূর্ব মত।
    গুরুবারে সন্ধ্যাকালে মিলি এয়োগণ,
    করিবে লক্ষ্মীর ব্রত করি এক মন।
    কহি বাছা পূজা হেতু যাহা প্রয়োজন,
    মন দিয়া শুনি লও আমার বচন।
    জলপূর্ণ ঘটে দিবে সিঁদুরের ফোঁটা,
    আম্রের পল্লব দিবে তাহে এক গোটা।
    আসন সাজায়ে দিবে তাতে গুয়া-পান,
    সিঁদুর গুলিয়া দিবে ব্রতের বিধান।
    ধূপ-দীপ জ্বালাইয়া রাখিবে ধারেতে,
    শুনিবে পাঁচালী কথা দূর্বা লয়ে হাতে।
    একমনে ব্রত কথা করিবে শ্রবণ,
    সতত লক্ষ্মীর মূর্তি করিবে চিন্তন।
    ব্রত শেষে হুলুধ্বনি দিয়ে প্রণাম করিবে,
    এয়োগণে সবে মিলি সিঁদুর পরিবে।
    দৈবযোগে একদিন ব্রতের সময়,
    দীন দুঃখী নারী একজন আসি উপনীত হয়।
    পতি তার চির রুগ্ন অক্ষম অর্জনে,
    ভিক্ষা করি অতি কষ্টে খায় দুই জনে।
    অন্তরে দেবীরে বলে আমি অতি দীনা,
    স্বামীরে কর মা সুস্থ আমি ভক্তি হীনা।
    লক্ষ্মীর প্রসাদে দুঃখ দূর হইলো তার,
    নীরোগ হইল স্বামী ঐশ্বর্য অপার।
    কালক্রমে শুভক্ষণে জন্মিল তনয়,
    হইল সংসার তার সুখের আলয়।
    এইরূপে লক্ষ্মীব্রত করি ঘরে ঘরে,
    ক্রমে প্রচারিত হলো দেশ দেশান্তরে।
    করিতে যে বা দেয় উপদেশ,
    লক্ষীদেবী তার প্রতি তুষ্ট সবিশেষ।
    এই ব্রত দেখি যে বা করে উপহাস,
    লক্ষীর কোপেতে তার হয় সর্বনাশ।

    পরিশেষে হল এক অপূর্ব ব্যাপার,
    যে ভাবে ব্রতের হয় মাহাত্ম্য প্রচার।
    বিদর্ভ নগরে এক গৃহস্থ ভবনে,
    নিয়োজিত বামাগণ ব্রতের সাধনে।
    ভিন্ন দেশবাসী এক বণিক তনয়,
    সি উপস্থিত হল ব্রতের সময়।
    বহুল সম্পত্তি তার ভাই পাঁচজন,
    পরস্পর অনুগত ছিল সর্বক্ষণ।
    ব্রত দেখি হেলা করি সাধুর তনয়,
    বলে এ কিসের ব্রত এতে কিবা ফলোদয়।
    বামাগণ বলে শুনি সাধুর বচন,
    লক্ষী ব্রত করি সবে সৌভাগ্য কারণ।
    সদাগর শুনি ইহা বলে অহঙ্কারে,
    অভাবে থাকিলে তবে পূজিব উহারে।
    ধনজন সুখভোগ যা কিছু সম্ভব,
    সকল আমার আছে আর কিবা অভাব।
    কপালে না থাকে যদি লক্ষ্মী দিবে ধন,
    হেন বাক্য কভু আমি না করি শ্রবণ।
    ধনমদে মত্ত হয়ে লক্ষ্মী করি হেলা,
    নানা দ্রব্যে পূর্ণ তরি বানিজ্যেতে গেলা।
    গর্বিত জনেরে লক্ষ্মী সইতে না পারে,
    সর্ব দুঃখে দুঃখী মাগো করেন তাহারে।
    বাড়ি গেল, ঘর গেল, ডুবিল পূর্ণ তরি,
    চলে গেল ভ্রাতৃভাব হল যে ভিখারী।
    কি দোষ পাইয়া বিধি করিলে এমন,
    অধম সন্তান আমি অতি অভাজন।
    সাধুর অবস্থা দেখি দয়াময়ী ভাবে,
    বুঝাইব কেমনে ইহা মনে মনে ভাবে।
    নানা স্থানে নানা ছলে ঘুরাইয়া ঘানি,
    অবশেষে লক্ষ্মীর ব্রতের স্থানে দিলেন আনি।
    মনেতে উদয় হল কেন সে ভিখারী,
    অপরাধ ক্ষম মাগো কুপুত্র ভাবিয়া।
    অহঙ্কার দোষে দেবী শিক্ষা দিলা মোরে,
    অপার করুণা তাই বুঝালে দীনেরে।
    বুঝালে যদি বা মাগো রাখগো চরণে,
    ক্ষমা কর ক্ষমাময়ী আশ্রিত জনেরে।
    সত্যরূপিনী তুমি কমলা তুমি যে মা,
    ক্ষমাময়ী নাম তব দীনে করি ক্ষমা।
    তুমি বিনা গতি নাই এ তিন ভুবনে,
    স্বর্গেতে স্বর্গের লক্ষ্মী ত্রিবিধ মঙ্গলে।
    তুমি মা মঙ্গলা দেবী সকল ঘরেতে,
    বিরাজিছ মা তুমি লক্ষ্মী রূপে ভূতলে।
    দেব-নর সকলের সম্পদরূপিনী,
    জগৎ সর্বস্ব তুমি ঐশ্বর্যদায়িনী।
    সর্বত্র পূজিতা তুমি ত্রিলোক পালিনী,
    সাবিত্রী বিরিঞ্চিপুরে বেদের জননী।
    ক্ষমা কর এ দাসের অপরাধ যত,
    তোমা পদে মতি যেন থাকে অবিরত।
    শ্রেষ্ঠ হতে শ্রেষ্ট তারা পরমা প্রকৃতি,
    কোপাদি বর্জিতা তুমি মূর্তিমতি ধৃতি।
    সতী সাধ্বী রমণীর তুমি মা উপমা,
    দেবগণ ভক্তি মনে পূজে সবে তোমা।
    রাস অধিষ্ঠাত্রী দেবী তুমি রাসেশ্বরী,
    সকলেই তব অংশ যত আছে নারী।
    কৃষ্ণ প্রেমময়ী তুমি কৃষ্ণ প্রাণাধিকা,
    তুমি যে ছিলে মাগো দ্বাপরে রাধিকা।
    প্রস্ফুটিত পদ্মবনে তুমি পদ্মাবতী,
    মালতি কুসুমগুচ্ছে তুমি মা মালতি।
    বনের মাঝারে তুমি মাগো বনরাণী,
    শত শৃঙ্গ শৈলোপরি শোভিত সুন্দরী।
    রাজলক্ষ্মী তুমি মাগো নরপতি পুরে,
    সকলের গৃহে লক্ষ্মী তুমি ঘরে ঘরে।
    দয়াময়ী ক্ষেমঙ্করী অধমতারিণী,
    অপরাধ ক্ষমা কর দারিদ্র্যবারিণী।
    পতিত উদ্ধার কর পতিতপাবনী,
    অজ্ঞান সন্তানে কষ্ট না দিও জননী।
    অন্নদা বরদা মাতা বিপদনাশিনী,
    দয়া কর এবে মোরে মাধব ঘরণী।
    এই রূপে স্তব করি ভক্তিপূর্ণ মনে,
    একাগ্র মনেতে সাধু ব্রত কথা শোনে।
    ব্রতের শেষে নত শিরে করিয়া প্রণাম,
    মনেতে বাসনা করি আছে নিজধাম।
    গৃহেতে আসিয়া বলে লক্ষ্মীব্রত সার,
    সবে মিলি ব্রত কর প্রতি গুরুবার।
    বধুরা অতি তুষ্ট সাধুর বাক্যেতে,
    ব্রত আচরণ করে সভক্তি মনেতে।
    নাশিল সাধুর ছিল যত দুষ্ট সহচর,
    দেবীর কৃপায় সম্পদ লভিল প্রচুর।
    আনন্দে পূর্ণিত দেখে সাধুর অন্তর,
    পূর্ণতরী উঠে ভাসি জলের উপর।
    সাধুর সংসার হল শান্তি ভরপুর,
    মিলিল সকলে পুনঃ ঐশ্বর্য প্রচুর।
    এভাবে নরলোকে হয় ব্রতের প্রচার,
    মনে রেখ সংসারেতে লক্ষ্মীব্রত সার।
    এ ব্রত যে রমণী করে এক মনে,
    দেবীর কৃপায় তার পূর্ণ ধনে জনে।
    অপুত্রার পুত্র হয় নির্ধনের ধন,
    ইহলোকে সুখী অন্তে বৈকুন্ঠে গমন।
    লক্ষ্মীর ব্রতের কথা বড়ই মধুর,
    অতি যতনেতে রাখ তাহা আসন উপর।

    যে জন ব্রতের শেষে স্তব পাঠ করে,
    অভাব ঘুচিয়া যায় লক্ষ্মীদেবীর বরে।
    লক্ষ্মীর পাঁচালী কথা হল সমাপন,
    ভক্তি করি বর মাগো যার যাহা মন।
    সিঁথিতে সিঁদুর দাও সব এয়োমিলে,
    উলুধ্বনি কর সবে অতি কৌতুহলে।
    দুই হাত জোড় করি ভক্তিযুক্ত মনে,
    নমস্কার করহ সবে দেবীর চরণে,
    নমস্কার করহ সবে দেবীর চরণে।

    See less
  1. I want this in English because I can't read bengali...so can u pls convert it into English letters,so that I can in bengali

    I want this in English because I can’t read bengali…so can u pls convert it into English letters,so that I can in bengali

    See less