বিদ্বান
বিদ্বান
See lessLost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.
Sorry, you do not have permission to ask a question, You must login to ask a question.
Please briefly explain why you feel this question should be reported.
Please briefly explain why you feel this answer should be reported.
Please briefly explain why you feel this user should be reported.
ক্ষ্যাপা তুই না জেনে তোর আপন খবর যাবি কোথায়। আপন ঘর না বুঝে বাহিরে খুঁজে পড়বি ধাঁধায়।। আমি সত্য না হইলে হয় গুরু সত্য কোন কাজে আমি যেরূপ দেখ না সেরূপ দীন দয়াময়।। আত্মরূপে সেই অ-ধর সঙ্গী অংশে কলা তার ভেদ না জেনে বনে বনে ফিরিলে কি হয়।। আপনার আপনি না চিনে ঘুরবি কত ভুবনে লালন বলে, অন্তিম কালে নাইRead more
ক্ষ্যাপা তুই না জেনে তোর আপন খবর যাবি কোথায়।
আপন ঘর না বুঝে বাহিরে খুঁজে পড়বি ধাঁধায়।।
আমি সত্য না হইলে
হয় গুরু সত্য কোন কাজে
আমি যেরূপ দেখ না সেরূপ দীন দয়াময়।।
আত্মরূপে সেই অ-ধর
সঙ্গী অংশে কলা তার
ভেদ না জেনে বনে বনে ফিরিলে কি হয়।।
আপনার আপনি না চিনে
ঘুরবি কত ভুবনে
লালন বলে, অন্তিম কালে নাই রে উপায়।
See lessলাল শাড়ি পরিয়া কন্যা রক্ত আলতা পায়, আমার চোখের জল মিশাইলা নিলানা বিদায়, তুমি ফিরাও চাইলা না একবার চইলা গেলা হায়, জানি আজ রাতে হইবা পরের আর ভাইব না আমায়। চান্দের মত মুখটি যখন ভাসত নয়ন জলে, আদর কইরা মুইছা দিতাম গালে। ঘাটে আইসা পাশে বইসা জড়াইতো এ বুকে, ভুলব আমি এই কথা কেমনে? তবে ভালো ক্যান বাসিলRead more
লাল শাড়ি পরিয়া কন্যা
রক্ত আলতা পায়,
আমার চোখের জল মিশাইলা
নিলানা বিদায়,
তুমি ফিরাও চাইলা না একবার
চইলা গেলা হায়,
জানি আজ রাতে হইবা পরের
আর ভাইব না আমায়।
চান্দের মত মুখটি যখন
ভাসত নয়ন জলে,
আদর কইরা মুইছা দিতাম গালে।
ঘাটে আইসা পাশে বইসা
জড়াইতো এ বুকে,
ভুলব আমি এই কথা কেমনে?
তবে ভালো ক্যান বাসিলা
স্বপ্ন কেন দেখাইলা
ভালো ক্যান বাসিলা আমারে?
চার বেহারার পালকি কইরা
যখন গেলা সামনে দিয়া,
শেষ দেখাও দিলা না আমারে।
ফিরা আইসা দেখবা তুমি
চইলা গেছি জগত ছাড়ি
পাইবা শুধু আমায় স্বপনে।
তুমি কান্দিয়া ডাকিবা কভু না পাইবা
কান্দিয়া ডাকিবা আমারে।
লাল শাড়ি পরিয়া কন্যা
রক্ত আলতা পায়,
আমার চোখের জল মিশাইলা
নিলানা বিদায়,
তুমি ফিরাও চাইলা না একবার
চইলা গেলা হায়,
জানি আজ রাতে হইবা পরের
আর ভাইব না আমায়।
এখন অনেক রাত (অনুপম রায় ) ekhon onek raat এখন অনেক রাত, তোমার কাঁধে আমার নিঃশ্বাস , আমি বেঁচে আছি তোমার ভালোবাসায় ! ছুঁয়ে দিলে হাত, আমার বৃদ্ধ বুকে তোমার মাথা চেপে ধরে ডলছি কেমন নেশায় ! এখন অনেক রাত, তোমার কাঁধে আমার নিঃশ্বাস , আমি বেঁচে আছি তোমার ভালোবাসায় ! ছুঁয়ে দিলে হাত, আমার বৃদ্ধ বুকে তোমার মাRead more
এখন অনেক রাত (অনুপম রায় ) ekhon onek raat
এখন অনেক রাত,
তোমার কাঁধে আমার নিঃশ্বাস , আমি বেঁচে আছি তোমার ভালোবাসায় !
ছুঁয়ে দিলে হাত, আমার বৃদ্ধ বুকে তোমার মাথা চেপে ধরে ডলছি কেমন নেশায় !
এখন অনেক রাত,
তোমার কাঁধে আমার নিঃশ্বাস , আমি বেঁচে আছি তোমার ভালোবাসায় !
ছুঁয়ে দিলে হাত, আমার বৃদ্ধ বুকে তোমার মাথা চেপে ধরে ডলছি কেমন নেশায় !
কেন যে অসংকোচে অন্ধ গানের কলি, পাখার ব্লেড-এর তালে সোজাসুজি কথা বলি !
আমি ভাবতে পারিনি, তুমি বুকের ভেতর ফাটছো আমার শরীর জুড়ে তোমার প্রেমের বীজ !
আমি থামতে পারিনি, তোমার গালে নরম দুঃখ আমার দুহাত দিয়ে মুছতে দিও প্লিজ |
তোমার গানের সুর আমার পকেট ভরা সত্যি মিথ্যে রেখে দিলাম তোমার ব্যাগ-এর নীলে |
জানি তর্কে বহুদূর, তাও আমায় তুমি আঁকড়ে ধরো, আমার ভেতর বাড়ছো তিলে তিলে !
কেন যে অসংকোচে অন্ধ গানের কলি, পাখার ব্লেড-এর তালে সোজাসুজি কথা বলি !
আমি ভাবতে পারিনি, তুমি বুকের ভেতর ফাটছো আমার শরীর জুড়ে তোমার প্রেমের বীজ !
আমি থামতে পারিনি, তোমার গালে নরম দুঃখ আমার দুহাত দিয়ে মুছতে দিও প্লিজ |
এখন অনেক রাত,
তোমার কাঁধে আমার নিঃশ্বাস , আমি বেঁচে আছি তোমার ভালোবাসায় !
ছুঁয়ে দিলে হাত, আমার বৃদ্ধ বুকে তোমার মাথা চেপে ধরে ডলছি কেমন নেশায় !
এখন অনেক রাত,
তোমার কাঁধে আমার নিঃশ্বাস , আমি বেঁচে আছি তোমার ভালোবাসায় !
ভালোবাসায় .
প্রিয় নেতাজী, অনেক দিন ধরে চিঠি লিখবো ভাবছিলাম কিছুতেই আর হয়ে উঠছিলো না। আজ কোনো একটা ঘটনার নিরিখে, তোমাকে চিঠি লিখতে বসলাম। ছেলেবেলায় আমাদের দোতলা ড্রইং রুমে, তোমার ছবি। জন্মদিনে পেতাম বই, সেখানেও তুমি বাবার গল্পে তোমারি বীরত্ব। দেখতে দেখতে, শুনতে শুনতে, ক্রমে আমিও তোমার ভক্ত। বাবা বলতেন, ইন্ডিয়ারRead more
প্রিয় নেতাজী,
অনেক দিন ধরে চিঠি লিখবো ভাবছিলাম
কিছুতেই আর হয়ে উঠছিলো না।
আজ কোনো একটা ঘটনার নিরিখে,
তোমাকে চিঠি লিখতে বসলাম।
ছেলেবেলায় আমাদের দোতলা ড্রইং রুমে,
তোমার ছবি।
জন্মদিনে পেতাম বই, সেখানেও তুমি
বাবার গল্পে তোমারি বীরত্ব।
দেখতে দেখতে, শুনতে শুনতে,
ক্রমে আমিও তোমার ভক্ত।
বাবা বলতেন,
ইন্ডিয়ার আর একজন নেতাজীর দরকার ছিল
মা গাইতেন,
বীর সুভাষের মহান দেশ।
দাদু বলতেন,
ছেলেটাকে ওরা শেষ করে দিলো
ঠাম্মার চোখে তখন, আঁচলের খুঁট।
এসবের মধ্যে বড়ো হওয়া আমিও,
কেমন একটা ঘরের মধ্যে থাকতাম।
ভাবতাম, পারতে তুমি সব পারতে,
যদি আর একবার,
একবার আমাদের মধ্যে তোমাকে পেতাম।
আজ উত্তর চল্লিশেও আমার একই ভোর
তুমি পারতে, কেন না দেশের মাটিতে
দেশোপ্রেমের মতো জোরালো একটা ঝাঁকুনি
দেবার ক্ষমতা তখন আর কারুর ছিল না।
এখনও আছে কি ?
তোমার হারিয়ে যাবার পর,
দেশে কত কমিশন বসেছে।
ভারতের পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণে
কোনো পীর, কোনো সন্তো,
কোনো দয়ালু বৃদ্ধ কে দেখে
ভুল করেছে সবাই,
ছুটে গেছে তুমি মনে করে।
কিন্তু ফিরেছে মাথা নেড়ে,
তবু তোমাকে পাবার আশায় বুক বেঁধেছে।
তুমি তো শুধু বসু বাড়ির নও,
গোটা ভারতবর্ষের মনিকোঠার হীরক।
যার আলোর শুদ্ধতা,
কালো কে সাদা করতে পারে।
এই বিশ্বাসে ভর করে সবাই ভেবেছিলো
তুমি আসবে, আসবেই।
কিন্তু এলে না।
কেটে গেলো অনেক গুলো বছর,
পেরিয়ে এলাম জীবনের অনেক গলি খুঁজে।
তুমি এখন বিমান বন্দরে, সভা সমিতিতে,
রিসার্চ বিউরোতে,
এমন কি ছেলের নামকরণেও,
শুধু হৃদয় যেন দোলা দেয় না।
জানো ? তোমার জন্মদিনটা
এখন সবাই ছুটির দিন বলে
আয়েশ করে উপভোগ করে।
আর ছেলেরা, তারা তো এখন
দেশ থেকে বিদেশের খবরই বেশি রাখে।
আর মেয়েরা, তারাও স্বাধীনতার
ভেলায় চড়ে হতচকিত।
শুধু মাটিটা কাঁদে,
সেই কান্না যেন ভূমিকম্প, খরা
এলেনিনও, বন্যা হয়ে চারিদিক ভাসিয়ে দেয়।
এখনো অভিমান করে শুয়ে থাকবে রেনকোজিতে?
আজ যখন ঘাড়ের উপর AK-47 এর নিশ্বাষ
রক্তের হরি খেলা ধর্মের জিগিরে
তখন শোনাও সেই আওয়াজ।
আমি সুভাষ বলছি,
মেয়েটা দৌড়ে এসে বলবে,
মা.. মা দেখো উনি আসছেন
পাশের বাড়ির মেসোমশাই ডাকবেন জানলা দিয়ে
বৌমা আমি বলিনি উনি ফিরে আসবেন ?
খোলা জানালার ধরে দাঁড়াবেন মায়েরা,
তাদের ডান হাতে শঙ্খ, বাঁ চোখে জল,
নদী হবে উত্তল, নৌকা বেসামাল
পরান মাঝিও চেঁচাবে,
উনি আসতেসেন…
সবুজ মাঠে শিশুদের হাতে পতাকার দোলা
উনি আসছেন, উনি আসছেন,
উনি ফিরে আসছেন।
তোমার হারিয়ে যাওয়া জন্মদিনের ভেতর থেকে
উঠে আসুক, আর একটা ২৩শে
আজ স্বাধীনতার ঠিক আগের মুহূর্তে দাঁড়িয়ে
তোমাকে আমার এই চিঠি
প্রণাম নিও, ভালো থেকো নেতাজী।
আমি সুভাষ বলছি (শুভঙ্কর সেনগুপ্ত) তোমার জন্য বলতে পারি হাজারটা কথা , বলতে পারো হাজারটা পৃথিবী লিখতে পারি তোমার জন্য । তবে এই বলা আর লেখার মাঝে কথাও যেন একটা শূন্যতা , ঠিক ওই খোলা আকাশটার মতো নীল শূন্যতা । সেই আকাশটাতেও , প্রতিদিন সূর্য ওঠে , সূর্য আস্ত যায় , তারারাও হাসে মিট মিট করে । তবে চাঁদ ওঠেRead more
আমি সুভাষ বলছি (শুভঙ্কর সেনগুপ্ত)
তোমার জন্য বলতে পারি হাজারটা কথা ,
বলতে পারো হাজারটা পৃথিবী লিখতে পারি তোমার জন্য ।
তবে এই বলা আর লেখার মাঝে কথাও যেন একটা শূন্যতা ,
ঠিক ওই খোলা আকাশটার মতো নীল শূন্যতা ।
সেই আকাশটাতেও , প্রতিদিন সূর্য ওঠে , সূর্য আস্ত যায় ,
তারারাও হাসে মিট মিট করে ।
তবে চাঁদ ওঠে না আর ।
জোত্স্না আর ভাসে না আমার গায়ে ,
আর দেখতে পাই না সেই সুন্দর সোনালী পৃথিবীটাকে ।
তবু যেন কথাও একটা আশা রয়ে গিয়েছে,
রয়ে গিয়েছে চাঁদ কে ফিরে পাওয়ার অবিরাম চেষ্টা ।
জানিনা চাঁদকে ফিরে পাবে কিনা আমার সেই আকাশ,
তবে এটুকু জানি ,মুরুদ্যানের খোঁজ-
মরুভূমির প্রতিটি বালুকানাকে তপ্ত করে দিয়েছে ,
প্রতি মুহুর্তে উতপ্ত হছে বাতাস ।
আর সেই উতপ্ত বাতাস বয়ে নিয়ে যাছে তোমার সেই উদ্দামকে,
আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে আছে তোমার উত্তাপ ,
আর কদিন এই অগ্নেওগিরি চাপা থাকবে, জানিনা তাও।
তবে যেদিন তোমায় শেষ দেখা গিয়েছিল এলগিন রোডের ঘরটিতে –
উত্তাপের সুরু সেখান থেকেই ।
আর ঠিক সেই সময় থেকে সুরু তোমায় ফিরে পাওয়ার চেষ্টা ।
চেষ্টা আজও শেষ হয়নি, ভবিষ্যতেও চলবে ।
সত্যি কথা বলতে,তুমি ফিরে এলেও চলবে ।
আমাদের এই স্বাধীন ভারতবর্ষে –
স্বাধীনতাটা বড্ড বেশী ।
তাই লোকে স্বাধীন ভাবে ভাবতে চায় ,
স্বাধীন ভাবে খুঁজতে চায় ।
প্রচুর কমিসন তোমায় নিয়ে বসেছে এবং দাঁড়িয়েছে ,
কাজের কাজ কিছুই হয়নি, সুধু হয়েছে তোমায় নিয়ে –
বড় বড় রিপোর্ট , আর পুনরায় খোঁজ করার অনুপ্রেরণা ।
আমরা খুঁজে চলছি, খুঁজে চলব –
আমাদের বিশ্বাস আমরা খুঁজে পাব তোমায়,
আমরা খুঁজে পাব সেই আজাদ হিন্দকে ,
আর তার নায়ককে ।
একদিন তুমি আসবে ,তুমি ফিরবে ,
আর সেই লাল কেল্লায়, সেই তেরাঙ্গার ছায়ায় দাঁড়িয়ে –
তুমি দৃপ্ত কন্ঠে ঘোষণা করবে –
আমি সুভাষ বলছি –
আমি সুভাষ বলছি –
আমি সুভাষ বলছি ।
যমুনাবতী | jamunabati নিভন্ত এই চুল্লিতে মা একটু আগুন দে, আরেকটুকাল বেঁচেই থাকি বাঁচার আনন্দে! নোটন নোটন পায়রাগুলি খাঁচাতে বন্দী- দুয়েক মুঠো ভাত পেলে তা ওড়াতে মন দিই! হায় তোকে ভাত দেবো কী করে যে ভাত দেবো হায় হায় তোকে ভাত দিই কী দিয়ে যে ভাত দিই হায় ‘নিভন্ত এই চুল্লি তবে একটু আগুন দে, হাড়ের শRead more
যমুনাবতী | jamunabati
নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে,
আরেকটুকাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে!
নোটন নোটন পায়রাগুলি
খাঁচাতে বন্দী-
দুয়েক মুঠো ভাত পেলে তা
ওড়াতে মন দিই!
হায় তোকে ভাত দেবো কী করে যে ভাত দেবো হায়
হায় তোকে ভাত দিই কী দিয়ে যে ভাত দিই হায়
‘নিভন্ত এই চুল্লি তবে
একটু আগুন দে,
হাড়ের শিরায় শিখার মাতন
মরার আনন্দে!
দু’পারে দুই রুই কাতলার
মারণী ফন্দী-
বাঁচার আশায় হাত-হাতিয়ার
মৃত্যুতে মন দিই!
বর্গী না টর্গী না কংকে কে সামলায়
ধার চকচকে থাবা দেখছো না হামলায়?
যাস নে ও হামলায় যাসনে!
কানা কন্যার মায়ের ধমনীতে আকুল ঢেই তোলে- জ্বলে না,
মায়ের কান্নায় মেয়ের রক্তের উষ্ঞ হাহাকার মরেনা
চললো মেয়ে রণে চললো!
বাজে না ডম্বরু অস্ত্র ঝনঝন করে না জানলো না কেউ তা
চললো মেয়ে রণে চললো!
পেশীর দৃঢ় ব্যথ, মুঠোর দৃঢ় কথা, চোখের দৃঢ় জ্বালা সঙ্গে
চললো মেয়ে রণে চললো!
নেকড়ে-ওজর মৃত্যু এলো
মৃত্যুরই গান গা-
মায়ের চোখে বাপের চোখে
দু’তিনটে গঙ্গা!
দূর্বাতে তার রক্ত লেগে
সহস্র সঙ্গী
জাগে ধ্বক ধ্বক, যগ্গে ঢালে
সহস্র মণ ঘি!
যমনাবতী সরস্বতী কাল যমুনার বিয়ে
যমুনা তার বাসর রচে বারুদ বুকে দিয়ে
বিষের টোপর নিয়ে!
যমুনাবতী সরস্বতী গেছে এ-পথ দিয়ে
দিয়েছে পথ গিয়ে!
নিভন্ত এই চুল্লিতে আগুন ফলেছে!!
See lessসাধারণ মেয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিঃ দ্রঃ - সাধারণ মেয়ে কবিতার সারাংশ ও বিষয়বস্তু এই লিঙ্কে আমি অন্তঃপুরের মেয়ে, চিনবে না আমাকে। তোমার শেষ গল্পের বইটি পড়েছি, শরৎবাবু, ‘বাসি ফুলের মালা'। তোমার নায়িকা এলোকেশীর মরণ-দশা ধরেছিল পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে। পঁচিশ বছর বয়সের সঙ্গে ছিল তার রেষারেষি, দেখলেম তুমি মহদাশয়Read more
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বিঃ দ্রঃ – সাধারণ মেয়ে কবিতার সারাংশ ও বিষয়বস্তু এই লিঙ্কে
আমি অন্তঃপুরের মেয়ে,
চিনবে না আমাকে।
তোমার শেষ গল্পের বইটি পড়েছি, শরৎবাবু,
‘বাসি ফুলের মালা’।
তোমার নায়িকা এলোকেশীর মরণ-দশা ধরেছিল
পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে।
পঁচিশ বছর বয়সের সঙ্গে ছিল তার রেষারেষি,
দেখলেম তুমি মহদাশয় বটে —
জিতিয়ে দিলে তাকে।
নিজের কথা বলি।
বয়স আমার অল্প।
একজনের মন ছুঁয়েছিল
আমার এই কাঁচা বয়সের মায়া।
তাই জেনে পুলক লাগত আমার দেহে —
ভুলে গিয়েছিলেম, অত্যন্ত সাধারণ মেয়ে আমি।
আমার মতো এমন আছে হাজার হাজার মেয়ে,
অল্পবয়সের মন্ত্র তাদের যৌবনে।
তোমাকে দোহাই দিই,
একটি সাধারণ মেয়ের গল্প লেখো তুমি।
বড়ো দুঃখ তার।
তারও স্বভাবের গভীরে
অসাধারণ যদি কিছু তলিয়ে থাকে কোথাও
কেমন করে প্রমাণ করবে সে,
এমন কজন মেলে যারা তা ধরতে পারে।
কাঁচা বয়সের জাদু লাগে ওদের চোখে,
মন যায় না সত্যের খোঁজে,
আমরা বিকিয়ে যাই মরীচিকার দামে।
কথাটা কেন উঠল তা বলি।
মনে করো তার নাম নরেশ।
সে বলেছিল কেউ তার চোখে পড়ে নি আমার মতো।
এতবড়ো কথাটা বিশ্বাস করব যে সাহস হয় না,
না করব যে এমন জোর কই।
একদিন সে গেল বিলেতে।
চিঠিপত্র পাই কখনো বা।
মনে মনে ভাবি, রাম রাম! এত মেয়েও আছে সে দেশে,
এত তাদের ঠেলাঠেলি ভিড়!
আর তারা কি সবাই অসামান্য —
এত বুদ্ধি, এত উজ্জ্বলতা।
আর তারা সবাই কি আবিষ্কার করেছে এক নরেশ সেনকে
স্বদেশে যার পরিচয় চাপা ছিল দশের মধ্যে।
গেল মেলের চিঠিতে লিখেছে
লিজির সঙ্গে গিয়েছিল সমুদ্রে নাইতে —
বাঙালি কবির কবিতা ক’ লাইন দিয়েছে তুলে
সেই যেখানে উর্বশী উঠছে সমুদ্র থেকে —
তার পরে বালির ‘পরে বসল পাশাপাশি —
সামনে দুলছে নীল সমুদ্রের ঢেউ,
আকাশে ছড়ানো নির্মল সূর্যালোক।
লিজি তাকে খুব আস্তে আস্তে বললে,
‘এই সেদিন তুমি এসেছ, দুদিন পরে যাবে চলে;
ঝিনুকের দুটি খোলা,
মাঝখানটুকু ভরা থাক্
একটি নিরেট অশ্রুবিন্দু দিয়ে —
দুর্লভ , মূল্যহীন। ‘
কথা বলবার কী অসামান্য ভঙ্গি।
সেইসঙ্গে নরেশ লিখেছে, ‘কথাগুলি যদি বানানো হয় দোষ কী,
কিন্তু চমৎকার —
হীরে-বসানো সোনার ফুল কি সত্য, তবুও কি সত্য নয়। ‘
বুঝতেই পারছ
একটা তুলনার সংকেত ওর চিঠিতে অদৃশ্য কাঁটার মতো
আমার বুকের কাছে বিঁধিয়ে দিয়ে জানায় —
আমি অত্যন্ত সাধারণ মেয়ে।
মূল্যবানকে পুরো মূল্য চুকিয়ে দিই
এমন ধন নেই আমার হাতে।
ওগো, নাহয় তাই হল,
নাহয় ঋণীই রইলেম চিরজীবন।
পায়ে পড়ি তোমার, একটা গল্প লেখো তুমি শরৎবাবু,
নিতান্তই সাধারণ মেয়ের গল্প —
যে দুর্ভাগিনীকে দূরের থেকে পাল্লা দিতে হয়
অন্তত পাঁচ-সাতজন অসামান্যার সঙ্গে —
অর্থাৎ, সপ্তরথিনীর মার।
বুঝে নিয়েছি আমার কপাল ভেঙেছে,
হার হয়েছে আমার।
কিন্তু তুমি যার কথা লিখবে
তাকে জিতিয়ে দিয়ো আমার হয়ে,
পড়তে পড়তে বুক যেন ওঠে ফুলে।
ফুলচন্দন পড়ুক তোমার কলমের মুখে।
তাকে নাম দিয়ো মালতী।
ওই নামটা আমার।
ধরা পড়বার ভয় নেই।
এমন অনেক মালতী আছে বাংলাদেশে,
তারা সবাই সামান্য মেয়ে।
তারা ফরাসি জর্মান জানে না,
কাঁদতে জানে। কী করে জিতিয়ে দেবে।
উচ্চ তোমার মন, তোমার লেখনী মহীয়সী।
তুমি হয়তো ওকে নিয়ে যাবে ত্যাগের পথে,
দুঃখের চরমে, শকুন্তলার মতো।
দয়া কোরো আমাকে।
নেমে এসো আমার সমতলে।
বিছানায় শুয়ে শুয়ে রাত্রির অন্ধকারে
দেবতার কাছে যে অসম্ভব বর মাগি —
সে বর আমি পাব না,
কিন্তু পায় যেন তোমার নায়িকা।
রাখো-না কেন নরেশকে সাত বছর লণ্ডনে,
বারে বারে ফেল করুক তার পরীক্ষায়,
আদরে থাক্ আপন উপাসিকামণ্ডলীতে।
ইতিমধ্যে মালতী পাস করুক এম . এ .
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে,
গণিতে হোক প্রথম তোমার কলমের এক আঁচড়ে।
কিন্তু ওইখানেই যদি থাম
তোমার সাহিত্যসম্রাট নামে পড়বে কলঙ্ক।
আমার দশা যাই হোক
খাটো কোরো না তোমার কল্পনা।
তুমি তো কৃপণ নও বিধাতার মতো।
মেয়েটাকে দাও পাঠিয়ে য়ুরোপে।
সেখানে যারা জ্ঞানী, যারা বিদ্বান, যারা বীর,
যারা কবি, যারা শিল্পী, যারা রাজা,
দল বেঁধে আসুক ওর চার দিকে।
জ্যোতির্বিদের মতো আবিষ্কার করুক ওকে —
শুধু বিদুষী ব’লে নয়, নারী ব’লে।
ওর মধ্যে যে বিশ্ববিজয়ী জাদু আছে
ধরা পড়ুক তার রহস্য, মূঢ়ের দেশে নয় —
যে দেশে আছে সমজদার, আছে দরদি,
আছে ইংরেজ জর্মান ফরাসি।
মালতীর সম্মানের জন্য সভা ডাকা হোক-না, বড়ো বড়ো নামজাদার সভা।
মনে করা যাক সেখানে বর্ষণ হচ্ছে মুষলধারে চাটুবাক্য,
মাঝখান দিয়ে সে চলেছে অবহেলায় —
ঢেউয়ের উপর দিয়ে যেন পালের নৌকো।
ওর চোখ দেখে ওরা করছে কানাকানি,
সবাই বলছে ভারতবর্ষের সজল মেঘ আর উজ্জ্বল রৌদ্র
মিলেছে ওর মোহিনী দৃষ্টিতে।
( এইখানে জনান্তিকে বলে রাখি
সৃষ্টিকর্তার প্রসাদ সত্যই আছে আমার চোখে।
বলতে হল নিজের মুখেই,
এখনো কোনো য়ুরোপীয় রসজ্ঞের
সাক্ষাৎ ঘটে নি কপালে। )
নরেশ এসে দাঁড়াক সেই কোণে,
আর তার সেই অসামান্য মেয়ের দল।
আর তার পরে?
তার পরে আমার নটেশাকটি মুড়োল,
স্বপ্ন আমার ফুরোল।
হায় রে সামান্য মেয়ে!
হায় রে বিধাতার শক্তির অপব্যয়!
আমিই সেই মেয়ে আমিই সেই মেয়ে। বাসে ট্রেনে রাস্তায় আপনি যাকে রোজ দেখেন যার শাড়ি, কপালের টিপ কানের দুল আর পায়ের গোড়ালি আপনি রোজ দেখেন। আর আরও অনেক কিছু দেখতে পাবার স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্নে যাকে ইচ্ছে মতন দেখেন। আমিই সেই মেয়ে। বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামে দিনের আলোয় যার ছায়া মাড়ানো আপনার ধর্মে নিষিদ্ধ, আর রাতেRead more
আমিই সেই মেয়ে
আমিই সেই মেয়ে।
বাসে ট্রেনে রাস্তায় আপনি যাকে রোজ দেখেন
যার শাড়ি, কপালের টিপ কানের দুল আর পায়ের গোড়ালি
আপনি রোজ দেখেন।
আর
আরও অনেক কিছু দেখতে পাবার স্বপ্ন দেখেন।
স্বপ্নে যাকে ইচ্ছে মতন দেখেন।
আমিই সেই মেয়ে।
বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামে দিনের আলোয় যার ছায়া মাড়ানো
আপনার ধর্মে নিষিদ্ধ, আর রাতের গভীরে যাকে বস্তি থেকে
তুলে আনতে পাইক বরকন্দাজ পাঠান আপনি
আর সুসজ্জিত বিছানায় যার জন্য অপেক্ষায় অধীন হয়
আপনার রাজকীয় লাম্পট্য
আমিই সেই মেয়ে।
আমিই সেই মেয়ে- আসামের চাবাগানে ঝুপড়ি কামিন বস্তি থেকে
যাকে আপনি নিয়ে যেতে চান সাহেবি বাংলোয় মধ্যরাতে
ফায়ার প্লেসের ঝলসে ওঠা আলোয় মদির চোখে দেখতে চান
যার অনাবৃত শরীর
আমি সেই মেয়ে।
রাজস্থানের শুকনো উঠোন থেকে পিপাসার জল আনতে যাকে আপনি
পাঠিয়ে দেন দশ মাইল দূরে সরকারি ইঁদারায়- আর কুড়ি মাইল
হেঁটে ক্লান্ত বিধ্বস্ত যে রমণী ঘড়া কাঁখে ঘরে ফিরলেই যাকে বসিয়ে দেন
চুলার আগুনের সামনে আপনার রুটি বানাতে
আমিই সেই মেয়ে।
আমিই সেই মেয়ে- যাকে নিয়ে আপনি মগ্ন হতে চান গঙ্গার ধারে কিংবা
ভিক্টোরিয়ার সবুজে কিংবা সিনেমা হলের নীল অন্ধকারে, যার
চোখে আপনি একে দিতে চান ঝুটা স্বপ্নের কাজল আর ফুরিয়ে যাওয়া
সিগারেটের প্যাকেটের মত যাকে পথের পাশে ছুঁড়ে ফেলে আপনার ফুল সাজানো
গাড়ি শুভবিবাহ সুসম্পন্ন করতে ছুটে যায় শহরের পথে-
কনে দেখা আলোর গোধুলিতে একা দাঁড়িয়ে থাকা
আমিই সেই মেয়ে।
আমিই সেই মেয়ে- এমন কি দেবতারাও যাকে ক্ষমা করেন না। অহংকার
আর শক্তির দম্ভে যার গর্ভে রেখে যান কুমারীর অপমান
আর চোখের জলে কুন্তী হয়ে নদীর জলে
বিসর্জন দিতে হয় কর্ণকে। আত্মজকে।
আমিই সেই মেয়ে।
সংসারে অসময়ের আমিই ভরসা।
আমার ছাত্র পড়ানো টাকায় মায়ের ওষুধ কেনা হয়।
আমার বাড়তি রোজগারে ভাইয়ের বই কেনা হয়।
আমার সমস্ত শরীর প্রবল বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে।
কালো আকাশ মাথায় নিয়ে
আমি ছাতা হয়ে থাকি।
ছাতার নিচে সুখে বাঁচে সংসার।
আপনি
আপনারা
আমার জন্য অনেক করেছেন।
সাহিত্যে কাব্যে শাস্ত্রে লোকাচারে আমাকে
মা বলে পুজো করেছেন।
প্রকৃতি বলে আদিখ্যেতা করেছেন- আর
শহর গঞ্জের কানাগলিতে
ঠোঁটে রঙ মাখিয়ে কুপি হাতে দাঁড় করিয়েও দিয়েছেন।
হ্যা, আমিই সেই মেয়ে।
একদিন হয়ত
হয়ত একদিন- হয়ত অন্য কোন এক দিন
আমার সমস্ত মিথ্যে পোশাক ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে
আমিই হয়ে উঠবো সেই অসামান্যা !
খোলা চুল মেঘের মত ঢাকবে আমার খোলা পিঠ।
দু চোখে জ্বলবে ভীষণ আগুন।
কপাল-ঠিকরে বেরুবে ভয়ঙ্কর তেজরশ্মি।
হাতে ঝলসে উঠবে সেই খড়গ।
দুপায়ের নুপুরে বেজে উঠবে রণদুন্দভি।
নৃশংস অট্টহাসিতে ভরে উঠবে আকাশ।
দেবতারাও আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে বলতে থাকবেন
মহামেঘপ্রভাং ঘোরাং মুক্তকেশীং চতুর্ভুজাং
কালিকাং দক্ষিণাং মুণ্ডমালা বিভুষিতাং।
বীভৎস দাবানলের মত
আমি এগোতে থাকবো ! আর আমার এগিয়ে যাবার পথের দুপাশে
মুণ্ডহীন অসংখ্য দেহ ছটফট করতে থাকবে-
সভ্যতার দেহ
প্রগতির দেহ-
উন্নতির দেহ-
সমাজের দেহ
হয়ত আমিই সেই মেয়ে ! হয়ত ! হয়ত বা।
See less
letter for best friend in english
letter for best friend in english
See less