Sign Up

Continue with Facebook
Continue with Twitter
or use


Have an account? Sign In Now

Sign In

Continue with Facebook
Continue with Twitter
or use


Forgot Password?

Don't have account, Sign Up Here

Forgot Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.


Have an account? Sign In Now

Sorry, you do not have a permission to ask a question, You must login to ask question.

Continue with Facebook
Continue with Twitter
or use


Forgot Password?

Need An Account, Sign Up Here
Bengali Forum Logo Bengali Forum Logo
Sign InSign Up

Bengali Forum

Bengali Forum Navigation

  • Home
  • বিভাগ
  • বিষয়
  • ব্লগ
Search
Ask A Question

Mobile menu

Close
Ask a Question
  • ইতিহাস
  • বিনোদন
  • সাহিত্য
  • রাজনীতি
  • শিক্ষা
  • সাস্থ্য
  • জীবনযাপন
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • খাদ্য
  • খেলা ধুলা
  • ধৰ্ম ও সংস্কৃতি
  • মতামত
  • বিবিধ

আজিই যুক্ত হোন বাংলা ফোরামের সাথে

জিজ্ঞেস করুন আপনার যে কোনো প্রশ্ন আর যুক্ত থাকুন সবসময়

Create A New Account
In: শিক্ষা

বহুরূপী গল্প | bahurupi subodh ghosh

বহুরূপী গল্প | bahurupi subodh ghosh
Bangla Choto GolpoBengali short storyছোটগল্পবাংলা ছোট গল্প
  • 1
  • 4,201
  • 0
Answer

    1 Answer

    1. Hridoy

      Hridoy

      • 0 Questions
      • 375 Answers
      • 6 Best Answers
      • 1 Point
      View Profile
      fajal89
      2020-03-24T18:30:39+05:30Added an answer on March 24, 2020 at 6:30 pm

      বহুরূপী (subodh ghosh)

      হরিদার কাছে আমরাই গল্প করে বললাম, শুনেছেন, হরিদা, কী কাণ্ড হয়েছে?
      উনানের মুখে ফুঁ দিয়ে আর অনেক ধােয়া উড়িয়ে নিয়ে হরিদা এইবার আমাদের কথার জবাব দিলেন–না, কিছুই শুনিনি।
      –জগদীশবাবু যে কী কাণ্ড করেছেন, শশানেনি হরিদা?
      হরিদা, না রে ভাই, বড় মানুষের কান্ডের খবর আমি কেমন করে শুনবাে? আমাকে বলবেই বা কে?
      সাতদিন হল এক সন্ন্যাসী এসে জগদীশবাবুর বাড়িতে ছিলেন। খুব উঁচু দরের সন্ন্যাসী। হিমালয়ের গুহাতে থাকেন। সারা বছরে শুধু একটি হরীতকী খান ; এ ছাড়া আর কিছুই খান । সন্ন্যাসীর বয়সও হাজার বছরের বেশি বলে অনেকেই মনে করেন। হরিদা-সন্ন্যাসী কি এখনও আছেন?
      -না, চলে গিয়েছে। আক্ষেপ করেন হরিদা-থাকলে একবার গিয়ে পায়ের ধুলাে নিতাম।
      -তা পেতেন না হরিদা। সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস। শুধু ওই একা জগদীশবাবু ছাড়া আর কাউকে পায়ের ধুলাে নিতে দেননি সন্ন্যাসী। হরিদা-কেন?
      –জগদীশবাবু একজোড়া কাঠের খড়মে সােনার বােল লাগিয়ে সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরলেন। তখন বাধ্য হয়ে সন্ন্যাসী পা এগিয়ে দিলেন, নতুন খড়ম পরলেন আর সেই ফাকে জগদীশবাবু পায়ের ধুলাে নিয়েছিলেন।
      হরিদা-বাঃ, এ তাে বেশ মজার ব্যাপার!
      -হ্যা, তা ছাড়া সন্ন্যাসীকে বিদায় দেবার সময় জগদীশবাবু একশাে টাকার একটা নােট জোর করে সন্ন্যাসীর ঝােলার ভেতরে ফেলে দিলেন। সন্ন্যাসী হাসলেন আর চলে গেলেন। |
      গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা। অনেকক্ষণ চুপ করে রইলেন। আমরা কী বলছি বা না বলছি, সেদিকে হরিদার কোন কান নেই।
      হরিদার উনানের আগুন তখন বেশ গনগনে হয়ে জ্বলছে। আমাদের চায়ের জন্য এক হাঁড়ি ফুটন্ত জল নামিয়ে দিয়েই হরিদা তার ভাতের হাঁড়িটাকে উনানে চড়ালেন।
      শহরের সবচেয়ে সরু এই গলিটার ভিতরে এই ছােট্ট ঘরটাই হরিদার জীবনের ঘর ; আর আমাদের চারজনের সকাল-সন্ধ্যার আড্ডার ঘর। চা চিনি আর দুধ আমরাই নিয়ে আসি। হরিদা শুধু তার উনানের আগুনের আঁচে জল ফুটিয়ে দেন।
      খুবই গরীব মানুষ হরিদা। কিন্তু কাজ করতে হরিদার প্রাণের মধ্যেই যেন একটা বাধা আছে। ইচ্ছে করলে কোন অফিসের কাজ, কিংবা কোন দোকানের বিক্রীওয়ালার কাজ পেয়ে যেতে পারেন হরিদা; কিন্তু ওই ধরনের কাজ হরিদার জীবনের পছন্দই নয়। একেবারে ঘড়ির কাটার সামনে সময় বেঁধে দিয়ে আর নিয়ম করে নিয়ে রােজই একটা চাকরির কাজ করে যাওয়া হরিদার পক্ষে সম্ভব নয়। হরিদার উনানের হাঁড়িতে অনেক সময় শুধু জল ফোটে ভাত ফোটে না। এই একঘেয়ে অভাবটাকে সহ্য করতে হরিদার আপত্তি নেই, কিন্তু একঘেঁয়ে কাজ করতে ভয়ানক আপত্তি।
      হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে। আর, সেটাই যে হরিদার জীবনের পেশা। হরিদার মাঝে-মাঝে বহুরূপী সেজে যেটুকু রােজগার করেন, তাতেই তার ভাতের হাঁড়ির দাবি মিটিয়ে দিতে চেষ্টা করেন। মাঝে মাঝে সত্যিই উপােস করেন হরিদা। তারপর একদিন হঠাৎ আবার এক সকালে কিংবা সন্ধ্যায় বিচিত্র ছদ্মবেশে অপরূপ হয়ে পথে বের হয়ে পড়েন। কেউ চিনতে পারে না। যারা চিনতে পারে এক-আনা দু-আনা বকশিশ দেয়। যারা চিনতে পারে না, তারা হয় কিছুই দেয় না, কিংবা বিরক্ত হয়ে দুটো-একটা পয়সা দিয়ে দেয়।

      একদিন চকের বাস স্ট্যাণ্ডের কাছে ঠিক দুপুরবেলা একটা আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল। একটা উন্মাদ পাগল ; তার মুখ থেকে লালা ঝরে পড়ছে, চোখ দুটো কটকটে লাল। তার কোমরে একটা ছেঁড়া কম্বল জড়ানাে, গলায় টিনের কৌটার একটা মালা। পাগলটা একটা থান ইট হাতে তুলে নিয়ে বাসের উপরে বসা যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছে। চেঁচিয়ে উঠছে যাত্রীরা, দুটো একটা পয়সা ফেলেও দিচ্ছে।
      একটু পরেই বাসের ড্রাইভার কাশীনাথ ধমক দেয়।খুব হয়েছে হরি, এই বার সরে পড়। অন্যদিকে যাও।

      আঁ? ওটা কি একটা বহুরূপী ? বাসের যাত্রীরা কেউ হাসে, কেউ বা বেশ বিরক্ত হয় ; কেউ আবার বেশ বিস্মিত। সত্যিই, খুব চমৎকার পাগল সাজতে পেরেছে তাে লােকটা।
      হরিদার জীবন এইরকম বহু রূপের খেলা দেখিয়েই একরকম চলে যাচ্ছে। এই শহরের জীবনে মাঝে মাঝে বেশ চমৎকার ঘটনা সৃষ্টি করেন বহুরূপী হরিদা। সন্ধ্যার আলাে সবেমাত্র জ্বলেছে, দোকানে দোকানে লােকজনের ব্যক্ততা আর মুখরতাও জমে উঠেছে। হঠাৎ পথের উপর দিয়ে ঘুণুরের মিষ্টি শব্দ রুমঝুম করে বেজেবেজে চলে যেতে থাকে। এক রূপসী বাঈজী প্রায় নাচতে নাচতে চলে যাচ্ছে। শহরে যারা নতুন এসেছে, তারা দুই চোখ বড় করে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু দোকানদার হেসে ফেলে-হরির কাণ্ড!

      আঁ? এটা একটা বরূপী নাকি? কারও কারও মুগ্ধ চোখের মােহভঙ্গ হয়, আর যেন বেশ একটু হতাশস্বরে প্রশ্ন করে ওঠে।
      বাঈজীর ছদ্মবেশে সেদিন হরিদার রােজগার মন্দ হয়নি। মােট আট টাকা দশ আনা পেয়েছিলেন। আমরাও দেখেছিলাম, এক-একটা দোকানের সামনে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে সেই রূপসী বাঈজী, মুচকি হেসে আর চোখ টিপে একটা ফুলসাজি এগিয়ে দিচ্ছে। দোকানদারও। হেসে ফেলে আর একটা সিকি তুলে নিয়ে বাঈজীর হাতের ফুলসাজির উপর ফেলে দেয়।
      কোনদিন বাউল, কোনদিন কাপালিক। কখনও বোঁচকা কাধে বুড়াে কাবুলীওয়ালা, কখনও হ্যাট-কোট-পেন্টলুন-পরা ফিরিঙ্গি কেরামিন সাহেব। একবার পুলিস সেজে দয়ালবাবুর লিচু বাগানের ভিতরে দাঁড়িয়েছিলেন হরিদা; স্কুলের চারটে ছেলেকে ধরেছিলেন। ভয়ে কেঁদে ফেলেছিল ছেলেগুলাে ; আর স্কুলের মাস্টার এসে সেই নকল পুলিসের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন—এবারের মতাে মাপ করে দিন ওদের। কিন্তু আটআনা ঘুষ নিয়ে তারপর। মাস্টারের অনুরােধ রক্ষা করেছিলেন সেই নকল-পুলিস হরিদা।
      পরদিন অবশ্য স্কুলের মাস্টারমশাইয়ের জানতে বাকি থাকেনি , কাকে তিনি আট আনা ঘুষ দিয়েছেন । কিন্তু মাস্টারমশাই একটুও রাগ করেননি। বরং একটু তারিফই করলেন, সত্যি, খুব চমৎকার পুলিশ সেজেছিল হরি!
      আজ এখন কিন্তু আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না, হরিদা এত গম্ভীর হয়ে কী ভাবছে। সন্ন্যাসীর গল্পটা শুনে কী হরিদার মাথার মধ্যে নতুন কোন মতলব ছটফট করে উঠেছে?
      ঠিকই, আমাদের সন্দেহ মিথ্যে নয়। হরিদা বললেন–আজ তােমাদের একটা জবর খেলা দেখাবাে।
      -আমাদের দেখিয়ে আপনার লাভ কি হরিদা? আমাদের কাছ থেকে একটা সিগারেটের চেয়ে বেশি কিছু তো পাবেন না।
      হরিদা-না, ঠিক তােমাদের দেখাবাে না। আমি বলছি তােমরা সেখানে থেকে। তাহলে

      দেখতে পাবে…।

      –কোথায়?

      হরিদা–আজ সন্ধ্যায় জগদীশবাবুর বাড়িতে।

      –হঠাৎ জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখাবার নাে আপনার এত উৎসাহ জেগে উঠলো

      হরিদা হাসেন-মােটা মতন কিছু আদায় করে নেব। বুঝতেই তো পারছাে, পুরাে দিনটি। রূপ ধরে ঘুরে বেড়িয়েও দু-তিন টাকার বেশি হয় না। একবার বাঈজী সেজে অবশ্য কিছু বেশি পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু ওতেই বা কি হবে?

      ঠিকই বলেছেন হরিদা। সপ্তাহে বড়জোর একটা দিন ব্যাপী সেজে পথে বের হন হরিদা। কিন্তু তাতে সাত দিনের পেট চলবার মতাে রােজগার হয় না।
      হরিদা বলেন-নাঃ, এবার আর কাঙালের মতাে হাত পেতে বকশিস নেওয়া নয়। এবার মারি তাে হাতী, লুঠি তো ভাণ্ডার। একবারেই যা ঝেলে নেব তাতে আমার সারা বছর চলে যাবে।

      কিন্তু সে কী করে সম্ভব? জগদীশবাবু ধনী মানুষ বটে, কিন্তু বেশ কৃপণ মানুষ। হরিদাকে একটা যােগী সন্ন্যাসী কিংবা বৈরাগী সাজতে দেখে কত আর খুশি হবেন জগদীশবাবু? আর খুশি হলেই বা কত আনা বকশিস দেবেন। পাচ আর বেশি তাে নয়।
      হরিদা বলেন-তোমরা যদি দেখতে চাও, তবে আজ ঠিক সন্ধাতে জগদীশবাবুর বাড়িতে থেকো।

      আমরা বললাম-থাকবাে ; আমাদের পাের্টের চাদা নেবার জন্যে আজ ঠিক সন্ধাতেই জগদীশবাবুর কাছে যাব।
      ২
      বড় চমৎকার আজকের এই সন্ধ্যার চেহারা। আমাদের শহরের গায়ে কতদিন তাে চাঁদের আলাে পড়েছে, কিন্তু কোনদিন তাকে আজকের মতাে এমন একটা স্নিগ্ধ ও শান্ত উজ্জ্বলতা কখনও চারদিকে এমন সুন্দর হয়ে ফুটে ওঠেনি।
      ফুরফুর করে বাতাস বইছে। জগদীশবাবুর বাড়ির বাগানের সব গাছের পাতাও ঝিরিঝিরি শব্দ করে কী যেন বলতে চাইছে। জগদীশবাবুর বাড়ির বারান্দাতে মস্ত বড় একটা আলাে জ্বলছে। সেই আলাের কাছে একটা চেয়ারের উপর বসে আছেন জগদীশবাবু। সাদা মাথা, সাদা দাড়ি, সৌম্য শান্ত ও জ্ঞানী মানুষ জগদীশবাবু। আমরা আমাদের স্পাের্টের চাদার খাতাটিকে জগদীশবাবুর হাতে তুলে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
      চমকে উঠলেন জগদীশবাবু। বারান্দার সিড়ির দিকে তাকিয়ে জগদীশবাবুর দুই বিস্মিত চোখ অপলক হয়ে গেল।

      আমরাও চমকে উঠেছি বইকি। আশ্চর্য হয়েছি, একটু ভয়ও পেয়েছি। কারণ, সত্যিই যে বিশ্বাস করতে পারছি না, সিঁড়ির কাছে এসে যে দাঁড়িয়েছে, সে কি সত্যিই হরিদা? ও চেহারা কি সত্যিই কোন বহুরূপীর হতে পারে?

      জটাজুটধারী কোন সন্ন্যাসী নয়। হাতে কমন্ডলু নেই, চিমটে নেই। মৃগচর্মের আসনও সঙ্গে নেই। গৈরিক সাজও নেই। আদুর গা, তার উপর একটি ধবধবে সাদা উত্তরীয়। পরনে ছােট বহরের একটি সাদা থান।
      মাথায় ফুরফুর করে উড়ছে শুকনাে সাদা চুল। ধুলাে মাখা পা, হাতে একটা ঝােলা, সে ঝােলার ভিতরে শুধু একটা বই, গীতা। গীতা বের করে কি যেন দেখলেন এই আগন্তুক। তারপর নিজের মনেই হাসলেন।
      আগন্তুক এই মানুষটি যেন এই জগতের সীমার ওপার থেকে হেঁটে হেঁটে চলে এসেছেন । শীর্ণ শরীবটাকে প্রায় অশরীরী একটা চেহারা বলে মনে হয়। কী অদ্ভুত উদাত্ত শান্ত ও উজ্জ্বল একটা দৃষ্টি এই আগন্তুকের চোখ থেকে ঝরে পড়ছে।
      উঠে দাঁড়ালেন জগদীশবাবু–আসুন।
      আগন্তুক হাসেন–আপনি কি ভগবানের চেয়েও বড়?

      জগদীশবাবু কিছু ভেবে বলেন-কেন? কেন? আপনি একথা কেন বলছেন মহারাজ?

      আমি মহারাজ নই, আমি এই সৃষ্টির মধ্যে এককণা ধুলি।-কিন্তু আপনি বােধহয় এগার লক্ষ টাকার সম্পত্তির অহংকারে নিজেকে ভগবানের চেয়েও বড় বলে মনে করেন। তাই ওখানেই দাঁড়িয়ে আছেন, নেমে আসতে পারছেন না।

      সেই মুহূর্তে সিঁড়ি ধরে নেমে যান জগদীশবাবু।-আমার অপরাধ হয়েছে। আপনি রাগ করবেন না।

      আগন্তুক আবার হাসেন–আমি বিরাগী, রাগ নামে কোন রিপু আমার নেই। ছিল একদিন, সেটা পূর্বজন্মের কথা।
      জগদীশবাবু- বলুন, এখন আপনাকে কিভাবে সেবা করবাে?
      বিরাগী বলেন-ঠাণ্ডা জল চাই, আর কিছু চাই না।

      ঠাণ্ডা জল খেয়ে নিয়ে হাঁপ ছাড়েন বিরাগী। এদিকে ভবতােষ আমার কানের কাছে ফিসফিস করে।-না না, হরিদা নয়। হতেই পারে না। অসম্ভব! হরিদার গলার স্বর এরকমেরই নয়।

      বিরাগী বলেন–পরম সুখ কাকে বলে জানেন? সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়া!
      ভবতোষ কানের কাছে মুখ এগিয়ে দিয়ে অনাদি বলে-শুনছে তাে? এসব ভাষা কি হরিদার মুখের ভাষা হতে পারে?

      জগদীশবাবু ততক্ষণে সিঁড়ির উপর বসে পড়েছেন । বোধহয় বিরাগীর পা স্পর্শ করার জন্যে তার হাত দুটো ছটফট করতে শুরু করেছে। জগদীশবাবু বলেন আমার এখানে কয়েকটা দিন থাকুন বিরাগীজী। আপনার কাছে এটা আমার প্রাণের অনুরােধ। দুই হাত জোড় করে বিরাগীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন জগদীশবাবু। |
      বিরাগী হাসেন- বাইরে খােলা আকাশ থাকতে আর ধরিত্রীর মাটিতে স্থান থাকতে, আমি এক বিষয়ীর দালান বাড়ির ঘরে থাকবাে কেন, বলতে পারেন?

      –বিরাগীজী! জগদীশবাবুর গলার স্বরের আবেদন করুণ হয়ে ছলছল করে।
      বিরাগী বলেন-না, আপনার এখানে জল খেয়েছি, এই যথেষ্ট। পরমাত্মা আপনার কল্যাণ করুন। কিন্তু আপনার এখানে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
      জগদীশবাবু–তবে অন্তত একটু কিছু আজ্ঞা করুন, যদি আপনাকে কোন…।
      বিরাগীনা না, আমি যার কাছে পড়ে আছি, তিনি আপনার চেয়ে কিছু কম নয়। কাজেই আপনার কাছে আমার তাে কিছু চাইবার দরকার হয় না।
      জগদীশবাবু–তবে কিছু উপদেশ শুনিয়ে যান বিরাগী, নইলে আমি শান্তি পাবাে না।
      বিরাগী-ধন জন যৌবন কিছুই নয় জগদীশবাবু। ওসব হলাে সুন্দর সুন্দর এক-একটি বঞ্চনা। মন-প্রাণের সব আকাক্ষা নিয়ে শুধু সেই একজনের আপন হতে চেষ্টা করুন, যাকে পেলে এই সৃষ্টির সব ঐশ্বর্য পাওয়া হয়ে যায়।..আচ্ছা আমি চলি।
      জগদীশবাবু বলেন—আপনি একটা মিনিট থাকুন বিরাগীজী। সিড়ির উপরে অচঞ্চল হয়ে একটা মিনিট দাঁড়িয়ে রইলেন বিরাগী। আজকের চাঁদের আলাের চেয়েও মিন্ধ হয়ে অদ্ভুত এক জ্যোৎস্না যেন বিরাগীর চোখ থেকে ঝরে পড়ছে। ভবতােষ ফিসফিস করে-না না, ওই চোখ কী হরিদার চোখ হতে পারে? অসম্ভব।

      জগদীশবাবুর হাতে একটা থলি। থলির ভিতরে নােটের তাড়া। বিরাগীর পায়ের কাছে থলিটাকে রেখে দিয়ে ব্যাকুল স্বরে প্রার্থনা করেন জগদীশবাবু-এই প্রণামী, এই সামান্য। একশাে এক টাকা গ্রহণ করে আমাকে শান্তি দান করুন বিরাগীজী। আপনার তীর্থ ভ্রমণের জন্য এই টাকা আমি দিলাম।

      বিবাগী হাসেন–আমার বুকের ভিতরেই যে সব তীর্থ। ভ্রমণ করে দেখবার তাে কোন দরকার হয় না।
      জগদীশবাবু-আমার অনুরােধ বিরাগীজী…।
      বিরাগী বলেন-আমি যেমন অনায়াসে ধুলাে মাড়িয়ে চলে যেতে পারি, তেমনই অনায়াসে সােনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি।
      বলতে বলতে সিঁড়ি থেকে নেমে গেলেন বিরাগী। একশাে এক টাকার থলিটা সিঁড়ির উপরেই পড়ে রইল। সেদিকে ভুলেও একবার তাকালেন না বিরাগী।

      ৩

      -কি করছেন হরিদা? কি হলাে? কই? আজ যে বলেছিলেন জবর খেলা দেখাবেন, সে কথা কি ভুলেই গেলেন। আজকের সন্ধ্যাটা ঘরে বসেই কাটিয়ে দিলেন কেন?

      বলতে বলতে আমরা সবাই হরিদার ঘরের ভিতরে ঢুকলাম
      হরিদার উনানের আগুন তখন বেশ গনগনে হয়ে জ্বলছে। উনানের উপর হাঁড়িতে চাল ফুটছে। আর, একটা বিড়ি ধরিয়ে নিয়ে হরিদা চুপ করে বসে আছেন। আমাদের দেখতে পেয়েই লজ্জিতভাবে হাসলেন।
      -কি আশ্চর্য! চমকে ওঠে ভবতোষ।–হরিদা, আপনি তাহলে সত্যিই বের হয়েছিলেন। আপনিই বিরাগী?
      হরিদা হাসেন-না রে ভাই।
      ওই তাে সেই সাদা উত্তরীয়টা পড়ে রয়েছে মাদুরের উপর, আর সেই ঝােলাটা আর সেই গীতা।

      অনাদি বলে—এটা কি কাণ্ড করলেন, হরিদা? জগদীশবাবু তাে পাঁচশাে টাকা সাধলেন, অথচ আপনি একেবারে খাঁটি সন্ন্যাসীর মতাে সব তুচ্ছ করে সরে পড়লেন ?

      হরিদা–কি করবাে বল? ইচ্ছেই হলাে না। শত হোক…। ভবতােষ কি?

      হরিদা-শত হোক, একজন বিরাগী সন্ন্যাসী হয়ে টাকা-ফাকা কি করে স্পর্শ করি বল?
      তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায়। |
      কী অদ্ভুত কথা বললেন হরিদা! হরিদার একথার সঙ্গে তর্ক চলে না। আর, বুঝতে অসুবিধে নেই, হরিদার জীবনের ভাতের হাঁড়ি মাঝে মাঝে শুধু জল ফুটিয়েই সারা হবে। অদৃষ্ট কখনও হরিদার এই ভুল ক্ষমা করবে না।
      অনাদি বলে- কিন্তু আপনি কি জগদীশবাধুর কাছে গিয়ে আর কখনও…।
      চেঁচিয়ে হেসে ওঠেন হরিদা-যা বই তাে। না গিয়ে উপায় কি ? গিয়ে অন্তত বকশিশটা তাে দাবি করতে হবে?

      বকশিশ? চেঁচিয়ে ওঠে ভবতােষ। সেটা তাে বড়জোর আট আনা কিংবা দশ আনা। | হরিদা বিড়ি মুখে দিয়ে লজ্জিতভাবে হাসেন-কি আর করা যাবে বলাে? খাটি মানুষ তাে নয়, এই বছরূপীর জীবন এর চেয়ে বেশি কি আশা করতে পারে?

      • 0

    You must login to can add an answer.

    Continue with Facebook
    Continue with Twitter
    or use


    Forgot Password?

    Sidebar

    আরও দেখুন

    • বিড়াল গল্প (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ) Biral by bankim chandra in bengali pdf
    • শিল্পী ছোট গল্প মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (আলোচনা ও বাখ্যা) Shilpi Manik Bandopadhyay Short Stories in Bengali?
    • দেনাপাওনা (ছোটগল্প ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | dena paona short story by rabindranath tagore
    • দেনাপাওনা (ছোটগল্প ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | dena paona story in bengali pdf
    • পোস্টমাস্টার (ছোটগল্প ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | postmaster by rabindranath tagore pdf
    • ফসিল (ছোটগল্প ) সুবোধ ঘোষ | fossil subodh ghosh pdf download
    • সুখ পাওয়া যায় অনেকখানি কবির মতে সুখ লাভের উপায়টি কী?
    • সেইটা সবার চেয়ে শ্রেয় কবির মতে সবার চেয়ে শ্রেয় কি
    • সেইটে সবার চেয়ে শ্রেয় কবির মতে সবার চেয়ে শ্রেয় কি? (বোঝাপড়া- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
    • অমলাকান্তি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Amalkanti Poem Questions and Answers?
    • আঠারো বছর বয়স কবিতার সারমর্ম | Atharo Bochor Boyosh Poem Summary in Bengali?
    • অমলকান্তি কবিতার সারমর্ম বিষয়বস্তু | Amalkanti Poem Summary in Bengali?
    • ভোরাই (সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত) সারাংশ ও মূলভাব | Bhorai Poem Summary in Bengali?
    • Mountain and Squirrel কবিতার বাংলা সারাংশ ও মূলভাব | Fable Poem Summary in Bengali?
    • বাংলা অর্থ | Days to go meaning in Bengali?
    • দিন এর সমার্থক শব্দ | Synonyms of day in Bengali?
    • সমার্থক শব্দের তালিকা | Bengali Synonyms list or Bengali Samarthak Sabda list
    • বাংলায় অর্থসহ ব্যাখ্যা | The North Ship Poem Meaning in Bengali?
    • বাংলায় অর্থসহ ব্যাখ্যা | On Killing a Tree Poem Bengali Meaning?
    • বাংলায় অর্থসহ ব্যাখ্যা | The Poetry of Earth Bengali Meaning?

    বিষয়

    All Bangla Paragraph (105) Bangla Kobita (150) Bangla Rachana (105) Bengali Essay (105) bengali lyrics (82) Bengali Poems (124) Bengali Rachana (99) bengali song lyrics (83) bengali song lyrics in bengali (83) Kobita (143) অনুচ্ছেদ (127) বাংলা কবিতা (164) বাংলা গানের লিরিক্স (83) বাংলা প্রবন্ধ (97) বাংলা রচনা (127)

    Footer

    © 2020 Bengali Forum · All rights reserved.

    Add Bengali Forum to your Homescreen!

    Add