Bengali Forum Latest Questions

  1. সমাধি-লিপি -মাইকেল মধুসূদন দত্ত দাঁড়াও, পথিক-বর, জন্ম যদি তব বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধিস্থলে ( জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি বিরাম ) মহীর পদে মহানিদ্রাবৃত দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন! যশোরে সাগরদাঁড়ী কবতক্ষ-তীরে জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী! কবি মাইকেল মধুসূদন দত্Read more

    সমাধি-লিপি

    -মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    দাঁড়াও, পথিক-বর, জন্ম যদি তব
    বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধিস্থলে
    ( জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি
    বিরাম ) মহীর পদে মহানিদ্রাবৃত
    দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন!
    যশোরে সাগরদাঁড়ী কবতক্ষ-তীরে
    জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি
    রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী!

    কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমাধিস্থলে নিচের লেখা রয়েছে এই অবিস্মরণীয় পংক্তিমালা। কবি এখানে পথিকদের কাছে একটি ক্ষণ দাঁড়াতে মিনতি করছেন । এই সমাধিস্থলে তিনি মহা নিদ্রায় আচ্ছন্ন । তাঁর নাম শ্রীমধুসূদন, জন্ম যশোরে, পিতার নাম রাজনারায়ণ দত্ত এবং মাতামহ জাহ্নবী।

    In English Font: 

    Darao, Pothik-bar, Jonmo jadi tobo
    Bonge! Tishta khanakal! E Shomadisthale
    (Jananir Kole Shishu Lobhoye Jemti
    biram) Mohir pothe mohanidrabrito
    Dattakulodab kobi Shrimadhushudhan!
    Joshore Shagardari kobotakkho-tire
    Janmobhumi, janmodata datta mohamoti
    Rajnarayan name, Janani jannobi!

     

    See less
  1. Pursuing -অন্বেষণ করা (কোনো উদ্দেশ্য)  অথবা  চালানো বা চালিয়ে যাওয়া বা কাজে লিপ্ত থাকা । graduation- স্নাতক, ডিগ্রি For Example: -I am pursuing graduation in Economics from Delhi University (আমি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থশাস্ত্রে স্নাতক করিতেছি) - Are you pursuing graduation in Bengali? (তুমি কিRead more

    Pursuing -অন্বেষণ করা (কোনো উদ্দেশ্য)  অথবা  চালানো বা চালিয়ে যাওয়া বা কাজে লিপ্ত থাকা ।

    graduation- স্নাতক, ডিগ্রি

    For Example:

    -I am pursuing graduation in Economics from Delhi University (আমি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থশাস্ত্রে স্নাতক করিতেছি)
    – Are you pursuing graduation in Bengali? (তুমি কি বাংলায় স্নাতক করছ?)

    See less
  1. নীরার জন্য কবিতার ভূমিকা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এই কবিতার জন্য আর কেউ নেই, শুধু তুমি, নীরা এ-কবিতা মধ্যরাত্রে তোমার নিভৃত মুখ লক্ষ্য করে ঘুমের ভিতরে তুমি আচমকা জেগে উঠে টিপয়ের থেকে জল খেতে গিয়ে জিভ কামড়ে একমুহূর্ত ভাবলে কে তোমার কথা মনে করছে এত রাত্রে–তখন আমার এই কবিতার প্রতিটি লাইন শব্দ অক্ষর কম ড্যাসRead more

    নীরার জন্য কবিতার ভূমিকা
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    এই কবিতার জন্য আর কেউ নেই, শুধু তুমি, নীরা
    এ-কবিতা মধ্যরাত্রে তোমার নিভৃত মুখ লক্ষ্য করে
    ঘুমের ভিতরে তুমি আচমকা জেগে উঠে টিপয়ের
    থেকে জল খেতে গিয়ে জিভ কামড়ে একমুহূর্ত ভাবলে
    কে তোমার কথা মনে করছে এত রাত্রে–তখন আমার
    এই কবিতার প্রতিটি লাইন শব্দ অক্ষর কম ড্যাস রেফ্‌
    ও রয়ের ফুট্‌কি সমেত ছুটে যাচ্ছে তোমার দিকে, তোমার
    আধোঘুমন্ত নরম মুখের চারপাশে এলোমেলো চুলে ও
    বিছানায় আমার নিশ্বাসের মতো নিঃশব্দ এই শব্দগুলি
    এই কবিতার প্রত্যেকটি অক্ষর গুণিনের বাণের মতো শুধু
    তোমার জন্য, এরা শুধু তোমাকে বিদ্ধ করতে জানে

    তুমি ভয় পেয়ো না, তুমি ঘুমোও, আমি বহু দূরে আছি
    আমার ভয়ংকর হাত তোমাকে ছোঁবে না, এই মধ্যরাত্রে
    আমার অসম্ভব জেগে ওঠা, উষ্ণতা, তীব্র আকাঙ্খা ও
    চাপা আর্তরব তোমাকে ভয় দেখাবে না–আমার সম্পূর্ণ আবেগ
    শুধু মোমবাতির আলোর মাতো ভদ্র হিম,
    শব্দ ও অক্ষরের কবিতায়
    তোমার শিয়রের কাছে যাবে–এরা তোমাকে চুম্বন করলে
    তুমি টের পাবে না, এরা তোমার সঙ্গে সারারাত শুয়ে থাকবে
    এক বিছানায়–তুমি জেগে উঠবে না, সকালবেলা তোমার পায়ের
    কাছে মরা প্রজাপতির মতো এরা লুটোবে। এদের আত্মা মিশে
    থাকবে তোমার শরীরের প্রতিটি রন্ধ্রে, চিরজীবনের মতো

    বহুদিন পরে তোমার সঙ্গে দেখা হলে ঝর্ণার জলের মতো
    হেসে উঠবে, কিছুই না জেনে। নীরা, আমি তোমার অমন
    সুন্দর মুখে বাঁকা টিপের দিকে চেয়ে থাকবো। আমি অন্য কথা
    বলার সময় তোমার প্রস্ফুটিত মুখখানি আদর করবো মনে মনে
    ঘরভর্তি লোকের মধ্যেও আমি তোমার দিকে
    নিজস্ব চোখে তাকাবো।
    তুমি জানতে পারবে না–তোমার সম্পূর্ণ শরীরে মিশে আছে
    আমার একটি অতি-ব্যক্তিগত কবিতার প্রতিটি শব্দের আত্মা।।

    In English font:

    Nirar Jonno kobitar Bhumika
    Sunil Gangopadhay

    Ei kobitar jonno ar keu nei, shudu tumi Nira
    Ei kobita moddhoratre tumar nibrito mukh lokkho kore
    Ghumer vitore tumi aachmoka jege uthe tipyer
    theke khete giye jiv kamre ek muhurta bhable
    Ke tumar kotha mone korche eto ratre-takhan amar
    Ei kobitar protiti line shabda okkhor kom dash ref
    O royer futki shomet chute jacche tumar dike, tumar
    Adoghumonto naram mukher charpashe elommelo chule o
    Bichanay Amar nishasher moto nishabdo ei shabdoguli
    Ei kobitar protekti okkhar guniner baner moto shudhu
    Tumar jonno, Era shudu tumake biddho korte jane

    Tumi bhoy peyo na, Tumi Ghumo, ami bahudure aachi
    Amar bhoyonkar haat tumake chube na, Ei moddhoratre
    Amr oshombob jege utha, ushanata, tibra aakanka o
    Chapa aartarab tumake bhoy dekhabe na-Amar shampurna aabeg
    Shudu mombatir alor moto bhadra him,
    Shabda o okkhorer kobitay
    Tumar shiyorer kache jabe-era tumake chumban korle
    Tumi ter pabe na, era tumar shange shararat shuye thakbe
    Ek bichanay-tumi jege uthbe na, shokalbela tumar payer
    kache mora projapatir moto era lutobe. eder atma mishe
    thakbe tumar sharirer protiti randre, chirojiboner moto

    Bahudin pore tumar shange dekha hole jharnar jaler moto
    Heshe uthbe, kichu e na jene. Nira, Ami tumar omon
    shundar mukhe baka tiper dike cheye thakbo. Ami onno kotha
    bolar shomoy tumar prosfutito mukhkhani adar korbo mone mone
    Gharbhorti loker moddheo ami tumar dike
    Nijossho chokhe takabo.
    Tumi jante parbe na-tumar shampurna sharire mishe aache
    Amar ekti oti-bektigoto kobitar protiti shabder aatma

     

    See less
  1. না পাঠানো চিঠি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মা, তুমি কেমন আছ? আমার পোষা বেড়াল খুনচু সে কেমন আছে? সে রাত্তিরে কার পাশে শোয়? দুপুরে যেন আলি সাহেবদের বাগানে না যায়। মা, ঝিঙে মাচায় ফুল এসেছে? তুলি কে আমার ডুরে শাড়িটা পর়তে বোলো। আঁচলের ফেঁসোটা যেন সেলাই করে নেয়। তুলি কে কত মেরেছি! আর কোনদিন মারবো না। আমি ভাRead more

    না পাঠানো চিঠি
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    মা, তুমি কেমন আছ?
    আমার পোষা বেড়াল খুনচু সে কেমন আছে?
    সে রাত্তিরে কার পাশে শোয়?
    দুপুরে যেন আলি সাহেবদের বাগানে না যায়।
    মা, ঝিঙে মাচায় ফুল এসেছে?
    তুলি কে আমার ডুরে শাড়িটা পর়তে বোলো।
    আঁচলের ফেঁসোটা যেন সেলাই করে নেয়।
    তুলি কে কত মেরেছি! আর কোনদিন মারবো না।

    আমি ভালো আছি। আমার জন্য চিন্তা কোরো না
    মা, তোমাদের ঘরের চালে নতুন খর দিয়েছো?
    এবারে বৃষ্টি হয়েছে খুব
    তরফদার বাবুদের পুকুরটা কি ভেসে গেছে?
    কালু-ভুলুরা মাছ পেয়েছে কিছু?
    একবার মেঘের ডাক শুনে কৈ মাছ উঠে এসেছিল ডাঙায়
    আমি আম গাছ তলায় দুটো কৈ মাছ ধরেছিলাম
    তোমার মনে আছে, মা?
    মনে আছে আলি সাহেবের বাগানের সেই নারকোল?
    চুরি করে আনিনি! মাটিতে পড়েছিল, কেউ দেখেনি
    নারকোল বড়ার সে স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে।

    আলি সাহেবের ভাই মিজান আমাকে খুব আদর করতো।
    বাবা একদিন দেখতে পেয়ে চেলা কাঠ দিয়ে
    পিটিয়েছিল আমাকে। আমার কি দোষ,
    কেউ আদর করলে আমি না বলতে পারি?
    আমার পিঠে এখনো সে দাগ আছে।
    আলি সাহেবদের বাগানে আর কোনদিন যাইনি।
    আমি আর কোনো বাগানেই যাই না
    সেই দাগটায় হাত বুলিয়ে বাবার কথা মনে পড়ে।
    বাবার জন্য আমার খুব কষ্ট হয়
    আমি ভালো আছি, খুব ভালো আছি
    বাবা যেনো আমার জন্য একটুও না ভাবে।

    তুলি কি এখনো ভুতের ভয় পায়, মা?
    তুলি আর আমি পুকুর ধারে কলাবউ দেখেছিলাম
    সেই থেকে তুলির ফিটের ব্যারাম শুরু হলো
    দাদা সেই কলা গাছটা কেটে ফেললো
    আমি কিন্তু ভয় পাই নি, তুলি কে কত খেপিয়েছি……
    আমার আবার মাঝরাত্রে
    সেই কলা বউ দেখতে ইচ্ছে করে।

    হ্যাঁ, ভালো কথা, দাদা কোনো কাজ পেয়েছে?
    নকুলবাবু যে বলেছিল, বহরমপুরে নিয়ে যাবে
    দাদাকে বোলো আমি ওর উপরে রাগ করিনি
    রাগ পুষে রাখলে মানুষের বড় কষ্ট
    আমার শরীরে আর রাগ নেই,
    আমি আর এক ফোঁটাও কাঁদি না
    মা, আমি রোজ দোকানের খাবার খাই, পটল ভাজাও খাই
    হোটেলে কিন্তু কখনো শাক রান্না হয় না|
    পুকুর পাড় থেকে তুলি আর আমি
    তুলে আনতাম কলমি শাক
    কি ভালো, কি ভালো, বিনা পয়সায়
    কোনোদিন আর কলমি শাক আমার ভাগ্যে জুটবে না|
    জোর হাওয়া দিলে তাল গাছের পাতা শরশর করে
    ঠিক বৃষ্টির মত শব্দ হয়।
    এই ভাদ্দর মাসে তাল পাকে ডিব ডিব করে তাল পড়ে।
    বাড়ির তাল গাছ দুটো আছে তো?
    কালু তালের বড়া বড় ভালবাসে, একদিন বানিয়ে দিও
    তেলের খুব দাম জানি! তবু একদিন দিও

    আমাকে বিক্রি করে দিয়ে ছ-হাজার টাকা পেয়েছিলে
    তা দিয়ে একটা গরু কেনা হয়েছে তো?
    সেই গরুটা ভালো দুধ দেয়?
    আমার মতন মেয়ের চেয়ে গরুও অনেক ভালো
    গরুর দুধ বিক্রি করে সংসারের সুসার হয়
    গরুর বাছুর হয়, তাতেও কত আনন্দ হয়!

    বাড়িতে কন্যা সন্তান থাকলে কত জ্বালা!
    দু’বেলা ভাত দাও রে, শাড়ি দাও রে,
    বিয়ের জোগাড় করো রে|
    হাবলু, মিজান, শ্রীধর দের থাবা থেকে
    মেয়েকে বাঁচাও রে।
    আমি কি বুঝি না? সব বুঝি|

    কেন আমায় বিক্রি করে দিলে তাও তো বুঝি
    সে জন্যই তো আমার কোনো রাগ নেই, অভিমান নেই।
    আমি তো ভালোই আছি, খেয়ে পরে আছি।
    তোমরা ওই টাকায় বাড়ি ঘর সারিয়ে নিও ঠিকঠাক।
    কালু-ভুলু কে ইস্কুলে পাঠিও|
    তুলিকে ব্রজেন ডাক্তারের ওষুধ খাইও।
    তুমি একটা শাড়ি কিনো, বাবার জন্য একটা ধুতি
    দাদার একটা ঘড়ির সখ, তা কি ও টাকায় কুলোবে?

    আমি কিছু টাকা জমিয়েছি, সোনার দুল গড়িয়েছি।
    একদিন কি হলো জানো মা?
    আকাশে খুব মেঘ জমে ছিল,
    দিনের বেলায় ঘুরঘুট্টি অন্ধকার।
    মনটা হঠাত কেমন কেমন করে উঠলো|
    দুপুরবেলা চুপি চুপি বের়িয়ে ট্রেনে চেপে বসলাম
    স্টেশনে নেমে দেখি একটা মাত্র সাইকেল রিক্শা!
    খুব ইচ্ছে হলো একবার বাড়িটা দেখে আসি।
    রথতলার মোড়ে আসতেই কারা যেন চেঁচিয়ে উঠলো-
    কে যায়? কে যায়?
    দেখি যে হাবুল-শ্রীধরদের সঙ্গে তাস খেলছে দাদা
    আমাকে বললো, হারামজাদী, কেন ফিরে এসেছিস?
    আমি ভয় পেয়ে বললাম,
    ফিরে আসিনি গো, থাকতেও আসিনি
    একবার শুধু দেখতে এসেছি
    হাবুল বলল, এটা একটা বেবুশ্যে মাগী
    কী করে জানলো বলো তো
    তা কি আমার গায়ে লেখা আছে?
    আর একটা ছেলে, চিনি না,
    বললো, ছি ছি ছি, গাঁয়ের বদনাম!
    হাবুল রিকশাওয়ালা কে চোখ রাঙিয়ে বললো, ফিরে যা
    আমি বললাম, দাদা, আমি মায়ের জন্য ক’টা টাকা এনেছি
    আর তুলির জন্য…
    দাদা টেনে একটা চড় কষালো আমার গালে।
    আমাকে বিক্রির টাকা হকের টাকা
    আর আমার রোজগারের টাকা নোংরা টাকা
    দাদা সেই পাপের টাকা ছোঁবে না, ছিনিয়ে নিল শ্রীধর
    আমাকে ও দূর দূর করে তাড়িয়ে দিল।

    আমি তবু দাদার ওপর রাগ করিনি
    দাদা তো ঠিকই করেছে,
    আমি তো আর দাদার বোন নই,
    তোমার মেয়ে নই, তুলির দিদি নই
    আমার টাকা নিলে তোমাদের সংসারের অকল্যাণ হবে
    না, না আমি চাই তোমরা সবাই ভালো থাকো
    গরুটা ভালো থাকুক, তালগাছ দুটো ভালো থাকুক
    পুকুরে মাছ হোক, ক্ষেতে ধান হোক,
    ঝিঙে মাচায় ফুল ফুটুক
    আর কোনোদিন ঐ গ্রাম অপবিত্র করতে যাবো না

    আমি খাট-বিছানায় শুই, নীল রঙের মশারি,
    দোরগোড়ায় পাপোশ আছে, দেওয়ালে মা দুর্গার ছবি
    আলমারি ভর্তি কাচের গেলাস।
    বনবন করে পাখা ঘোরে। সাবান মেখে রোজ চান করি
    এখানকার কুকুরগুলো সারা রাত ঘেউ ঘেউ করে
    তাহলেই বুঝছো, কেমন আরামে আছি আমি?

    আমি আর তোমার মেয়ে নই, তবু তুমি আমার মা
    তোমার আরও ছেলেমেয়ে আছে
    আমি আর মা পাবো কোথায়?
    সেইজন্যই তোমাকে চিঠি লিখছি, মা
    তোমার কাছে একটা খুব অনুরোধ আছে
    তুলিকে একটু যত্ন করো, ও বেচারি বড় দুর্বল।
    যতই অভাব হোক, তবু তুলিকে তোমরা…
    তোমার পায়ে পড়ি মা, তুমি বাবাকে বুঝিয়ে বলো,
    তুলিকেও যেন আমার মতন আরামের জীবনে না পাঠায়
    যেমন করে হোক, তুলির একটা বিয়ে দিও|
    ওর একটা নিজস্ব ঘর সংসার, একজন নিজের মানুষ।
    আর যদি কোনোরকমই ওর বিয়ে দিতে না পারো?
    ওকে বলো গলায় দড়ি দিয়ে মরতে
    মরলে ও বেঁচে যাবে

    In English Font:

    Na Patano Chiti
    Sunil Gangopadhyay

    Maa tumi kmn aacho?
    Amar pusha beral khunchu se kamon aache?
    Se ratrire kar pashe shoy?
    Dupore jen ali sahebder bagane na jaay
    Maa, jinge machay fhul asache?
    Tuli k amr dure sarita porte bolo
    Aacholer fusata jeno selai kore nay
    Tuli k koto mereche! Aar kunodin marbo na

    Ami valo achi. Amar jonno cinta koro na
    Maa, tumader ghorer chale nuton khor deyecho?
    Ebare bristi hoyeche khub
    Torofdar babuder pukorta ki beshe geche?
    Kalu-vulura mach peyeche kichu?
    Ekbar meger dak sune koi mach ute ashechilo dagaay
    Ami aam gach tolay duto koi mach dorechil tumar mone aache?
    Mone aache ali saheber bagane sei narikel?
    Churi kore anini! Matithe porechilo, keu dekhne

    narikel bodar se saad ekono mukhe lege aache
    Ami saheber bhai Mijan amake khub ador kortho,
    Baba ekdin dekhte peye chela kaat deye
    pitiyechilo amake. Amr ki dush keu ador korle ami na bolte pari?
    Amr pithe ekon o se daag aache.
    Ami saheber baganei ar kunodin jai-ni.
    Ami ar kuno baganei jai na
    Sei daagta hath buliye babar kotha mone pore.
    Babar jonno amar khub kosto hoy
    Ami valo aachi, khub valo Aachi
    Baba jeno amr jonno ektuo na vave.

    Tuli ki ekon o bhuter voy pay, maa?
    Tuli ar ami pukur dare kolabou dekhechilam
    Sei teke tulir fhiter beyaram suru holo
    Dada sei kola gachta kete fello
    Ami kintu voy paini, tuli k koto khepiyechi..
    Amr abr maz-ratre
    Sei kola bou dekhte ichhe kore

    Haa, valo kotha, dada kuno kaah peyeche?
    Nokulbabu je bolechilo, bohrompur niye jabe
    Dada-k bolo ami or upor raag korini
    Raag pushe rakhle manuser boro kosto
    Amr sorire ar raag nei,
    Ami ar ek puta’o kadi na
    Maa, ami ruj dukaner khabar khai, potol baja’o khai
    Hotel’e kintu kokhono shak ranna hoy na.
    Pukur paar theke tuli ar ami
    Tule antam komli sak
    Ki valo, ki valo, bina poysay
    Kunodin ar komli sak amr baigge jutbe na.
    Joor hawa dele taal gacher pata sor-sor kore thik bristir moto sobdo hoy.
    Ei baddoor mashe taal paake dib dib kore taal pore.
    Barir taal gach duto aache tho?
    Kalu taaler bora boro valobashe, ekdin baniye dio
    Teler khub daami jani! Tobou ekdin dio…

    Amake bikri kore dye 6000 taka peyechilo
    Ta deye ekta goru kena hoyeche tho?
    Sei goruta valo dud de?
    Amr moton meyer cheye goru-o oonek valo
    Gorur dud bikri kore songsar hoy
    Gorur basur hoy, ta’teo koto anondo hoy!

    Barite konna sontan thakle koto jala!
    Du’bela baat daw re, sari daw re,
    Biyer jugar koro re.
    Habul, mijan, Sridhor der thaba teke meyeke bachaw re.
    Ami ki buji na? Sob buji.

    Keno amy bikri kore dele ta’o buji
    Se jonno to amr kuno raag nei, abhiman nei.
    Ami to valo’i aachi, kheye pore aachi.
    Tumra oi takay bari ghor sariye nio thik-thak.
    Kalu-volu k school’e patio.
    Tulike brozen daktarer ousod khai’o.
    Tumi ekta saari kino, babar jonno ekta duti dadar ekta ghorir shok, ta o ki takay kulabe?
    Ami kichu taka jomiyechi, sunar dul goriyechi .
    Ekdin ki holo jano maa?
    Akashe khub meg jome chilo,
    diner belay gurgutti ondhokar.
    Monta hothat kemon kemon kore uthlo.
    Dupurbela chupi chupi beriye trene chepe boslam.
    Statione neme dekhi ekta matro cycle riksha!
    Khub icche holo ekbar barita dekhe ashi.
    Rothtolar more ashtei jeno chechiye utlo-
    ke jay? Ke jay?
    Dekhi je Habul-Sridharder songe asha tash khelche dada.
    Amake bollo, haramjadi, keno fire eshechis?
    Ami bhoy peye bollam,
    fire ashini go, thakteo ashini
    ekbar shudu dekhte eshichi.
    Habul bollo, eta ekta bebusshe magi
    ki kore janlo bolo to ta ki amar gaye lekha ache?
    Ar ekta chele, chini na,
    bollo, chi chi chi, gayer bodnam!
    Habul riksha-walake chokh rangiye bollo, fire jaa
    ami bollam, dada, ami mayer jonno kota taka enechi ar
    Tulir jonno….
    Dada tene ekta chor koshalo amar gale.
    Amake bikrir taka hoker taka
    ar amar rojgarer taka nongra taka.
    dada sei paper taka chobe na, chiniye nilo Sridhar.
    Amake o dur dur kore tariye dilo.
    Ami tobu dadar upor rag korini.
    dada to thik koreche,
    ami to ar dadar bon noi,
    tomar meye nei, Tulir didi noi
    amar taka nile tomader songsharer okolyan hobe
    na, na ami chai tomra sobai bhalo thako
    goruta bhalo thakuk,
    talgach duto bhalo thakuk pukure mach hok,
    khete dhan hok, jhinge machay ful futuk
    ar konodin oi grame opobitro korte jabo na.
    Ami khat- bichanay shui, nil ronger moshari,
    durgoray paposh ache, dewale ma durgar chobi
    almarir bhorti kacher glass.
    Bonbon kore pakha ghore. Saban mekhe roj chan kori,
    ekhankar kulurgulo sara rat gheu gheu kore
    taholei bujcho, kemon aramae achi ami?
    Ami ar tomar meye noi, tobu tumi amar maa
    Tomar aro chlel-meye ache ami r maa paho kothay?
    Sei jonno tomake chthi likchi, maa
    tomar lache ekta khub onurudh ache
    Tulike ektu jotno koro, o bechari boro durbol.
    Jotoi obhab hok, tobe Tulike tomra…
    tomar paye pori maa, tumi babake bujhiye bolo,
    Tulikeo jeno amar moton aramer jibone na pathay
    jemon kore hok, tulir ekta biye dio.
    Or ekta nijossho ghor songshar, ekjon nijer manush.
    Ar jodi kunorokom-e or biye dite na paro?
    Oke bolo golay dori diye morte
    morleo beche jabe.

    See less
  1. This answer was edited.

    মূলভাব : অমলকান্তি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর অন্যতম একটি কবিতা। সেই কবিতার মুখপাত্র 'অমলকান্তি' নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সৃষ্টি করা একটি অমর চরিত্র। "অমলকান্তি" হচ্ছে প্রত্যেকটি মানুষের অন্তরে লুকিয়ে থাকা অপরিপূর্ণ কিছু আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। "অমলকান্তি" গতানুগতিক জীবনের বিপরীত ধারায় চলার স্বপ্ন দেখা মানRead more

    মূলভাব : অমলকান্তি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর অন্যতম একটি কবিতা। সেই কবিতার মুখপাত্র ‘অমলকান্তি’ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সৃষ্টি করা একটি অমর চরিত্র। “অমলকান্তি” হচ্ছে প্রত্যেকটি মানুষের অন্তরে লুকিয়ে থাকা অপরিপূর্ণ কিছু আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। “অমলকান্তি” গতানুগতিক জীবনের বিপরীত ধারায় চলার স্বপ্ন দেখা মানুষের প্রতীক।

    সারাংশ: কবিতায় কবি বলছেন যে, অমলকান্তি তার বন্ধু তার সহপাঠী। কিন্তু অমলকান্তি পড়াশুনায় খুবই কাঁচা, রোজ স্কুলে দেরি করে আসে, কিছু জিজ্ঞেস করলে জানালার দিকে চেয়ে থাকে। আর তার এই অন্যমনস্ক চিন্তা ও অস্বাভাবিক কর্ম কবি কে ভাবায় , দুঃখ দেয়।

    “অমলকান্তি আমার বন্ধু, ইস্কুলে আমরা একসঙ্গে পড়তাম।

    রোজ দেরি করে ক্লাসে আসতো, পড়া পারতো না,”

    সবাই পড়াশোনা করে কোন লক্ষ্য নিয়ে হয়তো কেউ ডাক্তার হতে চায়, কেউতো উকিল। সবাই পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে কিন্তু অমলকান্তি তার ব্যতিক্রমি, সে কোন কিছু হতে চায় না সে হতে চায় রোদ্দুর। সে হতে চায় কাক ডাকা বিকেলের লাজুক রোদ্দুর।

    “আমরা কেউ মাষ্টার হতে চেয়েছিলাম, কেউ ডাক্তার, কেউ উকিল।

    অমলকান্তি সে-সব কিছু হতে চায়নি। সে রোদ্দুর হতে চেয়েছিল।”

    সবাই প্রতিষ্ঠিত হয়ে উঠলেও কমল কান্তি কিন্তু রোদ্দুর হয়ে উঠতে পারেনি, হয়নি পূরণ তার স্বপ্ন। বর্তমানে সে একটি অন্ধকার ছাপাখানায় কাজ করে তার অপরিপূর্ণ স্বপ্ন নিয়ে।

    “আমরা কেউ মাষ্টার হয়েছি। কেউ ডাক্তার, কেউ উকিল

    অমলকান্তি রোদ্দুর হতে পারেনি।”

    মানুষ চাইলে অনেক রকম ভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তার ইচ্ছা ও সাধনায় সে নিতে পারে যেকোনো একটি পেশা। এবং একই ভাবে সবাই প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে কিন্তু কমলা কান্তি তা পেরে উঠেনি। তার রোদ্দুর হওয়ার স্বপ্ন অপ পরিপূর্ণ থেকেই গেল। “সকলেরই ইচ্ছে পূরণ হল, এক অমলকান্তি ছাড়া। অমলকান্তি রোদ্দুর হতে পারে নি।”

    অমলকান্তি কেন রোদ্দুর হতে চেয়েছিল? কারণ, ঘিঞ্জি বস্তিতে থাকার ফলে সে রোদ্দুর পায়না। সে জীবনের আনন্দ থেকে বঞ্চিত তাই রোদ্দুর খুঁজে এবং সে নিজে রোদ্দুর হয় যেতে চায়। অমলকান্তি ভিন্ন ধারায় জীবন চালিয়ে যেতে চায় কারণ টাকা পয়সা এবং প্রতিষ্ঠা জীবনে সব কিছু এনে দিতে পারে না।

    বাস্তবে কোন মানুষ রোদ বৃষ্টি হতে পারে না তাই রোদ্দুর এখানে জীবনের আলোর প্রতীক, আনন্দের প্রতীক। এবং শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠিত হলে সুখী হওয়া যায় না, টাকা পয়সা হয়তো আমাদেরকে স্বাচ্ছন্দ এনে দে কিন্তু প্রকৃত আনন্দ আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মধ্যে নেই। তাই অমলকান্তি রোদ্দুর হতে হয়ে যায়।

    See less
  1. সারাংশ ও মূলভাব: ভোরাই কবিতাটি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লিখিত অন্যতম একটি কবিতা। এই কবিতাটি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের 'বেলাশেষের গান' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। 'ভোরাই' শব্দের অর্থ হচ্ছে ভোর বেলার পরিবেশ বা ভোরের গান। কবি এই কবিতায় গ্রামের ভোর বেলার নৈসর্গিক সৌন্দর্যকে তুলে ধরেছেন। কবিতায় ফুটে উঠেছে ভোর বেলারRead more

    সারাংশ ও মূলভাব:

    ভোরাই কবিতাটি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লিখিত অন্যতম একটি কবিতা। এই কবিতাটি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘বেলাশেষের গান’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

    ভোরাই’ শব্দের অর্থ হচ্ছে ভোর বেলার পরিবেশ বা ভোরের গান। কবি এই কবিতায় গ্রামের ভোর বেলার নৈসর্গিক সৌন্দর্যকে তুলে ধরেছেন। কবিতায় ফুটে উঠেছে ভোর বেলার এক অপরূপ দৃশ্য।

    কবি ভোরের আনন্দে মাতোয়ারা। ভোর হয়েছে, চারিদিক হয়েছে আলোকিত, প্রভাতের আলোয় জেগে উঠেছে প্রকৃতি। আর এই আলোয় ফুলগুলি যেন দুলাদুলি করছে বাতাসের মধ্যে। পদ্ম ফুল তার পাপড়িগুলো এমন ভাবে মেলে ধরেছে যেন মনে হচ্ছে সে হাই তুলছে। স্থল থেকে জল পর্যন্ত জেগেছে ভোর হওয়ার সাড়া। সবাই নিদ্রা মুক্ত হয়েছে এবং সেই নিস্তব্ধ জলের নিচে ও ভোরের সাড়া জেগেছে। প্রাতঃ কালের এই সুমিষ্ট বাতাস যেন আল্পনার মত ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে চারিদিক। আর এই ভোরের সুমিষ্ট আবহাওয়া যেন মনকে উৎফুল্লিত করে তুলেছে।

    কবি আরো বলছেন যে ভোরের আলো যেন ধানের মাঠ কে সবুজ রঙে রাঙিয়ে দিয়েছে। এমনকি পুকুরের কচুরিপানায় ও আনন্দের সেই সবুজ রঙ ফুটে উঠেছে। মাঠ পাথার আলোকিত হয়ে উঠেছে, ফুলগুলো হয়ে উঠেছে আরও রঙিন, আকাশ যেন নীল রঙে ভরে গিয়েছে।

    এবং ভোরের এই সুন্দর পরিবেশে কবির কল্পনাগুলো আজ বাধাহীন। কল্পনাগুলো আজ উড়ে উড়ে ভেসে বেড়াচ্ছে ভোরের হালকা হাওয়ায়। হালকা ওজনের ছোট্ট নৌকাগুকলো যেন সেই হাওয়াতেই নেচে উঠেছে। ‌ কল্পনার পায়রা গুলো যেন আলোতেই ভিজে যাচ্ছে।

    কবির কল্পনায় পদ্মফুল গুলো যেন আজ আকাশগঙ্গায় প্রাণ ঢেলে দিয়েছে। এবং পূর্ব আকাশে স্থির মেঘগুলি কবির মন ভুলিয়েছে। কিন্তু তার বিপরীতে পশ্চিম আকাশে মেঘ যেন সিংহের মত কেশর ফুলিয়ে স্থির দাঁড়িয়ে আছে। আলোর লাল আভা আকাশে এমনভাবে ছড়িয়েছে যেন মনে হচ্ছে সিংহ তার কেশর ফুলিয়ে রয়েছে।

    কবি ভোরের এই বাধাহীন কল্পনাতে আরো দেখছেন যে হাঁসগুলি আকাশপথে উড়ে চলেছে, ফুলেরা বাতাসের মধ্যে দুলতে দুলতে হাসাহাসি করছে। রামধনুর সাত রঙ রাঙিয়েছে মাঠ, ঘাট, প্রান্তর। সমস্ত রাতের শিশির পাতায় পাতায় জমে রয়েছে মানিকের মতো। আর দূর্বাঘাসের উপর সেই শিশির কণায় সূর্যের আলো পড়লে মনে হচ্ছে দূর্বা ঘাসের উপর দীপ জ্বলছে।সকালের আলোয় শীতল শিউলি ফুল গুলো যেন নিদ্রিত শিশুর ন্যায় জেগে উঠেছে। এবং সুগন্ধি ফুলের রাত্রের স্বপ্ন কেড়ে যেন চারিদিকে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে।

    তাই কবি বলছেন সকালে চোখ খুলতেই যেন রঙের মেলা ঝিলিমিলি করছে। নীল রঙের সেই জলাশয় যেন আজ মুক্তমনা সবাইকে তার দিকে ডাকছে। তাই কবির প্রশ্ন এই সুন্দর সকাল কে কোনভাবে নষ্ট করা কি ঠিক হবে? যে প্রভাতে ফিঙ পাখি তাঁর বাসা তৈরির জন্য খড়কুটো নিয়ে যাচ্ছে, বুলবুলি মিষ্টি সুর তুলেছে আর পাখির গানে আনন্দে ভরে উঠেছে এই ভুবন।

    তাই বলা যায় ভোরাই নিছক একটি প্রকৃতির কবিতা, প্রকৃতির গান। এই কবিতার মাধ্যমে কবি প্রকৃতির সাজানো সকালের সেই অপরূপ দৃশ্য কে দেখেছেন চোখ ভরে এবং তুলে ধরেছেন সকালের অপূর্ব সুন্দর মুহূর্ত গুলি তাঁর বাধাহীন কল্পনার মাধ্যমে।

    See less
  1. Fable By Ralph Waldo Emerson The mountain and the squirrel পাহাড় ও কাঠবিড়ালীর মধ্যে Had a quarrel; একটি ঝগড়া হয়েছিল And the former called the latter "Little Prig." এবং প্রথমজন পরের জনকে বলল "ছোট দাম্ভিক" Bun replied, কাঠবিড়ালী উত্তর দিল, "You are doubtless very big; তুমি নিঃসন্দেহে অনেক বড় But allRead more

    Fable

    By Ralph Waldo Emerson

    The mountain and the squirrel
    পাহাড় ও কাঠবিড়ালীর মধ্যে
    Had a quarrel;
    একটি ঝগড়া হয়েছিল
    And the former called the latter “Little Prig.”
    এবং প্রথমজন পরের জনকে বলল “ছোট দাম্ভিক”
    Bun replied,
    কাঠবিড়ালী উত্তর দিল,
    “You are doubtless very big;
    তুমি নিঃসন্দেহে অনেক বড়
    But all sorts of things and weather
    কিন্তূ অন্যান্য সবকিছু এবং আবহাওয়া
    Must be taken in together
    একসঙ্গে নিতেই হবে
    To make up a year
    একটি বছর গড়তে
    And a Sphere
    এবং একটি গোলক তৈরী করতে
    And I think it’s no disgrace
    এবং আমি মনে করি এটা কোনো লজ্জা নয়
    To occupy my place.
    আমার নিজের জায়গা দখল করা।
    If I’m not so large as you,
    যদিও আমি তোমার মতো এতো বিরাট আকারের নই।
    You are not so small as I,
    তুমি আমার মতো এতো ক্ষুদ্র ও নও
    And not half so spry.
    এবং আমার মতো অর্ধেক প্রাণবন্ত ও নও
    I’ll not deny you make
    আমি অস্বীকার করবো না যে তুমি তৈরী করে দিয়েছো
    A very pretty squirrel track;
    কাঠবিড়ালীর জন্য খুব সুন্দর একটি রাস্তা
    Talents differ: all is well and wisely put;
    প্রতিভা ভিন্ন রকমের হয় : সবই ঠিক আছে এবং বিবেচনা করলে
    If I cannot carry forests on my back,
    আমি যে ভাবে কোনো জঙ্গল আমার পিঠে নিয়ে চলতে পারবো না
    Neither can you crack a nut
    সেইভাবে তুমি ও একটি বাদাম ভাঙতে পারবে না।

     

    Word meaning:

    ➢ Mountain-পাহাড়/পর্বত, Squirrel-কাঠবিড়ালী , Quarrel-ঝগড়া , Former-প্রথমজন/পূর্বের জন , Latter- শেষের জন , Little Prig- ছোট দাম্ভিক , Doubtless-নিঃসন্দেহ , All sorts of things-অন্যান্য সবকিছু , Weather-আবহাওয়া , Together-একসঙ্গে , Sphere-গোলক , Deny-অস্বীকার , Disgrace-লজ্জাজনক নয় এমন , Occupy-দখল, Spry-প্রাণবন্ত , Pretty-সুন্দর , Track-রাস্তা/পথ, Talents-প্রতিভা, Differ-ভিন্ন, Wisely-বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে, Put-রাখা , Carry- বহন করা , Forests-জঙ্গল , Back-পিছন , Crack-ভাঙ্গা , Nut-বাদাম

     

    Summary:

    ➢Fable কবিতাটি একটি শিক্ষণীয় কবিতা। প্রতিভা সবার থাকে তা হতে পারে ছোট অথবা হতে পারে বড়। প্রতিটি মানুষের প্রতিভা সমান হবে তা কিন্তু মোটেও কাম্য নয় কিন্তু তাই বলে কোন একজনের প্রতিভা নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা ঠিক নয়।
    এবং তাই কবি Ralph Waldo Emerson এর এই Fable কবিতাটি একটি চমৎকার উদাহরণ। কবিতাটিতে কবি দেখিয়েছেন যে যদিও পাহাড়ের ঝোপ জঙ্গল বহন করার ক্ষমতা আছে কিন্তু সে চাইলেও কাঠবিড়ালির মতো একটি কাঠ বাদাম ভাঙতে পারবে না। তাই একই রকম ভিন্ন মানুষের প্রতিভা ভিন্ন হয়ে থাকে এবং সবাই একই রকমভাবে একই কাজ করতে পারবে তা মোটেও কাম্য নয়। তাই আমাদের উচিত সবার প্রতিভাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করা।

    See less
  1. দুরন্ত আশা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থ - মানসী মর্মে যবে মত্ত আশা সর্পসম ফোঁষে অদৃষ্টের বন্ধনেতে দাপিয়া বৃথা রোষে তখনো ভালোমানুষ সেজে বাঁধানো হুঁকা যতনে মেজে মলিন তাস সজোরে ভেঁজে খেলিতে হবে কষে! অন্নপায়ী বঙ্গবাসী স্তন্যপায়ী জীব জন-দশেকে জটলা করি তক্তপোষে ব'সে। ভদ্র মোরা, শান্ত বড়ো, পোষ-মানা এ প্রাRead more

    দুরন্ত আশা

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    কাব্যগ্রন্থ – মানসী

    মর্মে যবে মত্ত আশা
    সর্পসম ফোঁষে
    অদৃষ্টের বন্ধনেতে
    দাপিয়া বৃথা রোষে
    তখনো ভালোমানুষ সেজে
    বাঁধানো হুঁকা যতনে মেজে
    মলিন তাস সজোরে ভেঁজে
    খেলিতে হবে কষে!
    অন্নপায়ী বঙ্গবাসী
    স্তন্যপায়ী জীব
    জন-দশেকে জটলা করি
    তক্তপোষে ব’সে।

    ভদ্র মোরা, শান্ত বড়ো,
    পোষ-মানা এ প্রাণ
    বোতাম-আঁটা জামার নীচে
    শান্তিতে শয়ান।
    দেখা হলেই মিষ্ট অতি
    মুখের ভাব শিষ্ট অতি,
    অসল দেহ ক্লিষ্টগতি–
    গৃহের প্রতি টান।
    তৈল-ঢালা স্নিগ্ধ তনু
    নিদ্রারসে ভরা,
    মাথায় ছোটো বহরে বড়ো
    বাঙালি সন্তান।

    ইহার চেয়ে হতেম যদি
    আরব বেদুয়িন!
    চরণতলে বিশাল মরু
    দিগন্তে বিলীন।
    ছুটেছে ঘোড়া, উড়েছে বালি,
    জীবনস্রোত আকাশে ঢালি
    হৃদয়তলে বহ্নি জ্বালি
    চলেছি নিশিদিন।
    বর্শা হাতে, ভর্সা প্রাণে,
    সদাই নিরুদ্দেশ
    মরুর ঝড় যেমন বহে
    সকল বাধাহীন।

    বিপদ-মাঝে ঝাঁপায়ে প’ড়ে
    শোণিত উঠে ফুটে,
    সকল দেহে সকল মনে
    জীবন জেগে উঠে–
    অন্ধকারে সূর্যালোতে
    সন্তরিয়া মৃত্যুস্রোতে
    নৃত্যময় চিত্ত হতে
    মত্ত হাসি টুটে।
    বিশ্বমাঝে মহান যাহা
    সঙ্গী পরানের,
    ঝঞ্ঝামাঝে ধায় সে প্রাণ
    সিন্ধুমাঝে লুটে।

    নিমেষতরে ইচ্ছা করে
    বিকট উল্লাসে
    সকল টুটে যাইতে ছুটে
    জীবন-উচ্ছ্বাসে–
    শূন্য ব্যোম অপরিমাণ
    মদ্যসম করিতে পান
    মুক্ত করি রুদ্ধ প্রাণ
    ঊর্ধ্ব নীলাকাশে।
    থাকিতে নারি ক্ষুদ্র কোণে
    আম্রবনছায়ে
    সুপ্ত হয়ে লুপ্ত হয়ে
    গুপ্ত গৃহবাসে।

    বেহালাখানা বাঁকায়ে ধরি
    বাজাও ওকি সুর–
    তবলা-বাঁয়া কোলেতে টেনে
    বাদ্যে ভরপুর!
    কাগজ নেড়ে উচ্চ স্বরে
    পোলিটিকাল তর্ক করে,
    জানলা দিয়ে পশিছে ঘরে
    বাতাস ঝুরুঝুর।
    পানের বাটা, ফুলের মালা,
    তবলা-বাঁয়া দুটো,
    দম্ভ-ভরা কাগজগুলো
    করিয়া দাও দূর!

    কিসের এত অহংকার!
    দম্ভ নাহি সাজে–
    বরং থাকো মৌন হয়ে
    সসংকোচ লাজে।
    অত্যাচারে মত্ত-পারা
    কভু কি হও আত্মহারা?
    তপ্ত হয়ে রক্তধারা
    ফুটে কি দেহমাঝে?
    অহর্নিশি হেলার হাসি
    তীব্র অপমান
    মর্মতল বিদ্ধ করি
    বজ্রসম বাজে?

    দাস্যসুখে হাস্যমুখ,
    বিনীত জোড়-কর,
    প্রভুর পদে সোহাগ-মদে
    দোদুল কলেবর!
    পাদুকাতলে পড়িয়া লুটি
    ঘৃণায় মাখা অন্ন খুঁটি
    ব্যগ্র হয়ে ভরিয়া মুঠি
    যেতেছ ফিরি ঘর।
    ঘরেতে ব’সে গর্ব কর
    পূর্বপুরুষের,
    আর্যতেজ-দর্প-ভরে
    পৃথ্বী থরথর।

    হেলায়ে মাথা, দাঁতের আগে
    মিষ্ট হাসি টানি
    বলিতে আমি পারিব না তো
    ভদ্রতার বাণী।
    উচ্ছ্বসিত রক্ত আসি
    বক্ষতল ফেলিছে গ্রাসি,
    প্রকাশহীন চিন্তারাশি
    করিছে হানাহানি।
    কোথাও যদি ছুটিতে পাই
    বাঁচিয়া যাই তবে–
    ভব্যতার গণ্ডিমাঝে
    শান্তি নাহি মানি।

    In English Font:

    Duranta Aasha
    Rabindranath Tagore

    Morme jobe motto aasha
    Sharpa momo fushe
    Odrister bondhonete
    Dapia britha rushe
    Takhano valo manush sheje
    Badhano hukka jatane meje
    Molin tar shojore veje
    Khelite hobe koshe!
    Annapayi Bangabashi
    Stonnopayi jib
    Jon dosheke jatola kori
    Taktaposhe boshe

    Bhadro mora, Shanto boro
    Posh-man ei pran
    Botam ata jamar niche
    Shantite shoyan
    Dekha holei misti oti
    Mukher bhav shisto oti,
    Olosh deho klistogati
    Griher proti taan
    Toil-dhala snigdo tanu
    Nidrarashe bhora,
    Mathay choto bahre boro
    Bangali shontan

    Ihar cheye hotam jadi
    Arab beduin
    Charantole bishal maru
    digonte bilin
    Chuteche ghura, ureche bali,
    Jibonsrut aakahse dali
    Hridoytole banni jali
    cholechi nishidin.
    borsha hate, bhorsha prane
    shodai niruddesh
    Marur jhar jemon bohe
    Shakal badhahin

    Bipod majhe japaye pore
    Shonit uthe fute,
    Shakal dehe shakal mone
    Jibon jege uthe
    Ondhokare shurjalote
    shantoriya mrityosrute
    Nrittyomoy chitta hote
    matta hashi tute
    Bissho majhe mohan jaha
    Shangi poraner
    Jhanjhamajhe dhay she pran
    Shindhumajhe lute

    Nimeshtore iccha kore
    Bikot ullashe
    Shakal tute jaite chute
    Jibon ucchashe
    shunno Byom oporiman
    Modyo shomo korite paan
    Mukta kori ruddha pran
    urdha nilakashe
    Thakite nari khudra khone
    ambrobonochaye
    Shupta hoye lupta hoye
    Gupta grihobashe

    Behalakhana bakaye dhari
    bajao oki shur-
    Tabla baya kulete tene
    badye bharpur
    Kagoj nere uccha share
    Political tarko kore
    Janla diye poshiche ghore
    Batash jhurujhur.
    Paner bata fuler mala,
    tabla-baya duto,
    Dambha bhora kagajgulo
    Koria dao dur!

    Kisher eto ohongkar
    dambha nahi shaje
    Barong thako mouno hoye
    Shashangkuch laje
    ottachare motto-para
    kabhu ki ho aatmohara?
    tapta hoye raktadhara
    Fute ki dehomajhe?
    Aharnishi helay hashi
    tibro opoman
    Marmotal biddho kori
    Bajroshomo baje?

    Dashyoshuke hashyomukh
    Biniti Jor-kar
    Prabhur pode shohag-mode
    Dodul kalebor!
    Padukatole podiya luti
    Grinay makha onno khuti
    Bygro hoye bhariya muthi
    jetecho firi ghar
    Gharete boshe garba kar
    Purbapurusher,
    Aarjatej-dorpe-bhore
    Prithbi tharthora

    Helaye matha dater aage
    Mishta hashi tani
    Bolite ami paribo na to
    bhadrotar bani
    Ucchoshito rakta aashi
    Bakkhatal feliche grashi
    prokashhin chintarashi
    Koriche hanahani.
    Kothao jadi chutite pai
    bachiya jai tabe-
    Bhovyotar gandimajhe
    Shanti nahi mani

    See less
  1. সারাংশ ও মূলভাবঃ আরােগ্য কাব্যগ্রন্থের ‘ওরা কাজ করে’ কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ বিশ্রামরত, কর্মহীন অবস্থায় মহাশূন্যের দিকে তাকিয়ে ছায়াছবি দেখতে পান। সে ছায়াছবিতে ভারতবর্ষের অতীত থেকে আজকের ইতিহাস যেমন তার কাছে প্রকাশিত হয় তেমনই ফুটে ওঠে লােকসাধারণের জীবনসত্য। জীবনের পরমসত্য যে মানুষদের কর্মে, শ্রমRead more

    সারাংশ ও মূলভাবঃ

    আরােগ্য কাব্যগ্রন্থের ‘ওরা কাজ করে’ কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ বিশ্রামরত, কর্মহীন অবস্থায় মহাশূন্যের দিকে তাকিয়ে ছায়াছবি দেখতে পান। সে ছায়াছবিতে ভারতবর্ষের অতীত থেকে আজকের ইতিহাস যেমন তার কাছে প্রকাশিত হয় তেমনই ফুটে ওঠে লােকসাধারণের জীবনসত্য।

    জীবনের পরমসত্য যে মানুষদের কর্মে, শ্রমে, আত্মত্যাগে মহীয়ান তাদেরই জীবন নিষ্প্রদীপ – এ যন্ত্রণা কবির মর্মপীড়ণের মূল ছিলাে। রথের রশি’ নাটিকায় তাই এ মানুষদেরকেই তিনি রাষ্ট্রপরিচালক হিসেবে দেখিয়েছেন। রাষ্ট্র, সভ্যতার প্রবাহিত ইতিহাস ও তাঁর সুললিত ব্যাখ্যা রবীন্দ্রসাহিত্যের অন্যত্রর মতাে ‘ওরা কাজ করে’ কবিতাতেও প্রকাশিত।

    এ কবিতায় প্রবাহিত ইতিহাসের বিরাট দৃশ্যমালা দরােজা খুলেছে কবির চোখের সামনে। সুদীর্ঘ অতীত থেকে আজ পর্যন্ত ভারতবর্ষের ইতিহাস বিদেশিদের পদলাঞ্ছিত হবার ইতিহাস। অনার্য ভারতে আর্য প্রবেশ এবং “শক-হ্ণ-দল-পাঠান-মােগলের একদেহে লীন হওয়া। বিদেশিদের জয়ােল্লাশ, জয়ৌদ্ধত্ত্বের সামনে অসহায় ভারতবাসী। সমস্ত ভারতজুড়ে বিদেশীয় শাসকদের দম্ভ। প্রত্যক্ষ করেছেন কবি। পাঠান, মােঘলদের জয়স্তম্ভ কালের নিয়মে নিশ্চিহ্ন হয়েছে। সময়ের প্রবাহে ভারত শাস্ত্র করতে এসেছে আর এক বিদেশি ইংরেজ। ইতিহাসচেতনার ব্যঞ্জনাময় প্রকাশে কবি উল্লেখ করেছেন।

    “লৌহ বাঁধা পথে অনল নিঃশ্বাসী রথে।”

    ইংরেজ কীর্তি রেলপথ স্থাপ্নের সংকেতদ্যোতক এই চরণ একইসঙ্গে ইংরেজ লালসারও প্রকাশক। প্রগাঢ় দার্শনিক সত্তার অধিকারী রবীন্দ্রনাথ অবশ্য একইসঙ্গে বলেছেন ইংরেজের পণ্যবাহী সেনা একদিন ভারত থেকে তথা বিশ্ব থেকে লীন হয়ে যাবে।

    ‘জ্যোতিষ্কলােকের পথে রেখামাত্র চিহ্ন আঁকিবে না।

    কবির মৃত্যুর পরে ভারতের স্বাধীনতা এবং কবির জীবদ্দশায় স্বাধীনতা আগমনের লক্ষ্মণ সমাজদেহে প্রকাশিত নয়। তাই কবির প্রত্যয়ী বাণী আমাদের তাঁর দার্শনিক স্বত্তার কাছে শ্রদ্ধাশীল করে তােলে। কবি তাঁর কবিতায় বলেছেন মানুষের জীবনের নিত্যপ্রয়ােজনে যে বিপুল জনতাবলে জীবন থেকে মরণ পর্যন্ত তারাই ধ্রুব, সনাতন। রাজস্তম্ভ ভেঙে যায়, রণডঙ্কা নিঃশব্দ হয়, জয়স্তম্ভ কীর্তিগর্ব ভুলে পুরাকীর্তি হয়ে ওঠে, প্রবল প্রতাপশালীর স্থান হয় ছেলেভুলােনাে ছড়ায় কিন্তু ইতিহাসে প্রাণসঞ্চার করে ওই লােকসাধারণ, সভ্যতার পিলসুজরা, ইতিহাসের রথচক্র ‘ওরা’ই ওদের কর্মের মাধ্যমে সচল রাখে।

    ‘কিষাণের জীবনের শরিক যে জন কর্মে ও কথায় সত্য আত্মীয়তা করেছে অর্জন।

    ‘আরােগ্য কাব্যগ্রন্থের পাঠ্য কবিতায় রবীন্দ্রলােকচেতনের প্রকাশ ঘটেছে সাবলীলভাবে। ১৯৩০ খ্রীঃ-এ। রাশিয়া ভ্রমণের পর রবীন্দ্রনাথ যেন নিপীড়িতের পক্ষে লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা পান। পৃথিবী সে সময় নিদারুণ অর্থদৈণ্যে পিড়ীত, ভারতীয় সমাজও সাম্রাজ্যবাদী শােষণে বিহুল ত্রস্ত। মানবতার বেদীকে রক্তাক্ত করে তুলছে। বিশ্বব্যাপী বণিকতন্ত্রের লােভ। ব্যক্তিজীবনের অসুস্থতায় এ সময়ই কবি পেয়েছেন মৃত্যুর ভয়াবহ আমন্ত্রণের স্বাদ। মানুষ ও পৃথিবীর প্রবাহিত তরঙ্গ তাকে করে তুলছে আরাে দৃঢ়। মানবত্বের পরম সত্য তাই বারংবার রূপ পাচ্ছে তাঁর রচনায়।

    চলিতেছে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি প্রাণী এই শুধু জানি।। চলিতে চলিতে থামে, পণ্য তার দিয়ে যায় কাকে পশ্চাতে যে রহে নিতে ক্ষণপরে সেও নাহি থাকে। (রােগশয্যায়)
    এই জীবনসত্য বহনকারীদের সম্পর্কে পাঠ্য কবিতায় বলেছেন –

    ‘মাটির পৃথিবী পানে আঁখি মেলি যবে দেখি সেথা কলকলরবে বিপুল জনতা চলে ।
    নানা পথে নানা দলে দলে যুগযুগান্তর হতে মানুষের নিত্যপ্রয়ােজনে। জীবনে মরণে।

    বিশ্বজীবন প্রবাহের এই সত্যকে প্রকাশ গিয়ে এ কবিতায় এদের জীবন, এদের কথা, তাদের ভাষা কোন কিছুই সামাজিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত নয় বলে কবি কলকলরবে বলেছেন, বলেছেন এরা কেউ জন নয় – জনতা। এদের ব্যক্তিপরিচয়ে সমাজে উপেক্ষিত বলে কবি এদের কবিতায় তুচ্ছার্থবােধক সর্বনাম ‘ওরা” বলে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু এদের কর্মক্ষেত্র সর্বত্র, এরাই সভ্যতার বাহক, ধারক, পরিচালক – ওরা চিরকাল টানে দাঁড়, ধরে থাকে হাল ওরা মাঠে মাঠে বীজ বােনে, পাকা ধান কাটে।
    সভ্যতা অগ্রগতি ও দিশা দেওয়া এই ব্রাত্য, উপেক্ষিতরা সভ্যতার পিলসূজ। তারাই সভ্যতার গতি ও দিকনির্ণায়ক বলে দেশ-দেশান্তরে, অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গ, পজ্ঞাব-বােম্বাই-গুজরাট, সমুদ্র নদীর ঘাট সর্বত্রই শােনা যায় এদের রব। উপনিষদ বলেছে মানবজীবনের মূলমন্ত্র চরৈবতি, চরৈবতি। এরা সেই মন্ত্রকে জীবনের মহামন্ত্রধ্বনিতে রূপান্তরিত করে রেখেছে – আগামীকেও রাখবে।

    See less