Bengali Forum Latest Questions

  1. This answer was edited.

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মদিন নিয়ে অনেক কবিতা লিখেছেন। তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থের নাম "জন্মদিনে" সেই কাব্যে রয়েছে ২৯ টি কবিতা। এখানে তিনটি কবিতা দেয়া হলো যেগুলি তার অন্যান্য কাব্যের অন্তর্গত। জন্মদিন (তোমরা রচিলে যারে) কাব্যগ্রন্থ-নবজাতক জন্মদিন (আজ মম জন্মদিন। সদ্যই প্রাণের প্রান্তপথে) কাব্যগ্রন্থ-সেঁজুতিRead more

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মদিন নিয়ে অনেক কবিতা লিখেছেন। তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থের নাম “জন্মদিনে” সেই কাব্যে রয়েছে ২৯ টি কবিতা।
    এখানে তিনটি কবিতা দেয়া হলো যেগুলি তার অন্যান্য কাব্যের অন্তর্গত।

    • জন্মদিন (তোমরা রচিলে যারে) কাব্যগ্রন্থ-নবজাতক
    • জন্মদিন (আজ মম জন্মদিন। সদ্যই প্রাণের প্রান্তপথে) কাব্যগ্রন্থ-সেঁজুতি
    • জন্মদিন (দৃষ্টিজালে জড়ায় ওকে হাজারখানা চোখ) কাব্যগ্রন্থ-সেঁজুতি

     
    আরও পড়ুনঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত কবিতাসমূহ

    জন্মদিন

    তোমরা রচিলে যারে
    নানা অলংকারে
    তারে তো চিনি নে আমি,
    চেনেন না মোর অন্তর্যামী
    তোমাদের স্বাক্ষরিত সেই মোর নামের প্রতিমা।
    বিধাতার সৃষ্টিসীমা
    তোমাদের দৃষ্টির বাহিরে।
    কালসমুদ্রের তীরে
    বিরলে রচেন মূর্তিখানি
    বিচিত্রিত রহস্যের যবনিকা টানি
    রূপকার আপন নিভৃতে।
    বাহির হইতে
    মিলায়ে আলোক অন্ধকার
    কেহ এক দেখে তারে, কেহ দেখে আর।
    খণ্ড খণ্ড রূপ আর ছায়া,
    আর কল্পনার মায়া
    আর মাঝে মাঝে শূন্য, এই নিয়ে পরিচয় গাঁথে
    অপরিচয়ের ভূমিকাতে।
    সংসারখেলার কক্ষে তাঁর
    যে-খেলেনা রচিলেন মূর্তিকার
    মোরে লয়ে মাটিতে আলোতে,
    সাদায় কালোতে,
    কে না জানে সে ক্ষণভঙ্গুর
    কালের চাকার নিচে নিঃশেষে ভাঙিয়া হবে চুর।
    সে বহিয়া এনেছে যে-দান
    সে করে ক্ষণেকতরে অমরের ভান–
    সহসা মুহূর্তে দেয় ফাঁকি,
    মুঠি-কয় ধূলি রয় বাকি,
    আর থাকে কালরাত্রি সব-চিহ্ন-ধুয়ে-মুছে-ফেলা।
    তোমাদের জনতার খেলা
    রচিল যে পুতুলিরে
    সে কি লুব্ধ বিরাট ধূলিরে
    এড়ায়ে আলোতে নিত্য রবে।
    এ কথা কল্পনা কর যবে
    তখন আমার
    আপন গোপন রূপকার
    হাসেন কি আঁখিকোণে,
    সে কথাই ভাবি আজ মনে

     

    জন্মদিন

    দৃষ্টিজালে জড়ায় ওকে হাজারখানা চোখ,
    ধ্বনির ঝড়ে বিপন্ন ওই লোক।
    জন্মদিনের মুখর তিথি যারা ভুলেই থাকে,
    দোহাই ওগো, তাদের দলে লও এ মানুষটাকে–
    সজনে পাতার মতো যাদের হালকা পরিচয়,
    দুলুক খসুক শব্দ নাহি হয়।
    সবার মাঝে পৃথক ও যে ভিড়ের কারাগারে
    খ্যাতি-বেড়ির নিরন্ত ঝংকারে।
    সবাই মিলে নানা রঙে রঙিন করছে ওরে,
    নিলাজ মঞ্চে রাখছে তুলে ধরে,
    আঙুল তুলে দেখাচ্ছে দিনরাত;
    কোথায় লুকোয় ভেবে না পায়, আড়াল ভূমিসাৎ।
    দাও-না ছেড়ে ওকে
    স্নিগ্ধ -আলো শ্যামল-ছায়া বিরল-কথার লোকে,
    বেড়াহীন বিরাট ধূলি-‘পর,
    সেই যেখানে মহাশিশুর আদিম খেলাঘর।
    ভোরবেলাকার পাখির ডাকে প্রথম খেয়া এসে
    ঠেকল যখন সব-প্রথমের চেনাশোনার দেশে,
    নামল ঘাটে যখন তারে সাজ রাখে নি ঢেকে,
    ছুটির আলো নগ্ন গায়ে লাগল আকাশ থেকে–
    যেমন করে লাগে তরীর পালে,
    যেমন লাগে অশোক গাছের কচি পাতার ডালে।
    নাম ভোলা ফুল ফুটল ঘাসে ঘাসে
    সেই প্রভাতের সহজ অবকাশে।
    ছুটির যজ্ঞে পুষ্পহোমে জাগল বকুলশাখা,
    ছুটির শূন্যে ফাগুনবেলা মেলল সোনার পাখা।
    ছুটির কোণে গোপনে তার নাম
    আচম্কা সেই পেয়েছিল মিষ্টিসুরের দাম;
    কানে কানে সে নাম ডাকার ব্যথা উদাস করে
    চৈত্রদিনের স্তব্ধ দুইপ্রহরে।
    আজ সবুজ এই বনের পাতায় আলোর ঝিকিঝিকি
    সেই নিমেষের তারিখ দিল লিখি।
    তাহারে ডাক দিয়েছিল পদ্মানদীর ধারা,
    কাঁপন-লাগা বেণুর শিরে দেখেছে শুকতারা;
    কাজল-কালো মেঘের পুঞ্জ সজল সমীরণে
    নীল ছায়াটি বিছিয়েছিল তটের বনে বনে;
    ও দেখেছে গ্রামের বাঁকা বাটে
    কাঁখে কলস মুখর মেয়ে চলে স্নানের ঘাটে;
    সর্ষেতিসির খেতে
    দুইরঙা সুর মিলেছিল অবাক আকাশেতে;
    তাই দেখেছে চেয়ে চেয়ে অস্তরবির রাগে–
    বলেছিল, এই তো ভালো লাগে।
    সেই-যে ভালো-লাগাটি তার যাক সে রেখে পিছে,
    কীর্তি যা সে গেঁথেছিল হয় যদি হোক মিছে,
    না যদি রয় নাই রহিল নাম–
    এই মাটিতে রইল তাহার বিস্মিত প্রণাম।

     

    জন্মদিন

    আজ মম জন্মদিন। সদ্যই প্রাণের প্রান্তপথে
    ডুব দিয়ে উঠেছে সে বিলুপ্তির অন্ধকার হতে
    মরণের ছাড়পত্র নিয়ে। মনে হতেছে কী জানি
    পুরাতন বৎসরের গ্রন্থিবাঁধা জীর্ণ মালাখানি
    সেথা গেছে ছিন্ন হয়ে; নবসূত্রে পড়ে আজি গাঁথা
    নব জন্মদিন। জন্মোৎসবে এই-যে আসন পাতা
    হেথা আমি যাত্রী শুধু, অপেক্ষা করিব, লব টিকা
    মৃত্যুর দক্ষিণ হস্ত হতে, নূতন অরুণলিখা
    যবে দিবে যাত্রার ইঙ্গিত।
    আজ আসিয়াছে কাছে
    জন্মদিন মৃত্যুদিন, একাসনে দোঁহে বসিয়াছে,
    দুই আলো মুখোমুখি মিলিছে জীবনপ্রান্তে মম
    রজনীর চন্দ্র আর প্রত্যুষের শুকতারাসম–
    এক মন্ত্রে দোঁহে অভ্যর্থনা।
    প্রাচীন অতীত, তুমি
    নামাও তোমার অর্ঘ্য; অরূপ প্রাণের জন্মভূমি,
    উদয়শিখরে তার দেখো আদিজ্যোতি। করো মোরে
    আশীর্বাদ, মিলাইয়া যাক তৃষাতপ্ত দিগন্তরে
    মায়াবিনী মরীচিকা। ভরেছিনু আসক্তির ডালি
    কাঙালের মতো; অশুচি সঞ্চয়পাত্র করো খালি,
    ভিক্ষামুষ্টি ধূলায় ফিরায়ে লও, যাত্রাতরী বেয়ে
    পিছু ফিরে আর্ত চক্ষে যেন নাহি দেখি চেয়ে চেয়ে
    জীবনভোজের শেষ উচ্ছিষ্টের পানে।
    হে বসুধা,
    নিত্য নিত্য বুঝায়ে দিতেছ মোরে– যে তৃষ্ণা, যে ক্ষুধা
    তোমার সংসাররথে সহস্রের সাথে বাঁধি মোরে
    টানায়েছে রাত্রিদিন স্থুল সূক্ষ্ম নানাবিধ ডোরে
    নানা দিকে নানা পথে, আজ তার অর্থ গেল কমে
    ছুটির গোধূলিবেলা তন্দ্রালু আলোকে। তাই ক্রমে
    ফিরায়ে নিতেছ শক্তি, হে কৃপণা, চক্ষুকর্ণ থেকে
    আড়াল করিছ স্বচ্ছ আলো; দিনে দিনে টানিছে কে
    নিষ্প্রভ নেপথ্যপানে। আমাতে তোমার প্রায়োজন
    শিথিল হয়েছে, তাই মূল্য মোর করিছ হরণ,
    দিতেছ ললাটপটে বর্জনের ছাপ। কিন্তু জানি,
    তোমার অবজ্ঞা মোরে পারে না ফেলিতে দূরে টানি।
    তব প্রয়োজন হতে অতিরিক্ত যে মানুষ তারে
    দিতে হবে চরম সম্মান তব শেষ নমস্কারে।
    যদি মোরে পঙ্গু কর, যদি মোরে কর অন্ধপ্রায়,
    যদি বা প্রচ্ছন্ন কর নিঃশক্তির প্রদোষচ্ছায়ায়,
    বাঁধ বার্ধক্যের জালে, তবু ভাঙা মন্দিরবেদীতে
    প্রতিমা অক্ষুণ্ন রবে সগৌরবে; তারে কেড়ে নিতে
    শক্তি নাই তব।
    ভাঙো ভাঙো, উচ্চ করো ভগ্নস্তূপ,
    জীর্ণতার অন্তরালে জানি মোর আনন্দস্বরূপ
    রয়েছে উজ্জ্বল হয়ে। সুধা তারে দিয়েছিল আনি
    প্রতিদিন চতুর্দিকে রসপূর্ণ আকাশের বাণী;
    প্রত্যুত্তরে নানা ছন্দে গেয়েছে সে “ভালোবাসিয়াছি’।
    সেই ভালোবাসা মোরে তুলেছে স্বর্গের কাছাকাছি
    ছাড়ায়ে তোমার অধিকার। আমার সে ভালোবাসা
    সব ক্ষয়ক্ষতিশেষে অবশিষ্ট রবে; তার ভাষা
    হয়তো হারাবে দীপ্তি অভ্যাসের ম্লানস্পর্শ লেগে,
    তবু সে অমৃতরূপ সঙ্গে রবে যদি উঠি জেগে
    মৃত্যুপরপারে। তারি অঙ্গে এঁকেছিল পত্রলিখা
    আম্রমঞ্জরীর রেণু, এঁকেছে পেলব শেফালিকা
    সুগন্ধি শিশিরকণিকায়; তারি সূক্ষ্ম উত্তরীতে
    গেঁথেছিল শিল্পকারু প্রভাতের দোয়েলের গীতে
    চকিত কাকলিসূত্রে; প্রিয়ার বিহ্বল স্পর্শখানি
    সৃষ্টি করিয়াছে তার সর্বদেহে রোমাঞ্চিত বাণী,
    নিত্য তাহা রয়েছে সঞ্চিত। যেথা তব কর্মশালা
    সেথা বাতায়ন হতে কে জানি পরায়ে দিত মালা
    আমার ললাট ঘেরি সহসা ক্ষণিক অবকাশে,
    সে নহে ভৃত্যের পুরস্কার; কী ইঙ্গিতে কী আভাসে
    মুহূর্তে জানায়ে চলে যেত অসীমের আত্মীয়তা
    অধরা অদেখা দূত, বলে যেত ভাষাতীত কথা
    অপ্রয়োজনের মানুষেরে।
    সে মানুষ, হে ধরণী,
    তোমার আশ্রয় ছেড়ে যাবে যবে, নিয়ো তুমি গণি
    যা-কিছু দিয়েছ তারে, তোমার কর্মীর যত সাজ,
    তোমার পথের যে পাথেয়, তাহে সে পাবে না লাজ;
    রিক্ততায় দৈন্য নহে। তবু জেনো অবজ্ঞা করি নি
    তোমার মাটির দান, আমি সে মাটির কাছে ঋণী–
    জানায়েছি বারংবার, তাহারি বেড়ার প্রান্ত হতে
    অমূর্তের পেয়েছি সন্ধান। যবে আলোতে আলোতে
    লীন হত দড়যবনিকা, পুষ্পে পুষ্পে তৃণে তৃণে
    রূপে রসে সেই ক্ষণে যে গূঢ় রহস্য দিনে দিনে
    হত নিঃশ্বসিত, আজি মর্তের অপর তীরে বুঝি
    চলিতে ফিরানু মুখ তাহারি চরম অর্থ খুঁজি।
    যবে শান্ত নিরাসক্ত গিয়েছি তোমার নিমন্ত্রণে
    তোমার অমরাবতী সুপ্রসন্ন সেই শুভক্ষণে
    মুক্তদ্বার; বুভুক্ষুর লালসারে করে সে বঞ্চিত;
    তাহার মাটির পাত্রে যে অমৃত রয়েছে সঞ্চিত
    নহে তাহা দীন ভিক্ষু লালায়িত লোলুপের লাগি।
    ইন্দ্রের ঐশ্বর্য নিয়ে হে ধরিত্রী, আছ তুমি জাগি
    ত্যাগীরে প্রত্যাশা করি, নির্লোভেরে সঁপিতে সম্মান,
    দুর্গমের পথিকেরে আতিথ্য করিতে তব দান
    বৈরাগ্যের শুভ্র সিংহাসনে। ক্ষুব্ধযারা, লুব্ধ যারা,
    মাংসগন্ধে মুগ্ধ যারা, একান্ত আত্মার দৃষ্টিহারা
    শ্মশানের প্রান্তচর, আবর্জনাকুণ্ড তব ঘেরি
    বীভৎস চীৎকারে তারা রাত্রিদিন করে ফেরাফেরি,
    নির্লজ্জ হিংসায় করে হানাহানি।
    শুনি তাই আজি
    মানুষ-জন্তুর হুহুংকার দিকে দিকে উঠে বাজি।
    তবু যেন হেসে যাই যেমন হেসেছি বারে বারে
    পণ্ডিতের মূঢ়তায়, ধনীর দৈন্যের অত্যাচারে,
    সজ্জিতের রূপের বিদ্রূপে। মানুষের দেবতারে
    ব্যঙ্গ করে যে অপদেবতা বর্বর মুখবিকারে
    তারে হাস্য হেনে যাব, বলে যাব, “এ প্রহসনের
    মধ্য-অঙ্কে অকস্মাৎ হবে লোপ দুষ্ট স্বপনের;
    নাট্যের কবররূপে বাকি শুধু রবে ভস্মরাশি
    দগ্ধশেষ মশালের, আর অদৃষ্টের অট্টহাসি।’
    বলে যাব, “দ্যূতচ্ছলে দানবের মূঢ় অপব্যয়
    গ্রন্থিতে পারে না কভু ইতিবৃত্তে শাশ্বত অধ্যায়।’
    বৃথা বাক্য থাক্। তব দেহলিতে শুনি ঘন্টা বাজে,
    শেষপ্রহরের ঘন্টা; সেই সঙ্গে ক্লান্ত বক্ষোমাঝে
    শুনি বিদায়ের দ্বার খুলিবার শব্দ সে অদূরে
    ধ্বনিতেছে সূর্যাস্তের রঙে রাঙা পূরবীর সুরে।
    জীবনের স্মৃতিদীপে আজিও দিতেছে যারা জ্যোতি
    সেই ক’টি বাতি দিয়ে রচিব তোমার সন্ধ্যারতি
    সপ্তর্ষির দৃষ্টির সম্মুখে; দিনান্তের শেষ পলে
    রবে মোর মৌন বীণা মূর্ছিয়া তোমার পদতলে।
    আর রবে পশ্চাতে আমার, নাগকেশরের চারা
    ফুল যার ধরে নাই, আর রবে খেয়াতরীহারা
    এ পারের ভালোবাসা– বিরহস্মৃতির অভিমানে
    ক্লান্ত হয়ে রাত্রিশেষে ফিরিবে সে পশ্চাতের পানে।

    See less
  1. শারদীয়া –শুভ দাশগুপ্ত গেরুয়া নদীর পাড় ঘেষে সেই ছোট্ট আমার গ্রাম ছেলেবেলার ছেলেখেলার সেই আনন্দধাম। আকাশ ছিল সুনীল উদার রোদ্দুরে টান টান, গেরুয়া নদীর পাড় ঘেষে সেই ছোট্ট আমার গ্রাম গেরুয়া নদীর পাড় ঘেষে সেই গ্রামের শেষ পাড়া, নবীন কাকার কুমোর বাড়ি, ঠাকুর হত গড়া। সাত পাড়াতে বেজায় খ্যাতি, নবীন তRead more

    শারদীয়া –শুভ দাশগুপ্ত

    গেরুয়া নদীর পাড় ঘেষে সেই ছোট্ট আমার গ্রাম
    ছেলেবেলার ছেলেখেলার সেই আনন্দধাম।
    আকাশ ছিল সুনীল উদার রোদ্দুরে টান টান,
    গেরুয়া নদীর পাড় ঘেষে সেই ছোট্ট আমার গ্রাম
    গেরুয়া নদীর পাড় ঘেষে সেই গ্রামের শেষ পাড়া,
    নবীন কাকার কুমোর বাড়ি, ঠাকুর হত গড়া।
    সাত পাড়াতে বেজায় খ্যাতি, নবীন তালেবর,
    নবীন কাকার হাতের ঠাকুর অপূর্ব সুন্দর।
    এক এক বছর এক এক রকম ঠাকুর তৈরি হতো,
    সেসব ঠাকুর দেখতে মানুষ বেজায় ভিড় জমাতো।
    স্কুল পালানো দুপুর ছিলো, ছিলো সঙ্গী সাথী,
    চোখ জুড়ানো মূর্তি দেখতে ভীষণ মাতামাতি।
    শারদীয়ার দিন গড়াতো শিউলি গন্ধে দুলে,
    রোজই যেতাম ঠাকুর গড়া দেখতে সদলবলে।
    নবীন কাকা গরিব মানুষ, সদাই হাসিমুখে,
    নিবিষ্ট মন, ব্যস্ত জীবন, আপন ভোলা সুখে।
    হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হতো লক্ষ্মী, গণেশ, পেঁচা,
    দূর গাঁয়ে তার ছোট্ট বাড়ি, ঠাকুর গড়েই বাঁচা।
    সে বছর কি হলো বলি, শোনো দিয়ে মন,
    বন্যা হলো ভীষণরকম ভাসলো যে জীবন।
    কত মানুষ ঘর হারালো, প্রাণ হারালো কত,
    গোটা গ্রামের বুকটি জুড়ে হাজার আঘাত ক্ষত।
    ধানের জমি পাটের ক্ষেতে জল থৈ থৈ বান,
    সর্বনাশের কান্না ঘেরা হাজার নিঃস্ব প্রাণ।
    বর্ষা শেষে বন্যা গেল, জাগলো শারদ আলো,
    নীল আকাশে পুজোর ছুটি দিব্যি ডাক পাঠালো।
    কাশফুলেরা উঠল দুলে, শিউলি ঝরা দিন,
    পুজো আসছে রোদ্দুরে তাই বাজলো খুশির বীণ।
    নবীন কাকার টালির ঘরে হচ্ছে ঠাকুর গড়া,
    গেরুয়া নদীর পাড় ঘেঁষে গ্রাম জাগলো খুশির সাড়া।
    আমরা যত কচিকাঁচা, আবার জড়ো হয়ে,
    ঠাকুর দেখতে গেলাম ছুটে মাঠ ঘাট পেরিয়ে।
    সেবার মাত্র গুটিকয়েক ঠাকুর টালির ঘরে,
    পুজোর আয়োজন তো সেবার নমোনমো করে।
    তারই মধ্যে একটি ঠাকুর টালির চালের কোনে,
    নবীন কাকা ভাঙেন, গড়েন নিত্য আপন মনে।
    অন্য ঠাকুর দেখতে চাইলে বাধা দিতেন না,
    ওই ঠাকুরটি দেখতে চাইলে না শুধু না।
    কৌতূহলে দিন গড়ালো পুজো এলো কাছে,
    মহালয়ার দিন টি এলো পুজোর খুশির সাজে।
    আমরা কয়জন রাত থাকতে উঠেছি ঘুম ছেড়ে,
    পুবের আকাশ মলিন, আলো ধীরে উঠছে বেড়ে।
    অন্ধকারে চুপিসারে গুটিগুটি পায়ে,
    আমরা হাজির নবীন কাকার ঘরের কিনারায়।
    চুপ্টি করে দরজা ঠেলে ভিতরে গিয়ে,
    দেখি কাকা চোখ আঁকছেন সমস্ত মন দিয়ে।
    চোখ আঁকা যেই সাঙ্গ হল, নিথর নবীন কাকা,
    অঝোর ধারে কেঁদেই চলেন দুহাতে মুখ ঢাকা।
    কাঁদছে শিল্পী, নিরব বিশ্ব, কুপির আলো ঘরে,
    নবীন কাকার পাষাণ হৃদয় কান্না হয়ে ঝরে।
    রাত ফুরোনো ভোরের আকাশ, কৃপণ অল্প আলো,
    মুখ দেখলাম সেই ঠাকুরের, প্রাণ জুড়িয়ে গেল।
    কিন্তু একি? এ মুখ তো নয় দুর্গা বা পার্বতী?
    এ যেন এক ঘরের মেয়ে, চেনা জানা অতি।
    নবীন কাকার সামনে গিয়ে কি হয়েছে বলি,
    কেঁদে বলেন নবীন কাকা সবই জলাঞ্জলি।
    শ্রাবণ মাসে বন্যা হলো, গেল অনেক কিছু,
    মারণব্যাধি এলো তখন বানের পিছু পিছু।
    ভাদ্র মাসের পূর্ণিমাতে সেই ব্যধি যে ধরল,
    মেয়ে আমার অনেক কষ্টে যন্ত্রনাতে মরল।
    ঠাকুর গড়ি, দু হাত আমার অবশ হয়ে আসে,
    সব প্রতিমার মুখ জুড়ে ওই মেয়ের মুখটি ভাসে।
    দ্যাখ্ না তোরা, দ্যাখ্ না সবাই, চোখ আঁকা শেষ হলো,
    দ্যাখ্ না এইতো মেয়ে আমার হাসছে ঝলোমলো।
    কোথায় গেলি মা রে আমার? কোথায় তোকে পাই?
    মূর্তি গড়ে খুঁজি তোকে মূর্তিতে তুই নাই।
    ষষ্ঠী এলে বোধন, দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে,
    জাগবে ঠাকুর, কিন্তু আমার মেয়ে ফিরবে কবে?
    কেউ কি কোন মন্ত্র জানো মৃন্ময়ী এই মেয়ে,
    বাবার চোখের জল মোছাতে উঠবে হেসে গেয়ে?
    আমরা অবাক! মহালয়ায় ভোরের শিউলি ঝরে,
    কি নিদারুণ ঠাকুর পুজো নবীন কাকার ঘরে!

     

    See less
  1. ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা (শুভ দাশগুপ্ত ) ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা ব্রিলিয়ান্ট কেরিয়ার তৈরী করে ……. তারা প্রথমে গাঁয়ে- মফস্বলে হরিপ্রসন্ন স্কুলে গেঁয়ো বন্ধুদের সাথে লেখাপড়া শেখে । তারপর - ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট করে সকলকে চমকে দেয় । তারপর তারা উচ্চতর শিক্ষার জন্য চলে যায় ব্যাঙ্গালোর কিংবা দিল্লী ,কিংবা পুণে সেখানে গRead more

    ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা (শুভ দাশগুপ্ত )

    ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা ব্রিলিয়ান্ট কেরিয়ার তৈরী করে …….
    তারা প্রথমে গাঁয়ে- মফস্বলে হরিপ্রসন্ন স্কুলে গেঁয়ো বন্ধুদের সাথে লেখাপড়া শেখে ।
    তারপর –
    ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট করে সকলকে চমকে দেয় ।
    তারপর তারা উচ্চতর শিক্ষার জন্য চলে যায়
    ব্যাঙ্গালোর কিংবা দিল্লী ,কিংবা পুণে
    সেখানে গিয়ে তারা বড় বড় নম্বর পায় ! পজিশন পায় !
    তারপর সেই নম্বর প্লেট গলায় ঝুলিয়ে তারা মস্ত মস্ত কোম্পানীতে ভালো ভালো চাকরি পায় !
    প্রচুর স্যালারি ! দামি ফ্ল্যাট ! ভালো গাড়ী !
    ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা ….. এরপর বিদেশের বিমানে গিয়ে বসে ।
    পৌঁছে যায় আমেরিকা ,জার্মানি কিংবা আবুধাবী …. অথবা সিঙ্গাপুর কিংবা কানাডা !
    ব্রিলিয়ান্ট ছেলেদের , ঐ সব দেশ টপাটপ কিনে নেয় ।
    ঐ সব ব্রিলিয়ান্ট দেশ ,আমাদের ব্রিলিয়ান্টদের জন্য বিলাসবহুল বাড়ি – গাড়ি
    আর প্রচুর ডলারের ব্যবস্থা করে দেয় ….
    সেখানে আমাদের ব্রিলিয়ান্টরা সুখে থাকে ।

    সুখে থাকতে থাকতে ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা ভুলে যায় তাদের দেশ গাঁয়ের কথা , হরিপ্রসন্ন স্কুলের কথা —
    গাঁয়ের বন্ধুদের কথা ক্রমে ভুলে যেতে থাকে !
    মনে রাখতে পারে না —– খুড়তুতো , জ্যাঠতুতো সব অসফল ভাই বোনেদের কথা ।

    ব্রিলিয়ান্টদের জগতে ইমোশন নেই ! প্রোমোশন আছে ।
    ব্রিলিয়ান্টদের অতীত নেই ! কেবল ভবিষ্যৎ , কেবল ফিউচার ।
    ছোট চেয়ার থেকে বড় চেয়ার ……নন এসি থেকে এসি ।
    ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা বাবা- মা কে মাঝে মধ্যে টাকা পাঠায় ….অ -নে -ক টাকা !!!!
    সেই টাকা হাতে পেয়ে ব্রিলিয়ান্টদের বাবার মুখে ফুটে ওঠে হাসি।
    মায়ের চোখ ভরে ওঠে জলে ।

    ব্রিলিয়ান্টরা এই ন্যাস্টি ইন্ডিয়াতে আর ফিরে আসতে চায় না ।
    এত ভিড় ! এত ধুলোকাদা ! এত কোরাপশন !
    এসবের মধ্যে তাদের গা ঘিনঘিন করে

    তবু যদি কখনও আসে ……..
    অনেক অনেক ফরেইন জিনিস নিয়ে আসে ।
    মায়ের জন্য ইতালির চাদর , বাবার জন্য ফ্রান্সের সিগারেট .. সঙ্গে জাপানি লাইটার ,
    আলো জ্বললেই যা থেকে টুং টাং করে বাজনা বেজে ওঠে ।

    ব্রিলিয়ান্টদের ব্যাপার স্যাপারই আলাদা ……..
    ব্রিলিয়ান্টদের ব্রিলিয়ান্ট বানিয়ে তুলতে কেরানী বাবাকে যে কতদিন কর্মক্লান্ত দুপুরে টিফিনে একটা চাপাকলা কিংবা
    একটাকার শুকনো মুড়িতে পেট ভরিয়েছেন ……
    কতকাল যে মা কোনো নতুন শাড়ী কেনাকে বিলাসিতা মনে করে ছেঁড়া শাড়ীতে দিন কাটিয়েছেন !!!
    এসব তথ্য ব্রিলিয়ান্টদের ল্যাপটপে থাকেনা । ব্রিলিয়ান্টদের ল্যাপটপে নায়াগ্রার দূরন্ত জলোচ্ছ্বাস , কিংবা
    ভিসুভিয়াসের ছবি থাকে …….
    এই শ্যামল বাংলার নদী গাছ , বর্ষার মেঘ —–
    এসব হাবিজাবি সেখানে ইনসার্ট করা যায় না ।

    ব্রিলিয়ান্টরা সদা ব্যস্ত ! ভীষণ ব্যস্ত …… !
    তারা সঙ্গীত শোনেনা , তারা গল্প বা কবিতা পড়ে সময় নষ্ট করেনা ।
    তারা আকাশ দেখে না , বৃষ্টিতে তাদের মন খারাপ হয় না ।
    তারা কেবল কাজ করে ,কেবল ব্যাস্ততায় ডুবে থাকে ।

    বৃষ্টি নেমেছে আকাশ ভেঙ্গে …….শ্রাবণ মাস ।
    মা মৃত্যুশয্যায় …..বাড়ি ভর্তি লোকজন ।
    অসুস্থ বাবা বারান্দায় চেয়ারে বসে আছেন শূন্য চোখে ……
    ডাক্তার জবাব দিয়ে গেছেন ….গোটা বাড়িতে অদ্ভুত এক নিস্তব্ধতা !
    কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে মা জিজ্ঞেস করছেন ….. খোকন এলো ? খো – ক – ন ………….!

    ব্রিলিয়ান্ট খোকন তখন ফ্লাইটে …..
    সবাই মা কে বোঝাচ্ছে ঐ তো ঐ তো খোকন এলো বলে !
    কিন্তু সে ফ্লাইট চলে যাচ্ছে কানাডায়।
    কানাডায় কোম্পানীর নতুন শাখা উদ্বোধন।
    খোকন যাচ্ছে আরও বড়ো দায়িত্ব নিয়ে , আরও বেশী ডলার ……..
    এখানে এই পোড়া দেশে ব্রিলিয়ান্ট খোকনের মা
    ছেলের মুখ না দেখেই শেষ বারের মতো চোখ বুঁজলেন …..।।

    আমরা এখন ঘরে ঘরে সবাই —— এমন ব্রিলিয়ান্ট ছেলে গড়ে তুলতেই ব্যস্ত…….।
    সক্কলে!

    See less
  1. This answer was edited.

    মা - শুভ দাসগুপ্ত যখন ডাকি শিউলি হয়ে শরৎ তখন ভোরের হাওয়ায় বলে কান্না রাখিস না মা তো ছিলই মা তো আছেই, সবখানেতেই মা যখন ডাকি মা সহস্র চোখ বিপন্ন মুখ দুহাত তুলে বলে বাইরে খোঁজিস না ব্যর্থ জীবন ক্লান্ত জীবন পাশেই আছে মা মা ববলেই স্নেরের সকাল মা বললেই তৃষ্ণার জল মা বললেই ছায়ার আচল মা বললেই দুঃখ উধাও যখনRead more

    মা – শুভ দাসগুপ্ত

    যখন ডাকি শিউলি হয়ে শরৎ তখন
    ভোরের হাওয়ায় বলে
    কান্না রাখিস না মা তো ছিলই মা তো আছেই,
    সবখানেতেই মা
    যখন ডাকি মা
    সহস্র চোখ বিপন্ন মুখ দুহাত
    তুলে বলে বাইরে খোঁজিস না
    ব্যর্থ জীবন ক্লান্ত জীবন পাশেই আছে মা
    মা ববলেই স্নেরের সকাল
    মা বললেই তৃষ্ণার জল
    মা বললেই ছায়ার আচল
    মা বললেই দুঃখ উধাও
    যখন ডাকি মা
    মন্দিরে আর গীর্জিয় কিংবা মসজিদে
    সুর ভাসে একই তো সুর না
    মানুষ বড় কষ্টে আছে
    মানুষ বড় দুঃখে বাঁচে
    মানুষ বড় যাতাকলে
    মানুষ বড় চোখের জলে
    এর নেই কি শান্তনা
    দূরের থেকে মা তখনই উঠে আসেন কাছে
    শীয়রে হাত রেখে বলেন
    আমি আছি না
    যখন ডাকি মা

     

    English transliteration;

    Jakhan daki shuili hoye sharat takhan
    Vorer hawai bole
    kanna rakhish na maa to chiloi maa to aachei,
    Shabkhanetei ma
    jakhan daki maa
    Shahasra chokh biponno mukh duhaath
    Tui bole baire khujish na
    Bertho jibon klanta jibon pashei aache maa
    maa bollei sneher shakal
    maa bollei trishnar jol
    maa bollei chayar aanchal
    maa bollei dukkho udhao
    jakhan daki maa
    Mandire aar girjay kingba mashjide
    Shur vashe eki to shur na
    manush baro kaste aache
    manush baro dukkhe bache
    manush baro jatakale
    manush baro chokher jale
    Er nei ki shantona
    durer theke maa takhani uthe aashen kache
    Shiyore haath rekhe bolen
    Ami aaschi na
    jakhan daki maa

     

    See less
  1. This answer was edited.

    শারদীয়া –শুভ দাশগুপ্ত গেরুয়া নদীর পাড় ঘেষে সেই ছোট্ট আমার গ্রাম ছেলেবেলার ছেলেখেলার সেই আনন্দধাম। আকাশ ছিল সুনীল উদার রোদ্দুরে টান টান, গেরুয়া নদীর পাড় ঘেষে সেই ছোট্ট আমার গ্রাম গেরুয়া নদীর পাড় ঘেষে সেই গ্রামের শেষ পাড়া, নবীন কাকার কুমোর বাড়ি, ঠাকুর হত গড়া। সাত পাড়াতে বেজায় খ্যাতি, নবীন তRead more

    শারদীয়া –শুভ দাশগুপ্ত

    গেরুয়া নদীর পাড় ঘেষে সেই ছোট্ট আমার গ্রাম
    ছেলেবেলার ছেলেখেলার সেই আনন্দধাম।
    আকাশ ছিল সুনীল উদার রোদ্দুরে টান টান,
    গেরুয়া নদীর পাড় ঘেষে সেই ছোট্ট আমার গ্রাম
    গেরুয়া নদীর পাড় ঘেষে সেই গ্রামের শেষ পাড়া,
    নবীন কাকার কুমোর বাড়ি, ঠাকুর হত গড়া।
    সাত পাড়াতে বেজায় খ্যাতি, নবীন তালেবর,
    নবীন কাকার হাতের ঠাকুর অপূর্ব সুন্দর।
    এক এক বছর এক এক রকম ঠাকুর তৈরি হতো,
    সেসব ঠাকুর দেখতে মানুষ বেজায় ভিড় জমাতো।
    স্কুল পালানো দুপুর ছিলো, ছিলো সঙ্গী সাথী,
    চোখ জুড়ানো মূর্তি দেখতে ভীষণ মাতামাতি।
    শারদীয়ার দিন গড়াতো শিউলি গন্ধে দুলে,
    রোজই যেতাম ঠাকুর গড়া দেখতে সদলবলে।
    নবীন কাকা গরিব মানুষ, সদাই হাসিমুখে,
    নিবিষ্ট মন, ব্যস্ত জীবন, আপন ভোলা সুখে।
    হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হতো লক্ষ্মী, গণেশ, পেঁচা,
    দূর গাঁয়ে তার ছোট্ট বাড়ি, ঠাকুর গড়েই বাঁচা।
    সে বছর কি হলো বলি, শোনো দিয়ে মন,
    বন্যা হলো ভীষণরকম ভাসলো যে জীবন।
    কত মানুষ ঘর হারালো, প্রাণ হারালো কত,
    গোটা গ্রামের বুকটি জুড়ে হাজার আঘাত ক্ষত।
    ধানের জমি পাটের ক্ষেতে জল থৈ থৈ বান,
    সর্বনাশের কান্না ঘেরা হাজার নিঃস্ব প্রাণ।
    বর্ষা শেষে বন্যা গেল, জাগলো শারদ আলো,
    নীল আকাশে পুজোর ছুটি দিব্যি ডাক পাঠালো।
    কাশফুলেরা উঠল দুলে, শিউলি ঝরা দিন,
    পুজো আসছে রোদ্দুরে তাই বাজলো খুশির বীণ।
    নবীন কাকার টালির ঘরে হচ্ছে ঠাকুর গড়া,
    গেরুয়া নদীর পাড় ঘেঁষে গ্রাম জাগলো খুশির সাড়া।
    আমরা যত কচিকাঁচা, আবার জড়ো হয়ে,
    ঠাকুর দেখতে গেলাম ছুটে মাঠ ঘাট পেরিয়ে।
    সেবার মাত্র গুটিকয়েক ঠাকুর টালির ঘরে,
    পুজোর আয়োজন তো সেবার নমোনমো করে।
    তারই মধ্যে একটি ঠাকুর টালির চালের কোনে,
    নবীন কাকা ভাঙেন, গড়েন নিত্য আপন মনে।
    অন্য ঠাকুর দেখতে চাইলে বাধা দিতেন না,
    ওই ঠাকুরটি দেখতে চাইলে না শুধু না।
    কৌতূহলে দিন গড়ালো পুজো এলো কাছে,
    মহালয়ার দিন টি এলো পুজোর খুশির সাজে।
    আমরা কয়জন রাত থাকতে উঠেছি ঘুম ছেড়ে,
    পুবের আকাশ মলিন, আলো ধীরে উঠছে বেড়ে।
    অন্ধকারে চুপিসারে গুটিগুটি পায়ে,
    আমরা হাজির নবীন কাকার ঘরের কিনারায়।
    চুপ্টি করে দরজা ঠেলে ভিতরে গিয়ে,
    দেখি কাকা চোখ আঁকছেন সমস্ত মন দিয়ে।
    চোখ আঁকা যেই সাঙ্গ হল, নিথর নবীন কাকা,
    অঝোর ধারে কেঁদেই চলেন দুহাতে মুখ ঢাকা।
    কাঁদছে শিল্পী, নিরব বিশ্ব, কুপির আলো ঘরে,
    নবীন কাকার পাষাণ হৃদয় কান্না হয়ে ঝরে।
    রাত ফুরোনো ভোরের আকাশ, কৃপণ অল্প আলো,
    মুখ দেখলাম সেই ঠাকুরের, প্রাণ জুড়িয়ে গেল।
    কিন্তু একি? এ মুখ তো নয় দুর্গা বা পার্বতী?
    এ যেন এক ঘরের মেয়ে, চেনা জানা অতি।
    নবীন কাকার সামনে গিয়ে কি হয়েছে বলি,
    কেঁদে বলেন নবীন কাকা সবই জলাঞ্জলি।
    শ্রাবণ মাসে বন্যা হলো, গেল অনেক কিছু,
    মারণব্যাধি এলো তখন বানের পিছু পিছু।
    ভাদ্র মাসের পূর্ণিমাতে সেই ব্যধি যে ধরল,
    মেয়ে আমার অনেক কষ্টে যন্ত্রনাতে মরল।
    ঠাকুর গড়ি, দু হাত আমার অবশ হয়ে আসে,
    সব প্রতিমার মুখ জুড়ে ওই মেয়ের মুখটি ভাসে।
    দ্যাখ্ না তোরা, দ্যাখ্ না সবাই, চোখ আঁকা শেষ হলো,
    দ্যাখ্ না এইতো মেয়ে আমার হাসছে ঝলোমলো।
    কোথায় গেলি মা রে আমার? কোথায় তোকে পাই?
    মূর্তি গড়ে খুঁজি তোকে মূর্তিতে তুই নাই।
    ষষ্ঠী এলে বোধন, দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে,
    জাগবে ঠাকুর, কিন্তু আমার মেয়ে ফিরবে কবে?
    কেউ কি কোন মন্ত্র জানো মৃন্ময়ী এই মেয়ে,
    বাবার চোখের জল মোছাতে উঠবে হেসে গেয়ে?
    আমরা অবাক! মহালয়ায় ভোরের শিউলি ঝরে,
    কি নিদারুণ ঠাকুর পুজো নবীন কাকার ঘরে!

     

    See less
  1. জন্মদিন ( শুভ দাশগুপ্ত ) আজ পয়লা শ্রাবণ। খোকন, আজ তোর জন্মদিন। তুই যখন জন্মেছিলি, আমরা তখন যাদবপুরে নতুন গড়ে ওঠা কলোনীর টালির ঘরে তোর ইস্কুল মাস্টার বাবা সেই হ্যারিকেনের আলো জ্বলা ঘরেই আনন্দে আর খুশিতে ঝলমলে হয়ে উঠেছিলেন তুই আসার পর। তোর নাম রেখেছিলেন- সুকল্যাণ। মানুষটার মনটা ছিল শিশুর মতন অভাবে অনটRead more

    জন্মদিন ( শুভ দাশগুপ্ত )

    আজ পয়লা শ্রাবণ।
    খোকন, আজ তোর জন্মদিন।
    তুই যখন জন্মেছিলি, আমরা তখন যাদবপুরে
    নতুন গড়ে ওঠা কলোনীর টালির ঘরে
    তোর ইস্কুল মাস্টার বাবা
    সেই হ্যারিকেনের আলো জ্বলা ঘরেই
    আনন্দে আর খুশিতে ঝলমলে হয়ে উঠেছিলেন
    তুই আসার পর। তোর নাম রেখেছিলেন- সুকল্যাণ।
    মানুষটার মনটা ছিল শিশুর মতন
    অভাবে অনটনে, বেঁচে থাকার নানা দুর্বিপাকেও
    ভেঙ্গে পড়তেন না কখনও। সকলের ভাল চাইতেন মন থেকে।
    বলতেন দেখো একদিন এই দেশের মানুষ
    ঠিক খুঁজে পাবে মুক্তির পথ। শোষণ থেকে মুক্তি
    দারিদ্র থেকে মুক্তি অশিক্ষা থেকে মুক্তি…

    আজ পয়লা শ্রাবণ
    খোকন, আজ তোর জন্মদিন।
    ছোটবেলায়, তোর মনে আছে? আমাদের ভাঙ্গা মেঝেতে
    বাক্স থেকে বার করা মেজো-মাসীর হাতে তৈরি আসনটা
    পেতে দিতাম। সামনে রাখতাম ঠাকুরের আসনের প্রদীপখানা।
    তুই বসতিস বাবু হয়ে চুপটি করে।
    তোকে আমরা একে একে ধান দুব্বো মাথায় দিয়ে আশীর্বাদ করতাম।
    বাবা বলতেন বড় হও মানুষ হও।
    তোর বাবার সেই বন্ধু-ঘোষ কাকা তিনি বলতেন
    বেঁচে বর্তে থাকো।
    তুই জিগ্যেস করতিস-মা, বর্তে মানে কি মা?
    আমি শুধু তোর মাথায় ধান-দুব্বোই দিতাম।
    বলতাম না কিছুই। শুধু মনে মনে বলতাম
    ঠাকুর, আমার খোকনকে মস্ত বড় মানুষ করে তোলো
    আমার খোকন যেন সত্যিই মানুষ হয়।
    ওর যেন কখনো কোনো বিপদ না হয় ঠাকুর।
    অভাবের সংসারে ওই একটা দিন-পয়লা শ্রাবণ
    কষ্টের পয়সায় একটু বাড়তি দুধ নিতাম।
    পায়েস রান্না করে দিতাম তোকে।
    তুই খুব ভালবাসতিস পায়েস খেতে।
    তোর বাবা বাসস্টান্ডের দোকান থেকে নিয়ে আসতেন
    তোর প্রিয় মিষ্টি ছানার গজা।
    সামান্য ইস্কুল মাস্টারিতে কীই বা আয় হত;
    ঘরে বসে ছাত্র পড়িয়ে আসতো কিছু।
    দাউ দাউ অভাবের আগুনে সে রসদ পুড়তে সময় লাগত না।
    তোর বাবার জামা সেলাই করতাম আর বার বার বলতাম
    আসছে মাসে একটা জামা বানিয়ে নিও।
    উনি হেসে উঠে বলতেন; বাদ দাও তো, খোকন বড় হচ্ছে।
    ওর জন্য ভাবছি দুধ রাখতে হবে আরো আধসের-
    দুধে শক্তি বাড়ে। বুদ্ধি বাড়ে। শক্তি আরে বুদ্ধি না হলে
    তোমার খোকন মস্ত বড় মানুষ হয়ে উঠবে কি করে?
    ভাবছি আরো দুটো টিউশনি নেব।
    ছাত্র পড়িয়ে পড়িয়ে মানুষটা দিনের শেষে ক্লান্ত হয়ে যেতেন।
    বারান্দার ধার ঘেঁষে যখন রাতের অন্ধকারে জোনাকির ব্যস্ততা,
    আর ঘরে তোর পড়া মুখস্থ করার একটানা সুর
    আমাদের কলোনীর ভাঙ্গাচূড়া বাড়িটাকে জীবন্ত করে রাখতো-
    তখন বলতেন আমায়; খাওয়া দাওয়া একটু করো- তোমার চেহারাটা
    বড় ভেঙ্গে পড়ছে দিন দিন… শাড়িটাও তো দেখছি বেশ ছিঁড়েছে-
    কালই আমি ফেরার পথে একটা শাড়ি নিয়ে আসব। ধারেই আনব।
    আমি বলতাম-ধুর। সামনে খোকনের উঁচু ক্লাস-
    কত বই পত্তর কিনতে হবে- কত খরচ।
    উনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে চুপ করে যেতেন।
    জোনাকিরা নিঃশব্দ অদৃশ্য আলোর আলপনা আঁকত
    উঠনের আগাছার ঝোপে।
    আবহ সঙ্গীতের মত তুই ভেতরে বসে বসে পড়া মুখস্থ করতিস।
    ইতিহাস, ভূগোল, গ্রামার।
    ঈশ্বর আমাদের নিরাশ করেননি।
    তুই কত বড় হলি।
    সব পরীক্ষায় কত ভাল ফল হল তোর।
    বাবা বললেন; আরও পড়। উচ্চ শিখাই উচ্চ সম্মানের
    এক মাত্র পথ। তুই আরও পড়লি।
    তারপর…
    তোর চাকরি হল কত বড় অফিসে
    মনে আছে খোকা? প্রথম মাসের মাইনে হাতে পেয়েই
    তুই কত কী কিনে এনেছিলি?
    তখন তো আমরা উঠে এসেছি শ্যামবাজারে।
    দু’কামরার বেশ সাজানো ঘোচানো গোছানো বড় ফ্লাট।
    তোর অফিস থেকেই তো দিয়েছিল।
    সেই বাড়ি সেই ঘর সেই বেলকনি- কত স্মৃতি- কত ছবি!
    ঐ বাড়িতেই তো
    আশ্বিনের ঝড়ো বিকেলে- তোর মনে আছে খোকন?
    তোর বাবা যেদিনটাতে চলে গেলেন- মনে আছে?
    তুই বাবার বুকের ওপর পড়ে যখন কাঁদছিলি হাপুস নয়নে
    সদ্য স্বামীহারা, আমি সেদিন তোর সেই অসহায় মুখ দেখে
    আরো বেশি করে ভেঙ্গে পড়েছিলাম।
    তোকে বুকে টেনে নিয়েছিলাম ছোটবেলার মত।
    বলেছিলাম-
    কাঁদিস না খোকা। আমিতো আছি।

    আজ পয়লা শ্রাবণ
    কলকাতা থেকে অনেক দুরে মফস্বলের এই বৃদ্ধাশ্রমে
    আমি একেবারে একা, খোকন।
    তোকে বড় দেখতে ইচ্ছে করছে রে।
    তোকে, বৌমাকে আর ছোট্ট বিল্টুকে।
    তোরা এখন কত দুরে-
    সল্ট-লেকের মার্বেল বসানো ঝকঝকে বাড়িতে।
    আজ তোর জন্মদিনের নিশ্চয়ই খুব বড় পার্টি হচ্ছে-
    তাই নারে খোকন? লোকজন, হৈচৈ, খাওয়া-দাওয়া।
    খুব ভাল, খুব ভাল।
    খোকন, আজ পয়লা শ্রাবণ
    আমার বড় মনে পড়ছে যাদবপুরের ভাঙ্গা ঘরে রাত্রে
    তুই আমার পাশে শুয়ে মাঝে মধ্যে হঠাৎ খুব ভয় পেয়ে
    জড়িয়ে ধরতিস আমাকে। আমি বলতাম, ভয় কী রে?
    আমি তো আছি। মা তো আছে খোকনের। যার মা থাকে
    তাকে কী ভুতে ধরে?
    তুই নিশ্চিন্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়তিস আমার বুক জুড়ে।
    তোর আধুনিক সংসারে
    এই বুড়িটার একটু ঠাই হল নারে?
    প্রতিমাও তো মা। ওরও তো আছে আমার খোকনেরই মত
    কোল আলো- করা এক চাঁদের টুকরো।
    কিন্তু সময়ের কী আশ্চর্য পরিবর্তন!
    খোকন!
    তুই বোধহয় আর এখন পায়েস খাস না- তাই নারে?

    তুই জানিস না খোকন
    আজ আমি সকালে পায়েস রান্না করেছি। হ্যাঁ
    তোরই পাঠানো টাকায়।
    সারাদিন সেই পায়েসের বাটি সামনে নিয়ে বসে আছি রে।
    এখানে এই বৃদ্ধাশ্রমে
    আমার একলা ঘরে
    আর কেউ নেই।
    তুই একবার আসবি খোকন।
    একবার.. শুধু

    একবার।।

     

    English Transliteration:

    Aaj poyla Srabon.
    Khukhan, aaj tor jonmodin
    Tui jakhan jonmechili, amra takhan Jadabpur e
    Natun gore utha colony r talir ghore.
    Tor school master baba
    Shei Haricaner alo jola ghorei
    Aanonde ar khushite jhalmal hoye uthechilen
    Tui ashar par. Tor naam rekhechilen Sukalyan.
    manushtar monta chilo shishur moton
    obhabe onotane, beche thakar nana durbipakeo
    Venge porten na khokhono. Shokoler valo chaiten mon theke
    Bolten dekho ekdin ei desher manush
    Thik khuje pabe muktir poth. Shushan theke nukti
    Doridro theke mukti oshikkha theke mukti..

    Aaj poyla Srabon.
    Khukhan, aaj tor jonmodin
    Chotobelay tor mone aache? Amader bhanga mejete
    Bakso theke bar kora mejo mashir haate toiri aashonta
    pete ditam. Shamne rakhtam thakurer aashaner prodipkhana
    tui boshtis babu hoye chupti kore.
    toke amay eke eke dhan dubba mathay diye aashirbaad kortam
    Baba bolten boro ho manush ho.
    Tor baba shei bandhu-ghosh kaka tini bolten
    beche borte thako.
    Trui jeggesh kortish maa, Borte mane ki maa?
    Ami shudhu tor mathay dhan dobboi ditam
    Boltam na kichui. Shudhu mone mone boltam
    thakur, Amar khukhanke masta boro manush kore tulo.
    Amar khukhan jeno shotti manush hoy
    Or jeno kokhono kuno bipod na hoy thakur
    Obhaver shongshare oi ekta din poyla srabon
    kashter poyshar ektu barti dudh nitam.
    Payesh ranna kore ditam toke
    tui khub valo bhastish payesh khete.
    Tor baba bus stander dukan thekeniye aashten
    Tor priyo misti chanar goja.
    Shamanno school mastarite ki ba aay hoto;
    ghore boshiye chatro podiye aashto kichu
    dau dau obhaber aagune she rashad purte shomoy lagto na
    tor babar jama shelai kortam ar baar baar boltam
    Asshche mashe ekta jama baniye niyo
    Uni heshe bolten; Baad dao to, Khukhan boro hocche.
    Or jonno bhavchi dudh rakhte hobe aaro aadhsher
    Dudhe shakti bare. buddhi bare. Shakti aare briddi na hole
    tumar khukhan masta boro manush hoye uthbe ki kore?
    bhavchi aro duita tution nebo.
    chatro poriyr poriye manushta diner sheshe klanta hoye jeten.
    barandar dhar geshe jakhan raater ondhokare jonakir bestota
    aar ghore tor pora mukhasta korar ektana shur
    amader colony r bhanga chura baritake jibonta kore rakhto
    Takhan bolten aamay; khawa dawa ektu koro- tumar cheharata
    baro venge porche din din..Sharitao to dekhchi besh chireche-
    kal e ami ferar pathe ekta shari niye aashbo. dharei anbo
    Ami boltam dhur. shamne khokhaner uchu class-
    Koto boi pattar kinte hobe- koto kharach
    uni dirghosshash fele chup kore jeten.
    honakira nisshobda odrishyo aalpona aakto
    uthoner aagachar jhope.
    Aaboho shangiter moto tui bhetore boshe boshe pora mukasta kortish
    Itihash, Vugal, r
    grammar.

    Isshar amader nirash korenni
    Tui koto boro holi
    Shab porikkay koto valo fol holo tor
    baba bollen aaro por . uccho shikka e uccho shommaner
    Ek matro path. Tui aaro mporli.

    Tarpar
    Tor chakri holo koto boro office e
    Mone aache khoka? Prothom masher maine haate peye e
    tui koto ki kine enechili?
    takhan to Amra uthe eshechi Shyambazare
    Du kamrar besh shajano ghochano gochano boro flat.
    to office thekei to diyechilo.
    Shei bari shei ghar shei balkoni- koto smriti koto chobi
    Ei baritei to
    Aashiner jhoro bikele-tor mone aache khokon?
    tor baba jedinta te chole gelen-mone aache?
    tui babar buker upar pare jakhan kadchili hapush nayane
    shodyo shamihara, Ami shedin tor she oshohay mukh dekhe
    Aaro beshi kore venge porechilam
    toke buke tene niyechilam choto belar moto.
    Bolechilam
    Kadish na khoka amito aachi
    Aaj poyla srabon
    Kolkata theke onek dure mofossoler ei briddsrome
    Ami ekebare eka, khokon
    Toke dekhte boro icche korche re
    toke, boumake r chotto biltuke
    tora ekhon onek dure
    salt laker, marbel boshano jhakjhake barite.
    Aaj tor jonmodine nishoy khub boro party hocche.
    tai nare khokon? lokjon hoichoi, khawa dawa.
    khub valo, khub valo.

    Khokon, Ajj poyla srabon
    Amar boro mone porche jadabpurer bhanga ghore ratre
    Tui amar pashe shuye majhe modde hotath khub voy peye
    joriye dhortish amake. Ami boltam, voy ki re?
    Ami to aachi. Maa to aache khokoner. jar maa thake
    tate ki bhute dhore?
    tui nischinto ghumiye portish amar buk jure.
    tor aadhunik songshare
    ei buritar ektu thai holo nare?
    Pritimao to maa . oro to aache amar khokoner e moto
    Kol aalo kora ek chader tukro.
    Kintu shomoyer ki aashcharjo poribortan.
    Khokon!
    Tui budhoy ekhon r payesh khas na-tai na re?
    Tui janish na khokon
    Aaj ami shokale payesh ranna korechi. Hay
    Tor e pathano takai
    Sharadin shei payesher bati shamne niye boshe aacchi re
    Ekhane ei briddasrome
    Amar ekla ghore
    Aar keu nei
    Tui ekbaar aashbi khokon
    Ekbaar..shudhu
    Ekbaar.

    See less
  1. কলকাতার যীশু – নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী লালবাতির নিষেধ ছিল না, তবুও ঝড়ের বেগে ধাবমান কলকাতা শহর অতর্কিতে থেমে গেল; ভয়ঙ্করভাবে টাল সামলে নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল ট্যাক্সি ও প্রাইভেট, টেমপো, বাঘমার্কা ডবল-ডেকার। ‘গেল গেল’ আর্তনাদে রাস্তার দুদিক থেকে যারা ছুটে এসেছিল- ঝাঁকামুটে, ফিরিওয়ালা, দোকানি ও খরিদ্দার- এখনRead more

    কলকাতার যীশু – নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

    লালবাতির নিষেধ ছিল না,
    তবুও ঝড়ের বেগে ধাবমান কলকাতা শহর
    অতর্কিতে থেমে গেল;
    ভয়ঙ্করভাবে টাল সামলে নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল
    ট্যাক্সি ও প্রাইভেট, টেমপো, বাঘমার্কা ডবল-ডেকার।
    ‘গেল গেল’ আর্তনাদে রাস্তার দুদিক থেকে যারা
    ছুটে এসেছিল-
    ঝাঁকামুটে, ফিরিওয়ালা, দোকানি ও খরিদ্দার-
    এখন তারাও যেন স্থির চিত্রটির মতো শিল্পীর ইজেলে
    লগ্ন হয়ে আছে।
    স্তব্ধ হয়ে সবাই দেখছে,
    টালমাটাল পায়ে
    রাস্তার এক-পার থেকে অন্য পারে হেঁটে চলে যায়
    সম্পূর্ণ উলঙ্গ এক শিশু।

    খানিক আগেই বৃষ্টি হয়ে গেছে চৌরঙ্গিপাড়ায়।
    এখন রোদ্দুর ফের অতিদীর্ঘ বল্লমের মতো
    মেঘের হৃৎপিণ্ড ফুঁড়ে
    নেমে আসছে;
    মায়াবী আলোয় ভাসছে কলকাতা শহর।

    স্টেটবাসের জানালায় মুখ রেখে
    একবার আকাশ দেখি, একবার তোমাকে।
    ভিখারি-মায়ের শিশু,
    কলকাতার যিশু,
    সমস্ত ট্রাফিক তুমি মন্ত্রবলে থামিয়ে দিয়েছ।
    জনতার আর্তনাদ, অসহিষ্ণু ড্রাইভারের দাঁতের ঘষটানি,
    কিছুতে ভ্রুক্ষেপ নেই;
    দু’দিকে উদ্যত মৃত্যু, তুমি তার মাঝখান দিয়ে
    টলতে টলতে হেঁটে যাও।
    যেন মূর্ত মানবতা, সদ্য হাঁটতে শেখার আনন্দে
    সমগ্র বিশ্বকে তুমি পেতে চাও
    হাতের মুঠোয়। যেন তাই
    টাল্‌মাটাল পায়ে তুমি
    পৃথিবীর এক-কিনার থেকে অন্য-কিনারে চলেছ।

    English Transliteration:

    Lalbatir nished chilo na
    tabu o jharer bege dhabaman kolkata shahar
    Otarkite theme gelo;
    Voyongkar bhabe tal shamle niye dariye roilo
    Taxo O private, Tempo, Baghmarka double dekker
    ‘Gelo gelo’ aartanade rastar dudik theke jara
    chute eshechilo-
    Jhakamuthe, Feriwala, Dukanio khariddar-
    Ekhon tara o jeno stir chitrotir moto shilpir ejele lagna hoye aache
    Stabda hoye dekhche shobai,
    Talmatal paye
    rastar ek par theke onno pare hete chole jay
    shampurna ulanga ek shishu

    Khanik aagei bristi hoye geche chourangi paray.
    Ekhon ruddur otidirgo ballomer moto
    Megher ritpinda fure
    Neme aashche
    mayabi aaloy bhashche kolkata shahar

    State bus er janalay mukh rekhe
    Ekbaar aakash deki ekbaar tumake.
    Vikhari-mayer shishu
    Kalkatar jishu,
    Shamasta traffic tumi manthabale thamiye diyecho
    janatar aartonaad, oshohishnu driver er dater ghoshtani,
    kichute vrukkhep nei;
    Dudike uidyata mrityo, tumi tar majhkhan diye
    Talte talte hete jao.
    Jeno murta manobota, shodyo hatte shekhar aanande
    Shomogro bishooke tumi pete chao
    hater muthoy. Jeno tai
    talmatal paye tumi
    Prithibir ek kinara theke onno kinare cholecho

     

    See less
  1. তেজ -দেবব্রত সিংহ ‘আমি জামবনির কুঁইরি পাড়ার শিবু কুঁইরির বিটি সাঁঝলি বটে।’ কাগজওয়ালারা বইললেক, “উঁ অতটুকু বইললে হবেক কেনে? তুমি এবারকার মাধ্যমিকে পত্থম হইছ। তোমাকে বইলতে হবেক আরো কিছু।” পঞ্চায়েতের অনি বৌদি, পধান, উপপধান, এইমেলে, এম.পি- সব একেবারে হামলিয়ে পড়ল আমাদের মাটির কুঁইড়েঘরে। জামবনি ইস্কুলের হRead more

    তেজ -দেবব্রত সিংহ

    ‘আমি জামবনির কুঁইরি পাড়ার শিবু কুঁইরির বিটি সাঁঝলি বটে।’

    কাগজওয়ালারা বইললেক,
    “উঁ অতটুকু বইললে হবেক কেনে?
    তুমি এবারকার মাধ্যমিকে পত্থম হইছ।
    তোমাকে বইলতে হবেক আরো কিছু।”

    পঞ্চায়েতের অনি বৌদি, পধান, উপপধান, এইমেলে, এম.পি-
    সব একেবারে হামলিয়ে পড়ল আমাদের মাটির কুঁইড়েঘরে।

    জামবনি ইস্কুলের হেডমাস্টার
    কোন বিহান বেলায় টিনের আগর খুইলে,
    হেইকে, ডেইকে, ঘুম ভাঙাই- খবরটা যখন পথম শুনালেক
    তখন মাকে জড়াই শুয়ে ছিলুম আমি।
    কুঁড়াঘরের ঘুটঘুইটা আঁধারে হেডমাস্টার মশাইরে দেইখে
    চোখ কচালে মায়ের পারা আমিও হাঁ – হয়ে ভাইবে ছিলেম।
    -একি স্বপন দেখছি নাকি-
    স্যার বইলল, এটা স্বপুন লয়, স্বপুন লয়, সত্যি বইটে।
    কথাটো শুইনে কেঁইনদে ভাসায়েছিলুম আমরা মা বিটি।

    আজ বাপ বেঁইচে থাইকলে
    আমি মানুষটাকে দেখাইতে পাইত্থম। দেখাইতে পাইতত্থেম বহুত কিছু-
    আমার বুকের ভিতর
    যে তেজালো সইনঝা বাতিটা জ্বালায়ে ছিল মানুষটা।
    সেই বাতিটা আজকে কেমন আমাদের কুঁইড়ে ঘরটাকে আলো কইরেছে।
    সেটো দেখাইতে পাইত্থম।

    আপনারা বইলছেন বটে
    “তুমাদের মতো মেইয়ারা যদি উঠে আসে তবে ভারতবর্ষ উঠে আসে।”
    কথাটা খুবই সত্যি, কিন্তু
    উঠে আসার রাস্তাটা যে এখোন তৈয়ার হয় নাই।
    খাড়া পাহাড়ে উঠা যে কি জিনিস।
    বহুত দম লাগে। বহুত ত্যাজ লাগে…

    আমি জামবনির কুঁইরি পাড়ার শিবু কুঁইরির বিটি সাঁঝলি।
    যখন থেকে হুঁশ হইছে তখন থেকে শুইনে আসছি
    “বিটি না মাটি’
    ঠাকুমা বইলথক্,
    পরের ঘরে হেঁইসেল ঠেইলবেক্ তার আবার লিখাপড়া’

    গাঁয়ের বাবুরা বইলথক্
    “দ্যাখ সাঁঝলি – মন খারাপ কইরলি তো হেইরে গেলি।
    শুন যে যা বইলছে বলুক্। সে সব কথা এক কানে সিধালে
    আর এক কানে বার কইরে দিবি।’

    তখ্যান বাবুপাড়ার দেঘইরা ঘরে কামিন খাইটতক মা।
    ক্ষয় রোগের তাড়সে-মায়ের গতরটা ভাঙে নাই অতোটা।
    মাঝে মইধ্যে জ্বরটর আইত বটে, জ্বর এলে মা
    চুপচাপ এঙনাতে তালাই পাইতে শুইয়ে থাইকতো।
    মনে আছে সে ছিল এক জাঁড় কালের সকাল।
    রোদ উঠেছিল ঝলমলানি ঝিঙা ফুলা রোদ।
    আমি সে রোদে পিঠ দিয়া গা দুলাই পড়ছিলাম
    ইতিহাস…
    কেলাস সেভেনের সামন্ত রাজাদের ইতিহাস।

    দে ঘরের গিন্নি লোক পাঠাইছিল বারকতক।
    মায়ের জ্বর সে তারা শুইনতে নাই চায়!
    আমাদের দিদি বুঢ়ি তখনো বাঁইচে।
    ছেঁড়া কম্বল মুড়হি দিয়ে বিড়ি ফুকছিল বুড়হি।
    শেষতক্ বুড়হি সেদিন পড়া থেকে উঠাই
    মায়ের কাইজ টুকুন কইরতে পাঠাই ছিল বাবু ঘরে।

    পুরানো ফটক ঘেরা উঠান-অতোবড়ো দরদালান- অতোবড়ো বারান্দা,
    সব ঝাঁট ফাট দিয়ে সাফ সুতরো করে আসছিলুম চইলে,
    দেঘইরে গিন্নি নাই ছাইড়ল্যাক, একগাদা এটাকাটা-জুঠা বাসন
    আমার সামনে আইনে ধইরে দিলেক। বইল্লুম
    “আমি তোমাদের জুঠা বাসন ধুইতে লাইরবো,”
    বাবু গিন্নির সেকি রাগ’-
    “কি বইল্লি তুই যতবড়ো মু লয় তত বড়ো কথা? জানিস,
    তর মা, তর মায়ের মা, তার মায়ের মা সবাই এতক্কাল
    আমাদের জুঠা বাসন ধুয়ে গুজারে গ্যালো
    আর তুই আমাদের জুঠা বাসন ধুইতে লাইরবি!”
    বল্লুম “হ আমি তোমাদের জুঠা বাসন ধুইতে লাইরবো।
    তোমরা লোক দেখে লাওগা। আমি চইল্লোম”
    কথাটো বইলে গটগট গটগট কইরে বাবু গিন্নির মুখের সামনে
    আমি বেড়োই চইলে আইলম।”

    তা বাদে সে লিয়ে কি কাইন্ড। কি ঝাম্যালা।
    বেলা ডুবলে মাহাতোদের ধান কাট্টে বাপ ঘরে ফিরে আইলে
    দুপাতা লিখাপড়া করা লাত্নির ছোট মুখে বড়ো থুতির কথা
    সাতকাহন কইরে বইলেছিল বুড়হি দিদি।

    মা কুনো রা কাড়ে নাই।
    আঘর মাসের সইন্ ঝা বেলাই এঙ্গ্নাতে আগুন জ্বেইলে
    গা-হাত-পা সেঁকছিল মা।

    একমাথা ঝাঁকড়া চুল ঝাঁকানো বাপের পেটানো পাথরের মুখটা
    ঝইলকে উঠেছিল আগুনের আঁচে।
    আমি বাপের অমুন চেহারা কুনোদিন দেখি লাই।
    বাপ সেদিন মা আর দিদি বুড়ির সমুখে আমাকে কাইছে ডেইকে
    মাথায় হাত বুলাই গম্ গইমা গলায় বইলেছিল –

    যা কইরেছিস্! বেশ্ কইরেছিস্।
    শুন্, তর মা, তর মায়ের মা, তার মায়ের মা- সবাই কইরেছে কামিনগিরি।
    বাবুঘরে গতর খাটাই খাইয়েছে। তাইতে হইছে টা কি।
    তাতে হইছে টা কি! ই-কথাটো মনে রাখবি সাঝ্লি,
    তুই কিন্তু কামিন হবার লাগে জম্মাস লাই।
    যত বড় লাট সাহেবই হোক কেনে কারু কাছে মাথা নোয়াই
    নিজের ত্যাজ বিকাবি লাই।
    এই ত্যাজ টুকুর ল্যাইগে লিখাপড়া শিখাচ্ছি তুকে।
    না হলে আমাদের মতো হা-ভাতা মানুষের ঘরে আর আছে টা কি?”

    আমি জামবনির কুইরি পাড়ার শিবু কুইরির বিটি সাঁঝলি,
    কবেকার সেই কেলাস সেভেনের কথা ভাবতে যায়ে
    কাগজওয়ালা টিভিওয়ালাদের সামনে এখুন কি যে বলি…

    তালপাতার রদ দিয়ে ঘেরা গোবুর লতার এঙ্গনাতে লুকে এখন লুকাকার।
    তার মাঝে বাঁশি বাজাই, জিপগাড়িতে চেইপে
    আগুপিছু পুলিশ লিয়ে মন্ত্রী আইল্যাক ছুটে।
    ‘কুথায় সাঁঝলি কুইরি কুথায়’, বইলতে বইলতে
    বন্দুকধারী পুলিশ লিয়ে সুজা আমাদের মাটির কুইড়ে ঘরে,

    হেডমাস্টার বইললে ‘পনাম কর, সাঁঝলি পনামকর’
    মন্ত্রী তখন পিঠ চাপড়াইল্যাক। পিঠ চাপরাই বইল্লেক,
    “তুমি কামিন খেইটে মাইধ্যমিকে পথম হইছ,
    তাই তুমারে দেইখতে আইলম্, সত্যিই বড় গরীব অবস্থা বটে।
    তুমাদের মতো মিয়ারা যাতে উঠে আসে
    তার লাগেই তো আমাদের পার্টি, তার লাগেই তো আমাদের সরকার।
    – এই লাও, দশ হাজার টাকার চেকটা এখুন লাও।
    শুন আমরা তুমাকে আরো ফুল দিব, সম্মর্ধ্বনা দিব,
    আরো দ্যাদার টাকা তুলে দিব।–
    এই টিবির লোক, কাগুজের লোক, কারা আছেন, ই-দিকে আসেন।“

    তক্ষুনি ছোট বড় কতরকমের সব ঝইলকে উঠল ক্যামেরা,
    ঝইলকে উঠল মন্ত্রীর মুখ। না না মন্ত্রী লয়, মন্ত্রী লয়,
    ঝইলকে উঠল আমার বাপের মুখ।
    গন্ গনা আগুনের পারা আগুন মানুষের মুখ।
    আমি তক্ষুনি বইলে উঠলম-
    “না না ই টাকা আমার নাই লাইগব্যাক। আর আপনারা
    যে আমায় ফুল দিব্যান, সম্মর্ধ্বনা দিব্যান বইলছেন তাও আমার নাই লাইগব্যাক।’

    মন্ত্রী তখন ঢোক গিলল্যাক।
    গাঁয়ের সেই দেঘইর‍্যা গিন্নির বড় ব্যাটা এখুন পাটির বড় ল্যাতা।
    ভিড় ঠেলে সে আইসে বইলল্যাক-
    “ ক্যানে, কি হইছেরে সাঁঝলি,
    তুই তো আমাদের বাড়ি কামিন ছিলি।
    বল তর কি কি লাইগব্যাক, বল, তর কি কি লাইগব্যাক খুলে বল খালি,”

    বইল্ লম –
    “ আমার পারা শয়ে শয়ে আর অনেক সাঁঝলি আছে।
    আর শিবু কুইরির বিটি আছে গাঁ গিরামে। তারা যদ্দিন
    অন্ধকারে পইড়ে থাইকবেক তারা যদ্দিন লিখ-পড়ার লাগে কাঁইদে বুলব্যাক্।
    তদ্দিন কুনো বাবুর দয়া আমার নাই লাইগব্যাক্। শুইনছ্যান আপনারা
    তদ্দিন কুনো বাবুর দয়া আমার নাই লাইগ্ ব্যাক।“

     

    English transliteration:

    Mu Jambanir kuiri parar shibu Kuirir biti Shajhli bote.

    Kagajwalara boillek
    Uuh ototuku bolole hobek kene?
    Tumi ebarkar maddyomik prothom hoiso.
    Tumake boilte hobek aaro kichu.

    Ponchayeter oni boudi, podhan, upapadhan, Eimele, MP
    Shob ekebare halmliye podlo amader matir kuireghore.

    Jamboni schooler headmaster
    Kono bihan belay tiner aagar khuile
    Heike, Deike, Ghum bhangai- khabarta jokhon prothom shunlek
    Takhan maake jorai shuye chilum aami.
    Kudaghorer ghutghuita aadhare deadmaster moshire deikhe
    Chokh kochale mayer para amio ha- hoye bhaibe chilem.
    -Eki shopon deksi naki-
    Sir boillo, Eta shpun loy, Shapun loy, Shottyi boite.
    KOthatu shuinle keinde bhashachilem amara ma beti

    Aj bap beiche thaikle
    Ami manushtake dekhaite paithum. Dekhaite paithem bahut kicu
    Amar buker vitor
    Je tejalo shoijha batita jalaye chilo manushta.
    Shei batita aajke kemon aamader kuire ghartake aalo koireche
    Sheto dekhaite paithum

    Apnara boilchen bote
    “Tumader moto meiyara jodi uth aashe tobe bharatborsho uthe aashe.
    Kothata khub e shotti kintu
    uthe aashar rasta je ekhono taiyyar hoy nai.
    khara pahare utha je ki jinish.
    bahut dam lage baht tej lage

    Ami Jambanir kuiri parar shibu Kuirir biti Shajhli.
    jakhan theke hush oise takhan theke shuine aashchi
    “biti na mati”
    Thakuma boiltak
    Parer ghare heichel theilbek tar abar likhapora’

    gayer babura boilthok
    deykh Shajhli- Mon kharap karli mto heiri geli.
    Shun je ja boilche baluk. She shob kotha ek kane shidhale
    Aar ek kane bar koira dibi.

    Takhan babuparar deghroiya ghaare kamin khaitak ma.
    Khay roger tadoshe -mayer gatarta venge nai otota.
    majhe moddhe jartor aaito bote, Jar ele maa
    Chupchap egnate talai paite shuiye thaikto.
    Mone aache she chilo ek jaro kaler shokal.
    Rod uthechichilo jhalmalani jinga ful rod
    Ami she rode pith diya ga dulai parchilam
    itihash…
    Kelas sevener shamanta rajader itihas

     

    See less
  1. প্লাসমা থেরাপি চিকিৎসা বিজ্ঞানে একেবারেই একটি নতুন বিষয় নয়। ইহা একটি প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি যার ব্যবহার অনেক প্রাচীনকাল থেকেই শুরু হয়েছে। প্লাসমা হল রক্তরস। আর এই রক্ত রসের স্থানান্তরের নামই প্লাসমা থেরাপি। এই থেরাপিতে কোন এক ব্যধি থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তির রক্ত রস সংগ্রহ করে সেই ব্যধিতে আক্রান্তRead more

    প্লাসমা থেরাপি চিকিৎসা বিজ্ঞানে একেবারেই একটি নতুন বিষয় নয়। ইহা একটি প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি যার ব্যবহার অনেক প্রাচীনকাল থেকেই শুরু হয়েছে।

    প্লাসমা হল রক্তরস। আর এই রক্ত রসের স্থানান্তরের নামই প্লাসমা থেরাপি। এই থেরাপিতে কোন এক ব্যধি থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তির রক্ত রস সংগ্রহ করে সেই ব্যধিতে আক্রান্ত অন্য রোগীর শরীরে তা প্রবেশ করানো হয়।

    তাই যেসকল রোগী করোনা ভাইরাস থেকে ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন বা মুক্তি পেয়েছেন তাদের রক্তরস বা প্লাজমা কালেক্ট করে অন্য করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্লাসমা বা রক্ত স্থানান্তর করা হবে বা হচ্ছে। তাতে করে সুস্থ হওয়া ব্যক্তির এন্টিবডি আক্রান্তের ভাইরাসকে মেরে তাকে সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

    ইতিমধ্যে ইরান সহ আরো কিছু দেশে করানো মোকাবেলায় প্লাসমা থেরাপি আরম্ভ করা হয়েছে। এবং ভারত সরকার ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের নির্দেশনা মেনে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ভিত্তিতে প্লাসমা থেরাপি শুরু করার জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে আর্জি জানিয়েছে। আশা করা হচ্ছে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় এই থেরাপি কার্যকরী হয়ে উঠবে।

    See less
  1. মুক্ত গণতন্ত্র – শঙ্খ ঘোষ সবাই শুধু মিথ্যে রটায় পথগুলি সব দেদার খোলা যার খুশি আয় বিরুদ্ধতায় যথার্থ এই বীরভূমি উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে এসে পেয়েছি শেষ তীরভূমি দেখ খুলে তোর তিন নয়ন রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন সবাই আমায় কর তোয়া ছড়িয়ে যাবে দিগ্বিদিকে মুক্ত গণতন্ত্র আজ।   English transliteratiRead more

    মুক্ত গণতন্ত্র – শঙ্খ ঘোষ

    সবাই শুধু মিথ্যে রটায়
    পথগুলি সব দেদার খোলা
    যার খুশি আয় বিরুদ্ধতায়

    যথার্থ এই বীরভূমি
    উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে এসে
    পেয়েছি শেষ তীরভূমি

    দেখ খুলে তোর তিন নয়ন
    রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে
    দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন

    সবাই আমায় কর তোয়া
    ছড়িয়ে যাবে দিগ্বিদিকে
    মুক্ত গণতন্ত্র আজ।

     

    English transliteration:

    Mukta Gantantra

    Shobai shudu mithya rotai
    pothguli shob dedar khola
    Jar khushi aay biruddotay

    Jothartho ei birbhumi
    Utthal dheu periye eshe
    Peyechi shesh tirbhumi

    Dekh khule tor tin nayan
    rasta jure khargo hate
    dariye aache unnoyon

    Shobai amay kor toya
    choriye jabe dikbidike
    mukto ganatantra aaj

    See less