বিশ্ব উষ্ণায়ন বা Global Warming
বর্তমান সময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে গম্ভীর পরিবেশগত সমস্যা হল গ্লোবেল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়ন। আঠারোশো শতাব্দীর ঔদ্যগিক ক্রান্তির পর থেকে মানুষের কার্যকলাপ, বিশেষত কলকারখানা, জীবাশ্ম ইন্ধন জালানো এবং যান বাহন থেকে নির্গত গ্রীনহাউস গ্যাসের প্রভাবে প্রতিবছর পৃথিবীর জলবায়ুর গড় তাপমাত্রার আস্তে আস্তে বৃদ্ধি হচ্ছে। পৃথিবীর এই তাপমান বৃদ্ধি পাওয়াকে বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবেল ওয়ার্মিং বলে।
বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রধান কারন হল কল কারখানা এবং যানবাহন থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড এবং অন্যান্য বায়ু দূষণকারী কনিকা যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে জমা হয়ে সূর্য্যরশ্মি ও তার বিকিরণকে শুষে নিয়ে আটকে রাখে যার জন্য বায়ুমণ্ডলের তাপমান অনবরত বাড়তে থাকে। বায়ু দূষণকারী সেই গ্যাসগুলো যেমন কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রোস অক্সাইড, জলীয় বাষ্প এবং সিন্থেটিক ফ্লোরিনাটেড গ্যাস ইত্যাদিকে একসাথে গ্রীনহাউস গ্যাস বলে।
গ্রীনহাউস গ্যাস বাড়ার প্রভাবে সারা পৃথিবীজুড়ে জলবায়ুর পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে যার ফলে আস্তে আস্তে পৃথিবীর আবহাওয়ায় পরিবর্তন আসছে, যা পৃথিবীর মানব ও জীবজন্তুর জীবনকে সঙ্কটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীতে সমুদ্রপৃষ্ট বেড়ে চলা, বরফঢাকা কমা, সমুদ্রের তাপমান বাড়া, সমুদ্রজল অম্লতর হওয়া, হিমবাহ বা গ্লেসিয়ার গলে যাওয়া, আবহাওয়ার চরমতা বাড়ার মতো ইত্যাদি রকমের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
হিমবাহ বা গ্লেসিয়ার গলে গিয়ে পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ট উপরে চলে আসলে শীগ্রই অনেক দ্বীপ এবং উপকূলীয় অঞ্চল ডুবে যাবে। শুধু তাই নয়, বৈজ্ঞানিকদের মতে পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ২০৫০ শতাব্দীর ভিতরেই পৃথিবীতে বাৎসরিক ২৫০০০০ মানুষের মৃত্যু হবে যা একটি সাস্থ্য আপতকালীন সমস্যার সৃষ্টি করবে। সেজন্য বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব ঠেকাতে সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রীনহাউস গ্যাসের নির্যাস কম করার পণ নেওয়া হয়েছে।
Leave a comment