Sign Up

Continue with Facebook
Continue with Google
Continue with Twitter
or use


Have an account? Sign In Now

Sign In

Continue with Facebook
Continue with Google
Continue with Twitter
or use


Forgot Password?

Don't have account, Sign Up Here

Forgot Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.


Have an account? Sign In Now

Sorry, you do not have a permission to ask a question, You must login to ask question.

Continue with Facebook
Continue with Google
Continue with Twitter
or use


Forgot Password?

Need An Account, Sign Up Here
Bengali Forum Logo Bengali Forum Logo
Sign InSign Up

Bengali Forum

Bengali Forum Navigation

  • বিভাগ
  • বিষয়
  • ব্লগ
  • বাংলা অভিধান
  • হযবরল
Search
Ask A Question

Mobile menu

Close
Ask a Question
  • বাংলা অভিধান
  • সাহিত্য
  • শিক্ষা
  • রচনা
  • সাধারণ জ্ঞান
  • ইংলিশ টু বাংলা
  • বিজ্ঞান
  • বাংলা কুইজ
  • ধৰ্ম ও সংস্কৃতি
  • ইতিহাস
  • মতামত

Tag: Bengali Essay

A perfect place to find your Bengali essays (বাংলা রচনা) Several useful topics which are frequently asked in school and board exams has been covered.

Discy Latest Questions

In: রচনা

বিজ্ঞান মনস্কতা রচনা | Scientific Attitude Essay

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 418 Answers
    • 14 Best Answers
    • 2,115 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on October 13, 2020 at 10:40 am

    বিজ্ঞান শিক্ষা ও বিজ্ঞান মনস্কতা ‘কত অজানারে জানাইলে তুমি কত ঘরে দিলে ঠাঁই দূরকে করিলে নিকট বন্ধু, পরকে করিলে ভাই।' ভূমিকাঃ আধুনিক মানব সভ্যতার প্রধানতম হাতিয়ার বিজ্ঞান। বিজ্ঞান ব্যতীত বর্তমান সময় গতিহীন, নিস্পন্দ । তাই বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ, বিজ্ঞানের জয়যাত্রার যুগ। মানুষই এই বিজ্ঞানকে সভ্যতRead more

    বিজ্ঞান শিক্ষা ও বিজ্ঞান মনস্কতা

    ‘কত অজানারে জানাইলে তুমি কত ঘরে দিলে ঠাঁই
    দূরকে করিলে নিকট বন্ধু, পরকে করিলে ভাই।’

    ভূমিকাঃ আধুনিক মানব সভ্যতার প্রধানতম হাতিয়ার বিজ্ঞান। বিজ্ঞান ব্যতীত বর্তমান সময় গতিহীন, নিস্পন্দ । তাই বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ, বিজ্ঞানের জয়যাত্রার যুগ। মানুষই এই বিজ্ঞানকে সভ্যতার সম্পদ করে তুলেছে। ক্ষুদ্র আয়তনের মানুষ মস্তিষ্কের উর্বর শক্তির মাধ্যমে পৃথিবীব্যপী সমস্ত বস্তু বিষয়ের মধ্যে জ্ঞান আহরণের উপকরণ খুঁজে বেড়াচ্ছে। আর তা থেকেই মানুষের মনে জন্ম নিয়েছে বিজ্ঞান মনস্কতা। মানুষ আজকে পৃথিবীর সমস্ত জীবকে পিছনে ফেলে নিজেদেরকে প্রগতির চরম শিখরে তুলেছে শুধুমাত্র বিজ্ঞান সাধনা, অধ্যবসায়, বিজ্ঞান শিক্ষা ও মানব মনে বিজ্ঞান মনস্কতার প্রভাবের ফলে। তাই আজ একবাক্যে বলা যায় বিজ্ঞান হল গােটা সমাজের পরিচালিকা শক্তি – ‘a direct productive force of society.

    বিজ্ঞান মনস্কতা কি? বিজ্ঞান হল বিশেষ জ্ঞান। আর বিজ্ঞানের মূলমন্ত্রই হলাে অনুমান নির্ভরতা থেকে যুক্তির বন্ধনে মুক্তি ও সত্যের সাক্ষাৎ অনুভূতি। যেখানে রহস্যের গন্ধ সেখানেই বিজ্ঞান মনস্কতার জন্ম। আসলে বিজ্ঞান মনস্কতা মানুষকে জীবনমুখী কুসংস্কারমুক্ত প্রগতির পথ নির্দিষ্ট করে আর নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে ফেলে জয় এনে দিয়ে উৎসাহ দান করে । তাই বলা যায় – What is wrong and what is write for us and to what extent it may be accepted or can not be accepted.’

    বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তাঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘শিক্ষার মিলন’ প্রবন্ধে বিজ্ঞানরূপিণী বিশেষবিদ্যার নাম ‘সঞ্জীবনী বিদ্যা’ রূপে অভিহিত করেছেন। এই বিদ্যার বলেই মানুষ নব নব আবিষ্কারের জন্ম দেয় – Necessity is the mother of invention. আর এই প্রয়ােজনীয়তার তাগিদকে মাথায় রেখেই বিজ্ঞানের আবিষ্কার এবং আরও বিজ্ঞানমনস্ক করে নিজেকে গড়ে তােলা – বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের উপর তথ্য জানা এবং তা বুঝে মনের উৎসাহ চেতনার কোষে গভীরভাবে তা প্রেরণ করা। শিশু অবস্থা থেকেই অল্প অল্প বিজ্ঞানের তথ্য জানা উচিত, তাতে অন্তত কুসংস্কারের মতাে মারণ কীটের দংশন থেকে মানুষ রক্ষা পাবে এবং নিজেকে বিজ্ঞান মনােভাবাপন্ন ভেবে আহ্লাদিত হবে এবং অপরকেও বিজ্ঞানের অনুগামী হতে সাহায্য করবে।

    বিজ্ঞানমনস্কতা ও কুসংস্কার দূরীকরণঃ মানুষ যখনই মানসিকভাবে দুর্বল হয় তখনই সে বিভিন্ন কুসংস্কারের আশ্রয় নেয়। বিজ্ঞান যতবার প্রগতির ধ্বজা উড়িয়েছে ততবারই কুসংস্কার ধাক্কা মেরেছে প্রবল জোরে । কিন্তু তাই বলে বিজ্ঞানকে স্তন্ধ করতে পারে নি, যথা সম্পন্ন শক্তি নিয়ে মানবমনে বিজ্ঞানমনস্কতার প্রচার ঘটিয়ে। কুসংস্কারমুক্ত সমাজ করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে এবং সাফল্যও পেয়েছে।

    বিজ্ঞান শিক্ষা ও চেতনা ও এ যাবৎ গৃহীত ব্যবস্থাঃ বিজ্ঞান শিক্ষা ও চেতনা যাতে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের। কাছে পৌঁছে যায় তার জন্য সরকারী সাহায্য, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তথা ছােট-বড় ক্লাবগুলি আজ এ কাজে অগ্রণী ভূমিকা নিলেও আজও সে অর্থে বিশেষ সফলতা লাভ করতে পারে নি। বিজ্ঞান মনস্কতার যে প্রথম লক্ষ্মণ – নিজে জানাে, যুক্তি দিয়ে মানাে । এই চরম সত্যটি পর্যন্ত বহু মানুষের অজানা। কাজেই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত ‘বিজ্ঞান সবার জন্য এ সত্যকে মানুষের গােচরে আনার জন্য বিভিন্ন ক্যাম্প, প্রশিক্ষণ শিবির, আলােচনা সভা, বিতর্ক সভা প্রভৃতির মাধ্যমে মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক ভাবনায় উৎসাহিত করা । এর মাধ্যমে যে সাফল্য আসবে তা আসলে সমাজেরই সাফল্য । আর এর মাধ্যমেই বিজ্ঞান চেতনা মানুষের অন্দরে অন্তরে স্থান করে নেবে ও নিয়েছে।

    বিজ্ঞান চেতনার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ও জয়যাত্রাঃ “বিজ্ঞানই বর্তমান জগতের উন্নতির মাপকাঠি, বিজ্ঞানের অগ্রগতিতেই সভ্যতার অগ্রগতি।“ – প্রফুল্লচন্দ্র
    বিজ্ঞানের এই অগ্রগতিকে আরও বৃদ্ধিপ্রাপ্ত করতে অবশ্যই কুসংস্কারমুক্ত এক সমাজব্যবস্থা গড়া উচিত – আর এই সমাজব্যবস্থা গড়তে পারে একমাত্র সুষ্ঠু শিক্ষা পদ্ধতি – তাই আজ মানুষ শিক্ষা চেতনার মাধ্যমে অন্ধ বিশ্বাস ও কুসংস্কারকে দূর করে আকাশে, স্থলে, জলে সর্বত্র জমিয়েছে পাড়ি – তাই এভারেষ্ট চূড়া, সমুদ্রতল কিম্বা মহাকাশ অভিযান আজ মানুষের হাতের মুঠোয় বিজ্ঞান শিক্ষাই মানুষের এই অগ্রগতির ফল।

    মানবমুখী বিজ্ঞান চেতনাঃ আসল কথা- শুধু যন্ত্রে কাজ হয় না, যন্ত্রী যদি মানুষ না হয়ে ওঠে” – তাই বিজ্ঞান শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে মনের কর্ষণও জরুরী – তা একা মনের নয়, সমাজের সব স্তরের সব মানুষকে বিজ্ঞানমুখী করতে হবে । শহর থেকে পল্লীবাংলা, রাজপ্রাসাদ থেকে দরিদ্রের কুটির সর্বত্র।

    উপসংহারঃ জানি মানুষের জিজ্ঞাসার অন্ত নেই, ইন্টারনেট কম্পিউটার আজ ঘরে ঘরে তথাপি মানুষের কুসংস্কার এখনও বিজ্ঞানের দ্বার বেশ খানিকটাই আটকে রয়েছে এমতাবস্থায় বিজ্ঞানমুখী শিক্ষাই পারে এ ধারণাকে দূরীভূত করতে। ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে প্রথাগত শিক্ষার বাইরে বিভিন্ন আলােচনাচক্র, পাঠচক্র, স্থানে স্থানে বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষা তথা প্রদর্শণী ও বিতর্ক সভা ও সর্বোপরি একজন সংস্কারমুক্ত শিক্ষকের আয়ত্তাধীনে বিজ্ঞানমনস্ক মনের অধিকারী হয়ে উঠতে পারে সেদিকে দৃষ্টিপাত করা প্রয়ােজন। তাই শুধু শুষ্ক রুক্ষ্ম বিজ্ঞান চর্চা নয় – আকর্ষণীয় করে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে আর তখনই মানুষ হবে সঠিক বিজ্ঞানমনস্ক। সে নিজের দেশ ও ঐতিহ্যের প্রতি অনুরাগী হবে যেমন তেমন সুন্দর সুষ্ঠ যুক্তিবাদী মুক্তমনের অধিকারী হয়ে মানবপ্রীতির মেলবন্ধনে নিজেকে সামিল করবে একজন সুন্দর বিজ্ঞানমনস্ক মন নিয়ে। তবেই দেশ জাতি তথা পৃথিবীর উন্নতি সার্থক হবে, জ্ঞানের প্রসার সুদৃঢ় হবে।

    See less
    • -6
  • 1
  • 9,599
  • 0
Answer
In: রচনা

শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষার গুরুত্ব রচনা

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 418 Answers
    • 14 Best Answers
    • 2,115 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on October 25, 2020 at 2:46 am

    শিক্ষার মাধ্যমরূপে মাতৃভাষা/ শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষার গুরুত্ব ভূমিকা : মাতৃভাষার মাধ্যমেই প্রথম বােধের জন্ম। মাতৃভাষার দ্বারাই শিশুর চেতনার বিকাশ ঘটে। শিশুর কাছে মাতার যেমন গুরুত্ব, শিক্ষার ক্ষেত্রে মাতৃভাষারও তেমনই গুরুত্ব। মাতৃভাষা ছাড়া শিক্ষা লাভ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এই মাতৃভাষাকে কেন্দ্রRead more

    শিক্ষার মাধ্যমরূপে মাতৃভাষা/ শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষার গুরুত্ব

    ভূমিকা : মাতৃভাষার মাধ্যমেই প্রথম বােধের জন্ম। মাতৃভাষার দ্বারাই শিশুর চেতনার বিকাশ ঘটে। শিশুর কাছে মাতার যেমন গুরুত্ব, শিক্ষার ক্ষেত্রে মাতৃভাষারও তেমনই গুরুত্ব। মাতৃভাষা ছাড়া শিক্ষা লাভ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এই মাতৃভাষাকে কেন্দ্র করেই তার জীবন নানাভাবে বিকাশ লাভ করে।

    সার্বিক ক্ষেত্রে মাতৃভাষা : মাতৃভূমির মতাে মাতৃভাষাও মানুষের নিকট একান্ত প্রিয়। মাতৃভাষাকে আশ্রয় করেই মানুষের সার্বিক বিকাশ সম্ভব। মাতৃভাষাতেই মানুষের পরম তৃপ্তি। কারণ, এই ভাষায় কথা বলে মনের ভাব প্রকাশ করে মানুষ যত আনন্দ পায় অন্যভাষায় কথা বলে তা পায় না। মাতৃভাষা শুধু প্রাত্যহিক জীবনের অবলম্বন নয় – এর মাধ্যমে সাহিত্য, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান সাধনার বিকাশ ঘটে।

    বিদেশি ভাষা এবং তাঁর সমস্যা : শিক্ষার মাধ্যমরূপে বিদেশি ভাষাকে অবলম্বন করার পক্ষে কোন যুক্তি নেই। তার কতকগুলি কারণ আছে। প্রথমতঃ বিদেশি ভাষাকে আয়ত্ত করতে যে কোন মানুষের অনেক বেশি সময় লাগে। দ্বিতীয়তঃ বিদেশি ভাষার মাধ্যমে শিক্ষা যতই করায়ত্ত হােক না কেন তার মাধ্যমে মাতৃভাষার মতাে মনের ভাব সঠিকভাবে প্রকাশ করা যায় না।

    মাতৃভাষায় শিক্ষা : শিক্ষা ও জীবনের সামঞ্জস্য বিধানের জন্য মনুষ্যত্বের বিকাশ সাধনের জন্য মাধ্যম হওয়া উচিত মাতৃভাষা। একমাত্র মাতৃভাষাই পারে প্রাণের সঙ্গে ভাবের সম্মিলন ঘটাতে। শুধু কাজ নয়, ভাব প্রকাশই হওয়া উচিত মূল লক্ষ্য। মাতৃভাষাই মানুষের মুক্তির যথার্থ উপায়। মাতৃভাষায় শিক্ষাগ্রহণে আপামর জনসাধারণের পক্ষে সহজ। গভীর আনন্দে মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করে। শিক্ষা তার পক্ষে ভার হয়ে দাড়ায় না। মাতৃভাষা শিক্ষা নেওয়ার পরে মানুষ নিজের ইচ্ছেমতাে যে কোন ভাষায় শিক্ষা নিতে পারে।

    বাংলায় জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা : জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্র হিসাবে বাংলা ভাষার ক্ষেত্রটি আজও দুর্বল। ঊনবিংশ শতাব্দীর গােড়ার দিকে ইউরোপীয় মিশনারিদের চেষ্টায় এদেশে সর্বপ্রথম বাংলাভাষার মাধ্যমে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার সূত্রপাত ঘটে। রাজা রামমােহন রায় সর্বপ্রথম এই ব্যাপারে এগিয়ে এসেছিলেন। পরবর্তীকালে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, অক্ষয়কুমার দত্ত, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, ভূদেব মুখােপাধ্যায়, কৃষ্ণমােহন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ মনীষীদের প্রচেষ্টায় বিষয়টি আরও গুরুত্ব লাভ করে।

    বাংলা ভাষা ও তাঁর ধারণ ক্ষমতা : ভারতবর্ষের স্বাধীনতা লাভের পর অনেক বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজি ও হিন্দি ভাষার ব্যাপক প্রচলন দেখা যায়। অনেকে হয়তাে যুক্তি দেখাবেন যে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষার পথই একমাত্র পথ কারণ কিছু বিষয় | যেমন অর্থনীতি, ভূতত্ত্ববিদ্যা, বিজ্ঞান বিষয় সমূহকে মাতৃভাষার মাধ্যমে যথার্থ শিক্ষাদান সম্ভব হয় না। একথা হয়তাে আংশিক সত্য। কিন্তু তবুও অনুপযুক্ত বলে চিরকালই তা অনুপযুক্তই থাকবে এমন কোন কথা নেই।

    উপসংহার : মাতৃভাষা যে শিক্ষার সর্বস্তরে মাধ্যম হিসাবে কার্যত গৃহিত হতে পারছে না এর মূলে পণ্ডিত অধ্যাপকদের মানসিক জাড্য এবং ইংরেজি ভাষার প্রতি মােহ। বাংলায় যে সর্বোচ্চ স্তরের জ্ঞান-বিজ্ঞানের গ্রন্থাদি রচিত হয়নি তার দায় পণ্ডিত সমাজ অস্বীকার করতে পারবে না। জাপান-রাশিয়া-জার্মানি সুচনা থেকেই মাতৃভাষাকে সর্বোচ্চ স্তরের বৈজ্ঞানিক গবেষণায় নিয়ােগ করেছেন। বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ ভাষা বাংলা সে বিষয়ে অক্ষম একথা স্বীকার করা যায় না। শুধু প্রতিষ্ঠানিক বিদ্যা চর্চার ক্ষেত্রে বাংলা তথা অন্যান্য মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করে রাখা লজ্জাকর। শিক্ষাকে সার্বজনীন ও উচ্চমানের করতে হলে মাতৃভাষার প্রতি এই মনােভাব অবশ্য বর্জন করতে হবে।

    See less
    • -1
  • 1
  • 7,391
  • 0
Answer
In: রচনা

সমাজসেবা ও ছাত্রসমাজ রচনা | Essay on Social Work and Students

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 418 Answers
    • 14 Best Answers
    • 2,115 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on October 30, 2020 at 1:40 am

    সমাজসেবা ও ছাত্রসমাজ অথবা জনসেবা ও ছাত্রসমাজ   ভূমিকা : মানুষ একপ্রকার সামাজিক প্রাণী। সমাজের সদস্য হিসাবে তাকে সমাজের জন্য নির্দিষ্ট কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। আর এই সামাজিক প্রাণী হয়ে উঠার আসল প্রশিক্ষণ শুরু একটি মানুষের ছাত্রজীবন থেকে। তাই যুগ যুগ ধরে ছাত্রসমাজ সুস্থ সমাজ গঠনে এবRead more

    সমাজসেবা ও ছাত্রসমাজ

    অথবা

    জনসেবা ও ছাত্রসমাজ

     

    ভূমিকা : মানুষ একপ্রকার সামাজিক প্রাণী। সমাজের সদস্য হিসাবে তাকে সমাজের জন্য নির্দিষ্ট কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। আর এই সামাজিক প্রাণী হয়ে উঠার আসল প্রশিক্ষণ শুরু একটি মানুষের ছাত্রজীবন থেকে। তাই যুগ যুগ ধরে ছাত্রসমাজ সুস্থ সমাজ গঠনে এবং জনকল্যাণে এক অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছে এবং অত্যাচার, অন্যায়, অবিচার ও শােষণের বিরুদ্ধে সর্বদা রুখে দাঁড়িয়েছে।

    সমাজ ও সমাজসেবা : একটি সমাজ সর্বস্থরের মানুষ দ্বারা গঠিত হয় । সেখানে প্রত্যেক মানুষ একে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয় এবং এই ক্ষেত্রে ছাত্ররাও ভিন্ন নয়। আমরা সমাজে বাস করছি, সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে আমরা অবগত।আমরা জানি যে নগরে আগুন লাগলে দেবালয় তা থেকে রক্ষা পায় না । সুতরাং দেবালয়কে বাঁচাতে হলে আমাদের আগুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এই ব্যবস্থা যদি নিতে হয়, তা হলে ছাত্র হলেও কিছু সামাজিক দায়িত্ব কাধে তুলে নিতেই হবে।

    ছাত্র জীবনে কর্তব্য : ছাত্র জীবন থেকেই পূর্ণাঙ্গ সামাজিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবার চেষ্টা করতে হয়। অধ্যয়ন ছাত্রদের তপস্যা বটে, কিন্তু একমাত্র কর্তব্য নয়। তাছাড়া কালের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আজকের ছাত্রজীবনের আদর্শও পরিবর্তিত হয়েছে। ছাত্র যে সমাজের অধিবাসী তার সমস্যা ও দুঃখ কষ্টের সঙ্গে পরিচিত হলে উত্তর জীবনে সহিষ্ণুতা ও সংগ্রামশীলতা অর্জিত হতে পারে। সমাজ সেবায় অংশ গ্রহণ করলে ছাত্রদের সামনে অভিজ্ঞতার বিচিত্র জগৎ খুলে যায়। তাই শুধু সমাজের কল্যাণে নয় ছাত্রদের নিজেদের স্বার্থেও সমাজ সেবায় ব্রতী হওয়া উচিত।

    পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা : কেবল ভাল ছাত্র নয়, একজন সুনাগরিক হতে হলে বিশেষ কয়টি সামাজিক দায়িত্ব এই ছাত্র অবস্থা থেকেই পালন করা অবশ্যই দরকার। এই দায়িত্ব গুলির মধ্যে প্রথম ও প্রধান হল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা। বিদ্যালয়ের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের খুবই জরুরি। পল্লী গ্রামের স্কুল থাকে প্রায়ই জঙ্গলে ভরা। স্কুলের মাঠ ও ঘর-বাড়ির আনাচ-কানাচ থাকে নানা ধরনের নােংরা জিনিসে ভর্তি। ছাত্রেরা যদি কারাের হাতের দিকে না তাকিয়ে, নিজেরা এই নােংরা পরিষ্কারের দায়িত্ব তুলে নেয়, তাহলে স্কুল প্রাঙ্গন পরিষ্কার হয়।

    সেবাধর্ম : মানব সেবার আদর্শ থেকেই সমাজ সেবার চিন্তার উদয় হয়েছে। মনীষী মহাপুরুষগণ বলে গেছেন, “যত্র জীব তত্র শিব” অর্থাৎ জন সেবাই প্রকৃত ঈশ্বরের পূজা। স্বামী বিবেকানন্দের বহুল প্রচারিত বাণীতে মানব সেবার আদর্শ অক্ষয় হয়ে আছে –
    “বহুরূপে সম্মুখে তােমার, ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর ?
    জীবে প্রেম করে যেইজন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর।”
    সুতরাং স্বতন্ত্র ভাবে ঈশ্বরের উপাসনার দরকার নেই। পৃথিবীর সকল ধর্মেই দুঃখীজনের দুঃখ মােচনে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ক্ষমার অবতার যীশু মানুষকে ভালােবাসতে পরামর্শ দিয়েছেন। গৌতম বুদ্ধ, শ্রী চৈতন্য দেব, শ্ৰীমন্ত শঙ্কর দেব প্রভৃতি যুগাবতারগণ মানবপ্রেমকেই শ্রেষ্ঠ ধর্ম বলে প্রচার করে গেছেন।

    ভবিষ্যৎ নাগরিক হওয়ার প্রশিক্ষন : ছাত্র-ছাত্রীদের একটি গুরুত্ব পূর্ণ সামাজিক দায়িত্ব হলাে মা-বাবার প্রতি আনুগত্য এবং পারিবারিক কাজে সহায়তা করা। জীবিকা অর্জনের ব্যস্ত পিতার সাংসারিক কাজে সাহায্য করা। এগুলি বিষয়ে সচেতন হওয়া দরকার তা হলাে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে ভবিষ্যতে নিজেকে গড়ে তােলা। ছাত্ররা পাঠ্য গ্রন্থে বহুতর অনুসরণীয় আদর্শের কথা ও মনীষী মহাপুরুষদের জীবনকথা, তাদের ত্যাগ ও কর্তব্য নিষ্ঠার কথা জানতে পারে। এসব আদর্শ নিজেদের জীবনে রূপায়িত করার দায়িত্ব কিন্তু ছাত্রদেরই। এমনকী সংবাদ পত্রাদি পাঠ করে দেশ বিদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্মন্ধে অবহিত হতে পারে। এভাবেই একজন ছাত্র ভবিষ্যতের একজন পূর্ণাঙ্গ সামাজিক মানুষ হয়ে উঠতে পারবে।

    উপযুক্ত কর্মসুচির প্রয়ােজনীয়তা : ছাত্র সমাজকে যদি গঠন মুলক কাজে উৎসাহ দিয়ে লাগানাে যায় তা হলে ছাত্র সমাজকে উসৃঙ্খলতা ও বিপথগামিতা থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। ছাত্র সমাজের অপ্রতিরুদ্ধ গতি যদি সেবামূলক কাজে নিয়ােজিত হয় তাহলে অনেক কাজের সমালােচিত ছাত্রসমাজ নিন্দার হাত থেকেও মুক্তি পাবে। পরিকল্পিত ব্যবস্থাকে নিয়মনীতি দিয়ে নিয়ন্ত্রিত করা গেলেও সার্থক করা যায় না। কর্তব্যের আবরণের মধ্যে ভালবাসা বা প্রীতিকে সংযুক্ত করা গেলে তবেই ছাত্রদের উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হবে গৃহীত কর্মসূচি, নতুবা সেগুলি হবে ব্যর্থতার নামান্তর মাত্র।

    উপসংহার : জনসেবার মহৎ আদর্শ ছাত্র সমাজকে শুধুমাত্র যে বৃহত্তর জীবনের মুখােমুখী দাঁড় করায় তা-ই নয়, তার মানসিক সম্প্রসারণশীলতারও সঞ্চার করে। উপরন্তু ছাত্রজীবন বৃহত্তর জীবনের কর্ম-ধ্যান ও সেবার মহান ব্রত পরবর্তী জীবনের বৃহত্তর সমাজকল্যাণমূলক সমাজসেবার পটভূমি, পরার্থ পরতার জন্মভূমি। এটাই তাকে আলােকবর্তিকার মতাে পথ দেখাতে সাহায্য করবে।

     

    See less
    • -1
  • 1
  • 9,781
  • 0
Answer
In: রচনা

ছাত্র সমাজ ও রাজনীতি রচনা | Student and Politics Essay

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 418 Answers
    • 14 Best Answers
    • 2,115 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on October 13, 2020 at 6:52 pm

    রচনা - ছাত্র সমাজ ও রাজনীতি ভূমিকাঃ রাজ্য বা রাষ্ট্র শাসন ও পরিচালনার নীতিকে এক কথায় বলা হয় বাজনীতি। ইহা বলতে কোন দ্বিধা নেই যে, দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতােপ্রােত ভাবে জড়িয়ে আছে এই রাজনীতি। কেননা একটা দেশ পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় এই নীতির দ্বারা। স্বাভাবিকভাবেই মানুষও কমবেশি আগ্রহীRead more

    রচনা – ছাত্র সমাজ ও রাজনীতি

    ভূমিকাঃ রাজ্য বা রাষ্ট্র শাসন ও পরিচালনার নীতিকে এক কথায় বলা হয় বাজনীতি। ইহা বলতে কোন দ্বিধা নেই যে, দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতােপ্রােত ভাবে জড়িয়ে আছে এই রাজনীতি। কেননা একটা দেশ পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় এই নীতির দ্বারা। স্বাভাবিকভাবেই মানুষও কমবেশি আগ্রহী হয় এই নীতির প্রতি। এই নীতিগুলির দ্বারাই মানব জীবনের ভালাে মন্দ নিয়ন্ত্রিত হয়। সামাজিক জীব হিসেবে তাই এই নীতি সম্পর্কে তার আকর্ষণ স্বাভাবিক।

    ছাত্র সমাজ ও দেশের ভবিষ্যৎঃ একটি দেশের ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করে ছাত্র সমাজের উপর। তারাই পারে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ গঠন করতে। তারা রাজনীতিতে কীভাবে গ্রহণ করছে তার উপর নির্ভর করছে পরবর্তী যুগের চিন্তাভাবনা। একটি পরিচিত বাক্য উচ্চারণ করা যায় এ ক্ষেত্রে, আজকের শিশুরাই দেশের ভবিষ্যৎ। এই শিশুরাই বড় হয়ে রাষ্ট্রপরিচালনা এবং শাসনের দায়িত্ব নিতে পারে। কাজেই রাজনীতি থেকে তাদের দূরে সরিয়ে রাখা যায় না।

    ছাত্রদের ব্রতঃ ‘ছাত্র’ শব্দটির অর্থ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় – যিনি গুরুর দোষ ছত্রের মতাে আচ্ছাদন করে রাখেন, তিনিই ছাত্র। ছাত্রদের কর্তব্য সম্বন্ধে আমাদের দেশে বহুকাল থেকে চলে আসছে একটি সুপ্রাচীন সংস্কৃত বাক্য – “ছাত্ৰাণাং অধ্যয়নং তপঃ”। অর্থাৎ ছাত্রদের অধ্যয়নই তপস্যা বা ব্রত। এখন প্রশ্ন হল এই, এই অধ্যয়ন কেমন হবেন ? একটি ছাত্র কি সারাদিন বই নিয়েই থাকবে, নাকি জীবনের সঙ্গে সামঞ্জস্য সাধিত হবে পড়াশুনার ? যদি সে তা না করে তা হলে তার জীবন মূল্যহীন হয়ে পড়বে। মানব চরিত্র বা মানব জীবন গঠনের পর্বে যদি একজন তরুণ বা তরুণী সমাজের দিক থেকে, জীবনের দিক থেকে, মানুষের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকে তা হলে বলা যায় সে স্বার্থপর, সে বৃহৎ জগতে বাঁচতে শিখেনি। সুতরাং আদর্শপূর্ণ হতে হলে সমাজের জন্য কিছু করার মনােভাব নিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। জীবনের যাবতীয় শিক্ষা গ্রহণের এটাই উপযুক্ত সময়।

    ছাত্রদের রাজনীতি-মনস্কামনাঃ বস্তুত দেশের প্রত্যেক নাগরিককেই রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া একান্ত প্রয়ােজন। ছাত্রসমাজও এর বাইরে থাকতে পারে না। সমাজ সচেতনতার অর্থ এই নয় যে, প্রত্যেকে কোন না কোন রাজনৈতিক দলে যোগদান করতে হবে। ‘পার্টি এবং পলিটিক্স’ শব্দ দুটি প্রায় সমার্থক হয়ে গেছে।এখন প্রয়োজন এই শব্দ দুটিকে ভিন্ন ভাবে প্রয়ােগ করা। রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন যে তাকে কোন না কোন পার্টিতে থাকতে হবে সে কথা ঠিক নয়। রাজনীতির মানসসিকতার সঙ্গে সততা, ন্যায়-নিষ্ঠা, ক্ষমা, সহমর্মিতা, উদারতা প্রভৃতি চারিত্রিক গুনাগুণও তরুণ তরুণীদের আয়ত্ত করা একান্ত প্রয়োজন

    দেশ গঠনে ছাত্রসমাজঃ একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে একটি ছাত্রকে অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে সচেতন হতে হবে। কেননা যুগে যুগে বিভিন্ন দেশের ইতিহাস প্রমাণ করে দিয়েছে যে ছাত্ররা দেশ গঠনের কাজে অংশ গ্রহন করলে সেটা তাকে প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করে। পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা গিয়েছে যে যেখানেই যে বিপ্লব বা স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছিল সেখানেই ছাত্ররা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনেেও মহাত্মা গান্ধীর আহ্বানে দলে দলে তরুণ-তরুণীরা স্কুল কলেজ ছেড়ে আন্দোলনে করতে উৎসাহিত হয়েছিল। অনেক সময় কোন কোন ছাত্র-ছাত্রীকে দেশের জন্য বলিদানও করতে হয়েছে তবে তাদের আত্ম বলিদান বিফল হয়নি।

    সঠিক রাজনৈতিক পথ অনুসরণঃ রাজনীতিতে ঝাপিয়ে পড়বার আগে ছাত্র-ছাত্রীদের যথেষ্ট পড়াশুনা করা উচিত। কোন্ পথে যাওয়া উচিত সে সম্পর্কে তার স্পষ্ট ধারণা থাকা উচিত। সচেতন রাজনীতি বােধ না থাকলে এই রাজনৈতিক জীবন উদ্দেশ্যহীন হয়ে যেতে পারে। রাজনীতির প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণ পর্ব যদি বিবেচনা প্রবণ না হয় তাহলে সেটা ভুল দিকে এগােবে। এতে কল্যাণের চেয়ে বেশি হবে অকল্যাণ। দলীয় সংকীর্ণ চিন্তা যেন তাকে কুপমণ্ডুক করে না রাখে। তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে কুপথে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। তারা অচিরেই তলিয়ে যাবে অনিশ্চিয়তা আর নৈরাশ্যের অন্ধকারে। ভুল রাজনৈতিক পথ অনেকের জীবনকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

    ছাত্রসমাজের উন্নতির জন্য ছাত্র সমাজকেই দায়ভার নিতে হবেঃ আজ কাল আমাদের দেশের বিভিন্ন বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যে ভাবে রাজনীতি নিয়ে বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে তা পূর্বে ছিল না। শিক্ষা লাভ করা অপেক্ষা অধিকার বােধ সম্বন্ধে ছাত্র-সমাজ আজ অধিকতর সচেতন। তাদের মধ্যে দলাদলি লেগেই আছে। প্রতি রাজনৈতিক দলের সাথে একটি করে ছাত্র সংগঠন জড়িত। তা ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য কেউ অগ্রসর হয়ে আসছে না। অতঅব ছাত্র সমাজের উন্নতির কল্পে ছাত্র সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে।

    উপসংহারঃ বর্তমান যুগে সমাজে নানাবিধ অবক্ষয়ের ফলে রাজনৈতিক দলগুলিও দলাদলি হানাহানিতে সর্বদাই আক্রান্ত। এই আক্রমণ অনেক সময় প্রভূত ক্ষতি সাধন করছে। যুগ পরিবেশের প্রভাবে ব্যাপক ছাত্র-সমাজ রাজনৈতিক বা রাজনৈতিক মনস্কামনা হারিয়ে ফেলেছে। এ দুটির কোনটিই কাম্য নয়। ছাত্ররসমাজ এসব অবক্ষয়কে কে দূর করে এই মানবসমাজকে আবার উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে–এই আশা সকলের । দেশের সুস্থ স্বাভাবিক সামঞ্জস্য পূর্ণ বিকাশ নির্ভর করছে ছাত্র সমাজেরই উপর। তারা প্রকৃত অর্থে রাজনৈতিকতা অর্জন করে দেশ গঠনে সাহায্যে করুক – এটাই বর্তমান প্রজন্মের আশা।

    See less
    • 0
  • 1
  • 2,182
  • 0
Answer
In: রচনা

শিক্ষা বিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রবন্ধ | Role of Mass Media in Education Essay in Bengali?

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 418 Answers
    • 14 Best Answers
    • 2,115 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on September 26, 2020 at 3:06 am

    শিক্ষাবিস্তারে গণমাধ্যমগুলির ভুমিকা : ভূমিকা – প্রাচীন ভারতে শিক্ষা ছিল মূলত গুরুকুলমুখী। গুরুদেব আশ্রমিক জীবনচর্যার মাধ্যমে ব্ৰহ্লাবিদ্যার পাশাপাশি ব্যবহারিক জীবনের শিক্ষা দানের উপযােগী করে ছাত্রকে পাঠ দিতেন – ক্রমশ কালের পরিবর্তনে সে শিক্ষা একদিন দূরীভূত হয়ে ইংরেজ শাসকদের আনুকুল্যে এদেশে বৃত্তিমুRead more

    শিক্ষাবিস্তারে গণমাধ্যমগুলির ভুমিকা :

    ভূমিকা – প্রাচীন ভারতে শিক্ষা ছিল মূলত গুরুকুলমুখী। গুরুদেব আশ্রমিক জীবনচর্যার মাধ্যমে ব্ৰহ্লাবিদ্যার পাশাপাশি ব্যবহারিক জীবনের শিক্ষা দানের উপযােগী করে ছাত্রকে পাঠ দিতেন – ক্রমশ কালের পরিবর্তনে সে শিক্ষা একদিন দূরীভূত হয়ে ইংরেজ শাসকদের আনুকুল্যে এদেশে বৃত্তিমুখী, চার দেয়ালের মধ্যে শুরু হয় সর্বাঙ্গীণ বিকাশের পরিবর্তে সংকীর্ণ প্রথাকেন্দ্রিক সীমাবদ্ধ এক আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা। দুশাে বছরের ব্রিটিশ শাসনের পরও এ শিক্ষাই আজও অনুসৃত হচ্ছে – অবশ্য যুগপ্রেক্ষিতের পরিবর্তনে লােকশিক্ষার প্রকৃতি ও পদ্ধতির পরিবর্তন শিক্ষাপ্রসারের ক্ষেত্রে সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের মত আধুনিক গণমাধ্যমগুলিকেও স্বীকৃতি দান করেছে।

    গণমাধ্যমের ভূমিকা – শিক্ষাবিস্তারে গণমাধ্যমগুলির ভুমিকা অতুলনীয় । গণমাধ্যমগুলি একাধারে যেমন শিক্ষাকে আকর্ষণীয় করে তােলে তেমনি সমাজ শিক্ষা তথা গণশিক্ষাও ঘটায়, তাই গণমানসকে উদ্দীপিত করে তােলার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়ােজন শিক্ষার জন্য গণমাধ্যমগুলির সঠিক ব্যবহার। ফলে এর বিষয়ভুক্তির দিকেও আমাদের নজর দেওয়া প্রয়ােজন – যেমন ভারতের অর্থনীতির কিভাবে উন্নয়ন সম্ভব, গ্রামােন্নয়নের পরিকল্পনা, সুস্বাস্থ্যের কর্মসূচী প্রভৃতি। তাই বলা যায় সঠিক গণশিক্ষার মাধ্যমে দেশের আপামর জনসাধারণের রুচি ও সঠিক শিক্ষার প্রসার ঘটানাে সম্ভব।

    সংবাদপত্র – সংবাদপত্র সমাজের সর্বস্তরের মানুষের বিবিধ বিষয়ে জ্ঞান লাভের অত্যন্ত সহজতর মাধ্যম। মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কারের ফলে সংবাদপত্রের ব্যবহার ও গ্রহণযোগ্যতা ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীর আনাচে কানাচে। বর্তমানে সংবাদপত্র গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ’ তথা জনমত গঠনের সেরা মাধ্যম হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। সংবাদপত্র থেকে সাধারণ মানুষ জাতীয় অর্থনীতি, রাজনীতি, খেলাধূলা, সংস্কৃতি প্রভৃতি বিষয়ে জ্ঞান যেমন লাভ করে তেমনি সমগ্র বিশ্বের সাম্প্রতিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতির ধারণাও জন্মায়। তাই একাধারে সংবাদপত্র এইসঙ্গে সংগঠক, শিক্ষক, জাতিগঠনে বা নেতৃত্বদানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

    রেডিও বা বেতার – গণমাধ্যমরূপে বেতার বা আকাশবাণীর ভূমিকাও কম নয়। এখন গ্রামাঞ্চলেও রেডিও প্রভৃতির প্রচলন ব্যাপকভাবে হয়েছে – এর মাধ্যমে কৃষিকাজের জন্য উপদেশ ও পরামর্শ, বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে চাষবাস প্রভৃতি বেশ আগ্রহের সৃষ্টি করেছে।

    চলচ্চিত্র – শিক্ষা বিস্তার ও সমাজ উন্নতির আর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম চলচ্চিত্র। রূপ ও গতির সংমিশ্রণ চলচ্চিত্র। মানুষ ইন্দ্রিয় উপভােগের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক পুষ্টির সুযােগ পেল চলচ্চিত্রর মাধ্যমে। বিশ্বের ভূগােল-ইতিহাস, পুরাতত্ত্ব-নৃতত্ত্ব ও বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সমাহারে এক একটি চলচ্চিত্র যে ভূমিকা পালন করে যা অজস্র গ্রন্থপাঠেও সম্ভব হয় না। এছাড়া সামাজিক ব্যাধি, অস্পৃশ্যতা, দলাদলির সংকীর্ণতার মত জটিল বিষয়গুলির উপর সচেতনতা আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

    দূরদর্শন – চলচ্চিত্রের মতােই দূরদর্শন বা টেলিভিশন দূরকে ‘নিকটবন্ধু’ করার সবচেয়ে শক্তিশালী একটি গণমাধ্যম।মানুষ তার ঘরে বসে জানতে পারে নানা অজানাকে, দেখতে পায় বিভিন্ন মনোরঞ্জন অনুষ্ঠান। একই সঙ্গে দূরদর্শন বহুমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত করে তােলে, কাজেই আধুনিকতম সংবাদের অতিদ্রুত পরিবেশনা তার অঙ্গ – একথা আজ সর্বজনস্বীকৃত।

    ইন্টারনেট – একবিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্টতম বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার হচ্ছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেটের আবিষ্কারের ফলে আমাদের জীবন হয়ে পড়েছে অনেক সহজ। শিক্ষা, বাণিজ্য থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজে আমরা ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে পড়েছি। ইন্টারনেট পুরো পৃথিবীকে এনে দিয়েছে হাতের মুঠোয়, শিক্ষা ব্যবস্থাকে করে তুলেছে সুলভ ও সহজ । ই মেইল, সামাজিক মাধ্যমের মত দ্রুত সেবার দরুন ইন্টারনেট বর্তমান যুগের সেরা গণমাধ্যম।

    উপসংহার – বিজ্ঞানের দ্রুত প্রসার আজ গণমাধ্যমগুলি একাধারে লােকশিক্ষা ও সমাজ শিক্ষায় দেশ ও জাতি তথা গােটা পৃথিবীকে স্বশিক্ষিত করে তুলছে। তবুও একথা ভুললে চলবে না যে, আজ যখন সমগ্র সমাজ অবক্ষয় ও নৈতিক শৈথিল্যে কবলিত এমত সময় দূরদর্শন, চলচ্চিত্র, সংবাদ পত্র সমস্ত অ্যালকেই অসাধু ব্যবসায়ী ও বানিজ্যিক সংস্থা রুচিহীন করে তাকে ব্যবহার করছে – একে যদি শক্ত হাতে দমন না করা যায় তাহলে ‘শিক্ষা’ নয় ‘অশিক্ষা বিস্তার হবে গণমাধ্যমগুলির প্রকৃত কাজ। এর জন্য চাই সরকারী নজরদারী, আর তা রুখতে পারে নৈতিক আদর্শ এবং গণমুখী শিক্ষাচিন্তা – যার প্রভাব পরবে গণমাধ্যমগুলির উপর এবং উপকৃত হবে সমগ্র বিশ্ব।

    See less
    • -3
  • 1
  • 24,199
  • 1
Answer
In: রচনা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা | Bangla Essay Sheikh Mujibur Rahman

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 418 Answers
    • 14 Best Answers
    • 2,115 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on September 26, 2020 at 10:40 am

    জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভূমিকাঃ বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি ভাষা-সৈনিক। তিনি জাতীর পিতা। বাঙালির অধিকার ও স্বতন্ত্র মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ভাষা-আন্দোলন থেকে শুরু করে এদেশের গণমানুষের মুক্তির জন্য পরিচালিত সকল আন্দোলনের তিনিই ছিলেন প্রধান চালিকাশক্তি। তাঁর নেতৃত্বেই ১৯৭১ সনেRead more

    জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

    ভূমিকাঃ বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি ভাষা-সৈনিক। তিনি জাতীর পিতা। বাঙালির অধিকার ও স্বতন্ত্র মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ভাষা-আন্দোলন থেকে শুরু করে এদেশের গণমানুষের মুক্তির জন্য পরিচালিত সকল আন্দোলনের তিনিই ছিলেন প্রধান চালিকাশক্তি। তাঁর নেতৃত্বেই ১৯৭১ সনে আমরা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছি এবং দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করেছি স্বাধীন বাংলাদেশে। তিনি বজ্রকণ্ঠের অধিকারী। তিনি সেই সৃষ্টি সুখের উল্লাসে কাঁপা মহান পুরুষ শেখ মুজিবুর রহমান। এ-জাতির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও আত্মত্যাগ চিরকাল স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে।

    জন্মঃ বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চের এক শুভক্ষণে গোপালগঞ্জ(সাবেক ফরিদপুর)জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহন করেন।

    পিতা-মাতাঃ বঙ্গবন্ধুর পিতা ছিলেন শেখ লুৎফর রহমান। মাতা ছিলেন সায়েরা খাতুন।

    শিক্ষাঃ বঙ্গবন্ধু ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন গোপালগঞ্জ মিশন হাই স্কুল থেকে। বিএ পাস করেন কলকাতার ইসলামিয়া কলেজ থেকে। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশাস্ত্র অধ্যায়ন করেন।

    পরোলোকগমনঃ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কতিপয় পাকিস্তানি সেনাসদস্যের আক্রমণে ও নিষ্ঠুর আঘাতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠবাঙালি, এ-জাতির প্রাণপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। টুঙ্গিপাড়ায় পারিবারিক গোরস্থানে তাকেঁ সমাধিত করা হয়।

    উপসংহারঃ জাতির মহান নেতা হতে হলে যে-সমস্ত গুণের প্রয়োজন বঙ্গবন্ধুর তার সবই ছিল। তিনি ছিলেন সাহসী ও স্বাধীনতাপ্রিয়। সকল প্রকার নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এবং অধিকার অর্জনের সংগ্রামেে আপোষহীন। কোনো প্রকার ভীতি কিংবা দ্বিধা তাঁকে কখনো বিচলিত করেনি। বাংলা ছিল তাঁর দেশ, বাংলা ছিল তাঁর ভাষা এবং তিনি নিজেকে বলতেন ‘আমি বাঙালি’। কবির ভাষায়- যতদিন রবে পদ্মা-যমুনা-গৌরী-মেঘনা বহমান ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান

    See less
    • 3
  • 1
  • 19,847
  • 0
Answer
In: রচনা

আসামের কুটির শিল্প রচনা | Cottage Industries of Assam essay in Bengali

  1. Nibedita Paul

    Nibedita Paul

    • India
    • 41 Questions
    • 153 Answers
    • 8 Best Answers
    • 677 Points
    View Profile
    Nibedita Paul
    Added an answer on August 20, 2020 at 6:29 pm

    আসামের কুটির শিল্প ভূমিকা : কুটির অর্থাৎ ঘর এবং ঘরের সদস্যের দ্বারা উৎপাদিত সামগ্রী ও শিল্পকে কুটির শিল্প বলে। কুটির শিল্পের দিক দিয়ে আসামের একটি গৌরবময় ঐতিহ্য আছে, আসামের মতাে রূপময় ও বিচিত্র সুন্দর কুটির শিল্প ভারতবর্ষে অদ্বিতীয় । যুগে যুগে আসামের কুটিরে নির্মিত সামগ্রী দেশ বিদেশের সৌন্দর্য পিপRead more

    আসামের কুটির শিল্প

    ভূমিকা : কুটির অর্থাৎ ঘর এবং ঘরের সদস্যের দ্বারা উৎপাদিত সামগ্রী ও শিল্পকে কুটির শিল্প বলে। কুটির শিল্পের দিক দিয়ে আসামের একটি গৌরবময় ঐতিহ্য আছে, আসামের মতাে রূপময় ও বিচিত্র সুন্দর কুটির শিল্প ভারতবর্ষে অদ্বিতীয় । যুগে যুগে আসামের কুটিরে নির্মিত সামগ্রী দেশ বিদেশের সৌন্দর্য পিপাসু নরনারীর মুগ্ধ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী আসামের মেয়েদের গৃহে প্রস্তুত বস্ত্রের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেছেন, তাহারা বস্ত্রের উপর রূপ কাহিনি রচনা করে।

    আসামের কুটির শিল্পের ঐতিহ্য : কুটির শিল্প আসামের একটি পুরনো সংস্কৃতি । কামরূপের রাজা কুমার ভাস্কর বর্মা তার মিত্র রাজা হর্ষবর্ধনকে আসামের পাটের বস্ত্র, কাঁসার বাসন, বাঁশের ফুলসাজি, হাতীর দাতের কারুকার্য খচিত শিল্প ইত্যাদি উপঢৌকন দিয়েছিলেন। তাছাড়াও ঐতিহাসিক তথ্য থেকে জানা যায় কোচ রাজা ও আহােম রাজাদের শাসনকালে কুটির শিল্পের প্রভূত উন্নতি হয়েছিল। দরং রাজবংশাবলী থেকে জানা যায় যে, মহারাজা নরনারায়ণ কামার-কুমার, ধাতু শিল্পী ও অন্যান্য শিল্পের কারিগরদের রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলেন।

    বস্ত্রবয়ন শিল্প : বস্ত্র শিল্প আসামের অন্যতম কুটির শিল্প । কুটিরজাত রেশমী ও কার্পাস বস্ত্রবয়নে স্ত্রীলােকদের ভূমিকাই প্রধান। আসামে তাতী সম্প্রদায় বলে কোন পৃথক জাতি নেই, শ্রেণি নির্বিশেষে সকলেই নিজেদের বস্ত্র প্রস্তুত করে। প্রতিটি গৃহেই একটি করে তাঁত রয়েছে। যে স্ত্রীলােক ভাল কাপড় বুনতে জানে, তার সমাদর সর্বত্র। আসামে সাধারণত এণ্ডি’ ও ‘মুগা’ এই দুই শ্রেণির রেশমী বস্ত্রই কুটির শিল্প হিসাবে উৎপন্ন হয়। অসমীয়া নারীরা ‘মেখলা’, ‘রিহা’, ‘মুগা’ ইত্যাদি পরিধান করে।

    মৃৎপাত্র নির্মাণ শিল্প : মৃৎপাত্র ইত্যাদি নির্মাণও আসামের কুটির শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। রােজদিনের গৃহকর্মের জন্য হাঁড়ি, কলসী, মটকি, থালা ইত্যাদি এবং গৃহসজ্জার জন্য ফুলদানি, শৌখিন দ্রব্যাদি গ্রামাঞ্চলের কারিগরগণ মাটি দিয়ে অতি সুচারুরূপে প্রস্তুত করে।

    বেত, বাঁশ ও তালপাতার কাজ : বেত, বাঁশ, তালপাতা ইত্যাদির দ্বারা গ্রামাঞ্চলের জনসাধারণ নানাবিধ নিত্য প্রয়ােজনীয় জিনিস প্রস্তুত করে থাকে। বেত, বাশ ও তালপাতা দিয়ে ঝুড়ি, বাক্স নানাবিধ পাখা ইত্যাদি তৈরি হয়। মুর্তা নামক এক জাতীয় উদ্ভিদ দিয়ে শীতল পাটিও তৈয়ার করা হয়। ‘জাপি’ নামক তালপাতা দিয়ে তিরী এক প্রকার টুপি মাথায় দিয়ে আসামের কৃষকগণ তীব্র রৌদ্র কিরণ হতে আত্মরক্ষা করে। এককালে জাপি পরিধান সামাজিক প্রতিষ্ঠার নিদর্শন রূপে পরিগণিত ছিল । এখনও তাঁর প্রচলন দেখতে পাওয়া যায় ।

    কুটির শিল্পের বর্তমান অবস্থা : বর্তমানে আসামে যে সব কুটির শিল্প রয়েছে সেগুলির মধ্যে তাঁত শিল্প, মৃৎ শিল্প বা বাঁশবেতের কাজ, রূপ শিল্প ছাড়াও কাঠের কাজ, কাসা-পিতলের বাসন তৈরিও উল্লেখযােগ্য। কাঠের শিল্পীরা কাঠ দিয়ে তৈরি করে নৌকা, খাট-পালঙ্ক, টেবিল, আলমারি, ঘরের দরজা-জানালা ইত্যাদি। কামার তৈরি করে দা-কুড়াল, খন্তি, ঝাটা, শরতা ইত্যাদি। কিন্তু যুগের প্রভাবে এসব জিনিসের ব্যবহার কমে আসছে।

    কুটির শিল্পের অবনতির কারণ : কুটির শিল্পের অবনতির অন্যতম কারণ নতুন প্রযুক্তির আবিষ্কার। আধুনিক যুগের লােকের রুচিও পরিবর্তন হচ্ছে। তারা যন্ত্রশিল্পের উৎপাদিত সামগ্রী ব্যবহারে অধিক আগ্রহী। কাচামালের যােগানও দুর্মূল্য, শিল্পীর আর্থিক দুরবস্থা এবং তরুণ প্রজন্মের পিতৃপুরুষের বৃত্তি অবলম্বনে অনীহা কুটির শিল্পের অবনতির অন্যতম কারণ। সর্বোপরি প্রচারের অভাবে শিল্পসুন্দর কুটির শিল্পজাত সামগ্রী সর্বভারতীয় বাজার ধরতে পারছে না।

    কুটির শিল্পের উন্নতির উপায় : কুটির শিল্পের উন্নতির জন্য এর আধুনিকীকরণ একান্ত প্রয়ােজন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কাঁসা শিল্পে ‘রােলার মেশিন ব্যবহার করতে পারলে শ্রম ও সময় দুই-ই বাঁচানাে যায়। ছােটখাটো বৈদ্যুতিক যন্ত্রাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। এজন্য সরকারি উদ্যোগে শিল্পী-কারিগরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়ােজন। মৃৎ শিল্পজাত দ্রব্যাদি আধুনিক রুচি সম্মত করতে পারলে শহুরে লােকদের চাহিদা মেটানাে যায়। সমবায় সমিতি স্থাপন করে মূলধন সংগ্রহ করা যেতে পারে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় কাসা-পিতল-লােহা ও রেশম শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। ভারতের প্রতিটি রাজ্যে সরকারি উদ্যোগে বিপননের ব্যবস্থা করতে পারলে অতি ফল পাওয়া যাবে। শিক্ষিত যুবকেরা যদি চাকরির জন্য হা-হুতাশ না করে কুটির শিল্পের ব্যবসায়ে নিযুক্ত হন তবে নিশ্চয়ই লাভবান হবেন।

    উপসংহার : কুটির শিল্প শিল্পীর নান্দনিক সৃষ্টি। শিল্পীরা যে দক্ষতা, কল্পনা ও শ্রম নিয়ােগ করেন অর্থের মূল্যে তার পরিমাপ হয় না। কুটির শিল্পকে যথাযােগ্য মর্যাদা ও উন্নতির সন্ধান দিতে চাই সরকার ও সমবায় মানুষের প্রচেষ্টা । তাদের প্রচারের আলােয় আনতে পারলে শিল্পীর আর্থিক দুর্দশা যেমন ঘুচবে তৈমনি তিনি পারেন শিল্প সৃষ্টির অনির্বাচনীয় তৃপ্তি।

    See less
    • 1
  • 1
  • 5,260
  • 0
Answer
In: রচনা

রচনা : শিশু শ্রম | Child Labour Paragraph in Bengali?

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 418 Answers
    • 14 Best Answers
    • 2,115 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on July 18, 2020 at 9:50 pm

    শিশুশ্রম সূচনাঃ মানব জীবনের প্রথম পর্যায় হলো শৈশব। আর শৈশবই হল মানব জীবনের অন্যতম অধ্যায়। প্রত্যক্ষ দৃষ্টিতে একটি শিশুকে নির্ভরশীল বলে মনে হলেও কিন্তু একটি দেশের ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে ওই দেশের শিশুদের উপর। তাই ইংরেজিতে একটি প্রবাদ বাক্য আছে "today's child is tomorrow's citizen" অর্থাৎ আজকের শিশু কালকেরRead more

    শিশুশ্রম

    সূচনাঃ মানব জীবনের প্রথম পর্যায় হলো শৈশব। আর শৈশবই হল মানব জীবনের অন্যতম অধ্যায়। প্রত্যক্ষ দৃষ্টিতে একটি শিশুকে নির্ভরশীল বলে মনে হলেও কিন্তু একটি দেশের ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে ওই দেশের শিশুদের উপর। তাই ইংরেজিতে একটি প্রবাদ বাক্য আছে “today’s child is tomorrow’s citizen” অর্থাৎ আজকের শিশু কালকের নাগরিক। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত প্রত্যেকটি শিশু প্রাথমিক সুযোগ সুবিধা, শিক্ষা ইত্যাদি পায় না। ওরা শিকার হয় বিভিন্ন অপব্যবহারের। আর তার মধ্যে অন্যতম একটি অপব্যবহার হল শিশুশ্রম।

    শিশুশ্রমের সংজ্ঞাঃ
    যে কোনো কাজ যা একটি শিশুর মর্যাদা, সম্ভাবনা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তার শৈশব থেকে কেঁড়ে নেয় তাকে শিশুশ্রম বলা হয়। বা যে কোন কাজ যা একটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ব্যাহত ঘটায় তাকে শিশুশ্রম বলা হয়।
    আমাদের দেশে সরকারি নির্দেশমতে ১৪ বছর ‌বয়সের অনূর্ধ্ব ছেলেমেয়েরা শিশু হিসেবে গণ্য। তাই ১৪ বছরের নিচের কোন শিশুকে দিয়ে যে কোনো কোথাও কাজ বা শ্রম নেওয়া শিশুশ্রম হিসাবে গণ্য হয়।

    শিশুশ্রমের কারণঃ
    শিশুদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করার অন্যতম কারণ গুলির মধ্যে অর্থনৈতিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কারণ পরিলক্ষিত হয়। আমাদের দেশের একটি অন্যতম অংশ দরিদ্র শ্রেণীর। তাই পরিবারের অসচ্ছলতা দরিদ্রতা এবং উপার্জনকারী সদস্যের অকাল মৃত্যু একটি শিশুকে অল্প বয়সে কাজে নিযুক্ত হতে বাধ্য করে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিশুর পরিবারের শিক্ষা সম্পর্কে অসচেতনতা, অর্থের মোহ, অভিভাবকদের নৃশংস আচরণ একটি শিশুকে শ্রমজীবী হতে বাধ্য করে। তাছাড়াও সামাজিক বিপর্যয়, সাম্প্রদায়িকতা এবং অন্যান্য নানা কারণে শিশুরা অল্প বয়সেই শ্রমে লিপ্ত হয়।

    রচনা : শিশু শ্রম | Child Labour Paragraph in Bengali

    ভারতবর্ষে শিশুশ্রমঃ
    বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশসমূহের বিভিন্ন উৎপাদন ক্ষেত্রে থাকা শ্রমিক গোষ্ঠীর মধ্যে এক উল্লেখযোগ্য অংশ হলো “শিশু শ্রমিক” । এবং দুর্ভাগ্যক্রমে বিশ্বের মধ্যে ভারতেশিশু শ্রমিকের সংখ্যা সব থেকে বেশি। তবে ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দায়ী দারিদ্রতা, সামাজিক সুরক্ষাঁর অভাব ও দুর্বল অর্থনীতি। যার ফলে আজ লক্ষ লক্ষ শিশু‌ বিভিন্ন উৎপাদন ক্ষেত্র থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ, পারিবারিক কাজ, মোটর গ্যারেজে শ্রম এর জন্য বাধ্য।

    শিশুশ্রমের নেতিবাচক প্রভাবঃ
    শিশুশ্রম একটি অমানবিক কাজ। একটি শিশুর প্রকৃত ভাবে বেড়ে ওঠার সময় তাকে কাজের জন্য ঠেলে দেওয়া তার শৈশব কে কেড়ে নেয়া মোটেই কাম্য নয়। শিশুশ্রম এর ফলে একটি শিশুর দৈহিক মানসিক দুটো ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেয়। একদিকে অনুপযুক্ত পরিবেশে কাজ করার দরুন তাকে রোগাক্রান্ত হতে হয় অন্যদিকে তারা ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া বিশ্রাম না করায় অপুষ্টি ও রক্তশূন্যতায় ভোগে। এবং কাজের চাপে শিশুর মন ভারাক্রান্ত হয় ওরা জীবনের প্রথম ধাপেই ভেঙে উঠে। যার ফলে একটি শিশুর ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়।

    শিশুশ্রম নিবারণে সরকারি আইন সামাজিক দায়বদ্ধতাঃ
    পৃথিবী ব্যাপী বিভিন্ন দেশে শিশুশ্রমিকদের মুক্তির লক্ষ্যে বিভিন্ন আইন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ভারত সরকার ও সমাজের অবহেলিত এবং শোষিত শিশু শ্রমিকদের কথা লক্ষ্য করে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করেছে। ভারতে আইন অনুযাযশিত১৪ বছরের নিচে থাকা কোন শিশুকে কারখানায়, বা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োগ অবৈধ ও আইনত দণ্ডনীয়। তাছাড়াও শিশুদের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন নিয়ম নীতি ও পরিকল্পনা সরকার হাতে নিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় সরকারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আজ সমাজের শিশুশ্রম সেই হিসাবে রাস পায়নি।
    তাই শিশুশ্রম সমূলে নিবারণ করতে হলে দরকার শিক্ষার প্রসার, সচেতনতা এবং দরিদ্র শ্রেণীর সামাজিক ও আর্থিক সুরক্ষা। এতে প্রয়োজন সরকারি এবং স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি।

    উপসংহারঃ
    শিশুশ্রম একটি সামাজিক সমস্যা এবং কুপ্রথা। তাই এর দূরীকরণ সরকার এবং সমাজকে মূল দায়িত্ব হিসাবে গ্রহণ করা উচিত।

    See less
    • 2
  • 1
  • 16,650
  • 0
Answer
In: রচনা

আমাদের বিদ্যালয় অনুচ্ছেদ (ছোটদের জন্য) Amader vidyalaya Paragraph in Bengali?

  1. Nibedita Paul

    Nibedita Paul

    • India
    • 41 Questions
    • 153 Answers
    • 8 Best Answers
    • 677 Points
    View Profile
    Best Answer
    Nibedita Paul
    Added an answer on July 8, 2020 at 6:43 pm

    আমার বিদ্যালয় বা আমাদের বিদ্যালয়ঃ আমাদের বিদ্যালয়ের নাম বিদ্যাভবন স্কুল। ইহা কলকাতার বেহালা এলাকায় অবস্থিত। আমাদের বিদ্যালয়টি অনেক বড়। আমাদের বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্ররা পড়াশোনা করে। আমাদের বিদ্যালয় সকাল আটটায় আরম্ভ হয় এবং দুপুর দুইটায় ছুটি হয়। আমাদের বিদ্যালযRead more

    আমার বিদ্যালয় বা আমাদের বিদ্যালয়ঃ

    আমাদের বিদ্যালয়ের নাম বিদ্যাভবন স্কুল। ইহা কলকাতার বেহালা এলাকায় অবস্থিত। আমাদের বিদ্যালয়টি অনেক বড়। আমাদের বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্ররা পড়াশোনা করে। আমাদের বিদ্যালয় সকাল আটটায় আরম্ভ হয় এবং দুপুর দুইটায় ছুটি হয়। আমাদের বিদ্যালয় ভবনটি সাদা রঙ্গের এবং দুই তলা বিশিষ্ট। বিদ্যালয়ের সামনে আছে একটি খেলার মাঠ ও একটি ফুলের বাগান। বিরতির সময় আমরা সবাই এই মাঠে খেলাধুলা করি। আমাদের বিদ্যালয় অনেক শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন। তারা আমাদেরকে খুব স্নেহ করেন। আমাদের বিদ্যালয়ে বিভিন্ন দিবসে বিভিন্ন উৎসব পালিত হয়। আমরা সবাই এইসব উৎসবে অংশগ্রহণ করি। আমরা সবাই আমাদের বিদ্যালয় কে ভালবাসি।

    See less
    • 2
  • 1
  • 26,141
  • 0
Answer
In: রচনা

আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রচনা | Natural Beauty of Assam Essay in Bengali Language?

  1. Nibedita Paul

    Nibedita Paul

    • India
    • 41 Questions
    • 153 Answers
    • 8 Best Answers
    • 677 Points
    View Profile
    Nibedita Paul
    Added an answer on May 24, 2020 at 1:57 am

    আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভূমিকা : আসাম প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন। তার দিকে দিকে নানা রাঙা পাখির কাকলি, নানা রাঙা ফুলের গন্ধবাহার। প্রকৃতি দেবী যেন নিজহাতে তার সমস্ত সৌন্দর্য ভাণ্ডার এই আসাম ভূমিতে উজাড় করে দিয়েছেন। এ রাজ্য পাহাড়-পর্বত বেষ্টিত একটি অতি মনােরম রাজ্য। অনেকের মতে সৌন্দরRead more

    আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

    ভূমিকা : আসাম প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন। তার দিকে দিকে নানা রাঙা পাখির কাকলি, নানা রাঙা ফুলের গন্ধবাহার। প্রকৃতি দেবী যেন নিজহাতে তার সমস্ত সৌন্দর্য ভাণ্ডার এই আসাম ভূমিতে উজাড় করে দিয়েছেন। এ রাজ্য পাহাড়-পর্বত বেষ্টিত একটি অতি মনােরম রাজ্য। অনেকের মতে সৌন্দর্যে ‘সম’ বা সমান বা সমকক্ষ নেই বলে এই দেশের নাম অসম। আর অসম হতেই এই দেশের নাম হয়েছে আসাম। আসামের নিসর্গ প্রকৃতি নাগরিক জীবন যন্ত্রণায় ক্লান্ত-ক্লিষ্ট মানুষকে অপার প্রশান্তি এনে দেয়।

    প্রকৃতি ভেদে আসামের সৌন্দর্য : ভারতের উত্তর পূর্ব প্রান্তের রাজ্যটি যেন কোন দেবকন্যার কণ্ঠমালা থেকে খসে-পড়া কারুকার্য খচিত একখণ্ড পান্না। সবুজ-শ্যামলে রজত-ঔজ্জ্বল্যে নিসর্গ সুন্দরী সত্যই অপরূপা। রাজ্যটির উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা ও তার শাখা-প্রশাখা, ছােট-বড় পাহাড়-পর্বত যেন শিরের শােভা মুকুট রাজি। পুর্বদিকে পাতকোই ও দক্ষিণে মেঘালয়ের পর্বতমালা নীলাভ মেঘসজ্জার মতাে শােভা পাচ্ছে। শ্যামল বনরাজি নীলার মেখলা পরিহিতা আসাম যেন এক বনমালা।
    আসামের মধ্যাংশ কাৰ্বিমালভূমি, মেঘালয় মালভূমি ও দাক্ষিণাত্য মালভূমির অংশ বিশেষ। এই অঞ্চলটি অতি প্রাচীন ও রূপান্তরিত আগ্নেয় শিলা দ্বারা গঠিত। কার্বি মালভূমিকে স্পর্শ করে দক্ষিণ পর্যন্ত রয়েছে উত্তর কাছাড়ের পাহাড়ী অঞ্চল। এই পাহাড় সমূহ স্তরীভূত শিলার ঢেউ খেলানাে পাহাড়। কবির ভাষায় ব্রহ্মপুত্র নদ তার কণ্ঠহার আর বরাক নদী হলাে কটি দেশের কিংকিনী। এই নদী দুটির অসংখ্য উপনদী, শাখানদী নৃত্য পরা অপ্সরার মতাে কলতান তুলে বয়ে চলেছে। শ্যামল-গহন বনানীর রহস্যময়তা ও স্নিগ্ধতা সৌন্দর্য-পিয়াসী মানুষকে পত্রমর্মরে আমন্ত্রণ জানায়। নদীর বুকে সাদা পাল তুলে নৌকা চলে কোন অচিনপরে, মাঝির কণ্ঠে ভাটিয়ালি গানের উদাসী সুর। তাছাড়া নদীগুলি রাজ্যটিকে কৃষির উপযুক্ত ও উর্বর করে তুলেছে। সত্যই সুজলা, সুফলা শস্য-শ্যামলা ব্ৰহ্মপুত্র-বরাকের এই পূণ্য তীরভূমিতে যেন নয়নদুটি শ্যামরূপে বন্দী হয়ে রসলীন ভ্রমরের ন্যায় নিশ্চল হয়ে যায়।

    প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নানা উপাদান : আসাম রাজ্যটির ৩৫ শতাংশ স্থান জুড়ে রয়েছে বন-জঙ্গল ও গভীর অরণ্য। এসব জঙ্গলে হলং, বনচাম, শাল, সেগুন, সুন্দী, সােনারু প্রভৃতি মূল্যবান কাঠ ও গাছ রয়েছে। স্থানে স্থানে রয়েছে অসংখ্য খাল, বিল ও তৃণ প্রান্তর। নাম না জানা জলাশয়ের বুকে বিকশিত পদ্ম-শালুকের বর্ণবাহার। ইতস্ততঃ ছড়ানাে পত্রপুঞ্জের মতাে সবুজ বন। মাথার উপরে উন্মুক্ত আকাশ, আকাশে চন্দ্র-সূর্যের উদয় ও অস্ত যাওয়ার শােভা, মেঘমালার স্বচ্ছন্দ বিচরণ। অন্ধকার রাত্রে ঝােপে-ঝাড়ে জ্বলে জোনাকির দীপ।

    পশুপাখির সৌন্দর্য বর্ধন : আসামের বনজঙ্গলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ধিত করে প্রকৃতির ক্রোড়ে লালিত জীবজন্তুর স্বচ্ছন্দ বিহার। এগুলির মধ্যে হাতী, গণ্ডার, বন্য মহিষ, বাঘ, ভালুক, হরিণ, বানর প্রভৃতি উল্লেখযােগ্য জন্তু। আসামের কাজিরাঙ্গার একশিং বিশিষ্ট গণ্ডার পৃথিবী বিখ্যাত। নানা প্রকার দুর্লভ পাখিও আসামে পাওয়া যায়। যার মধ্যে আছে, ময়না, টিয়া, তােতা, শকুন ও ধনেশ প্রভৃতি পাখি। বনফুল ঘিরে ভ্রমরের গুঞ্জন, চলমান পাহাড়ের মতাে হাতির পাল ইত্যাদি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেরই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

    প্রকৃতি ও মানুষ : নির্জন প্রকৃতির একটি স্বতন্ত্র সৌন্দর্য অবশ্যই আছে। কিন্তু মানুষের সুচিন্তিত সুপরিকল্পিত হস্তস্পর্শে সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সুন্দরতর হয়ে উঠে। এভাবে হস্তস্পর্শে তৈরি আসামের চা বাগানগুলি অপূর্ব শােভার আধার। পূর্ব আসামের প্রায় সমস্ত অঞ্চল জুড়ে চায়ের ঘন সবুজ ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’ নিসর্গ শােভাতে অপরিমেয় সৌন্দর্যের সঞ্চার করে। টিলার উপর নির্মিত ঘর-বাড়িতে বৈদ্যুতিক আলােক মালা যেন নিজ দীপাবলীর আলােক সজ্জা। সবুজ তরুলতা বেষ্টিত ছায়া সুনিবিড় গ্রামগুলিও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অঙ্গীভূত।

    ঋতুভেদে আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য : ঋতুর পর ঋতু একে একে এখানে এসে নিজেকে সৌন্দর্য শােভায় মেলে ধরে। বিভিন্ন ঋতুতে প্রকৃতি দেবী বিভিন্ন সাজে সজ্জিতা হন। গ্রীষ্মে লাল, হলুদ, শিরীষ ফুলে আসামের দেহ ঢাকে, বর্ষায় কদম ফুল ফোটে আর পাহাড়ী নদীর রূপালী ধারা চঞ্চল নৃত্যে নেমে আসে ঝরঝর ঝমঝম্‌ শব্দে। শরতের আগমনে ঝিলে ঝিলে প্রস্ফুটিত হয় কমল। রাজহাঁসেরা ঝাকে ঝাকে উড়ে চলে মানস সরােবরের দিকে। হেমন্তের আগমনে উপত্যকায় ধানক্ষেতের হরিৎ শােভা সত্যই মনােমুগ্ধ কর বাতাসের দোলা খেয়ে তারা সমুদ্রের ঢেউয়ের মতাে উচু-নিচু হতে থাকে। শীতে লাের্ধ ও কাশ জাতীয় শুভ্র ফুলের অমলিন হাসিতে সমস্ত পাহাড়, বন, আকাশ প্রভৃতি শ্বেত শােভায় সজ্জিত হয়। এই নয়নাভিরাম শােভা বাস্তবিকই বিচিত্র। আর বসন্তকালের তাে কথাই নেই। কোকিলের সুমধুর কুজন যেন প্রকৃতি দেবীর নবরূপ ও রাগ গ্রহণের কথাই ঘােষণা করে।

    উপসংহার : প্রাচীনকালে প্রবাদ ছিল কামরূপ অর্থাৎ অসম ইন্দ্রজালের মাজ, এখানে প্রকৃতি দেবীর অভিনব আকর্ষণ। আকুল করা সৌন্দর্যে নারী-পুরুষ পঞ্চলেই উন্মাদ হয়ে পড়ে। আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অভিভূত হয়ে জাতির জনক হাত্মা গান্ধী বলেছিলেন মনমােহন আসামের অধিবাসী সকলেই কবিতা রচনা করতে সেলু।’ অর্থাৎ কাব্য সুষমা বিজড়িত আসামের প্রকৃতি ও তার বিভিন্ন ঋতুর সৌন্দর্যরাশি অবর্ণনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আসাম সত্যই অ-সম অর্থাৎ অপ্রতিদ্বন্দ্বী।

    See less
    • 1
  • 2
  • 13,157
  • 0
Answer
Load More Questions

Sidebar

আরও দেখুন

  • শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষার গুরুত্ব রচনা
  • সমাজসেবা ও ছাত্রসমাজ রচনা | Essay on Social Work and Students
  • ছাত্র সমাজ ও রাজনীতি রচনা | Student and Politics Essay
  • শিক্ষা বিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রবন্ধ | Role of Mass Media in Education Essay in Bengali?
  • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা | Bangla Essay Sheikh Mujibur Rahman
  • আসামের কুটির শিল্প রচনা | Cottage Industries of Assam essay in Bengali
  • রচনা : শিশু শ্রম | Child Labour Paragraph in Bengali?
  • আমাদের বিদ্যালয় অনুচ্ছেদ (ছোটদের জন্য) Amader vidyalaya Paragraph in Bengali?
  • আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রচনা | Natural Beauty of Assam Essay in Bengali Language?
  • আসামের প্রাকৃতিক সম্পদ রচনা | Natural resources of assam essay in bengali language?
  • রচনাঃ অসমের বন্যা ও তার প্রতিকার | Flood in Assam Essay in Bengali?
  • রচনাঃ ভয়ংকর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় | Prakritik Biporjoy Essay in Bengali?
  • রচনাঃ জাতীয় সংহতি ও বিচ্ছিন্নতাবাদ | Jatiya Sanhati Essay in Bengali or National Integration Essay in Bengali?
  • রচনা : একটি পাখির আত্মকথা | Autobiography of a Bird in Bengali
  • রচনা : বনভোজন | Bengali essay on Picnic for School student?
  • রচনা : শিক্ষা মূলক ভ্রমণ | Shikha mulok bhraman essay in Bengali
  • রচনা : দেশ ভ্রমণ | Essay on Travelling in Bengali for school student?
  • সংকিপ্ত রচনা : কুকুর | Short Essay on Dog in Bengali
  • রচনা : আমার মা | Amar Maa Bengali Essay for school student?
  • রচনা : একটি গাছ একটি প্রাণ | One tree one life paragraph in Bengali
Join us on Telegram
Join our FaceBook Group

বিষয়

All Bangla Paragraph (105) Bangla GK (177) Bangla Kobita (203) Bangla Rachana (105) Bengali Meaning (259) Bengali Poems (124) English to Bengali Meaning (270) English to Bengali Translation (256) Kobita (143) অনুচ্ছেদ (127) বাংলা অর্থ (275) বাংলা কবিতা (219) বাংলা বাক্য রচনা (176) বাংলা রচনা (127) বাক্য রচনা (176)

Footer

© 2020 Bengali Forum · All rights reserved. Contact Us

Add Bengali Forum to your Homescreen!

Add