আঠারো বছর বয়স কবিতার সারমর্ম | Atharo Bochor Boyosh Poem Summary in Bengali?
Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.
জিজ্ঞেস করুন আপনার যে কোনো প্রশ্ন আর যুক্ত থাকুন সবসময়
Create A New Account
Hridoy
সারমর্ম:
‘ছাড়পত্র’ কাব্যগ্রন্থের ‘আঠারাে বছর বয়স’ কবিতায় কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য ‘আঠারাে’কে কৈশাের ও যৌবনের বয়ঃসন্ধির প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন। পরাধীন, যুদ্ধ-দাঙ্গা-দুর্ভিক্ষ পীড়িত বঙ্গ তথা ভারতীয় সমাজে আঠারাে এক প্রথা ভাঙ্গা বিস্ময়। কবি আঠারাের চরিত্র ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণে আঠারাে বছর বয়েসের নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলাে খুঁজে পেয়েছেন –
১) আঠারাে বছর বয়স দুঃসহ, ২) মাথা তােলার ঝুঁকি নেবার স্পর্ধাদীপ্ত, ৩) দুঃসাহসী, ৪) নির্ভীক, ৫) অসম্ভবকে সম্ভব করতে চায়, ৬) তীব্র আত্মমর্যাদা সম্পন্ন, ৭) ভেঙে পড়তে জানে না, ৮) জীবনের সঙ্গে জীবনকে মেলাতে জানে, ৯) অন্তরশক্তিতে বলীয়ান, ১০) দেশের সমাজের কল্যানে আত্মােৎসর্গ করতে বা অন্যায়কারীকে বধ করতে সদা প্রস্তুত, ১১) অপ্রতিরােধ্য, সমস্ত প্রতিবন্ধতাকে চূর্ণ করে দিতে চায়, ১২) প্রতিকূলতায় নত হয় না, ১৩) বিপদের মুখে এগিয়ে যায়, ১৪) নতুনের পন্থী, ১৫) সংশয়, দ্বিধাহীন প্রাণে সর্বদা এগিয়ে চলার বাসনা।
পরাধীন ভারতের দ্বন্দ্ব-দাঙ্গা-হতাশা-অবক্ষয় পীড়িত সময়ে কবি কিশাের সুকান্ত আঠারাের মধ্যে খুঁজে পেয়েছেন নতুন জীবনস্পন্দ। কৈশােরের কোমল, স্বপ্নময়তা আর যৌবনের উদ্দাম, নির্ভীক, দুঃসাহসীপনার সংযােগ আঠারাে। যৌবরাজ্যে অভিষেকের আনন্দে সে মাথা তােলার ঝুঁকি নেয়, অসম্ভবকে সম্ভব করতে ব্রতী হয়, আত্মমর্যাদায় মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। কান্না তার কাছে অগৌরবের প্রতীক হয়ে ওঠে। সুগভীর প্রাণশক্তি তাকে বৃহত্তর জীবনের সঙ্গে যুক্ত করে।
কাজ করতে গিয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আঠারাে দেশ-সমাজমানুষের কল্যানমঙ্গলহিত সাধনে আত্মােৎসর্গ করতে যেমন পিছপা হয় না, তেমনই প্রয়ােজনে অপকারীর বিনাশেও সে দ্বিধাহীন।আঠারােই আগামী তাই আঠারাের কানে কতশত মন্ত্রণা আসে। আত্মকে সনাক্ত না করতে পারার যন্ত্রণাদীর্ণ আঠারাে অপ্রতিরােধ্য। সময়ের বুকে সে তােলে পরিবর্তনের ঝড়। কিন্তু অনভিজ্ঞতা অন্তরায় হয়। ফলে প্রতিকূলতায় সে ক্ষতবিক্ষত হয়, হয় লক্ষ্যচ্যুত। যৌবনের উদ্দামতা তাকে এগিয়ে নিয়েছিলাে অন্তরের কৈশাের কোমলতা এই ব্যর্থতায় বেদনাগ্রস্ত করতে থাকে তাকে। সাময়িকভাবে হতাশাচ্ছন্নও হয় সে।
এই কঠোর-কোমলের সমন্বয়ই আঠারাে। আঠারাের হতাশা, স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা বেদনাতুর হওয়া স্বত্তেও আঠারাের জয়ধ্বনি শােনেন কবি। পরাধীন ভারতের দুঃসহ পটভূমিতে আঠারােই তাে ত্রাণ । কেননা আঠারাে প্রতিকূলতায় বিনষ্ট হয় না, বিপদে বুক বেঁধে এগােয়। সর্বদা নতুনের পন্থী আঠারাে লক্ষ্যপথে এগােতে ভয় পায় না। সবচেয়ে বড়াে কথা তারা যা করে যতটুকু করে নির্ভয়ে, সাহসের সঙ্গে, সংশয়হীনভাবে করে। তাই আত্মসংকটদীর্ণ, বহুধাবিভক্ত পরাধীন ভারতবাসীর মধ্যে কবি সুকান্ত আঠারাের বৈশিষ্ট্যগুলাে অনাবিল, স্বতঃস্ফূর্ত বিকাশ পাওয়ার কামনা করেছেন।