বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি কবিতাটি কবি জীবননানন্দ দাশের ‘রূপসী বাংলা কাব্য গ্রন্থের অন্তর্গত। এই কবিতাগুলি ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে কবি রচনা করেন।কবিতা গুলিতে বাংলার সঙ্গে কবির মনের বা আত্মার সম্পর্কের চিত্র ভেসে উঠেছে। কবি নিজে এই কবিতাগুলি সম্পর্কে লিখেছেন, “এরা প্রত্যেকে আলাদা-আলাদা স্বতন্ত্র সত্তার মতাে নয় কেউ, অপরপক্ষে সার্বিক বােধে এক শরীরী গ্রাম বাংলার আলুলায়িত প্রতিবেশ, প্রসূতির মতাে ব্যক্তিগত হয়েও পরিপুরকের মতাে পরস্পর নির্ভর।”
সারমর্ম
কবি বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের মধ্যে বিশ্বের রুপ দেখতে পেয়েছেন। তাই পৃথিবীর রূপ-বৈচিত্রের প্রতি তার কোন মােহ নেই। ভােরের অন্ধকারে জেগে উঠে তিনি দেখেছেন, ডুমুরের বড়াে পাতা যেন ছাতার মতাে বিছিয়ে রয়েছে, আর তার নিচে বসে আছে ভােরের দোয়েল পাখি। এ যেন তার শান্তির নীড়। জাম, বট, কাঠাল, হিজল, অশ্বথ গাছের দল নীরবে সে দিকে তাকিয়ে আছে। ফণীমনসার ঝোপে, শটিবনে তাদের ছায়া পড়েছে। কবির মানসলােকে ফুটে উঠেছে অতীতকালের এক ছবি। তাঁর মনে হয়েছে চম্পক নগরের চাদ সদাগর যখন তাঁর সাতটি মধুকর ডিঙা নিয়ে বাজি করতে যেতেন, তখন বাংলার এই স্নিগ্ধ সৌন্দর্য্য তাঁর চিত্তে এনে দিত গভীর প্রশান্তি। আবার যেদিন গভীর অন্ধকার রাতে বেহুলা মৃত স্বামী লখীন্দরকে ভেলায় ভাসিয়ে গাঙুড়ের জলে চলেছিল, সেদিন কৃষ্ণা দ্বাদশীর স্নান জ্যোৎস্নায় সােনালি ধানের পাশে এমনই অসংখ্য বটগাছ দেখেছিল। শ্যামা পাখির নরম গান শুনে তার চিত্ত বেদনার্ত হয়েছিল। তারপর একদিন ইন্দ্রের সভায় গিয়ে ছিন্ন খঞ্জনা পাখির মতো যখন বেহুলা নেচেছিল, তখন বাংলার নদী, মাঠ, ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতাে তার দুঃখে কাতর হয়ে তার পায়ে পায়ে কেঁদে উঠেছিল।
Hridoy
সারাংশ – বাংলার মুখ
কবিতা সম্মন্ধে:
বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি কবিতাটি কবি জীবননানন্দ দাশের ‘রূপসী বাংলা কাব্য গ্রন্থের অন্তর্গত। এই কবিতাগুলি ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে কবি রচনা করেন।কবিতা গুলিতে বাংলার সঙ্গে কবির মনের বা আত্মার সম্পর্কের চিত্র ভেসে উঠেছে। কবি নিজে এই কবিতাগুলি সম্পর্কে লিখেছেন, “এরা প্রত্যেকে আলাদা-আলাদা স্বতন্ত্র সত্তার মতাে নয় কেউ, অপরপক্ষে সার্বিক বােধে এক শরীরী গ্রাম বাংলার আলুলায়িত প্রতিবেশ, প্রসূতির মতাে ব্যক্তিগত হয়েও পরিপুরকের মতাে পরস্পর নির্ভর।”
সারমর্ম
কবি বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের মধ্যে বিশ্বের রুপ দেখতে পেয়েছেন। তাই পৃথিবীর রূপ-বৈচিত্রের প্রতি তার কোন মােহ নেই। ভােরের অন্ধকারে জেগে উঠে তিনি দেখেছেন, ডুমুরের বড়াে পাতা যেন ছাতার মতাে বিছিয়ে রয়েছে, আর তার নিচে বসে আছে ভােরের দোয়েল পাখি। এ যেন তার শান্তির নীড়। জাম, বট, কাঠাল, হিজল, অশ্বথ গাছের দল নীরবে সে দিকে তাকিয়ে আছে। ফণীমনসার ঝোপে, শটিবনে তাদের ছায়া পড়েছে। কবির মানসলােকে ফুটে উঠেছে অতীতকালের এক ছবি। তাঁর মনে হয়েছে চম্পক নগরের চাদ সদাগর যখন তাঁর সাতটি মধুকর ডিঙা নিয়ে বাজি করতে যেতেন, তখন বাংলার এই স্নিগ্ধ সৌন্দর্য্য তাঁর চিত্তে এনে দিত গভীর প্রশান্তি। আবার যেদিন গভীর অন্ধকার রাতে বেহুলা মৃত স্বামী লখীন্দরকে ভেলায় ভাসিয়ে গাঙুড়ের জলে চলেছিল, সেদিন কৃষ্ণা দ্বাদশীর স্নান জ্যোৎস্নায় সােনালি ধানের পাশে এমনই অসংখ্য বটগাছ দেখেছিল। শ্যামা পাখির নরম গান শুনে তার চিত্ত বেদনার্ত হয়েছিল। তারপর একদিন ইন্দ্রের সভায় গিয়ে ছিন্ন খঞ্জনা পাখির মতো যখন বেহুলা নেচেছিল, তখন বাংলার নদী, মাঠ, ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতাে তার দুঃখে কাতর হয়ে তার পায়ে পায়ে কেঁদে উঠেছিল।