স্বচ্ছ ভারত অভিযান | bengali essay on swachh bharat abhiyan
Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.
জিজ্ঞেস করুন আপনার যে কোনো প্রশ্ন আর যুক্ত থাকুন সবসময়
Create A New Account
Hridoy
স্বচ্ছ ভারত অভিযান
ভূমিকা: স্বচ্ছ ভারত অভিযান ভারত সরকারের প্রচলিত একটি জাতীয় প্রকল্প ।এই প্রকল্পের অধীনে দেশের ৪০৪১টি শহরের সড়ক এবং পরিকাঠামোকে পরিষ্করণের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ২রা অক্টোবর নূতন দিল্লির রাজঘাট সমাধি পরিসরে এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়, যেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দ্বারা এই প্রকল্পের শুভাৰম্ভ হয় । সেই দিন এই প্রকল্পকে রূপায়িত করতে দেশের প্রায় ত্রিশ লক্ষ সরকারি কর্মচারী এবং ছাত্ররা অংশগ্রহণ করেন।
আবশ্যকতা : ইহা নির্দ্বিধায় শিকার করা যায় যে স্বচ্ছতার দিক দিয়ে ভারত অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলি থেকে অনেক পিছিয়ে । ভারত বর্ষ একটি পুরনো সভ্য সংস্কৃতির দেশ হওয়া সত্ত্বেও ভারতবর্ষের নাগরিক স্বচ্ছতার দিক দিয়ে অনেকটাই উদ্বেগহীন। আর এই উদ্যোগ হীনতা ই নিত্যদিন বয়ে আনছে নানান রোগ ও ব্যাদি। তাই বৃহত্তর ভারতীয় নাগরিকদের সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে আরম্ভ হয় এই গণআন্দোলন। চারিদিক স্বচ্ছ রাখা এবং স্বচ্ছ করা এই গণআন্দোলনের একমাত্র লক্ষ।
স্বচ্ছতার উপরে উল্লেখযোগ্য সাবেক প্রয়াস : ভারতবর্ষে সর্বপ্রথম ১৯৫৪ সালে স্বচ্ছতার প্রোগ্রাম চালানো হয়। পরে ১৯৮৬ সেন্ট্রাল সেন্ট্রাল রুবেল স্যানিটেশন প্রোগ্রাম নামে একটি প্রোগ্রাম চালিত হয়। এবং সর্বশেষ ১৯১২ সালে কংগ্রেস সরকার নির্মল ভারত অভিযান নামে একটি প্রোগ্রাম চালায়। যদিও নির্মল ভারতের আওতায় কয়েকটি বিশেষ এলাকা এবং সীমিত বিষয়বস্তুকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, এবং এর ফলাফল খুব একটা সুদূরপ্রসারি হয়ে উঠতে পারেনি। তাই এই নির্মল ভারত অভিযান কে ২০১৪ সালে আবার স্বচ্ছ ভারত অভিযান নামে আরম্ভ করা হয়।
স্বচ্ছ ভারত অভিযানের তাৎপর্য: মহাত্মা গান্ধী যে ভারতবর্ষের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা শুধুমাত্র ক্ষমতার হস্তান্তর ছিলনা। তিনি চেয়েছিলেন বিদেশি শক্তির উৎখাতের সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত ভেদাভেদ এবং নোংরামির উৎখাত। তাই মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন উপলক্ষে ২০১৪ সালে এই গণ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে পরিচ্ছন্ন অস্বাস্থ্যকর ভারতের যে স্বপ্ন গান্ধী দেখেছিলেন তা পূরণ করার লক্ষ্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
স্বচ্ছ ভারত অভিযানের বিভিন্ন প্রকল্প ও কার্যকলাপ: স্বচ্ছ ভারত অভিযানে ব্যক্তিগত শৌচাগার, গোষ্ঠী শৌচাগার নির্মাণ ও কঠিন বর্জ্য পরিচালন ব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া হয়। গ্রামাঞ্চলে আবার মানুষের ব্যবহারিক আচরণ বদলানোর লক্ষ্যে মুখোমুখী কথাবার্তার মাধ্যমে মানুষকে বোঝানোর কাজ চলছে। এছাড়া, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত প্রকল্প রূপায়ণ ও পরিষেবা প্রদান ব্যবস্থাকে জোরদার করা হয়ে । শৌচাগার নির্মাণের জন্য উৎসাহ প্রদান বাবদ অর্থ সাহায্যের পরিমাণ ২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার টাকা করা হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে কঠিন ও তরল বর্জ্য পরিচালনের জন্যও অর্থ প্রদান করা হচ্ছে। সারা দেশে নাগরিকরা যেসব পরিচ্ছন্নতার কাজ করেছেন, তা তুলে ধরতে, স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অঙ্গ হিসেবে MycleanIndiaনামে একটি পোর্টালও চালু করা হয়েছে।
প্রভাব ও প্রসার: এই উদ্যোগে অংশগ্রহণের অনুরোধ স্বচ্ছতা অভিযান এক জাতীয় আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। স্বচ্ছ ভারত আন্দোলনের মাধ্যমে দেশবাসীর মধ্যে এক ধরনের দায়িত্ববোধের সঞ্চার হয়েছে।সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ পরিচ্ছন্নতার গণআন্দোলনে এগিয়ে এসে যুক্ত হয়েছেন। এই মহান উদ্যোগে সরকারি কর্মকর্তা থেকে জওয়ান, বলিউডের অভিনেতা থেকে ক্রীড়াবিদ, শিল্পপতি থেকে ধর্মীয় নেতা সকলেই যুক্ত হয়েছেন। সারা দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ দিনের পর দিন বিভিন্ন সরকারি বিভাগ, অসরকারি সংগঠন এবং স্থানীয় গোষ্ঠীগুলি কেন্দ্রের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগে যুক্ত হয়েছেন। সারা দেশ জুড়ে ঘন ঘন পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে প্রচার কর্মসূচিতে নাটক ও সঙ্গীতের মাধ্যমে ব্যাপক ভিত্তিতে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রচার সংগঠিত হচ্ছে।
বলিউডের খ্যাতনামা চিত্রতারকা থেকে শুরু করে টেলিভিশনের অভিনেতারা এগিয়ে এসে এই পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। অমিতাভ বচ্চন, আমির খান, কৈলাশ খের, প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মতো বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা এগিয়ে এসেছেন । শচীন তেন্ডুলকর, সানিয়া মির্জা, সাইনা নেহওয়াল এবং মেরীকমের মতো বহু বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদদের স্বচ্ছ ভারত অভিযানে অবদান বিশেষভাবে প্রশংসনীয়।