তুমি আমার জীবন সাথী Singer- Sonu Nigam & Alka Yagnik Movie-Bidhatar Lekha তুমি আমার জীবন সাথী তোমায় আমি ভালোবাসি তুমি আমার সূর্যসোনা তুমি যে চাঁদের হাসি তুমি আমার জীবন সাথী তোমায় আমি ভালোবাসি তুমি আমার সূর্যসোনা তুমি যে চাঁদের হাসি সারা জীবন এই মন তোমার প্রেমেতে চায় আরো যে পাগল হতে তুমি এত কাছেRead more
তুমি আমার জীবন সাথী
Singer- Sonu Nigam & Alka Yagnik
Movie-Bidhatar Lekha
তুমি আমার জীবন সাথী
তোমায় আমি ভালোবাসি
তুমি আমার সূর্যসোনা
তুমি যে চাঁদের হাসি
তুমি আমার জীবন সাথী
তোমায় আমি ভালোবাসি
তুমি আমার সূর্যসোনা
তুমি যে চাঁদের হাসি
সারা জীবন এই মন
তোমার প্রেমেতে
চায় আরো যে পাগল হতে
তুমি এত কাছে
তবু কেন মন
চায় আরো যে কাছে পেতে
দু’চোখ ভরে আজ তোমায় দেখি
তবু যে স্বাদ মেটে না
তুমি আমার জীবন সাথী
তোমায় আমি ভালোবাসি
তুমি আমার সূর্যসোনা
তুমি যে চাঁদের হাসি
কতো স্বপ্ন জমানো চোখের পাতায়
শুধু যে তোমায় ঘিরে
ওগো তোমায় সাথে নিয়ে
দেখবো দু’জনে
সেই স্বপ্নকে নতুন করে
হা… এতো ভালোবাসে
তোমাকে মন
তবু যে মন মানে না
তুমি আমার জীবন সাথী
তোমায় আমি ভালোবাসি
তুমি আমার সূর্যসোনা
তুমি যে চাঁদের হাসি
তুমি আমার জীবন সাথী
তোমায় আমি ভালোবাসি
তুমি আমার সূর্যসোনা
তুমি যে চাঁদের হাসি
English Translation:
You are my soulmate
Singer- Sonu Nigam & Alka Yagnik
You are my soulmate
I love you
You are my sunshine
You are the bright moon
You are my soulmate
I love you
You are my sunshine
You are the bright moon
My heart throughout the life
Wants to become mad
In your love.
You are so close
Still my heart
Wants to be more closer.
I see you toady with both of my open eyes
But still it is unsatisfied.
You are my soulmate
I love you
You are my sunshine
You are the bright moon
How many dreams have been saved in those eyes!
Only around you
Oh My love, we will see those dreams again
Together.
Yes.. That much
I love you
Still my heart doesn’t stop.
You are my soulmate
I love you
You are my sunshine
You are the bright moon
You are my soulmate
I love you
You are my sunshine
You are the bright moon
Asleep In The Valley উপত্যকাতে ঘুমন্ত অবস্থায় A small green valley where a slow stream flows (small-ছোট্ট, valley-উপত্যকা, slow-মন্থর stream-জলধারা, flows- প্রবাহিত) ছোট্ট একটি সবুজ উপত্যকা যেখানে প্রবাহিত হয়েছে মন্থর জলধারা And leaves long strands of silver on the bright (leaves-গাছের পাতা, strRead more
Asleep In The Valley
উপত্যকাতে ঘুমন্ত অবস্থায়
A small green valley where a slow stream flows (small-ছোট্ট, valley-উপত্যকা, slow-মন্থর stream-জলধারা, flows- প্রবাহিত) ছোট্ট একটি সবুজ উপত্যকা যেখানে প্রবাহিত হয়েছে মন্থর জলধারা
And leaves long strands of silver on the bright (leaves-গাছের পাতা, strands-তীরভূমি or তীর, silver-রুপালি, bright-সুন্দর) এবং গাছের পাতা গুলি পড়ে রয়েছে তার ই লম্বা রুপালি তীরে সুন্দর ঘাসের উপরে।
Grass; from the mountaintop stream the Sun’s (mountaintop-পাহাড়ের চূড়া, stream-প্রবাহিত হত্তয়া/নেমে আসা) সূর্য রশ্মি নেমে আসছে পাহাড়ের চূড়া থেকে।
Rays; they fill the hollow full of light. (Rays-রশ্মি, fill-পরিপূর্ণ করা, hollow-ফাঁকা জায়গা, full of light-আলোকিত করা) ওই সূর্য রশ্মি গুলি আলোকিত করে দিচ্ছে ফাঁকা জায়গাগুলোকে।
A soldier, very young, lies open-mouthed, (soldier-সৈনিক, young-তরুন, lies-শুয়ে থাকা, open-mouthed-উন্মুক্ত মুখে ) একজন তরুন সৈনিক শুয়ে পড়ে আছে মুখ উন্মুক্ত করে।
A pillow made of fern beneath his head, (pillow-বালিশ, made-তৈরি, fern-লতা পাতা, beneath-নিচে, head-মাথা) তার মাথার নিচে রয়েছে লতা পাতা দিয়ে তৈরি একটি বালিশ।
Asleep; stretched in the heavy undergrowth, (Asleep-নিদ্রায় আচ্ছন্ন/ঘুমন্ত , stretched-প্রসারিত হয়ে, undergrowth-লতাগুল্মের জঙ্গল/ঝোপ) সে প্রসারিত হয়ে নিদ্রায় আচ্ছন্ন একটি ঝোপের মধ্যে।
Pale in his warm, green, sun-soaked bed. (Pale-বিবর্ণ, warm-উষ্ণ , sun-soaked-সূর্য সিক্ত) তার রঙ হয়ে গেছে বিবর্ণ, উষ্ণ সবুজ আর সূর্য সিক্ত বিছানায় শুয়ে শুয়ে।
His feet among the flowers, he sleeps. His smile (feet-পায়ের পাতা, among-মধ্যে, flowers-ফুল, sleeps-শুয়ে থাকা/নিদ্রা) তার পায়ের পাতা গুলি রয়েছে ফুলের মধ্যে, সে নিদ্রায় আচ্ছন্ন। তার হাসি
Is like an infant’s – gentle, without guile. (infant-শিশু, like- মতো, gentle-মৃদু, without guile-ছলনাহীন) একটি শিশুর মতো- মৃদু, ছলনাহীন
Ah, Nature, keep him warm; he may catch cold.
(Ah-হে, Nature-প্রকৃতি, warm-উষ্ণ, keep-করে রাখা, catch-লেগে যাওয়া, cold-ঠান্ডা) হে প্রকৃতি, তাকে রাখ উষ্ণ করে; তার ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
The humming insects don’t disturb his rest; (humming-গুঁজনকর, insects-পতঙ্গ, disturb- ব্যাঘাত, rest-বিশ্রাম) পতঙ্গ গুঞ্জনে তার ঘুমে যাতে কোন ব্যাঘাত না ঘটে।
He sleeps in sunlight, one hand on his breast; (sunlight-সূর্যের আলো, breast-বক্ষ, hand-হাত) সে ঘুমন্ত সূর্যের আলোয়, একটি হাত তার বক্ষের উপরে
At peace. In his side there are two red holes. (At peace-শান্তিতে, side-পাশে, red-লাল, holes-গর্ত) নিবিড় শান্তিতে। তার শরীরের দুইপাশে রয়েছে দুটি লাল গর্ত।
ব্যাখ্যা:
কবি Arthur Rimbaud এই কবিতাটিকে তরুণ এক সৈনিক কে কেন্দ্র করে রচনা করেছেন। তরুণ সেই সৈনিক কোন যুদ্ধে আহত হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে সুন্দর একটি উপত্যকায়।
কবিতার শুরুতেই কবি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা উল্লেখ করেছেন। একটি চিরহরিৎ সবুজ উপত্যকা যেখানে রয়েছে ছোট্ট মন্থর জলধারা। চারিদিকে নিবিড় শান্ত পরিবেশ, ছোট্ট সেই নদীর জলধারা থেকে সোনালী আভা পড়েছে তীরের ঘাসের উপর। সূর্যরশ্মিতে চারিদিকে আলোর ছড়াছড়ি।
আর তারই মধ্যে এক তরুন সৈনিক মুখ উন্মুক্ত অবস্থায় শুয়ে পড়ে আছে। মনে হচ্ছে সে গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন। তার মাথার নিচের লতা পাতা গুলি বালিশের মত দেখতে মনে হচ্ছে। কিন্তু সূর্য সিক্ত সবুজ ঘাসের উপরে শুয়ে শুয়ে তার শরীরের রং বিবর্ণ। তার পায়ের পাতা গুলি রয়েছে ফুলের মধ্যে, দেখে মনে হচ্ছে ছোট্ট একটি নিষ্পাপ শিশু, গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন, যার হাসি মৃদু ও ছলনাহীন।
তাই কবি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন যেন তিনি তাহার খেয়াল রাখেন তার জন্য ঠান্ডা লেগে না যায়। কোন পতঙ্গের গুঞ্জনে যেন তার ঘুম ভেঙে না যায়।
এবং সবশেষে কবি বলছেন যে সূর্যের আলোয় তার দুই হাত বুকের উপরে রেখে নিবিড় শান্তিতে সে ঘুমন্ত। এবং তার দুই পাশে দুইটি লাল গর্ত। অর্থাৎ সে গুলিবিদ্ধ, বুলেটের গুলি গর্ত করে দিয়েছে তার শরীরে। অর্থাৎ সে আর বেঁচে নেই।
বাংলা-টাংলা - অপূর্ব দত্ত অ্যানুয়ালের রেজাল্ট হাতে বাড়ি ফিরল ছেলে মা বলল—কোন পেপারে কত নাম্বার পেলে ? হিস্ট্রিতে মম, এইটি ফোর, ম্যাথসে নাইন জিরাে, মা বলল—ফ্যান্টাস্টিক, জাস্ট লাইক এ হিরাে। সায়েন্সে ড্যাড, নট সাে ফেয়ার, ওনলি সিক্সটি নাইন, ইংলিশে জাস্ট নাইনটি টু, অলটুগেদার ফাইন। জিয়ােগ্রাফির পেপাRead more
বাংলা-টাংলা – অপূর্ব দত্ত
অ্যানুয়ালের রেজাল্ট হাতে বাড়ি ফিরল ছেলে
মা বলল—কোন পেপারে কত নাম্বার পেলে ?
হিস্ট্রিতে মম, এইটি ফোর, ম্যাথসে নাইন জিরাে,
মা বলল—ফ্যান্টাস্টিক, জাস্ট লাইক এ হিরাে।
সায়েন্সে ড্যাড, নট সাে ফেয়ার, ওনলি সিক্সটি নাইন,
ইংলিশে জাস্ট নাইনটি টু, অলটুগেদার ফাইন।
জিয়ােগ্রাফির পেপারে তাে হান্ড্রেডে হান্ড্রেড,
ডুবিয়ে দিল বেংগলিটা ভেরি পুয়াের গ্রেড।
ছেলের মাথায় হাত রেখে মা ঠোট বেঁকিয়ে বলে –
নেভার মাইন্ড, বেংগলিটা না শিখলেও চলে।
বাবা বলল–বেশ বলেছ বঙ্গমাতার কন্যে,
বাংলা-টাংলা আমার মতাে অশিক্ষিতের জন্যে।
বিদ্যাসাগর রবীন্দ্রনাথ নেহাৎ ছিলেন বােকা,
না হলে কেউ শখ করে হয় বাংলা বইয়ের পােকা?
মা বলল—চুপ করাে তাে, ওর ফল্টটা কিসে
স্কুলে কেন বেংগলিটা পড়ায় না ইংলিশে ?
In English font:
Bangla Tangla
Annual r result hate bari ferlo chele
Maa bollo-Kuno paper e koto number pele?
History te Mom, Eighty four, maths e nine zero,
Maa bollo-fantastic Just like a hero.
Science e dad not so fair, Only sixty nine,
English e just ninety two, Altogether fine.
geographyr paper to hundred e hundred
Dubiye dilo Bengali ta very poor grade.
Cheler mathay haat rekhe Maa thut bekiye bole-
Never mind, Bengali ta na shikleo chole.
Baba bollo-besh bolecho bongomatar konna,
bangla tangla amar moto oshikkiter jone
Vidyashagar Rabindranath nehat chilen buka,
na hole keu shokh kore hoy bangla boier puka?
Maa bollo, Chup kara to, Or fault ta kishe
School e keno Bengali ta poray na English e?
On the Grasshopper and Cricket BY JOHN KEATS দেওয়া থাকবে প্রত্যেক লাইনের অনুবাদ ব্যাখ্যা শব্দার্থ The Poetry of earth is never dead: পৃথিবীর কবিতার কোনো মৃত্যু নেই When all the birds are faint with the hot sun, যখন সূর্যের প্রখর তাপে সমস্ত পাখিরা নিস্তেজ হয়ে পড়ে And hide in cooling trees, a vRead more
On the Grasshopper and Cricket
BY JOHN KEATS
দেওয়া থাকবে
প্রত্যেক লাইনের অনুবাদ
ব্যাখ্যা
শব্দার্থ
The Poetry of earth is never dead:
পৃথিবীর কবিতার কোনো মৃত্যু নেই
When all the birds are faint with the hot sun,
যখন সূর্যের প্রখর তাপে সমস্ত পাখিরা নিস্তেজ হয়ে পড়ে
And hide in cooling trees, a voice will run
এবং আশ্রয় নে গাছের শীতল ছায়ায় , একটি আওয়াজ ভেসে উঠে
From hedge to hedge about the new-mown mead;
সদ্য কাটা সবুজ ছোট্ট ঝোপের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে
That is the Grasshopper’s—he takes the lead
এটা হল ঘাসফড়িংয়ের স্বর – সে ই এগিয়ে আসে
In summer luxury,—he has never done
গ্রীস্মকালকে সুন্দর আর বিলাসবহুল করে তুলতে – সে কখনো থেমে যায় না
With his delights; for when tired out with fun
তার আমোদ প্রমোদ চলতে থাকে ; ফুর্তি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে
He rests at ease beneath some pleasant weed.
সে বিশ্রাম নেয় শান্ত কোনো আগাছার নিচে।
The poetry of earth is ceasing never:
পৃথিবীর কবিতার কোনো অন্ত নেই
On a lone winter evening, when the frost
কোনো এক একাকী শীতের সন্ধ্যায় – যখন তুষারপাত
Has wrought a silence, from the stove there shrills
নিয়ে আসে নিঃস্তব্ধতা , চুল্লি থেকে ভেসে উঠে উগ্র আওয়াজ
The Cricket’s song, in warmth increasing ever,
তা ই হল ঝিঝি পোকার গান, এই বেড়ে উঠা উষ্ণতা
And seems to one in drowsiness half lost,
কোনো তন্দ্রাচ্ছন্ন অবচেতন মানুষের কাছে মনে হয়
The Grasshopper’s among some grassy hills.
ওটা ঘাসফড়িংয়ের গান ভেসে আসছে কোনো তৃণাবৃত পাহাড় থেকে।
ব্যাখ্যা:
The poetry of the earth কবিতাটি লিখেছেন ইংরেজ কবি John Keats। কবিতাটির মূল বিষয়বস্তু আমাদের পৃথিবী। যদিও কবিতাটির ব্যাখ্যা বিভিন্ন ভাবে করা যায়। সাহিত্যগত অর্থে বললে poetry of the earth বুঝায় বিভিন্ন শব্দ যেগুলো আমরা প্রকৃতিতে পেয়ে থাকি। তা হতে পারে কোন পাখির অথবা কোন জন্তুর কিংবা অন্য কোন প্রাণীর। এইসব প্রাকৃতিক শব্দের মাধ্যমে এই পৃথিবী আমাদের সঙ্গে কথা বলে, যোগাযোগ স্থাপন করে। তাই বলা যায় poetry of the earth মানে পৃথিবীর ভাষা এবং তার সৌন্দর্যতা ও মাধুর্যতা।
কবি এখানে সেই প্রাকৃতিক ভাষার সৌন্দর্যতাকে আর মাধুর্যতাকে তুলে ধরেছেন। তার মতে পৃথিবীর সৌন্দর্য তার কোন শেষ নেই কোন মৃত্যু নেই। পাখির ডাক প্রখর সূর্যের মধ্যে শুনতে না পেলেও আমরা শুনতে পাই ঘাসফড়িং এর গান। প্রকৃতির আওয়াজ দিনকে করে চলে মনমুগ্ধকর। এমনকি শীতের দিনেও যখন তুষারপাতে চারিদিক নিস্তব্ধ হয়ে যায় তখন আমাদের কানে ভেসে ওঠে ঝিঁঝিঁ পোকার গান। এবং তা আলোড়িত করে তোলে আমাদের অবচেতন আত্মাকে। তাই কবি বলেছেন পৃথিবীর সৌন্দর্যতা, প্রকৃতির মাধুর্যতা অন্তহীন।
ছন্নছাড়া অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া — আঁকাবাঁকা শুকনো কতকগুলি কাঠির কঙ্কাল শূন্যের দিকে এলোমেলো তুলে দেওয়া, রুক্ষ রুষ্ট রিক্ত জীর্ণ লতা নেই পাতা নেই ছায়া নেই ছাল-বাকল নেই নেই কোথাও এক আঁচড় সবুজের প্রতিশ্রুতি এক বিন্দু সরসের সম্ভাবনা । ওই পথ দিয়ে জRead more
ছন্নছাড়া
অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত
গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে
গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া —
আঁকাবাঁকা শুকনো কতকগুলি কাঠির কঙ্কাল
শূন্যের দিকে এলোমেলো তুলে দেওয়া,
রুক্ষ রুষ্ট রিক্ত জীর্ণ
লতা নেই পাতা নেই ছায়া নেই ছাল-বাকল নেই
নেই কোথাও এক আঁচড় সবুজের প্রতিশ্রুতি
এক বিন্দু সরসের সম্ভাবনা ।
ওই পথ দিয়ে
জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি ক’রে ।
ড্রাইভার বললে, ওদিকে যাব না ।
দেখছেন না ছন্নছাড়া ক’টা বেকার ছোকরা
রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে–
চোঙা প্যান্ট, চোখা জুতো, রোখা মেজাজ, ঠোকা কপাল–
ওখান দিয়ে গেলেই গাড়ি থামিয়ে লিফট চাইবে,
বলবে, হাওয়া খাওয়ান ।
ওরা কারা ?
চেনেন না ওদের ?
ওরা বিরাট এক নৈরাজ্যের –এক নেই রাজ্যের বাসিন্দে ।
ওদের কিছু নেই
ভিটে নেই ভিত নেই রীতি নেই নীতি নেই
আইন নেই কানুন নেই বিনয় নেই ভদ্রতা নেই
শ্লীলতা-শালীনতা নেই ।
ঘেঁষবেন না ওদের কাছে ।
কেন নেই ?
ওরা যে নেই রাজ্যের বাসিন্দে–
ওদের জন্যে কলেজে সিট নেই
অফিসে চাকরি নেই
কারখানায় কাজ নেই
ট্রামে-বাসে জায়গা নেই
মেলায়-খেলায় টিকিট নেই
হাসপাতালে বেড নেই
বাড়িতে ঘর নেই
খেলবার মাঠ নেই
অনুসরণ করবার নেতা নেই
প্রেরণা-জাগানো প্রেম নেই
ওদের প্রতি সম্ভাষণে কারু দরদ নেই–
ঘরে-বাইরে উদাহরণ যা আছে
তা ক্ষুধাহরণের সুধাক্ষরণের উদাহরণ নয়,
তা সুধাহরণের ক্ষুধাভরণের উদাহরণ–
শুধু নিজের দিকে ঝোল- টানা ।
এক ছিল মধ্যবিত্ত বাড়ির এক চিলতে ফালতু এক রক
তাও দিয়েছে লোপট ক’রে ।
তাই এখন পথে এসে দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে ।
কোথ্বকে আসছে সেই অতীতের স্মৃতি নেই ।
কোথায় দাঁড়িয়ে আছে সেই বর্তমানের গতি নেই
কোথায় চলেছে নেই সেই ভবিষ্যতের ঠিকানা ।
আমি বললুম, না ওদিক দিয়েই যাব,
ওখান দিয়েই আমার শর্টকাট ।
ওদের কাছাকাছি হতেই মুখ বাড়িয়ে
জিজ্ঞেস করলুম,
তোমাদের ট্যাক্ সি লাগবে ? লিফট চাই ?
আরে এই তো ট্যাক্ সি, এই তো ট্যাক্ সি, লে হালুয়া
সোল্লাসে চেঁচিয়ে উঠল ওরা
সিটি দিয়ে উঠল
পেয়ে গেছি পেয়ে গেছি চল পানসি বেলঘরিয়া ।
তিন-তিনটে ছোকরা উঠে পড়ল ট্যাক্ সীতে,
বললুম কদ্দুর যাবে ।
এই কাছেই । ওই দেখতে পাচ্ছেন না ভিড় ?
সিনেমা না, জলসা না, নয় কোনো ফিল্মি তারকার অভ্যর্থনা ।
একটা নিরীহ লোক গাড়িচাপা পড়েছে,
চাপা দিয়ে গাড়িটা উধাও–
আমাদের দলের কয়েকজন গাড়িটার পিছে ধাওয়া করেছে
আমরা খালি ট্যাক্ সি খুঁজছি ।
কে সে লোক ?
একটা বেওয়ারিশ ভিখিরি ।
রক্তে-মাংসে দলা পাকিয়ে গেছে ।
ওর কেউ নেই কিছু নেই
শোবার জন্য ফুটপাথ আছে তো মাথার উপরে ছাদ নেই,
ভিক্ষার জন্য পাত্র একটা আছে তো
তার মধ্যে প্রকান্ড একটা ফুটো ।
রক্তে মাখামাখি সেই দলা-পাকানো ভিখিরিকে
ওরা পাঁজাকোলা করে ট্যাক্ সির মধ্যে তুলে নিল ।
চেঁচিয়ে উঠল সমস্বরে –আনন্দে ঝংকৃত হয়ে–
প্রাণ আছে, এখনো প্রাণ আছে ।
রক্তের দাগ থেকে আমার ভব্যতা ও শালীনতাকে বাঁচাতে গিয়ে
আমি নেমে পড়লুম তাড়াতাড়ি ।
তারপর সহসা শহরের সমস্ত কর্কশে-কঠিনে
সিমেন্টে-কংক্রিটে ।
ইটে-কাঠে-পিচে-পাথরে দেয়ালে-দেয়ালে
বেজে উঠল এক দুর্বার উচ্চারণ
এক প্রত্যয়ের তপ্ত শঙ্খধ্বনি–
প্রাণ আছে, এখনো প্রাণ আছে
সমস্ত বাধা-নিষেধের বাইরেও
আছে অস্তিত্বের অধিকার ।
ফিরে আসতেই দেখি
গলির মোড়ে গাছের সেই শুকনো বৈরাগ্য বিদীর্ণ ক’রে
বেরিয়ে পড়েছে হাজার-হাজার সোনালি কচি পাতা
মর্মরিত হচ্ছে বাতাসে,
দেখতে দেখতে গুচ্ছে গুচ্ছে উথলে উঠছে ফুল
ঢেলে দিয়েছে বুকের সুগন্ধ,
উড়ে এসেছে রঙ-বেরঙের পাখি
শুরু করেছে কলকন্ঠের কাকলি,
ধীরে ধীরে ঘন পত্রপুঞ্জে ফেলেছে স্নেহার্দ্র দীর্ঘছায়া
যেন কোনো শ্যামল আত্মীয়তা ।
অবিশ্বাস্য চোখে চেয়ে দেখলুম
কঠোরের প্রচ্ছন্নে মাধুর্যের বিস্তীর্ণ আয়োজন ।
প্রাণ আছে, প্রাণ আছে– শুধু প্রাণই আশ্চর্য সম্পদ
এক ক্ষয়হীন আশা
এক মৃত্যুহীন মর্যাদা ।
English Transliteration:
Chonnochara
Galir more ekta gach dariye
Gach na gacher pretocchya-
Akabaka shukno katakguli kathir konkal
shunner dike elomelo tule dewa,
Rukkho, rusto rikto jirno
lata nei pata nei chaya nei chal bakol nei
Nei kuthao ek aachor shabujer protisruti
Ek bindu shorosher shombabhona
Oi poth diye
jaruri dorkare jacchilam taxi kore.
Dekhchen na choinnochara kota bekar chukra
rastar majkhane dariye adda dicche
Chonga pant, chokha joto, Rukha mejaj, thoka kopal-
Okhan diye gelei gari thamiye lift chaibe,
Bolbe, hawa khawan.
Ora kara?
Chenen na oder?
Ora birat ek noirajjer-ek nei rajjer bashinde.
Oder kichu nei
Vite nei vit nei riti nei niti nei
Aain nei kanun nei binoy nei vodrota nei
Shlilota-shalinota nei.
Gheshben na oder kache.
Keno nei?
Ora je nei rajjer bashinde-
Oder jonno college e seat nei
Office e chakri nei
Karkhanay kaj nei
Trum e bus e jaiga nei
Melay-khelay ticket nei
Haspatale bed nei
barite ghar nei
Khelbar math nei
Onusharan korbar neta nei
Preorona jagano prem nei
Oder proto shombashane karo darad nei
Ghare baire udaharan ja aache
ta khudaharaner shudhakkharaner udaharan noy,
Ta shudhaharaner Khudavaraner udaharan-
Shudu nijer dike jhol tana.
Ek chil moddobitto barir ek chilte faltu ek rock
tao diyeche lopat kore.
Tai ekhon pothe eshe dariyeche saraker majhkhane.
Kottheke aashche shei otiter sriti nei.
kothay dariye aache shei bortamaner gati nei
Kothay cholche nei shei bhovishoter thikana.
Ami bollum, na odik diyei jabo
Okhan diyei amar shortcut.
Oder kachakachi hotei mukh bariye
Jiggesh karlum,
Tomader taxi lagbe? lift chai?
Arey ei to taxi, ei to taxi, le halua
Shoullashe chechiye uthlo ora
siti diye uthlo
Peye gechi peye gechi chal panshi belgariya.
Tin tin te chokra uthe parlo taxi te
Bollum katadur jabe
Ei kachei, Ei dekhte pacchen na bhir?
Cinema na, jholsha na, Noy kuno filmi tarakar obvorthona
Ekta niriho lok gari chapa poreche,
Chapa diye garita udao-
Amader doler koyekjan Garitar pichane dawa korche
Amra khali taxi khujchi.
Ke she lok?
Ekta bewaris bhikiri.
Rakta mangshe dola pakiye geche
Or keu nei kichu nei
Shobar jonno footpath aache to mathar upar saad nei,
Vikkar jonno patro ekta aache to
Tar moddhe prokando ekta futo
Rakta mangshe shei dola pakano bhikirike
Ora pajakola kore taxi r moddhe tule nilo.
Chechiye uthla shomoshore-aanande jhongkrito hoye-
pran aache pran aache ekono pran aache.
Rakter daag theke amra bhovyota o shalinatake bachate giye
Ami neme parlum taratari
Tarpar shohosha shahorer shamasta karkashe kothin
Ciment konkrit e
Ite-kathe-piche-pathare deyale-deyale
Beje uthlo ek durbar uccharan
Ek prottoyer tapta shankadhani-
pran aache ekono pran aache.
Shamasta badha nisheder baireo
Aache ostitter odhikar
Fire aashtei deki
Galir more gacher shei shukno boiraggo bidirna kore
Beriye poreche hazar hazar shonali kochi pata
marmarito hocche batashe,
Dekhte dekhte gucche gucche uthle uthche ful
Dele diyeche buker shugandha,
ure esheche rang-beranger pakhi
Shuru koreche kal kanther kakoli,
Dhire dhire ghana potrapunje feleche snehardo dirgachaya
jeno kuno shyamal aattiyota
Obishasho choke cheye deklom
Kothorer procchonne madhurjer bistirna aayojan
Pran aache pran aache shudu pran e aashchajyo shampad
Ek khoyhin aasha
Ek mrittuhin morjada
Platelets - প্লাটেলেটস কে বাংলায় বলা হয় অণুচক্রিকা।ইহা রক্তে থাকা অতিক্ষুদ্র অনিয়মিত আকারের কোষ। সহজ ভাষায় বলতে হলে রক্তের ক্ষুদ্রতম কোষকে অণুচক্রিকা বলে। শরীরে কি পরিমাণ থাকা উচিত - স্বাস্থ্যবানদের জন্য সাধারণ পরিসীমা প্রতি ঘন মিলিমিটারে ১৫০,০০০ থেকে ৪৫০,০০০ টি অণুচক্রিকা বা ১৫০-৪৫০x১০^৯ প্রতি লিটRead more
Platelets – প্লাটেলেটস কে বাংলায় বলা হয় অণুচক্রিকা।ইহা রক্তে থাকা অতিক্ষুদ্র অনিয়মিত আকারের কোষ। সহজ ভাষায় বলতে হলে রক্তের ক্ষুদ্রতম কোষকে অণুচক্রিকা বলে।
শরীরে কি পরিমাণ থাকা উচিত – স্বাস্থ্যবানদের জন্য সাধারণ পরিসীমা প্রতি ঘন মিলিমিটারে ১৫০,০০০ থেকে ৪৫০,০০০ টি অণুচক্রিকা বা ১৫০-৪৫০x১০^৯ প্রতি লিটার প্রবীণদের ক্ষেত্রে।
মাপার পদ্দতি– প্লাটেলেটসের ঘনত্ব হিমোসাইটোমিটার ব্যবহার করে মাপা হয় বা কুল্টার কাউন্টারের মতো বৈদ্যুতিক প্রতিবন্ধকতা ব্যবহার করে একটি স্বয়ংক্রিয় অণুচক্রিকা বিশ্লেষকে রক্ত রেখে মাপা যায়।
প্লাটেলেটসের কার্যকলাপ -প্লাটেলেটস বৃদ্ধির প্রাকৃতিক উৎস হিসাবে কাজ করে। স্তন্যপায়ীদের দেহে এরা সংবাহিত হয় এবং রক্ততঞ্চনে অর্থাৎ ক্ষতস্থানের রক্ত জমাট বাঁধায় নিয়োজিত থাকে। অণুচক্রিকা সূতার আঁশের ন্যায় রক্তকে জমাট বাঁধায় সাহায্য করে। অণুচক্রিকা বিভিন্ন বৃদ্ধিবর্ধক উপাদান উৎপন্ন করে যেমন প্লেটলেট-ডেপরাইভড্ গ্রোথ ফ্যাক্টর (পিডিজিএফ), এ পটেন্ট কেমোট্যাক্টিক এজেন্ট এবং টিজিএফ বেটা যা অতিরিক্ত কোষীয় মাতৃকাকে তরান্বিত করে। উভয় বৃদ্ধিবর্ধক উপাদান সংযোজক কলার পুনর্গঠন এবং পুনঃনির্মানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মাত্রা কমে গেলে কি সমস্যা দে -প্লাটেলেটসের সংখ্যা খুব কমে গেলে হতে পারে মারাত্মক রক্তক্ষরণ । আবার সংখ্যা খুব বৃদ্ধি হলে তা রক্তনালিকাগুলোকে বাঁধা দিয়ে থ্রম্বোসিস ঘটাতে পারে এবং এমন পরিস্থিতিতে স্ট্রোক, মাইওকার্ডিয়াল ইনফ্র্যাকশন, ফুসফুসীয় ধমনীরোধ এবং রক্তনালিকা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
প্লাটেলেটসের অস্বাভাবিকতা বা রোগকে থ্রম্বোসাইটোপ্যাথি বলা হয। যা হতে পারে প্লাটেলেটস কমে গেলে (থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া), অণুচক্রিকার স্বাভাবিক কাজ বাধাগ্রস্ত হলে (থ্রম্বোস্টেনিয়া) কিংবা অণুচক্রিকার সংখ্যা বেড়ে গেলে (থ্রম্বোসাইটোসিস)।
এছাড়া বেশকিছু রোগের কারণেও অণুচক্রিকা কমতে পারে যেমন ডেঙ্গু বা হেপারিন-ইনডিউজড থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া
ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা (শুভ দাশগুপ্ত ) ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা ব্রিলিয়ান্ট কেরিয়ার তৈরী করে ……. তারা প্রথমে গাঁয়ে- মফস্বলে হরিপ্রসন্ন স্কুলে গেঁয়ো বন্ধুদের সাথে লেখাপড়া শেখে । তারপর - ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট করে সকলকে চমকে দেয় । তারপর তারা উচ্চতর শিক্ষার জন্য চলে যায় ব্যাঙ্গালোর কিংবা দিল্লী ,কিংবা পুণে সেখানে গRead more
ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা (শুভ দাশগুপ্ত )
ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা ব্রিলিয়ান্ট কেরিয়ার তৈরী করে …….
তারা প্রথমে গাঁয়ে- মফস্বলে হরিপ্রসন্ন স্কুলে গেঁয়ো বন্ধুদের সাথে লেখাপড়া শেখে ।
তারপর –
ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট করে সকলকে চমকে দেয় ।
তারপর তারা উচ্চতর শিক্ষার জন্য চলে যায়
ব্যাঙ্গালোর কিংবা দিল্লী ,কিংবা পুণে
সেখানে গিয়ে তারা বড় বড় নম্বর পায় ! পজিশন পায় !
তারপর সেই নম্বর প্লেট গলায় ঝুলিয়ে তারা মস্ত মস্ত কোম্পানীতে ভালো ভালো চাকরি পায় !
প্রচুর স্যালারি ! দামি ফ্ল্যাট ! ভালো গাড়ী !
ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা ….. এরপর বিদেশের বিমানে গিয়ে বসে ।
পৌঁছে যায় আমেরিকা ,জার্মানি কিংবা আবুধাবী …. অথবা সিঙ্গাপুর কিংবা কানাডা !
ব্রিলিয়ান্ট ছেলেদের , ঐ সব দেশ টপাটপ কিনে নেয় ।
ঐ সব ব্রিলিয়ান্ট দেশ ,আমাদের ব্রিলিয়ান্টদের জন্য বিলাসবহুল বাড়ি – গাড়ি
আর প্রচুর ডলারের ব্যবস্থা করে দেয় ….
সেখানে আমাদের ব্রিলিয়ান্টরা সুখে থাকে ।
সুখে থাকতে থাকতে ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা ভুলে যায় তাদের দেশ গাঁয়ের কথা , হরিপ্রসন্ন স্কুলের কথা —
গাঁয়ের বন্ধুদের কথা ক্রমে ভুলে যেতে থাকে !
মনে রাখতে পারে না —– খুড়তুতো , জ্যাঠতুতো সব অসফল ভাই বোনেদের কথা ।
ব্রিলিয়ান্টদের জগতে ইমোশন নেই ! প্রোমোশন আছে ।
ব্রিলিয়ান্টদের অতীত নেই ! কেবল ভবিষ্যৎ , কেবল ফিউচার ।
ছোট চেয়ার থেকে বড় চেয়ার ……নন এসি থেকে এসি ।
ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা বাবা- মা কে মাঝে মধ্যে টাকা পাঠায় ….অ -নে -ক টাকা !!!!
সেই টাকা হাতে পেয়ে ব্রিলিয়ান্টদের বাবার মুখে ফুটে ওঠে হাসি।
মায়ের চোখ ভরে ওঠে জলে ।
ব্রিলিয়ান্টরা এই ন্যাস্টি ইন্ডিয়াতে আর ফিরে আসতে চায় না ।
এত ভিড় ! এত ধুলোকাদা ! এত কোরাপশন !
এসবের মধ্যে তাদের গা ঘিনঘিন করে
তবু যদি কখনও আসে ……..
অনেক অনেক ফরেইন জিনিস নিয়ে আসে ।
মায়ের জন্য ইতালির চাদর , বাবার জন্য ফ্রান্সের সিগারেট .. সঙ্গে জাপানি লাইটার ,
আলো জ্বললেই যা থেকে টুং টাং করে বাজনা বেজে ওঠে ।
ব্রিলিয়ান্টদের ব্যাপার স্যাপারই আলাদা ……..
ব্রিলিয়ান্টদের ব্রিলিয়ান্ট বানিয়ে তুলতে কেরানী বাবাকে যে কতদিন কর্মক্লান্ত দুপুরে টিফিনে একটা চাপাকলা কিংবা
একটাকার শুকনো মুড়িতে পেট ভরিয়েছেন ……
কতকাল যে মা কোনো নতুন শাড়ী কেনাকে বিলাসিতা মনে করে ছেঁড়া শাড়ীতে দিন কাটিয়েছেন !!!
এসব তথ্য ব্রিলিয়ান্টদের ল্যাপটপে থাকেনা । ব্রিলিয়ান্টদের ল্যাপটপে নায়াগ্রার দূরন্ত জলোচ্ছ্বাস , কিংবা
ভিসুভিয়াসের ছবি থাকে …….
এই শ্যামল বাংলার নদী গাছ , বর্ষার মেঘ —–
এসব হাবিজাবি সেখানে ইনসার্ট করা যায় না ।
ব্রিলিয়ান্টরা সদা ব্যস্ত ! ভীষণ ব্যস্ত …… !
তারা সঙ্গীত শোনেনা , তারা গল্প বা কবিতা পড়ে সময় নষ্ট করেনা ।
তারা আকাশ দেখে না , বৃষ্টিতে তাদের মন খারাপ হয় না ।
তারা কেবল কাজ করে ,কেবল ব্যাস্ততায় ডুবে থাকে ।
বৃষ্টি নেমেছে আকাশ ভেঙ্গে …….শ্রাবণ মাস ।
মা মৃত্যুশয্যায় …..বাড়ি ভর্তি লোকজন ।
অসুস্থ বাবা বারান্দায় চেয়ারে বসে আছেন শূন্য চোখে ……
ডাক্তার জবাব দিয়ে গেছেন ….গোটা বাড়িতে অদ্ভুত এক নিস্তব্ধতা !
কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে মা জিজ্ঞেস করছেন ….. খোকন এলো ? খো – ক – ন ………….!
ব্রিলিয়ান্ট খোকন তখন ফ্লাইটে …..
সবাই মা কে বোঝাচ্ছে ঐ তো ঐ তো খোকন এলো বলে !
কিন্তু সে ফ্লাইট চলে যাচ্ছে কানাডায়।
কানাডায় কোম্পানীর নতুন শাখা উদ্বোধন।
খোকন যাচ্ছে আরও বড়ো দায়িত্ব নিয়ে , আরও বেশী ডলার ……..
এখানে এই পোড়া দেশে ব্রিলিয়ান্ট খোকনের মা
ছেলের মুখ না দেখেই শেষ বারের মতো চোখ বুঁজলেন …..।।
আমরা এখন ঘরে ঘরে সবাই —— এমন ব্রিলিয়ান্ট ছেলে গড়ে তুলতেই ব্যস্ত…….।
সক্কলে!
রুপাই - জসীমউদ্দীন এই গাঁয়ের এক চাষার ছেলে লম্বা মাথার চুল, কালো মুখেই কালো ভ্রমর, কিসের রঙিন ফুল! কাঁচা ধানের পাতার মত কচি-মুখের মায়া, তার সাথে কে মাখিয়ে দেছে নবীন তৃণের ছায়া | জালি লাউয়ের ডগার মত বাহু দুখান সরু, গা-খানি তার শাঙন মাসের যেমন তমাল তরু | বাদল-ধোয়া মেঘে কে গো মাখিয়ে দেছে তেল, বিRead more
রুপাই – জসীমউদ্দীন
এই গাঁয়ের এক চাষার ছেলে লম্বা মাথার চুল,
কালো মুখেই কালো ভ্রমর, কিসের রঙিন ফুল!
কাঁচা ধানের পাতার মত কচি-মুখের মায়া,
তার সাথে কে মাখিয়ে দেছে নবীন তৃণের ছায়া |
জালি লাউয়ের ডগার মত বাহু দুখান সরু,
গা-খানি তার শাঙন মাসের যেমন তমাল তরু |
বাদল-ধোয়া মেঘে কে গো মাখিয়ে দেছে তেল,
বিজলী মেয়ে পিছলে পড়ে ছড়িয়ে আলোর খেল |
কচি ধানের তুলতে চারা হয়ত কোনো চাষী,
মুখে তাহার ছড়িয়ে গেছে কতকটা তার হাসি |
কালো চোখের তারা দিয়েই সকল ধরা দেখি,
কালো দাতের কালি দিয়েই কেতাব কোরাণ লেখি |
জনম কালো, মরণ কালো, কালো ভূবনময় ;
চাষীদের ওই কালো ছেলে সব করেছে জয় |
সোনায় যে জন সোনা বানায়, কিসের গরব তার’
রঙ পেলে ভাই গড়তে পারি রামধণুকের হার |
কালোয় যে-জন আলো বানায়, ভুলায় সবার মন,
তারি পদ-রজের লাগি লুটায় বৃন্দাবন |
সোনা নহে, পিতল নহে, নহে সোনার মুখ,
কালো-বরণ চাষীর ছেলে জুড়ায় যেন বুক |
যে কালো তার মাঠেরি ধান, যে কালো তার গাঁও!
সেই কালোতে সিনান করি উজল তাহার গাও |
আখড়াতে তার বাঁশের লাঠি অনেক মানে মানী,
খেলার দলে তারে নিয়েই সবার টানাটানি |
জারীর গানে তাহার গলা উঠে সবার আগে,
‘শাল-সুন্দী-বেত’ যেন ও, সকল কাজেই লাগে |
বুড়োরা কয়, ছেলে নয় ও, পাগাল লোহা যেন,
রূপাই যেমন বাপের বেটা, কেউ দেখেছ হেন?
যদিও রূপা নয়কো রূপাই, রূপার চেয়ে দামী,
এক কালেতে ওরই নামে সব গাঁ হবে নামী |
বাবু - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (‘লোকরহস্য’ বইয়ের অন্তর্গত একটি প্ৰবন্ধ। মূলত এটি প্রকাশিত হয়েছিল বঙ্গদর্শন পত্রিকার ১২৭৯-র ফাল্গুন সংখ্যায়।) “জনমেজয় কহিলেন, হে মহর্ষে! আপনি কহিলেন যে, কলি যুগে নেতা নামে এক প্রকার মনুষ্যেরা পৃথিবীতে আবির্ভূত হইবেন । তাঁহারা কি প্রকার মনুষ্য হইবেন এবং পৃথিবীতRead more
বাবু – বঙ্কিমচন্দ্রচট্টোপাধ্যায়
(‘লোকরহস্য’ বইয়ের অন্তর্গত একটি প্ৰবন্ধ। মূলত এটি প্রকাশিত হয়েছিল বঙ্গদর্শন পত্রিকার ১২৭৯-র ফাল্গুন সংখ্যায়।)
“জনমেজয় কহিলেন, হে মহর্ষে! আপনি কহিলেন যে, কলি যুগে নেতা নামে এক প্রকার মনুষ্যেরা পৃথিবীতে আবির্ভূত হইবেন । তাঁহারা কি প্রকার মনুষ্য হইবেন এবং পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়া কি কার্য করিবেন, তাহা শুনিতে বড় কৌতূহল জন্মিতেছে । আপনি অনুগ্রহ করিয়া সবিস্তারে বর্ণন করুন ।
বৈশম্পায়ন কহিলেন, হে নরবর! আমি সেই কূটবুদ্ধি, পানভোজনকুশলী নেতাগণকে আখ্যাত করিব, আপনি শ্রবণ করুন । আমি সেই চেন অলংকৃত, অদ্ভুতচরিত্র, বহুভাষী, বাইট-প্রিয় নেতাদিগের চরিত্র কীর্তিত করিতেছি, আপনি শ্রবণ করুন । হে রাজন, যাঁহারা পাঞ্জাবি-পাজামাবৃত, মোবাইলকর্ণগত, গ্রহরত্নখচিত অঙ্গুরিয়শোভিত, এবং রোদচসমা পরিহিত, তাঁহারাই নেতা । যাঁহারা বাক্যে অজেয়, অপভাষাপারদর্শী, সুস্থভাষাবিরোধী, তাঁহারাই নেতা । মহারাজ! এমন অনেক মহাবুদ্ধিসম্পন্ন নেতা জন্মিবেন যে তাঁহারা সুস্থভাষায় বাক্যালাপে অসমর্থিত হইবেন । যাঁহাদিগের রসনেন্দ্রিয় অন্যদলীয় নেতানেত্রীপ্রতি গালিদানে পবিত্র, তাঁহারাই নেতা । যাঁহাদিগের চরণ মাংসাস্থিবিহীন শুষ্ক কাষ্ঠের ন্যায় হইলেও দুর্বলোপরি পাদপ্রহারে সক্ষম; হস্ত দুর্বল হইলেও মাইকধারণে এবং অর্থগ্রহনে সুপটু, তাঁহারাই নেতা । যাঁহারা ক্ষমতালাভের উদ্দেশ্যে রাজনীতি করিবেন, রাজনীতির জন্য পার্টি করিবেন, পার্টির জন্য অপরাধ করিবেন, এবং আইনের হস্ত হইতে বাঁচিবার জন্য অপর পার্টিতে যোগদান করিবেন, তাঁহারাই নেতা ।
মহারাজ! নেতা শব্দ নানার্থ হইবে । যাঁহারা কলিযুগের ভারতবর্ষে পরোক্ষে শাসক হইয়া ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট নামে খ্যাত হইবেন, তাঁহাদিগের নিকট ‘নেতা’ অর্থে শ্রমিক ইউনিয়নের পদাধিকারী বুঝাইবে । আই-পি-এল দলবিশেষের খেলোয়াড়দিগের নিকটে ‘নেতা’ শব্দে চিত্রতারকা বুঝাইবে । মার্কেটিং কর্মীদের নিকট ‘নেতা’ অর্থে টিম লিডার বুঝাইবে । এ সকল হইতে পৃথক, কেবল নেতাজন্ম নির্বাহ করিতে অভিলাষী কতকগুলিন মনুষ্য জন্মিবেন। আমি কেবল তাঁহাদিগেরই গুণকীর্তন করিতেছি । যিনি বিপরীতার্থ করিবেন, তাঁহার এই মহাভারত শ্রবণ নিষ্ফল হইবে। তিনি জনগণের এক জন হইয়া নেতাদিগের লক্ষ্য হইবেন ।
হে নরাধিপ! সাধারণের বিপরীতে অবস্থান করিবার নিমিত্ত পঞ্চভূত নেতাদিগেরই কর্তৃত্বাধীন থাকিবেন । যথা, ক্ষিতি ইঁহাদিগের অতীব ক্ষমতাশালী আয়ুধ হইবে । শতনামে সহস্র পরিমাণ জমি নেতাগণ ভোগ করিবেন । দ্বিতীয় অগস্ত্যের ন্যায় সমুদ্ররূপী বরুণকে ইঁহারা শোষণ করিবেন, পানপাত্র ইঁহাদিগের গন্ডূষ । অগ্নিও ইঁহাদিগের আজ্ঞাবহ হইবেন – ‘সিগারেট’ নামক একটি অভিনব খান্ডবকে আশ্রয় করিয়া রাত্রিদিন ইঁহাদিগের মুখে লাগিয়া থাকিবেন । ইঁহাদিগের যেমন মুখে অগ্নি, তেমনি অন্তরেও অগ্নি জ্বলিবেন । সেই অন্তরাগ্নির জ্বলন মধ্যে মধ্যে অন্যদলীয় সমর্থকরা তাঁহাদের আপন গৃহাভ্যন্তরে অনুভব করিবেন । বায়ু ইঁহাদিগের গৃহের বাহিরে বাহনরূপে এবং জঠরমধ্যে গ্যাসরূপে নিত্য বিরাজমান থাকিবেন । ইঁহাদিগের অধিকাংশ চন্দ্রলোভী বামন হইবেন, কেহ কেহ মধ্যাহ্নে চন্দ্র এবং নিশীথে সূর্য দেখিবেন ।
সমাজকে ইঁহারা বহুধা বিভক্ত করিবেন—ভদ্রতা করিয়া সেই দুর্ধর্ষ কার্যের নাম রাখিবেন, ‘সমাজসেবা’। জনগণের সম্মুখে ইঁহারা পূজার্চনা করিবেন, মন্দির মসজিদ গড়িবেন, আর তাঁহাদিগের পশ্চাতে যে পবিত্র স্থানে ইঁহারা আরাধনায় নিমগ্ন থাকিবেন তাহার নাম হইবে ‘গেস্ট হাউস’।
হে নরশ্রেষ্ঠ! যিনি কাব্যরসাদিতে বঞ্চিত, সঙ্গীতে দগ্ধ কোকিলাহারী, যাঁহার পান্ডিত্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুস্তকাগত, তিনিই নেতা। ইঁহাদিগের সমর্থকেরা ইঁহাদের কাব্যে কালিদাস, সঙ্গীতে সরস্বতী, পান্ডিত্যে পাণিনি বলিয়া প্রচার করিবেন এবং তাহা শ্রবণ করিয়া যিনি আপনাকে অনন্তজ্ঞানী বিবেচনা করিবেন, তিনিই নেতা । যিনি নারীজাতির অবমাননাকারির শাস্তি লঘু করিতে প্রতিশ্রুত হইবেন, পরে তাঁহার বক্তব্য বিকৃত করা হইয়াছে দাবি করিয়া সংবাদ মাধ্যমের মুন্ড চর্বন করিবেন, তিনিই নেতা । যিনি স্বদলীয় কর্মীর অপরাধ লুকাইয়া রাখিবেন, ব্যক্তিবিশেষকে ব্যবহার করিয়া অবৈধ সুবিধা লইবেন এবং সুবিধালাভ সমাপ্ত হইলে তাহাকে সুদূরে নিক্ষেপ করিবেন, তিনিই নেতা । যাঁহার বাক্য মনোমধ্যে এক, কথনে দশ, লিখনে শত এবং ভাষণকালে সহস্র, তিনিই নেতা ।
যিনি ইতিহাসের কিছুই জানিবেন না, অর্থনীতির কিছুই বুঝিবেন না, কেবল আপনাকে অভ্রান্ত জানিয়া আপনার মত জনগণের উপর চাপাইয়া দিবেন, তিনিই নেতা । যিনি ফান্ড সংগ্রহার্থ দুর্গাপূজা করিবেন, সমর্থকদের প্রীতিসম্পাদনার্থ গণেশপূজা করিবেন এবং নির্বাচনে জয়ের লোভে ঈদ পালন করিবেন, তিনিই নেতা ।
হে কুরুকুলভূষণ! দেবদেবীদের কথা যখন উঠিল তখন বলা যাউক, বিষ্ণুর সহিত এই নেতাদিগের বিশেষ সাদৃশ্য হইবে । ইঁহারা বিষ্ণুর তুল্য লীলাপটু হইবেন, বিষ্ণুর ন্যায় ইঁহাদিগেরও দশ অবতার হইবে । যথা – কেরানী, মাস্টার, অভিনেতা, ব্যবসায়ী, ডাক্তার, উকিল, ধর্মগুরু, অবসরপ্রাপ্ত অফিসার, সংবাদপত্র সম্পাদক এবং নিষ্কর্মা। সকল অবতারেই ইঁহারা অমিত বলপরাক্রম অসুরগণকে বধ করিবেন । কেরানী অবতারে বধ্য অসুর প্রশাসন মুখাপেক্ষী, মাস্টার অবতারে বধ্য ছাত্র, অভিনেতা অবতারে বধ্য দর্শক, ব্যবসায়ী অবতারে বধ্য ক্রেতা, ডাক্তার অবতারে বধ্য রোগী, উকিল অবতারে বধ্য মক্কেল, ধর্মগুরু অবতারে বধ্য ধর্মভীরু, অফিসার অবতারে বধ্য আপনারই ছেড়ে আসা সরকার, সম্পাদক অবতারে বধ্য পাঠক, এবং নিষ্কর্মাবতারে বধ্য উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী ।
হে নরনাথ! আমি যাঁহাদিগের কথা বলিলাম, তাঁহাদিগের মনে মনে বিশ্বাস জন্মিবে যে, তাঁহারা আইনসভা দখল করিয়া, তথায় বাগাড়ম্বরের মেঘ জমাইয়া, মরিচবিষের বৃষ্টি নামাইয়া, কর্দমাক্ত সলিলে মৎস্যশিকার করিয়া ভারতবর্ষের পুনরুদ্ধার করিবেন ।
বাবু - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (‘লোকরহস্য’ বইয়ের অন্তর্গত একটি প্ৰবন্ধ। মূলত এটি প্রকাশিত হয়েছিল বঙ্গদর্শন পত্রিকার ১২৭৯-র ফাল্গুন সংখ্যায়।) “জনমেজয় কহিলেন, হে মহর্ষে! আপনি কহিলেন যে, কলি যুগে নেতা নামে এক প্রকার মনুষ্যেরা পৃথিবীতে আবির্ভূত হইবেন । তাঁহারা কি প্রকার মনুষ্য হইবেন এবং পৃথিবীতRead more
বাবু – বঙ্কিমচন্দ্রচট্টোপাধ্যায়
(‘লোকরহস্য’ বইয়ের অন্তর্গত একটি প্ৰবন্ধ। মূলত এটি প্রকাশিত হয়েছিল বঙ্গদর্শন পত্রিকার ১২৭৯-র ফাল্গুন সংখ্যায়।)
“জনমেজয় কহিলেন, হে মহর্ষে! আপনি কহিলেন যে, কলি যুগে নেতা নামে এক প্রকার মনুষ্যেরা পৃথিবীতে আবির্ভূত হইবেন । তাঁহারা কি প্রকার মনুষ্য হইবেন এবং পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়া কি কার্য করিবেন, তাহা শুনিতে বড় কৌতূহল জন্মিতেছে । আপনি অনুগ্রহ করিয়া সবিস্তারে বর্ণন করুন ।
বৈশম্পায়ন কহিলেন, হে নরবর! আমি সেই কূটবুদ্ধি, পানভোজনকুশলী নেতাগণকে আখ্যাত করিব, আপনি শ্রবণ করুন । আমি সেই চেন অলংকৃত, অদ্ভুতচরিত্র, বহুভাষী, বাইট-প্রিয় নেতাদিগের চরিত্র কীর্তিত করিতেছি, আপনি শ্রবণ করুন । হে রাজন, যাঁহারা পাঞ্জাবি-পাজামাবৃত, মোবাইলকর্ণগত, গ্রহরত্নখচিত অঙ্গুরিয়শোভিত, এবং রোদচসমা পরিহিত, তাঁহারাই নেতা । যাঁহারা বাক্যে অজেয়, অপভাষাপারদর্শী, সুস্থভাষাবিরোধী, তাঁহারাই নেতা । মহারাজ! এমন অনেক মহাবুদ্ধিসম্পন্ন নেতা জন্মিবেন যে তাঁহারা সুস্থভাষায় বাক্যালাপে অসমর্থিত হইবেন । যাঁহাদিগের রসনেন্দ্রিয় অন্যদলীয় নেতানেত্রীপ্রতি গালিদানে পবিত্র, তাঁহারাই নেতা । যাঁহাদিগের চরণ মাংসাস্থিবিহীন শুষ্ক কাষ্ঠের ন্যায় হইলেও দুর্বলোপরি পাদপ্রহারে সক্ষম; হস্ত দুর্বল হইলেও মাইকধারণে এবং অর্থগ্রহনে সুপটু, তাঁহারাই নেতা । যাঁহারা ক্ষমতালাভের উদ্দেশ্যে রাজনীতি করিবেন, রাজনীতির জন্য পার্টি করিবেন, পার্টির জন্য অপরাধ করিবেন, এবং আইনের হস্ত হইতে বাঁচিবার জন্য অপর পার্টিতে যোগদান করিবেন, তাঁহারাই নেতা ।
মহারাজ! নেতা শব্দ নানার্থ হইবে । যাঁহারা কলিযুগের ভারতবর্ষে পরোক্ষে শাসক হইয়া ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট নামে খ্যাত হইবেন, তাঁহাদিগের নিকট ‘নেতা’ অর্থে শ্রমিক ইউনিয়নের পদাধিকারী বুঝাইবে । আই-পি-এল দলবিশেষের খেলোয়াড়দিগের নিকটে ‘নেতা’ শব্দে চিত্রতারকা বুঝাইবে । মার্কেটিং কর্মীদের নিকট ‘নেতা’ অর্থে টিম লিডার বুঝাইবে । এ সকল হইতে পৃথক, কেবল নেতাজন্ম নির্বাহ করিতে অভিলাষী কতকগুলিন মনুষ্য জন্মিবেন। আমি কেবল তাঁহাদিগেরই গুণকীর্তন করিতেছি । যিনি বিপরীতার্থ করিবেন, তাঁহার এই মহাভারত শ্রবণ নিষ্ফল হইবে। তিনি জনগণের এক জন হইয়া নেতাদিগের লক্ষ্য হইবেন ।
হে নরাধিপ! সাধারণের বিপরীতে অবস্থান করিবার নিমিত্ত পঞ্চভূত নেতাদিগেরই কর্তৃত্বাধীন থাকিবেন । যথা, ক্ষিতি ইঁহাদিগের অতীব ক্ষমতাশালী আয়ুধ হইবে । শতনামে সহস্র পরিমাণ জমি নেতাগণ ভোগ করিবেন । দ্বিতীয় অগস্ত্যের ন্যায় সমুদ্ররূপী বরুণকে ইঁহারা শোষণ করিবেন, পানপাত্র ইঁহাদিগের গন্ডূষ । অগ্নিও ইঁহাদিগের আজ্ঞাবহ হইবেন – ‘সিগারেট’ নামক একটি অভিনব খান্ডবকে আশ্রয় করিয়া রাত্রিদিন ইঁহাদিগের মুখে লাগিয়া থাকিবেন । ইঁহাদিগের যেমন মুখে অগ্নি, তেমনি অন্তরেও অগ্নি জ্বলিবেন । সেই অন্তরাগ্নির জ্বলন মধ্যে মধ্যে অন্যদলীয় সমর্থকরা তাঁহাদের আপন গৃহাভ্যন্তরে অনুভব করিবেন । বায়ু ইঁহাদিগের গৃহের বাহিরে বাহনরূপে এবং জঠরমধ্যে গ্যাসরূপে নিত্য বিরাজমান থাকিবেন । ইঁহাদিগের অধিকাংশ চন্দ্রলোভী বামন হইবেন, কেহ কেহ মধ্যাহ্নে চন্দ্র এবং নিশীথে সূর্য দেখিবেন ।
সমাজকে ইঁহারা বহুধা বিভক্ত করিবেন—ভদ্রতা করিয়া সেই দুর্ধর্ষ কার্যের নাম রাখিবেন, ‘সমাজসেবা’। জনগণের সম্মুখে ইঁহারা পূজার্চনা করিবেন, মন্দির মসজিদ গড়িবেন, আর তাঁহাদিগের পশ্চাতে যে পবিত্র স্থানে ইঁহারা আরাধনায় নিমগ্ন থাকিবেন তাহার নাম হইবে ‘গেস্ট হাউস’।
হে নরশ্রেষ্ঠ! যিনি কাব্যরসাদিতে বঞ্চিত, সঙ্গীতে দগ্ধ কোকিলাহারী, যাঁহার পান্ডিত্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুস্তকাগত, তিনিই নেতা। ইঁহাদিগের সমর্থকেরা ইঁহাদের কাব্যে কালিদাস, সঙ্গীতে সরস্বতী, পান্ডিত্যে পাণিনি বলিয়া প্রচার করিবেন এবং তাহা শ্রবণ করিয়া যিনি আপনাকে অনন্তজ্ঞানী বিবেচনা করিবেন, তিনিই নেতা । যিনি নারীজাতির অবমাননাকারির শাস্তি লঘু করিতে প্রতিশ্রুত হইবেন, পরে তাঁহার বক্তব্য বিকৃত করা হইয়াছে দাবি করিয়া সংবাদ মাধ্যমের মুন্ড চর্বন করিবেন, তিনিই নেতা । যিনি স্বদলীয় কর্মীর অপরাধ লুকাইয়া রাখিবেন, ব্যক্তিবিশেষকে ব্যবহার করিয়া অবৈধ সুবিধা লইবেন এবং সুবিধালাভ সমাপ্ত হইলে তাহাকে সুদূরে নিক্ষেপ করিবেন, তিনিই নেতা । যাঁহার বাক্য মনোমধ্যে এক, কথনে দশ, লিখনে শত এবং ভাষণকালে সহস্র, তিনিই নেতা ।
যিনি ইতিহাসের কিছুই জানিবেন না, অর্থনীতির কিছুই বুঝিবেন না, কেবল আপনাকে অভ্রান্ত জানিয়া আপনার মত জনগণের উপর চাপাইয়া দিবেন, তিনিই নেতা । যিনি ফান্ড সংগ্রহার্থ দুর্গাপূজা করিবেন, সমর্থকদের প্রীতিসম্পাদনার্থ গণেশপূজা করিবেন এবং নির্বাচনে জয়ের লোভে ঈদ পালন করিবেন, তিনিই নেতা ।
হে কুরুকুলভূষণ! দেবদেবীদের কথা যখন উঠিল তখন বলা যাউক, বিষ্ণুর সহিত এই নেতাদিগের বিশেষ সাদৃশ্য হইবে । ইঁহারা বিষ্ণুর তুল্য লীলাপটু হইবেন, বিষ্ণুর ন্যায় ইঁহাদিগেরও দশ অবতার হইবে । যথা – কেরানী, মাস্টার, অভিনেতা, ব্যবসায়ী, ডাক্তার, উকিল, ধর্মগুরু, অবসরপ্রাপ্ত অফিসার, সংবাদপত্র সম্পাদক এবং নিষ্কর্মা। সকল অবতারেই ইঁহারা অমিত বলপরাক্রম অসুরগণকে বধ করিবেন । কেরানী অবতারে বধ্য অসুর প্রশাসন মুখাপেক্ষী, মাস্টার অবতারে বধ্য ছাত্র, অভিনেতা অবতারে বধ্য দর্শক, ব্যবসায়ী অবতারে বধ্য ক্রেতা, ডাক্তার অবতারে বধ্য রোগী, উকিল অবতারে বধ্য মক্কেল, ধর্মগুরু অবতারে বধ্য ধর্মভীরু, অফিসার অবতারে বধ্য আপনারই ছেড়ে আসা সরকার, সম্পাদক অবতারে বধ্য পাঠক, এবং নিষ্কর্মাবতারে বধ্য উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী ।
হে নরনাথ! আমি যাঁহাদিগের কথা বলিলাম, তাঁহাদিগের মনে মনে বিশ্বাস জন্মিবে যে, তাঁহারা আইনসভা দখল করিয়া, তথায় বাগাড়ম্বরের মেঘ জমাইয়া, মরিচবিষের বৃষ্টি নামাইয়া, কর্দমাক্ত সলিলে মৎস্যশিকার করিয়া ভারতবর্ষের পুনরুদ্ধার করিবেন ।
লিরিকঃ তুমি আমার জীবন সাথী | Tumi Amar Jibon Sathi lyrics in Bengali
Hridoy
তুমি আমার জীবন সাথী Singer- Sonu Nigam & Alka Yagnik Movie-Bidhatar Lekha তুমি আমার জীবন সাথী তোমায় আমি ভালোবাসি তুমি আমার সূর্যসোনা তুমি যে চাঁদের হাসি তুমি আমার জীবন সাথী তোমায় আমি ভালোবাসি তুমি আমার সূর্যসোনা তুমি যে চাঁদের হাসি সারা জীবন এই মন তোমার প্রেমেতে চায় আরো যে পাগল হতে তুমি এত কাছেRead more
তুমি আমার জীবন সাথী
Singer- Sonu Nigam & Alka Yagnik
Movie-Bidhatar Lekha
তুমি আমার জীবন সাথী
তোমায় আমি ভালোবাসি
তুমি আমার সূর্যসোনা
তুমি যে চাঁদের হাসি
তুমি আমার জীবন সাথী
তোমায় আমি ভালোবাসি
তুমি আমার সূর্যসোনা
তুমি যে চাঁদের হাসি
সারা জীবন এই মন
তোমার প্রেমেতে
চায় আরো যে পাগল হতে
তুমি এত কাছে
তবু কেন মন
চায় আরো যে কাছে পেতে
দু’চোখ ভরে আজ তোমায় দেখি
তবু যে স্বাদ মেটে না
তুমি আমার জীবন সাথী
তোমায় আমি ভালোবাসি
তুমি আমার সূর্যসোনা
তুমি যে চাঁদের হাসি
কতো স্বপ্ন জমানো চোখের পাতায়
শুধু যে তোমায় ঘিরে
ওগো তোমায় সাথে নিয়ে
দেখবো দু’জনে
সেই স্বপ্নকে নতুন করে
হা… এতো ভালোবাসে
তোমাকে মন
তবু যে মন মানে না
তুমি আমার জীবন সাথী
তোমায় আমি ভালোবাসি
তুমি আমার সূর্যসোনা
তুমি যে চাঁদের হাসি
তুমি আমার জীবন সাথী
তোমায় আমি ভালোবাসি
তুমি আমার সূর্যসোনা
তুমি যে চাঁদের হাসি
English Translation:
You are my soulmate
Singer- Sonu Nigam & Alka Yagnik
You are my soulmate
I love you
You are my sunshine
You are the bright moon
You are my soulmate
I love you
You are my sunshine
You are the bright moon
My heart throughout the life
Wants to become mad
In your love.
You are so close
Still my heart
Wants to be more closer.
I see you toady with both of my open eyes
See lessBut still it is unsatisfied.
You are my soulmate
I love you
You are my sunshine
You are the bright moon
How many dreams have been saved in those eyes!
Only around you
Oh My love, we will see those dreams again
Together.
Yes.. That much
I love you
Still my heart doesn’t stop.
You are my soulmate
I love you
You are my sunshine
You are the bright moon
You are my soulmate
I love you
You are my sunshine
You are the bright moon
বাংলায় অর্থসহ ব্যাখ্যা | Asleep in The Valley Poem Bengali Meaning?
Hridoy
Asleep In The Valley উপত্যকাতে ঘুমন্ত অবস্থায় A small green valley where a slow stream flows (small-ছোট্ট, valley-উপত্যকা, slow-মন্থর stream-জলধারা, flows- প্রবাহিত) ছোট্ট একটি সবুজ উপত্যকা যেখানে প্রবাহিত হয়েছে মন্থর জলধারা And leaves long strands of silver on the bright (leaves-গাছের পাতা, strRead more
Asleep In The Valley
উপত্যকাতে ঘুমন্ত অবস্থায়
A small green valley where a slow stream flows
(small-ছোট্ট, valley-উপত্যকা, slow-মন্থর stream-জলধারা, flows- প্রবাহিত)
ছোট্ট একটি সবুজ উপত্যকা যেখানে প্রবাহিত হয়েছে মন্থর জলধারা
And leaves long strands of silver on the bright
(leaves-গাছের পাতা, strands-তীরভূমি or তীর, silver-রুপালি, bright-সুন্দর)
এবং গাছের পাতা গুলি পড়ে রয়েছে তার ই লম্বা রুপালি তীরে সুন্দর ঘাসের উপরে।
Grass; from the mountaintop stream the Sun’s
(mountaintop-পাহাড়ের চূড়া, stream-প্রবাহিত হত্তয়া/নেমে আসা)
সূর্য রশ্মি নেমে আসছে পাহাড়ের চূড়া থেকে।
Rays; they fill the hollow full of light.
(Rays-রশ্মি, fill-পরিপূর্ণ করা, hollow-ফাঁকা জায়গা, full of light-আলোকিত করা)
ওই সূর্য রশ্মি গুলি আলোকিত করে দিচ্ছে ফাঁকা জায়গাগুলোকে।
A soldier, very young, lies open-mouthed,
(soldier-সৈনিক, young-তরুন, lies-শুয়ে থাকা, open-mouthed-উন্মুক্ত মুখে )
একজন তরুন সৈনিক শুয়ে পড়ে আছে মুখ উন্মুক্ত করে।
A pillow made of fern beneath his head,
(pillow-বালিশ, made-তৈরি, fern-লতা পাতা, beneath-নিচে, head-মাথা)
তার মাথার নিচে রয়েছে লতা পাতা দিয়ে তৈরি একটি বালিশ।
Asleep; stretched in the heavy undergrowth,
(Asleep-নিদ্রায় আচ্ছন্ন/ঘুমন্ত , stretched-প্রসারিত হয়ে, undergrowth-লতাগুল্মের জঙ্গল/ঝোপ)
সে প্রসারিত হয়ে নিদ্রায় আচ্ছন্ন একটি ঝোপের মধ্যে।
Pale in his warm, green, sun-soaked bed.
(Pale-বিবর্ণ, warm-উষ্ণ , sun-soaked-সূর্য সিক্ত)
তার রঙ হয়ে গেছে বিবর্ণ, উষ্ণ সবুজ আর সূর্য সিক্ত বিছানায় শুয়ে শুয়ে।
His feet among the flowers, he sleeps. His smile
(feet-পায়ের পাতা, among-মধ্যে, flowers-ফুল, sleeps-শুয়ে থাকা/নিদ্রা)
তার পায়ের পাতা গুলি রয়েছে ফুলের মধ্যে, সে নিদ্রায় আচ্ছন্ন। তার হাসি
Is like an infant’s – gentle, without guile.
(infant-শিশু, like- মতো, gentle-মৃদু, without guile-ছলনাহীন)
একটি শিশুর মতো- মৃদু, ছলনাহীন
Ah, Nature, keep him warm; he may catch cold.
(Ah-হে, Nature-প্রকৃতি, warm-উষ্ণ, keep-করে রাখা, catch-লেগে যাওয়া, cold-ঠান্ডা)
হে প্রকৃতি, তাকে রাখ উষ্ণ করে; তার ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
The humming insects don’t disturb his rest;
(humming-গুঁজনকর, insects-পতঙ্গ, disturb- ব্যাঘাত, rest-বিশ্রাম)
পতঙ্গ গুঞ্জনে তার ঘুমে যাতে কোন ব্যাঘাত না ঘটে।
He sleeps in sunlight, one hand on his breast;
(sunlight-সূর্যের আলো, breast-বক্ষ, hand-হাত)
সে ঘুমন্ত সূর্যের আলোয়, একটি হাত তার বক্ষের উপরে
At peace. In his side there are two red holes.
(At peace-শান্তিতে, side-পাশে, red-লাল, holes-গর্ত)
নিবিড় শান্তিতে। তার শরীরের দুইপাশে রয়েছে দুটি লাল গর্ত।
ব্যাখ্যা:
কবি Arthur Rimbaud এই কবিতাটিকে তরুণ এক সৈনিক কে কেন্দ্র করে রচনা করেছেন। তরুণ সেই সৈনিক কোন যুদ্ধে আহত হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে সুন্দর একটি উপত্যকায়।
কবিতার শুরুতেই কবি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা উল্লেখ করেছেন। একটি চিরহরিৎ সবুজ উপত্যকা যেখানে রয়েছে ছোট্ট মন্থর জলধারা। চারিদিকে নিবিড় শান্ত পরিবেশ, ছোট্ট সেই নদীর জলধারা থেকে সোনালী আভা পড়েছে তীরের ঘাসের উপর। সূর্যরশ্মিতে চারিদিকে আলোর ছড়াছড়ি।
আর তারই মধ্যে এক তরুন সৈনিক মুখ উন্মুক্ত অবস্থায় শুয়ে পড়ে আছে। মনে হচ্ছে সে গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন। তার মাথার নিচের লতা পাতা গুলি বালিশের মত দেখতে মনে হচ্ছে। কিন্তু সূর্য সিক্ত সবুজ ঘাসের উপরে শুয়ে শুয়ে তার শরীরের রং বিবর্ণ। তার পায়ের পাতা গুলি রয়েছে ফুলের মধ্যে, দেখে মনে হচ্ছে ছোট্ট একটি নিষ্পাপ শিশু, গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন, যার হাসি মৃদু ও ছলনাহীন।
তাই কবি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন যেন তিনি তাহার খেয়াল রাখেন তার জন্য ঠান্ডা লেগে না যায়। কোন পতঙ্গের গুঞ্জনে যেন তার ঘুম ভেঙে না যায়।
এবং সবশেষে কবি বলছেন যে সূর্যের আলোয় তার দুই হাত বুকের উপরে রেখে নিবিড় শান্তিতে সে ঘুমন্ত। এবং তার দুই পাশে দুইটি লাল গর্ত। অর্থাৎ সে গুলিবিদ্ধ, বুলেটের গুলি গর্ত করে দিয়েছে তার শরীরে। অর্থাৎ সে আর বেঁচে নেই।
See lessকবিতাঃ বাংলা টাংলা ( অপূর্ব দত্ত ) Bangla Tangla Poem by Apurba Dutta in Bangali
Hridoy
বাংলা-টাংলা - অপূর্ব দত্ত অ্যানুয়ালের রেজাল্ট হাতে বাড়ি ফিরল ছেলে মা বলল—কোন পেপারে কত নাম্বার পেলে ? হিস্ট্রিতে মম, এইটি ফোর, ম্যাথসে নাইন জিরাে, মা বলল—ফ্যান্টাস্টিক, জাস্ট লাইক এ হিরাে। সায়েন্সে ড্যাড, নট সাে ফেয়ার, ওনলি সিক্সটি নাইন, ইংলিশে জাস্ট নাইনটি টু, অলটুগেদার ফাইন। জিয়ােগ্রাফির পেপাRead more
বাংলা-টাংলা – অপূর্ব দত্ত
অ্যানুয়ালের রেজাল্ট হাতে বাড়ি ফিরল ছেলে
মা বলল—কোন পেপারে কত নাম্বার পেলে ?
হিস্ট্রিতে মম, এইটি ফোর, ম্যাথসে নাইন জিরাে,
মা বলল—ফ্যান্টাস্টিক, জাস্ট লাইক এ হিরাে।
সায়েন্সে ড্যাড, নট সাে ফেয়ার, ওনলি সিক্সটি নাইন,
ইংলিশে জাস্ট নাইনটি টু, অলটুগেদার ফাইন।
জিয়ােগ্রাফির পেপারে তাে হান্ড্রেডে হান্ড্রেড,
ডুবিয়ে দিল বেংগলিটা ভেরি পুয়াের গ্রেড।
ছেলের মাথায় হাত রেখে মা ঠোট বেঁকিয়ে বলে –
নেভার মাইন্ড, বেংগলিটা না শিখলেও চলে।
বাবা বলল–বেশ বলেছ বঙ্গমাতার কন্যে,
বাংলা-টাংলা আমার মতাে অশিক্ষিতের জন্যে।
বিদ্যাসাগর রবীন্দ্রনাথ নেহাৎ ছিলেন বােকা,
না হলে কেউ শখ করে হয় বাংলা বইয়ের পােকা?
মা বলল—চুপ করাে তাে, ওর ফল্টটা কিসে
স্কুলে কেন বেংগলিটা পড়ায় না ইংলিশে ?
In English font:
Bangla Tangla
Annual r result hate bari ferlo chele
See lessMaa bollo-Kuno paper e koto number pele?
History te Mom, Eighty four, maths e nine zero,
Maa bollo-fantastic Just like a hero.
Science e dad not so fair, Only sixty nine,
English e just ninety two, Altogether fine.
geographyr paper to hundred e hundred
Dubiye dilo Bengali ta very poor grade.
Cheler mathay haat rekhe Maa thut bekiye bole-
Never mind, Bengali ta na shikleo chole.
Baba bollo-besh bolecho bongomatar konna,
bangla tangla amar moto oshikkiter jone
Vidyashagar Rabindranath nehat chilen buka,
na hole keu shokh kore hoy bangla boier puka?
Maa bollo, Chup kara to, Or fault ta kishe
School e keno Bengali ta poray na English e?
বাংলায় অর্থসহ ব্যাখ্যা | The Poetry of Earth Bengali Meaning?
Hridoy
On the Grasshopper and Cricket BY JOHN KEATS দেওয়া থাকবে প্রত্যেক লাইনের অনুবাদ ব্যাখ্যা শব্দার্থ The Poetry of earth is never dead: পৃথিবীর কবিতার কোনো মৃত্যু নেই When all the birds are faint with the hot sun, যখন সূর্যের প্রখর তাপে সমস্ত পাখিরা নিস্তেজ হয়ে পড়ে And hide in cooling trees, a vRead more
On the Grasshopper and Cricket
BY JOHN KEATS
দেওয়া থাকবে
The Poetry of earth is never dead:
পৃথিবীর কবিতার কোনো মৃত্যু নেই
When all the birds are faint with the hot sun,
যখন সূর্যের প্রখর তাপে সমস্ত পাখিরা নিস্তেজ হয়ে পড়ে
And hide in cooling trees, a voice will run
এবং আশ্রয় নে গাছের শীতল ছায়ায় , একটি আওয়াজ ভেসে উঠে
From hedge to hedge about the new-mown mead;
সদ্য কাটা সবুজ ছোট্ট ঝোপের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে
That is the Grasshopper’s—he takes the lead
এটা হল ঘাসফড়িংয়ের স্বর – সে ই এগিয়ে আসে
In summer luxury,—he has never done
গ্রীস্মকালকে সুন্দর আর বিলাসবহুল করে তুলতে – সে কখনো থেমে যায় না
With his delights; for when tired out with fun
তার আমোদ প্রমোদ চলতে থাকে ; ফুর্তি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে
He rests at ease beneath some pleasant weed.
সে বিশ্রাম নেয় শান্ত কোনো আগাছার নিচে।
The poetry of earth is ceasing never:
পৃথিবীর কবিতার কোনো অন্ত নেই
On a lone winter evening, when the frost
কোনো এক একাকী শীতের সন্ধ্যায় – যখন তুষারপাত
Has wrought a silence, from the stove there shrills
নিয়ে আসে নিঃস্তব্ধতা , চুল্লি থেকে ভেসে উঠে উগ্র আওয়াজ
The Cricket’s song, in warmth increasing ever,
তা ই হল ঝিঝি পোকার গান, এই বেড়ে উঠা উষ্ণতা
And seems to one in drowsiness half lost,
কোনো তন্দ্রাচ্ছন্ন অবচেতন মানুষের কাছে মনে হয়
The Grasshopper’s among some grassy hills.
ওটা ঘাসফড়িংয়ের গান ভেসে আসছে কোনো তৃণাবৃত পাহাড় থেকে।
ব্যাখ্যা:
The poetry of the earth কবিতাটি লিখেছেন ইংরেজ কবি John Keats। কবিতাটির মূল বিষয়বস্তু আমাদের পৃথিবী। যদিও কবিতাটির ব্যাখ্যা বিভিন্ন ভাবে করা যায়। সাহিত্যগত অর্থে বললে poetry of the earth বুঝায় বিভিন্ন শব্দ যেগুলো আমরা প্রকৃতিতে পেয়ে থাকি। তা হতে পারে কোন পাখির অথবা কোন জন্তুর কিংবা অন্য কোন প্রাণীর। এইসব প্রাকৃতিক শব্দের মাধ্যমে এই পৃথিবী আমাদের সঙ্গে কথা বলে, যোগাযোগ স্থাপন করে। তাই বলা যায় poetry of the earth মানে পৃথিবীর ভাষা এবং তার সৌন্দর্যতা ও মাধুর্যতা।
কবি এখানে সেই প্রাকৃতিক ভাষার সৌন্দর্যতাকে আর মাধুর্যতাকে তুলে ধরেছেন। তার মতে পৃথিবীর সৌন্দর্য তার কোন শেষ নেই কোন মৃত্যু নেই। পাখির ডাক প্রখর সূর্যের মধ্যে শুনতে না পেলেও আমরা শুনতে পাই ঘাসফড়িং এর গান। প্রকৃতির আওয়াজ দিনকে করে চলে মনমুগ্ধকর। এমনকি শীতের দিনেও যখন তুষারপাতে চারিদিক নিস্তব্ধ হয়ে যায় তখন আমাদের কানে ভেসে ওঠে ঝিঁঝিঁ পোকার গান। এবং তা আলোড়িত করে তোলে আমাদের অবচেতন আত্মাকে। তাই কবি বলেছেন পৃথিবীর সৌন্দর্যতা, প্রকৃতির মাধুর্যতা অন্তহীন।
শব্দার্থ :
See lessfaint- নিস্তেজ
cooling trees- গাছের শীতল ছায়া
beneath- নিচে
hedge-ছোট্ট ঝোপ
mown mead- তৃণবহুল ক্ষেত্র
ceasing- অনন্ত
pleasant- শান্ত
weed-আগাছার
Grasshopper-ঘাসফড়িং
frost- তুষারপাত
lone-একাকী
wrought-গঠিত
shrills- উগ্র
Cricket’s song- ঝিঝি পোকার গান
warmth- উষ্ণ
drowsiness- তন্দ্রাচ্ছন্ন
half lost- অবচেতন
ছন্নছাড়া (অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত) Chonnochara Kobita lyrics in Bengali
Hridoy
ছন্নছাড়া অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া — আঁকাবাঁকা শুকনো কতকগুলি কাঠির কঙ্কাল শূন্যের দিকে এলোমেলো তুলে দেওয়া, রুক্ষ রুষ্ট রিক্ত জীর্ণ লতা নেই পাতা নেই ছায়া নেই ছাল-বাকল নেই নেই কোথাও এক আঁচড় সবুজের প্রতিশ্রুতি এক বিন্দু সরসের সম্ভাবনা । ওই পথ দিয়ে জRead more
ছন্নছাড়া
অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত
গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে
গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া —
আঁকাবাঁকা শুকনো কতকগুলি কাঠির কঙ্কাল
শূন্যের দিকে এলোমেলো তুলে দেওয়া,
রুক্ষ রুষ্ট রিক্ত জীর্ণ
লতা নেই পাতা নেই ছায়া নেই ছাল-বাকল নেই
নেই কোথাও এক আঁচড় সবুজের প্রতিশ্রুতি
এক বিন্দু সরসের সম্ভাবনা ।
ওই পথ দিয়ে
জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি ক’রে ।
ড্রাইভার বললে, ওদিকে যাব না ।
দেখছেন না ছন্নছাড়া ক’টা বেকার ছোকরা
রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে–
চোঙা প্যান্ট, চোখা জুতো, রোখা মেজাজ, ঠোকা কপাল–
ওখান দিয়ে গেলেই গাড়ি থামিয়ে লিফট চাইবে,
বলবে, হাওয়া খাওয়ান ।
ওরা কারা ?
চেনেন না ওদের ?
ওরা বিরাট এক নৈরাজ্যের –এক নেই রাজ্যের বাসিন্দে ।
ওদের কিছু নেই
ভিটে নেই ভিত নেই রীতি নেই নীতি নেই
আইন নেই কানুন নেই বিনয় নেই ভদ্রতা নেই
শ্লীলতা-শালীনতা নেই ।
ঘেঁষবেন না ওদের কাছে ।
কেন নেই ?
ওরা যে নেই রাজ্যের বাসিন্দে–
ওদের জন্যে কলেজে সিট নেই
অফিসে চাকরি নেই
কারখানায় কাজ নেই
ট্রামে-বাসে জায়গা নেই
মেলায়-খেলায় টিকিট নেই
হাসপাতালে বেড নেই
বাড়িতে ঘর নেই
খেলবার মাঠ নেই
অনুসরণ করবার নেতা নেই
প্রেরণা-জাগানো প্রেম নেই
ওদের প্রতি সম্ভাষণে কারু দরদ নেই–
ঘরে-বাইরে উদাহরণ যা আছে
তা ক্ষুধাহরণের সুধাক্ষরণের উদাহরণ নয়,
তা সুধাহরণের ক্ষুধাভরণের উদাহরণ–
শুধু নিজের দিকে ঝোল- টানা ।
এক ছিল মধ্যবিত্ত বাড়ির এক চিলতে ফালতু এক রক
তাও দিয়েছে লোপট ক’রে ।
তাই এখন পথে এসে দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে ।
কোথ্বকে আসছে সেই অতীতের স্মৃতি নেই ।
কোথায় দাঁড়িয়ে আছে সেই বর্তমানের গতি নেই
কোথায় চলেছে নেই সেই ভবিষ্যতের ঠিকানা ।
সেচ-হীন ক্ষেত
মণি-হীন চোখ
চোখ-হীন মুখ
একটা স্ফুলিঙ্গ-হীন ভিজে বারুদের স্তুপ ।
আমি বললুম, না ওদিক দিয়েই যাব,
ওখান দিয়েই আমার শর্টকাট ।
ওদের কাছাকাছি হতেই মুখ বাড়িয়ে
জিজ্ঞেস করলুম,
তোমাদের ট্যাক্ সি লাগবে ? লিফট চাই ?
আরে এই তো ট্যাক্ সি, এই তো ট্যাক্ সি, লে হালুয়া
সোল্লাসে চেঁচিয়ে উঠল ওরা
সিটি দিয়ে উঠল
পেয়ে গেছি পেয়ে গেছি চল পানসি বেলঘরিয়া ।
তিন-তিনটে ছোকরা উঠে পড়ল ট্যাক্ সীতে,
বললুম কদ্দুর যাবে ।
এই কাছেই । ওই দেখতে পাচ্ছেন না ভিড় ?
সিনেমা না, জলসা না, নয় কোনো ফিল্মি তারকার অভ্যর্থনা ।
একটা নিরীহ লোক গাড়িচাপা পড়েছে,
চাপা দিয়ে গাড়িটা উধাও–
আমাদের দলের কয়েকজন গাড়িটার পিছে ধাওয়া করেছে
আমরা খালি ট্যাক্ সি খুঁজছি ।
কে সে লোক ?
একটা বেওয়ারিশ ভিখিরি ।
রক্তে-মাংসে দলা পাকিয়ে গেছে ।
ওর কেউ নেই কিছু নেই
শোবার জন্য ফুটপাথ আছে তো মাথার উপরে ছাদ নেই,
ভিক্ষার জন্য পাত্র একটা আছে তো
তার মধ্যে প্রকান্ড একটা ফুটো ।
রক্তে মাখামাখি সেই দলা-পাকানো ভিখিরিকে
ওরা পাঁজাকোলা করে ট্যাক্ সির মধ্যে তুলে নিল ।
চেঁচিয়ে উঠল সমস্বরে –আনন্দে ঝংকৃত হয়ে–
প্রাণ আছে, এখনো প্রাণ আছে ।
রক্তের দাগ থেকে আমার ভব্যতা ও শালীনতাকে বাঁচাতে গিয়ে
আমি নেমে পড়লুম তাড়াতাড়ি ।
তারপর সহসা শহরের সমস্ত কর্কশে-কঠিনে
সিমেন্টে-কংক্রিটে ।
ইটে-কাঠে-পিচে-পাথরে দেয়ালে-দেয়ালে
বেজে উঠল এক দুর্বার উচ্চারণ
এক প্রত্যয়ের তপ্ত শঙ্খধ্বনি–
প্রাণ আছে, এখনো প্রাণ আছে
সমস্ত বাধা-নিষেধের বাইরেও
আছে অস্তিত্বের অধিকার ।
ফিরে আসতেই দেখি
গলির মোড়ে গাছের সেই শুকনো বৈরাগ্য বিদীর্ণ ক’রে
বেরিয়ে পড়েছে হাজার-হাজার সোনালি কচি পাতা
মর্মরিত হচ্ছে বাতাসে,
দেখতে দেখতে গুচ্ছে গুচ্ছে উথলে উঠছে ফুল
ঢেলে দিয়েছে বুকের সুগন্ধ,
উড়ে এসেছে রঙ-বেরঙের পাখি
শুরু করেছে কলকন্ঠের কাকলি,
ধীরে ধীরে ঘন পত্রপুঞ্জে ফেলেছে স্নেহার্দ্র দীর্ঘছায়া
যেন কোনো শ্যামল আত্মীয়তা ।
অবিশ্বাস্য চোখে চেয়ে দেখলুম
কঠোরের প্রচ্ছন্নে মাধুর্যের বিস্তীর্ণ আয়োজন ।
প্রাণ আছে, প্রাণ আছে– শুধু প্রাণই আশ্চর্য সম্পদ
এক ক্ষয়হীন আশা
এক মৃত্যুহীন মর্যাদা ।
English Transliteration:
Chonnochara
Galir more ekta gach dariye
Gach na gacher pretocchya-
Akabaka shukno katakguli kathir konkal
shunner dike elomelo tule dewa,
Rukkho, rusto rikto jirno
lata nei pata nei chaya nei chal bakol nei
Nei kuthao ek aachor shabujer protisruti
Ek bindu shorosher shombabhona
Oi poth diye
jaruri dorkare jacchilam taxi kore.
Dekhchen na choinnochara kota bekar chukra
rastar majkhane dariye adda dicche
Chonga pant, chokha joto, Rukha mejaj, thoka kopal-
Okhan diye gelei gari thamiye lift chaibe,
Bolbe, hawa khawan.
Ora kara?
Chenen na oder?
Ora birat ek noirajjer-ek nei rajjer bashinde.
Oder kichu nei
Vite nei vit nei riti nei niti nei
Aain nei kanun nei binoy nei vodrota nei
Shlilota-shalinota nei.
Gheshben na oder kache.
Keno nei?
Ora je nei rajjer bashinde-
Oder jonno college e seat nei
Office e chakri nei
Karkhanay kaj nei
Trum e bus e jaiga nei
Melay-khelay ticket nei
Haspatale bed nei
barite ghar nei
Khelbar math nei
Onusharan korbar neta nei
Preorona jagano prem nei
Oder proto shombashane karo darad nei
Ghare baire udaharan ja aache
ta khudaharaner shudhakkharaner udaharan noy,
Ta shudhaharaner Khudavaraner udaharan-
Shudu nijer dike jhol tana.
Ek chil moddobitto barir ek chilte faltu ek rock
tao diyeche lopat kore.
Tai ekhon pothe eshe dariyeche saraker majhkhane.
Kottheke aashche shei otiter sriti nei.
kothay dariye aache shei bortamaner gati nei
Kothay cholche nei shei bhovishoter thikana.
Shech-hin khet
moni-hin chokh
Chokh-hin mukh
ekta sfulinga-hin bhije baruder stup
Ami bollum, na odik diyei jabo
Okhan diyei amar shortcut.
Oder kachakachi hotei mukh bariye
Jiggesh karlum,
Tomader taxi lagbe? lift chai?
Arey ei to taxi, ei to taxi, le halua
Shoullashe chechiye uthlo ora
siti diye uthlo
Peye gechi peye gechi chal panshi belgariya.
Tin tin te chokra uthe parlo taxi te
Bollum katadur jabe
Ei kachei, Ei dekhte pacchen na bhir?
Cinema na, jholsha na, Noy kuno filmi tarakar obvorthona
Ekta niriho lok gari chapa poreche,
Chapa diye garita udao-
Amader doler koyekjan Garitar pichane dawa korche
Amra khali taxi khujchi.
Ke she lok?
Ekta bewaris bhikiri.
Rakta mangshe dola pakiye geche
Or keu nei kichu nei
Shobar jonno footpath aache to mathar upar saad nei,
Vikkar jonno patro ekta aache to
Tar moddhe prokando ekta futo
Rakta mangshe shei dola pakano bhikirike
Ora pajakola kore taxi r moddhe tule nilo.
Chechiye uthla shomoshore-aanande jhongkrito hoye-
pran aache pran aache ekono pran aache.
Rakter daag theke amra bhovyota o shalinatake bachate giye
Ami neme parlum taratari
Tarpar shohosha shahorer shamasta karkashe kothin
Ciment konkrit e
Ite-kathe-piche-pathare deyale-deyale
Beje uthlo ek durbar uccharan
Ek prottoyer tapta shankadhani-
pran aache ekono pran aache.
Shamasta badha nisheder baireo
Aache ostitter odhikar
Fire aashtei deki
See lessGalir more gacher shei shukno boiraggo bidirna kore
Beriye poreche hazar hazar shonali kochi pata
marmarito hocche batashe,
Dekhte dekhte gucche gucche uthle uthche ful
Dele diyeche buker shugandha,
ure esheche rang-beranger pakhi
Shuru koreche kal kanther kakoli,
Dhire dhire ghana potrapunje feleche snehardo dirgachaya
jeno kuno shyamal aattiyota
Obishasho choke cheye deklom
Kothorer procchonne madhurjer bistirna aayojan
Pran aache pran aache shudu pran e aashchajyo shampad
Ek khoyhin aasha
Ek mrittuhin morjada
প্লেটলেটস কি? What is Platelets meaning in Bengali?
Hridoy
Platelets - প্লাটেলেটস কে বাংলায় বলা হয় অণুচক্রিকা।ইহা রক্তে থাকা অতিক্ষুদ্র অনিয়মিত আকারের কোষ। সহজ ভাষায় বলতে হলে রক্তের ক্ষুদ্রতম কোষকে অণুচক্রিকা বলে। শরীরে কি পরিমাণ থাকা উচিত - স্বাস্থ্যবানদের জন্য সাধারণ পরিসীমা প্রতি ঘন মিলিমিটারে ১৫০,০০০ থেকে ৪৫০,০০০ টি অণুচক্রিকা বা ১৫০-৪৫০x১০^৯ প্রতি লিটRead more
Platelets – প্লাটেলেটস কে বাংলায় বলা হয় অণুচক্রিকা।ইহা রক্তে থাকা অতিক্ষুদ্র অনিয়মিত আকারের কোষ। সহজ ভাষায় বলতে হলে রক্তের ক্ষুদ্রতম কোষকে অণুচক্রিকা বলে।
শরীরে কি পরিমাণ থাকা উচিত – স্বাস্থ্যবানদের জন্য সাধারণ পরিসীমা প্রতি ঘন মিলিমিটারে ১৫০,০০০ থেকে ৪৫০,০০০ টি অণুচক্রিকা বা ১৫০-৪৫০x১০^৯ প্রতি লিটার প্রবীণদের ক্ষেত্রে।
মাপার পদ্দতি– প্লাটেলেটসের ঘনত্ব হিমোসাইটোমিটার ব্যবহার করে মাপা হয় বা কুল্টার কাউন্টারের মতো বৈদ্যুতিক প্রতিবন্ধকতা ব্যবহার করে একটি স্বয়ংক্রিয় অণুচক্রিকা বিশ্লেষকে রক্ত রেখে মাপা যায়।
প্লাটেলেটসের কার্যকলাপ -প্লাটেলেটস বৃদ্ধির প্রাকৃতিক উৎস হিসাবে কাজ করে। স্তন্যপায়ীদের দেহে এরা সংবাহিত হয় এবং রক্ততঞ্চনে অর্থাৎ ক্ষতস্থানের রক্ত জমাট বাঁধায় নিয়োজিত থাকে। অণুচক্রিকা সূতার আঁশের ন্যায় রক্তকে জমাট বাঁধায় সাহায্য করে। অণুচক্রিকা বিভিন্ন বৃদ্ধিবর্ধক উপাদান উৎপন্ন করে যেমন প্লেটলেট-ডেপরাইভড্ গ্রোথ ফ্যাক্টর (পিডিজিএফ), এ পটেন্ট কেমোট্যাক্টিক এজেন্ট এবং টিজিএফ বেটা যা অতিরিক্ত কোষীয় মাতৃকাকে তরান্বিত করে। উভয় বৃদ্ধিবর্ধক উপাদান সংযোজক কলার পুনর্গঠন এবং পুনঃনির্মানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মাত্রা কমে গেলে কি সমস্যা দে -প্লাটেলেটসের সংখ্যা খুব কমে গেলে হতে পারে মারাত্মক রক্তক্ষরণ । আবার সংখ্যা খুব বৃদ্ধি হলে তা রক্তনালিকাগুলোকে বাঁধা দিয়ে থ্রম্বোসিস ঘটাতে পারে এবং এমন পরিস্থিতিতে স্ট্রোক, মাইওকার্ডিয়াল ইনফ্র্যাকশন, ফুসফুসীয় ধমনীরোধ এবং রক্তনালিকা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
See lessপ্লাটেলেটসের অস্বাভাবিকতা বা রোগকে থ্রম্বোসাইটোপ্যাথি বলা হয। যা হতে পারে প্লাটেলেটস কমে গেলে (থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া), অণুচক্রিকার স্বাভাবিক কাজ বাধাগ্রস্ত হলে (থ্রম্বোস্টেনিয়া) কিংবা অণুচক্রিকার সংখ্যা বেড়ে গেলে (থ্রম্বোসাইটোসিস)।
এছাড়া বেশকিছু রোগের কারণেও অণুচক্রিকা কমতে পারে যেমন ডেঙ্গু বা হেপারিন-ইনডিউজড থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া
কবিতাঃ ব্রিলিয়ান্ট ছেলে (শুভ দাশগুপ্ত ) Brilliant Chele Kobita lyrics in Bengali
Hridoy
ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা (শুভ দাশগুপ্ত ) ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা ব্রিলিয়ান্ট কেরিয়ার তৈরী করে ……. তারা প্রথমে গাঁয়ে- মফস্বলে হরিপ্রসন্ন স্কুলে গেঁয়ো বন্ধুদের সাথে লেখাপড়া শেখে । তারপর - ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট করে সকলকে চমকে দেয় । তারপর তারা উচ্চতর শিক্ষার জন্য চলে যায় ব্যাঙ্গালোর কিংবা দিল্লী ,কিংবা পুণে সেখানে গRead more
ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা (শুভ দাশগুপ্ত )
ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা ব্রিলিয়ান্ট কেরিয়ার তৈরী করে …….
তারা প্রথমে গাঁয়ে- মফস্বলে হরিপ্রসন্ন স্কুলে গেঁয়ো বন্ধুদের সাথে লেখাপড়া শেখে ।
তারপর –
ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট করে সকলকে চমকে দেয় ।
তারপর তারা উচ্চতর শিক্ষার জন্য চলে যায়
ব্যাঙ্গালোর কিংবা দিল্লী ,কিংবা পুণে
সেখানে গিয়ে তারা বড় বড় নম্বর পায় ! পজিশন পায় !
তারপর সেই নম্বর প্লেট গলায় ঝুলিয়ে তারা মস্ত মস্ত কোম্পানীতে ভালো ভালো চাকরি পায় !
প্রচুর স্যালারি ! দামি ফ্ল্যাট ! ভালো গাড়ী !
ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা ….. এরপর বিদেশের বিমানে গিয়ে বসে ।
পৌঁছে যায় আমেরিকা ,জার্মানি কিংবা আবুধাবী …. অথবা সিঙ্গাপুর কিংবা কানাডা !
ব্রিলিয়ান্ট ছেলেদের , ঐ সব দেশ টপাটপ কিনে নেয় ।
ঐ সব ব্রিলিয়ান্ট দেশ ,আমাদের ব্রিলিয়ান্টদের জন্য বিলাসবহুল বাড়ি – গাড়ি
আর প্রচুর ডলারের ব্যবস্থা করে দেয় ….
সেখানে আমাদের ব্রিলিয়ান্টরা সুখে থাকে ।
সুখে থাকতে থাকতে ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা ভুলে যায় তাদের দেশ গাঁয়ের কথা , হরিপ্রসন্ন স্কুলের কথা —
গাঁয়ের বন্ধুদের কথা ক্রমে ভুলে যেতে থাকে !
মনে রাখতে পারে না —– খুড়তুতো , জ্যাঠতুতো সব অসফল ভাই বোনেদের কথা ।
ব্রিলিয়ান্টদের জগতে ইমোশন নেই ! প্রোমোশন আছে ।
ব্রিলিয়ান্টদের অতীত নেই ! কেবল ভবিষ্যৎ , কেবল ফিউচার ।
ছোট চেয়ার থেকে বড় চেয়ার ……নন এসি থেকে এসি ।
ব্রিলিয়ান্ট ছেলেরা বাবা- মা কে মাঝে মধ্যে টাকা পাঠায় ….অ -নে -ক টাকা !!!!
সেই টাকা হাতে পেয়ে ব্রিলিয়ান্টদের বাবার মুখে ফুটে ওঠে হাসি।
মায়ের চোখ ভরে ওঠে জলে ।
ব্রিলিয়ান্টরা এই ন্যাস্টি ইন্ডিয়াতে আর ফিরে আসতে চায় না ।
এত ভিড় ! এত ধুলোকাদা ! এত কোরাপশন !
এসবের মধ্যে তাদের গা ঘিনঘিন করে
তবু যদি কখনও আসে ……..
অনেক অনেক ফরেইন জিনিস নিয়ে আসে ।
মায়ের জন্য ইতালির চাদর , বাবার জন্য ফ্রান্সের সিগারেট .. সঙ্গে জাপানি লাইটার ,
আলো জ্বললেই যা থেকে টুং টাং করে বাজনা বেজে ওঠে ।
ব্রিলিয়ান্টদের ব্যাপার স্যাপারই আলাদা ……..
ব্রিলিয়ান্টদের ব্রিলিয়ান্ট বানিয়ে তুলতে কেরানী বাবাকে যে কতদিন কর্মক্লান্ত দুপুরে টিফিনে একটা চাপাকলা কিংবা
একটাকার শুকনো মুড়িতে পেট ভরিয়েছেন ……
কতকাল যে মা কোনো নতুন শাড়ী কেনাকে বিলাসিতা মনে করে ছেঁড়া শাড়ীতে দিন কাটিয়েছেন !!!
এসব তথ্য ব্রিলিয়ান্টদের ল্যাপটপে থাকেনা । ব্রিলিয়ান্টদের ল্যাপটপে নায়াগ্রার দূরন্ত জলোচ্ছ্বাস , কিংবা
ভিসুভিয়াসের ছবি থাকে …….
এই শ্যামল বাংলার নদী গাছ , বর্ষার মেঘ —–
এসব হাবিজাবি সেখানে ইনসার্ট করা যায় না ।
ব্রিলিয়ান্টরা সদা ব্যস্ত ! ভীষণ ব্যস্ত …… !
তারা সঙ্গীত শোনেনা , তারা গল্প বা কবিতা পড়ে সময় নষ্ট করেনা ।
তারা আকাশ দেখে না , বৃষ্টিতে তাদের মন খারাপ হয় না ।
তারা কেবল কাজ করে ,কেবল ব্যাস্ততায় ডুবে থাকে ।
বৃষ্টি নেমেছে আকাশ ভেঙ্গে …….শ্রাবণ মাস ।
মা মৃত্যুশয্যায় …..বাড়ি ভর্তি লোকজন ।
অসুস্থ বাবা বারান্দায় চেয়ারে বসে আছেন শূন্য চোখে ……
ডাক্তার জবাব দিয়ে গেছেন ….গোটা বাড়িতে অদ্ভুত এক নিস্তব্ধতা !
কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে মা জিজ্ঞেস করছেন ….. খোকন এলো ? খো – ক – ন ………….!
ব্রিলিয়ান্ট খোকন তখন ফ্লাইটে …..
সবাই মা কে বোঝাচ্ছে ঐ তো ঐ তো খোকন এলো বলে !
কিন্তু সে ফ্লাইট চলে যাচ্ছে কানাডায়।
কানাডায় কোম্পানীর নতুন শাখা উদ্বোধন।
খোকন যাচ্ছে আরও বড়ো দায়িত্ব নিয়ে , আরও বেশী ডলার ……..
এখানে এই পোড়া দেশে ব্রিলিয়ান্ট খোকনের মা
ছেলের মুখ না দেখেই শেষ বারের মতো চোখ বুঁজলেন …..।।
আমরা এখন ঘরে ঘরে সবাই —— এমন ব্রিলিয়ান্ট ছেলে গড়ে তুলতেই ব্যস্ত…….।
See lessসক্কলে!
রুপাই – জসিম উদ্দিন | Rupai kobita in Bengali
Hridoy
রুপাই - জসীমউদ্দীন এই গাঁয়ের এক চাষার ছেলে লম্বা মাথার চুল, কালো মুখেই কালো ভ্রমর, কিসের রঙিন ফুল! কাঁচা ধানের পাতার মত কচি-মুখের মায়া, তার সাথে কে মাখিয়ে দেছে নবীন তৃণের ছায়া | জালি লাউয়ের ডগার মত বাহু দুখান সরু, গা-খানি তার শাঙন মাসের যেমন তমাল তরু | বাদল-ধোয়া মেঘে কে গো মাখিয়ে দেছে তেল, বিRead more
রুপাই – জসীমউদ্দীন
এই গাঁয়ের এক চাষার ছেলে লম্বা মাথার চুল,
কালো মুখেই কালো ভ্রমর, কিসের রঙিন ফুল!
কাঁচা ধানের পাতার মত কচি-মুখের মায়া,
তার সাথে কে মাখিয়ে দেছে নবীন তৃণের ছায়া |
জালি লাউয়ের ডগার মত বাহু দুখান সরু,
গা-খানি তার শাঙন মাসের যেমন তমাল তরু |
বাদল-ধোয়া মেঘে কে গো মাখিয়ে দেছে তেল,
বিজলী মেয়ে পিছলে পড়ে ছড়িয়ে আলোর খেল |
কচি ধানের তুলতে চারা হয়ত কোনো চাষী,
মুখে তাহার ছড়িয়ে গেছে কতকটা তার হাসি |
কালো চোখের তারা দিয়েই সকল ধরা দেখি,
কালো দাতের কালি দিয়েই কেতাব কোরাণ লেখি |
জনম কালো, মরণ কালো, কালো ভূবনময় ;
চাষীদের ওই কালো ছেলে সব করেছে জয় |
সোনায় যে জন সোনা বানায়, কিসের গরব তার’
রঙ পেলে ভাই গড়তে পারি রামধণুকের হার |
কালোয় যে-জন আলো বানায়, ভুলায় সবার মন,
তারি পদ-রজের লাগি লুটায় বৃন্দাবন |
সোনা নহে, পিতল নহে, নহে সোনার মুখ,
কালো-বরণ চাষীর ছেলে জুড়ায় যেন বুক |
যে কালো তার মাঠেরি ধান, যে কালো তার গাঁও!
সেই কালোতে সিনান করি উজল তাহার গাও |
আখড়াতে তার বাঁশের লাঠি অনেক মানে মানী,
See lessখেলার দলে তারে নিয়েই সবার টানাটানি |
জারীর গানে তাহার গলা উঠে সবার আগে,
‘শাল-সুন্দী-বেত’ যেন ও, সকল কাজেই লাগে |
বুড়োরা কয়, ছেলে নয় ও, পাগাল লোহা যেন,
রূপাই যেমন বাপের বেটা, কেউ দেখেছ হেন?
যদিও রূপা নয়কো রূপাই, রূপার চেয়ে দামী,
এক কালেতে ওরই নামে সব গাঁ হবে নামী |
বাবু – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | Babu by Bankim Chandra Chattopadhyay in Bengali
Hridoy
বাবু - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (‘লোকরহস্য’ বইয়ের অন্তর্গত একটি প্ৰবন্ধ। মূলত এটি প্রকাশিত হয়েছিল বঙ্গদর্শন পত্রিকার ১২৭৯-র ফাল্গুন সংখ্যায়।) “জনমেজয় কহিলেন, হে মহর্ষে! আপনি কহিলেন যে, কলি যুগে নেতা নামে এক প্রকার মনুষ্যেরা পৃথিবীতে আবির্ভূত হইবেন । তাঁহারা কি প্রকার মনুষ্য হইবেন এবং পৃথিবীতRead more
বাবু – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
(‘লোকরহস্য’ বইয়ের অন্তর্গত একটি প্ৰবন্ধ। মূলত এটি প্রকাশিত হয়েছিল বঙ্গদর্শন পত্রিকার ১২৭৯-র ফাল্গুন সংখ্যায়।)
“জনমেজয় কহিলেন, হে মহর্ষে! আপনি কহিলেন যে, কলি যুগে নেতা নামে এক প্রকার মনুষ্যেরা পৃথিবীতে আবির্ভূত হইবেন । তাঁহারা কি প্রকার মনুষ্য হইবেন এবং পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়া কি কার্য করিবেন, তাহা শুনিতে বড় কৌতূহল জন্মিতেছে । আপনি অনুগ্রহ করিয়া সবিস্তারে বর্ণন করুন ।
বৈশম্পায়ন কহিলেন, হে নরবর! আমি সেই কূটবুদ্ধি, পানভোজনকুশলী নেতাগণকে আখ্যাত করিব, আপনি শ্রবণ করুন । আমি সেই চেন অলংকৃত, অদ্ভুতচরিত্র, বহুভাষী, বাইট-প্রিয় নেতাদিগের চরিত্র কীর্তিত করিতেছি, আপনি শ্রবণ করুন । হে রাজন, যাঁহারা পাঞ্জাবি-পাজামাবৃত, মোবাইলকর্ণগত, গ্রহরত্নখচিত অঙ্গুরিয়শোভিত, এবং রোদচসমা পরিহিত, তাঁহারাই নেতা । যাঁহারা বাক্যে অজেয়, অপভাষাপারদর্শী, সুস্থভাষাবিরোধী, তাঁহারাই নেতা । মহারাজ! এমন অনেক মহাবুদ্ধিসম্পন্ন নেতা জন্মিবেন যে তাঁহারা সুস্থভাষায় বাক্যালাপে অসমর্থিত হইবেন । যাঁহাদিগের রসনেন্দ্রিয় অন্যদলীয় নেতানেত্রীপ্রতি গালিদানে পবিত্র, তাঁহারাই নেতা । যাঁহাদিগের চরণ মাংসাস্থিবিহীন শুষ্ক কাষ্ঠের ন্যায় হইলেও দুর্বলোপরি পাদপ্রহারে সক্ষম; হস্ত দুর্বল হইলেও মাইকধারণে এবং অর্থগ্রহনে সুপটু, তাঁহারাই নেতা । যাঁহারা ক্ষমতালাভের উদ্দেশ্যে রাজনীতি করিবেন, রাজনীতির জন্য পার্টি করিবেন, পার্টির জন্য অপরাধ করিবেন, এবং আইনের হস্ত হইতে বাঁচিবার জন্য অপর পার্টিতে যোগদান করিবেন, তাঁহারাই নেতা ।
মহারাজ! নেতা শব্দ নানার্থ হইবে । যাঁহারা কলিযুগের ভারতবর্ষে পরোক্ষে শাসক হইয়া ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট নামে খ্যাত হইবেন, তাঁহাদিগের নিকট ‘নেতা’ অর্থে শ্রমিক ইউনিয়নের পদাধিকারী বুঝাইবে । আই-পি-এল দলবিশেষের খেলোয়াড়দিগের নিকটে ‘নেতা’ শব্দে চিত্রতারকা বুঝাইবে । মার্কেটিং কর্মীদের নিকট ‘নেতা’ অর্থে টিম লিডার বুঝাইবে । এ সকল হইতে পৃথক, কেবল নেতাজন্ম নির্বাহ করিতে অভিলাষী কতকগুলিন মনুষ্য জন্মিবেন। আমি কেবল তাঁহাদিগেরই গুণকীর্তন করিতেছি । যিনি বিপরীতার্থ করিবেন, তাঁহার এই মহাভারত শ্রবণ নিষ্ফল হইবে। তিনি জনগণের এক জন হইয়া নেতাদিগের লক্ষ্য হইবেন ।
হে নরাধিপ! সাধারণের বিপরীতে অবস্থান করিবার নিমিত্ত পঞ্চভূত নেতাদিগেরই কর্তৃত্বাধীন থাকিবেন । যথা, ক্ষিতি ইঁহাদিগের অতীব ক্ষমতাশালী আয়ুধ হইবে । শতনামে সহস্র পরিমাণ জমি নেতাগণ ভোগ করিবেন । দ্বিতীয় অগস্ত্যের ন্যায় সমুদ্ররূপী বরুণকে ইঁহারা শোষণ করিবেন, পানপাত্র ইঁহাদিগের গন্ডূষ । অগ্নিও ইঁহাদিগের আজ্ঞাবহ হইবেন – ‘সিগারেট’ নামক একটি অভিনব খান্ডবকে আশ্রয় করিয়া রাত্রিদিন ইঁহাদিগের মুখে লাগিয়া থাকিবেন । ইঁহাদিগের যেমন মুখে অগ্নি, তেমনি অন্তরেও অগ্নি জ্বলিবেন । সেই অন্তরাগ্নির জ্বলন মধ্যে মধ্যে অন্যদলীয় সমর্থকরা তাঁহাদের আপন গৃহাভ্যন্তরে অনুভব করিবেন । বায়ু ইঁহাদিগের গৃহের বাহিরে বাহনরূপে এবং জঠরমধ্যে গ্যাসরূপে নিত্য বিরাজমান থাকিবেন । ইঁহাদিগের অধিকাংশ চন্দ্রলোভী বামন হইবেন, কেহ কেহ মধ্যাহ্নে চন্দ্র এবং নিশীথে সূর্য দেখিবেন ।
সমাজকে ইঁহারা বহুধা বিভক্ত করিবেন—ভদ্রতা করিয়া সেই দুর্ধর্ষ কার্যের নাম রাখিবেন, ‘সমাজসেবা’। জনগণের সম্মুখে ইঁহারা পূজার্চনা করিবেন, মন্দির মসজিদ গড়িবেন, আর তাঁহাদিগের পশ্চাতে যে পবিত্র স্থানে ইঁহারা আরাধনায় নিমগ্ন থাকিবেন তাহার নাম হইবে ‘গেস্ট হাউস’।
হে নরশ্রেষ্ঠ! যিনি কাব্যরসাদিতে বঞ্চিত, সঙ্গীতে দগ্ধ কোকিলাহারী, যাঁহার পান্ডিত্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুস্তকাগত, তিনিই নেতা। ইঁহাদিগের সমর্থকেরা ইঁহাদের কাব্যে কালিদাস, সঙ্গীতে সরস্বতী, পান্ডিত্যে পাণিনি বলিয়া প্রচার করিবেন এবং তাহা শ্রবণ করিয়া যিনি আপনাকে অনন্তজ্ঞানী বিবেচনা করিবেন, তিনিই নেতা । যিনি নারীজাতির অবমাননাকারির শাস্তি লঘু করিতে প্রতিশ্রুত হইবেন, পরে তাঁহার বক্তব্য বিকৃত করা হইয়াছে দাবি করিয়া সংবাদ মাধ্যমের মুন্ড চর্বন করিবেন, তিনিই নেতা । যিনি স্বদলীয় কর্মীর অপরাধ লুকাইয়া রাখিবেন, ব্যক্তিবিশেষকে ব্যবহার করিয়া অবৈধ সুবিধা লইবেন এবং সুবিধালাভ সমাপ্ত হইলে তাহাকে সুদূরে নিক্ষেপ করিবেন, তিনিই নেতা । যাঁহার বাক্য মনোমধ্যে এক, কথনে দশ, লিখনে শত এবং ভাষণকালে সহস্র, তিনিই নেতা ।
যিনি ইতিহাসের কিছুই জানিবেন না, অর্থনীতির কিছুই বুঝিবেন না, কেবল আপনাকে অভ্রান্ত জানিয়া আপনার মত জনগণের উপর চাপাইয়া দিবেন, তিনিই নেতা । যিনি ফান্ড সংগ্রহার্থ দুর্গাপূজা করিবেন, সমর্থকদের প্রীতিসম্পাদনার্থ গণেশপূজা করিবেন এবং নির্বাচনে জয়ের লোভে ঈদ পালন করিবেন, তিনিই নেতা ।
হে কুরুকুলভূষণ! দেবদেবীদের কথা যখন উঠিল তখন বলা যাউক, বিষ্ণুর সহিত এই নেতাদিগের বিশেষ সাদৃশ্য হইবে । ইঁহারা বিষ্ণুর তুল্য লীলাপটু হইবেন, বিষ্ণুর ন্যায় ইঁহাদিগেরও দশ অবতার হইবে । যথা – কেরানী, মাস্টার, অভিনেতা, ব্যবসায়ী, ডাক্তার, উকিল, ধর্মগুরু, অবসরপ্রাপ্ত অফিসার, সংবাদপত্র সম্পাদক এবং নিষ্কর্মা। সকল অবতারেই ইঁহারা অমিত বলপরাক্রম অসুরগণকে বধ করিবেন । কেরানী অবতারে বধ্য অসুর প্রশাসন মুখাপেক্ষী, মাস্টার অবতারে বধ্য ছাত্র, অভিনেতা অবতারে বধ্য দর্শক, ব্যবসায়ী অবতারে বধ্য ক্রেতা, ডাক্তার অবতারে বধ্য রোগী, উকিল অবতারে বধ্য মক্কেল, ধর্মগুরু অবতারে বধ্য ধর্মভীরু, অফিসার অবতারে বধ্য আপনারই ছেড়ে আসা সরকার, সম্পাদক অবতারে বধ্য পাঠক, এবং নিষ্কর্মাবতারে বধ্য উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী ।
হে নরনাথ! আমি যাঁহাদিগের কথা বলিলাম, তাঁহাদিগের মনে মনে বিশ্বাস জন্মিবে যে, তাঁহারা আইনসভা দখল করিয়া, তথায় বাগাড়ম্বরের মেঘ জমাইয়া, মরিচবিষের বৃষ্টি নামাইয়া, কর্দমাক্ত সলিলে মৎস্যশিকার করিয়া ভারতবর্ষের পুনরুদ্ধার করিবেন ।
জনমেজয় কহিলেন, হে মুনিপুঙ্গব! নেতাদিগের জয় হউক, আপনি অন্য প্রসঙ্গ আরম্ভ করুন ।”
বাবু – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | Bengali essay Babu Written by Bankim Chandra pdf
Hridoy
বাবু - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (‘লোকরহস্য’ বইয়ের অন্তর্গত একটি প্ৰবন্ধ। মূলত এটি প্রকাশিত হয়েছিল বঙ্গদর্শন পত্রিকার ১২৭৯-র ফাল্গুন সংখ্যায়।) “জনমেজয় কহিলেন, হে মহর্ষে! আপনি কহিলেন যে, কলি যুগে নেতা নামে এক প্রকার মনুষ্যেরা পৃথিবীতে আবির্ভূত হইবেন । তাঁহারা কি প্রকার মনুষ্য হইবেন এবং পৃথিবীতRead more
বাবু – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
(‘লোকরহস্য’ বইয়ের অন্তর্গত একটি প্ৰবন্ধ। মূলত এটি প্রকাশিত হয়েছিল বঙ্গদর্শন পত্রিকার ১২৭৯-র ফাল্গুন সংখ্যায়।)
“জনমেজয় কহিলেন, হে মহর্ষে! আপনি কহিলেন যে, কলি যুগে নেতা নামে এক প্রকার মনুষ্যেরা পৃথিবীতে আবির্ভূত হইবেন । তাঁহারা কি প্রকার মনুষ্য হইবেন এবং পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়া কি কার্য করিবেন, তাহা শুনিতে বড় কৌতূহল জন্মিতেছে । আপনি অনুগ্রহ করিয়া সবিস্তারে বর্ণন করুন ।
বৈশম্পায়ন কহিলেন, হে নরবর! আমি সেই কূটবুদ্ধি, পানভোজনকুশলী নেতাগণকে আখ্যাত করিব, আপনি শ্রবণ করুন । আমি সেই চেন অলংকৃত, অদ্ভুতচরিত্র, বহুভাষী, বাইট-প্রিয় নেতাদিগের চরিত্র কীর্তিত করিতেছি, আপনি শ্রবণ করুন । হে রাজন, যাঁহারা পাঞ্জাবি-পাজামাবৃত, মোবাইলকর্ণগত, গ্রহরত্নখচিত অঙ্গুরিয়শোভিত, এবং রোদচসমা পরিহিত, তাঁহারাই নেতা । যাঁহারা বাক্যে অজেয়, অপভাষাপারদর্শী, সুস্থভাষাবিরোধী, তাঁহারাই নেতা । মহারাজ! এমন অনেক মহাবুদ্ধিসম্পন্ন নেতা জন্মিবেন যে তাঁহারা সুস্থভাষায় বাক্যালাপে অসমর্থিত হইবেন । যাঁহাদিগের রসনেন্দ্রিয় অন্যদলীয় নেতানেত্রীপ্রতি গালিদানে পবিত্র, তাঁহারাই নেতা । যাঁহাদিগের চরণ মাংসাস্থিবিহীন শুষ্ক কাষ্ঠের ন্যায় হইলেও দুর্বলোপরি পাদপ্রহারে সক্ষম; হস্ত দুর্বল হইলেও মাইকধারণে এবং অর্থগ্রহনে সুপটু, তাঁহারাই নেতা । যাঁহারা ক্ষমতালাভের উদ্দেশ্যে রাজনীতি করিবেন, রাজনীতির জন্য পার্টি করিবেন, পার্টির জন্য অপরাধ করিবেন, এবং আইনের হস্ত হইতে বাঁচিবার জন্য অপর পার্টিতে যোগদান করিবেন, তাঁহারাই নেতা ।
মহারাজ! নেতা শব্দ নানার্থ হইবে । যাঁহারা কলিযুগের ভারতবর্ষে পরোক্ষে শাসক হইয়া ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট নামে খ্যাত হইবেন, তাঁহাদিগের নিকট ‘নেতা’ অর্থে শ্রমিক ইউনিয়নের পদাধিকারী বুঝাইবে । আই-পি-এল দলবিশেষের খেলোয়াড়দিগের নিকটে ‘নেতা’ শব্দে চিত্রতারকা বুঝাইবে । মার্কেটিং কর্মীদের নিকট ‘নেতা’ অর্থে টিম লিডার বুঝাইবে । এ সকল হইতে পৃথক, কেবল নেতাজন্ম নির্বাহ করিতে অভিলাষী কতকগুলিন মনুষ্য জন্মিবেন। আমি কেবল তাঁহাদিগেরই গুণকীর্তন করিতেছি । যিনি বিপরীতার্থ করিবেন, তাঁহার এই মহাভারত শ্রবণ নিষ্ফল হইবে। তিনি জনগণের এক জন হইয়া নেতাদিগের লক্ষ্য হইবেন ।
হে নরাধিপ! সাধারণের বিপরীতে অবস্থান করিবার নিমিত্ত পঞ্চভূত নেতাদিগেরই কর্তৃত্বাধীন থাকিবেন । যথা, ক্ষিতি ইঁহাদিগের অতীব ক্ষমতাশালী আয়ুধ হইবে । শতনামে সহস্র পরিমাণ জমি নেতাগণ ভোগ করিবেন । দ্বিতীয় অগস্ত্যের ন্যায় সমুদ্ররূপী বরুণকে ইঁহারা শোষণ করিবেন, পানপাত্র ইঁহাদিগের গন্ডূষ । অগ্নিও ইঁহাদিগের আজ্ঞাবহ হইবেন – ‘সিগারেট’ নামক একটি অভিনব খান্ডবকে আশ্রয় করিয়া রাত্রিদিন ইঁহাদিগের মুখে লাগিয়া থাকিবেন । ইঁহাদিগের যেমন মুখে অগ্নি, তেমনি অন্তরেও অগ্নি জ্বলিবেন । সেই অন্তরাগ্নির জ্বলন মধ্যে মধ্যে অন্যদলীয় সমর্থকরা তাঁহাদের আপন গৃহাভ্যন্তরে অনুভব করিবেন । বায়ু ইঁহাদিগের গৃহের বাহিরে বাহনরূপে এবং জঠরমধ্যে গ্যাসরূপে নিত্য বিরাজমান থাকিবেন । ইঁহাদিগের অধিকাংশ চন্দ্রলোভী বামন হইবেন, কেহ কেহ মধ্যাহ্নে চন্দ্র এবং নিশীথে সূর্য দেখিবেন ।
সমাজকে ইঁহারা বহুধা বিভক্ত করিবেন—ভদ্রতা করিয়া সেই দুর্ধর্ষ কার্যের নাম রাখিবেন, ‘সমাজসেবা’। জনগণের সম্মুখে ইঁহারা পূজার্চনা করিবেন, মন্দির মসজিদ গড়িবেন, আর তাঁহাদিগের পশ্চাতে যে পবিত্র স্থানে ইঁহারা আরাধনায় নিমগ্ন থাকিবেন তাহার নাম হইবে ‘গেস্ট হাউস’।
হে নরশ্রেষ্ঠ! যিনি কাব্যরসাদিতে বঞ্চিত, সঙ্গীতে দগ্ধ কোকিলাহারী, যাঁহার পান্ডিত্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুস্তকাগত, তিনিই নেতা। ইঁহাদিগের সমর্থকেরা ইঁহাদের কাব্যে কালিদাস, সঙ্গীতে সরস্বতী, পান্ডিত্যে পাণিনি বলিয়া প্রচার করিবেন এবং তাহা শ্রবণ করিয়া যিনি আপনাকে অনন্তজ্ঞানী বিবেচনা করিবেন, তিনিই নেতা । যিনি নারীজাতির অবমাননাকারির শাস্তি লঘু করিতে প্রতিশ্রুত হইবেন, পরে তাঁহার বক্তব্য বিকৃত করা হইয়াছে দাবি করিয়া সংবাদ মাধ্যমের মুন্ড চর্বন করিবেন, তিনিই নেতা । যিনি স্বদলীয় কর্মীর অপরাধ লুকাইয়া রাখিবেন, ব্যক্তিবিশেষকে ব্যবহার করিয়া অবৈধ সুবিধা লইবেন এবং সুবিধালাভ সমাপ্ত হইলে তাহাকে সুদূরে নিক্ষেপ করিবেন, তিনিই নেতা । যাঁহার বাক্য মনোমধ্যে এক, কথনে দশ, লিখনে শত এবং ভাষণকালে সহস্র, তিনিই নেতা ।
যিনি ইতিহাসের কিছুই জানিবেন না, অর্থনীতির কিছুই বুঝিবেন না, কেবল আপনাকে অভ্রান্ত জানিয়া আপনার মত জনগণের উপর চাপাইয়া দিবেন, তিনিই নেতা । যিনি ফান্ড সংগ্রহার্থ দুর্গাপূজা করিবেন, সমর্থকদের প্রীতিসম্পাদনার্থ গণেশপূজা করিবেন এবং নির্বাচনে জয়ের লোভে ঈদ পালন করিবেন, তিনিই নেতা ।
হে কুরুকুলভূষণ! দেবদেবীদের কথা যখন উঠিল তখন বলা যাউক, বিষ্ণুর সহিত এই নেতাদিগের বিশেষ সাদৃশ্য হইবে । ইঁহারা বিষ্ণুর তুল্য লীলাপটু হইবেন, বিষ্ণুর ন্যায় ইঁহাদিগেরও দশ অবতার হইবে । যথা – কেরানী, মাস্টার, অভিনেতা, ব্যবসায়ী, ডাক্তার, উকিল, ধর্মগুরু, অবসরপ্রাপ্ত অফিসার, সংবাদপত্র সম্পাদক এবং নিষ্কর্মা। সকল অবতারেই ইঁহারা অমিত বলপরাক্রম অসুরগণকে বধ করিবেন । কেরানী অবতারে বধ্য অসুর প্রশাসন মুখাপেক্ষী, মাস্টার অবতারে বধ্য ছাত্র, অভিনেতা অবতারে বধ্য দর্শক, ব্যবসায়ী অবতারে বধ্য ক্রেতা, ডাক্তার অবতারে বধ্য রোগী, উকিল অবতারে বধ্য মক্কেল, ধর্মগুরু অবতারে বধ্য ধর্মভীরু, অফিসার অবতারে বধ্য আপনারই ছেড়ে আসা সরকার, সম্পাদক অবতারে বধ্য পাঠক, এবং নিষ্কর্মাবতারে বধ্য উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী ।
হে নরনাথ! আমি যাঁহাদিগের কথা বলিলাম, তাঁহাদিগের মনে মনে বিশ্বাস জন্মিবে যে, তাঁহারা আইনসভা দখল করিয়া, তথায় বাগাড়ম্বরের মেঘ জমাইয়া, মরিচবিষের বৃষ্টি নামাইয়া, কর্দমাক্ত সলিলে মৎস্যশিকার করিয়া ভারতবর্ষের পুনরুদ্ধার করিবেন ।
জনমেজয় কহিলেন, হে মুনিপুঙ্গব! নেতাদিগের জয় হউক, আপনি অন্য প্রসঙ্গ আরম্ভ করুন ।”