1. তুমি ও কবিতা (মহাদেব সাহা) তোমার সাথে প্রতিটি কথাই কবিতা, প্রতিটি মুহুর্তেই উৎসব- তুমি যখন চলে যাও সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর সব আলো নিভে যায়, বইমেলা জনশূন্য হয়ে পড়ে, কবিতা লেখা ভুলে যাই। তোমার সান্নিধ্যের প্রতিটি মুহূর্ত রবীন্দ্রসঙ্গীতের মতো মনোরম একেটি তুচ্ছ বাক্যালাপ অন্তহীন নদীর কল্লোল, তোমার একটুখানিRead more

    তুমি ও কবিতা

    (মহাদেব সাহা)

    তোমার সাথে প্রতিটি কথাই কবিতা, প্রতিটি
    মুহুর্তেই উৎসব-
    তুমি যখন চলে যাও সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর
    সব আলো নিভে যায়,
    বইমেলা জনশূন্য হয়ে পড়ে,
    কবিতা লেখা ভুলে যাই।
    তোমার সান্নিধ্যের প্রতিটি মুহূর্ত রবীন্দ্রসঙ্গীতের মতো
    মনোরম
    একেটি তুচ্ছ বাক্যালাপ অন্তহীন নদীর কল্লোল,

    তোমার একটুখানি হাসির অর্থ এককোটি বছর
    জ্যোৎস্নারাত
    তুমি যখন চলে যাও পৃথিবীতে আবার হিমযুগ
    নেমে আসে;
    তোমার সাথে প্রতিটি কথাই কবিতা, প্রতিটি গোপন কটাক্ষই
    অনিঃশেষ বসন্তকাল
    তোমার প্রতিটি সম্বোধন ঝর্নার একেকটি কলধ্বনি,
    তোমার প্রতিটি আহ্বান একেকটি
    অনন্ত ভোরবেলা।
    তাই তুমি যখন চলে যাও মুহূর্তে সব নদীপথ
    বন্ধ হয়ে যায়
    পদ্মার রুপালি ইলিশ তার সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলে,
    পুষ্পোদ্যান খাঁখাঁ মরুভূমি হয়ে ওঠে;
    যতোক্ষণ তুমি থাকো আমার নিকটে থাকে
    সপ্তর্ষিমণ্ডল
    মাথার ওপরে থাকে তারাভরা রাতের আকাশ,
    তুমি যতোক্ষণ থাকো আমার এই হাতে
    দেখি ইন্দ্রজাল
    আঙুলে বেড়ায় নেচে চঞ্চল হরিণ;
    তুমি এলে খুব কাছে আসে সুদূর নীলিমা
    তোমার সান্নিধ্যের প্রতিটি মুহূর্ত সঙ্গীতের
    অপূর্ব মূর্ছনা
    যেন কারো অবিরল গাঢ় অশ্রুপাত;
    তোমার সাথে প্রতিটি বাক্য একেকটি কবিতা
    প্রতিটি শব্দ শুভ্র শিশির।

     

    English transliteration:

    Tumi o Kobita
    Mahadev Saha

    Tomar sathe protiti kothai kobita, protiti
    muhurtei utshob-
    Tumi jakhan chole jao songe songe prithibir
    shob ao nibhe jay
    Boimea jonoshunno hoye pore
    Kobita ekha bhue jai.
    Tumar shannidher protiti muhurto Rabindranather moto
    monorom
    Ekti tuccho bakyalap anatahin nodir kollol
    Tomar ektu khani hasir ortho ek-koti bachar
    Josnarat
    Tumi jakhan choe jao prithibite abar himjug
    neme aashe
    Tomar sathe protiti kothai kobita, Protiti gopon kottakkoi
    Onishesh basantakal
    Tomar Protiti shommodhon jhornar ek ekti koodhoni
    Tomar protiti aabhan ekekti
    Ananta bhorbela
    Tumi jakhan chole jao muhurte shob nodipoth
    bondho hoye jay
    Poddar rupli elish tar shundorjo hariye fele
    Pushpodhan khakha murubhumi hoye uthe
    Jotokkhon Tumi thako amar nikote thake
    Soptorshi mondol
    mathar upore thake tarabhora rater akash
    Tumi jotokkhon thako amar ei hate
    Dekhi indrojal
    Angue beray neche choncho horin
    tumi ele khub kache ashe sudur nilima
    Tomar shaniddher protiti muhurto songeeter
    Apurbo murchona
    Jeno karo sathe abiral garo asrupat
    Tomar sathe proti bakyo ekekti kobita
    protiti shobdo subhro sisir

     

    See less
    • 0
  2. স্পর্ধা শক্তি চট্টোপাধ্যায়। তুমি গেছো, স্পর্ধা গেছে, বিনয় এসেছে … স্পর্ধা, আমি দেখাই কারণ ওটা আমার আসে। স্পর্ধা দেখিয়েছি আমি বারবার। স্পর্ধা দেখিয়েছি আমি খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে, স্পর্ধা দেখিয়েছি আমি বাধ ভাঙ্গা প্লাবন-এর মুখে দাঁড়িয়ে, স্পর্ধা দেখিয়েছি আমি উন্মত্ততার রণাঙ্গনে, সারা গায়ে হাতে মুখে মাথায়Read more

    স্পর্ধা

    শক্তি চট্টোপাধ্যায়।

    তুমি গেছো, স্পর্ধা গেছে, বিনয় এসেছে …
    স্পর্ধা, আমি দেখাই
    কারণ ওটা আমার আসে।
    স্পর্ধা দেখিয়েছি আমি বারবার।
    স্পর্ধা দেখিয়েছি আমি খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে,
    স্পর্ধা দেখিয়েছি আমি বাধ ভাঙ্গা প্লাবন-এর মুখে দাঁড়িয়ে,
    স্পর্ধা দেখিয়েছি আমি উন্মত্ততার রণাঙ্গনে,
    সারা গায়ে হাতে মুখে মাথায় রক্ত মেখে।
    স্পর্ধা আমি দেখাই
    কারণ ওটা আমার আসে।
    তোমাদের মতো শালীনতার বোরখা আমি পড়িনা,
    তোমাদের মতো সূক্ষ্ম ভাষা-র জাল-এ
    আমার তেতো কাঁটা-ওয়ালা জিভ-টা
    আমি লুকোইনা।
    শিক্ষিত আমি নই,
    তোমাদের মতো মোটামোটা বই গুলো
    আমি পড়িনি …
    আমি শিখেছি মাঠেঘাটে পথেপ্রান্তরে
    এক হাঁটু ধুলো মেখে,
    আমি শিখেছি উদ্দাম নদি-মাঝে
    এক দেহ কাদা-জল মেখে।
    গ্রীষ্মের সূর্য চোখ রাঙিয়ে শিখিয়েছে স্পর্ধা,
    বর্ষার কালো মেঘ ঝড়ে দুমড়িয়ে-মুচড়িয়ে
    উড়িয়ে নিয়ে গেছে মনের কপাট,
    বিদ্যুতের চাবুকে বুক-পীঠ চিড়ে শিখিয়েছে স্পর্ধা।
    তাই স্পর্ধা আমার রক্তে,
    স্পর্ধা আমার হাড়ে-মজ্জায়
    তাই স্পর্ধা আমি দেখাই
    কারণ ওটা আমার আসে।

     

    English transliteration:

    Spordha

    Shakti Chottopadhay

    Tumi gecho, spordha geche, binoy esheche
    Spordha, ami dekhai
    Karon ota amar aashe
    Spordha dekiyechi ami barbar
    Spordha dekiyechi ami khader kinare dariye
    spordha dekiyechi ami badh bhanga plabon er mukhe dariye
    spordha dekiyechi ami ummottotar ronangone
    Sara gaye hate mukhe mathay rokto mekhe

    Spordha, ami dekhai
    Karon ota amar aashe
    Tumader moto shainotar burkha ami pori na
    Tumader moto sukkho bhashar jae
    Amar teto kata waa jibta
    Ami lukoin-na

    See less
    • 0
  3. বাবুরাম সাপুড়ে সুকুমার রায় বাবুরাম সাপুড়ে, কোথা যাস্‌ বাপুরে? আয় বাবা দেখে যা, দুটো সাপ রেখে যা ! যে সাপের চোখ নেই, শিং নেই নোখ্‌ নেই, ছোটে না কি হাঁটে না, কাউকে যে কাটে না, করে নাকো ফোঁস ফাঁস, মারে নাকো ঢুঁশঢাঁশ, নেই কোন উৎপাত, খায় শুধু দুধ ভাত- সেই সাপ জ্যান্ত গোটা দুই আনত ? তেড়ে মেরে ডাণ্ডা ক’রেRead more

    বাবুরাম সাপুড়ে

    সুকুমার রায়

    বাবুরাম সাপুড়ে,
    কোথা যাস্‌ বাপুরে?
    আয় বাবা দেখে যা,
    দুটো সাপ রেখে যা !
    যে সাপের চোখ নেই,
    শিং নেই নোখ্‌ নেই,
    ছোটে না কি হাঁটে না,
    কাউকে যে কাটে না,
    করে নাকো ফোঁস ফাঁস,
    মারে নাকো ঢুঁশঢাঁশ,
    নেই কোন উৎপাত,
    খায় শুধু দুধ ভাত-
    সেই সাপ জ্যান্ত
    গোটা দুই আনত ?
    তেড়ে মেরে ডাণ্ডা
    ক’রে দেই ঠাণ্ডা ।

     

    English Transliteration:

    Baburam Sapure
    Kutha jas bapure?
    Aay baba dekhe ja,
    Duto sap rekhe ja!
    Je saper chokh nei,
    Singh nei nokh nei,
    Chote ki na hate na,
    Kauke je kate na,
    Kore nako fush fash
    Mare nako tush tash
    Nei kuno utpat,
    Khay shudhu dudh bhat-
    Sei sap jento
    Gota dui aanto
    Tere mere danda
    Kore dei thanda

    See less
    • -1
  4. ছোটদের জন্য লিখিত জনপ্রিয় একটি বাংলা ছড়া । কবি : যোগীন্দ্রনাথ সরকার আতা গাছে তোতা পাখি, ডালিম গাছে মৌ৷ হীরে দাদার মরমরে থান, ঠাকুর দাদার বৌ৷৷ English Transliteration: Ata gache tota pakhi Dalim gache mou Hire dadar Mor More than Thakur Dadar Bou

    ছোটদের জন্য লিখিত জনপ্রিয় একটি বাংলা ছড়া ।

    কবি : যোগীন্দ্রনাথ সরকার

    আতা গাছে তোতা পাখি,
    ডালিম গাছে মৌ৷
    হীরে দাদার মরমরে থান,
    ঠাকুর দাদার বৌ৷৷

    English Transliteration:

    Ata gache tota pakhi
    Dalim gache mou
    Hire dadar Mor More than
    Thakur Dadar Bou

    See less
    • 0
  5. অঞ্জনা নদী তীরে কবিতাটি কবি রবিন্দ্রানাথ ঠাকুরের লিখিত "সহজ পাঠের" দ্বিতীয় ভাগের অন্তর্গত । কবিতাটি "সহজ পাঠের" ত্রয়োদশ পাঠে অন্তর্ভুক্ত। অঞ্জনা নদীতীরে চন্দনী গাঁয়ে পোড়ো মন্দিরখানা গঞ্জের বাঁয়ে জীর্ণ ফাটল-ধরা— এক কোণে তারি অন্ধ নিয়েছে বাসা কুঞ্জবিহারী। আত্মীয় কেহ নাই নিকট কি দূর, আছে এক ল্যাজ-কাটাRead more

    অঞ্জনা নদী তীরে

    কবিতাটি কবি রবিন্দ্রানাথ ঠাকুরের লিখিত “সহজ পাঠের” দ্বিতীয় ভাগের অন্তর্গত । কবিতাটি “সহজ পাঠের” ত্রয়োদশ পাঠে অন্তর্ভুক্ত।

    অঞ্জনা নদীতীরে চন্দনী গাঁয়ে
    পোড়ো মন্দিরখানা গঞ্জের বাঁয়ে
    জীর্ণ ফাটল-ধরা— এক কোণে তারি
    অন্ধ নিয়েছে বাসা কুঞ্জবিহারী।
    আত্মীয় কেহ নাই নিকট কি দূর,
    আছে এক ল্যাজ-কাটা ভক্ত কুকুর।
    আর আছে একতারা, বক্ষেতে ধ’রে
    গুন্‌ গুন্‌ গান গায় গুঞ্জন-স্বরে।
    গঞ্জের জমিদার সঞ্জয় সেন
    দু-মুঠো অন্ন তারে দুই বেলা দেন।
    সাতকড়ি ভঞ্জের মস্ত দালান,
    কুঞ্জ সেখানে করে প্রত্যূষে গান।
    “হরি হরি” রব উঠে অঙ্গনমাঝে,
    ঝনঝনি ঝনঝনি খঞ্জনী বাজে।
    ভঞ্জের পিসি তাই সন্তোষ পান,
    কুঞ্জকে করেছেন কম্বল দান।
    চিঁড়ে মুড়কিতে তার ভরি দেন ঝুলি,
    পৌষে খাওয়ান ডেকে মিঠে পিঠে-পুলি।
    আশ্বিনে হাট বসে ভারী ধূম ক’রে,
    মহাজনী নৌকায় ঘাট যায় ভ’রে—
    হাঁকাহাঁকি ঠেলাঠেলি মহা সোরগোল,
    পশ্চিমী মাল্লারা বাজায় মাদোল।
    বোঝা নিয়ে মন্থর চলে গোরুগাড়ি,
    চাকাগুলো ক্রন্দন করে ডাক ছাড়ি।
    কল্লোলে কোলাহলে জাগে এক ধ্বনি
    অন্ধের কন্ঠের গান আগমনী।
    সেই গান মিলে যায় দূর হতে দূরে
    শরতের আকাশেতে সোনা রোদ্দুরে।।

    See less
    • 0
  6. গান - তখন তোমার একুশ বছর গায়ক - আরতি মুখার্জী লিরিক্স - গৌরিপ্রসন্ন মজুমদার তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয় আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁওয়ায় লজ্জা জড়ানো ছন্দে কেঁপেছি ধরা পড়ে ছিল ভয়.. তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয় আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁওয়ায়। গোপনের প্রেম গোপনে গিয়েছে ঝরে আমরা দুজনে কখন গিয়েছি সরে ফুলঝুরি থেকে ফুল ঝরRead more

    গান – তখন তোমার একুশ বছর

    গায়ক – আরতি মুখার্জী
    লিরিক্স – গৌরিপ্রসন্ন মজুমদার

    তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয়
    আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁওয়ায়
    লজ্জা জড়ানো ছন্দে কেঁপেছি
    ধরা পড়ে ছিল ভয়..
    তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয়
    আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁওয়ায়।

    গোপনের প্রেম গোপনে গিয়েছে ঝরে
    আমরা দুজনে কখন গিয়েছি সরে
    ফুলঝুরি থেকে ফুল ঝরে গেলে
    মালা কিসে গাঁথা হয়..
    তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয়
    আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁওয়ায়।

    তোমার পথের কাঁটাই ভেবেছ মোরে
    বলতে পারিনি তোমার মত করে
    জলছবি ভেবে ভুল করেছিলে
    ভালবাসা সে তো নয়..

    তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয়
    আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁওয়ায়
    লজ্জা জড়ানো ছন্দে কেঁপেছি
    ধরা পড়ে ছিল ভয়..
    তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয়
    আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁওয়ায়।

    English Transliteration

    Song -Tokhon Tomar Ekush Bochor
    Singer – Aroti Mukherjee
    Lyrics : Gouriproshonno Majumder

    Tokhon tomar ekush bochor budhoy
    Ami tokhon ostadosher chouyay
    lojja jorano chondde kepechi
    Dhora porechilo bhoy.
    Guponer prem gupone giyeche jhore
    Amra dujone kokhon giyechi shore
    Ful-jhuri theke ful jhore gele
    Mala kise gatha hoy.

    Tomar pother katai bhebecho more
    Bolte parini tomar moto kore
    Jolchobi bhebe bhul korechile
    Bhalobasha she to noy.

    See less
    • 0
  7. সারাংশ – বাংলার মুখ কবিতা সম্মন্ধে: বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি কবিতাটি কবি জীবননানন্দ দাশের 'রূপসী বাংলা কাব্য গ্রন্থের অন্তর্গত। এই কবিতাগুলি ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে কবি রচনা করেন।কবিতা গুলিতে বাংলার সঙ্গে কবির মনের বা আত্মার সম্পর্কের চিত্র ভেসে উঠেছে। কবি নিজে এই কবিতাগুলি সম্পর্কে লিখেছেন, “এরা প্রত্যেকRead more

    সারাংশ – বাংলার মুখ

    কবিতা সম্মন্ধে:

    বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি কবিতাটি কবি জীবননানন্দ দাশের ‘রূপসী বাংলা কাব্য গ্রন্থের অন্তর্গত। এই কবিতাগুলি ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে কবি রচনা করেন।কবিতা গুলিতে বাংলার সঙ্গে কবির মনের বা আত্মার সম্পর্কের চিত্র ভেসে উঠেছে। কবি নিজে এই কবিতাগুলি সম্পর্কে লিখেছেন, “এরা প্রত্যেকে আলাদা-আলাদা স্বতন্ত্র সত্তার মতাে নয় কেউ, অপরপক্ষে সার্বিক বােধে এক শরীরী গ্রাম বাংলার আলুলায়িত প্রতিবেশ, প্রসূতির মতাে ব্যক্তিগত হয়েও পরিপুরকের মতাে পরস্পর নির্ভর।”

    সারমর্ম

    কবি বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের মধ্যে বিশ্বের রুপ দেখতে পেয়েছেন। তাই পৃথিবীর রূপ-বৈচিত্রের প্রতি তার কোন মােহ নেই। ভােরের অন্ধকারে জেগে উঠে তিনি দেখেছেন, ডুমুরের বড়াে পাতা যেন ছাতার মতাে বিছিয়ে রয়েছে, আর তার নিচে বসে আছে ভােরের দোয়েল পাখি। এ যেন তার শান্তির নীড়। জাম, বট, কাঠাল, হিজল, অশ্বথ গাছের দল নীরবে সে দিকে তাকিয়ে আছে। ফণীমনসার ঝোপে, শটিবনে তাদের ছায়া পড়েছে। কবির মানসলােকে ফুটে উঠেছে অতীতকালের এক ছবি। তাঁর মনে হয়েছে চম্পক নগরের চাদ সদাগর যখন তাঁর সাতটি মধুকর ডিঙা নিয়ে বাজি করতে যেতেন, তখন বাংলার এই স্নিগ্ধ সৌন্দর্য্য তাঁর চিত্তে এনে দিত গভীর প্রশান্তি। আবার যেদিন গভীর অন্ধকার রাতে বেহুলা মৃত স্বামী লখীন্দরকে ভেলায় ভাসিয়ে গাঙুড়ের জলে চলেছিল, সেদিন কৃষ্ণা দ্বাদশীর স্নান জ্যোৎস্নায় সােনালি ধানের পাশে এমনই অসংখ্য বটগাছ দেখেছিল। শ্যামা পাখির নরম গান শুনে তার চিত্ত বেদনার্ত হয়েছিল। তারপর একদিন ইন্দ্রের সভায় গিয়ে ছিন্ন খঞ্জনা পাখির মতো যখন বেহুলা নেচেছিল, তখন বাংলার নদী, মাঠ, ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতাে তার দুঃখে কাতর হয়ে তার পায়ে পায়ে কেঁদে উঠেছিল।

    See less
    • 0
  8. আমার কৈফিয়ৎ কাজী নজরুল ইসলাম বর্তমানের কবি আমি ভাই, ভবিষ্যতের নই ‘নবী’, কবি ও অকবি যাহা বলো মোরে মুখ বুঁজে তাই সই সবি! কেহ বলে, ‘তুমি ভবিষ্যতে যে ঠাঁই পাবে কবি ভবীর সাথে হে! যেমন বেরোয় রবির হাতে সে চিরকেলে-বাণী কই কবি?’ দুষিছে সবাই, আমি তবু গাই শুধু প্রভাতের ভৈরবী! কবি-বন্ধুরা হতাশ হইয়া মোর লেখা প’ড়Read more

    আমার কৈফিয়ৎ

    কাজী নজরুল ইসলাম

    বর্তমানের কবি আমি ভাই, ভবিষ্যতের নই ‘নবী’,
    কবি ও অকবি যাহা বলো মোরে মুখ বুঁজে তাই সই সবি!
    কেহ বলে, ‘তুমি ভবিষ্যতে যে
    ঠাঁই পাবে কবি ভবীর সাথে হে!
    যেমন বেরোয় রবির হাতে সে চিরকেলে-বাণী কই কবি?’
    দুষিছে সবাই, আমি তবু গাই শুধু প্রভাতের ভৈরবী!

    কবি-বন্ধুরা হতাশ হইয়া মোর লেখা প’ড়ে শ্বাস ফেলে!
    বলে, কেজো ক্রমে হচ্ছে অকেজো পলিটিক্সের পাশ ঠেলে’।
    পড়ে না ক’ বই, ব’য়ে গেছে ওটা।
    কেহ বলে, বৌ-এ গিলিয়াছে গোটা।
    কেহ বলে, মাটি হ’ল হয়ে মোটা জেলে ব’সে শুধু তাস খেলে!
    কেহ বলে, তুই জেলে ছিলি ভালো ফের যেন তুই যাস জেলে!

    গুরু ক’ন, তুই করেছিস শুরু তলোয়ার দিয়ে দাড়ি চাঁছা!
    প্রতি শনিবারী চিঠিতে প্রেয়সী গালি দেন, ‘তুমি হাঁড়িচাঁচা!’
    আমি বলি, ‘প্রিয়ে, হাটে ভাঙি হাঁড়ি!’
    অমনি বন্ধ চিঠি তাড়াতাড়ি।
    সব ছেড়ে দিয়ে করিলাম বিয়ে, হিন্দুরা ক’ন, আড়ি চাচা!’
    যবন না আমি কাফের ভাবিয়া খুঁজি টিকি দাড়ি, নাড়ি কাছা!

    মৌ-লোভী যত মৌলবী আর ‘ মোল্‌-লা’রা ক’ন হাত নেড়ে’,
    ‘দেব-দেবী নাম মুখে আনে, সবে দাও পাজিটার জাত মেরে!
    ফতোয়া দিলাম- কাফের কাজী ও,
    যদিও শহীদ হইতে রাজী ও!
    ‘আমপারা’-পড়া হাম-বড়া মোরা এখনো বেড়াই ভাত মেরে!
    হিন্দুরা ভাবে,‘ পার্শী-শব্দে কবিতা লেখে, ও পা’ত-নেড়ে!’

    আনকোরা যত নন্‌ভায়োলেন্ট নন্‌-কো’র দলও নন্‌ খুশী।
    ‘ভায়োরেন্সের ভায়োলিন্‌’ নাকি আমি, বিপ্লবী-মন তুষি!
    ‘এটা অহিংস’, বিপ্লবী ভাবে,
    ‘নয় চর্‌কার গান কেন গা’বে?’
    গোঁড়া-রাম ভাবে নাস্তিক আমি, পাতি-রাম ভাবে কন্‌ফুসি!
    স্বরাজীরা ভাবে নারাজী, নারাজীরা ভাবে তাহাদের আঙ্কুশি!

    নর ভাবে, আমি বড় নারী-ঘেঁষা! নারী ভাবে, নারী-বিদ্বেষী!
    ‘বিলেত ফেরনি?’ প্রবাসী-বন্ধু ক’ন, ‘ এই তব বিদ্যে, ছি!’
    ভক্তরা বলে, ‘নবযুগ-রবি!’-
    যুগের না হই, হজুগের কবি
    বটি ত রে দাদা, আমি মনে ভাবি, আর ক’ষে কষি হৃদ্‌-পেশী,
    দু’কানে চশ্‌মা আঁটিয়া ঘুমানু, দিব্যি হ’তেছে নিদ্‌ বেশী!

    কি যে লিখি ছাই মাথা ও মুণ্ডু আমিই কি বুঝি তার কিছু?
    হাত উঁচু আর হ’ল না ত ভাই, তাই লিখি ক’রে ঘাড় নীচু!
    বন্ধু! তোমরা দিলে না ক’ দাম,
    রাজ-সরকার রেখেছেন মান!
    যাহা কিছু লিখি অমূল্য ব’লে অ-মূল্যে নেন! আর কিছু
    শুনেছ কি, হুঁ হুঁ, ফিরিছে রাজার প্রহরী সদাই কার পিছু?

    বন্ধু! তুমি ত দেখেছ আমায় আমার মনের মন্দিরে,
    হাড় কালি হ’ল শাসাতে নারিনু তবু পোড়া মন-বন্দীরে!
    যতবার বাঁধি ছেঁড়ে সে শিকল,
    মেরে মেরে তা’রে করিনু বিকল,
    তবু যদি কথা শোনে সে পাগল! মানিল না ররি-গান্ধীরে।
    হঠাৎ জাগিয়া বাঘ খুঁজে ফেরে নিশার আঁধারে বন চিরে’!

    আমি বলি, ওরে কথা শোন্‌ ক্ষ্যাপা, দিব্যি আছিস্‌ খোশ্‌-হালে!
    প্রায় ‘হাফ’-নেতা হ’য়ে উঠেছিস্‌, এবার এ দাঁও ফস্‌কালে
    ‘ফুল’-নেতা আর হবিনে যে হায়!
    বক্তৃতা দিয়া কাঁদিতে সভায়
    গুঁড়ায়ে লঙ্কা পকেটেতে বোকা এই বেলা ঢোকা! সেই তালে
    নিস্‌ তোর ফুটো ঘরটাও ছেয়ে, নয় পস্তাবি শেষকালে।

    বোঝে না ক’ যে সে চারণের বেশে ফেরে দেশে দেশে গান গেয়ে,
    গান শুন সবে ভাবে, ভাবনা কি! দিন যাবে এবে পান খেয়ে!
    রবে না ক’ ম্যালেরিয়া মহামারী,
    স্বরাজ আসিছে চ’ড়ে জুড়ি-গাড়ী,
    চাঁদা চাই, তারা ক্ষুধার অন্ন এনে দেয়, কাঁদে ছেলে-মেয়ে।
    মাতা কয়, ওরে চুপ্‌ হতভাগা, স্বরাজ আসে যে, দেখ্‌ চেয়ে!

    ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন,
    বেলা ব’য়ে যায়, খায়নি ক’ বাছা, কচি পেটে তার জ্বলে আগুন।
    কেঁদে ছুটে আসি পাগলের প্রায়,
    স্বরাজের নেশা কোথা ছুটে যায়!
    কেঁদে বলি, ওগো ভগবান তুমি আজিও আছে কি? কালি ও চুন
    কেন ওঠে না ক’ তাহাদের গালে, যারা খায় এই শিশুর খুন?

    আমরা ত জানি, স্বরাজ আনিতে পোড়া বার্তাকু এনেছি খাস!
    কত শত কোটি ক্ষুধিত শিশুর ক্ষুধা নিঙাড়িয়া কাড়িয়া গ্রাস
    এল কোটি টাকা, এল না স্বরাজ!
    টাকা দিতে নারে ভুখারি সমাজ।
    মা’র বুক হ’তে ছেলে কেড়ে খায়, মোরা বলি, বাঘ, খাও হে ঘাস!
    হেরিনু, জননী মাগিছে ভিক্ষা ঢেকে রেখে ঘরে ছেলের লাশ!

    বন্ধু গো, আর বলিতে পারি না, বড় বিষ-জ্বালা এই বুকে!
    দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি, তাই যাহা আসে কই মুখে।
    রক্ত ঝরাতে পারি না ত একা,
    তাই লিখে যাই এ রক্ত-লেখা,
    বড় কথা বড় ভাব আসে না ক’ মাথায়, বন্ধু, বড় দুখে!
    অমর কাব্য তোমরা লিখিও, বন্ধু, যাহারা আছ সুখে!

    পরোয়া করি না, বাঁচি বা না-বাঁচি যুগের হুজুগ কেটে গেলে,
    মাথায় উপরে জ্বলিছেন রবি, রয়েছে সোনার শত ছেলে।
    প্রার্থনা ক’রো যারা কেড়ে খায় তেত্রিশ কোটি মুখের গ্রাস,
    যেন লেখা হয় আমার রক্ত-লেখায় তাদের সর্বনাশ!

    See less
    • 0
  9. আমার প্রিয় খেলা ব্যাডমিন্টন ভূমিকাঃ আমাদের সবার জীবনে খেলাধুলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খেলাধুলা আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে। ভারত সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানা ধরণের খেলাধুলার রয়েছে, যেমন ক্রিকেট, ফুটবল, খো খো, টেনিস ইত্যাদি। প্রত্যেকে মানুষের নিজস্ব পছন্দের কোনোRead more

    আমার প্রিয় খেলা ব্যাডমিন্টন

    ভূমিকাঃ আমাদের সবার জীবনে খেলাধুলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খেলাধুলা আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে। ভারত সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানা ধরণের খেলাধুলার রয়েছে, যেমন ক্রিকেট, ফুটবল, খো খো, টেনিস ইত্যাদি। প্রত্যেকে মানুষের নিজস্ব পছন্দের কোনো না কোনো খেলা রয়েছে।একইভাবে, আমার প্রিয় খেলা ব্যাডমিন্টন।

    ব্যাডমিন্টন খেলার ইতিহাসঃ ইতিহাস ঘাটলে জানা যায় যে ১৯ শতকের প্রথমে এই খেলাটি সর্বপ্রথম বৃটেনে আরম্ব হয়। জানা যায় ব্যাডমিন্টন ইংল্যান্ডের ডিউক অফ বিউফোর্টের বাড়ীতে প্রথম খেলা হয়। তবে এই খেলায় তখন কর্ক এর পরিবর্তে বল ব্যবহার করা হত। পরবর্তীকালে এর জন্য বিভিন্ন নিয়ম প্রণালী ঠিক করা হয়। আমাদের দেশ ভারতবর্ষ ১৯৩৬ সালে এই খেলায় প্রথম যোগদান করে।

    ব্যাডমিন্টন খেলার মাঠ ও সরঞ্জামঃ ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য একটি আয়তকার মাঠের দরকার হয়। মাঠের মোট দৈর্ঘ ৪৪ ফুট বা ১৩.৪ মিঃ লম্বা থাকে এবং প্রস্থ ২০ ফুট বা ৬.১ মিঃ লম্বা হয়। মাঠটি একটি জাল বা (Net) দ্বারা সমভাগে দুইটি ভাগ করা থাকে।জালটি দুইপাশ দুইটি খুঁটি বা (post) এর সাহায্যে ঝুলানো থাকে।জালটির উচ্চতা মাটি থেকে ১.৫৫ মিঃ উঁচু হয় । সরঞ্জাম এর ক্ষেত্রে একটি র‌্যাকেট এবং একটি কর্ক এর দরকার হয়, যেগুলির ওজন খুবই হালকা থাকে।

    খেলার নিয়মাবলীঃ ব্যাডমিন্টন সাধারণত দুইজন করে প্রতিপক্ষের মধ্যে অনুষ্টিত হয়। অর্থাৎ মাঠের দুইপাশে দুই-দুই জন খেলোয়াড় থাকে। আবার কখনো একজন করেও প্রতিপক্ষের মধ্যেও অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাডমিন্টন খেলায় টেনিস এর মত পয়েন্টের সাহায্যে হার-জিত নির্ণয় করা হয়। এই খেলায় ছয়টি প্রধান শট রয়েছে, সেইগুলি হলো পরিবেশন বা সার্ভ , ক্লিয়ার, ড্রপ করুন, স্ম্যাশ, ব্যাকহ্যান্ড ড্রাইভ এবং ফোরহ্যান্ড ড্রাইভ।

    আমার প্রিয় খেলা হওয়ার কারণঃ ব্যাডমিন্টন আমার প্রিয় খেলা কারণ ইহা আমাকে সারা দিন সক্রিয় থাকতে সাহায্য করে । ব্যাডমিন্টন খেলতে গতি, শক্তি এবং সঠিক নিশানার প্রয়োজন। তাই শারীরিক ও মানষিক চর্চার জন্য ব্যাডমিন্টন একটি অত্যন্ত উপযোগী খেলা যা সুস্থ রাখতে সাহায্য করে । তাই আমি যখন আমার বন্ধুদের সাথে ব্যাডমিন্টন খেলি, তখন আমি নিজেকে সারা দিন ধরে সতেজ ও শক্তিশালী বোধ করি।শরীর চর্চায় উপযোগী হওয়া ছাড়াও ব্যাডমিন্টন একটি উপভোগ্য খেলা, খেলাতে খেলোয়াড়দের মধ্যে পয়েন্ট অর্জন করার লড়াই আর উত্তেজনা খেলাটিকে আকর্ষণীয় করে তোলে ।

    ভারতবর্ষে ব্যাডমিন্টনঃ বর্তমানে ভারতবর্ষে ব্যাডমিন্টন একটি জনপ্রিয় খেলায় পরিনত হয়েছে। বিশেষকরে শহরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে খেলার জন্য বড় মাঠের অভাব থাকার দরুন সবাই ইহা পছন্দ করে কারন ইহা বড় একটি ঘরের ভিতরেও খেলা যায়। তাছাড়া আন্তরজাতিক স্থরে অনেক খেলোয়াড় পেশাগত ভাবে ভারতের হয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছেন। ২০১৬ সালে প্রথম ভারতের হয়ে পি ভি সিদ্ধু অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করে সিলভার পদক অর্জন করেন।

    উপসংহারঃ ব্যাডমিন্টন শুধুমাত্র একটি আনন্দদায়ক খেলা নয় বরং ইহা শারীরিক ও মানসিক চর্চার জন্য খুবই উপযোগী একটি খেলা। যাহা আমাদেরকে সতেজ ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই আমি ব্যাডমিন্টন খেলতে ভালোবাসি।

     

    See less
    • 0
  10. আমার স্কুলের প্রথম দিন প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে বিভিন্ন স্মৃতি থাকে যা কখনো ভোলা যায় না। আমার স্কুলের প্রথম দিন সেই রকম একটি স্মৃতি যা চিরকাল মনে রাখার মত। দিনটি ছিল ৭ই জানুয়ারি ২০০৮ সাল, যেদিন আমি প্রথম স্কুলে পা রাখলাম। আমি তখন ভীষণ ছোট, বয়স সবেমাত্র ৫ পেরিয়ে ৬। মা আমাকে সেই দিন সময় মত স্কুলেRead more

    আমার স্কুলের প্রথম দিন

    প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে বিভিন্ন স্মৃতি থাকে যা কখনো ভোলা যায় না। আমার স্কুলের প্রথম দিন সেই রকম একটি স্মৃতি যা চিরকাল মনে রাখার মত। দিনটি ছিল ৭ই জানুয়ারি ২০০৮ সাল, যেদিন আমি প্রথম স্কুলে পা রাখলাম। আমি তখন ভীষণ ছোট, বয়স সবেমাত্র ৫ পেরিয়ে ৬। মা আমাকে সেই দিন সময় মত স্কুলে নিয়ে আসলেন। স্কুলে উপস্থিত হতেই নিজেকে আবিষ্কার করলাম সম্পূর্ণ একটি অচেনা জায়গায়। কেমন যেন মনের মধ্যে একটা অজানা ভয় কাজ করেছিল ভীষণভাবে। ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড়ের মধ্যে নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সিনিয়র শ্রেণীর এক ছাত্র আমাকে আমার শ্রেণিকক্ষে পৌঁছে দিল। শ্রেণিকক্ষে পৌঁছে আমি আরো ভেঙ্গে পড়লাম যখন দেখলাম আমার সহপাঠীদের মধ্যে সেই একই ভয়ের ছায়া। কাউ কাউ কে কাঁদতেও দেখলাম। যাই হোক, আমি চেষ্টা করলাম নিজেকে একটু সাহস দিতে।

    ঠিক যখন সকাল নয়টা তখন অনুষ্ঠিত হলো প্রাতঃ সভা। আমরা লাইন দিয়ে দাঁড়ালাম একের পরে এক। প্রধান শিক্ষক বক্তব্য রাখলেন এবং আমাদেরকে স্বাগতম জানালেন। প্রাতঃ সভাশেষ হলে আবার আমরা শ্রেণি কক্ষে ফিরে এসে বসে পড়লাম। আমাদের ক্লাস শিক্ষক এসে উপস্থিত হলেন। অনেক কিছু বললেন সঙ্গে বিভিন্ন নিয়ম সম্পর্কে আমাদেরকে অবগত করালেন। কিছুক্ষণ পর প্রথম ঘন্টা বাজল। তারপর একে একে আরো দুই জন শিক্ষক এসে দুইটি ক্লাস নিলেন। সব শিক্ষকই খুবই মৃদু আচরণ করলেন এবং আমাদেরকে উৎসাহিত করলেন। শিক্ষকদের এই বন্ধুসুলভ ব্যবহার ধীরে ধীরে আমার ভয় কাটাতে সাহায্য করল।

    তারপর বিরতি ঘন্টা শুরু হল। আমি আমার সহপাঠীদের সঙ্গে একটু আধটু কথা বললাম। বিরতি ঘন্টার শেষে ইংরেজি শিক্ষক এসে উপস্থিত হলেন। তিনি আমাদেরকে সতেজ করতে অনেক মজার মজার গল্প শোনালেন। আমরা সবাই মন দিয়ে শুনলাম এবং উপভোগ করলাম। তারপর সর্বশেষ ঘন্টা বাজলে আমি স্কুল থেকে বিদায় নিলাম। এই ভাবেই আমার স্কুলের প্রথম দিনটি শেষ হলো। সেই দিনের অচেনা পরিবেশ, অজানা ভয়, নতুন পরিচয় আমার মনে থাকবে অনন্তকাল।

    See less
    • 2