Sign Up

Continue with Facebook
Continue with Google
Continue with Twitter
or use


Have an account? Sign In Now

Sign In

Continue with Facebook
Continue with Google
Continue with Twitter
or use


Forgot Password?

Don't have account, Sign Up Here

Forgot Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.


Have an account? Sign In Now

Sorry, you do not have a permission to ask a question, You must login to ask question.

Continue with Facebook
Continue with Google
Continue with Twitter
or use


Forgot Password?

Need An Account, Sign Up Here
Bengali Forum Logo Bengali Forum Logo
Sign InSign Up

Bengali Forum

Bengali Forum Navigation

  • বিভাগ
  • বিষয়
  • ব্লগ
  • বাংলা অভিধান
  • হযবরল
Search
Ask A Question

Mobile menu

Close
Ask a Question
  • বাংলা অভিধান
  • সাহিত্য
  • শিক্ষা
  • রচনা
  • সাধারণ জ্ঞান
  • ইংলিশ টু বাংলা
  • বিজ্ঞান
  • বাংলা কুইজ
  • ধৰ্ম ও সংস্কৃতি
  • ইতিহাস
  • মতামত

Discy Latest Questions

In: সাহিত্য

কবিতা : হারিয়ে-যাওয়া (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Hariye Jaoa Poem by Rabindranath Tagore Lyrics

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 418 Answers
    • 14 Best Answers
    • 2,115 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on April 8, 2021 at 1:21 am

    হারিয়ে-যাওয়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থ : পলাতকা ছোট্ট আমার মেয়ে সঙ্গিনীদের ডাক শুনতে পেয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচের তলায় যাচ্ছিল সে নেমে অন্ধকারে ভয়ে ভয়ে থেমে থেমে। হাতে ছিল প্রদীপখানি, আঁচল দিয়ে আড়াল ক'রে চলছিল সাবধানী। আমি ছিলাম ছাতে তারায় ভরা চৈত্রমাসের রাতে। হঠাৎ মেয়ের কান্না শুনে, উঠে দেখতে গেলেম ছুRead more

    হারিয়ে-যাওয়া

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    কাব্যগ্রন্থ : পলাতকা

    ছোট্ট আমার মেয়ে
    সঙ্গিনীদের ডাক শুনতে পেয়ে
    সিঁড়ি দিয়ে নিচের তলায় যাচ্ছিল সে নেমে
    অন্ধকারে ভয়ে ভয়ে থেমে থেমে।
    হাতে ছিল প্রদীপখানি,
    আঁচল দিয়ে আড়াল ক’রে চলছিল সাবধানী।

    আমি ছিলাম ছাতে
    তারায় ভরা চৈত্রমাসের রাতে।
    হঠাৎ মেয়ের কান্না শুনে, উঠে
    দেখতে গেলেম ছুটে।
    সিঁড়ির মধ্যে যেতে যেতে
    প্রদীপটা তার নিবে গেছে বাতাসেতে।
    শুধাই তারে, “কী হয়েছে, বামী।”
    সে কেঁদে কয় নিচে থেকে, “হারিয়ে গেছি আমি।”
    তারায় ভরা চৈত্রমাসের রাতে
    ফিরে গিয়ে ছাতে
    মনে হল আকাশপানে চেয়ে
    আমার বামীর মতোই যেন অমনি কে এক মেয়ে
    নীলাম্বরের আঁচল্‌খানি ঘিরে
    দীপশিখাটি বাঁচিয়ে একা চলছে ধীরে ধীরে।
    নিবত যদি আলো, যদি হঠাৎ যেত থামি
    আকাশ ভরে উঠত কেঁদে, “হারিয়ে গেছি আমি।”

    Hariye Jaoa Poem by Rabindranath Tagore Lyrics

    Rabindranath Tagore

    Chotto amar meye
    Sanginider daak shunte peye
    Siri diye nicher tolay jacchilo shey neme
    Ondhokare bhoye bhoye, theme theme
    Hathe chilo prodipkhani
    Aachol diye aral kore cholechilo shabdhani

    Ami chiam chate
    taray bhora choitramasher raate
    Hotath meyer kanna shune, uthe
    Dekhte gelam chute
    Sirir moddhe jete jete
    Prodipta tar nibhe geche batasheta
    Sudhai tare, Ki hoyeche bami?
    She kede koy niche theke, hariye gechi aami!

    Taray bhora choitramasher raate
    Fire gechi chate
    MOne holo akash paane cheye
    Amar bamir motoi jeno omni ke ek meye
    Nilamborer aacholkhani ghire
    Deepshikati bachiye eka chilche dhire dhire
    Nibot jodi aalo, jodi hotath jeto thami
    Akash bhore uthto kede, Hariye gechi ami!

     

    See less
    • 0
  • 1
  • 5,551
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

কবিতা : পরিচয় (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Porichoy Poem by Rabindranath Tagore Lyrics

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 418 Answers
    • 14 Best Answers
    • 2,115 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on April 27, 2021 at 1:18 am

    পরিচয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তকাব্যগ্রন্থঃ সেঁজুতি একদিন তরীখানা থেমেছিল এই ঘাটে লেগে, বসন্তের নূতন হাওয়ার বেগে। তোমরা শুধায়েছিলে মোরে ডাকি পরিচয় কোনো আছে নাকি, যাবে কোন্‌খানে। আমি শুধু বলেছি, কে জানে। নদীতে লাগিল দোলা, বাঁধনে পড়িল টান, একা বসে গাহিলাম যৌবনের বেদনার গান। সেই গান শুনি কুসুমিত তরুতলে তরুণতRead more

    পরিচয়

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    তকাব্যগ্রন্থঃ সেঁজুতি

    একদিন তরীখানা থেমেছিল এই ঘাটে লেগে,
    বসন্তের নূতন হাওয়ার বেগে।
    তোমরা শুধায়েছিলে মোরে ডাকি
    পরিচয় কোনো আছে নাকি,
    যাবে কোন্‌খানে।
    আমি শুধু বলেছি, কে জানে।
    নদীতে লাগিল দোলা, বাঁধনে পড়িল টান,
    একা বসে গাহিলাম যৌবনের বেদনার গান।
    সেই গান শুনি
    কুসুমিত তরুতলে তরুণতরুণী
    তুলিল অশোক,
    মোর হাতে দিয়ে তারা কহিল, “এ আমাদেরই লোক।’
    আর কিছু নয়,
    সে মোর প্রথম পরিচয়।

    তার পরে জোয়ারের বেলা
    সাঙ্গ হল, সাঙ্গ হল তরঙ্গের খেলা;
    কোকিলের ক্লান্ত গানে
    বিস্মৃত দিনের কথা অকস্মাৎ যেন মনে আনে;
    কনকচাঁপার দল পড়ে ঝুরে,
    ভেসে যায় দূরে–
    ফাল্গুনের উৎসবরাতির
    নিমন্ত্রণলিখন-পাঁতির
    ছিন্ন অংশ তারা
    অর্থহারা।
    ভাঁটার গভীর টানে
    তরীখানা ভেসে যায় সমুদ্রের পানে।
    নূতন কালের নব যাত্রী ছেলেমেয়ে
    শুধাইছে দূর হতে চেয়ে,
    “সন্ধ্যার তারার দিকে
    বহিয়া চলেছে তরণী কে।’
    সেতারেতে বাঁধিলাম তার,
    গাহিলাম আরবার–
    মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক,
    আমি তোমাদেরই লোক
    আর কিছু নয়,
    এই হোক শেষ পরিচয়।

     

    Poem: Porichoy

    By: Rabindranath Tagore

    Ekdin tarikhana themechilo ei fgate lege
    Basanter natun hawar bege
    Tomora sudhayechile more daaki
    Porichoy kuno aache naki
    Jabe konkhane?
    Ami sudhu bolechi, ke Jane
    Nadite lagilo dola, badhone porilo taan
    Eka boshe gahilam jouboner bedonar gaan
    Shei gaan shuni
    Kushumito tarutole tarun taruni
    Tulilo ashok
    Mor hathe diya kahilo E amadere lok
    Aar kichu noy
    She mor prothom porichoy
    Tar pore jowarer bela
    Shango holo, Shango holo jowarer khela
    Kokiler klanto gaane
    Bisrito diner kotha okshat jeno mone aane
    Kanak chapar dal pore jhure
    veshe jay dure,
    Falguner utshobratir
    Nimontron likhopona
    Chinno angsho tara orthohara
    Vatar gabhir taane
    Tarikhana veshe jaay samudrer paane
    Natun kaaler nabajatri chelemeye
    Shudhaite dur hote cheye
    Shondhar tarar dike
    Bohiya choliche tarani ke?
    Setarete badhilam tar
    Gahilam arbar
    MOr nam ei bole khyato hok
    Ami tomader lok
    Ar kichu noy
    Ei hok shesh porichoy

    See less
    • 0
  • 1
  • 2,866
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

কবিতা : হঠাৎ দেখা | Hothat Dekha Poem by Rabindranath Tagore lyrics

  1. Nibedita Paul

    Nibedita Paul

    • India
    • 41 Questions
    • 153 Answers
    • 8 Best Answers
    • 677 Points
    View Profile
    Nibedita Paul
    Added an answer on May 4, 2021 at 1:54 am

    হঠাৎ দেখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থঃ শ্যামলী রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা, ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন। আগে ওকে বারবার দেখেছি লালরঙের শাড়িতে দালিম ফুলের মতো রাঙা; আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়, আঁচল তুলেছে মাথায় দোলনচাঁপার মতো চিকনগৌর মুখখানি ঘিরে। মনে হল, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্ব ঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চারRead more

    হঠাৎ দেখা

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    কাব্যগ্রন্থঃ শ্যামলী

    রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা,
    ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন।
    আগে ওকে বারবার দেখেছি
    লালরঙের শাড়িতে
    দালিম ফুলের মতো রাঙা;
    আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়,
    আঁচল তুলেছে মাথায়
    দোলনচাঁপার মতো চিকনগৌর মুখখানি ঘিরে।
    মনে হল, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্ব
    ঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চার দিকে,
    যে দূরত্ব সর্ষেখেতের শেষ সীমানায়
    শালবনের নীলাঞ্জনে।
    থমকে গেল আমার সমস্ত মনটা;
    চেনা লোককে দেখলেম অচেনার গাম্ভীর্যে।
    হঠাৎ খবরের কাগজ ফেলে দিয়ে
    আমাকে করলে নমস্কার।
    সমাজবিধির পথ গেল খুলে,
    আলাপ করলেম শুরু —
    কেমন আছ, কেমন চলছে সংসার
    ইত্যাদি।

    সে রইল জানলার বাইরের দিকে চেয়ে
    যেন কাছের দিনের ছোঁয়াচ-পার-হওয়া চাহনিতে।
    দিলে অত্যন্ত ছোটো দুটো-একটা জবাব,
    কোনোটা বা দিলেই না।
    বুঝিয়ে দিলে হাতের অস্থিরতায় —
    কেন এ-সব কথা,
    এর চেয়ে অনেক ভালো চুপ করে থাকা।
    আমি ছিলেম অন্য বেঞ্চিতে
    ওর সাথিদের সঙ্গে।
    এক সময়ে আঙুল নেড়ে জানালে কাছে আসতে।
    মনে হল কম সাহস নয়;
    বসলুম ওর এক-বেঞ্চিতে।
    গাড়ির আওয়াজের আড়ালে
    বললে মৃদুস্বরে,
    “কিছু মনে কোরো না,
    সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।
    আমাকে নামতে হবে পরের স্টেশনেই;
    দূরে যাবে তুমি,
    দেখা হবে না আর কোনোদিনই।
    তাই যে প্রশ্নটার জবাব এতকাল থেমে আছে,
    শুনব তোমার মুখে।
    সত্য করে বলবে তো?
    আমি বললেম, “বলব।”
    বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়েই শুধোল,
    “আমাদের গেছে যে দিন
    একেবারেই কি গেছে,
    কিছুই কি নেই বাকি।”
    একটুকু রইলেম চুপ করে;
    তারপর বললেম,
    “রাতের সব তারাই আছে
    দিনের আলোর গভীরে।”
    খটকা লাগল, কী জানি বানিয়ে বললেম না কি।
    ও বললে, “থাক্‌, এখন যাও ও দিকে।”
    সবাই নেমে গেল পরের স্টেশনে;
    আমি চললেম একা।

    Hothat Dekha Poem by Rabindranath Tagore recitation:

    Hothat Dekha

    Rabindranath Tagore

    Rail gaṛir kamray hoṭath dekha,
    bhabi ni sambhab hobe kunodin.
    Age oke barbar dekhechi
    Lal ranger saṛite
    Dalim phuler mato ranga;
    Aj poreche kalo resomer kapaṛ,
    Achal tuleche mathay
    Dolan chapar mato cikangaur mukh khani ghire.
    Mone hola, kalo ronge ekṭa gabhir duratta
    Ghaniye niyeche nijer char dike,
    Je duratta sarṣekheter seṣh simanay
    Shalaboner nilanjane.
    Thomke gelo amar samasta manṭa;
    Chena lok ke dekhlem achenar gambhirye.
    Hoṭhaṯ khabarer kagaj phele diye
    Amake korle namaskar.
    Samaj bidhir path gelo khule,
    Alap korlem shuru
    keman acho, keman cholche sangshar
    ityadi.
    Se ro’ila janalar ba’irera dike cheye
    Jeno kacher diner choyacho-par-howa chahonite.
    Dile atyanta choṭo duṭo-ekṭa jabab,
    Konoṭa ba dile’i na.
    Bujhiye dile hater asthirotaya–
    keno e-sab kotha,
    Er cheye anek bhalo chup kore thaka.
    Ami chilem an’ya benchite
    Or shathider sange.
    Ek samay angul neṛe janale kache aste.
    Mone holo kam sahos noy;

    See less
    • 0
  • 1
  • 1,661
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

কবিতা : সামান্য ক্ষতি | Rabindranath Tagore Poem Samanya Khati

  • 0
  • 934
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

এসো হে বৈশাখ | Noboborsho Kobita Rabindranath Tagore

  • 0
  • 300
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

কবিতা : নববর্ষে | Noboborsho Poem by Rabindranath Tagore

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 418 Answers
    • 14 Best Answers
    • 2,115 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on April 14, 2021 at 1:26 am

    নববর্ষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থঃ চিত্রা নিশি অবসানপ্রায়, ওই পুরাতন বর্ষ হয় গত! আমি আজি ধূলিতলে এ জীর্ণ জীবন করিলাম নত। বন্ধু হও, শত্রু হও, যেখানে যে কেহ রও, ক্ষমা করো আজিকার মতো পুরাতন বরষের সাথে পুরাতন অপরাধ যত। আজি বাঁধিতেছি বসি সংকল্প নূতন অন্তরে আমার, সংসারে ফিরিয়া গিয়া হয়তো কখন ভুলিব আবারRead more

    নববর্ষে

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    কাব্যগ্রন্থঃ চিত্রা

    নিশি অবসানপ্রায়, ওই পুরাতন
    বর্ষ হয় গত!
    আমি আজি ধূলিতলে এ জীর্ণ জীবন
    করিলাম নত।
    বন্ধু হও, শত্রু হও, যেখানে যে কেহ রও,
    ক্ষমা করো আজিকার মতো
    পুরাতন বরষের সাথে
    পুরাতন অপরাধ যত।

    আজি বাঁধিতেছি বসি সংকল্প নূতন
    অন্তরে আমার,
    সংসারে ফিরিয়া গিয়া হয়তো কখন
    ভুলিব আবার।
    তখন কঠিন ঘাতে এনো অশ্রু আঁখিপাতে
    অধমের করিয়ো বিচার।
    আজি নব-বরষ-প্রভাতে
    ভিক্ষা চাহি মার্জনা সবার।

    আজ চলে গেলে কাল কী হবে না-হবে
    নাহি জানে কেহ,
    আজিকার প্রীতিসুখ রবে কি না-রবে
    আজিকার স্নেহ।
    যতটুকু আলো আছে কাল নিবে যায় পাছে,
    অন্ধকারে ঢেকে যায় গেহ–
    আজ এসো নববর্ষদিনে
    যতটুকু আছে তাই দেহ।

    বিস্তীর্ণ এ বিশ্বভূমি সীমা তার নাই,
    কত দেশ আছে!
    কোথা হতে কয় জনা হেথা এক ঠাঁই
    কেন মিলিয়াছে?
    করো সুখী, থাকো সুখে প্রীতিভরে হাসিমুখে
    পুষ্পগুচ্ছ যেন এক গাছে–
    তা যদি না পার চিরদিন,
    একদিন এসো তবু কাছে।

    সময় ফুরায়ে গেলে কখন আবার
    কে যাবে কোথায়,
    অনন্তের মাঝখানে পরস্পরে আর
    দেখা নাহি যায়।
    বড়ো সুখ বড়ো ব্যথা চিহ্ন না রাখিবে কোথা,
    মিলাইবে জলবিম্ব প্রায়–
    একদিন প্রিয়মুখ যত
    ভালো করে দেখে লই আয়!

    আপন সুখের লাগি সংসারের মাঝে
    তুলি হাহাকার!
    আত্ম-অভিমানে অন্ধ জীবনের কাজে
    আনি অবিচার!
    আজি করি প্রাণপণ করিলাম সমর্পণ
    এ জীবনে যা আছে আমার।
    তোমরা যা দিবে তাই লব,
    তার বেশি চাহিব না আর।

    লইব আপন করি নিত্যধৈর্যতরে
    দুঃখভার যত,
    চলিব কঠিন পথে অটল অন্তরে
    সাধি মহাব্রত।
    যদি ভেঙে যায় পণ, দুর্বল এ শ্রান্ত মন
    সবিনয়ে করি শির নত
    তুলি লব আপনার ‘পরে
    আপনার অপরাধ যত!

    যদি ব্যর্থ হয় প্রাণ, যদি দুঃখ ঘটে–
    ক’দিনের কথা!
    একদা মুছিয়া যাবে সংসারের পটে
    শূন্য নিষ্ফলতা।
    জগতে কি তুমি একা? চতুর্দিকে যায় দেখা
    সুদুর্ভর কত দুঃখব্যথা।
    তুমি শুধু ক্ষুদ্র একজন,
    এ সংসারে অনন্ত জনতা।

    যতক্ষণ আছ হেথা স্থিরদীপ্তি থাকো,
    তারার মতন।
    সুখ যদি নাহি পাও, শান্তি মনে রাখো
    করিয়া যতন।
    যুদ্ধ করি নিরবধি বাঁচিতে না পার যদি,
    পরাভব করে আক্রমণ,
    কেমনে মরিতে হয় তবে
    শেখো তাই করি প্রাণপণ।

    জীবনের এই পথ, কে বলিতে পারে
    বাকি আছে কত?
    মাঝে কত বিঘ্নশোক, কত ক্ষুরধারে
    হৃদয়ের ক্ষত?
    পুনর্বার কালি হতে চলিব সে তপ্ত পথে,
    ক্ষমা করো আজিকার মতো–
    পুরাতন বরষের সাথে
    পুরাতন অপরাধ যত।

    ওই যায়, চলে যায় কালপরপারে
    মোর পুরাতন।
    এই বেলা, ওরে মন, বল্ অশ্রুধারে
    কৃতজ্ঞ বচন।
    বল্ তারে– দুঃখসুখ দিয়েছ ভরিয়া বুক,
    চিরকাল রহিবে স্মরণ,
    যাহা-কিছু লয়ে গেলে সাথে
    তোমারে করিনু সমর্পণ।

    ওই এল এ জীবনে নূতন প্রভাতে
    নূতন বরষ–
    মনে করি প্রীতিভরে বাঁধি হাতে হাতে,
    না পাই সাহস।
    নব অতিথিরে তবু ফিরাইতে নাই কভু–
    এসো এসো নূতন দিবস!
    ভরিলাম পুণ্য অশ্রুজলে
    আজিকার মঙ্গলকলস।

     

    নববর্ষ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লিখিত আরও কয়েকটি কবিতা এখানে দেখুন

    Poem : Noboborsho

    By : Rabindranath Tagore

    Nishi oboshanpray, Oi puratan
    Borsho hoy goto
    Ami aji dhulitole e jirno jibon
    KOrilam Noto
    Bandhu how, Shatru ho, Jekhane je keho ro
    Khoma koro ajikar moto
    Puraton borosher sathe
    Puraton oporadh joto

    Aji badhiteche boshi shonkolpo natun
    Antore amar
    songsare firiya giya hoyto kokhon
    Bhulibo abar
    Takhan kothin ghate eno osru akhipate
    Odhomer koriyo bichar
    Aji nababorsho probhate
    Vikkha chahi marjona shobar

    Aaj chole gele kal ki hobe na hobe
    Nahi jane keho
    Ajikar priti shukh robe kina robe
    Aajikar sneho
    jatatuku alo aacha kal nibhe jay pache
    Ondhokare dheke jay geho
    Ajo esho Nababarsho dine
    Jatatuku aache tai deho

    Bistirno e bishwabhumi shima tar nai
    Koto desh aache
    Kotha hote koy jona hetha ek thai
    keno miliyache?
    Koro shukhi, Takho shukhe pritibhore hashimukhe
    Pushpo jeno ek gache
    Ta jodi na par chirodin
    Ekdin esho tabu kache

    Shomoy FUraye gele kokhon abar
    Ke jabe kuthay
    Ononter majhkhane prospore ar
    Dekha nahi jay
    Boro sukh boro byatha chinno na rakhibe kutha
    Milaibe jolobimbo pray
    Ekdin Priyomukh jata
    Bhalo kore dekhe loi aay

    Apon sukher lagi songsharer majhe
    Tuli hahakar
    Atmo-obhimane ondho jiboner kaje
    Ani obichar
    Aji kori pronopon korilam shomorpon
    E jibone ja aache amar
    Tomra ja dibe tai lobo
    Tar beshi chahibo na ar

    Loibo apon kori nityodhoirjotore
    Dukkhobhar joto
    Cholibo kothin pothe otol ontore
    sadhi mohabroto
    Jodi venge jay pon, durbol e shanto mon
    Shobinoye kori shiro noto
    Tuli lobo aponar pore
    Aponar oporadh jato

    Jodi bertho hoy pran, jodi dukkho ghote
    kodiner kotha
    Ekoda muchiya jabe shongsharer pote
    Shunno nishfolota
    Jogote ki tumi eka? choturdike dekha jay
    Shu durbhor koto dukkho byatha
    Tumi shudhu khudro ekjon
    E shongshare ononto janata

     

    See less
    • 0
  • 1
  • 3,165
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

কবিতা : প্রার্থনা | Prarthana Poem by Rabindranath Tagore in Bengali

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 418 Answers
    • 14 Best Answers
    • 2,115 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on April 27, 2021 at 12:17 pm

    প্রার্থনা নাম দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বেশ কয়েকটি কবিতা রয়েছে। সেগুলো বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থে আলাদা ভাবে প্রকাশিত হয়েছে। প্রার্থনা নাম দিয়ে যে কবিতাগুলো পাওয়া যায় সেগুলো নিম্নরুপ। প্রার্থনা - (চৈতালি) প্রার্থনা - (খেয়া) প্রার্থনা - (গীতাঞ্জলী) প্রার্থনা - (কড়ি ও কোমল) প্রার্থনা - (পরিশেষ)   প্রার্Read more

    প্রার্থনা নাম দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বেশ কয়েকটি কবিতা রয়েছে। সেগুলো বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থে আলাদা ভাবে প্রকাশিত হয়েছে। প্রার্থনা নাম দিয়ে যে কবিতাগুলো পাওয়া যায় সেগুলো নিম্নরুপ।

    • প্রার্থনা – (চৈতালি)
    • প্রার্থনা – (খেয়া)
    • প্রার্থনা – (গীতাঞ্জলী)
    • প্রার্থনা – (কড়ি ও কোমল)
    • প্রার্থনা – (পরিশেষ)

     

    প্রার্থনা

    কাব্যগ্রন্থ – চৈতালি

    আজি কোন্‌ ধন হতে বিশ্ব আমারে
    কোন্‌ জনে করে বঞ্চিত
    তব চরণকমলরতনরেণুকা
    অন্তরে আছে সঞ্চিত।
    কত নিঠুর কঠোর ঘরশে ঘরষে
    মর্মমাঝারে শল্য বরষে
    তবু প্রাণমন পীযূষপরশে
    পলে পলে পুলকাঞ্চিত!
    আজি কিসের পিপাসা মিটিল না, ওগো
    পরম-পরান-বল্লভ।
    চিতে চিরসুধা করে সঞ্চার, তব
    সকরুণ করপল্লব।
    হেথা কত দিনে রাতে অপমানঘাতে
    আছি নতশির গঞ্জিত,
    তবু চিত্তললাট তোমারি স্বকরে
    রয়েছে তিলকরঞ্জিত।
    হেথা কে আমার কানে কঠিন বচনে
    বাজায় বিরোধঝঞ্ঝনা!
    প্রাণে দিবসরজনী উঠিতেছে ধ্বনি
    তোমারি বীণার গুঞ্জনা।
    নাথ, যার যাহা আছে তার তাই থাক্‌,
    আমি থাকি চিরলাঞ্ছিত।
    শুধু তুমি এ জীবনে নয়নে নয়নে
    থাকো থাকো চিরবাঞ্ছিত।

     

    প্রার্থনা

    কাব্যগ্রন্থ – খেয়া

    আমি বিকাব না কিছুতে আর
    আপনারে।
    আমি দাঁড়াতে চাই সভার তলে
    সবার সাথে এক সারে।
    সকালবেলার আলোর মাঝে
    মলিন যেন না হই লাজে,
    আলো যেন পশিতে পায়
    মনের মধ্যে একবারে।
    বিকাব না, বিকাব না
    আপনারে।

    আমি বিশ্ব-সাথে রব সহজ
    বিশ্বাসে।
    আমি আকাশ হতে বাতাস নেব
    প্রাণের মধ্যে নিশ্বাসে।
    পেয়ে ধরার মাটির স্নেহ
    পুণ্য হবে সর্ব দেহ,
    গাছের শাখা উঠবে দুলে
    আমার মনের উল্লাসে।
    বিশ্বে রব সহজ সুখে
    বিশ্বাসে।

    আমি সবায় দেখে খুশি হব
    অন্তরে।
    কিছু বেসুর যেন বাজে না আর
    আমার বীণা-যন্তরে।
    যাহাই আছে নয়ন ভরি
    সবই যেন গ্রহণ করি,
    চিত্তে নামে আকাশ-গলা
    আনন্দিত মন্ত্র রে।
    সবায় দেখে তৃপ্ত রব
    অন্তরে।

     

    প্রার্থনা

    কাব্যগ্রন্থ – গীতাঞ্জলী

    চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির,
    জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর
    আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী
    বসুধারে রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি,
    যেথা বাক্য হৃদয়ের উৎসমুখ হতে
    উচ্ছ্বসিয়া উঠে, যেথা নির্বারিত স্রোতে
    দেশে দেশে দিশে দিশে কর্মধারা ধায়
    অজস্র সহস্রবিধ চরিতার্থতায়–
    যেথা তুচ্ছ আচারের মরুবালুরাশি
    বিচারের স্রোতঃপথ ফেলে নাই গ্রাসি,
    পৌরুষেরে করে নি শতধা; নিত্য যেথা
    তুমি সর্ব কর্ম চিন্তা আনন্দের নেতা–
    নিজ হস্তে নির্দয় আঘাত করি, পিতঃ,
    ভারতেরে সেই স্বর্গে করো জাগরিত।

     

    প্রার্থনা

    কাব্যগ্রন্থ – কড়ি ও কোমল

    তুমি কাছে নাই ব’লে হেরো সখা, তাই
    “আমি বড়ো’ “আমি বড়ো’ করিছে সবাই।
    সকলেই উঁচু হয়ে দাঁড়ায়ে সমুখে
    বলিতেছে, “এ জগতে আর কিছু নাই।’
    নাথ, তুমি একবার এসো হাসিমুখে
    এরা সবে ম্লান হয়ে লুকাক লজ্জায়–
    সুখ দুঃখ টুটে যাক তব মহাসুখে,
    যাক আলো অন্ধকার তোমার প্রভায়।
    নহিলে ডুবেছি আমি, মরেছি হেথায়,
    নহিলে ঘুচে না আর মর্মের ক্রন্দন–
    শুষ্ক ধূলি তুলি শুধু সুধাপিপাসায়,
    প্রেম ব’লে পরিয়াছি মরণবন্ধন।
    কভু পড়ি কভু উঠি, হাসি আর কাঁদি–
    খেলাঘর ভেঙে প’ড়ে রচিছে সমাধি।

     

    প্রার্থনা

    কাব্যগ্রন্থ – পরিশেষ

    কামনায় কামনায় দেশে দেশে যুগে যুগান্তরে
    নিরন্তর নিদারুণ দ্বন্দ্ব যবে দেখি ঘরে ঘরে
    প্রহরে প্রহরে; দেখি অন্ধ মোহ দুরন্ত প্রয়াসে
    বুভুক্ষার বহ্নি দিয়ে ভস্মীভূত করে অনায়াসে
    নিঃসহায় দুর্ভাগার সকরুণ সকল প্রত্যাশা,
    জীবনের সকল সম্বল; দুঃখীর আশ্রয়বাসা
    নিশ্চিন্তে ভাঙিয়া আনে দুর্দাম দুরাশাহোমানলে
    আহুতি-ইন্ধন জোগাইতে; নিঃসংকোচে গর্বে বলে,
    আত্মতৃপ্তি ধর্ম হতে বড়ো; দেখি আত্মম্ভরী প্রাণ
    তুচ্ছ করিবারে পারে মানুষের গভীর সম্মান
    গৌরবের মৃগতৃষ্ণিকায়; সিদ্ধির স্পর্ধার তরে
    দীনের সর্বস্ব সার্থকতা দলি দেয় ধূলি-‘পরে
    জয়যাত্রাপথে; দেখি ধিক্কারে ভরিয়া উঠে মন,
    আত্মজাতি-মাংসলুব্ধ মানুষের প্রাণনিকেতন
    উন্মীলিছে নখে দন্তে হিংস্র বিভীষিকা; চিত্ত মম
    নিষ্কৃতিসন্ধানে ফিরে পিঞ্জরিত বিহঙ্গমসম,
    মুহূর্তে মুহূর্তে বাজে শৃঙ্খলবন্ধন-অপমান
    সংসারের। হেনকালে জ্বলি উঠে বজ্রাগ্নি-সমান
    চিত্তে তাঁর দিব্যমূর্তি, সেই বীর রাজার কুমার
    বাসনারে বলি দিয়া বিসর্জিয়া সর্ব আপনার
    বর্তমানকাল হতে নিষ্ক্রমিলা নিত্যকাল-মাঝে
    অনন্ত তপস্যা বহি মানুষের উদ্ধারের কাজে
    অহমিকা-বন্দীশালা হতে। – ভগবান বুদ্ধ তুমি,
    নির্দয় এ লোকালয়, এ ক্ষেত্রই তব জন্মভূমি।
    ভরসা হারাল যারা, যাহাদের ভেঙেছে বিশ্বাস,
    তোমারি করুণাবিত্তে ভরুক তাদের সর্বনাশ, —
    আপনারে ভুলে তারা ভুলুক দুর্গতি। – আর যারা
    ক্ষীণের নির্ভর ধ্বংস করে, রচে দুর্ভাগ্যের কারা
    দুর্বলের মুক্তি রুধি, বোসো তাহাদেরি দুর্গদ্বারে
    তপের আসন পাতি; প্রমাদবিহ্বল অহংকারে
    পড়ুক সত্যের দৃষ্টি; তাদের নিঃসীম অসম্মান
    তব পুণ্য আলোকেতে লভুক নিঃশেষ অবসান।
    তব পুণ্যে আলোকেতে লভুক নি:শেষ অবসান।

    See less
    • 0
  • 1
  • 4,969
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

কবিতা : শাহজাহান | Shahjahan Poem by Rabindranath Tagore in Bengali

  1. Nibedita Paul

    Nibedita Paul

    • India
    • 41 Questions
    • 153 Answers
    • 8 Best Answers
    • 677 Points
    View Profile
    Nibedita Paul
    Added an answer on May 4, 2021 at 1:09 am

    শাহজাহান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থঃ বলাকা এ কথা জানিতে তুমি, ভারত-ঈশ্বর শা-জাহান, কালস্রোতে ভেসে যায় জীবন যৌবন ধন মান। শুধু তব অন্তরবেদনা চিরন্তন হয়ে থাক্‌ সম্রাটের ছিল এ সাধনা। রাজশক্তি বজ্র সুকঠিন সন্ধ্যারক্তরাগসম তন্দ্রাতলে হয় হোক লীন, কেবল একটি দীর্ঘশ্বাস নিত্য-উচ্ছ্বসিত হয়ে সকরুণ করুক আকাশRead more

    শাহজাহান

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    কাব্যগ্রন্থঃ বলাকা

    এ কথা জানিতে তুমি, ভারত-ঈশ্বর শা-জাহান,
    কালস্রোতে ভেসে যায় জীবন যৌবন ধন মান।
    শুধু তব অন্তরবেদনা
    চিরন্তন হয়ে থাক্‌ সম্রাটের ছিল এ সাধনা।
    রাজশক্তি বজ্র সুকঠিন
    সন্ধ্যারক্তরাগসম তন্দ্রাতলে হয় হোক লীন,
    কেবল একটি দীর্ঘশ্বাস
    নিত্য-উচ্ছ্বসিত হয়ে সকরুণ করুক আকাশ
    এই তব মনে ছিল আশ।
    হীরা মুক্তামানিক্যের ঘটা
    যেন শূন্য দিগন্তের ইন্দ্রজাল ইন্দ্রধনুচ্ছটা
    যায় যদি লুপ্ত হয়ে যাক,
    শুধু থাক্‌
    একবিন্দু নয়নের জল
    কালের কপোলতলে শুভ্র সমুজ্জ্বল
    এ তাজমহল।

    হায় ওরে মানবহৃদয়,
    বার বার
    কারো পানে ফিরে চাহিবার
    নাই যে সময়,
    নাই নাই।
    জীবনের খরস্রোতে ভাসিছ সদাই
    ভুবনের ঘাটে ঘাটে–
    এক হাটে লও বোঝা, শূন্য করে দাও অন্য হাটে।
    দক্ষিণের মন্ত্রগুঞ্জরণে
    তব কুঞ্জবনে
    বসন্তের মাধবীমঞ্জরী
    যেই ক্ষণে দেয় ভরি
    মালঞ্চের চঞ্চল অঞ্চল,
    বিদায় গোধূলি আসে ধুলায় ছড়ায়ে ছিন্নদল।
    সময় যে নাই;
    আবার শিশিররাত্রে তাই
    নিকুঞ্জে ফুটায়ে তোল নব কুন্দরাজি
    সাজাইতে হেমন্তের অশ্রুভরা আনন্দের সাজি।
    হায় রে হৃদয়,
    তোমার সঞ্চয়
    দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
    নাই নাই, নাই যে সময়।
    হে সম্রাট, তাই তব শঙ্কিত হৃদয়
    চেয়েছিল করিবারে সময়ের হৃদয় হরণ
    সৌন্দর্যে ভুলায়ে।
    কণ্ঠে তার কী মালা দুলায়ে
    করিলে বরণ
    রূপহীন মরণেরে মৃত্যুহীন অপরূপ সাজে।
    রহে না যে
    বিলাপের অবকাশ
    বারো মাস,
    তাই তব অশান্ত ক্রন্দনে
    চিরমৌন জাল দিয়ে বেঁধে দিলে কঠিন বন্ধনে।
    জ্যোৎস্নারাতে নিভৃত মন্দিরে
    প্রেয়সীরে
    যে-নামে ডাকিতে ধীরে ধীরে
    সেই কানে-কানে ডাকা রেখে গেলে এইখানে
    অনন্তের কানে।
    প্রেমের করুণ কোমলতা
    ফুটিল তা
    সৌন্দর্যের পুষ্পপুঞ্জে প্রশান্ত পাষাণে।
    হে সম্রাট কবি,
    এই তব হৃদয়ের ছবি,
    এই তব নব মেঘদূত,
    অপূর্ব অদ্ভুত
    ছন্দে গানে
    উঠিয়াছে অলক্ষের পানে
    যেথা তব বিরহিণী প্রিয়া
    রয়েছে মিশিয়া
    প্রভাতের অরুণ-আভাসে,
    ক্লান্তসন্ধ্যা দিগন্তের করুণ নিশ্বাসে,
    পূর্ণিমায় দেহহীন চামেলির লাবণ্যবিলাসে,
    ভাষার অতীত তীরে
    কাঙাল নয়ন যেথা দ্বার হতে আসে ফিরে ফিরে।
    তোমার সৌন্দর্যদূত যুগ যুগ ধরি
    এড়াইয়া কালের প্রহরী
    চলিয়াছে বাক্যহারা এই বার্তা নিয়া
    “ভুলি নাই, ভুলি নাই, ভুলি নাই প্রিয়া।”
    চলে গেছ তুমি আজ
    মহারাজ;
    রাজ্য তব স্বপ্নসম গেছে ছুটে,
    সিংহাসন গেছে টুটে;
    তব সৈন্যদল
    যাদের চরনভরে ধরণী করিত টলমল
    তাহাদের স্মৃতি আজ বায়ুভরে
    উড়ে যায় দিল্লীর পথের ধূলি-‘পরে।
    বন্দীরা গাহে না গান;
    যমুনা-কল্লোলসাথে নহবত মিলায় না তান;
    তব পুরসুন্দরীর নূপুরনিক্কণ
    ভগ্ন প্রাসাদের কোণে
    ম’রে গিয়ে ঝিল্লীস্বনে
    কাঁদায় রে নিশার গগন।
    তবুও তোমার দূত অমলিন,
    শ্রান্তিক্লান্তিহীন,
    তুচ্ছ করি রাজ্য-ভাঙাগড়া,
    তুচ্ছ করি জীবনমৃত্যুর ওঠাপড়া,
    যুগে যুগান্তরে
    কহিতেছে একস্বরে
    চিরবিরহীর বাণী নিয়া
    “ভুলি নাই, ভুলি নাই, ভুলি নাই প্রিয়া।”
    মিথ্যা কথা– কে বলে যে ভোল নাই।
    কে বলে রে খোল নাই
    স্মৃতির পিঞ্জরদ্বার।
    অতীতের চির অস্ত-অন্ধকার
    আজিও হৃদয় তব রেখেছে বাঁধিয়া?
    বিস্মৃতির মুক্তিপথ দিয়া
    আজিও সে হয় নি বাহির?
    সমাধিমন্দির
    এক ঠাঁই রহে চিরস্থির;
    ধরায় ধুলায় থাকি
    স্মরণের আবরণে মরণেরে যত্নে রাখে ঢাকি।
    জীবনেরে কে রাখিতে পারে।
    আকাশের প্রতি তারা ডাকিছে তাহারে।
    তার নিমন্ত্রণ লোকে লোকে
    নব নব পূর্বাচলে আলোকে আলোকে।
    স্মরণের গ্রন্থি টুটে
    সে যে যায় ছুটে
    বিশ্বপথে বন্ধনবিহীন।
    মহারাজ, কোনো মহারাজ্য কোনোদিন
    পারে নাই তোমারে ধরিতে;
    সমুদ্রস্তনিত পৃথ্বী, হে বিরাট, তোমারে ভরিতে
    নাহি পারে–
    তাই এ-ধরারে
    জীবন-উৎসব-শেষে দুই পায়ে ঠেলে
    মৃৎপাত্রের মতো যাও ফেলে।
    তোমার কীর্তির চেয়ে তুমি যে মহৎ,
    তাই তব জীবনের রথ
    পশ্চাতে ফেলিয়া যায় কীর্তিরে তোমার
    বারম্বার।
    তাই
    চিহ্ন তব পড়ে আছে, তুমি হেথা নাই।
    যে প্রেম সম্মুখপানে
    চলিতে চালাতে নাহি জানে,
    যে প্রেম পথের মধ্যে পেতেছিল নিজ সিংহাসন,
    তার বিলাসের সম্ভাষণ
    পথের ধুলার মতো জড়ায়ে ধরেছে তব পায়ে,
    দিয়েছ তা ধূলিরে ফিরায়ে।
    সেই তব পশ্চাতের পদধূলি-‘পরে
    তব চিত্ত হতে বায়ুভরে
    কখন সহসা
    উড়ে পড়েছিল বীজ জীবনের মাল্য হতে খসা।
    তুমি চলে গেছ দূরে
    সেই বীজ অমর অঙ্কুরে
    উঠেছে অম্বরপানে,
    কহিছে গম্ভীর গানে–
    “যত দূর চাই
    নাই নাই সে পথিক নাই।
    প্রিয়া তারে রাখিল না, রাজ্য তারে ছেড়ে দিল পথ
    রুধিল না সমুদ্র পর্বত।
    আজি তার রথ
    চলিয়াছে রাত্রির আহ্বানে
    নক্ষত্রের গানে
    প্রভাতের সিংহদ্বার পানে।
    তাই
    স্মৃতিভারে আমি পড়ে আছি,
    ভারমুক্ত সে এখানে নাই।’

     

    Shahjahan Poem by Rabindranath Tagore Recitation

    Shah jahan Kobita by by Rabindranath Tagore:

    E kotha janite tumi, Bharat isshor Shah Jahan
    kalasrote bhese jay jibon joubon dhan man.
    Sudhu taba antarbedona
    Chironton hoye thak samraṭer chilo e shadhona
    Rajshakti bajra sukothin
    Shondhyaraktoshomagom tondratole hoy hok lin
    Kebol ekti dhirgoshash
    Nityo ucchoshito hoye sokarun karuk akash
    Ei taba mone chilo asha
    Hira Mukta manikyer ghota
    Jeno shunno digonter indrojal indrodhanucchota
    Jay Jodi lupto hoye jak
    Sudhu thak
    Ekbindu nayaner jol
    Kaler kopoltole shuvro shomujjol
    E tajmahal

    Haay ore manabhridoy
    Baar baar
    karo pane fire chahibar
    Nai je shomoy
    nai nai
    Jiboner Khorsrute bhashicho shodai
    Bhubaner ghate ghate
    Ek hate lo buja, Shunno kore dai onno hate
    Dokkhiner mantragunjorone
    Taba kunjobone
    Basanter Madhobimanjori
    Jei khone dey bhori
    maloncher chonchol chonchol
    Biday godhuli aashe dhulay choraye chinno dol
    Somoy je nai
    Abar shishir ratre tai
    Nikunje futaye tol naba kundraji
    Sajaite hemonter asrubhora anonder shaji
    haay re hridoy
    Tomar sonchoy
    Dinante Nishante shudhu pothoprante fele jete hoy
    nai nai, nau je shomoy

    He shomrat, tai taba shonkito hridoy
    Cheyechilo koribare shomoyer hridoyhoron
    Shoundorje bhulaye
    Konthe tar ki mala dulaye
    Korile baran
    Roophin moroner mrituhin oporup shaje
    Rohe na je Bilaper obokash
    Baro mash
    Tai taba oshanto krondone
    Chiro mounojal diye bedhe dile kothin bondhone
    Josnarate nivrito mondire
    Preyoshire
    Je name dakite dhire dhire
    Shei kane kane daka rekhe gele eikhane
    Ononter kane
    Premer karun komolota
    Futilo ta
    Shoundorjer pushpo punje proshanto pashane

    See less
    • 0
  • 1
  • 5,203
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

কবিতা : মুক্তি | Mukti Poem Rabindranath Tagore Lyrics in Bengali

  1. Nibedita Paul

    Nibedita Paul

    • India
    • 41 Questions
    • 153 Answers
    • 8 Best Answers
    • 677 Points
    View Profile
    Nibedita Paul
    Added an answer on May 4, 2021 at 11:06 pm

    মুক্তি নামে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেশ কয়েকটি কবিতা লিখেছেন যেগুলো বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে। মুক্তি নামে যে কবিতাগুলো রয়েছে সেগুলো হলঃ মুক্তি -  পরিশেষ মুক্তি - পূরবী মুক্তি -  বীথিকা মুক্তি -  পুনশ্চ মুক্তি -  মহুয়া মুক্তি -  পলাতকা   মুক্তি কাব্যগ্রন্থঃ পরিশেষ ১ আমারে সাহস দাও, দাও শক্তRead more

    মুক্তি নামে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেশ কয়েকটি কবিতা লিখেছেন যেগুলো বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে। মুক্তি নামে যে কবিতাগুলো রয়েছে সেগুলো হলঃ

    • মুক্তি –  পরিশেষ
    • মুক্তি – পূরবী
    • মুক্তি –  বীথিকা
    • মুক্তি –  পুনশ্চ
    • মুক্তি –  মহুয়া
    • মুক্তি –  পলাতকা

     

    মুক্তি

    কাব্যগ্রন্থঃ পরিশেষ

    ১

    আমারে সাহস দাও, দাও শক্তি, হে চিরসুন্দর,
    দাও স্বচ্ছ তৃপ্তির আকাশ, দাও মুক্তি নিরন্তর
    প্রত্যহের ধূলিলিপ্ত চরণপতনপীড়া হতে,
    দিয়ো না দুলিতে মোরে তরঙ্গিত মুহূর্তের স্রোতে,
    ক্ষোভের বিক্ষেপবেগে। শ্রাবণসন্ধ্যার পুষ্পবনে
    গ্লানিহীন যে সাহস সুকুমার যূথীর জীবনে–
    নির্মম বর্ষণঘাতে শঙ্কাশূন্য প্রসন্ন মধুর,
    মুহূর্তের প্রাণটিতে ভরি তোলে অনন্তের সুর,
    সরল আনন্দহাস্যে ঝরি পড়ে তৃণশয্যা ‘পরে,
    পূর্ণতার মূর্তিখানি আপনার বিনম্র অন্তরে
    সুগন্ধে রচিয়া তোলে; দাও সেই অক্ষুব্ধ সাহস,
    সে আত্মবিস্মৃত শক্তি, অব্যাকুল,সহজে স্ববশ
    আপনার সুন্দর সীমায়,– দ্বিধাশূন্য সরলতা
    গাঁথুক শান্তির ছন্দে সব চিন্তা, মোর সব কথা।
    ২

    আপনার কাছ হতে বহুদূরে পালাবার লাগি
    হে সুন্দর, হে অলক্ষ্য, তোমার প্রসাদ আমি মাগি,
    তোমার আহ্বানবাণী। আজ তব বাজুক বাঁশরি,
    চিত্তভরা শ্রাবণপ্লাবনরাগে,– যেন গো পাসরি
    নিকটের তাপতপ্ত ঘূর্ণিবায়ে ক্ষুব্ধ কোলাহল,
    ধূলির নিবিড় টান পদতলে। রয়েছি নিশ্চল
    সারাদিন পথপার্শ্বে; বেলা হয়ে এল অবসান,
    ঘন হয়ে আসে ছায়া, শ্রান্ত সূর্য করিছে সন্ধান
    দিগন্তে অন্তিম শান্তি। দিবা যথা চলেছে নির্ভীক
    চিহ্নহীন সঙ্গহীন অন্ধকার পথের পথিক
    আপনার কাছ হতে অন্তহীন অজানার পানে
    অসীমের সংগীতে উদাসী,– সেইমতো আত্মদানে
    আমারে বাহির করো, শূন্যে শূন্যে পূর্ণ হ’ক সুর,
    নিয়ে যাক পথে পথে হে অলক্ষ্য, হে মহাসুদূর।

     

    মুক্তি

    কাব্যগ্রন্থঃ পূরবী

    মুক্তি নানা মূর্তি ধরি দেখা দিতে আসে নানা জনে —
    এক পন্থা নহে।
    পরিপূর্ণতার সুধা নানা স্বাদে ভুবনে ভুবনে
    নানা স্রোতে বহে।
    সৃষ্টি মোর সৃষ্টি-সাথে মেলে যেথা, সেথা পাই ছাড়া,
    মুক্তি যে আমারে তাই সংগীতের মাঝে দেয় সাড়া,
    সেথা আমি খেলা-খ্যাপা বালকের মতো লক্ষ্মীছাড়া
    লক্ষ্যহীন নগ্ন নিরুদ্দেশ।
    সেথা মোর চির নব, সেথা মোর চিরন্তন শেষ।

    মাঝে মাঝে গানে মোর সুর আসে যে সুরে, হে গুণী,
    তোমারে চিনায়।
    বেঁধে দিয়ো নিজহাতে সেই নিত্য সুরের ফাল্গুনী
    আমার বীণায়।
    তা হলে বুঝিব আমি ধূলি কোন্‌ ছন্দে হয় ফুল
    বসন্তের ইন্দ্রজালে অরণ্যেরে করিয়া ব্যাকুল,
    নব নব মায়াচ্ছায়া কোন্‌ নৃত্যে নিয়ত দোদুল
    বর্ণ বর্ণ ঋতুর দোলায়।
    তোমারি আপন সুর কোন্‌ তালে তোমারে ভোলায়।

    যেদিন আমার গান মিলে যাবে তোমার গানের
    সুরের ভঙ্গিতে
    মুক্তির সংগমতীর্থ পাব আমি আমারি প্রাণের
    আপন সংগীতে।
    সেদিন বুঝিব মনে নাই নাই বস্তুর বন্ধন,
    শূন্যে শূন্যে রূপ ধরে তোমারি এ বীণার স্পন্দন —
    নেমে যাবে সব বোঝা, থেমে যাবে সকল ক্রন্দন,
    ছন্দে তালে ভুলিব আপনা,
    বিশ্বগীতপদ্মদলে স্তব্ধ হবে অশান্ত ভাবনা।

    সঁপি দিব সুখ দুঃখ আশা ও নৈরাশ্য যত-কিছু
    তব বীণাতারে —
    ধরিবে গানের মূর্তি, একান্তে করিয়া মাথা নিচু
    শুনিব তাহারে।
    দেখিব তাদের যেথা ইন্দ্রধনু অকস্মাৎ ফুটে,
    দিগন্তে বনের প্রান্তে উষার উত্তরী যেথা লুটে,
    বিবাগী ফুলের গন্ধ মধ্যাহ্নে যেথায় যায় ছুটে —
    নীড়ে-ধাওয়া পাখির ডানায়
    সায়াহ্নগগন যেথা দিবসেরে বিদায় জানায়।

    সেদিন আমার রক্তে শুনা যাবে দিবসরাত্রির
    নৃত্যের নূপুর।
    নক্ষত্র বাজাবে বক্ষে বংশীধ্বনি আকাশযাত্রীর
    আলোকবেণুর।
    সেদিন বিশ্বের তৃণ মোর অঙ্গে হবে রোমাঞ্চিত,
    আমার হৃদয় হবে কিংশুকের রক্তিমালাঞ্ছিত;
    সেদিন আমার মুক্তি, যবে হবে, হে চিরবাঞ্ছিত,
    তোমার লীলায় মোর লীলা —
    যেদিন তোমার সঙ্গে গীতরঙ্গে তালে তালে মিলা।

     

    মুক্তি

    কাব্যগ্রন্থঃ  বীথিকা

    জয় করেছিনু মন তাহা বুঝে নাই,
    চলে গেনু তাই
    নতশিরে।
    মনে ক্ষীণ আশা ছিল ডাকিবে সে ফিরে।
    মানিল না হার,
    আমারে করিল অস্বীকার।
    বাহিরে রহিনু খাড়া
    কিছুকাল, না পেলেম সাড়া।
    তোরণদ্বারের কাছে
    চাঁপাগাছে
    দক্ষিণে বাতাস থরথরি
    অন্ধকারে পাতাগুলি উঠিল মর্মরি।
    দাঁড়ালেম পথপাশে,
    ঊর্ধ্বে বাতায়ন-পানে তাকালেম ব্যর্থ কী আশ্বাসে।
    দেখিনু নিবানো বাতি–
    আত্মগুপ্ত অহংকৃত রাতি
    কক্ষ হতে পথিকেরে হানিছে ভ্রূকুটি।
    এ কথা ভাবি নি মনে, অন্ধকারে ভূমিতলে লুটি
    হয়তো সে করিতেছে খান্‌ খান্‌
    তীব্রঘাতে আপনার অভিমান।
    দূর হতে দূরে গেনু সরে
    প্রত্যাখ্যানলাঞ্ছনার বোঝা বক্ষে ধরে।
    চরের বালুকা ঠেকা
    পরিত্যক্ত তরীসম রহিল সে একা।
    আশ্বিনের ভোরবেলা চেয়ে দেখি পথে যেতে যেতে
    ক্ষীণ কুয়াশায় ঢাকা কচিধানখেতে
    দাঁড়িয়ে রয়েছে বক,
    দিগন্তে মেঘের গুচ্ছে দুলিয়াছে উষার অলক।
    সহসা উঠিল বলি হৃদয় আমার,
    দেখিলাম যাহা দেখিবার
    নির্মল আলোকে
    মোহমুক্ত চোখে।
    কামনার যে পিঞ্জরে শান্তিহীন
    অবরুদ্ধ ছিনু এতদিন
    নিষ্ঠুর আঘাতে তার
    ভেঙে গেছে দ্বার–
    নিরন্তর আকাঙক্ষার এসেছি বাহিরে
    সীমাহীন বৈরাগ্যের তীরে।
    আপনারে শীর্ণ করি
    দিবসশর্বরী
    ছিনু জাগি
    মুষ্টিভিক্ষা লাগি।
    উন্মুক্ত বাতাসে
    খাঁচার পাখির গান ছাড়া আজি পেয়েছে আকাশে।
    সহসা দেখিনু প্রাতে
    যে আমারে মুক্তি দিল আপনার হাতে
    সে আজও রয়েছে পড়ি
    আমারি সে ভেঙে-পড়া পিঞ্জর আঁকড়ি।

     

    মুক্তি

    কাব্যগ্রন্থঃ পুনশ্চ

    বাজিরাও পেশোয়ার অভিষেক হবে
    কাল সকালে।
    কীর্তনী এসেছে গ্রামের থেকে,
    মন্দিরে ছিল না তার স্থান।
    সে বসেছে অঙ্গনের এক কোণে
    পিপুল গাছের তলায়।
    একতারা বাজায় আর কেবল সে ফিরে ফিরে বলে,
    “ঠাকুর, তোমায় কে বসালো
    কঠিন সোনার সিংহাসনে।’
    রাত তখন দুই প্রহর,
    শুক্লপক্ষের চাঁদ গেছে অস্তে।
    দূরে রাজবাড়ির তোরণে
    বাজছে শাঁখ শিঙে জগঝম্প,
    জ্বলছে প্রদীপের মালা।

    কীর্তনী গাইছে,
    “তমালকুঞ্জে বনের পথে
    শ্যামল ঘাসের কান্না এলেম শুনে,
    ধুলোয় তারা ছিল যে কান পেতে,
    পায়ের চিহ্ন বুকে পড়বে আঁকা
    এই ছিল প্রত্যাশা।’

    আরতি হয়ে গেছে সারা–
    মন্দিরের দ্বার তখন বন্ধ,
    ভিড়ের লোক গেছে রাজবাড়িতে।
    কীর্তনী আপন মনে গাইছে–
    “প্রাণের ঠাকুর,
    এরা কি পাথর গেঁথে তোমায় রাখবে বেঁধে।
    তুমি যে স্বর্গ ছেড়ে নামলে ধুলোয়
    তোমার পরশ আমার পরশ
    মিলবে ব’লে।’
    &nbsp

    সেই পিপুল-তলার অন্ধকারে
    একা একা গাইছিল কীর্তনী,
    আর শুনছিল আরেকজনা গোপনে–
    বাজিরাও পেশোয়া।
    শুনুছিল সে–
    “তুমি আমায় ডাক দিয়েছ আগল-দেওয়া ঘরের থেকে,
    আমায় নিয়ে পথের পথিক হবে।
    ঘুচবে তোমার নির্বাসনের ব্যথা,
    ছাড়া পাবে হৃদয়-মাঝে।
    থাক্‌ গে ওরা পাথরখানা নিয়ে
    পাথরের বন্দীশালায়
    অহংকারের-কাঁটার-বেড়া-ঘেরা।’

    রাত্রি প্রভাত হল।
    শুকতারা অরুণ-আলোয় উদাসী।
    তোরণদ্বারে বাজল বাঁশি বিভাসে ললিতে।
    অভিষেকের স্নান হবে,
    পুরোহিত এল তীর্থবারি নিয়ে।

    রাজবাড়ির ঠাকুরঘর শূন্য।
    জ্বলছে দীপশিখা,
    পূজার উপচার পড়ে আছে–
    বাজিরাও পেশোয়া গেছে চলে
    পথের পথিক হয়ে।

    See less

    • 0
  • 1
  • 3,539
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

কবিতা : ব্রাহ্মণ | Brahman Poem by Rabindranath Tagore Lyrics in Bengali

  1. Nibedita Paul

    Nibedita Paul

    • India
    • 41 Questions
    • 153 Answers
    • 8 Best Answers
    • 677 Points
    View Profile
    Nibedita Paul
    Added an answer on May 4, 2021 at 10:31 pm

    ব্রাহ্মণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থঃ কথা অন্ধকারে বনচ্ছায়ে সরস্বতীতীরে অস্ত গেছে সন্ধ্যাসূর্য; আসিয়াছে ফিরে নিস্তব্ধ আশ্রম-মাঝে ঋষিপুত্রগণ মস্তকে সমিধ্‌ভার করি আহরণ বনান্তর হতে; ফিরায়ে এনেছে ডাকি তপোবনগোষ্ঠগৃহে স্নিগ্ধশান্ত-আঁখি শ্রান্ত হোমধেনুগণে; করি সমাপন সন্ধ্যাস্নান সবি মিলি লয়েছে আসন গুরু গRead more

    ব্রাহ্মণ

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    কাব্যগ্রন্থঃ কথা

    অন্ধকারে বনচ্ছায়ে সরস্বতীতীরে
    অস্ত গেছে সন্ধ্যাসূর্য; আসিয়াছে ফিরে
    নিস্তব্ধ আশ্রম-মাঝে ঋষিপুত্রগণ
    মস্তকে সমিধ্‌ভার করি আহরণ
    বনান্তর হতে; ফিরায়ে এনেছে ডাকি
    তপোবনগোষ্ঠগৃহে স্নিগ্ধশান্ত-আঁখি
    শ্রান্ত হোমধেনুগণে; করি সমাপন
    সন্ধ্যাস্নান সবি মিলি লয়েছে আসন
    গুরু গৌতমেরে ঘিরি কুটিরপ্রাঙ্গণে
    হোমাগ্নি-আলোকে। শূন্য অনন্ত গগনে
    ধ্যানমগ্ন মহাশান্তি; নক্ষত্রমণ্ডলী
    সারি সারি বসিয়াছে শুষ্ক কুতূহলী
    নিঃশব্দ শিষ্যের মতো। নিভৃত আশ্রম
    উঠিল চকিত হয়ে; মহর্ষি গৌতম
    কহিলেন, “বৎসগণ, ব্রহ্মবিদ্যা কহি,
    করো অবধান।’

    হেনকালে অর্ঘ্য বহি
    করপুট ভরি’ পশিলা প্রাঙ্গণতলে
    তরুণ বালক; বন্দী ফলফুলদলে
    ঋষির চরণপদ্ম, নমি ভক্তিভরে
    কহিলা কোকিলকণ্ঠে সুধাস্নিগ্ধস্বরে,
    “ভগবন্‌, ব্রহ্মবিদ্যাশিক্ষা-অভিলাষী
    আসিয়াছে দীক্ষাতরে কুশক্ষেত্রবাসী,
    সত্যকাম নাম মোর।’
    শুনি স্মিতহাসে
    ব্রহ্মর্ষি কহিলা তারে স্নেহশান্ত ভাষে,
    “কুশল হউক সৌম্য। গোত্র কী তোমার?
    বৎস, শুধু ব্রাহ্মণের কাছে অধিকার
    ব্রহ্মবিদ্যালাভে।’
    বালক কহিলা ধীরে,
    “ভগবন্‌, গোত্র নাহি জানি। জননীরে
    শুধায়ে আসিব কল্য, করো অনুমতি।’
    এত কহি ঋষিপদে করিয়া প্রণতি
    গেল চলি সত্যকাম ঘন-অন্ধকার
    বনবীথি দিয়া, পদব্রজে হয়ে পার
    ক্ষীন স্বচ্ছ শান্ত সরস্বতী; বালুতীরে
    সুপ্তিমৌন গ্রামপ্রান্তে জননীকুটিরে
    করিলা প্রবেশ।
    ঘরে সন্ধ্যাদীপ জ্বালা;
    দাঁড়ায়ে দুয়ার ধরি জননী জবালা
    পুত্রপথ চাহি; হেরি তারে বক্ষে টানি
    আঘ্রাণ করিয়া শির কহিলেন বাণী
    কল্যাণকুশল। শুধাইলা সত্যকাম,
    “কহো গো জননী, মোর পিতার কী নাম,
    কী বংশে জনম। গিয়াছিনু দীক্ষাতরে
    গৌতমের কাছে, গুরু কহিলেন মোরে–
    বৎস, শুধু ব্রাহ্মণের কাছে অধিকার
    ব্রহ্মবিদ্যালাভে। মাতঃ, কী গোত্র আমার?’
    শুনি কথা, মৃদুকণ্ঠে অবনতমুখে
    কহিলা জননী, “যৌবনে দারিদ্র৻দুখে
    বহুপরিচর্যা করি পেয়েছিনু তোরে,
    জন্মেছিস ভর্তৃহীনা জবালার ক্রোড়ে,
    গোত্র তব নাহি জানি তাত।’
    পরদিন
    তপোবনতরুশিরে প্রসন্ন নবীন
    জাগিল প্রভাত। যত তাপসবালক
    শিশিরসুস্নিগ্ধ যেন তরুণ আলোক,
    ভক্ত-অশ্রু-ধৌত যেন নব পুণ্যচ্ছটা,
    প্রাতঃস্নাত স্নিগ্ধচ্ছবি আর্দ্রসিক্তজটা,
    শুচিশোভা সৌম্যমূর্তি সমুজ্জ্বলকায়ে
    বসেছে বেষ্টন করি বৃদ্ধ বটচ্ছায়ে
    গুরু গৌতমেরে। বিহঙ্গকাকলিগান,
    মধুপগুঞ্জনগীতি, জলকলতান,
    তারি সাথে উঠিতেছে গম্ভীর মধুর
    বিচিত্র তরুণ কণ্ঠে সম্মিলিত সুর
    শান্ত সামগীতি।
    হেনকালে সত্যকাম
    কাছে আসি ঋষিপদে করিলা প্রণাম–
    মেলিয়া উদার আঁখি রহিলা নীরবে।
    আচার্য আশিষ করি শুধাইলা তবে,
    “কী গোত্র তোমার সৌম্য, প্রিয়দরশন?’
    তুলি শির কহিলা বালক, “ভগবন্‌,
    নাহি জানি কী গোত্র আমার। পুছিলাম
    জননীরে, কহিলেন তিনি, সত্যকাম,
    বহুপরিচর্যা করি পেয়েছিনু তোরে,
    জন্মেছিস ভর্তৃহীনা জবালার ক্রোড়ে–
    গোত্র তব নাহি জানি।’
    শুনি সে বারতা
    ছাত্রগণ মৃদুস্বরে আরম্ভিলা কথা
    মধুচক্রে লোষ্ট্রপাতে বিক্ষিপ্ত চঞ্চল
    পতঙ্গের মতো–সবে বিস্ময়বিকল,
    কেহ বা হাসিল কেহ করিল ধিক্কার
    লজ্জাহীন অনার্যের হেরি অহংকার।
    উঠিলা গৌতম ঋষি ছাড়িয়া আসন,
    বাহু মেলি বালকেরে করিয়া আলিঙ্গন
    কহিলেন, “অব্রাহ্মণ নহ তুমি তাত।
    তুমি দ্বিজোত্তম, তুমি সত্যকুলজাত।’

    Brahman Poem by Rabindranath Tagore Recitation:

    Poem- Brahman

    By- Rabindranath Tagore

    Andhakare banacchaye sarashotitire
    Asta geche sodhyasurja; Ashiyache fire
    Nistabda asrom majhe rshiputragan
    Mastake Somidhbhar kori ahoron
    Bonantor hote; firaye enecho daki
    tapobon gosto grihe snigdho-shanto aakhi
    Sranto homedhenugone kori somapon
    Sondhyasnan sobi mili loyeche ashon
    Guru goutomer ghiri kutirprangane
    Homagni-Aloke shunno anata gagane
    Dhaynmagna mohashanti; nakkhatra mandoli
    Shari Shari bishiyache shusko kutuholi
    Nishabdo shisher moto nivriti asrom
    Uthilo chokito hoye; Maharshi goutam
    Kohilen batshagan brahmabidya kohi
    Koro abodhan

    Henokale orgo bahi
    Karput bhori poshila prangan tole
    Tarun balok bandi fal ful dale
    Rshir charanpodmo, Nami bhaktibhore
    Kohila Kokilkonthe shudhasnigdo shore
    bhagban, Brahmabidya shikkha obhilashi
    Aashiyache dikkatore kushkhetrabashi
    Satyakam nam mor

    See less
    • 0
  • 1
  • 3,734
  • 0
Answer
Load More Questions

Sidebar

আরও দেখুন

  • হোরিখেলা (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Hori Khela Poem by Rabindranath Tagore Lyrics
  • কবিতা : বিজ্ঞ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Biggo by Rabindranath Tagore Lyrics
  • কবিতা : সবলা (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Sobola by Rabindranath Tagore Lyrics
  • কবিতা : সুখ দুঃখ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Sukh Dukkho by Rabindranath Tagore Lyrics
  • কবিতা : দুঃসময় (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Dussamay By Rabindranath Tagore Lyrics
  • কবিতা : রবিবার (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Robibar Poem by Rabindranath Tagore Lyrics
  • কবিতা : ইচ্ছামতী (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Ichamati Poem by Rabindranath Tagore Lyrics
  • কবিতা : বাঁশি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Banshi Poem by Rabindranath Tagore Lyrics
  • কবিতা : অঞ্জলি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Anjali Poem by Rabindranath Tagore Lyrics
  • কবিতা : মাকাল (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Makal Poem by Rabindranath Tagore Lyrics
  • কবিতা : পরিচয় (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Porichoy Poem by Rabindranath Tagore Lyrics
  • কবিতা : হঠাৎ দেখা | Hothat Dekha Poem by Rabindranath Tagore lyrics
  • কবিতা : সামান্য ক্ষতি | Rabindranath Tagore Poem Samanya Khati
  • এসো হে বৈশাখ | Noboborsho Kobita Rabindranath Tagore
  • কবিতা : নববর্ষে | Noboborsho Poem by Rabindranath Tagore
  • কবিতা : প্রার্থনা | Prarthana Poem by Rabindranath Tagore in Bengali
  • কবিতা : শাহজাহান | Shahjahan Poem by Rabindranath Tagore in Bengali
  • কবিতা : মুক্তি | Mukti Poem Rabindranath Tagore Lyrics in Bengali
  • কবিতা : ব্রাহ্মণ | Brahman Poem by Rabindranath Tagore Lyrics in Bengali
  • কবিতা : মৃত্যুঞ্জয় | Mrityunjay Poem by Rabindranath Tagore Lyrics in Bengali
Join us on Telegram
Join our FaceBook Group

বিষয়

All Bangla Paragraph (105) Bangla GK (177) Bangla Kobita (203) Bangla Rachana (105) Bengali Meaning (259) Bengali Poems (124) English to Bengali Meaning (270) English to Bengali Translation (256) Kobita (143) অনুচ্ছেদ (127) বাংলা অর্থ (275) বাংলা কবিতা (219) বাংলা বাক্য রচনা (176) বাংলা রচনা (127) বাক্য রচনা (176)

Footer

© 2020 Bengali Forum · All rights reserved. Contact Us

Add Bengali Forum to your Homescreen!

Add