Narike apan bhagyo joy koribar
Keho nahi dibe adhikar
He Bidhata?
nata kori matha
Pothoprante keno raba jagi
Klantodhoirjo protashar puruner lagi
Doibagata dine
Sudhu shunne cheye raba?
Keno nije nahi laba chine
Sarthoker poth
Keno na chutabo teje shondhaner rath
Dudursho ashere badhi driro bolgapashe
Durjoy ashashe
Durgomer durgo hote sadhonar dhan
Keno nahi kori ahoron
Pran kori pon
Jabo na bashorkokkhe badhubeshe bajaye kinkini
Amare premer birje koro ashonkini
Birhoste barmalyo laba ekdin
Shey logne ki ekante bilin
Khinodipti godhulite
Kabhu tare dibo na bhulite mor dripto kothinota
Binomro dinota
Shommaner jogyo nohe tar
Fele debo acchadan durbal lojjar
মুক্তি নামে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেশ কয়েকটি কবিতা লিখেছেন যেগুলো বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে। মুক্তি নামে যে কবিতাগুলো রয়েছে সেগুলো হলঃ মুক্তি - পরিশেষ মুক্তি - পূরবী মুক্তি - বীথিকা মুক্তি - পুনশ্চ মুক্তি - মহুয়া মুক্তি - পলাতকা মুক্তি কাব্যগ্রন্থঃ পরিশেষ ১ আমারে সাহস দাও, দাও শক্তRead more
মুক্তি নামে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেশ কয়েকটি কবিতা লিখেছেন যেগুলো বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে। মুক্তি নামে যে কবিতাগুলো রয়েছে সেগুলো হলঃ
আপনার কাছ হতে বহুদূরে পালাবার লাগি
হে সুন্দর, হে অলক্ষ্য, তোমার প্রসাদ আমি মাগি,
তোমার আহ্বানবাণী। আজ তব বাজুক বাঁশরি,
চিত্তভরা শ্রাবণপ্লাবনরাগে,– যেন গো পাসরি
নিকটের তাপতপ্ত ঘূর্ণিবায়ে ক্ষুব্ধ কোলাহল,
ধূলির নিবিড় টান পদতলে। রয়েছি নিশ্চল
সারাদিন পথপার্শ্বে; বেলা হয়ে এল অবসান,
ঘন হয়ে আসে ছায়া, শ্রান্ত সূর্য করিছে সন্ধান
দিগন্তে অন্তিম শান্তি। দিবা যথা চলেছে নির্ভীক
চিহ্নহীন সঙ্গহীন অন্ধকার পথের পথিক
আপনার কাছ হতে অন্তহীন অজানার পানে
অসীমের সংগীতে উদাসী,– সেইমতো আত্মদানে
আমারে বাহির করো, শূন্যে শূন্যে পূর্ণ হ’ক সুর,
নিয়ে যাক পথে পথে হে অলক্ষ্য, হে মহাসুদূর।
মুক্তি
কাব্যগ্রন্থঃ পূরবী
মুক্তি নানা মূর্তি ধরি দেখা দিতে আসে নানা জনে —
এক পন্থা নহে।
পরিপূর্ণতার সুধা নানা স্বাদে ভুবনে ভুবনে
নানা স্রোতে বহে।
সৃষ্টি মোর সৃষ্টি-সাথে মেলে যেথা, সেথা পাই ছাড়া,
মুক্তি যে আমারে তাই সংগীতের মাঝে দেয় সাড়া,
সেথা আমি খেলা-খ্যাপা বালকের মতো লক্ষ্মীছাড়া
লক্ষ্যহীন নগ্ন নিরুদ্দেশ।
সেথা মোর চির নব, সেথা মোর চিরন্তন শেষ।
মাঝে মাঝে গানে মোর সুর আসে যে সুরে, হে গুণী,
তোমারে চিনায়।
বেঁধে দিয়ো নিজহাতে সেই নিত্য সুরের ফাল্গুনী
আমার বীণায়।
তা হলে বুঝিব আমি ধূলি কোন্ ছন্দে হয় ফুল
বসন্তের ইন্দ্রজালে অরণ্যেরে করিয়া ব্যাকুল,
নব নব মায়াচ্ছায়া কোন্ নৃত্যে নিয়ত দোদুল
বর্ণ বর্ণ ঋতুর দোলায়।
তোমারি আপন সুর কোন্ তালে তোমারে ভোলায়।
যেদিন আমার গান মিলে যাবে তোমার গানের
সুরের ভঙ্গিতে
মুক্তির সংগমতীর্থ পাব আমি আমারি প্রাণের
আপন সংগীতে।
সেদিন বুঝিব মনে নাই নাই বস্তুর বন্ধন,
শূন্যে শূন্যে রূপ ধরে তোমারি এ বীণার স্পন্দন —
নেমে যাবে সব বোঝা, থেমে যাবে সকল ক্রন্দন,
ছন্দে তালে ভুলিব আপনা,
বিশ্বগীতপদ্মদলে স্তব্ধ হবে অশান্ত ভাবনা।
সেদিন আমার রক্তে শুনা যাবে দিবসরাত্রির
নৃত্যের নূপুর।
নক্ষত্র বাজাবে বক্ষে বংশীধ্বনি আকাশযাত্রীর
আলোকবেণুর।
সেদিন বিশ্বের তৃণ মোর অঙ্গে হবে রোমাঞ্চিত,
আমার হৃদয় হবে কিংশুকের রক্তিমালাঞ্ছিত;
সেদিন আমার মুক্তি, যবে হবে, হে চিরবাঞ্ছিত,
তোমার লীলায় মোর লীলা —
যেদিন তোমার সঙ্গে গীতরঙ্গে তালে তালে মিলা।
মুক্তি
কাব্যগ্রন্থঃ বীথিকা
জয় করেছিনু মন তাহা বুঝে নাই,
চলে গেনু তাই
নতশিরে।
মনে ক্ষীণ আশা ছিল ডাকিবে সে ফিরে।
মানিল না হার,
আমারে করিল অস্বীকার।
বাহিরে রহিনু খাড়া
কিছুকাল, না পেলেম সাড়া।
তোরণদ্বারের কাছে
চাঁপাগাছে
দক্ষিণে বাতাস থরথরি
অন্ধকারে পাতাগুলি উঠিল মর্মরি।
দাঁড়ালেম পথপাশে,
ঊর্ধ্বে বাতায়ন-পানে তাকালেম ব্যর্থ কী আশ্বাসে।
দেখিনু নিবানো বাতি–
আত্মগুপ্ত অহংকৃত রাতি
কক্ষ হতে পথিকেরে হানিছে ভ্রূকুটি।
এ কথা ভাবি নি মনে, অন্ধকারে ভূমিতলে লুটি
হয়তো সে করিতেছে খান্ খান্
তীব্রঘাতে আপনার অভিমান।
দূর হতে দূরে গেনু সরে
প্রত্যাখ্যানলাঞ্ছনার বোঝা বক্ষে ধরে।
চরের বালুকা ঠেকা
পরিত্যক্ত তরীসম রহিল সে একা।
আশ্বিনের ভোরবেলা চেয়ে দেখি পথে যেতে যেতে
ক্ষীণ কুয়াশায় ঢাকা কচিধানখেতে
দাঁড়িয়ে রয়েছে বক,
দিগন্তে মেঘের গুচ্ছে দুলিয়াছে উষার অলক।
সহসা উঠিল বলি হৃদয় আমার,
দেখিলাম যাহা দেখিবার
নির্মল আলোকে
মোহমুক্ত চোখে।
কামনার যে পিঞ্জরে শান্তিহীন
অবরুদ্ধ ছিনু এতদিন
নিষ্ঠুর আঘাতে তার
ভেঙে গেছে দ্বার–
নিরন্তর আকাঙক্ষার এসেছি বাহিরে
সীমাহীন বৈরাগ্যের তীরে।
আপনারে শীর্ণ করি
দিবসশর্বরী
ছিনু জাগি
মুষ্টিভিক্ষা লাগি।
উন্মুক্ত বাতাসে
খাঁচার পাখির গান ছাড়া আজি পেয়েছে আকাশে।
সহসা দেখিনু প্রাতে
যে আমারে মুক্তি দিল আপনার হাতে
সে আজও রয়েছে পড়ি
আমারি সে ভেঙে-পড়া পিঞ্জর আঁকড়ি।
মুক্তি
কাব্যগ্রন্থঃ পুনশ্চ
বাজিরাও পেশোয়ার অভিষেক হবে
কাল সকালে।
কীর্তনী এসেছে গ্রামের থেকে,
মন্দিরে ছিল না তার স্থান।
সে বসেছে অঙ্গনের এক কোণে
পিপুল গাছের তলায়।
একতারা বাজায় আর কেবল সে ফিরে ফিরে বলে,
“ঠাকুর, তোমায় কে বসালো
কঠিন সোনার সিংহাসনে।’
রাত তখন দুই প্রহর,
শুক্লপক্ষের চাঁদ গেছে অস্তে।
দূরে রাজবাড়ির তোরণে
বাজছে শাঁখ শিঙে জগঝম্প,
জ্বলছে প্রদীপের মালা।
কীর্তনী গাইছে,
“তমালকুঞ্জে বনের পথে
শ্যামল ঘাসের কান্না এলেম শুনে,
ধুলোয় তারা ছিল যে কান পেতে,
পায়ের চিহ্ন বুকে পড়বে আঁকা
এই ছিল প্রত্যাশা।’
আরতি হয়ে গেছে সারা–
মন্দিরের দ্বার তখন বন্ধ,
ভিড়ের লোক গেছে রাজবাড়িতে।
কীর্তনী আপন মনে গাইছে–
“প্রাণের ঠাকুর,
এরা কি পাথর গেঁথে তোমায় রাখবে বেঁধে।
তুমি যে স্বর্গ ছেড়ে নামলে ধুলোয়
তোমার পরশ আমার পরশ
মিলবে ব’লে।’
 
হঠাৎ দেখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থঃ শ্যামলী রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা, ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন। আগে ওকে বারবার দেখেছি লালরঙের শাড়িতে দালিম ফুলের মতো রাঙা; আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়, আঁচল তুলেছে মাথায় দোলনচাঁপার মতো চিকনগৌর মুখখানি ঘিরে। মনে হল, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্ব ঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চারRead more
হঠাৎ দেখা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থঃ শ্যামলী
রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা,
ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন।
আগে ওকে বারবার দেখেছি
লালরঙের শাড়িতে
দালিম ফুলের মতো রাঙা;
আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়,
আঁচল তুলেছে মাথায়
দোলনচাঁপার মতো চিকনগৌর মুখখানি ঘিরে।
মনে হল, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্ব
ঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চার দিকে,
যে দূরত্ব সর্ষেখেতের শেষ সীমানায়
শালবনের নীলাঞ্জনে।
থমকে গেল আমার সমস্ত মনটা;
চেনা লোককে দেখলেম অচেনার গাম্ভীর্যে।
হঠাৎ খবরের কাগজ ফেলে দিয়ে
আমাকে করলে নমস্কার।
সমাজবিধির পথ গেল খুলে,
আলাপ করলেম শুরু —
কেমন আছ, কেমন চলছে সংসার
ইত্যাদি।
সে রইল জানলার বাইরের দিকে চেয়ে
যেন কাছের দিনের ছোঁয়াচ-পার-হওয়া চাহনিতে।
দিলে অত্যন্ত ছোটো দুটো-একটা জবাব,
কোনোটা বা দিলেই না।
বুঝিয়ে দিলে হাতের অস্থিরতায় —
কেন এ-সব কথা,
এর চেয়ে অনেক ভালো চুপ করে থাকা।
আমি ছিলেম অন্য বেঞ্চিতে
ওর সাথিদের সঙ্গে।
এক সময়ে আঙুল নেড়ে জানালে কাছে আসতে।
মনে হল কম সাহস নয়;
বসলুম ওর এক-বেঞ্চিতে।
গাড়ির আওয়াজের আড়ালে
বললে মৃদুস্বরে,
“কিছু মনে কোরো না,
সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।
আমাকে নামতে হবে পরের স্টেশনেই;
দূরে যাবে তুমি,
দেখা হবে না আর কোনোদিনই।
তাই যে প্রশ্নটার জবাব এতকাল থেমে আছে,
শুনব তোমার মুখে।
সত্য করে বলবে তো?
আমি বললেম, “বলব।”
বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়েই শুধোল,
“আমাদের গেছে যে দিন
একেবারেই কি গেছে,
কিছুই কি নেই বাকি।”
একটুকু রইলেম চুপ করে;
তারপর বললেম,
“রাতের সব তারাই আছে
দিনের আলোর গভীরে।”
খটকা লাগল, কী জানি বানিয়ে বললেম না কি।
ও বললে, “থাক্, এখন যাও ও দিকে।”
সবাই নেমে গেল পরের স্টেশনে;
আমি চললেম একা।
Hothat Dekha Poem by Rabindranath Tagore recitation:
Hothat Dekha
Rabindranath Tagore
Rail gaṛir kamray hoṭath dekha,
bhabi ni sambhab hobe kunodin.
Age oke barbar dekhechi
Lal ranger saṛite
Dalim phuler mato ranga;
Aj poreche kalo resomer kapaṛ,
Achal tuleche mathay
Dolan chapar mato cikangaur mukh khani ghire.
Mone hola, kalo ronge ekṭa gabhir duratta
Ghaniye niyeche nijer char dike,
Je duratta sarṣekheter seṣh simanay
Shalaboner nilanjane.
Thomke gelo amar samasta manṭa;
Chena lok ke dekhlem achenar gambhirye.
Hoṭhaṯ khabarer kagaj phele diye
Amake korle namaskar.
Samaj bidhir path gelo khule,
Alap korlem shuru
keman acho, keman cholche sangshar
ityadi.
Se ro’ila janalar ba’irera dike cheye
Jeno kacher diner choyacho-par-howa chahonite.
Dile atyanta choṭo duṭo-ekṭa jabab,
Konoṭa ba dile’i na.
Bujhiye dile hater asthirotaya–
keno e-sab kotha,
Er cheye anek bhalo chup kore thaka.
Ami chilem an’ya benchite
Or shathider sange.
Ek samay angul neṛe janale kache aste.
Mone holo kam sahos noy;
শাহজাহান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থঃ বলাকা এ কথা জানিতে তুমি, ভারত-ঈশ্বর শা-জাহান, কালস্রোতে ভেসে যায় জীবন যৌবন ধন মান। শুধু তব অন্তরবেদনা চিরন্তন হয়ে থাক্ সম্রাটের ছিল এ সাধনা। রাজশক্তি বজ্র সুকঠিন সন্ধ্যারক্তরাগসম তন্দ্রাতলে হয় হোক লীন, কেবল একটি দীর্ঘশ্বাস নিত্য-উচ্ছ্বসিত হয়ে সকরুণ করুক আকাশRead more
শাহজাহান
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থঃ বলাকা
এ কথা জানিতে তুমি, ভারত-ঈশ্বর শা-জাহান,
কালস্রোতে ভেসে যায় জীবন যৌবন ধন মান।
শুধু তব অন্তরবেদনা
চিরন্তন হয়ে থাক্ সম্রাটের ছিল এ সাধনা।
রাজশক্তি বজ্র সুকঠিন
সন্ধ্যারক্তরাগসম তন্দ্রাতলে হয় হোক লীন,
কেবল একটি দীর্ঘশ্বাস
নিত্য-উচ্ছ্বসিত হয়ে সকরুণ করুক আকাশ
এই তব মনে ছিল আশ।
হীরা মুক্তামানিক্যের ঘটা
যেন শূন্য দিগন্তের ইন্দ্রজাল ইন্দ্রধনুচ্ছটা
যায় যদি লুপ্ত হয়ে যাক,
শুধু থাক্
একবিন্দু নয়নের জল
কালের কপোলতলে শুভ্র সমুজ্জ্বল
এ তাজমহল।
হায় ওরে মানবহৃদয়,
বার বার
কারো পানে ফিরে চাহিবার
নাই যে সময়,
নাই নাই।
জীবনের খরস্রোতে ভাসিছ সদাই
ভুবনের ঘাটে ঘাটে–
এক হাটে লও বোঝা, শূন্য করে দাও অন্য হাটে।
দক্ষিণের মন্ত্রগুঞ্জরণে
তব কুঞ্জবনে
বসন্তের মাধবীমঞ্জরী
যেই ক্ষণে দেয় ভরি
মালঞ্চের চঞ্চল অঞ্চল,
বিদায় গোধূলি আসে ধুলায় ছড়ায়ে ছিন্নদল।
সময় যে নাই;
আবার শিশিররাত্রে তাই
নিকুঞ্জে ফুটায়ে তোল নব কুন্দরাজি
সাজাইতে হেমন্তের অশ্রুভরা আনন্দের সাজি।
হায় রে হৃদয়,
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
নাই নাই, নাই যে সময়।
হে সম্রাট, তাই তব শঙ্কিত হৃদয়
চেয়েছিল করিবারে সময়ের হৃদয় হরণ
সৌন্দর্যে ভুলায়ে।
কণ্ঠে তার কী মালা দুলায়ে
করিলে বরণ
রূপহীন মরণেরে মৃত্যুহীন অপরূপ সাজে।
রহে না যে
বিলাপের অবকাশ
বারো মাস,
তাই তব অশান্ত ক্রন্দনে
চিরমৌন জাল দিয়ে বেঁধে দিলে কঠিন বন্ধনে।
জ্যোৎস্নারাতে নিভৃত মন্দিরে
প্রেয়সীরে
যে-নামে ডাকিতে ধীরে ধীরে
সেই কানে-কানে ডাকা রেখে গেলে এইখানে
অনন্তের কানে।
প্রেমের করুণ কোমলতা
ফুটিল তা
সৌন্দর্যের পুষ্পপুঞ্জে প্রশান্ত পাষাণে।
হে সম্রাট কবি,
এই তব হৃদয়ের ছবি,
এই তব নব মেঘদূত,
অপূর্ব অদ্ভুত
ছন্দে গানে
উঠিয়াছে অলক্ষের পানে
যেথা তব বিরহিণী প্রিয়া
রয়েছে মিশিয়া
প্রভাতের অরুণ-আভাসে,
ক্লান্তসন্ধ্যা দিগন্তের করুণ নিশ্বাসে,
পূর্ণিমায় দেহহীন চামেলির লাবণ্যবিলাসে,
ভাষার অতীত তীরে
কাঙাল নয়ন যেথা দ্বার হতে আসে ফিরে ফিরে।
তোমার সৌন্দর্যদূত যুগ যুগ ধরি
এড়াইয়া কালের প্রহরী
চলিয়াছে বাক্যহারা এই বার্তা নিয়া
“ভুলি নাই, ভুলি নাই, ভুলি নাই প্রিয়া।”
চলে গেছ তুমি আজ
মহারাজ;
রাজ্য তব স্বপ্নসম গেছে ছুটে,
সিংহাসন গেছে টুটে;
তব সৈন্যদল
যাদের চরনভরে ধরণী করিত টলমল
তাহাদের স্মৃতি আজ বায়ুভরে
উড়ে যায় দিল্লীর পথের ধূলি-‘পরে।
বন্দীরা গাহে না গান;
যমুনা-কল্লোলসাথে নহবত মিলায় না তান;
তব পুরসুন্দরীর নূপুরনিক্কণ
ভগ্ন প্রাসাদের কোণে
ম’রে গিয়ে ঝিল্লীস্বনে
কাঁদায় রে নিশার গগন।
তবুও তোমার দূত অমলিন,
শ্রান্তিক্লান্তিহীন,
তুচ্ছ করি রাজ্য-ভাঙাগড়া,
তুচ্ছ করি জীবনমৃত্যুর ওঠাপড়া,
যুগে যুগান্তরে
কহিতেছে একস্বরে
চিরবিরহীর বাণী নিয়া
“ভুলি নাই, ভুলি নাই, ভুলি নাই প্রিয়া।”
মিথ্যা কথা– কে বলে যে ভোল নাই।
কে বলে রে খোল নাই
স্মৃতির পিঞ্জরদ্বার।
অতীতের চির অস্ত-অন্ধকার
আজিও হৃদয় তব রেখেছে বাঁধিয়া?
বিস্মৃতির মুক্তিপথ দিয়া
আজিও সে হয় নি বাহির?
সমাধিমন্দির
এক ঠাঁই রহে চিরস্থির;
ধরায় ধুলায় থাকি
স্মরণের আবরণে মরণেরে যত্নে রাখে ঢাকি।
জীবনেরে কে রাখিতে পারে।
আকাশের প্রতি তারা ডাকিছে তাহারে।
তার নিমন্ত্রণ লোকে লোকে
নব নব পূর্বাচলে আলোকে আলোকে।
স্মরণের গ্রন্থি টুটে
সে যে যায় ছুটে
বিশ্বপথে বন্ধনবিহীন।
মহারাজ, কোনো মহারাজ্য কোনোদিন
পারে নাই তোমারে ধরিতে;
সমুদ্রস্তনিত পৃথ্বী, হে বিরাট, তোমারে ভরিতে
নাহি পারে–
তাই এ-ধরারে
জীবন-উৎসব-শেষে দুই পায়ে ঠেলে
মৃৎপাত্রের মতো যাও ফেলে।
তোমার কীর্তির চেয়ে তুমি যে মহৎ,
তাই তব জীবনের রথ
পশ্চাতে ফেলিয়া যায় কীর্তিরে তোমার
বারম্বার।
তাই
চিহ্ন তব পড়ে আছে, তুমি হেথা নাই।
যে প্রেম সম্মুখপানে
চলিতে চালাতে নাহি জানে,
যে প্রেম পথের মধ্যে পেতেছিল নিজ সিংহাসন,
তার বিলাসের সম্ভাষণ
পথের ধুলার মতো জড়ায়ে ধরেছে তব পায়ে,
দিয়েছ তা ধূলিরে ফিরায়ে।
সেই তব পশ্চাতের পদধূলি-‘পরে
তব চিত্ত হতে বায়ুভরে
কখন সহসা
উড়ে পড়েছিল বীজ জীবনের মাল্য হতে খসা।
তুমি চলে গেছ দূরে
সেই বীজ অমর অঙ্কুরে
উঠেছে অম্বরপানে,
কহিছে গম্ভীর গানে–
“যত দূর চাই
নাই নাই সে পথিক নাই।
প্রিয়া তারে রাখিল না, রাজ্য তারে ছেড়ে দিল পথ
রুধিল না সমুদ্র পর্বত।
আজি তার রথ
চলিয়াছে রাত্রির আহ্বানে
নক্ষত্রের গানে
প্রভাতের সিংহদ্বার পানে।
তাই
স্মৃতিভারে আমি পড়ে আছি,
ভারমুক্ত সে এখানে নাই।’
Shahjahan Poem by Rabindranath Tagore Recitation
Shah jahan Kobita by by Rabindranath Tagore:
E kotha janite tumi, Bharat isshor Shah Jahan
kalasrote bhese jay jibon joubon dhan man.
Sudhu taba antarbedona
Chironton hoye thak samraṭer chilo e shadhona
Rajshakti bajra sukothin
Shondhyaraktoshomagom tondratole hoy hok lin
Kebol ekti dhirgoshash
Nityo ucchoshito hoye sokarun karuk akash
Ei taba mone chilo asha
Hira Mukta manikyer ghota
Jeno shunno digonter indrojal indrodhanucchota
Jay Jodi lupto hoye jak
Sudhu thak
Ekbindu nayaner jol
Kaler kopoltole shuvro shomujjol
E tajmahal
Haay ore manabhridoy
Baar baar
karo pane fire chahibar
Nai je shomoy
nai nai
Jiboner Khorsrute bhashicho shodai
Bhubaner ghate ghate
Ek hate lo buja, Shunno kore dai onno hate
Dokkhiner mantragunjorone
Taba kunjobone
Basanter Madhobimanjori
Jei khone dey bhori
maloncher chonchol chonchol
Biday godhuli aashe dhulay choraye chinno dol
Somoy je nai
Abar shishir ratre tai
Nikunje futaye tol naba kundraji
Sajaite hemonter asrubhora anonder shaji
haay re hridoy
Tomar sonchoy
Dinante Nishante shudhu pothoprante fele jete hoy
nai nai, nau je shomoy
He shomrat, tai taba shonkito hridoy
Cheyechilo koribare shomoyer hridoyhoron
Shoundorje bhulaye
Konthe tar ki mala dulaye
Korile baran
Roophin moroner mrituhin oporup shaje
Rohe na je Bilaper obokash
Baro mash
Tai taba oshanto krondone
Chiro mounojal diye bedhe dile kothin bondhone
Josnarate nivrito mondire
Preyoshire
Je name dakite dhire dhire
Shei kane kane daka rekhe gele eikhane
Ononter kane
Premer karun komolota
Futilo ta
Shoundorjer pushpo punje proshanto pashane
গুপ্তধন ‘গুপ্তধন’ কথাটির অর্থ লুকোনাে সম্পদ, যে সম্পদ মানুষের দৃষ্টির বাইরে থাকে, তাকেই ‘গুপ্তধন’ বলে। রবীন্দ্রনাথ দেখিয়েছেন যে এই গুপ্তধন কখনই মানুষের কাছে মঙ্গলকর নয়, এর মধ্যেই লুক্কায়িত থাকে মৃত্যুর অমােঘ হাতছানি। রবীন্দ্রনাথ এভাবে ধন প্রাপ্তিতে শ্রদ্ধাশীল ছিলেন না। যে ধন থাকে মনুষ্যচক্ষুর অন্Read more
গুপ্তধন
‘গুপ্তধন’ কথাটির অর্থ লুকোনাে সম্পদ, যে সম্পদ মানুষের দৃষ্টির বাইরে থাকে, তাকেই ‘গুপ্তধন’ বলে।
রবীন্দ্রনাথ দেখিয়েছেন যে এই গুপ্তধন কখনই মানুষের কাছে মঙ্গলকর নয়, এর মধ্যেই লুক্কায়িত থাকে মৃত্যুর অমােঘ হাতছানি। রবীন্দ্রনাথ এভাবে ধন প্রাপ্তিতে শ্রদ্ধাশীল ছিলেন না। যে ধন থাকে মনুষ্যচক্ষুর অন্তরালে সে ধনকে তিনি বলেছেন ‘মরা ধন’। এই ধনের প্রতি আকর্ষণ তিনি সহ্য করতে পারেন নি। এর প্রতি আকর্ষণ কীভাবে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনকে বিপর্যস্ত করে তারই ছবি ‘গুপ্তধন’ গল্পে লেখক অঙ্কন করার চেষ্টা করেছেন।
গুপ্তধন গল্পটির শুরুতেই একটি চমক আর সেই চমকের মাধ্যমেই মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিকতার উন্মােচন একটা পরিচয়কে প্রতিষ্ঠা করেছে। মৃত্যুঞ্জয় নিষ্ঠাবান, সদাচারী ও নিতান্ত সাধারণ কিন্তু লােভ লালসার উর্ধ্বে নয়। বিত্তের স্বাভাবিক লােভের কারণে অনন্যমনা অধ্যবসায়ী, ফলে গুপ্তধনের আবিষ্কারে মনপ্রাণ সমর্পণ করেছে। সেই আবিষ্কারের মূল সূত্রটিই যখন রহস্যজনকভাবে উধাও হয়, লেখক সেই মানসিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জীবন্ত করে তুলেছেন এবং একই সঙ্গে পাঠকমনও মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে সঙ্গে রহস্য উদঘাটনে সঙ্গী হয়েছে। নামকরণে থাকে বিষয়বস্তুর ইঙ্গিত, গল্প শুরু হয় প্রথম পঙক্তি থেকেই। গুপ্তধন গল্পও এর ব্যতিক্রম নয়।
আসলে এই গল্পের নামকরণের মধ্য দিয়ে মানুষের অন্তরের সুপ্ত এক সম্পদের কথাই বলা হয়েছে, ইন্দ্রিয়ের তাড়নায় ও বাসনায় মােহজালে আবদ্ধ হয়ে যা ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে। এক্ষেত্রে শংকর ও মৃত্যুঞ্জয়ের উদ্দেশ্য এক – গুপ্তধনের সন্ধান। অবশ্য একসময়ে তার সন্ধান পেয়েও তারা তা গ্রহণ করেনি। সন্ন্যাসী শংকর একসময় স্বরূপানন্দ স্বামীর মাধ্যমে মৃত্যুঞ্জয় সম্পদের লােভে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করল। আবার এই শংকরই মৃত্যুঞ্জয়ের গুপ্তধনের মােহমুক্তি ঘটালেন, আলাে বাতাসে ছড়িয়ে থাকা প্রকৃত সম্পদকে চেনালেন।
রবীন্দ্রনাথ একসময় বলেছিলেন, “সুখের উপায় বাহিরে নাই, তাহা অন্তরেই আছে, তাহা উপকরণজালের বিপুল জটিলতার মধ্যে নাই, তাহা সংযত চিত্তের নির্মল সরলতার মধ্যে জটিলতার মধ্যে নাই, তাহা সংযত চিত্তের নির্মল সরলতার মধ্যে বিরাজমান।” এই দৃষ্টিভঙ্গী থেকেই বিশ্বব্যপী অক্ষয় সম্পদের সন্ধান পেলেন মৃত্যুঞ্জয়, ত্যাগ করলেন গুপ্তধনের বিপুল সম্পদ, যা এতদিন অন্তদৃষ্টির বন্ধনে আবদ্ধ ছিল আজ তা আলাে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ল – শংকর আর মৃত্যুঞ্জয়ের প্রকৃত গুপ্তধন অর্থাৎ মনের ঐশ্বর্যের সন্ধান মিলল। আর এই তাৎপর্যই গুপ্তধন গল্পটি ব্যঞ্জনা বা ইঙ্গিতবহ হয়ে উঠেছে
একটি তুলসীগাছের কাহিনী উঃ বাংলাদেশের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহের লেখা 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী’-তে মানুষের আশ্রয়সন্ধান, আশ্রয় লাভ ও আশ্রয়চ্যুত হয়ে মঙ্গলস্বপ্ন ও স্বপ্ন বিনষ্টের প্রতীক হয়ে দেখা দিয়েছে যে ভাবনা চিন্তা – যার প্রতিফলন এ গল্পের বিষয়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে তাই আমাদের বর্তমRead more
একটি তুলসীগাছের কাহিনী
উঃ বাংলাদেশের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহের লেখা ‘একটি তুলসী গাছের কাহিনী’-তে মানুষের আশ্রয়সন্ধান, আশ্রয় লাভ ও আশ্রয়চ্যুত হয়ে মঙ্গলস্বপ্ন ও স্বপ্ন বিনষ্টের প্রতীক হয়ে দেখা দিয়েছে যে ভাবনা চিন্তা – যার প্রতিফলন এ গল্পের বিষয়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে তাই আমাদের বর্তমান আলােচ্য বিষয়।
এই গল্পে সাহিত্যিক ইতিহাসের বিশেষ সময়কে ঘিরে নিয়ে কয়েকদল জবরদখলকারী মানুষদের দিনকয়েকের জীবনচিত্রকে করুণ রসে আনন্দ আহ্লাদে স্নিগ্ধ মধুর ও বেদনা বিধুর করে তুলেছেন। পলাতক হিন্দু মানিকের দাবিদারহীন বাড়িতে মতিন, ইউনুস, কাদের যেভাবে আশ্রয় নিয়েছে, আর যেভাবে বিহঙ্গের মতাে ডানা মেলেছে তাদের জীবনের সাময়িক আনন্দঘন মুহূর্তগুলি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে আর ঐ বাড়িকে কেন্দ্র করে কিছু সুপ্ত সখ আহ্লাদ, অন্তরে মৃতপ্রায় সহানুভূতির স্পন্দন আজ তারা নতুন করে শুনতে পেলাে – এক্ষেত্রে সাহিত্যিকের দক্ষতা সুনিপুণ চিত্রকরের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।
আবার হিন্দু বাড়িতে হঠাৎ উঠোনের উপর আবিষ্কৃত ‘তুলসী গাছকে ঘিরে লেখক যেভাবে নানা কোণ থেকে মানসিক দ্বন্দ্ব তৈরী করেছেন তাতে কাহিনীর রস অন্য এক মাত্রা পেয়েছে – “এই বাড়িতে হিন্দুয়নির কোন চিহ্ন রাখব না – ওটাকে উপড়ে ফেলাে” – এই বিরােধী মন্তব্যের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব লেখক তীব্র করে তােলেন আবার পরক্ষণেই মতিনের চোখে বাঙালী গৃহকর্তীর জীবন্ত চিত্র ভেসে ওঠে – “আকাশে যখন দিনান্তের ছায়া ঘনিয়ে ওঠে তখন প্রতিদিন এ তুলসীতলার কথা মনে হয় বলে তার চোখ হয়তাে ছলছল করে ওঠে।”
সুখ-দুঃখের মধ্য দিয়ে দিন কাটে তাদের। হিন্দুর গৃহের তুলসী গাছটিকেও যথাস্থানে রেখে তারা যখন সুখে থাকার কথা ভাবে তখনই আসে পুলিশ এবং তারা জানিয়ে দেয় দশ দিনের মধ্যে তাদের ঘর ছেড়ে যেতে হবে। সরকারি কাজকর্মে মানবিকতা, দয়ামায়া প্রভৃতির স্থান নেই – এর মাধ্যমে মানুষ আবার উদ্বাস্তু হল না – এই গল্পে তুলসী গাছটিরও আবার শুকনাে হয়ে যাওয়াও বড়াে কথা। আসলে তুলসী গাছের বেঁচে থাকার কাহিনি তাে মানুষেরই বেঁচে থাকার কাহিনি। কারণ সাম্প্রদায়িকতা আর দেশভাগ – হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে কাউকেই রেহাই দেয় নি। তাই গল্পের শেষ কয়েকটি ছত্রে একটা দীর্ঘশ্বাসের আবহ গড়ে তুলেছেন – “সেদিন থেকে গৃহকর্তীর ছলছল চোখের কথাও কারও মনে পড়েনি। কেন পড়েনি সে কথা তুলসী গাছের জানবার কথা নয়, মানুষেরই জানবার কথা। তাই বলা যায় এই ‘একটি তুলসী গাছ’-এর কাহিনিতে লেখক জীবনের মঙ্গলস্বপ্ন ও স্বপ্নবিনষ্টের প্রতীক হিসাবে গড়ে তুলেছেন তুলসী গাছটিকে, যার মাধ্যমে বার বার প্রতিফলিত হয়েছে সাধারণ মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার বেদনা।
দেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপ: মা দুর্গার নয়টি রূপের পৃথক পৃথক নামকরণ করেছেন পিতামহ ব্রহ্মা। নয়টি নামে নয়টি রূপভেদ ও ভাবভেদ । এঁরা পরমা মহাশক্তির নটি রূপ । এঁদের একসাথে “নবদুর্গা” নামে ডাকা হয়। ★ প্রথম হলেন শৈলপুত্রী ( যিনি হিমালয় দুহিতা অর্থাৎ গিরিনন্দিনী পার্বতী)। ★ দ্বিতীয় ব্রহ্মচারিণী ( ভগবান শিবকে সRead more
দেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপ:
মা দুর্গার নয়টি রূপের পৃথক পৃথক নামকরণ করেছেন পিতামহ ব্রহ্মা। নয়টি নামে নয়টি রূপভেদ ও ভাবভেদ । এঁরা পরমা মহাশক্তির নটি রূপ । এঁদের একসাথে “নবদুর্গা” নামে ডাকা হয়।
★ প্রথম হলেন শৈলপুত্রী ( যিনি হিমালয় দুহিতা অর্থাৎ গিরিনন্দিনী পার্বতী)।
★ দ্বিতীয় ব্রহ্মচারিণী ( ভগবান শিবকে স্বামী রূপে পাবার জন্য মা গৌরী কঠোর তপস্যা করেন- ইঁহা সেই রূপ)।
★ তৃতীয় চন্দ্রঘণ্টা ( ইনি প্রচণ্ড ধ্বনি দ্বারা ভক্তের জীবন থেকে ভৌতিক, জাগতিক নানা বাধা বিপত্তি দূর করেন)।
★ চতুর্থ কুস্মাণ্ডা ( ইঁনি চতুর্বর্গ ফল দায়িনী, তথা সৃষ্টির আদিতে যে মহাশক্তি ছিলেন ইঁনি সেই। ইঁনি হস্তে অমৃত কলস ধারন করেন, যা ব্রহ্মজ্ঞান প্রদানের প্রতীক)।
★ পঞ্চম হলেন স্কন্দমাতা ( ইঁনি শিবপুত্র কার্ত্তিকের জননী। কার্ত্তিকের এক নাম স্কন্দ। ইঁনি শিবজায়া উমা)।
★ ষষ্ঠ রূপে ইঁনি কাত্যায়নী ( মহিষাসুর কে বধ করেছেন যিনি, আসুরিক বাধা সঙ্কট দূরকারিনী। বৃন্দাবনের গোপ বালারা শ্রীকৃষ্ণ প্রাপ্তির জন্য এঁনারাই পূজা করেছিলেন)।
★ সপ্তম রূপে কালরাত্রি ( সৃষ্টির প্রারম্ভে যখন কিছুই ছিলো না। তখন ইঁনি জেগে ছিলেন। এঁনারাই যোগনিদ্রার প্রভাবে ভগবান বিষ্ণু যোগনিদ্রায় ছিলেন। মধু কৈটভের দ্বারা আক্রান্ত হলে প্রজাপতি ব্রহ্মা সেই যোগনিদ্রা রূপিনী যোগমায়ার স্তবে এঁই দেবীর নাম উচ্চারন করেছিলেন)।
★ অষ্টম রূপে হলেন মহাগৌরী ( ইঁনি ভগবান শিবের মাহেশী শক্তি মহেশ্বরী তথা মহাগৌরী। ইনি শিবানী আবার রুদ্রানী আবার হরের গৌরী)।
★ নবম রূপে ইঁনি সিদ্ধিদাত্রী ( ইঁনি সকল প্রকার সিদ্ধবিদ্যার অধীশ্বরী , ভগবান শিবের সাথে অর্ধনারীশ্বর রূপে বিরাজিতা। চতুর্বর্গ ফল প্রদায়িনী)। ইঁহারাই একত্রে নবদুর্গা নামে খ্যাতা।
কীটনাশক এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ যা কীটপতঙ্গকে মেরে ফেলতে সহায়তা করে। রাসায়নিক পদার্থের সাহায্যে প্রস্তুতকৃত কীটনাশক মূলতঃ পোকা-মাকড় নির্মূলের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। জৈব কীটনাশক দুই প্রকারের হয়। উদ্ভিজ্জ বা উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত কীটনাশক যেমন - রোটেনন, নিকোটিন, পাইথ্রিন কৃত্রিম রাসায়নিক - কৃত্রিমRead more
কীটনাশক এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ যা কীটপতঙ্গকে মেরে ফেলতে সহায়তা করে। রাসায়নিক পদার্থের সাহায্যে প্রস্তুতকৃত কীটনাশক মূলতঃ পোকা-মাকড় নির্মূলের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। জৈব কীটনাশক দুই প্রকারের হয়।
উদ্ভিজ্জ বা উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত কীটনাশক যেমন – রোটেনন, নিকোটিন, পাইথ্রিন
কৃত্রিম রাসায়নিক – কৃত্রিম রাসায়নিক কীটনাশক তিন ধরনের হয় থাকে –
কবিতা : সবলা (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Sobola by Rabindranath Tagore Lyrics
Nibedita Paul
সবলা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থঃ মহুয়া নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার কেন নাহি দিবে অধিকার হে বিধাতা? নত করি মাথা পথপ্রান্তে কেন রব জাগি ক্লান্তধৈর্য প্রত্যাশার পূরণের লাগি দৈবাগত দিনে। শুধু শূন্যে চেয়ে রব? কেন নিজে নাহি লব চিনে সার্থকের পথ। কেন না ছুটাব তেজে সন্ধানের রথ দুর্ধর্ষ অশ্বেরে বাঁধি দৃঢ় বলRead more
সবলা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থঃ মহুয়া
নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার
কেন নাহি দিবে অধিকার
হে বিধাতা?
নত করি মাথা
পথপ্রান্তে কেন রব জাগি
ক্লান্তধৈর্য প্রত্যাশার পূরণের লাগি
দৈবাগত দিনে।
শুধু শূন্যে চেয়ে রব? কেন নিজে নাহি লব চিনে
সার্থকের পথ।
কেন না ছুটাব তেজে সন্ধানের রথ
দুর্ধর্ষ অশ্বেরে বাঁধি দৃঢ় বল্গাপাশে।
দুর্জয় আশ্বাসে
দুর্গমের দুর্গ হতে সাধনার ধন
কেন নাহি করি আহরণ
প্রাণ করি পণ।
যাব না বাসরকক্ষে বধূবেশে বাজায়ে কিঙ্কিণী —
আমারে প্রেমের বীর্যে করো অশঙ্কিনী।
বীরহস্তে বরমাল্য লব একদিন
সে লগ্ন কি একান্তে বিলীন
ক্ষীণদীপ্তি গোধূলিতে।
কভু তারে দিব না ভুলিতে
মোর দৃপ্ত কঠিনতা।
বিনম্র দীনতা
সম্মানের যোগ্য নহে তার,
ফেলে দেব আচ্ছাদন দুর্বল লজ্জার।
দেখা হবে ক্ষুব্ধ সিন্ধুতীরে ;
তরঙ্গগর্জনোচ্ছ্বাস মিলনের বিজয়ধ্বনিরে
Sobola by Rabindranath Tagore Recitation:
Poem-Sobola
By- Rabindranath Tagore
Narike apan bhagyo joy koribar
Keho nahi dibe adhikar
He Bidhata?
nata kori matha
Pothoprante keno raba jagi
Klantodhoirjo protashar puruner lagi
Doibagata dine
Sudhu shunne cheye raba?
Keno nije nahi laba chine
Sarthoker poth
Keno na chutabo teje shondhaner rath
Dudursho ashere badhi driro bolgapashe
Durjoy ashashe
Durgomer durgo hote sadhonar dhan
Keno nahi kori ahoron
Pran kori pon
Jabo na bashorkokkhe badhubeshe bajaye kinkini
Amare premer birje koro ashonkini
Birhoste barmalyo laba ekdin
Shey logne ki ekante bilin
Khinodipti godhulite
Kabhu tare dibo na bhulite mor dripto kothinota
Binomro dinota
Shommaner jogyo nohe tar
Fele debo acchadan durbal lojjar
Dekha hobekhubdo shindutire
See lessTaranga garjanocchashe miloner bijoy dhonire
কবিতা : মুক্তি | Mukti Poem Rabindranath Tagore Lyrics in Bengali
Nibedita Paul
মুক্তি নামে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেশ কয়েকটি কবিতা লিখেছেন যেগুলো বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে। মুক্তি নামে যে কবিতাগুলো রয়েছে সেগুলো হলঃ মুক্তি - পরিশেষ মুক্তি - পূরবী মুক্তি - বীথিকা মুক্তি - পুনশ্চ মুক্তি - মহুয়া মুক্তি - পলাতকা মুক্তি কাব্যগ্রন্থঃ পরিশেষ ১ আমারে সাহস দাও, দাও শক্তRead more
মুক্তি নামে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেশ কয়েকটি কবিতা লিখেছেন যেগুলো বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে। মুক্তি নামে যে কবিতাগুলো রয়েছে সেগুলো হলঃ
মুক্তি
কাব্যগ্রন্থঃ পরিশেষ
১
আমারে সাহস দাও, দাও শক্তি, হে চিরসুন্দর,
দাও স্বচ্ছ তৃপ্তির আকাশ, দাও মুক্তি নিরন্তর
প্রত্যহের ধূলিলিপ্ত চরণপতনপীড়া হতে,
দিয়ো না দুলিতে মোরে তরঙ্গিত মুহূর্তের স্রোতে,
ক্ষোভের বিক্ষেপবেগে। শ্রাবণসন্ধ্যার পুষ্পবনে
গ্লানিহীন যে সাহস সুকুমার যূথীর জীবনে–
নির্মম বর্ষণঘাতে শঙ্কাশূন্য প্রসন্ন মধুর,
মুহূর্তের প্রাণটিতে ভরি তোলে অনন্তের সুর,
সরল আনন্দহাস্যে ঝরি পড়ে তৃণশয্যা ‘পরে,
পূর্ণতার মূর্তিখানি আপনার বিনম্র অন্তরে
সুগন্ধে রচিয়া তোলে; দাও সেই অক্ষুব্ধ সাহস,
সে আত্মবিস্মৃত শক্তি, অব্যাকুল,সহজে স্ববশ
আপনার সুন্দর সীমায়,– দ্বিধাশূন্য সরলতা
গাঁথুক শান্তির ছন্দে সব চিন্তা, মোর সব কথা।
২
আপনার কাছ হতে বহুদূরে পালাবার লাগি
হে সুন্দর, হে অলক্ষ্য, তোমার প্রসাদ আমি মাগি,
তোমার আহ্বানবাণী। আজ তব বাজুক বাঁশরি,
চিত্তভরা শ্রাবণপ্লাবনরাগে,– যেন গো পাসরি
নিকটের তাপতপ্ত ঘূর্ণিবায়ে ক্ষুব্ধ কোলাহল,
ধূলির নিবিড় টান পদতলে। রয়েছি নিশ্চল
সারাদিন পথপার্শ্বে; বেলা হয়ে এল অবসান,
ঘন হয়ে আসে ছায়া, শ্রান্ত সূর্য করিছে সন্ধান
দিগন্তে অন্তিম শান্তি। দিবা যথা চলেছে নির্ভীক
চিহ্নহীন সঙ্গহীন অন্ধকার পথের পথিক
আপনার কাছ হতে অন্তহীন অজানার পানে
অসীমের সংগীতে উদাসী,– সেইমতো আত্মদানে
আমারে বাহির করো, শূন্যে শূন্যে পূর্ণ হ’ক সুর,
নিয়ে যাক পথে পথে হে অলক্ষ্য, হে মহাসুদূর।
মুক্তি
কাব্যগ্রন্থঃ পূরবী
মুক্তি নানা মূর্তি ধরি দেখা দিতে আসে নানা জনে —
এক পন্থা নহে।
পরিপূর্ণতার সুধা নানা স্বাদে ভুবনে ভুবনে
নানা স্রোতে বহে।
সৃষ্টি মোর সৃষ্টি-সাথে মেলে যেথা, সেথা পাই ছাড়া,
মুক্তি যে আমারে তাই সংগীতের মাঝে দেয় সাড়া,
সেথা আমি খেলা-খ্যাপা বালকের মতো লক্ষ্মীছাড়া
লক্ষ্যহীন নগ্ন নিরুদ্দেশ।
সেথা মোর চির নব, সেথা মোর চিরন্তন শেষ।
মাঝে মাঝে গানে মোর সুর আসে যে সুরে, হে গুণী,
তোমারে চিনায়।
বেঁধে দিয়ো নিজহাতে সেই নিত্য সুরের ফাল্গুনী
আমার বীণায়।
তা হলে বুঝিব আমি ধূলি কোন্ ছন্দে হয় ফুল
বসন্তের ইন্দ্রজালে অরণ্যেরে করিয়া ব্যাকুল,
নব নব মায়াচ্ছায়া কোন্ নৃত্যে নিয়ত দোদুল
বর্ণ বর্ণ ঋতুর দোলায়।
তোমারি আপন সুর কোন্ তালে তোমারে ভোলায়।
যেদিন আমার গান মিলে যাবে তোমার গানের
সুরের ভঙ্গিতে
মুক্তির সংগমতীর্থ পাব আমি আমারি প্রাণের
আপন সংগীতে।
সেদিন বুঝিব মনে নাই নাই বস্তুর বন্ধন,
শূন্যে শূন্যে রূপ ধরে তোমারি এ বীণার স্পন্দন —
নেমে যাবে সব বোঝা, থেমে যাবে সকল ক্রন্দন,
ছন্দে তালে ভুলিব আপনা,
বিশ্বগীতপদ্মদলে স্তব্ধ হবে অশান্ত ভাবনা।
সঁপি দিব সুখ দুঃখ আশা ও নৈরাশ্য যত-কিছু
তব বীণাতারে —
ধরিবে গানের মূর্তি, একান্তে করিয়া মাথা নিচু
শুনিব তাহারে।
দেখিব তাদের যেথা ইন্দ্রধনু অকস্মাৎ ফুটে,
দিগন্তে বনের প্রান্তে উষার উত্তরী যেথা লুটে,
বিবাগী ফুলের গন্ধ মধ্যাহ্নে যেথায় যায় ছুটে —
নীড়ে-ধাওয়া পাখির ডানায়
সায়াহ্নগগন যেথা দিবসেরে বিদায় জানায়।
সেদিন আমার রক্তে শুনা যাবে দিবসরাত্রির
নৃত্যের নূপুর।
নক্ষত্র বাজাবে বক্ষে বংশীধ্বনি আকাশযাত্রীর
আলোকবেণুর।
সেদিন বিশ্বের তৃণ মোর অঙ্গে হবে রোমাঞ্চিত,
আমার হৃদয় হবে কিংশুকের রক্তিমালাঞ্ছিত;
সেদিন আমার মুক্তি, যবে হবে, হে চিরবাঞ্ছিত,
তোমার লীলায় মোর লীলা —
যেদিন তোমার সঙ্গে গীতরঙ্গে তালে তালে মিলা।
মুক্তি
কাব্যগ্রন্থঃ বীথিকা
জয় করেছিনু মন তাহা বুঝে নাই,
চলে গেনু তাই
নতশিরে।
মনে ক্ষীণ আশা ছিল ডাকিবে সে ফিরে।
মানিল না হার,
আমারে করিল অস্বীকার।
বাহিরে রহিনু খাড়া
কিছুকাল, না পেলেম সাড়া।
তোরণদ্বারের কাছে
চাঁপাগাছে
দক্ষিণে বাতাস থরথরি
অন্ধকারে পাতাগুলি উঠিল মর্মরি।
দাঁড়ালেম পথপাশে,
ঊর্ধ্বে বাতায়ন-পানে তাকালেম ব্যর্থ কী আশ্বাসে।
দেখিনু নিবানো বাতি–
আত্মগুপ্ত অহংকৃত রাতি
কক্ষ হতে পথিকেরে হানিছে ভ্রূকুটি।
এ কথা ভাবি নি মনে, অন্ধকারে ভূমিতলে লুটি
হয়তো সে করিতেছে খান্ খান্
তীব্রঘাতে আপনার অভিমান।
দূর হতে দূরে গেনু সরে
প্রত্যাখ্যানলাঞ্ছনার বোঝা বক্ষে ধরে।
চরের বালুকা ঠেকা
পরিত্যক্ত তরীসম রহিল সে একা।
আশ্বিনের ভোরবেলা চেয়ে দেখি পথে যেতে যেতে
ক্ষীণ কুয়াশায় ঢাকা কচিধানখেতে
দাঁড়িয়ে রয়েছে বক,
দিগন্তে মেঘের গুচ্ছে দুলিয়াছে উষার অলক।
সহসা উঠিল বলি হৃদয় আমার,
দেখিলাম যাহা দেখিবার
নির্মল আলোকে
মোহমুক্ত চোখে।
কামনার যে পিঞ্জরে শান্তিহীন
অবরুদ্ধ ছিনু এতদিন
নিষ্ঠুর আঘাতে তার
ভেঙে গেছে দ্বার–
নিরন্তর আকাঙক্ষার এসেছি বাহিরে
সীমাহীন বৈরাগ্যের তীরে।
আপনারে শীর্ণ করি
দিবসশর্বরী
ছিনু জাগি
মুষ্টিভিক্ষা লাগি।
উন্মুক্ত বাতাসে
খাঁচার পাখির গান ছাড়া আজি পেয়েছে আকাশে।
সহসা দেখিনু প্রাতে
যে আমারে মুক্তি দিল আপনার হাতে
সে আজও রয়েছে পড়ি
আমারি সে ভেঙে-পড়া পিঞ্জর আঁকড়ি।
মুক্তি
কাব্যগ্রন্থঃ পুনশ্চ
বাজিরাও পেশোয়ার অভিষেক হবে
কাল সকালে।
কীর্তনী এসেছে গ্রামের থেকে,
মন্দিরে ছিল না তার স্থান।
সে বসেছে অঙ্গনের এক কোণে
পিপুল গাছের তলায়।
একতারা বাজায় আর কেবল সে ফিরে ফিরে বলে,
“ঠাকুর, তোমায় কে বসালো
কঠিন সোনার সিংহাসনে।’
রাত তখন দুই প্রহর,
শুক্লপক্ষের চাঁদ গেছে অস্তে।
দূরে রাজবাড়ির তোরণে
বাজছে শাঁখ শিঙে জগঝম্প,
জ্বলছে প্রদীপের মালা।
কীর্তনী গাইছে,
“তমালকুঞ্জে বনের পথে
শ্যামল ঘাসের কান্না এলেম শুনে,
ধুলোয় তারা ছিল যে কান পেতে,
পায়ের চিহ্ন বুকে পড়বে আঁকা
এই ছিল প্রত্যাশা।’
আরতি হয়ে গেছে সারা–
মন্দিরের দ্বার তখন বন্ধ,
ভিড়ের লোক গেছে রাজবাড়িতে।
কীর্তনী আপন মনে গাইছে–
“প্রাণের ঠাকুর,
এরা কি পাথর গেঁথে তোমায় রাখবে বেঁধে।
তুমি যে স্বর্গ ছেড়ে নামলে ধুলোয়
তোমার পরশ আমার পরশ
মিলবে ব’লে।’
 
সেই পিপুল-তলার অন্ধকারে
একা একা গাইছিল কীর্তনী,
আর শুনছিল আরেকজনা গোপনে–
বাজিরাও পেশোয়া।
শুনুছিল সে–
“তুমি আমায় ডাক দিয়েছ আগল-দেওয়া ঘরের থেকে,
আমায় নিয়ে পথের পথিক হবে।
ঘুচবে তোমার নির্বাসনের ব্যথা,
ছাড়া পাবে হৃদয়-মাঝে।
থাক্ গে ওরা পাথরখানা নিয়ে
পাথরের বন্দীশালায়
অহংকারের-কাঁটার-বেড়া-ঘেরা।’
রাত্রি প্রভাত হল।
শুকতারা অরুণ-আলোয় উদাসী।
তোরণদ্বারে বাজল বাঁশি বিভাসে ললিতে।
অভিষেকের স্নান হবে,
পুরোহিত এল তীর্থবারি নিয়ে।
রাজবাড়ির ঠাকুরঘর শূন্য।
জ্বলছে দীপশিখা,
পূজার উপচার পড়ে আছে–
বাজিরাও পেশোয়া গেছে চলে
পথের পথিক হয়ে।
See less
কবিতা : ব্রাহ্মণ | Brahman Poem by Rabindranath Tagore Lyrics in Bengali
Nibedita Paul
ব্রাহ্মণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থঃ কথা অন্ধকারে বনচ্ছায়ে সরস্বতীতীরে অস্ত গেছে সন্ধ্যাসূর্য; আসিয়াছে ফিরে নিস্তব্ধ আশ্রম-মাঝে ঋষিপুত্রগণ মস্তকে সমিধ্ভার করি আহরণ বনান্তর হতে; ফিরায়ে এনেছে ডাকি তপোবনগোষ্ঠগৃহে স্নিগ্ধশান্ত-আঁখি শ্রান্ত হোমধেনুগণে; করি সমাপন সন্ধ্যাস্নান সবি মিলি লয়েছে আসন গুরু গRead more
ব্রাহ্মণ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থঃ কথা
অন্ধকারে বনচ্ছায়ে সরস্বতীতীরে
অস্ত গেছে সন্ধ্যাসূর্য; আসিয়াছে ফিরে
নিস্তব্ধ আশ্রম-মাঝে ঋষিপুত্রগণ
মস্তকে সমিধ্ভার করি আহরণ
বনান্তর হতে; ফিরায়ে এনেছে ডাকি
তপোবনগোষ্ঠগৃহে স্নিগ্ধশান্ত-আঁখি
শ্রান্ত হোমধেনুগণে; করি সমাপন
সন্ধ্যাস্নান সবি মিলি লয়েছে আসন
গুরু গৌতমেরে ঘিরি কুটিরপ্রাঙ্গণে
হোমাগ্নি-আলোকে। শূন্য অনন্ত গগনে
ধ্যানমগ্ন মহাশান্তি; নক্ষত্রমণ্ডলী
সারি সারি বসিয়াছে শুষ্ক কুতূহলী
নিঃশব্দ শিষ্যের মতো। নিভৃত আশ্রম
উঠিল চকিত হয়ে; মহর্ষি গৌতম
কহিলেন, “বৎসগণ, ব্রহ্মবিদ্যা কহি,
করো অবধান।’
হেনকালে অর্ঘ্য বহি
করপুট ভরি’ পশিলা প্রাঙ্গণতলে
তরুণ বালক; বন্দী ফলফুলদলে
ঋষির চরণপদ্ম, নমি ভক্তিভরে
কহিলা কোকিলকণ্ঠে সুধাস্নিগ্ধস্বরে,
“ভগবন্, ব্রহ্মবিদ্যাশিক্ষা-অভিলাষী
আসিয়াছে দীক্ষাতরে কুশক্ষেত্রবাসী,
সত্যকাম নাম মোর।’
শুনি স্মিতহাসে
ব্রহ্মর্ষি কহিলা তারে স্নেহশান্ত ভাষে,
“কুশল হউক সৌম্য। গোত্র কী তোমার?
বৎস, শুধু ব্রাহ্মণের কাছে অধিকার
ব্রহ্মবিদ্যালাভে।’
বালক কহিলা ধীরে,
“ভগবন্, গোত্র নাহি জানি। জননীরে
শুধায়ে আসিব কল্য, করো অনুমতি।’
এত কহি ঋষিপদে করিয়া প্রণতি
গেল চলি সত্যকাম ঘন-অন্ধকার
বনবীথি দিয়া, পদব্রজে হয়ে পার
ক্ষীন স্বচ্ছ শান্ত সরস্বতী; বালুতীরে
সুপ্তিমৌন গ্রামপ্রান্তে জননীকুটিরে
করিলা প্রবেশ।
ঘরে সন্ধ্যাদীপ জ্বালা;
দাঁড়ায়ে দুয়ার ধরি জননী জবালা
পুত্রপথ চাহি; হেরি তারে বক্ষে টানি
আঘ্রাণ করিয়া শির কহিলেন বাণী
কল্যাণকুশল। শুধাইলা সত্যকাম,
“কহো গো জননী, মোর পিতার কী নাম,
কী বংশে জনম। গিয়াছিনু দীক্ষাতরে
গৌতমের কাছে, গুরু কহিলেন মোরে–
বৎস, শুধু ব্রাহ্মণের কাছে অধিকার
ব্রহ্মবিদ্যালাভে। মাতঃ, কী গোত্র আমার?’
শুনি কথা, মৃদুকণ্ঠে অবনতমুখে
কহিলা জননী, “যৌবনে দারিদ্র৻দুখে
বহুপরিচর্যা করি পেয়েছিনু তোরে,
জন্মেছিস ভর্তৃহীনা জবালার ক্রোড়ে,
গোত্র তব নাহি জানি তাত।’
পরদিন
তপোবনতরুশিরে প্রসন্ন নবীন
জাগিল প্রভাত। যত তাপসবালক
শিশিরসুস্নিগ্ধ যেন তরুণ আলোক,
ভক্ত-অশ্রু-ধৌত যেন নব পুণ্যচ্ছটা,
প্রাতঃস্নাত স্নিগ্ধচ্ছবি আর্দ্রসিক্তজটা,
শুচিশোভা সৌম্যমূর্তি সমুজ্জ্বলকায়ে
বসেছে বেষ্টন করি বৃদ্ধ বটচ্ছায়ে
গুরু গৌতমেরে। বিহঙ্গকাকলিগান,
মধুপগুঞ্জনগীতি, জলকলতান,
তারি সাথে উঠিতেছে গম্ভীর মধুর
বিচিত্র তরুণ কণ্ঠে সম্মিলিত সুর
শান্ত সামগীতি।
হেনকালে সত্যকাম
কাছে আসি ঋষিপদে করিলা প্রণাম–
মেলিয়া উদার আঁখি রহিলা নীরবে।
আচার্য আশিষ করি শুধাইলা তবে,
“কী গোত্র তোমার সৌম্য, প্রিয়দরশন?’
তুলি শির কহিলা বালক, “ভগবন্,
নাহি জানি কী গোত্র আমার। পুছিলাম
জননীরে, কহিলেন তিনি, সত্যকাম,
বহুপরিচর্যা করি পেয়েছিনু তোরে,
জন্মেছিস ভর্তৃহীনা জবালার ক্রোড়ে–
গোত্র তব নাহি জানি।’
শুনি সে বারতা
ছাত্রগণ মৃদুস্বরে আরম্ভিলা কথা
মধুচক্রে লোষ্ট্রপাতে বিক্ষিপ্ত চঞ্চল
পতঙ্গের মতো–সবে বিস্ময়বিকল,
কেহ বা হাসিল কেহ করিল ধিক্কার
লজ্জাহীন অনার্যের হেরি অহংকার।
উঠিলা গৌতম ঋষি ছাড়িয়া আসন,
বাহু মেলি বালকেরে করিয়া আলিঙ্গন
কহিলেন, “অব্রাহ্মণ নহ তুমি তাত।
তুমি দ্বিজোত্তম, তুমি সত্যকুলজাত।’
Brahman Poem by Rabindranath Tagore Recitation:
Poem- Brahman
By- Rabindranath Tagore
Andhakare banacchaye sarashotitire
Asta geche sodhyasurja; Ashiyache fire
Nistabda asrom majhe rshiputragan
Mastake Somidhbhar kori ahoron
Bonantor hote; firaye enecho daki
tapobon gosto grihe snigdho-shanto aakhi
Sranto homedhenugone kori somapon
Sondhyasnan sobi mili loyeche ashon
Guru goutomer ghiri kutirprangane
Homagni-Aloke shunno anata gagane
Dhaynmagna mohashanti; nakkhatra mandoli
Shari Shari bishiyache shusko kutuholi
Nishabdo shisher moto nivriti asrom
Uthilo chokito hoye; Maharshi goutam
Kohilen batshagan brahmabidya kohi
Koro abodhan
Henokale orgo bahi
See lessKarput bhori poshila prangan tole
Tarun balok bandi fal ful dale
Rshir charanpodmo, Nami bhaktibhore
Kohila Kokilkonthe shudhasnigdo shore
bhagban, Brahmabidya shikkha obhilashi
Aashiyache dikkatore kushkhetrabashi
Satyakam nam mor
কবিতা : হঠাৎ দেখা | Hothat Dekha Poem by Rabindranath Tagore lyrics
Nibedita Paul
হঠাৎ দেখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থঃ শ্যামলী রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা, ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন। আগে ওকে বারবার দেখেছি লালরঙের শাড়িতে দালিম ফুলের মতো রাঙা; আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়, আঁচল তুলেছে মাথায় দোলনচাঁপার মতো চিকনগৌর মুখখানি ঘিরে। মনে হল, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্ব ঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চারRead more
হঠাৎ দেখা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থঃ শ্যামলী
রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা,
ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন।
আগে ওকে বারবার দেখেছি
লালরঙের শাড়িতে
দালিম ফুলের মতো রাঙা;
আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়,
আঁচল তুলেছে মাথায়
দোলনচাঁপার মতো চিকনগৌর মুখখানি ঘিরে।
মনে হল, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্ব
ঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চার দিকে,
যে দূরত্ব সর্ষেখেতের শেষ সীমানায়
শালবনের নীলাঞ্জনে।
থমকে গেল আমার সমস্ত মনটা;
চেনা লোককে দেখলেম অচেনার গাম্ভীর্যে।
হঠাৎ খবরের কাগজ ফেলে দিয়ে
আমাকে করলে নমস্কার।
সমাজবিধির পথ গেল খুলে,
আলাপ করলেম শুরু —
কেমন আছ, কেমন চলছে সংসার
ইত্যাদি।
সে রইল জানলার বাইরের দিকে চেয়ে
যেন কাছের দিনের ছোঁয়াচ-পার-হওয়া চাহনিতে।
দিলে অত্যন্ত ছোটো দুটো-একটা জবাব,
কোনোটা বা দিলেই না।
বুঝিয়ে দিলে হাতের অস্থিরতায় —
কেন এ-সব কথা,
এর চেয়ে অনেক ভালো চুপ করে থাকা।
আমি ছিলেম অন্য বেঞ্চিতে
ওর সাথিদের সঙ্গে।
এক সময়ে আঙুল নেড়ে জানালে কাছে আসতে।
মনে হল কম সাহস নয়;
বসলুম ওর এক-বেঞ্চিতে।
গাড়ির আওয়াজের আড়ালে
বললে মৃদুস্বরে,
“কিছু মনে কোরো না,
সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।
আমাকে নামতে হবে পরের স্টেশনেই;
দূরে যাবে তুমি,
দেখা হবে না আর কোনোদিনই।
তাই যে প্রশ্নটার জবাব এতকাল থেমে আছে,
শুনব তোমার মুখে।
সত্য করে বলবে তো?
আমি বললেম, “বলব।”
বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়েই শুধোল,
“আমাদের গেছে যে দিন
একেবারেই কি গেছে,
কিছুই কি নেই বাকি।”
একটুকু রইলেম চুপ করে;
তারপর বললেম,
“রাতের সব তারাই আছে
দিনের আলোর গভীরে।”
খটকা লাগল, কী জানি বানিয়ে বললেম না কি।
ও বললে, “থাক্, এখন যাও ও দিকে।”
সবাই নেমে গেল পরের স্টেশনে;
আমি চললেম একা।
Hothat Dekha Poem by Rabindranath Tagore recitation:
Hothat Dekha
Rabindranath Tagore
Rail gaṛir kamray hoṭath dekha,
See lessbhabi ni sambhab hobe kunodin.
Age oke barbar dekhechi
Lal ranger saṛite
Dalim phuler mato ranga;
Aj poreche kalo resomer kapaṛ,
Achal tuleche mathay
Dolan chapar mato cikangaur mukh khani ghire.
Mone hola, kalo ronge ekṭa gabhir duratta
Ghaniye niyeche nijer char dike,
Je duratta sarṣekheter seṣh simanay
Shalaboner nilanjane.
Thomke gelo amar samasta manṭa;
Chena lok ke dekhlem achenar gambhirye.
Hoṭhaṯ khabarer kagaj phele diye
Amake korle namaskar.
Samaj bidhir path gelo khule,
Alap korlem shuru
keman acho, keman cholche sangshar
ityadi.
Se ro’ila janalar ba’irera dike cheye
Jeno kacher diner choyacho-par-howa chahonite.
Dile atyanta choṭo duṭo-ekṭa jabab,
Konoṭa ba dile’i na.
Bujhiye dile hater asthirotaya–
keno e-sab kotha,
Er cheye anek bhalo chup kore thaka.
Ami chilem an’ya benchite
Or shathider sange.
Ek samay angul neṛe janale kache aste.
Mone holo kam sahos noy;
কবিতা : শাহজাহান | Shahjahan Poem by Rabindranath Tagore in Bengali
Nibedita Paul
শাহজাহান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থঃ বলাকা এ কথা জানিতে তুমি, ভারত-ঈশ্বর শা-জাহান, কালস্রোতে ভেসে যায় জীবন যৌবন ধন মান। শুধু তব অন্তরবেদনা চিরন্তন হয়ে থাক্ সম্রাটের ছিল এ সাধনা। রাজশক্তি বজ্র সুকঠিন সন্ধ্যারক্তরাগসম তন্দ্রাতলে হয় হোক লীন, কেবল একটি দীর্ঘশ্বাস নিত্য-উচ্ছ্বসিত হয়ে সকরুণ করুক আকাশRead more
শাহজাহান
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থঃ বলাকা
এ কথা জানিতে তুমি, ভারত-ঈশ্বর শা-জাহান,
কালস্রোতে ভেসে যায় জীবন যৌবন ধন মান।
শুধু তব অন্তরবেদনা
চিরন্তন হয়ে থাক্ সম্রাটের ছিল এ সাধনা।
রাজশক্তি বজ্র সুকঠিন
সন্ধ্যারক্তরাগসম তন্দ্রাতলে হয় হোক লীন,
কেবল একটি দীর্ঘশ্বাস
নিত্য-উচ্ছ্বসিত হয়ে সকরুণ করুক আকাশ
এই তব মনে ছিল আশ।
হীরা মুক্তামানিক্যের ঘটা
যেন শূন্য দিগন্তের ইন্দ্রজাল ইন্দ্রধনুচ্ছটা
যায় যদি লুপ্ত হয়ে যাক,
শুধু থাক্
একবিন্দু নয়নের জল
কালের কপোলতলে শুভ্র সমুজ্জ্বল
এ তাজমহল।
হায় ওরে মানবহৃদয়,
বার বার
কারো পানে ফিরে চাহিবার
নাই যে সময়,
নাই নাই।
জীবনের খরস্রোতে ভাসিছ সদাই
ভুবনের ঘাটে ঘাটে–
এক হাটে লও বোঝা, শূন্য করে দাও অন্য হাটে।
দক্ষিণের মন্ত্রগুঞ্জরণে
তব কুঞ্জবনে
বসন্তের মাধবীমঞ্জরী
যেই ক্ষণে দেয় ভরি
মালঞ্চের চঞ্চল অঞ্চল,
বিদায় গোধূলি আসে ধুলায় ছড়ায়ে ছিন্নদল।
সময় যে নাই;
আবার শিশিররাত্রে তাই
নিকুঞ্জে ফুটায়ে তোল নব কুন্দরাজি
সাজাইতে হেমন্তের অশ্রুভরা আনন্দের সাজি।
হায় রে হৃদয়,
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
নাই নাই, নাই যে সময়।
হে সম্রাট, তাই তব শঙ্কিত হৃদয়
চেয়েছিল করিবারে সময়ের হৃদয় হরণ
সৌন্দর্যে ভুলায়ে।
কণ্ঠে তার কী মালা দুলায়ে
করিলে বরণ
রূপহীন মরণেরে মৃত্যুহীন অপরূপ সাজে।
রহে না যে
বিলাপের অবকাশ
বারো মাস,
তাই তব অশান্ত ক্রন্দনে
চিরমৌন জাল দিয়ে বেঁধে দিলে কঠিন বন্ধনে।
জ্যোৎস্নারাতে নিভৃত মন্দিরে
প্রেয়সীরে
যে-নামে ডাকিতে ধীরে ধীরে
সেই কানে-কানে ডাকা রেখে গেলে এইখানে
অনন্তের কানে।
প্রেমের করুণ কোমলতা
ফুটিল তা
সৌন্দর্যের পুষ্পপুঞ্জে প্রশান্ত পাষাণে।
হে সম্রাট কবি,
এই তব হৃদয়ের ছবি,
এই তব নব মেঘদূত,
অপূর্ব অদ্ভুত
ছন্দে গানে
উঠিয়াছে অলক্ষের পানে
যেথা তব বিরহিণী প্রিয়া
রয়েছে মিশিয়া
প্রভাতের অরুণ-আভাসে,
ক্লান্তসন্ধ্যা দিগন্তের করুণ নিশ্বাসে,
পূর্ণিমায় দেহহীন চামেলির লাবণ্যবিলাসে,
ভাষার অতীত তীরে
কাঙাল নয়ন যেথা দ্বার হতে আসে ফিরে ফিরে।
তোমার সৌন্দর্যদূত যুগ যুগ ধরি
এড়াইয়া কালের প্রহরী
চলিয়াছে বাক্যহারা এই বার্তা নিয়া
“ভুলি নাই, ভুলি নাই, ভুলি নাই প্রিয়া।”
চলে গেছ তুমি আজ
মহারাজ;
রাজ্য তব স্বপ্নসম গেছে ছুটে,
সিংহাসন গেছে টুটে;
তব সৈন্যদল
যাদের চরনভরে ধরণী করিত টলমল
তাহাদের স্মৃতি আজ বায়ুভরে
উড়ে যায় দিল্লীর পথের ধূলি-‘পরে।
বন্দীরা গাহে না গান;
যমুনা-কল্লোলসাথে নহবত মিলায় না তান;
তব পুরসুন্দরীর নূপুরনিক্কণ
ভগ্ন প্রাসাদের কোণে
ম’রে গিয়ে ঝিল্লীস্বনে
কাঁদায় রে নিশার গগন।
তবুও তোমার দূত অমলিন,
শ্রান্তিক্লান্তিহীন,
তুচ্ছ করি রাজ্য-ভাঙাগড়া,
তুচ্ছ করি জীবনমৃত্যুর ওঠাপড়া,
যুগে যুগান্তরে
কহিতেছে একস্বরে
চিরবিরহীর বাণী নিয়া
“ভুলি নাই, ভুলি নাই, ভুলি নাই প্রিয়া।”
মিথ্যা কথা– কে বলে যে ভোল নাই।
কে বলে রে খোল নাই
স্মৃতির পিঞ্জরদ্বার।
অতীতের চির অস্ত-অন্ধকার
আজিও হৃদয় তব রেখেছে বাঁধিয়া?
বিস্মৃতির মুক্তিপথ দিয়া
আজিও সে হয় নি বাহির?
সমাধিমন্দির
এক ঠাঁই রহে চিরস্থির;
ধরায় ধুলায় থাকি
স্মরণের আবরণে মরণেরে যত্নে রাখে ঢাকি।
জীবনেরে কে রাখিতে পারে।
আকাশের প্রতি তারা ডাকিছে তাহারে।
তার নিমন্ত্রণ লোকে লোকে
নব নব পূর্বাচলে আলোকে আলোকে।
স্মরণের গ্রন্থি টুটে
সে যে যায় ছুটে
বিশ্বপথে বন্ধনবিহীন।
মহারাজ, কোনো মহারাজ্য কোনোদিন
পারে নাই তোমারে ধরিতে;
সমুদ্রস্তনিত পৃথ্বী, হে বিরাট, তোমারে ভরিতে
নাহি পারে–
তাই এ-ধরারে
জীবন-উৎসব-শেষে দুই পায়ে ঠেলে
মৃৎপাত্রের মতো যাও ফেলে।
তোমার কীর্তির চেয়ে তুমি যে মহৎ,
তাই তব জীবনের রথ
পশ্চাতে ফেলিয়া যায় কীর্তিরে তোমার
বারম্বার।
তাই
চিহ্ন তব পড়ে আছে, তুমি হেথা নাই।
যে প্রেম সম্মুখপানে
চলিতে চালাতে নাহি জানে,
যে প্রেম পথের মধ্যে পেতেছিল নিজ সিংহাসন,
তার বিলাসের সম্ভাষণ
পথের ধুলার মতো জড়ায়ে ধরেছে তব পায়ে,
দিয়েছ তা ধূলিরে ফিরায়ে।
সেই তব পশ্চাতের পদধূলি-‘পরে
তব চিত্ত হতে বায়ুভরে
কখন সহসা
উড়ে পড়েছিল বীজ জীবনের মাল্য হতে খসা।
তুমি চলে গেছ দূরে
সেই বীজ অমর অঙ্কুরে
উঠেছে অম্বরপানে,
কহিছে গম্ভীর গানে–
“যত দূর চাই
নাই নাই সে পথিক নাই।
প্রিয়া তারে রাখিল না, রাজ্য তারে ছেড়ে দিল পথ
রুধিল না সমুদ্র পর্বত।
আজি তার রথ
চলিয়াছে রাত্রির আহ্বানে
নক্ষত্রের গানে
প্রভাতের সিংহদ্বার পানে।
তাই
স্মৃতিভারে আমি পড়ে আছি,
ভারমুক্ত সে এখানে নাই।’
Shahjahan Poem by Rabindranath Tagore Recitation
Shah jahan Kobita by by Rabindranath Tagore:
E kotha janite tumi, Bharat isshor Shah Jahan
kalasrote bhese jay jibon joubon dhan man.
Sudhu taba antarbedona
Chironton hoye thak samraṭer chilo e shadhona
Rajshakti bajra sukothin
Shondhyaraktoshomagom tondratole hoy hok lin
Kebol ekti dhirgoshash
Nityo ucchoshito hoye sokarun karuk akash
Ei taba mone chilo asha
Hira Mukta manikyer ghota
Jeno shunno digonter indrojal indrodhanucchota
Jay Jodi lupto hoye jak
Sudhu thak
Ekbindu nayaner jol
Kaler kopoltole shuvro shomujjol
E tajmahal
Haay ore manabhridoy
Baar baar
karo pane fire chahibar
Nai je shomoy
nai nai
Jiboner Khorsrute bhashicho shodai
Bhubaner ghate ghate
Ek hate lo buja, Shunno kore dai onno hate
Dokkhiner mantragunjorone
Taba kunjobone
Basanter Madhobimanjori
Jei khone dey bhori
maloncher chonchol chonchol
Biday godhuli aashe dhulay choraye chinno dol
Somoy je nai
Abar shishir ratre tai
Nikunje futaye tol naba kundraji
Sajaite hemonter asrubhora anonder shaji
haay re hridoy
Tomar sonchoy
Dinante Nishante shudhu pothoprante fele jete hoy
nai nai, nau je shomoy
He shomrat, tai taba shonkito hridoy
See lessCheyechilo koribare shomoyer hridoyhoron
Shoundorje bhulaye
Konthe tar ki mala dulaye
Korile baran
Roophin moroner mrituhin oporup shaje
Rohe na je Bilaper obokash
Baro mash
Tai taba oshanto krondone
Chiro mounojal diye bedhe dile kothin bondhone
Josnarate nivrito mondire
Preyoshire
Je name dakite dhire dhire
Shei kane kane daka rekhe gele eikhane
Ononter kane
Premer karun komolota
Futilo ta
Shoundorjer pushpo punje proshanto pashane
সারাংশ – গুপ্তধন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Guptodhon Rabindranath Tagore Summary
Nibedita Paul
গুপ্তধন ‘গুপ্তধন’ কথাটির অর্থ লুকোনাে সম্পদ, যে সম্পদ মানুষের দৃষ্টির বাইরে থাকে, তাকেই ‘গুপ্তধন’ বলে। রবীন্দ্রনাথ দেখিয়েছেন যে এই গুপ্তধন কখনই মানুষের কাছে মঙ্গলকর নয়, এর মধ্যেই লুক্কায়িত থাকে মৃত্যুর অমােঘ হাতছানি। রবীন্দ্রনাথ এভাবে ধন প্রাপ্তিতে শ্রদ্ধাশীল ছিলেন না। যে ধন থাকে মনুষ্যচক্ষুর অন্Read more
গুপ্তধন
‘গুপ্তধন’ কথাটির অর্থ লুকোনাে সম্পদ, যে সম্পদ মানুষের দৃষ্টির বাইরে থাকে, তাকেই ‘গুপ্তধন’ বলে।
রবীন্দ্রনাথ দেখিয়েছেন যে এই গুপ্তধন কখনই মানুষের কাছে মঙ্গলকর নয়, এর মধ্যেই লুক্কায়িত থাকে মৃত্যুর অমােঘ হাতছানি। রবীন্দ্রনাথ এভাবে ধন প্রাপ্তিতে শ্রদ্ধাশীল ছিলেন না। যে ধন থাকে মনুষ্যচক্ষুর অন্তরালে সে ধনকে তিনি বলেছেন ‘মরা ধন’। এই ধনের প্রতি আকর্ষণ তিনি সহ্য করতে পারেন নি। এর প্রতি আকর্ষণ কীভাবে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনকে বিপর্যস্ত করে তারই ছবি ‘গুপ্তধন’ গল্পে লেখক অঙ্কন করার চেষ্টা করেছেন।
গুপ্তধন গল্পটির শুরুতেই একটি চমক আর সেই চমকের মাধ্যমেই মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিকতার উন্মােচন একটা পরিচয়কে প্রতিষ্ঠা করেছে। মৃত্যুঞ্জয় নিষ্ঠাবান, সদাচারী ও নিতান্ত সাধারণ কিন্তু লােভ লালসার উর্ধ্বে নয়। বিত্তের স্বাভাবিক লােভের কারণে অনন্যমনা অধ্যবসায়ী, ফলে গুপ্তধনের আবিষ্কারে মনপ্রাণ সমর্পণ করেছে। সেই আবিষ্কারের মূল সূত্রটিই যখন রহস্যজনকভাবে উধাও হয়, লেখক সেই মানসিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জীবন্ত করে তুলেছেন এবং একই সঙ্গে পাঠকমনও মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে সঙ্গে রহস্য উদঘাটনে সঙ্গী হয়েছে। নামকরণে থাকে বিষয়বস্তুর ইঙ্গিত, গল্প শুরু হয় প্রথম পঙক্তি থেকেই। গুপ্তধন গল্পও এর ব্যতিক্রম নয়।
আসলে এই গল্পের নামকরণের মধ্য দিয়ে মানুষের অন্তরের সুপ্ত এক সম্পদের কথাই বলা হয়েছে, ইন্দ্রিয়ের তাড়নায় ও বাসনায় মােহজালে আবদ্ধ হয়ে যা ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে। এক্ষেত্রে শংকর ও মৃত্যুঞ্জয়ের উদ্দেশ্য এক – গুপ্তধনের সন্ধান। অবশ্য একসময়ে তার সন্ধান পেয়েও তারা তা গ্রহণ করেনি। সন্ন্যাসী শংকর একসময় স্বরূপানন্দ স্বামীর মাধ্যমে মৃত্যুঞ্জয় সম্পদের লােভে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করল। আবার এই শংকরই মৃত্যুঞ্জয়ের গুপ্তধনের মােহমুক্তি ঘটালেন, আলাে বাতাসে ছড়িয়ে থাকা প্রকৃত সম্পদকে চেনালেন।
রবীন্দ্রনাথ একসময় বলেছিলেন, “সুখের উপায় বাহিরে নাই, তাহা অন্তরেই আছে, তাহা উপকরণজালের বিপুল জটিলতার মধ্যে নাই, তাহা সংযত চিত্তের নির্মল সরলতার মধ্যে জটিলতার মধ্যে নাই, তাহা সংযত চিত্তের নির্মল সরলতার মধ্যে বিরাজমান।” এই দৃষ্টিভঙ্গী থেকেই বিশ্বব্যপী অক্ষয় সম্পদের সন্ধান পেলেন মৃত্যুঞ্জয়, ত্যাগ করলেন গুপ্তধনের বিপুল সম্পদ, যা এতদিন অন্তদৃষ্টির বন্ধনে আবদ্ধ ছিল আজ তা আলাে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ল – শংকর আর মৃত্যুঞ্জয়ের প্রকৃত গুপ্তধন অর্থাৎ মনের ঐশ্বর্যের সন্ধান মিলল। আর এই তাৎপর্যই গুপ্তধন গল্পটি ব্যঞ্জনা বা ইঙ্গিতবহ হয়ে উঠেছে
See lessএকটি তুলসী গাছের কাহিনী সমালোচনা | Ekti Tulsi Gacher Kahini Analysis?
Nibedita Paul
একটি তুলসীগাছের কাহিনী উঃ বাংলাদেশের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহের লেখা 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী’-তে মানুষের আশ্রয়সন্ধান, আশ্রয় লাভ ও আশ্রয়চ্যুত হয়ে মঙ্গলস্বপ্ন ও স্বপ্ন বিনষ্টের প্রতীক হয়ে দেখা দিয়েছে যে ভাবনা চিন্তা – যার প্রতিফলন এ গল্পের বিষয়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে তাই আমাদের বর্তমRead more
একটি তুলসীগাছের কাহিনী
উঃ বাংলাদেশের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহের লেখা ‘একটি তুলসী গাছের কাহিনী’-তে মানুষের আশ্রয়সন্ধান, আশ্রয় লাভ ও আশ্রয়চ্যুত হয়ে মঙ্গলস্বপ্ন ও স্বপ্ন বিনষ্টের প্রতীক হয়ে দেখা দিয়েছে যে ভাবনা চিন্তা – যার প্রতিফলন এ গল্পের বিষয়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে তাই আমাদের বর্তমান আলােচ্য বিষয়।
এই গল্পে সাহিত্যিক ইতিহাসের বিশেষ সময়কে ঘিরে নিয়ে কয়েকদল জবরদখলকারী মানুষদের দিনকয়েকের জীবনচিত্রকে করুণ রসে আনন্দ আহ্লাদে স্নিগ্ধ মধুর ও বেদনা বিধুর করে তুলেছেন। পলাতক হিন্দু মানিকের দাবিদারহীন বাড়িতে মতিন, ইউনুস, কাদের যেভাবে আশ্রয় নিয়েছে, আর যেভাবে বিহঙ্গের মতাে ডানা মেলেছে তাদের জীবনের সাময়িক আনন্দঘন মুহূর্তগুলি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে আর ঐ বাড়িকে কেন্দ্র করে কিছু সুপ্ত সখ আহ্লাদ, অন্তরে মৃতপ্রায় সহানুভূতির স্পন্দন আজ তারা নতুন করে শুনতে পেলাে – এক্ষেত্রে সাহিত্যিকের দক্ষতা সুনিপুণ চিত্রকরের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।
আবার হিন্দু বাড়িতে হঠাৎ উঠোনের উপর আবিষ্কৃত ‘তুলসী গাছকে ঘিরে লেখক যেভাবে নানা কোণ থেকে মানসিক দ্বন্দ্ব তৈরী করেছেন তাতে কাহিনীর রস অন্য এক মাত্রা পেয়েছে – “এই বাড়িতে হিন্দুয়নির কোন চিহ্ন রাখব না – ওটাকে উপড়ে ফেলাে” – এই বিরােধী মন্তব্যের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব লেখক তীব্র করে তােলেন আবার পরক্ষণেই মতিনের চোখে বাঙালী গৃহকর্তীর জীবন্ত চিত্র ভেসে ওঠে – “আকাশে যখন দিনান্তের ছায়া ঘনিয়ে ওঠে তখন প্রতিদিন এ তুলসীতলার কথা মনে হয় বলে তার চোখ হয়তাে ছলছল করে ওঠে।”
সুখ-দুঃখের মধ্য দিয়ে দিন কাটে তাদের। হিন্দুর গৃহের তুলসী গাছটিকেও যথাস্থানে রেখে তারা যখন সুখে থাকার কথা ভাবে তখনই আসে পুলিশ এবং তারা জানিয়ে দেয় দশ দিনের মধ্যে তাদের ঘর ছেড়ে যেতে হবে। সরকারি কাজকর্মে মানবিকতা, দয়ামায়া প্রভৃতির স্থান নেই – এর মাধ্যমে মানুষ আবার উদ্বাস্তু হল না – এই গল্পে তুলসী গাছটিরও আবার শুকনাে হয়ে যাওয়াও বড়াে কথা। আসলে তুলসী গাছের বেঁচে থাকার কাহিনি তাে মানুষেরই বেঁচে থাকার কাহিনি। কারণ সাম্প্রদায়িকতা আর দেশভাগ – হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে কাউকেই রেহাই দেয় নি। তাই গল্পের শেষ কয়েকটি ছত্রে একটা দীর্ঘশ্বাসের আবহ গড়ে তুলেছেন – “সেদিন থেকে গৃহকর্তীর ছলছল চোখের কথাও কারও মনে পড়েনি। কেন পড়েনি সে কথা তুলসী গাছের জানবার কথা নয়, মানুষেরই জানবার কথা। তাই বলা যায় এই ‘একটি তুলসী গাছ’-এর কাহিনিতে লেখক জীবনের মঙ্গলস্বপ্ন ও স্বপ্নবিনষ্টের প্রতীক হিসাবে গড়ে তুলেছেন তুলসী গাছটিকে, যার মাধ্যমে বার বার প্রতিফলিত হয়েছে সাধারণ মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার বেদনা।
See lessপারিব না (কালী প্রসন্ন ঘোষ ) bangla poem paribona
Nibedita Paul
কবি বলেছেন কোন কাজ না পারিলে বা অসম্ভব মনে হলে, প্রতক্ষ্য করা দরকার যে কাজটি বাকি পাঁচ জন মানুষ করতে সক্ষম তোমার ক্ষেত্রে কেন সেই কাজটি অসম্ভব।
কবি বলেছেন কোন কাজ না পারিলে বা অসম্ভব মনে হলে, প্রতক্ষ্য করা দরকার যে কাজটি বাকি পাঁচ জন মানুষ করতে সক্ষম তোমার ক্ষেত্রে কেন সেই কাজটি অসম্ভব।
See lessদেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপগুলি কি কি? Nabadurga Name in Bengali?
Nibedita Paul
দেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপ: মা দুর্গার নয়টি রূপের পৃথক পৃথক নামকরণ করেছেন পিতামহ ব্রহ্মা। নয়টি নামে নয়টি রূপভেদ ও ভাবভেদ । এঁরা পরমা মহাশক্তির নটি রূপ । এঁদের একসাথে “নবদুর্গা” নামে ডাকা হয়। ★ প্রথম হলেন শৈলপুত্রী ( যিনি হিমালয় দুহিতা অর্থাৎ গিরিনন্দিনী পার্বতী)। ★ দ্বিতীয় ব্রহ্মচারিণী ( ভগবান শিবকে সRead more
দেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপ:
মা দুর্গার নয়টি রূপের পৃথক পৃথক নামকরণ করেছেন পিতামহ ব্রহ্মা। নয়টি নামে নয়টি রূপভেদ ও ভাবভেদ । এঁরা পরমা মহাশক্তির নটি রূপ । এঁদের একসাথে “নবদুর্গা” নামে ডাকা হয়।
★ প্রথম হলেন শৈলপুত্রী ( যিনি হিমালয় দুহিতা অর্থাৎ গিরিনন্দিনী পার্বতী)।
★ দ্বিতীয় ব্রহ্মচারিণী ( ভগবান শিবকে স্বামী রূপে পাবার জন্য মা গৌরী কঠোর তপস্যা করেন- ইঁহা সেই রূপ)।
★ তৃতীয় চন্দ্রঘণ্টা ( ইনি প্রচণ্ড ধ্বনি দ্বারা ভক্তের জীবন থেকে ভৌতিক, জাগতিক নানা বাধা বিপত্তি দূর করেন)।
★ চতুর্থ কুস্মাণ্ডা ( ইঁনি চতুর্বর্গ ফল দায়িনী, তথা সৃষ্টির আদিতে যে মহাশক্তি ছিলেন ইঁনি সেই। ইঁনি হস্তে অমৃত কলস ধারন করেন, যা ব্রহ্মজ্ঞান প্রদানের প্রতীক)।
★ পঞ্চম হলেন স্কন্দমাতা ( ইঁনি শিবপুত্র কার্ত্তিকের জননী। কার্ত্তিকের এক নাম স্কন্দ। ইঁনি শিবজায়া উমা)।
★ ষষ্ঠ রূপে ইঁনি কাত্যায়নী ( মহিষাসুর কে বধ করেছেন যিনি, আসুরিক বাধা সঙ্কট দূরকারিনী। বৃন্দাবনের গোপ বালারা শ্রীকৃষ্ণ প্রাপ্তির জন্য এঁনারাই পূজা করেছিলেন)।
★ সপ্তম রূপে কালরাত্রি ( সৃষ্টির প্রারম্ভে যখন কিছুই ছিলো না। তখন ইঁনি জেগে ছিলেন। এঁনারাই যোগনিদ্রার প্রভাবে ভগবান বিষ্ণু যোগনিদ্রায় ছিলেন। মধু কৈটভের দ্বারা আক্রান্ত হলে প্রজাপতি ব্রহ্মা সেই যোগনিদ্রা রূপিনী যোগমায়ার স্তবে এঁই দেবীর নাম উচ্চারন করেছিলেন)।
★ অষ্টম রূপে হলেন মহাগৌরী ( ইঁনি ভগবান শিবের মাহেশী শক্তি মহেশ্বরী তথা মহাগৌরী। ইনি শিবানী আবার রুদ্রানী আবার হরের গৌরী)।
★ নবম রূপে ইঁনি সিদ্ধিদাত্রী ( ইঁনি সকল প্রকার সিদ্ধবিদ্যার অধীশ্বরী , ভগবান শিবের সাথে অর্ধনারীশ্বর রূপে বিরাজিতা। চতুর্বর্গ ফল প্রদায়িনী)। ইঁহারাই একত্রে নবদুর্গা নামে খ্যাতা।
See lessএকটি জৈব কীটনাশকের নাম কি
Nibedita Paul
কীটনাশক এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ যা কীটপতঙ্গকে মেরে ফেলতে সহায়তা করে। রাসায়নিক পদার্থের সাহায্যে প্রস্তুতকৃত কীটনাশক মূলতঃ পোকা-মাকড় নির্মূলের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। জৈব কীটনাশক দুই প্রকারের হয়। উদ্ভিজ্জ বা উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত কীটনাশক যেমন - রোটেনন, নিকোটিন, পাইথ্রিন কৃত্রিম রাসায়নিক - কৃত্রিমRead more
কীটনাশক এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ যা কীটপতঙ্গকে মেরে ফেলতে সহায়তা করে। রাসায়নিক পদার্থের সাহায্যে প্রস্তুতকৃত কীটনাশক মূলতঃ পোকা-মাকড় নির্মূলের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। জৈব কীটনাশক দুই প্রকারের হয়।
জৈব ক্লোরিন – ডিডিটি, গ্যামাক্সিন
জৈব ফসফেট – ম্যালানিয়ন, প্যারাথিন
কার্বামেট – সেভিন, ডায়াজিনন
See less