শঙ্খ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্য-বলাকা তোমার শঙ্খ ধুলায় প'ড়ে, কেমন করে সইব। বাতাস আলো গেল মরে এ কী রে দুর্দৈব। লড়বি কে আয় ধ্বজা বেয়ে, গান আছে যার ওঠ-না গেয়ে, চলবি যারা চল্ রে ধেয়ে, আয় না রে নিঃশঙ্ক। ধুলয় পড়ে রইল চেয়ে ওই যে অভয় শঙ্খ। চলেছিলাম পূজার ঘরে সাজিয়ে ফুলের অর্ঘ্য। খুঁজি সারাদিনের পরে কোথায় শান্তRead more
শঙ্খ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্য-বলাকা
তোমার শঙ্খ ধুলায় প’ড়ে,
কেমন করে সইব।
বাতাস আলো গেল মরে
এ কী রে দুর্দৈব।
লড়বি কে আয় ধ্বজা বেয়ে,
গান আছে যার ওঠ-না গেয়ে,
চলবি যারা চল্ রে ধেয়ে,
আয় না রে নিঃশঙ্ক।
ধুলয় পড়ে রইল চেয়ে
ওই যে অভয় শঙ্খ।
চলেছিলাম পূজার ঘরে
সাজিয়ে ফুলের অর্ঘ্য।
খুঁজি সারাদিনের পরে
কোথায় শান্তি-শর্গ।
এবার আমার হৃদয়-ক্ষত
ভেবেছিলাম হবে গত,
ধুয়ে মলিন চিহ্ন যত
হব নিষ্কলঙ্ক।
পথে দেখি ধুলায় নত
তোমার মহাশঙ্খ।
আরতি-দীপ এই কি জ্বালা।
এই কি আমার সন্ধ্যা।
গাঁথার রক্তজবার মালা?
হায় রজনীগন্ধা।
ভেবেছিলাম যোঝাযুঝি
মিটিয়ে পাব বিরাম খুঁজি,
চুকিয়ে দিয়ে ঋণের পুঁজি,
লব তোমার অঙ্ক।
হেনকালে ডাকল বুঝি
নীরব তব শঙ্খ।
যৌবনেরি পরশমণি
করাও তবে স্পর্শ।
দীপক-তানে উঠুক ধ্বনি
দীপ্ত প্রাণের হর্ষ।
নিশার বক্ষ বিদায় করে
উদ্বোধনে গগন ভরে
অন্ধ দিকে দিগন্তরে
জাগাও-না আতঙ্ক।
দুই হাতে আজ তুলব ধরে
তোমার জয়শঙ্খ।
জানি জানি তন্দ্রা মম
রইবে না আর চক্ষে।
জানি শ্রাবণধারা-সম
বাণ বাজিয়ে বক্ষে।
কেউ বা ছুটে আসবে পাশে,
কাঁদবে বা কেউ দীর্ঘশ্বাসে,
দুঃস্বপনে কাঁপবে ত্রাসে
সুপ্তির পর্যঙ্ক।
বাজবে যে আজ মহোল্লাসে
তোমার মহাশঙ্খ।
তোমার কাছে আরাম চেয়ে
পেলাম শুধু লজ্জা।
এবার সকল অঙ্গ ছেয়ে
পরাও রণসজ্জা।
ব্যাঘাত আসুক নব নব,
আঘাত খেয়ে অটল রব,
বক্ষে আমার দুঃখে তব
বাজবে জয়ডঙ্ক।
দেব সকল শক্তি, লব
অভয় তব শঙ্খ।
English transliteration:
Sankha
Rabindranath Tagore
Tumar sonkho dulay pode,
Kamon kore sob’i.
Batas aalo geko more
A ki re durdobe.
Lorbi k aay dobja beye.
Gaan aache jar ott-na gaye,
Cholbi jara chal re deye,
Aay na re Ni-sonkho.
Dulay pode roilo ceye
Oi je ooboy sonkho.
Colechilam pujar ghore
Sajiye fuler orgho
Khuji saradiner pore
Kutay santi-sorgo
Ebar amra hridoy-khoto
Vebechilam hobe goto,
Duye molin chinno joto
Hobo nis-kolonko.
Pothe deki dulay noto
Tumar mohasonkho.
Aroti-dep ei ki jala.
Ei ki amar sondha.
Gathar rokthojobar mala?
Hay rojonigondha.
Vebechilam juzajuzi
Mitiye pabo biram khuji,
Chukiye diye riner puji,
Lobo tumar onko.
Henokale dakbo buji
Nirob tobo sonko.
Jouboneri porosmoni
kora’o tobe sporso.
Dipok-tane utok dhoni
Deep praner horsho
Nishar bokko biday kore
Uddbodone gogon vore
Ondo dike digontore
Jagaw-na aatonko.
Dui hathe aaj tulbo dhore
Tumar joysonko
Jani jani tondra momo
Roibo na aar chokke.
Jani srabondara-somo
Bani bajiye bokke.
Keu ba chute aasbe pashe,
Kadbe ba keu dirgosashe,
Duhsopone kapbe trashe
Suptir porjonko.
Bajbe je aaj mohollashe
Tumar mohasonkho.
Tumar kache aram cheye
Pelam sudu lojja.
Ebar sokol onge cheye
Poraw ronosojja.
Beyaghat aasuk nobo nob,
Aaghat kheye otol robo,
Bokke amar dukhhe tobo
Bajbe joysonko.
Debo sokol sokti, lobo
Oboy tobo sonkho
পরশ-পাথর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থ : সোনার তরী খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর। মাথায় বৃহৎ জটা ধূলায় কাদায় কটা, মলিন ছায়ার মতো ক্ষীণ কলেবর। ওষ্ঠে অধরেতে চাপি অন্তরের দ্বার ঝাঁপি রাত্রিদিন তীব্র জ্বালা জ্বেলে রাখে চোখে। দুটো নেত্র সদা যেন নিশার খদ্যোত-হেন উড়ে উড়ে খোঁজে কারে নিজের আলোকে। নাহি যারRead more
পরশ-পাথর
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ : সোনার তরী
খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর।
মাথায় বৃহৎ জটা ধূলায় কাদায় কটা,
মলিন ছায়ার মতো ক্ষীণ কলেবর।
ওষ্ঠে অধরেতে চাপি অন্তরের দ্বার ঝাঁপি
রাত্রিদিন তীব্র জ্বালা জ্বেলে রাখে চোখে।
দুটো নেত্র সদা যেন নিশার খদ্যোত-হেন
উড়ে উড়ে খোঁজে কারে নিজের আলোকে।
নাহি যার চালচুলা গায়ে মাখে ছাইধুলা
কটিতে জড়ানো শুধু ধূসর কৌপীন,
ডেকে কথা কয় তারে কেহ নাই এ সংসারে
পথের ভিখারি হতে আরো দীনহীন,
তার এত অভিমান, সোনারুপা তুচ্ছজ্ঞান,
রাজসম্পদের লাগি নহে সে কাতর,
দশা দেখে হাসি পায় আর কিছু নাহি চায়
একেবারে পেতে চায় পরশপাথর!
সম্মুখে গরজে সিন্ধু অগাধ অপার।
তরঙ্গে তরঙ্গ উঠি হেসে হল কুটিকুটি
সৃষ্টিছাড়া পাগলের দেখিয়া ব্যাপার।
আকাশ রয়েছে চাহি, নয়নে নিমেষ নাহি,
হু হু করে সমীরণ ছুটেছে অবাধ।
সূর্য ওঠে প্রাতঃকালে পূর্ব গগনের ভালে,
সন্ধ্যাবেলা ধীরে ধীরে উঠে আসে চাঁদ।
জলরাশি অবিরল করিতেছে কলকল,
অতল রহস্য যেন চাহে বলিবারে।
কাম্য ধন আছে কোথা জানে যেন সব কথা,
সে-ভাষা যে বোঝে সেই খুঁজে নিতে পারে।
কিছুতে ভ্রূক্ষেপ নাহি, মহা গাথা গান গাহি
সমুদ্র আপনি শুনে আপনার স্বর।
কেহ যায়, কেহ আসে, কেহ কাঁদে, কেহ হাসে,
খ্যাপা তীরে খুঁজে ফিরে পরশ-পাথর
একদিন, বহুপূর্বে, আছে ইতিহাস–
নিকষে সোনার রেখা সবে যেন দিল দেখা–
আকাশে প্রথম সৃষ্টি পাইল প্রকাশ।
মিলি যত সুরাসুর কৌতূহলে ভরপুর
এসেছিল পা টিপিয়া এই সিন্ধুতীরে।
অতলের পানে চাহি নয়নে নিমেষ নাহি
নীরবে দাঁড়ায়ে ছিল স্থির নতশিরে।
বহুকাল স্তব্ধ থাকি শুনেছিল মুদে আঁখি
এই মহাসমুদ্রের গীতি চিরন্তন;
তার পরে কৌতূহলে ঝাঁপায়ে অগাধ জলে
করেছিল এ অনন্ত রহস্য মন্থন।
বহুকাল দুঃখ সেবি নিরখিল, লক্ষ্মীদেবী
উদিলা জগৎ-মাঝে অতুল সুন্দর।
সেই সমুদ্রের তীরে শীর্ণ দেহে জীর্ণ চীরে
খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর।
এতদিনে বুঝি তার ঘুচে গেছে আশ।
খুঁজে খুঁজে ফিরে তবু বিশ্রাম না জানে কভু,
আশা গেছে, যায় নাই খোঁজার অভ্যাস।
বিরহী বিহঙ্গ ডাকে সারা নিশি তরুশাখে,
যারে ডাকে তার দেখা পায় না অভাগা।
তবু ডাকে সারাদিন আশাহীন শ্রান্তিহীন,
একমাত্র কাজ তার ডেকে ডেকে জাগা।
আর-সব কাজ ভুলি আকাশে তরঙ্গ তুলি
সমুদ্র না জানি কারে চাহে অবিরত।
যত করে হায় হায় কোনোকালে নাহি পায়,
তবু শূন্যে তোলে বাহু, ওই তার ব্রত।
কারে চাহি ব্যোমতলে গ্রহতারা লয়ে চলে,
অনন্ত সাধনা করে বিশ্বচরাচর।
সেইমতো সিন্ধুতটে ধূলিমাথা দীর্ঘজটে
খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর।
একদা শুধাল তারে গ্রামবাসী ছেলে,
“সন্ন্যাসীঠাকুর, এ কী, কাঁকালে ও কী ও দেখি,
সোনার শিকল তুমি কোথা হতে পেলে।’
সন্ন্যাসী চমকি ওঠে শিকল সোনার বটে,
লোহা সে হয়েছে সোনা জানে না কখন।
একি কাণ্ড চমৎকার, তুলে দেখে বার বার,
আঁখি কচালিয়া দেখে এ নহে স্বপন।
কপালে হানিয়া কর বসে পড়ে ভূমি-‘পর,
নিজেরে করিতে চাহে নির্দয় লাঞ্ছনা;
পাগলের মতো চায়– কোথা গেল, হায় হায়,
ধরা দিয়ে পলাইল সফল বাঞ্ছনা।
কেবল অভ্যাসমত নুড়ি কুড়াইত কত,
ঠন্ ক’রে ঠেকাইত শিকলের ‘পর,
চেয়ে দেখিত না, নুড়ি দূরে ফেলে দিত ছুঁড়ি,
কখন ফেলেছে ছুঁড়ে পরশ-পাথর।
তখন যেতেছে অস্তে মলিন তপন।
আকাশ সোনার বর্ণ, সমুদ্র গলিত স্বর্ণ,
পশ্চিম দিগ্বধূ দেখে সোনার স্বপন।
সন্ন্যাসী আবার ধীরে পূর্বপথে যায় ফিরে
খুঁজিতে নূতন ক’রে হারানো রতন।
সে শকতি নাহি আর নুয়ে পড়ে দেহভার
অন্তর লুটায় ছিন্ন তরুর মতন।
পুরাতন দীর্ঘ পথ পড়ে আছে মৃতবৎ
হেথা হতে কত দূর নাহি তার শেষ।
দিক হতে দিগন্তরে মরুবালি ধূ ধূ করে,
আসন্ন রজনী-ছায়ে ম্লান সর্বদেশ।
অর্ধেক জীবন খুঁজি কোন্ ক্ষণে চক্ষু বুজি
স্পর্শ লভেছিল যার এক পল ভর,
বাকি অর্ধ ভগ্ন প্রাণ আবার করিছে দান
ফিরিয়া খুঁজিতে সেই পরশ-পাথর
English Transliteration:
Porosh pathor
Rabindranath Tagore
Khapa khuje khuje fire porosh pathor
Mathay brihot jota dhulay kaday kota,
Molin chayar moto khin kolebor.
Oshte Odhorete chapi ontorer daar jhapi
Ratridin tibro jala jele rakhe chokhe.
Duto netro shoda jeno nishar khodyet heno
Ure Ure khoje kare nijer aloke
Nahi njar chalchula gaye makhe chaidhula
Kotite jorano sudhu dushor koupin
deke kotha koy tare keho nai ei sonshare
Pother vikhari hote aaro dinhin,
Tar eto oviman, sonarupa tucchogyan,
Rajshompoder lagi nohe she kator,
Dosha dekhe hashi pay aar kichu nahi chay
Ekebare pete chay poroshpathar
Shommukhe goroje shindhu ogadh opar.
tarange taranga uthi heshe holo kutikuti
Sristichara pagoler dekia byapar.
Akashe royeche chahi, nayane nimesh nahi,
Hu Hu kore shomiron chutche obad.
Surja uthe pratohkale purba gogoner bhale,
Shondhya bela dhire dhire uthe aashe chada.
jolrashi obirol Koriteche kolkol,
Otol rohoshyo jeno chahe bolibare.
kammyo dhan aache kutha jane jeno shob kotha
She bhasha je buje shei khuje nite pare
Kichute bhrukkhep nahi, Moha gatha gaan gahi
Shamudra aaponi shune aapnar shor.
Keho jay, keho aashe, keho kade, keho hashe
Khapa khuje khuje fire porosh pathor
Ekdin bahupurbe, aache itihash-
Nikoshe shonar rekha shobe jeno dilo dekha-
Akashe prothom sristi pailo prokash.
Mili jata shura shur koutohole bharpur
Eshechilo pa tipiya ei shindutire.
Otoler pane chahi nayane nimesh nahi
Nirobe darayechilo stir natoshire.
Bahukal shabdo thaki shunechilo mude aakhi
Ei mohashamudrer giti chironton
tar pore koutuhole japaye ogad jole
Korechilo e ononto rahoshyo monthon.
bahukal dukkho shebi Nirokhilo, lakkhidebi
Udila jagath-majhe otul sundar.
Shei shamudrer tire shirno dehe jirno chire
Khapa khuje khuje fire porosh pathor
Etodine bujhi tar guche geche aasha.
Khuje khuje fire tobo bisram na jane kabhu
Asha geche jay nai khujar obhyash
Birohi bihongo dake shara nishi tarushakhe,
Jare dake tar deka pay na ovaga.
tabu dake sharadin aashahin srantihin
Ekmatro kaj tar deke deke jaga
Aar shob kaj bhuli akashe taranga tuli
Shamudra na jani kare chahe obiroto
Jata kore hay hay konokale nahi pay,
Tabu shunnen tule bahu, oi tar broto.
kare chahi byomtole grohotara loye chole
Ononto shadona kore bisshochorachor
Sheimoto shindutote dhulimakha dhirgojote
Khapa khuje khuje fire porosh pathor
Ekoda shudalo tare grambashi chele,
Shonnashithakur, E ki, kakale o ki o deki,
Sonar shikol tumi kutha hote pele.
Shonnashi chomki othe shikol sonar bote,
Loha she hoyeche sona jane na kakhan.
Eki kando chomotkar, tule dekhe bar bar,
Aakhi kochaliya dekhe e nohe shopon.
Kopale hania kor boshe pore bhumi por,
nijer korite chahe nirdoy lanchona;
pagoler moto chay- kotha gelo, hay hay,
Dhora diye polailo shofol banchona.
kebol obhyashmoto nuri kuraito koto,
Than kore thekaito shikoloer por,
Cheye dekito na, nuri dure fele dito churi,
kakhan feleche chure porosh pathar
Takhan jeteche oste molin tapan.
Akash sonar borno, samudra golito shorno,
poshim digdu sonar shopon.
Shonnashi abar dhire purbapothe jay fire
Khujite natun kore harano ratan.
She shokti nahi aar nuye pore deho bhar
Antar lutay chinno tarur moton
puratan dhirgo poth pore aaache mritobot
Hetha hote koto dur nahi tar shesh.
Dik hote digontore marubali dhu dhu kore,
Aashonno rajani-chaye mlan sorbodesh.
Ordek jibon khuji kon khone chakkhu buji
sparsho lovechilo jar ek pal bhar
baki ordho vogno pran abar koriche daan
Firiya khujite shei porosh pathar.
তুমি কোন কাননের ফুল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাগ: মিশ্র পিলু-বারোয়াঁ তাল: দাদরা রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1886 স্বরলিপিকার: জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর তুমি কোন কাননের ফুল কোন গগণের তারা তোমায় কোথায় দেখেছি যেন কোন স্বপনের পাড়া কবে তুমি গেয়েছিলে আঁখির পানে চেয়েছিলে ভুলে গিয়েছি.. শুধু মনের মধ্যে জেগে আছে ওই নয়নের তারাRead more
Which garden do you belong O’ flower?
Which sky do you belong O’ star?
Where did I saw you!
May be in my world of fantasy.
When did you sing last
Staring at my eyes,
I don’t remember .
Only thing left in my heart
Is the sparkle of your eyes .
You don’t speak at all
Just offer a glimpse on your passage .
You melt away in this moonlight
while smiling.
I gaze at the moon
And keep wondering while sleeping .
Let two stars, resembling your eyes
May downpour streams of rays.
Which garden do you belong O’ flower?
Which sky do you belong O’ star?
Where did I saw you!
May be in my world of fantasy.
Which garden do you belong O’ flower?
Which sky do you belong O’ star?
English Transliteration:
Tumi Kon kanoner ful
Kon Gogoner tara
tomay kuthay dekeschi
Jeno kuno shopner para
Kobe tumi Geyechile
Aakir pane cheyechile
Bhule giyechi
Shudu moner moddhe jege aache
Oi nayaner tara
Tumi Kon kanoner ful
Kon Gogoner tara
XD: ➢ ইহা ইন্টারনেটের দুনিয়ায় বহুল প্রচলিত একটি শব্দ বা এসেছে LOL (laugh out loud বা খুব বেশি হাস্যকর) থেকে। ➢ ইহা একটি ইমোটিকন, যেখানে X অক্ষর দ্বারা চোখ কে বুঝানো হয়েছে এবং D অক্ষর দ্বারা উম্মুক্ত মুখ বুঝানো হয়েছে। ➢ আমরা যখন হাসি তখন আমাদের চোখদ্বয়ে ভাব জন্মে এবং মুখ উম্মুক্ত হয় । তাই এই হাসির ভাRead more
XD:
➢ ইহা ইন্টারনেটের দুনিয়ায় বহুল প্রচলিত একটি শব্দ বা এসেছে LOL (laugh out loud বা খুব বেশি হাস্যকর) থেকে।
➢ ইহা একটি ইমোটিকন, যেখানে X অক্ষর দ্বারা চোখ কে বুঝানো হয়েছে এবং D অক্ষর দ্বারা উম্মুক্ত মুখ বুঝানো হয়েছে।
➢ আমরা যখন হাসি তখন আমাদের চোখদ্বয়ে ভাব জন্মে এবং মুখ উম্মুক্ত হয় । তাই এই হাসির ভাবটাকে XD সাংকেতিক চিন্ন দ্বারা বুঝানো হয়ে থাকে।
➢ ইহা chat করার সময় হাহা বা LOL এর পরিবর্তে ব্যাবহার হয়ে থাকে।
লুকোচুরি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমি যদি দুষ্টুমি ক’রে চাঁপার গাছে চাঁপা হয়ে ফুটি, ভোরের বেলা মা গো, ডালের ‘পরে কচি পাতায় করি লুটোপুটি, তবে তুমি আমার কাছে হারো, তখন কি মা চিনতে আমায় পারো। তুমি ডাক, “খোকা কোথায় ওরে।’ আমি শুধু হাসি চুপটি করে। যখন তুমি থাকবে যে কাজ নিয়ে সবই আমি দেখব নয়ন মেলে। স্নানটি করে চাঁRead more
লুকোচুরি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আমি যদি দুষ্টুমি ক’রে
চাঁপার গাছে চাঁপা হয়ে ফুটি,
ভোরের বেলা মা গো, ডালের ‘পরে
কচি পাতায় করি লুটোপুটি,
তবে তুমি আমার কাছে হারো,
তখন কি মা চিনতে আমায় পারো।
তুমি ডাক, “খোকা কোথায় ওরে।’
আমি শুধু হাসি চুপটি করে।
যখন তুমি থাকবে যে কাজ নিয়ে
সবই আমি দেখব নয়ন মেলে।
স্নানটি করে চাঁপার তলা দিয়ে
আসবে তুমি পিঠেতে চুল ফেলে;
এখান দিয়ে পুজোর ঘরে যাবে,
দূরের থেকে ফুলের গন্ধ পাবে —
তখন তুমি বুঝতে পারবে না সে
তোমার খোকার গায়ের গন্ধ আসে।
দুপুর বেলা মহাভারত-হাতে
বসবে তুমি সবার খাওয়া হলে,
গাছের ছায়া ঘরের জানালাতে
পড়বে এসে তোমার পিঠে কোলে,
আমি আমার ছোট্ট ছায়াখানি
দোলাব তোর বইয়ের ‘পরে আনি —
তখন তুমি বুঝতে পারবে না সে
তোমার চোখে খোকার ছায়া ভাসে।
সন্ধেবেলায় প্রদীপখানি জ্বেলে
যখন তুমি যাবে গোয়ালঘরে
তখন আমি ফুলের খেলা খেলে
টুপ্ করে মা, পড়ব ভুঁয়ে ঝরে।
আবার আমি তোমার খোকা হব,
“গল্প বলো’ তোমায় গিয়ে কব।
তুমি বলবে, “দুষ্টু, ছিলি কোথা।’
আমি বলব, “বলব না সে কথা ।
Ami jodi dushtomi kore
Chapar gache chapa hoye futi
Bhorer bela ma go, daler pore
Kochi patay kori lotoputi,
Tobe tumi amar kache haro,
Takhan ki maa chinte amay paro
Tumi dako, ‘kokha kothay ore.’
Ami shudhu hashi chupti kore.
Jakhan tumi thakbe je kaj niye
Shoboi ami dekhbo nayan mele
snanti kore chapar tola diye
Ashbe tumi pithe te chul fele
Ekhan diye pujar ghore jabe
Durer theke fuler gando pabe
Takhan tumi bujte parbe na she
Tumar khukar gayer gandha aashe .
Dupur bela mohabharat hate
Boshbe tumi shobar khawa hole,
Gacher chaya ghorer janalate
Porbe eshe tumar pithe kule,
Ami amar chutto chayaklhani
Dolabo tor boiyer “pore ani-
Takhan tumi bujhte parbe na she
Tumar khukar gayer gandha aashe.
Shondhabelay prodikhani jele
Jakhan tumi jabe guwalghore
Takhan ami fuler khela khele
Tup kore maa, porbo bhuye jhore
Abar ami tumar khokha hobo,
‘Golpo bolo’ Tumay giye kobo.
Tumi bolbe, ‘Dustu chele kotha.’
Ami bolbo, ‘bolbo na she kotha.’
আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভূমিকা : আসাম প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন। তার দিকে দিকে নানা রাঙা পাখির কাকলি, নানা রাঙা ফুলের গন্ধবাহার। প্রকৃতি দেবী যেন নিজহাতে তার সমস্ত সৌন্দর্য ভাণ্ডার এই আসাম ভূমিতে উজাড় করে দিয়েছেন। এ রাজ্য পাহাড়-পর্বত বেষ্টিত একটি অতি মনােরম রাজ্য। অনেকের মতে সৌন্দরRead more
আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
ভূমিকা : আসাম প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন। তার দিকে দিকে নানা রাঙা পাখির কাকলি, নানা রাঙা ফুলের গন্ধবাহার। প্রকৃতি দেবী যেন নিজহাতে তার সমস্ত সৌন্দর্য ভাণ্ডার এই আসাম ভূমিতে উজাড় করে দিয়েছেন। এ রাজ্য পাহাড়-পর্বত বেষ্টিত একটি অতি মনােরম রাজ্য। অনেকের মতে সৌন্দর্যে ‘সম’ বা সমান বা সমকক্ষ নেই বলে এই দেশের নাম অসম। আর অসম হতেই এই দেশের নাম হয়েছে আসাম। আসামের নিসর্গ প্রকৃতি নাগরিক জীবন যন্ত্রণায় ক্লান্ত-ক্লিষ্ট মানুষকে অপার প্রশান্তি এনে দেয়।
প্রকৃতি ভেদে আসামের সৌন্দর্য : ভারতের উত্তর পূর্ব প্রান্তের রাজ্যটি যেন কোন দেবকন্যার কণ্ঠমালা থেকে খসে-পড়া কারুকার্য খচিত একখণ্ড পান্না। সবুজ-শ্যামলে রজত-ঔজ্জ্বল্যে নিসর্গ সুন্দরী সত্যই অপরূপা। রাজ্যটির উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা ও তার শাখা-প্রশাখা, ছােট-বড় পাহাড়-পর্বত যেন শিরের শােভা মুকুট রাজি। পুর্বদিকে পাতকোই ও দক্ষিণে মেঘালয়ের পর্বতমালা নীলাভ মেঘসজ্জার মতাে শােভা পাচ্ছে। শ্যামল বনরাজি নীলার মেখলা পরিহিতা আসাম যেন এক বনমালা।
আসামের মধ্যাংশ কাৰ্বিমালভূমি, মেঘালয় মালভূমি ও দাক্ষিণাত্য মালভূমির অংশ বিশেষ। এই অঞ্চলটি অতি প্রাচীন ও রূপান্তরিত আগ্নেয় শিলা দ্বারা গঠিত। কার্বি মালভূমিকে স্পর্শ করে দক্ষিণ পর্যন্ত রয়েছে উত্তর কাছাড়ের পাহাড়ী অঞ্চল। এই পাহাড় সমূহ স্তরীভূত শিলার ঢেউ খেলানাে পাহাড়। কবির ভাষায় ব্রহ্মপুত্র নদ তার কণ্ঠহার আর বরাক নদী হলাে কটি দেশের কিংকিনী। এই নদী দুটির অসংখ্য উপনদী, শাখানদী নৃত্য পরা অপ্সরার মতাে কলতান তুলে বয়ে চলেছে। শ্যামল-গহন বনানীর রহস্যময়তা ও স্নিগ্ধতা সৌন্দর্য-পিয়াসী মানুষকে পত্রমর্মরে আমন্ত্রণ জানায়। নদীর বুকে সাদা পাল তুলে নৌকা চলে কোন অচিনপরে, মাঝির কণ্ঠে ভাটিয়ালি গানের উদাসী সুর। তাছাড়া নদীগুলি রাজ্যটিকে কৃষির উপযুক্ত ও উর্বর করে তুলেছে। সত্যই সুজলা, সুফলা শস্য-শ্যামলা ব্ৰহ্মপুত্র-বরাকের এই পূণ্য তীরভূমিতে যেন নয়নদুটি শ্যামরূপে বন্দী হয়ে রসলীন ভ্রমরের ন্যায় নিশ্চল হয়ে যায়।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নানা উপাদান : আসাম রাজ্যটির ৩৫ শতাংশ স্থান জুড়ে রয়েছে বন-জঙ্গল ও গভীর অরণ্য। এসব জঙ্গলে হলং, বনচাম, শাল, সেগুন, সুন্দী, সােনারু প্রভৃতি মূল্যবান কাঠ ও গাছ রয়েছে। স্থানে স্থানে রয়েছে অসংখ্য খাল, বিল ও তৃণ প্রান্তর। নাম না জানা জলাশয়ের বুকে বিকশিত পদ্ম-শালুকের বর্ণবাহার। ইতস্ততঃ ছড়ানাে পত্রপুঞ্জের মতাে সবুজ বন। মাথার উপরে উন্মুক্ত আকাশ, আকাশে চন্দ্র-সূর্যের উদয় ও অস্ত যাওয়ার শােভা, মেঘমালার স্বচ্ছন্দ বিচরণ। অন্ধকার রাত্রে ঝােপে-ঝাড়ে জ্বলে জোনাকির দীপ।
পশুপাখির সৌন্দর্য বর্ধন : আসামের বনজঙ্গলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ধিত করে প্রকৃতির ক্রোড়ে লালিত জীবজন্তুর স্বচ্ছন্দ বিহার। এগুলির মধ্যে হাতী, গণ্ডার, বন্য মহিষ, বাঘ, ভালুক, হরিণ, বানর প্রভৃতি উল্লেখযােগ্য জন্তু। আসামের কাজিরাঙ্গার একশিং বিশিষ্ট গণ্ডার পৃথিবী বিখ্যাত। নানা প্রকার দুর্লভ পাখিও আসামে পাওয়া যায়। যার মধ্যে আছে, ময়না, টিয়া, তােতা, শকুন ও ধনেশ প্রভৃতি পাখি। বনফুল ঘিরে ভ্রমরের গুঞ্জন, চলমান পাহাড়ের মতাে হাতির পাল ইত্যাদি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেরই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
প্রকৃতি ও মানুষ : নির্জন প্রকৃতির একটি স্বতন্ত্র সৌন্দর্য অবশ্যই আছে। কিন্তু মানুষের সুচিন্তিত সুপরিকল্পিত হস্তস্পর্শে সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সুন্দরতর হয়ে উঠে। এভাবে হস্তস্পর্শে তৈরি আসামের চা বাগানগুলি অপূর্ব শােভার আধার। পূর্ব আসামের প্রায় সমস্ত অঞ্চল জুড়ে চায়ের ঘন সবুজ ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’ নিসর্গ শােভাতে অপরিমেয় সৌন্দর্যের সঞ্চার করে। টিলার উপর নির্মিত ঘর-বাড়িতে বৈদ্যুতিক আলােক মালা যেন নিজ দীপাবলীর আলােক সজ্জা। সবুজ তরুলতা বেষ্টিত ছায়া সুনিবিড় গ্রামগুলিও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অঙ্গীভূত।
ঋতুভেদে আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য : ঋতুর পর ঋতু একে একে এখানে এসে নিজেকে সৌন্দর্য শােভায় মেলে ধরে। বিভিন্ন ঋতুতে প্রকৃতি দেবী বিভিন্ন সাজে সজ্জিতা হন। গ্রীষ্মে লাল, হলুদ, শিরীষ ফুলে আসামের দেহ ঢাকে, বর্ষায় কদম ফুল ফোটে আর পাহাড়ী নদীর রূপালী ধারা চঞ্চল নৃত্যে নেমে আসে ঝরঝর ঝমঝম্ শব্দে। শরতের আগমনে ঝিলে ঝিলে প্রস্ফুটিত হয় কমল। রাজহাঁসেরা ঝাকে ঝাকে উড়ে চলে মানস সরােবরের দিকে। হেমন্তের আগমনে উপত্যকায় ধানক্ষেতের হরিৎ শােভা সত্যই মনােমুগ্ধ কর বাতাসের দোলা খেয়ে তারা সমুদ্রের ঢেউয়ের মতাে উচু-নিচু হতে থাকে। শীতে লাের্ধ ও কাশ জাতীয় শুভ্র ফুলের অমলিন হাসিতে সমস্ত পাহাড়, বন, আকাশ প্রভৃতি শ্বেত শােভায় সজ্জিত হয়। এই নয়নাভিরাম শােভা বাস্তবিকই বিচিত্র। আর বসন্তকালের তাে কথাই নেই। কোকিলের সুমধুর কুজন যেন প্রকৃতি দেবীর নবরূপ ও রাগ গ্রহণের কথাই ঘােষণা করে।
উপসংহার : প্রাচীনকালে প্রবাদ ছিল কামরূপ অর্থাৎ অসম ইন্দ্রজালের মাজ, এখানে প্রকৃতি দেবীর অভিনব আকর্ষণ। আকুল করা সৌন্দর্যে নারী-পুরুষ পঞ্চলেই উন্মাদ হয়ে পড়ে। আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অভিভূত হয়ে জাতির জনক হাত্মা গান্ধী বলেছিলেন মনমােহন আসামের অধিবাসী সকলেই কবিতা রচনা করতে সেলু।’ অর্থাৎ কাব্য সুষমা বিজড়িত আসামের প্রকৃতি ও তার বিভিন্ন ঋতুর সৌন্দর্যরাশি অবর্ণনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আসাম সত্যই অ-সম অর্থাৎ অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
অসমের বন্যা ও তার প্রতিকার ভূমিকা : জলের অপর নাম জীবন। জল ছাড়া আমরা বাঁচতে পারি না। অথচ প্রকৃতির এমনই পরিহাস যে এই জলই আবার অপ্রত্যাশিতভাবে মানুষের জীবনে ধ্বংসের কারণ হয়ে দাড়ায়। সহস্র নাগিনীর মতাে ফণাতুলে ধেয়ে আসে জলের তরঙ্গমালা। তখনই বােঝা যায় আজও মানুষ প্রাকৃতিক শক্তির কাছে কত অসহায়। বন্যাRead more
অসমের বন্যা ও তার প্রতিকার
ভূমিকা : জলের অপর নাম জীবন। জল ছাড়া আমরা বাঁচতে পারি না। অথচ প্রকৃতির এমনই পরিহাস যে এই জলই আবার অপ্রত্যাশিতভাবে মানুষের জীবনে ধ্বংসের কারণ হয়ে দাড়ায়। সহস্র নাগিনীর মতাে ফণাতুলে ধেয়ে আসে জলের তরঙ্গমালা। তখনই বােঝা যায় আজও মানুষ প্রাকৃতিক শক্তির কাছে কত অসহায়। বন্যা এমনি এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়। ভারতমাতার বড় আদরের কন্যা রূপ লাবণ্যময়ী এই অসমের বন্যা জনিত দুঃখ প্রতি বছরের এক অভিশাপ।
আসামের বন্যার প্রাকৃতিক কারণ : আসাম নদীমাতৃক দেশ। এ দেশ ভারতবর্ষের মধ্যে চতুর্দিকে পাহাড়-পর্বত বেষ্টিত একটি রাজ্য। এ রাজ্যে বন্যার প্রধান কারণ হলাে মহাবাহু দীর্ঘতম নদ ব্রহ্মপুত্র। একদা চীনদেশের হােয়াংহাে নদ যেমন ছিল চিনের দুঃখ, আসামের ব্রহ্মপুত্র নদের বেলায়ও আজকাল এরূপ বলা যায়। ১৯৫০ – সনের ভূমিকম্পের পর থেকে আসামে প্রায় প্রতি বছর প্রবল বন্যার আবির্ভাব ঘটে। বােধ হয় ভূমিকম্পের ফলে নদীখাত উপরে উঠে আসায় নদীগুলির জলধারণ ক্ষমতা কমে গেছে, তাই অল্প জল জমলেও তীর ভূমি প্লাবিত হয়।
ব্রহ্মপুত্র নদ আসামের উত্তর পূর্ব সীমান্ত বর্তমান অরুণাচল প্রদেশ দিয়ে লােহিত নামে আসামে প্রবেশ করেছে। উত্তর পূর্ব সীমান্তের পর্বত শ্রেণিতে প্রচুর পরিমাণে তুষার সঞ্চিত হয়, বৃষ্টির জলের সঙ্গে গলিত এ তুষার স্থপ আসামের নদীগুলির সাথে মিশ্রিত হয়। আবার মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আসামে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও অধিক।অত্যধিক বৃষ্টিপাতের ফলে নদ-নদীগুলি ফুলে ফেঁপে উভয় তীর প্লাবিত করে সৃষ্টি করে বন্যার।
আসামে বন্যার কৃত্রিম কারণ : আসামের পাহাড়ী অঞ্চলের মানুষ জমচাষের জন্য বনজঙ্গল আর গাছপালা অনবরত কেটে চলছে। এর ফলে বর্ষার সময়ে প্রবল বৃষ্টিপাতে এসব অঞ্চলে ভূমিক্ষয় হয়ে বৃষ্টির জলের সঙ্গে মত্তিকা ফলে দিন দিন নদী গর্ভগুলি কৃত্রিমভাবে ভরে উঠেছে। আর নদীর স্বাভাবিক খরোস্রোতা হচ্ছে নষ্ট। এভাবে নদীর উপর উচু হয়ে জল ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে এবং অল্প বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হচ্ছে বন্যার। এভাবে দেখা যাচ্ছে বর্ষার আরম্ভ থেকে শেষ পর্যন্ত পাঁচবার বন্যা এসে জনজীবন বিপর্যস্ত করছে।
বন্যার অতর্কিতে আবির্ভাব : বর্ষাকালে সাধারণত অতি বৃষ্টির ফলে জল ফুলে ফেপে তার শাখা নদীগুলিকে স্ফীত করে উপচিয়ে পড়ে। কখনও নদী বাধ’ বা স্থানে স্থানে বাঁধ ডিঙিয়ে প্রচণ্ড বেগে জনপদ আর শস্যক্ষেত্র গ্রাস করে যেন মায়াবী অজগর ভাঙ্গা বাঁধের সরুপথে গলে বের হয়ে ছুটছে আর ভয়ঙ্করভাবে সে দুর্নিবার বেগে সরু দেহখানিকে বিস্তার করছে, সম্মুখে যা পড়ছে তা-ই এ অজগর গ্রাস করে নিচ্ছে। এভাবে বাঁধ ভেঙ্গে ঘরবাড়ি, গ্রাম, প্রান্তর ভাসিয়ে মুহুর্তে সব একাকার করে দেয়। মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার সুযােগ দেয় না। এভাবে অতর্কিতে আবির্ভাব হয় বন্যার।
বন্যার ভয়াবহ রূপ : মানুষের বহুদিনের বহু কষ্টে সাজানাে ঘরদোর জলাঞ্জলি দিয়ে আবালবৃদ্ধবনিতা তখন পালানাের পথ পায় না। কাছে উচু টিলা বা উচু জায়গা, পাকা বাড়ির ছাদ, উঁচু সরকারি কার্যালয় যেখানে পারে সেখানেই আশ্রয় লওয়ার চেষ্টা করে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষ অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্টের সম্মুখীন হয়। শিশু ও বৃদ্ধ আর গরু, মহিষ, ছাগল, কুকুর প্রভৃতির অধিকাংশ তখন রক্ষা পায় না। জলের তীব্রবেগে গাছ, বাঁশঝাড় উপড়িয়ে ঘর ভেঙ্গে ভেসে নিয়ে চলে। দিগন্ত • জুড়ে একটা সাগর যেন অনন্ত ক্ষুধায় হাঁ করে আসছে। যেদিকে যতটুকু তাকানাে যায়কবির ভাষায় –
‘জল আর শুধ
দেখে দেখে চিত্ত তার হয়েছে বিকল ।
খল জল ছলভরা তুমি লক্ষ ফণা
ফুসিছে গর্জিছে নিত্য করিছে কামনা।
মৃত্তিকার শিশুদের লালায়িত মুখ।
এভাবে এক একটা অঞ্চল ধুইয়ে মুছে বন্যার গর্ভে লীন হয়ে যায়। মানুষ চোখের সম্মুখে দেখতে পায় ঈশ্বরের রুদ্র মহিমা। বন্যার ফলে যে শুধু বন্যা দুর্গত অঞ্চলই ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাই নয়, সমগ্র রাজ্যেই এর প্রভাব অনুভূত হয়।
বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ জেলাগুলি : ভৌগােলিক মানদণ্ডে আসামের সমস্ত ভূ-খণ্ডকে দুভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা – (১) ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা ও (২) বরাক উপত্যকা। বর্ষার আরম্ভেই এ দুটি এলাকার ব্রহ্মপুত্র ও বরাক নদী এবং তাদের উপনদীগুলি প্রলয়ঙ্করী রূপ নেয়। এর ফলে ব্ৰহ্মপত্র ও তার উপনদীগুলির দ্বারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় উজান আসামের ধেমাজি, ডিব্ৰুগড়, তিনসুকিয়া, উত্তর লক্ষীমপুর আর নিম্ন আসামের গােয়ালপাড়া; ধুবড়ী, বরপেটা প্রভৃতি জিলা। আবার বরাক ও তার উপনদীগুলির দ্বারা কাছাড়, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি প্রভৃতি জেলায় হাহাকার সৃষ্টি হয়।
বন্যার জল নেমে যাওয়ার পরবর্তী অবস্থা ? যাই হােক, মানুষ সামাজিক জীব। তাই এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে একে অন্যের সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দেয়, এগিয়ে আসে অনেক স্বেচ্ছাচারী সংগঠন।
জীবনে যেভাবে কোন দুঃখই চিরস্থায়ী নয়। তাই এ জল-প্লাবনও ধীরে ধীরে কমতে থাকে তখন গ্রাম জাগে কিন্তু কি এক কদর্য রূপধারণ করে চারদিকে পচা দুর্গন্ধ। শস্যক্ষেত্র বিধ্বস্ত, নষ্ট হয়েছে ফসল, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, বিধ্বস্ত হয়ে রয়েছে ঘরবাড়ি। প্রতিটি জেলায়ই মৃত্যুর সংবাদ। সড়ক ও টেলিযােগাযােগ, জল-বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
বন্যার উপকার : বন্যা যে শুধু অনিষ্ট সাধন বা ধ্বংস করে তা নয়। বন্যার ফলে পাহাড়-পর্বত হতে আনিত পলিমাটির দ্বারা জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। বাঁধভেঙ্গে জলের সঙ্গে পলিমাটি এসে বড় বড় মাঠের শষ্যক্ষেতের উর্বরা শক্তি বাড়িয়ে দেয়। তা ছাড়া শহর বন্দরের আবর্জনা ধুইয়ে প্রকৃতি নির্মল করে। গাছ-পালা, ফসল সবুজে সবুজ হয়ে উঠে।
প্রতিকারের ব্যবস্থা : ব্ৰহ্মপুত্ৰ বন্যা-নিয়ন্ত্রণ আয়ােগ গঠিত হলেও এ বিষয়ে কিছুই কাজ হয়নি। আসাম সরকার নিজস্ব উদ্যোগে নদীগুলির বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দেবার ব্যবস্থা করেছেন কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সুতরাং যে সব নদীতে প্রতি বৎসর বন্যা দেখা দেয় সেসব নদীর কয়েকটি উপধারা সৃষ্টির প্রয়ােজন। তাছাড়া বড় বড় নদীগুলির কাছাকাছি যে সকল ছােট ছােট নদী আছে তাদের সঙ্গে যােগসূত্র স্থাপন করে জলের স্রোতের দিক পরিবর্তন করে বন্যার বেগ কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে। বাঁধগুলিকে চীন, জাপান প্রভৃতি দেশে যেভাবে বৈজ্ঞানিক সম্মতভাবে তৈরি করা হয়েছে আসামের নদীগুলির বাঁধগুলিও সেভাবে তৈয়ার করা প্রয়ােজন। পাহাড়ের জল বৃহৎ জলাধারে সঞ্চিত রেখে তা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনও সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে বরাকের ‘টিপাইমুখ’ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বরাক উপত্যকার বন্যা বহুলাংশে কমানাে সম্ভব। উত্তর পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ী অঞ্চলের জুম চাষ বন্ধ করা একান্ত প্রয়ােজন। বিকল্প ব্যবস্থা দ্বারা নদীগর্ভ খনন করানাে উচিত। তাহলে নদীর জলধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি হবে। এ কাজগুলি আসাম সরকারের অবশ্যই কর্তব্য।
উপসংহার : গ্রহান্তরে পাড়ি জমালেও মানুষ আজও প্রকৃতির হাতে অসহায় । আসামের ভয়াবহ বন্যা মাঝে মাঝে আমাদের একথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। তবুও ঈশ্বরের উপর ভরসা রেখে এ আশা প্রকাশ করা চলে যে আসামের জনজীবন একদিন বন্যার অভিশাপ হতে অবশ্যই মুক্ত হবে।
না পাঠানো চিঠি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মা, তুমি কেমন আছ? আমার পোষা বেড়াল খুনচু সে কেমন আছে? সে রাত্তিরে কার পাশে শোয়? দুপুরে যেন আলি সাহেবদের বাগানে না যায়। মা, ঝিঙে মাচায় ফুল এসেছে? তুলি কে আমার ডুরে শাড়িটা পর়তে বোলো। আঁচলের ফেঁসোটা যেন সেলাই করে নেয়। তুলি কে কত মেরেছি! আর কোনদিন মারবো না। আমি ভাRead more
না পাঠানো চিঠি
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মা, তুমি কেমন আছ?
আমার পোষা বেড়াল খুনচু সে কেমন আছে?
সে রাত্তিরে কার পাশে শোয়?
দুপুরে যেন আলি সাহেবদের বাগানে না যায়।
মা, ঝিঙে মাচায় ফুল এসেছে?
তুলি কে আমার ডুরে শাড়িটা পর়তে বোলো।
আঁচলের ফেঁসোটা যেন সেলাই করে নেয়।
তুলি কে কত মেরেছি! আর কোনদিন মারবো না।
আমি ভালো আছি। আমার জন্য চিন্তা কোরো না
মা, তোমাদের ঘরের চালে নতুন খর দিয়েছো?
এবারে বৃষ্টি হয়েছে খুব
তরফদার বাবুদের পুকুরটা কি ভেসে গেছে?
কালু-ভুলুরা মাছ পেয়েছে কিছু?
একবার মেঘের ডাক শুনে কৈ মাছ উঠে এসেছিল ডাঙায়
আমি আম গাছ তলায় দুটো কৈ মাছ ধরেছিলাম
তোমার মনে আছে, মা?
মনে আছে আলি সাহেবের বাগানের সেই নারকোল?
চুরি করে আনিনি! মাটিতে পড়েছিল, কেউ দেখেনি
নারকোল বড়ার সে স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে।
আলি সাহেবের ভাই মিজান আমাকে খুব আদর করতো।
বাবা একদিন দেখতে পেয়ে চেলা কাঠ দিয়ে
পিটিয়েছিল আমাকে। আমার কি দোষ,
কেউ আদর করলে আমি না বলতে পারি?
আমার পিঠে এখনো সে দাগ আছে।
আলি সাহেবদের বাগানে আর কোনদিন যাইনি।
আমি আর কোনো বাগানেই যাই না
সেই দাগটায় হাত বুলিয়ে বাবার কথা মনে পড়ে।
বাবার জন্য আমার খুব কষ্ট হয়
আমি ভালো আছি, খুব ভালো আছি
বাবা যেনো আমার জন্য একটুও না ভাবে।
তুলি কি এখনো ভুতের ভয় পায়, মা?
তুলি আর আমি পুকুর ধারে কলাবউ দেখেছিলাম
সেই থেকে তুলির ফিটের ব্যারাম শুরু হলো
দাদা সেই কলা গাছটা কেটে ফেললো
আমি কিন্তু ভয় পাই নি, তুলি কে কত খেপিয়েছি……
আমার আবার মাঝরাত্রে
সেই কলা বউ দেখতে ইচ্ছে করে।
হ্যাঁ, ভালো কথা, দাদা কোনো কাজ পেয়েছে?
নকুলবাবু যে বলেছিল, বহরমপুরে নিয়ে যাবে
দাদাকে বোলো আমি ওর উপরে রাগ করিনি
রাগ পুষে রাখলে মানুষের বড় কষ্ট
আমার শরীরে আর রাগ নেই,
আমি আর এক ফোঁটাও কাঁদি না
মা, আমি রোজ দোকানের খাবার খাই, পটল ভাজাও খাই
হোটেলে কিন্তু কখনো শাক রান্না হয় না|
পুকুর পাড় থেকে তুলি আর আমি
তুলে আনতাম কলমি শাক
কি ভালো, কি ভালো, বিনা পয়সায়
কোনোদিন আর কলমি শাক আমার ভাগ্যে জুটবে না|
জোর হাওয়া দিলে তাল গাছের পাতা শরশর করে
ঠিক বৃষ্টির মত শব্দ হয়।
এই ভাদ্দর মাসে তাল পাকে ডিব ডিব করে তাল পড়ে।
বাড়ির তাল গাছ দুটো আছে তো?
কালু তালের বড়া বড় ভালবাসে, একদিন বানিয়ে দিও
তেলের খুব দাম জানি! তবু একদিন দিও
আমাকে বিক্রি করে দিয়ে ছ-হাজার টাকা পেয়েছিলে
তা দিয়ে একটা গরু কেনা হয়েছে তো?
সেই গরুটা ভালো দুধ দেয়?
আমার মতন মেয়ের চেয়ে গরুও অনেক ভালো
গরুর দুধ বিক্রি করে সংসারের সুসার হয়
গরুর বাছুর হয়, তাতেও কত আনন্দ হয়!
বাড়িতে কন্যা সন্তান থাকলে কত জ্বালা!
দু’বেলা ভাত দাও রে, শাড়ি দাও রে,
বিয়ের জোগাড় করো রে|
হাবলু, মিজান, শ্রীধর দের থাবা থেকে
মেয়েকে বাঁচাও রে।
আমি কি বুঝি না? সব বুঝি|
কেন আমায় বিক্রি করে দিলে তাও তো বুঝি
সে জন্যই তো আমার কোনো রাগ নেই, অভিমান নেই।
আমি তো ভালোই আছি, খেয়ে পরে আছি।
তোমরা ওই টাকায় বাড়ি ঘর সারিয়ে নিও ঠিকঠাক।
কালু-ভুলু কে ইস্কুলে পাঠিও|
তুলিকে ব্রজেন ডাক্তারের ওষুধ খাইও।
তুমি একটা শাড়ি কিনো, বাবার জন্য একটা ধুতি
দাদার একটা ঘড়ির সখ, তা কি ও টাকায় কুলোবে?
আমি কিছু টাকা জমিয়েছি, সোনার দুল গড়িয়েছি।
একদিন কি হলো জানো মা?
আকাশে খুব মেঘ জমে ছিল,
দিনের বেলায় ঘুরঘুট্টি অন্ধকার।
মনটা হঠাত কেমন কেমন করে উঠলো|
দুপুরবেলা চুপি চুপি বের়িয়ে ট্রেনে চেপে বসলাম
স্টেশনে নেমে দেখি একটা মাত্র সাইকেল রিক্শা!
খুব ইচ্ছে হলো একবার বাড়িটা দেখে আসি।
রথতলার মোড়ে আসতেই কারা যেন চেঁচিয়ে উঠলো-
কে যায়? কে যায়?
দেখি যে হাবুল-শ্রীধরদের সঙ্গে তাস খেলছে দাদা
আমাকে বললো, হারামজাদী, কেন ফিরে এসেছিস?
আমি ভয় পেয়ে বললাম,
ফিরে আসিনি গো, থাকতেও আসিনি
একবার শুধু দেখতে এসেছি
হাবুল বলল, এটা একটা বেবুশ্যে মাগী
কী করে জানলো বলো তো
তা কি আমার গায়ে লেখা আছে?
আর একটা ছেলে, চিনি না,
বললো, ছি ছি ছি, গাঁয়ের বদনাম!
হাবুল রিকশাওয়ালা কে চোখ রাঙিয়ে বললো, ফিরে যা
আমি বললাম, দাদা, আমি মায়ের জন্য ক’টা টাকা এনেছি
আর তুলির জন্য…
দাদা টেনে একটা চড় কষালো আমার গালে।
আমাকে বিক্রির টাকা হকের টাকা
আর আমার রোজগারের টাকা নোংরা টাকা
দাদা সেই পাপের টাকা ছোঁবে না, ছিনিয়ে নিল শ্রীধর
আমাকে ও দূর দূর করে তাড়িয়ে দিল।
আমি তবু দাদার ওপর রাগ করিনি
দাদা তো ঠিকই করেছে,
আমি তো আর দাদার বোন নই,
তোমার মেয়ে নই, তুলির দিদি নই
আমার টাকা নিলে তোমাদের সংসারের অকল্যাণ হবে
না, না আমি চাই তোমরা সবাই ভালো থাকো
গরুটা ভালো থাকুক, তালগাছ দুটো ভালো থাকুক
পুকুরে মাছ হোক, ক্ষেতে ধান হোক,
ঝিঙে মাচায় ফুল ফুটুক
আর কোনোদিন ঐ গ্রাম অপবিত্র করতে যাবো না
আমি খাট-বিছানায় শুই, নীল রঙের মশারি,
দোরগোড়ায় পাপোশ আছে, দেওয়ালে মা দুর্গার ছবি
আলমারি ভর্তি কাচের গেলাস।
বনবন করে পাখা ঘোরে। সাবান মেখে রোজ চান করি
এখানকার কুকুরগুলো সারা রাত ঘেউ ঘেউ করে
তাহলেই বুঝছো, কেমন আরামে আছি আমি?
আমি আর তোমার মেয়ে নই, তবু তুমি আমার মা
তোমার আরও ছেলেমেয়ে আছে
আমি আর মা পাবো কোথায়?
সেইজন্যই তোমাকে চিঠি লিখছি, মা
তোমার কাছে একটা খুব অনুরোধ আছে
তুলিকে একটু যত্ন করো, ও বেচারি বড় দুর্বল।
যতই অভাব হোক, তবু তুলিকে তোমরা…
তোমার পায়ে পড়ি মা, তুমি বাবাকে বুঝিয়ে বলো,
তুলিকেও যেন আমার মতন আরামের জীবনে না পাঠায়
যেমন করে হোক, তুলির একটা বিয়ে দিও|
ওর একটা নিজস্ব ঘর সংসার, একজন নিজের মানুষ।
আর যদি কোনোরকমই ওর বিয়ে দিতে না পারো?
ওকে বলো গলায় দড়ি দিয়ে মরতে
মরলে ও বেঁচে যাবে
In English Font:
Na Patano Chiti
Sunil Gangopadhyay
Maa tumi kmn aacho?
Amar pusha beral khunchu se kamon aache?
Se ratrire kar pashe shoy?
Dupore jen ali sahebder bagane na jaay
Maa, jinge machay fhul asache?
Tuli k amr dure sarita porte bolo
Aacholer fusata jeno selai kore nay
Tuli k koto mereche! Aar kunodin marbo na
Ami valo achi. Amar jonno cinta koro na
Maa, tumader ghorer chale nuton khor deyecho?
Ebare bristi hoyeche khub
Torofdar babuder pukorta ki beshe geche?
Kalu-vulura mach peyeche kichu?
Ekbar meger dak sune koi mach ute ashechilo dagaay
Ami aam gach tolay duto koi mach dorechil tumar mone aache?
Mone aache ali saheber bagane sei narikel?
Churi kore anini! Matithe porechilo, keu dekhne
narikel bodar se saad ekono mukhe lege aache
Ami saheber bhai Mijan amake khub ador kortho,
Baba ekdin dekhte peye chela kaat deye
pitiyechilo amake. Amr ki dush keu ador korle ami na bolte pari?
Amr pithe ekon o se daag aache.
Ami saheber baganei ar kunodin jai-ni.
Ami ar kuno baganei jai na
Sei daagta hath buliye babar kotha mone pore.
Babar jonno amar khub kosto hoy
Ami valo aachi, khub valo Aachi
Baba jeno amr jonno ektuo na vave.
Tuli ki ekon o bhuter voy pay, maa?
Tuli ar ami pukur dare kolabou dekhechilam
Sei teke tulir fhiter beyaram suru holo
Dada sei kola gachta kete fello
Ami kintu voy paini, tuli k koto khepiyechi..
Amr abr maz-ratre
Sei kola bou dekhte ichhe kore
Haa, valo kotha, dada kuno kaah peyeche?
Nokulbabu je bolechilo, bohrompur niye jabe
Dada-k bolo ami or upor raag korini
Raag pushe rakhle manuser boro kosto
Amr sorire ar raag nei,
Ami ar ek puta’o kadi na
Maa, ami ruj dukaner khabar khai, potol baja’o khai
Hotel’e kintu kokhono shak ranna hoy na.
Pukur paar theke tuli ar ami
Tule antam komli sak
Ki valo, ki valo, bina poysay
Kunodin ar komli sak amr baigge jutbe na.
Joor hawa dele taal gacher pata sor-sor kore thik bristir moto sobdo hoy.
Ei baddoor mashe taal paake dib dib kore taal pore.
Barir taal gach duto aache tho?
Kalu taaler bora boro valobashe, ekdin baniye dio
Teler khub daami jani! Tobou ekdin dio…
Amake bikri kore dye 6000 taka peyechilo
Ta deye ekta goru kena hoyeche tho?
Sei goruta valo dud de?
Amr moton meyer cheye goru-o oonek valo
Gorur dud bikri kore songsar hoy
Gorur basur hoy, ta’teo koto anondo hoy!
Barite konna sontan thakle koto jala!
Du’bela baat daw re, sari daw re,
Biyer jugar koro re.
Habul, mijan, Sridhor der thaba teke meyeke bachaw re.
Ami ki buji na? Sob buji.
Keno amy bikri kore dele ta’o buji
Se jonno to amr kuno raag nei, abhiman nei.
Ami to valo’i aachi, kheye pore aachi.
Tumra oi takay bari ghor sariye nio thik-thak.
Kalu-volu k school’e patio.
Tulike brozen daktarer ousod khai’o.
Tumi ekta saari kino, babar jonno ekta duti dadar ekta ghorir shok, ta o ki takay kulabe?
Ami kichu taka jomiyechi, sunar dul goriyechi .
Ekdin ki holo jano maa?
Akashe khub meg jome chilo,
diner belay gurgutti ondhokar.
Monta hothat kemon kemon kore uthlo.
Dupurbela chupi chupi beriye trene chepe boslam.
Statione neme dekhi ekta matro cycle riksha!
Khub icche holo ekbar barita dekhe ashi.
Rothtolar more ashtei jeno chechiye utlo-
ke jay? Ke jay?
Dekhi je Habul-Sridharder songe asha tash khelche dada.
Amake bollo, haramjadi, keno fire eshechis?
Ami bhoy peye bollam,
fire ashini go, thakteo ashini
ekbar shudu dekhte eshichi.
Habul bollo, eta ekta bebusshe magi
ki kore janlo bolo to ta ki amar gaye lekha ache?
Ar ekta chele, chini na,
bollo, chi chi chi, gayer bodnam!
Habul riksha-walake chokh rangiye bollo, fire jaa
ami bollam, dada, ami mayer jonno kota taka enechi ar
Tulir jonno….
Dada tene ekta chor koshalo amar gale.
Amake bikrir taka hoker taka
ar amar rojgarer taka nongra taka.
dada sei paper taka chobe na, chiniye nilo Sridhar.
Amake o dur dur kore tariye dilo.
Ami tobu dadar upor rag korini.
dada to thik koreche,
ami to ar dadar bon noi,
tomar meye nei, Tulir didi noi
amar taka nile tomader songsharer okolyan hobe
na, na ami chai tomra sobai bhalo thako
goruta bhalo thakuk,
talgach duto bhalo thakuk pukure mach hok,
khete dhan hok, jhinge machay ful futuk
ar konodin oi grame opobitro korte jabo na.
Ami khat- bichanay shui, nil ronger moshari,
durgoray paposh ache, dewale ma durgar chobi
almarir bhorti kacher glass.
Bonbon kore pakha ghore. Saban mekhe roj chan kori,
ekhankar kulurgulo sara rat gheu gheu kore
taholei bujcho, kemon aramae achi ami?
Ami ar tomar meye noi, tobu tumi amar maa
Tomar aro chlel-meye ache ami r maa paho kothay?
Sei jonno tomake chthi likchi, maa
tomar lache ekta khub onurudh ache
Tulike ektu jotno koro, o bechari boro durbol.
Jotoi obhab hok, tobe Tulike tomra…
tomar paye pori maa, tumi babake bujhiye bolo,
Tulikeo jeno amar moton aramer jibone na pathay
jemon kore hok, tulir ekta biye dio.
Or ekta nijossho ghor songshar, ekjon nijer manush.
Ar jodi kunorokom-e or biye dite na paro?
Oke bolo golay dori diye morte
morleo beche jabe.
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী রচয়িতাঃ আব্দুল গাফফার চৌধুরী আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি।ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়ায়ে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি।আমার সোনার দেশের রক্তে জাগালো ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রRead more
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী
রচয়িতাঃ আব্দুল গাফফার চৌধুরী
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়ায়ে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।আমার সোনার দেশের রক্তে জাগালো ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।
জাগো নাগিনীরা জাগো নাগিনীরা জাগো কালবোশেখীরা
শিশু হত্যার বিক্ষোভে আজ কাঁপুক বসুন্ধরা,
দেশের সোনার ছেলে খুন করে রোখে মানুষের দাবী
দিন বদলের ক্রান্তিলগ্নে তবু তোরা পার পাবি?
না, না, না, না খুন রাঙা ইতিহাসে শেষ রায় দেওয়া তারই
একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।।
সেদিনও এমনি নীল গগনের বসনে শীতের শেষে
রাত জাগা চাঁদ চুমো খেয়েছিল হেসে;
পথে পথে ফোটে রজনীগন্ধা অলকনন্দা যেন,
এমন সময় ঝড় এলো এক ঝড় এলো খ্যাপা বুনো।।
সেই আঁধারের পশুদের মুখ চেনা,
তাহাদের তরে মায়ের, বোনের, ভায়ের চরম ঘৃণা
ওরা গুলি ছোঁড়ে এদেশের প্রাণে দেশের দাবীকে রোখে
ওদের ঘৃণ্য পদাঘাত এই সারা বাংলার বুকে
ওরা এদেশের নয়,
দেশের ভাগ্য ওরা করে বিক্রয়
ওরা মানুষের অন্ন, বস্ত্র, শান্তি নিয়েছে কাড়ি
একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।।
তুমি আজ জাগো তুমি আজ জাগো একুশে ফেব্রুয়ারি
আজো জালিমের কারাগারে মরে বীর ছেলে বীর নারী
আমার শহীদ ভায়ের আত্মা ডাকে
জাগো মানুষের সুপ্ত শক্তি হাটে মাঠে ঘাটে বাটে
দারুণ ক্রোধের আগুনে আবার জ্বালবো ফেব্রুয়ারি
একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।।
In English Font:
Amar Bhaier Rakta Rangano ekushe February
Amar Bhaier Rakta Rangano ekushe February
Ami ki bhulite pari.
Chelehara shoto mayer osru goraye February
Ami ki bhulite pari.
Amar Bhaier Rakta Rangano ekushe February
Ami ki bhulite pari.
Jago naginira jago kalboishakira
Shishu hottar bikkhube aaj kapuk bashundora
Desher sonar chele khun kore rokhe manusher dabi
Din bodoler krantilogne tabu tura paar pabi?
Na,Na, Na,Na khun ranga itihashe shesh ray dewa tari
ekushe February ekushe February
Shedin o emni neel gogoner boshone shiter sheshe
Raat jaga chad chumo kheyechilo heshe;
Pothe pothe fute rajanigandha oloknonda jeno,
Emon shomoy jhar elo ek jhar elo khyapa buno.
Shei adharer poshuder mukh chena,
tahader tore mayer, boner, bhayer charam ghrina
Ora guli chore edesher prane desher dabike rukhe
Oder ghrinno podaghat ei shara banglar buke
Ora edesher noy,
Desher vaggyo ora kore bikroy
Ora manusher onno, bostro, shanti niyeche kari
ekushe February ekushe February
Tumi aaj jago tumi aaj jago Ekushe February
Ajo jalimer karagare more bir chele bir nari
Amar shohid bhaier atma dake
Jago manusher shupta shakti hate mathe ghate bate
Darun krudher aagune abar jalbo February
ekushe February ekushe February
কবিতা : অভিসার (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Abhisar Poem lyrics in Bengali?
Nibedita Paul
অভিসার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্য : কথা বোধিসত্তাবদান-কল্পলতা সন্ন্যাসী উপগুপ্ত মথুরাপুরীর প্রাচীরের তলে একদা ছিলেন সুপ্ত-- নগরীর দীপ নিবেছে পবনে, দুয়ার রুদ্ধ পৌর ভবনে, নিশীথের তারা শ্রাবণগগনে ঘন মেঘে অবলুপ্ত। (অভিসার - অনুসরণ, প্রাচীর-দেয়াল, সুপ্ত - নিদ্রিত, পবন - বাতাস, নিশীথ- রাত্রি, রুদ্ধ- বন্ধ, অRead more
অভিসার
বোধিসত্তাবদান-কল্পলতা
সন্ন্যাসী উপগুপ্ত
মথুরাপুরীর প্রাচীরের তলে
একদা ছিলেন সুপ্ত–
নগরীর দীপ নিবেছে পবনে,
দুয়ার রুদ্ধ পৌর ভবনে,
নিশীথের তারা শ্রাবণগগনে
ঘন মেঘে অবলুপ্ত।
(অভিসার – অনুসরণ, প্রাচীর-দেয়াল, সুপ্ত – নিদ্রিত, পবন – বাতাস, নিশীথ- রাত্রি, রুদ্ধ- বন্ধ, অবলুপ্ত-অদৃশ্য)
কাহার নূপুরশিঞ্জিত পদ
সহসা বাজিল বক্ষে!
সন্ন্যাসীবর চমকি জাগিল,
স্বপ্নজড়িমা পলকে ভাগিল,
রূঢ় দীপের আলোক লাগিল
ক্ষমাসুন্দর চক্ষে।
(সহসা – অকস্মাৎ/হঠাৎ, বক্ষে – বুকে, নূপুরশিঞ্জিত- নুপুরপরিহিত, পদ- পা, রূঢ় – রুক্ষ, কঠোর)
নগরীর নটী চলে অভিসারে
যৌবনমদে মত্তা।
অঙ্গ আঁচল সুনীল বরন,
রুনুঝুনু রবে বাজে আভরণ–
সন্ন্যাসী-গায়ে পড়িতে চরণ
থামিল বাসবদত্তা।
(আঁচল – কাপড়ের খুঁটি, সুনীল – গাঢ় নীল, বরন – বর্ণ, রব – শব্দ/ধ্বনি, আভরণ – ভূষণ, চরণ – পা, বাসব – দেবরাজ ইন্দ্র)
প্রদীপ ধরিয়া হেরিল তাঁহার
নবীন গৌরকান্তি–
সৌম্য সহাস তরুণ বয়ান,
করুণাকিরণে বিকচ নয়ান,
শুভ্র ললাটে ইন্দুসমান
ভাতিছে স্নিগ্ধ শান্তি।
(সৌম্য – শান্ত ও সুন্দর, সহাস্য – হাস্যরত, বয়ান – বদন/মুখ, বিকচ – বিকশিত, নয়ান – নয়ন, শুভ্র – শুক্ল/সিত, ললাট – অদৃষ্ট, ইন্দু – চাঁদ)
কহিল রমণী ললিত কণ্ঠে,
নয়নে জড়িত লজ্জা,
ক্ষমা করো মোরে কুমার কিশোর,
দয়া করো যদি গৃহে চলো মোর,
এ ধরণীতল কঠিন কঠোর
এ নহে তোমার শয্যা।’
(ভাতিছে- প্রবাহে, রমণী -নারী, ললিত – চারু/সুন্দর, ধরণী – ধরা/পৃথিবী)
সন্ন্যাসী কহে করুণ বচনে,
“অয়ি লাবণ্যপুঞ্জ,
এখনো আমার সময় হয় নি,
যেথায় চলেছ যাও তুমি ধনী,
সময় যেদিন আসিবে আপনি
যাইব তোমার কুঞ্জ,’
(বচন – বাক্য/কথা, অয়ি – ওগো, লাবণ্য – সৌন্দর্য, কুঞ্জ – লতাদি দ্বারা আচ্ছাদিত গৃহাকার স্থান)
সহসা ঝঞ্ঝা তড়িৎশিখায়
মেলিল বিপুল আস্য।
রমণী কাঁপিয়া উঠিল তরাসে,
প্রলয়শঙ্খ বাজিল বাতাসে,
আকাশে বজ্র ঘোর পরিহাসে
হাসিল অট্টহাস্য।
(ঝঞ্ছা – প্রবল ঝটিকা, তড়িৎ – বিদু্যৎ, আস্য – মুখ, তরাস – ত্রাস/ভয়, প্রলয় – সর্বাত্মক ধ্বংস, পরিহাস – ঠাট্টা, তামাশা)
বর্ষ তখনো হয় নাই শেষ,
এসেছে চৈত্রসন্ধ্যা।
বাতাস হয়েছে উতলা আকুল,
পথতরুশাখে ধরেছে মুকুল,
রাজার কাননে ফুটেছে বকুল
পারুল রজনীগন্ধা।
(তরু – বৃক্ষ/ গাছ, কানন – বাগান, মুকুল – কলিকা/কুঁড়ি)
অতি দূর হতে আসিছে পবনে
বাঁশির মদির মন্দ্র।
জনহীন পুরী, পুরবাসী সবে
গেছে মধুবনে ফুল-উৎসবে–
শূন্য নগরী নিরখি নীরবে
হাসিছে পূর্ণচন্দ্র।
( মন্দ্র – গম্ভীর ধ্বনি, পুরী – গৃহ/ভবন স্বর্ণপুরী)
নির্জন পথে জ্যোৎস্না-আলোতে
সন্ন্যাসী একা যাত্রী।
মাথার উপরে তরুবীথিকার
কোকিল কুহরি উঠে বারবার,
এতদিন পরে এসেছে কি তাঁর
আজি অভিসাররাত্রি?
(বীথী – শ্রেণী, সারি)
নগর ছাড়ায়ে গেলেন দণ্ডী
বাহিরপ্রাচীরপ্রান্তে।
দাঁড়ালেন আসি পরিখার পারে–
আম্রবনের ছায়ার আঁধারে
কে ওই রমণী প’ড়ে এক ধারে
তাঁহার চরণোপ্রান্তে!
(আম্র – আম)
নিদারুণ রোগে মারীগুটিকায়
ভরে গেছে তার অঙ্গ–
রোগমসী ঢালা কালী তনু তার
লয়ে প্রজাগণে পুরপরিখার
বাহিরে ফেলেছে, করি’ পরিহার
বিষাক্ত তার সঙ্গ।
(তনু,- দেহ/শরীর, পরিহার – বর্জন/ত্যাগ, গুটি-গুটিকা- ছোট দানা/ বসন্ত রোগের ব্রণ)
সন্ন্যাসী বসি আড়ষ্ট শির
তুলি নিল নিজ অঙ্কে–
ঢালি দিল জল শুষ্ক অধরে,
মন্ত্র পড়িয়া দিল শির-‘পরে,
লেপি দিল দেহ আপনার করে
শীতচন্দনপঙ্কে।
ঝরিছে মুকুল, কূজিছে কোকিল,
যামিনী জোছনামত্তা।
(আড়ষ্ট – অসাড়/ জড়, অধর – ঠোঁট/নিচের ঠোঁট, যামিনী – রাত্রি)
“কে এসেছ তুমি ওগো দয়াময়’
শুধাইল নারী, সন্ন্যাসী কয়–
“আজি রজনীতে হয়েছে সময়,
এসেছি বাসবদত্তা!’
English Transliteration:
Abhishar
Rabindranath tagore
Bodhisottabadon-kolpona
Sonnyashi upogupto
Mothurapurir prachirer tole
Ekoda chilen supto–
nogorir deel nibeche pobone,
Duar ruddha pouro bhobone,
Nishither tara srabongogone
Ghono meg obolupto.
Kahar nupurshingit pod
See lessSohosha bajilo bokke!
Sonnyashibor chomki jagilo,
Shopnojorima poloke bhagilo,
Ruro deeper alok lagilo
Khomashundar chokke.
Nogorir noti chole abhisare
Joubonmode motta.
Ongi anchal sunil boron,
Runujhunu robe baje aboron–
Sonnyashi-gaye porite choron
Thamilo basbodotta.
Prodip dhoriya herilo tahar
Nobin gourokanti–
Soummya sahosh torun boyan,
Korunakirone bikocho noyan,
Shubro lolate indusoman
Bhatiche snighdha shanti.
Kohilo romoni lolito khonte,
Noyone jorito lojja,
Khoma koro more kumar kishor,
Doya koro jodi grihe cholo mor,
E dhoronitol kothin kothor
E nohe tomar shojjya.
Sonnyashi kohe torun bichone,
“Oyi labonnyapunjo,
Ekhono amar somoy hoy ni,
Jethay cholche jao tumi dhoni,
Somoy jedin ashibe apni
Jaibi tumar kunjo,
Sohisha jhonjha toritshikhay
Melilo bipul ashhya.
Romoni kapiya uthilo torashe,
Proloyoshongho bajilo batashe,
Akashe bojro ghor porihashe
hashilo ottohashya.
……
Borsho tokhono hoy ni sesh,
Esheche choitrosondhya.
Batash hoyeche utola akul,
Pothotorushakhe dhoreche mukul,
Rajar kanone futeche bokul
Parul rojonigondha .
Oti duur hote ashiche pobone
Bashir modir mondro.
Jonohin puri, purobashi sobe
Geche modhubone ful-utshobe–
Sunnyo nogori nirkhi nirobe
Hashiche purnochondro.
Nirjon pothe jyotsna-alote
Sonnyashi ek jatri.
Mathar upore torubithikar
Kokil khori uthe barbar,
Etodin pore esheche ki tar
Aji abhisharratri?
Nogor charay gelen dondi
Bahirprachirprante.
Daralen ashi porikhar pare–
Amroboner chayar adhare
Ke oi romoni pore ek dhare
Tahar choronoprante!
Nidarun roge marigutikay
Bhore geche tar songe–
Rogmoshidhala kali tonu tar
Loye projagone puroporikhar
Bahire feleche, kori porihar
Bishakto tar songo.
Sonnyashi boshi arosto shir
Tuli nilo nij onke–
Dhali dilo jol shusko odhore,
Montro poriya dilo shir pore,
Lepi dilo deho apnar kore
Shitchandanponghe.
Jhoriche mukul, kujiche kokil,
Jamini jochnamotta.
“Ke eshecho tumi ogo doyamoy”
Sudhailo nari, sonnyashi koy–
“Ani rojonite hoyeche somoy,
Eshechi bashobodotta!”
কবিতাঃ শঙ্খ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Sankha by Rabindranath Tagore in Bengali?
Nibedita Paul
শঙ্খ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্য-বলাকা তোমার শঙ্খ ধুলায় প'ড়ে, কেমন করে সইব। বাতাস আলো গেল মরে এ কী রে দুর্দৈব। লড়বি কে আয় ধ্বজা বেয়ে, গান আছে যার ওঠ-না গেয়ে, চলবি যারা চল্ রে ধেয়ে, আয় না রে নিঃশঙ্ক। ধুলয় পড়ে রইল চেয়ে ওই যে অভয় শঙ্খ। চলেছিলাম পূজার ঘরে সাজিয়ে ফুলের অর্ঘ্য। খুঁজি সারাদিনের পরে কোথায় শান্তRead more
শঙ্খ
তোমার শঙ্খ ধুলায় প’ড়ে,
কেমন করে সইব।
বাতাস আলো গেল মরে
এ কী রে দুর্দৈব।
লড়বি কে আয় ধ্বজা বেয়ে,
গান আছে যার ওঠ-না গেয়ে,
চলবি যারা চল্ রে ধেয়ে,
আয় না রে নিঃশঙ্ক।
ধুলয় পড়ে রইল চেয়ে
ওই যে অভয় শঙ্খ।
চলেছিলাম পূজার ঘরে
সাজিয়ে ফুলের অর্ঘ্য।
খুঁজি সারাদিনের পরে
কোথায় শান্তি-শর্গ।
এবার আমার হৃদয়-ক্ষত
ভেবেছিলাম হবে গত,
ধুয়ে মলিন চিহ্ন যত
হব নিষ্কলঙ্ক।
পথে দেখি ধুলায় নত
তোমার মহাশঙ্খ।
আরতি-দীপ এই কি জ্বালা।
এই কি আমার সন্ধ্যা।
গাঁথার রক্তজবার মালা?
হায় রজনীগন্ধা।
ভেবেছিলাম যোঝাযুঝি
মিটিয়ে পাব বিরাম খুঁজি,
চুকিয়ে দিয়ে ঋণের পুঁজি,
লব তোমার অঙ্ক।
হেনকালে ডাকল বুঝি
নীরব তব শঙ্খ।
যৌবনেরি পরশমণি
করাও তবে স্পর্শ।
দীপক-তানে উঠুক ধ্বনি
দীপ্ত প্রাণের হর্ষ।
নিশার বক্ষ বিদায় করে
উদ্বোধনে গগন ভরে
অন্ধ দিকে দিগন্তরে
জাগাও-না আতঙ্ক।
দুই হাতে আজ তুলব ধরে
তোমার জয়শঙ্খ।
জানি জানি তন্দ্রা মম
রইবে না আর চক্ষে।
জানি শ্রাবণধারা-সম
বাণ বাজিয়ে বক্ষে।
কেউ বা ছুটে আসবে পাশে,
কাঁদবে বা কেউ দীর্ঘশ্বাসে,
দুঃস্বপনে কাঁপবে ত্রাসে
সুপ্তির পর্যঙ্ক।
বাজবে যে আজ মহোল্লাসে
তোমার মহাশঙ্খ।
তোমার কাছে আরাম চেয়ে
পেলাম শুধু লজ্জা।
এবার সকল অঙ্গ ছেয়ে
পরাও রণসজ্জা।
ব্যাঘাত আসুক নব নব,
আঘাত খেয়ে অটল রব,
বক্ষে আমার দুঃখে তব
বাজবে জয়ডঙ্ক।
দেব সকল শক্তি, লব
অভয় তব শঙ্খ।
English transliteration:
Sankha
Rabindranath Tagore
Tumar sonkho dulay pode,
Kamon kore sob’i.
Batas aalo geko more
A ki re durdobe.
Lorbi k aay dobja beye.
Gaan aache jar ott-na gaye,
Cholbi jara chal re deye,
Aay na re Ni-sonkho.
Dulay pode roilo ceye
See lessOi je ooboy sonkho.
Colechilam pujar ghore
Sajiye fuler orgho
Khuji saradiner pore
Kutay santi-sorgo
Ebar amra hridoy-khoto
Vebechilam hobe goto,
Duye molin chinno joto
Hobo nis-kolonko.
Pothe deki dulay noto
Tumar mohasonkho.
Aroti-dep ei ki jala.
Ei ki amar sondha.
Gathar rokthojobar mala?
Hay rojonigondha.
Vebechilam juzajuzi
Mitiye pabo biram khuji,
Chukiye diye riner puji,
Lobo tumar onko.
Henokale dakbo buji
Nirob tobo sonko.
Jouboneri porosmoni
kora’o tobe sporso.
Dipok-tane utok dhoni
Deep praner horsho
Nishar bokko biday kore
Uddbodone gogon vore
Ondo dike digontore
Jagaw-na aatonko.
Dui hathe aaj tulbo dhore
Tumar joysonko
Jani jani tondra momo
Roibo na aar chokke.
Jani srabondara-somo
Bani bajiye bokke.
Keu ba chute aasbe pashe,
Kadbe ba keu dirgosashe,
Duhsopone kapbe trashe
Suptir porjonko.
Bajbe je aaj mohollashe
Tumar mohasonkho.
Tumar kache aram cheye
Pelam sudu lojja.
Ebar sokol onge cheye
Poraw ronosojja.
Beyaghat aasuk nobo nob,
Aaghat kheye otol robo,
Bokke amar dukhhe tobo
Bajbe joysonko.
Debo sokol sokti, lobo
Oboy tobo sonkho
কবিতা : পরশ পাথর (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Parash Pathar Poem by Rabindranath Tagore in Bengali?
Nibedita Paul
পরশ-পাথর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থ : সোনার তরী খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর। মাথায় বৃহৎ জটা ধূলায় কাদায় কটা, মলিন ছায়ার মতো ক্ষীণ কলেবর। ওষ্ঠে অধরেতে চাপি অন্তরের দ্বার ঝাঁপি রাত্রিদিন তীব্র জ্বালা জ্বেলে রাখে চোখে। দুটো নেত্র সদা যেন নিশার খদ্যোত-হেন উড়ে উড়ে খোঁজে কারে নিজের আলোকে। নাহি যারRead more
পরশ-পাথর
খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর।
মাথায় বৃহৎ জটা ধূলায় কাদায় কটা,
মলিন ছায়ার মতো ক্ষীণ কলেবর।
ওষ্ঠে অধরেতে চাপি অন্তরের দ্বার ঝাঁপি
রাত্রিদিন তীব্র জ্বালা জ্বেলে রাখে চোখে।
দুটো নেত্র সদা যেন নিশার খদ্যোত-হেন
উড়ে উড়ে খোঁজে কারে নিজের আলোকে।
নাহি যার চালচুলা গায়ে মাখে ছাইধুলা
কটিতে জড়ানো শুধু ধূসর কৌপীন,
ডেকে কথা কয় তারে কেহ নাই এ সংসারে
পথের ভিখারি হতে আরো দীনহীন,
তার এত অভিমান, সোনারুপা তুচ্ছজ্ঞান,
রাজসম্পদের লাগি নহে সে কাতর,
দশা দেখে হাসি পায় আর কিছু নাহি চায়
একেবারে পেতে চায় পরশপাথর!
সম্মুখে গরজে সিন্ধু অগাধ অপার।
তরঙ্গে তরঙ্গ উঠি হেসে হল কুটিকুটি
সৃষ্টিছাড়া পাগলের দেখিয়া ব্যাপার।
আকাশ রয়েছে চাহি, নয়নে নিমেষ নাহি,
হু হু করে সমীরণ ছুটেছে অবাধ।
সূর্য ওঠে প্রাতঃকালে পূর্ব গগনের ভালে,
সন্ধ্যাবেলা ধীরে ধীরে উঠে আসে চাঁদ।
জলরাশি অবিরল করিতেছে কলকল,
অতল রহস্য যেন চাহে বলিবারে।
কাম্য ধন আছে কোথা জানে যেন সব কথা,
সে-ভাষা যে বোঝে সেই খুঁজে নিতে পারে।
কিছুতে ভ্রূক্ষেপ নাহি, মহা গাথা গান গাহি
সমুদ্র আপনি শুনে আপনার স্বর।
কেহ যায়, কেহ আসে, কেহ কাঁদে, কেহ হাসে,
খ্যাপা তীরে খুঁজে ফিরে পরশ-পাথর
একদিন, বহুপূর্বে, আছে ইতিহাস–
নিকষে সোনার রেখা সবে যেন দিল দেখা–
আকাশে প্রথম সৃষ্টি পাইল প্রকাশ।
মিলি যত সুরাসুর কৌতূহলে ভরপুর
এসেছিল পা টিপিয়া এই সিন্ধুতীরে।
অতলের পানে চাহি নয়নে নিমেষ নাহি
নীরবে দাঁড়ায়ে ছিল স্থির নতশিরে।
বহুকাল স্তব্ধ থাকি শুনেছিল মুদে আঁখি
এই মহাসমুদ্রের গীতি চিরন্তন;
তার পরে কৌতূহলে ঝাঁপায়ে অগাধ জলে
করেছিল এ অনন্ত রহস্য মন্থন।
বহুকাল দুঃখ সেবি নিরখিল, লক্ষ্মীদেবী
উদিলা জগৎ-মাঝে অতুল সুন্দর।
সেই সমুদ্রের তীরে শীর্ণ দেহে জীর্ণ চীরে
খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর।
এতদিনে বুঝি তার ঘুচে গেছে আশ।
খুঁজে খুঁজে ফিরে তবু বিশ্রাম না জানে কভু,
আশা গেছে, যায় নাই খোঁজার অভ্যাস।
বিরহী বিহঙ্গ ডাকে সারা নিশি তরুশাখে,
যারে ডাকে তার দেখা পায় না অভাগা।
তবু ডাকে সারাদিন আশাহীন শ্রান্তিহীন,
একমাত্র কাজ তার ডেকে ডেকে জাগা।
আর-সব কাজ ভুলি আকাশে তরঙ্গ তুলি
সমুদ্র না জানি কারে চাহে অবিরত।
যত করে হায় হায় কোনোকালে নাহি পায়,
তবু শূন্যে তোলে বাহু, ওই তার ব্রত।
কারে চাহি ব্যোমতলে গ্রহতারা লয়ে চলে,
অনন্ত সাধনা করে বিশ্বচরাচর।
সেইমতো সিন্ধুতটে ধূলিমাথা দীর্ঘজটে
খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর।
একদা শুধাল তারে গ্রামবাসী ছেলে,
“সন্ন্যাসীঠাকুর, এ কী, কাঁকালে ও কী ও দেখি,
সোনার শিকল তুমি কোথা হতে পেলে।’
সন্ন্যাসী চমকি ওঠে শিকল সোনার বটে,
লোহা সে হয়েছে সোনা জানে না কখন।
একি কাণ্ড চমৎকার, তুলে দেখে বার বার,
আঁখি কচালিয়া দেখে এ নহে স্বপন।
কপালে হানিয়া কর বসে পড়ে ভূমি-‘পর,
নিজেরে করিতে চাহে নির্দয় লাঞ্ছনা;
পাগলের মতো চায়– কোথা গেল, হায় হায়,
ধরা দিয়ে পলাইল সফল বাঞ্ছনা।
কেবল অভ্যাসমত নুড়ি কুড়াইত কত,
ঠন্ ক’রে ঠেকাইত শিকলের ‘পর,
চেয়ে দেখিত না, নুড়ি দূরে ফেলে দিত ছুঁড়ি,
কখন ফেলেছে ছুঁড়ে পরশ-পাথর।
তখন যেতেছে অস্তে মলিন তপন।
আকাশ সোনার বর্ণ, সমুদ্র গলিত স্বর্ণ,
পশ্চিম দিগ্বধূ দেখে সোনার স্বপন।
সন্ন্যাসী আবার ধীরে পূর্বপথে যায় ফিরে
খুঁজিতে নূতন ক’রে হারানো রতন।
সে শকতি নাহি আর নুয়ে পড়ে দেহভার
অন্তর লুটায় ছিন্ন তরুর মতন।
পুরাতন দীর্ঘ পথ পড়ে আছে মৃতবৎ
হেথা হতে কত দূর নাহি তার শেষ।
দিক হতে দিগন্তরে মরুবালি ধূ ধূ করে,
আসন্ন রজনী-ছায়ে ম্লান সর্বদেশ।
অর্ধেক জীবন খুঁজি কোন্ ক্ষণে চক্ষু বুজি
স্পর্শ লভেছিল যার এক পল ভর,
বাকি অর্ধ ভগ্ন প্রাণ আবার করিছে দান
ফিরিয়া খুঁজিতে সেই পরশ-পাথর
English Transliteration:
Porosh pathor
Rabindranath Tagore
Khapa khuje khuje fire porosh pathor
Mathay brihot jota dhulay kaday kota,
Molin chayar moto khin kolebor.
Oshte Odhorete chapi ontorer daar jhapi
Ratridin tibro jala jele rakhe chokhe.
Duto netro shoda jeno nishar khodyet heno
Ure Ure khoje kare nijer aloke
Nahi njar chalchula gaye makhe chaidhula
Kotite jorano sudhu dushor koupin
deke kotha koy tare keho nai ei sonshare
Pother vikhari hote aaro dinhin,
Tar eto oviman, sonarupa tucchogyan,
Rajshompoder lagi nohe she kator,
Dosha dekhe hashi pay aar kichu nahi chay
Ekebare pete chay poroshpathar
Shommukhe goroje shindhu ogadh opar.
tarange taranga uthi heshe holo kutikuti
Sristichara pagoler dekia byapar.
Akashe royeche chahi, nayane nimesh nahi,
See lessHu Hu kore shomiron chutche obad.
Surja uthe pratohkale purba gogoner bhale,
Shondhya bela dhire dhire uthe aashe chada.
jolrashi obirol Koriteche kolkol,
Otol rohoshyo jeno chahe bolibare.
kammyo dhan aache kutha jane jeno shob kotha
She bhasha je buje shei khuje nite pare
Kichute bhrukkhep nahi, Moha gatha gaan gahi
Shamudra aaponi shune aapnar shor.
Keho jay, keho aashe, keho kade, keho hashe
Khapa khuje khuje fire porosh pathor
Ekdin bahupurbe, aache itihash-
Nikoshe shonar rekha shobe jeno dilo dekha-
Akashe prothom sristi pailo prokash.
Mili jata shura shur koutohole bharpur
Eshechilo pa tipiya ei shindutire.
Otoler pane chahi nayane nimesh nahi
Nirobe darayechilo stir natoshire.
Bahukal shabdo thaki shunechilo mude aakhi
Ei mohashamudrer giti chironton
tar pore koutuhole japaye ogad jole
Korechilo e ononto rahoshyo monthon.
bahukal dukkho shebi Nirokhilo, lakkhidebi
Udila jagath-majhe otul sundar.
Shei shamudrer tire shirno dehe jirno chire
Khapa khuje khuje fire porosh pathor
Etodine bujhi tar guche geche aasha.
Khuje khuje fire tobo bisram na jane kabhu
Asha geche jay nai khujar obhyash
Birohi bihongo dake shara nishi tarushakhe,
Jare dake tar deka pay na ovaga.
tabu dake sharadin aashahin srantihin
Ekmatro kaj tar deke deke jaga
Aar shob kaj bhuli akashe taranga tuli
Shamudra na jani kare chahe obiroto
Jata kore hay hay konokale nahi pay,
Tabu shunnen tule bahu, oi tar broto.
kare chahi byomtole grohotara loye chole
Ononto shadona kore bisshochorachor
Sheimoto shindutote dhulimakha dhirgojote
Khapa khuje khuje fire porosh pathor
Ekoda shudalo tare grambashi chele,
Shonnashithakur, E ki, kakale o ki o deki,
Sonar shikol tumi kutha hote pele.
Shonnashi chomki othe shikol sonar bote,
Loha she hoyeche sona jane na kakhan.
Eki kando chomotkar, tule dekhe bar bar,
Aakhi kochaliya dekhe e nohe shopon.
Kopale hania kor boshe pore bhumi por,
nijer korite chahe nirdoy lanchona;
pagoler moto chay- kotha gelo, hay hay,
Dhora diye polailo shofol banchona.
kebol obhyashmoto nuri kuraito koto,
Than kore thekaito shikoloer por,
Cheye dekito na, nuri dure fele dito churi,
kakhan feleche chure porosh pathar
Takhan jeteche oste molin tapan.
Akash sonar borno, samudra golito shorno,
poshim digdu sonar shopon.
Shonnashi abar dhire purbapothe jay fire
Khujite natun kore harano ratan.
She shokti nahi aar nuye pore deho bhar
Antar lutay chinno tarur moton
puratan dhirgo poth pore aaache mritobot
Hetha hote koto dur nahi tar shesh.
Dik hote digontore marubali dhu dhu kore,
Aashonno rajani-chaye mlan sorbodesh.
Ordek jibon khuji kon khone chakkhu buji
sparsho lovechilo jar ek pal bhar
baki ordho vogno pran abar koriche daan
Firiya khujite shei porosh pathar.
রবীন্দ্রসংগীত : তুমি কোন কাননের ফুল | Tumi Kon Kanoner Phool lyrics in Bengali with English Translation?
Nibedita Paul
তুমি কোন কাননের ফুল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাগ: মিশ্র পিলু-বারোয়াঁ তাল: দাদরা রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1886 স্বরলিপিকার: জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর তুমি কোন কাননের ফুল কোন গগণের তারা তোমায় কোথায় দেখেছি যেন কোন স্বপনের পাড়া কবে তুমি গেয়েছিলে আঁখির পানে চেয়েছিলে ভুলে গিয়েছি.. শুধু মনের মধ্যে জেগে আছে ওই নয়নের তারাRead more
তুমি কোন কাননের ফুল
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রাগ: মিশ্র পিলু-বারোয়াঁ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1886
স্বরলিপিকার: জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর
তুমি কোন কাননের ফুল
কোন গগণের তারা
তোমায় কোথায় দেখেছি
যেন কোন স্বপনের পাড়া
কবে তুমি গেয়েছিলে
আঁখির পানে চেয়েছিলে
ভুলে গিয়েছি..
শুধু মনের মধ্যে জেগে আছে
ওই নয়নের তারা..
তুমি কোন কাননের ফুল
কোন গগণের তারা।
তুমি কথা কয়ো না
তুমি চেয়ে চলে যাও
ওই চাঁদের আলোতে
তুমি হেসে গলে যাও
আমি ঘুমের ঘোরে চাঁদের পানে
চেয়ে থাকি মধুর প্রানে…
তোমার আঁখির মতন দুটি তারা
ঢালুক কিরণধারা…
তুমি কোন কাননের ফুল
কোন গগনের তারা
তোমায় কোথায় দেখেছি
যেন কোন স্বপনের পাড়া..
তুমি কোন কাননের ফুল
কোন গগণের তারা।
→কানন- বাগান
→গগন- আকাশ
→আঁখি- চক্ষু
→পানে – দিকে
→নয়ন- চক্ষু
→কিরণ- আলো, রশ্মি
English Translation:
Rabindranath Tagore
Which garden do you belong O’ flower?
Which sky do you belong O’ star?
Where did I saw you!
May be in my world of fantasy.
When did you sing last
Staring at my eyes,
I don’t remember .
Only thing left in my heart
Is the sparkle of your eyes .
You don’t speak at all
Just offer a glimpse on your passage .
You melt away in this moonlight
while smiling.
I gaze at the moon
And keep wondering while sleeping .
Let two stars, resembling your eyes
May downpour streams of rays.
Which garden do you belong O’ flower?
Which sky do you belong O’ star?
Where did I saw you!
May be in my world of fantasy.
Which garden do you belong O’ flower?
Which sky do you belong O’ star?
English Transliteration:
Tumi Kon kanoner ful
Kon Gogoner tara
tomay kuthay dekeschi
Jeno kuno shopner para
Kobe tumi Geyechile
Aakir pane cheyechile
Bhule giyechi
Shudu moner moddhe jege aache
Oi nayaner tara
Tumi Kon kanoner ful
Kon Gogoner tara
Tumi Kotha Koyo na
tumi cheye chole jao
oi chader aalote
tumi heshe gole jao
Ami ghomer ghure chader pane
cheye thaki madhur prane
Tumar aakhir moton duti tara
Daluk kirondhara
Tumi Kon kanoner ful
Kon Gogoner tara
tomay kuthay dekeschi
Deno kuno shopner para
Tumi Kon kanoner ful
Kon Gogoner tara
বাংলা অর্থ | xd Meaning in Bengali?
Nibedita Paul
XD: ➢ ইহা ইন্টারনেটের দুনিয়ায় বহুল প্রচলিত একটি শব্দ বা এসেছে LOL (laugh out loud বা খুব বেশি হাস্যকর) থেকে। ➢ ইহা একটি ইমোটিকন, যেখানে X অক্ষর দ্বারা চোখ কে বুঝানো হয়েছে এবং D অক্ষর দ্বারা উম্মুক্ত মুখ বুঝানো হয়েছে। ➢ আমরা যখন হাসি তখন আমাদের চোখদ্বয়ে ভাব জন্মে এবং মুখ উম্মুক্ত হয় । তাই এই হাসির ভাRead more
➢ ইহা ইন্টারনেটের দুনিয়ায় বহুল প্রচলিত একটি শব্দ বা এসেছে LOL (laugh out loud বা খুব বেশি হাস্যকর) থেকে।
➢ ইহা একটি ইমোটিকন, যেখানে X অক্ষর দ্বারা চোখ কে বুঝানো হয়েছে এবং D অক্ষর দ্বারা উম্মুক্ত মুখ বুঝানো হয়েছে।
➢ আমরা যখন হাসি তখন আমাদের চোখদ্বয়ে ভাব জন্মে এবং মুখ উম্মুক্ত হয় । তাই এই হাসির ভাবটাকে XD সাংকেতিক চিন্ন দ্বারা বুঝানো হয়ে থাকে।
➢ ইহা chat করার সময় হাহা বা LOL এর পরিবর্তে ব্যাবহার হয়ে থাকে।
লুকোচুরি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Poem Lukochuri Rabindranath Tagore Bengali Script?
Nibedita Paul
লুকোচুরি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমি যদি দুষ্টুমি ক’রে চাঁপার গাছে চাঁপা হয়ে ফুটি, ভোরের বেলা মা গো, ডালের ‘পরে কচি পাতায় করি লুটোপুটি, তবে তুমি আমার কাছে হারো, তখন কি মা চিনতে আমায় পারো। তুমি ডাক, “খোকা কোথায় ওরে।’ আমি শুধু হাসি চুপটি করে। যখন তুমি থাকবে যে কাজ নিয়ে সবই আমি দেখব নয়ন মেলে। স্নানটি করে চাঁRead more
লুকোচুরি
আমি যদি দুষ্টুমি ক’রে
চাঁপার গাছে চাঁপা হয়ে ফুটি,
ভোরের বেলা মা গো, ডালের ‘পরে
কচি পাতায় করি লুটোপুটি,
তবে তুমি আমার কাছে হারো,
তখন কি মা চিনতে আমায় পারো।
তুমি ডাক, “খোকা কোথায় ওরে।’
আমি শুধু হাসি চুপটি করে।
যখন তুমি থাকবে যে কাজ নিয়ে
সবই আমি দেখব নয়ন মেলে।
স্নানটি করে চাঁপার তলা দিয়ে
আসবে তুমি পিঠেতে চুল ফেলে;
এখান দিয়ে পুজোর ঘরে যাবে,
দূরের থেকে ফুলের গন্ধ পাবে —
তখন তুমি বুঝতে পারবে না সে
তোমার খোকার গায়ের গন্ধ আসে।
দুপুর বেলা মহাভারত-হাতে
বসবে তুমি সবার খাওয়া হলে,
গাছের ছায়া ঘরের জানালাতে
পড়বে এসে তোমার পিঠে কোলে,
আমি আমার ছোট্ট ছায়াখানি
দোলাব তোর বইয়ের ‘পরে আনি —
তখন তুমি বুঝতে পারবে না সে
তোমার চোখে খোকার ছায়া ভাসে।
সন্ধেবেলায় প্রদীপখানি জ্বেলে
যখন তুমি যাবে গোয়ালঘরে
তখন আমি ফুলের খেলা খেলে
টুপ্ করে মা, পড়ব ভুঁয়ে ঝরে।
আবার আমি তোমার খোকা হব,
“গল্প বলো’ তোমায় গিয়ে কব।
তুমি বলবে, “দুষ্টু, ছিলি কোথা।’
আমি বলব, “বলব না সে কথা ।
আরও পড়ুনঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত কবিতাসমূহ
In English Script:
Lukkochuri
Rabindranath Tagore
Ami jodi dushtomi kore
Chapar gache chapa hoye futi
Bhorer bela ma go, daler pore
Kochi patay kori lotoputi,
Tobe tumi amar kache haro,
Takhan ki maa chinte amay paro
Tumi dako, ‘kokha kothay ore.’
Ami shudhu hashi chupti kore.
Jakhan tumi thakbe je kaj niye
Shoboi ami dekhbo nayan mele
snanti kore chapar tola diye
Ashbe tumi pithe te chul fele
Ekhan diye pujar ghore jabe
Durer theke fuler gando pabe
Takhan tumi bujte parbe na she
Tumar khukar gayer gandha aashe .
Dupur bela mohabharat hate
Boshbe tumi shobar khawa hole,
Gacher chaya ghorer janalate
Porbe eshe tumar pithe kule,
Ami amar chutto chayaklhani
Dolabo tor boiyer “pore ani-
Takhan tumi bujhte parbe na she
Tumar khukar gayer gandha aashe.
Shondhabelay prodikhani jele
See lessJakhan tumi jabe guwalghore
Takhan ami fuler khela khele
Tup kore maa, porbo bhuye jhore
Abar ami tumar khokha hobo,
‘Golpo bolo’ Tumay giye kobo.
Tumi bolbe, ‘Dustu chele kotha.’
Ami bolbo, ‘bolbo na she kotha.’
আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রচনা | Natural Beauty of Assam Essay in Bengali Language?
Nibedita Paul
আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভূমিকা : আসাম প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন। তার দিকে দিকে নানা রাঙা পাখির কাকলি, নানা রাঙা ফুলের গন্ধবাহার। প্রকৃতি দেবী যেন নিজহাতে তার সমস্ত সৌন্দর্য ভাণ্ডার এই আসাম ভূমিতে উজাড় করে দিয়েছেন। এ রাজ্য পাহাড়-পর্বত বেষ্টিত একটি অতি মনােরম রাজ্য। অনেকের মতে সৌন্দরRead more
আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
ভূমিকা : আসাম প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন। তার দিকে দিকে নানা রাঙা পাখির কাকলি, নানা রাঙা ফুলের গন্ধবাহার। প্রকৃতি দেবী যেন নিজহাতে তার সমস্ত সৌন্দর্য ভাণ্ডার এই আসাম ভূমিতে উজাড় করে দিয়েছেন। এ রাজ্য পাহাড়-পর্বত বেষ্টিত একটি অতি মনােরম রাজ্য। অনেকের মতে সৌন্দর্যে ‘সম’ বা সমান বা সমকক্ষ নেই বলে এই দেশের নাম অসম। আর অসম হতেই এই দেশের নাম হয়েছে আসাম। আসামের নিসর্গ প্রকৃতি নাগরিক জীবন যন্ত্রণায় ক্লান্ত-ক্লিষ্ট মানুষকে অপার প্রশান্তি এনে দেয়।
প্রকৃতি ভেদে আসামের সৌন্দর্য : ভারতের উত্তর পূর্ব প্রান্তের রাজ্যটি যেন কোন দেবকন্যার কণ্ঠমালা থেকে খসে-পড়া কারুকার্য খচিত একখণ্ড পান্না। সবুজ-শ্যামলে রজত-ঔজ্জ্বল্যে নিসর্গ সুন্দরী সত্যই অপরূপা। রাজ্যটির উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা ও তার শাখা-প্রশাখা, ছােট-বড় পাহাড়-পর্বত যেন শিরের শােভা মুকুট রাজি। পুর্বদিকে পাতকোই ও দক্ষিণে মেঘালয়ের পর্বতমালা নীলাভ মেঘসজ্জার মতাে শােভা পাচ্ছে। শ্যামল বনরাজি নীলার মেখলা পরিহিতা আসাম যেন এক বনমালা।
আসামের মধ্যাংশ কাৰ্বিমালভূমি, মেঘালয় মালভূমি ও দাক্ষিণাত্য মালভূমির অংশ বিশেষ। এই অঞ্চলটি অতি প্রাচীন ও রূপান্তরিত আগ্নেয় শিলা দ্বারা গঠিত। কার্বি মালভূমিকে স্পর্শ করে দক্ষিণ পর্যন্ত রয়েছে উত্তর কাছাড়ের পাহাড়ী অঞ্চল। এই পাহাড় সমূহ স্তরীভূত শিলার ঢেউ খেলানাে পাহাড়। কবির ভাষায় ব্রহ্মপুত্র নদ তার কণ্ঠহার আর বরাক নদী হলাে কটি দেশের কিংকিনী। এই নদী দুটির অসংখ্য উপনদী, শাখানদী নৃত্য পরা অপ্সরার মতাে কলতান তুলে বয়ে চলেছে। শ্যামল-গহন বনানীর রহস্যময়তা ও স্নিগ্ধতা সৌন্দর্য-পিয়াসী মানুষকে পত্রমর্মরে আমন্ত্রণ জানায়। নদীর বুকে সাদা পাল তুলে নৌকা চলে কোন অচিনপরে, মাঝির কণ্ঠে ভাটিয়ালি গানের উদাসী সুর। তাছাড়া নদীগুলি রাজ্যটিকে কৃষির উপযুক্ত ও উর্বর করে তুলেছে। সত্যই সুজলা, সুফলা শস্য-শ্যামলা ব্ৰহ্মপুত্র-বরাকের এই পূণ্য তীরভূমিতে যেন নয়নদুটি শ্যামরূপে বন্দী হয়ে রসলীন ভ্রমরের ন্যায় নিশ্চল হয়ে যায়।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নানা উপাদান : আসাম রাজ্যটির ৩৫ শতাংশ স্থান জুড়ে রয়েছে বন-জঙ্গল ও গভীর অরণ্য। এসব জঙ্গলে হলং, বনচাম, শাল, সেগুন, সুন্দী, সােনারু প্রভৃতি মূল্যবান কাঠ ও গাছ রয়েছে। স্থানে স্থানে রয়েছে অসংখ্য খাল, বিল ও তৃণ প্রান্তর। নাম না জানা জলাশয়ের বুকে বিকশিত পদ্ম-শালুকের বর্ণবাহার। ইতস্ততঃ ছড়ানাে পত্রপুঞ্জের মতাে সবুজ বন। মাথার উপরে উন্মুক্ত আকাশ, আকাশে চন্দ্র-সূর্যের উদয় ও অস্ত যাওয়ার শােভা, মেঘমালার স্বচ্ছন্দ বিচরণ। অন্ধকার রাত্রে ঝােপে-ঝাড়ে জ্বলে জোনাকির দীপ।
পশুপাখির সৌন্দর্য বর্ধন : আসামের বনজঙ্গলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ধিত করে প্রকৃতির ক্রোড়ে লালিত জীবজন্তুর স্বচ্ছন্দ বিহার। এগুলির মধ্যে হাতী, গণ্ডার, বন্য মহিষ, বাঘ, ভালুক, হরিণ, বানর প্রভৃতি উল্লেখযােগ্য জন্তু। আসামের কাজিরাঙ্গার একশিং বিশিষ্ট গণ্ডার পৃথিবী বিখ্যাত। নানা প্রকার দুর্লভ পাখিও আসামে পাওয়া যায়। যার মধ্যে আছে, ময়না, টিয়া, তােতা, শকুন ও ধনেশ প্রভৃতি পাখি। বনফুল ঘিরে ভ্রমরের গুঞ্জন, চলমান পাহাড়ের মতাে হাতির পাল ইত্যাদি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেরই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
প্রকৃতি ও মানুষ : নির্জন প্রকৃতির একটি স্বতন্ত্র সৌন্দর্য অবশ্যই আছে। কিন্তু মানুষের সুচিন্তিত সুপরিকল্পিত হস্তস্পর্শে সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সুন্দরতর হয়ে উঠে। এভাবে হস্তস্পর্শে তৈরি আসামের চা বাগানগুলি অপূর্ব শােভার আধার। পূর্ব আসামের প্রায় সমস্ত অঞ্চল জুড়ে চায়ের ঘন সবুজ ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’ নিসর্গ শােভাতে অপরিমেয় সৌন্দর্যের সঞ্চার করে। টিলার উপর নির্মিত ঘর-বাড়িতে বৈদ্যুতিক আলােক মালা যেন নিজ দীপাবলীর আলােক সজ্জা। সবুজ তরুলতা বেষ্টিত ছায়া সুনিবিড় গ্রামগুলিও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অঙ্গীভূত।
ঋতুভেদে আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য : ঋতুর পর ঋতু একে একে এখানে এসে নিজেকে সৌন্দর্য শােভায় মেলে ধরে। বিভিন্ন ঋতুতে প্রকৃতি দেবী বিভিন্ন সাজে সজ্জিতা হন। গ্রীষ্মে লাল, হলুদ, শিরীষ ফুলে আসামের দেহ ঢাকে, বর্ষায় কদম ফুল ফোটে আর পাহাড়ী নদীর রূপালী ধারা চঞ্চল নৃত্যে নেমে আসে ঝরঝর ঝমঝম্ শব্দে। শরতের আগমনে ঝিলে ঝিলে প্রস্ফুটিত হয় কমল। রাজহাঁসেরা ঝাকে ঝাকে উড়ে চলে মানস সরােবরের দিকে। হেমন্তের আগমনে উপত্যকায় ধানক্ষেতের হরিৎ শােভা সত্যই মনােমুগ্ধ কর বাতাসের দোলা খেয়ে তারা সমুদ্রের ঢেউয়ের মতাে উচু-নিচু হতে থাকে। শীতে লাের্ধ ও কাশ জাতীয় শুভ্র ফুলের অমলিন হাসিতে সমস্ত পাহাড়, বন, আকাশ প্রভৃতি শ্বেত শােভায় সজ্জিত হয়। এই নয়নাভিরাম শােভা বাস্তবিকই বিচিত্র। আর বসন্তকালের তাে কথাই নেই। কোকিলের সুমধুর কুজন যেন প্রকৃতি দেবীর নবরূপ ও রাগ গ্রহণের কথাই ঘােষণা করে।
উপসংহার : প্রাচীনকালে প্রবাদ ছিল কামরূপ অর্থাৎ অসম ইন্দ্রজালের মাজ, এখানে প্রকৃতি দেবীর অভিনব আকর্ষণ। আকুল করা সৌন্দর্যে নারী-পুরুষ পঞ্চলেই উন্মাদ হয়ে পড়ে। আসামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অভিভূত হয়ে জাতির জনক হাত্মা গান্ধী বলেছিলেন মনমােহন আসামের অধিবাসী সকলেই কবিতা রচনা করতে সেলু।’ অর্থাৎ কাব্য সুষমা বিজড়িত আসামের প্রকৃতি ও তার বিভিন্ন ঋতুর সৌন্দর্যরাশি অবর্ণনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আসাম সত্যই অ-সম অর্থাৎ অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
See lessরচনাঃ অসমের বন্যা ও তার প্রতিকার | Flood in Assam Essay in Bengali?
Nibedita Paul
অসমের বন্যা ও তার প্রতিকার ভূমিকা : জলের অপর নাম জীবন। জল ছাড়া আমরা বাঁচতে পারি না। অথচ প্রকৃতির এমনই পরিহাস যে এই জলই আবার অপ্রত্যাশিতভাবে মানুষের জীবনে ধ্বংসের কারণ হয়ে দাড়ায়। সহস্র নাগিনীর মতাে ফণাতুলে ধেয়ে আসে জলের তরঙ্গমালা। তখনই বােঝা যায় আজও মানুষ প্রাকৃতিক শক্তির কাছে কত অসহায়। বন্যাRead more
অসমের বন্যা ও তার প্রতিকার
ভূমিকা : জলের অপর নাম জীবন। জল ছাড়া আমরা বাঁচতে পারি না। অথচ প্রকৃতির এমনই পরিহাস যে এই জলই আবার অপ্রত্যাশিতভাবে মানুষের জীবনে ধ্বংসের কারণ হয়ে দাড়ায়। সহস্র নাগিনীর মতাে ফণাতুলে ধেয়ে আসে জলের তরঙ্গমালা। তখনই বােঝা যায় আজও মানুষ প্রাকৃতিক শক্তির কাছে কত অসহায়। বন্যা এমনি এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়। ভারতমাতার বড় আদরের কন্যা রূপ লাবণ্যময়ী এই অসমের বন্যা জনিত দুঃখ প্রতি বছরের এক অভিশাপ।
আসামের বন্যার প্রাকৃতিক কারণ : আসাম নদীমাতৃক দেশ। এ দেশ ভারতবর্ষের মধ্যে চতুর্দিকে পাহাড়-পর্বত বেষ্টিত একটি রাজ্য। এ রাজ্যে বন্যার প্রধান কারণ হলাে মহাবাহু দীর্ঘতম নদ ব্রহ্মপুত্র। একদা চীনদেশের হােয়াংহাে নদ যেমন ছিল চিনের দুঃখ, আসামের ব্রহ্মপুত্র নদের বেলায়ও আজকাল এরূপ বলা যায়। ১৯৫০ – সনের ভূমিকম্পের পর থেকে আসামে প্রায় প্রতি বছর প্রবল বন্যার আবির্ভাব ঘটে। বােধ হয় ভূমিকম্পের ফলে নদীখাত উপরে উঠে আসায় নদীগুলির জলধারণ ক্ষমতা কমে গেছে, তাই অল্প জল জমলেও তীর ভূমি প্লাবিত হয়।
ব্রহ্মপুত্র নদ আসামের উত্তর পূর্ব সীমান্ত বর্তমান অরুণাচল প্রদেশ দিয়ে লােহিত নামে আসামে প্রবেশ করেছে। উত্তর পূর্ব সীমান্তের পর্বত শ্রেণিতে প্রচুর পরিমাণে তুষার সঞ্চিত হয়, বৃষ্টির জলের সঙ্গে গলিত এ তুষার স্থপ আসামের নদীগুলির সাথে মিশ্রিত হয়। আবার মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আসামে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও অধিক।অত্যধিক বৃষ্টিপাতের ফলে নদ-নদীগুলি ফুলে ফেঁপে উভয় তীর প্লাবিত করে সৃষ্টি করে বন্যার।
আসামে বন্যার কৃত্রিম কারণ : আসামের পাহাড়ী অঞ্চলের মানুষ জমচাষের জন্য বনজঙ্গল আর গাছপালা অনবরত কেটে চলছে। এর ফলে বর্ষার সময়ে প্রবল বৃষ্টিপাতে এসব অঞ্চলে ভূমিক্ষয় হয়ে বৃষ্টির জলের সঙ্গে মত্তিকা ফলে দিন দিন নদী গর্ভগুলি কৃত্রিমভাবে ভরে উঠেছে। আর নদীর স্বাভাবিক খরোস্রোতা হচ্ছে নষ্ট। এভাবে নদীর উপর উচু হয়ে জল ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে এবং অল্প বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হচ্ছে বন্যার। এভাবে দেখা যাচ্ছে বর্ষার আরম্ভ থেকে শেষ পর্যন্ত পাঁচবার বন্যা এসে জনজীবন বিপর্যস্ত করছে।
বন্যার অতর্কিতে আবির্ভাব : বর্ষাকালে সাধারণত অতি বৃষ্টির ফলে জল ফুলে ফেপে তার শাখা নদীগুলিকে স্ফীত করে উপচিয়ে পড়ে। কখনও নদী বাধ’ বা স্থানে স্থানে বাঁধ ডিঙিয়ে প্রচণ্ড বেগে জনপদ আর শস্যক্ষেত্র গ্রাস করে যেন মায়াবী অজগর ভাঙ্গা বাঁধের সরুপথে গলে বের হয়ে ছুটছে আর ভয়ঙ্করভাবে সে দুর্নিবার বেগে সরু দেহখানিকে বিস্তার করছে, সম্মুখে যা পড়ছে তা-ই এ অজগর গ্রাস করে নিচ্ছে। এভাবে বাঁধ ভেঙ্গে ঘরবাড়ি, গ্রাম, প্রান্তর ভাসিয়ে মুহুর্তে সব একাকার করে দেয়। মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার সুযােগ দেয় না। এভাবে অতর্কিতে আবির্ভাব হয় বন্যার।
বন্যার ভয়াবহ রূপ : মানুষের বহুদিনের বহু কষ্টে সাজানাে ঘরদোর জলাঞ্জলি দিয়ে আবালবৃদ্ধবনিতা তখন পালানাের পথ পায় না। কাছে উচু টিলা বা উচু জায়গা, পাকা বাড়ির ছাদ, উঁচু সরকারি কার্যালয় যেখানে পারে সেখানেই আশ্রয় লওয়ার চেষ্টা করে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষ অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্টের সম্মুখীন হয়। শিশু ও বৃদ্ধ আর গরু, মহিষ, ছাগল, কুকুর প্রভৃতির অধিকাংশ তখন রক্ষা পায় না। জলের তীব্রবেগে গাছ, বাঁশঝাড় উপড়িয়ে ঘর ভেঙ্গে ভেসে নিয়ে চলে। দিগন্ত • জুড়ে একটা সাগর যেন অনন্ত ক্ষুধায় হাঁ করে আসছে। যেদিকে যতটুকু তাকানাে যায়কবির ভাষায় –
‘জল আর শুধ
দেখে দেখে চিত্ত তার হয়েছে বিকল ।
খল জল ছলভরা তুমি লক্ষ ফণা
ফুসিছে গর্জিছে নিত্য করিছে কামনা।
মৃত্তিকার শিশুদের লালায়িত মুখ।
এভাবে এক একটা অঞ্চল ধুইয়ে মুছে বন্যার গর্ভে লীন হয়ে যায়। মানুষ চোখের সম্মুখে দেখতে পায় ঈশ্বরের রুদ্র মহিমা। বন্যার ফলে যে শুধু বন্যা দুর্গত অঞ্চলই ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাই নয়, সমগ্র রাজ্যেই এর প্রভাব অনুভূত হয়।
বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ জেলাগুলি : ভৌগােলিক মানদণ্ডে আসামের সমস্ত ভূ-খণ্ডকে দুভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা – (১) ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা ও (২) বরাক উপত্যকা। বর্ষার আরম্ভেই এ দুটি এলাকার ব্রহ্মপুত্র ও বরাক নদী এবং তাদের উপনদীগুলি প্রলয়ঙ্করী রূপ নেয়। এর ফলে ব্ৰহ্মপত্র ও তার উপনদীগুলির দ্বারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় উজান আসামের ধেমাজি, ডিব্ৰুগড়, তিনসুকিয়া, উত্তর লক্ষীমপুর আর নিম্ন আসামের গােয়ালপাড়া; ধুবড়ী, বরপেটা প্রভৃতি জিলা। আবার বরাক ও তার উপনদীগুলির দ্বারা কাছাড়, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি প্রভৃতি জেলায় হাহাকার সৃষ্টি হয়।
বন্যার জল নেমে যাওয়ার পরবর্তী অবস্থা ? যাই হােক, মানুষ সামাজিক জীব। তাই এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে একে অন্যের সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দেয়, এগিয়ে আসে অনেক স্বেচ্ছাচারী সংগঠন।
জীবনে যেভাবে কোন দুঃখই চিরস্থায়ী নয়। তাই এ জল-প্লাবনও ধীরে ধীরে কমতে থাকে তখন গ্রাম জাগে কিন্তু কি এক কদর্য রূপধারণ করে চারদিকে পচা দুর্গন্ধ। শস্যক্ষেত্র বিধ্বস্ত, নষ্ট হয়েছে ফসল, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, বিধ্বস্ত হয়ে রয়েছে ঘরবাড়ি। প্রতিটি জেলায়ই মৃত্যুর সংবাদ। সড়ক ও টেলিযােগাযােগ, জল-বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
বন্যার উপকার : বন্যা যে শুধু অনিষ্ট সাধন বা ধ্বংস করে তা নয়। বন্যার ফলে পাহাড়-পর্বত হতে আনিত পলিমাটির দ্বারা জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। বাঁধভেঙ্গে জলের সঙ্গে পলিমাটি এসে বড় বড় মাঠের শষ্যক্ষেতের উর্বরা শক্তি বাড়িয়ে দেয়। তা ছাড়া শহর বন্দরের আবর্জনা ধুইয়ে প্রকৃতি নির্মল করে। গাছ-পালা, ফসল সবুজে সবুজ হয়ে উঠে।
প্রতিকারের ব্যবস্থা : ব্ৰহ্মপুত্ৰ বন্যা-নিয়ন্ত্রণ আয়ােগ গঠিত হলেও এ বিষয়ে কিছুই কাজ হয়নি। আসাম সরকার নিজস্ব উদ্যোগে নদীগুলির বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দেবার ব্যবস্থা করেছেন কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সুতরাং যে সব নদীতে প্রতি বৎসর বন্যা দেখা দেয় সেসব নদীর কয়েকটি উপধারা সৃষ্টির প্রয়ােজন। তাছাড়া বড় বড় নদীগুলির কাছাকাছি যে সকল ছােট ছােট নদী আছে তাদের সঙ্গে যােগসূত্র স্থাপন করে জলের স্রোতের দিক পরিবর্তন করে বন্যার বেগ কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে। বাঁধগুলিকে চীন, জাপান প্রভৃতি দেশে যেভাবে বৈজ্ঞানিক সম্মতভাবে তৈরি করা হয়েছে আসামের নদীগুলির বাঁধগুলিও সেভাবে তৈয়ার করা প্রয়ােজন। পাহাড়ের জল বৃহৎ জলাধারে সঞ্চিত রেখে তা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনও সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে বরাকের ‘টিপাইমুখ’ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বরাক উপত্যকার বন্যা বহুলাংশে কমানাে সম্ভব। উত্তর পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ী অঞ্চলের জুম চাষ বন্ধ করা একান্ত প্রয়ােজন। বিকল্প ব্যবস্থা দ্বারা নদীগর্ভ খনন করানাে উচিত। তাহলে নদীর জলধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি হবে। এ কাজগুলি আসাম সরকারের অবশ্যই কর্তব্য।
উপসংহার : গ্রহান্তরে পাড়ি জমালেও মানুষ আজও প্রকৃতির হাতে অসহায় । আসামের ভয়াবহ বন্যা মাঝে মাঝে আমাদের একথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। তবুও ঈশ্বরের উপর ভরসা রেখে এ আশা প্রকাশ করা চলে যে আসামের জনজীবন একদিন বন্যার অভিশাপ হতে অবশ্যই মুক্ত হবে।
See lessনা পাঠানো চিঠি (সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়) Sunil Gangopadhyay Kobita Na Pathano Chithi lyrics?
Nibedita Paul
না পাঠানো চিঠি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মা, তুমি কেমন আছ? আমার পোষা বেড়াল খুনচু সে কেমন আছে? সে রাত্তিরে কার পাশে শোয়? দুপুরে যেন আলি সাহেবদের বাগানে না যায়। মা, ঝিঙে মাচায় ফুল এসেছে? তুলি কে আমার ডুরে শাড়িটা পর়তে বোলো। আঁচলের ফেঁসোটা যেন সেলাই করে নেয়। তুলি কে কত মেরেছি! আর কোনদিন মারবো না। আমি ভাRead more
না পাঠানো চিঠি
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মা, তুমি কেমন আছ?
আমার পোষা বেড়াল খুনচু সে কেমন আছে?
সে রাত্তিরে কার পাশে শোয়?
দুপুরে যেন আলি সাহেবদের বাগানে না যায়।
মা, ঝিঙে মাচায় ফুল এসেছে?
তুলি কে আমার ডুরে শাড়িটা পর়তে বোলো।
আঁচলের ফেঁসোটা যেন সেলাই করে নেয়।
তুলি কে কত মেরেছি! আর কোনদিন মারবো না।
আমি ভালো আছি। আমার জন্য চিন্তা কোরো না
মা, তোমাদের ঘরের চালে নতুন খর দিয়েছো?
এবারে বৃষ্টি হয়েছে খুব
তরফদার বাবুদের পুকুরটা কি ভেসে গেছে?
কালু-ভুলুরা মাছ পেয়েছে কিছু?
একবার মেঘের ডাক শুনে কৈ মাছ উঠে এসেছিল ডাঙায়
আমি আম গাছ তলায় দুটো কৈ মাছ ধরেছিলাম
তোমার মনে আছে, মা?
মনে আছে আলি সাহেবের বাগানের সেই নারকোল?
চুরি করে আনিনি! মাটিতে পড়েছিল, কেউ দেখেনি
নারকোল বড়ার সে স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে।
আলি সাহেবের ভাই মিজান আমাকে খুব আদর করতো।
বাবা একদিন দেখতে পেয়ে চেলা কাঠ দিয়ে
পিটিয়েছিল আমাকে। আমার কি দোষ,
কেউ আদর করলে আমি না বলতে পারি?
আমার পিঠে এখনো সে দাগ আছে।
আলি সাহেবদের বাগানে আর কোনদিন যাইনি।
আমি আর কোনো বাগানেই যাই না
সেই দাগটায় হাত বুলিয়ে বাবার কথা মনে পড়ে।
বাবার জন্য আমার খুব কষ্ট হয়
আমি ভালো আছি, খুব ভালো আছি
বাবা যেনো আমার জন্য একটুও না ভাবে।
তুলি কি এখনো ভুতের ভয় পায়, মা?
তুলি আর আমি পুকুর ধারে কলাবউ দেখেছিলাম
সেই থেকে তুলির ফিটের ব্যারাম শুরু হলো
দাদা সেই কলা গাছটা কেটে ফেললো
আমি কিন্তু ভয় পাই নি, তুলি কে কত খেপিয়েছি……
আমার আবার মাঝরাত্রে
সেই কলা বউ দেখতে ইচ্ছে করে।
হ্যাঁ, ভালো কথা, দাদা কোনো কাজ পেয়েছে?
নকুলবাবু যে বলেছিল, বহরমপুরে নিয়ে যাবে
দাদাকে বোলো আমি ওর উপরে রাগ করিনি
রাগ পুষে রাখলে মানুষের বড় কষ্ট
আমার শরীরে আর রাগ নেই,
আমি আর এক ফোঁটাও কাঁদি না
মা, আমি রোজ দোকানের খাবার খাই, পটল ভাজাও খাই
হোটেলে কিন্তু কখনো শাক রান্না হয় না|
পুকুর পাড় থেকে তুলি আর আমি
তুলে আনতাম কলমি শাক
কি ভালো, কি ভালো, বিনা পয়সায়
কোনোদিন আর কলমি শাক আমার ভাগ্যে জুটবে না|
জোর হাওয়া দিলে তাল গাছের পাতা শরশর করে
ঠিক বৃষ্টির মত শব্দ হয়।
এই ভাদ্দর মাসে তাল পাকে ডিব ডিব করে তাল পড়ে।
বাড়ির তাল গাছ দুটো আছে তো?
কালু তালের বড়া বড় ভালবাসে, একদিন বানিয়ে দিও
তেলের খুব দাম জানি! তবু একদিন দিও
আমাকে বিক্রি করে দিয়ে ছ-হাজার টাকা পেয়েছিলে
তা দিয়ে একটা গরু কেনা হয়েছে তো?
সেই গরুটা ভালো দুধ দেয়?
আমার মতন মেয়ের চেয়ে গরুও অনেক ভালো
গরুর দুধ বিক্রি করে সংসারের সুসার হয়
গরুর বাছুর হয়, তাতেও কত আনন্দ হয়!
বাড়িতে কন্যা সন্তান থাকলে কত জ্বালা!
দু’বেলা ভাত দাও রে, শাড়ি দাও রে,
বিয়ের জোগাড় করো রে|
হাবলু, মিজান, শ্রীধর দের থাবা থেকে
মেয়েকে বাঁচাও রে।
আমি কি বুঝি না? সব বুঝি|
কেন আমায় বিক্রি করে দিলে তাও তো বুঝি
সে জন্যই তো আমার কোনো রাগ নেই, অভিমান নেই।
আমি তো ভালোই আছি, খেয়ে পরে আছি।
তোমরা ওই টাকায় বাড়ি ঘর সারিয়ে নিও ঠিকঠাক।
কালু-ভুলু কে ইস্কুলে পাঠিও|
তুলিকে ব্রজেন ডাক্তারের ওষুধ খাইও।
তুমি একটা শাড়ি কিনো, বাবার জন্য একটা ধুতি
দাদার একটা ঘড়ির সখ, তা কি ও টাকায় কুলোবে?
আমি কিছু টাকা জমিয়েছি, সোনার দুল গড়িয়েছি।
একদিন কি হলো জানো মা?
আকাশে খুব মেঘ জমে ছিল,
দিনের বেলায় ঘুরঘুট্টি অন্ধকার।
মনটা হঠাত কেমন কেমন করে উঠলো|
দুপুরবেলা চুপি চুপি বের়িয়ে ট্রেনে চেপে বসলাম
স্টেশনে নেমে দেখি একটা মাত্র সাইকেল রিক্শা!
খুব ইচ্ছে হলো একবার বাড়িটা দেখে আসি।
রথতলার মোড়ে আসতেই কারা যেন চেঁচিয়ে উঠলো-
কে যায়? কে যায়?
দেখি যে হাবুল-শ্রীধরদের সঙ্গে তাস খেলছে দাদা
আমাকে বললো, হারামজাদী, কেন ফিরে এসেছিস?
আমি ভয় পেয়ে বললাম,
ফিরে আসিনি গো, থাকতেও আসিনি
একবার শুধু দেখতে এসেছি
হাবুল বলল, এটা একটা বেবুশ্যে মাগী
কী করে জানলো বলো তো
তা কি আমার গায়ে লেখা আছে?
আর একটা ছেলে, চিনি না,
বললো, ছি ছি ছি, গাঁয়ের বদনাম!
হাবুল রিকশাওয়ালা কে চোখ রাঙিয়ে বললো, ফিরে যা
আমি বললাম, দাদা, আমি মায়ের জন্য ক’টা টাকা এনেছি
আর তুলির জন্য…
দাদা টেনে একটা চড় কষালো আমার গালে।
আমাকে বিক্রির টাকা হকের টাকা
আর আমার রোজগারের টাকা নোংরা টাকা
দাদা সেই পাপের টাকা ছোঁবে না, ছিনিয়ে নিল শ্রীধর
আমাকে ও দূর দূর করে তাড়িয়ে দিল।
আমি তবু দাদার ওপর রাগ করিনি
দাদা তো ঠিকই করেছে,
আমি তো আর দাদার বোন নই,
তোমার মেয়ে নই, তুলির দিদি নই
আমার টাকা নিলে তোমাদের সংসারের অকল্যাণ হবে
না, না আমি চাই তোমরা সবাই ভালো থাকো
গরুটা ভালো থাকুক, তালগাছ দুটো ভালো থাকুক
পুকুরে মাছ হোক, ক্ষেতে ধান হোক,
ঝিঙে মাচায় ফুল ফুটুক
আর কোনোদিন ঐ গ্রাম অপবিত্র করতে যাবো না
আমি খাট-বিছানায় শুই, নীল রঙের মশারি,
দোরগোড়ায় পাপোশ আছে, দেওয়ালে মা দুর্গার ছবি
আলমারি ভর্তি কাচের গেলাস।
বনবন করে পাখা ঘোরে। সাবান মেখে রোজ চান করি
এখানকার কুকুরগুলো সারা রাত ঘেউ ঘেউ করে
তাহলেই বুঝছো, কেমন আরামে আছি আমি?
আমি আর তোমার মেয়ে নই, তবু তুমি আমার মা
তোমার আরও ছেলেমেয়ে আছে
আমি আর মা পাবো কোথায়?
সেইজন্যই তোমাকে চিঠি লিখছি, মা
তোমার কাছে একটা খুব অনুরোধ আছে
তুলিকে একটু যত্ন করো, ও বেচারি বড় দুর্বল।
যতই অভাব হোক, তবু তুলিকে তোমরা…
তোমার পায়ে পড়ি মা, তুমি বাবাকে বুঝিয়ে বলো,
তুলিকেও যেন আমার মতন আরামের জীবনে না পাঠায়
যেমন করে হোক, তুলির একটা বিয়ে দিও|
ওর একটা নিজস্ব ঘর সংসার, একজন নিজের মানুষ।
আর যদি কোনোরকমই ওর বিয়ে দিতে না পারো?
ওকে বলো গলায় দড়ি দিয়ে মরতে
মরলে ও বেঁচে যাবে
In English Font:
Na Patano Chiti
Sunil Gangopadhyay
Maa tumi kmn aacho?
Amar pusha beral khunchu se kamon aache?
Se ratrire kar pashe shoy?
Dupore jen ali sahebder bagane na jaay
Maa, jinge machay fhul asache?
Tuli k amr dure sarita porte bolo
Aacholer fusata jeno selai kore nay
Tuli k koto mereche! Aar kunodin marbo na
Ami valo achi. Amar jonno cinta koro na
Maa, tumader ghorer chale nuton khor deyecho?
Ebare bristi hoyeche khub
Torofdar babuder pukorta ki beshe geche?
Kalu-vulura mach peyeche kichu?
Ekbar meger dak sune koi mach ute ashechilo dagaay
Ami aam gach tolay duto koi mach dorechil tumar mone aache?
Mone aache ali saheber bagane sei narikel?
Churi kore anini! Matithe porechilo, keu dekhne
narikel bodar se saad ekono mukhe lege aache
Ami saheber bhai Mijan amake khub ador kortho,
Baba ekdin dekhte peye chela kaat deye
pitiyechilo amake. Amr ki dush keu ador korle ami na bolte pari?
Amr pithe ekon o se daag aache.
Ami saheber baganei ar kunodin jai-ni.
Ami ar kuno baganei jai na
Sei daagta hath buliye babar kotha mone pore.
Babar jonno amar khub kosto hoy
Ami valo aachi, khub valo Aachi
Baba jeno amr jonno ektuo na vave.
Tuli ki ekon o bhuter voy pay, maa?
Tuli ar ami pukur dare kolabou dekhechilam
Sei teke tulir fhiter beyaram suru holo
Dada sei kola gachta kete fello
Ami kintu voy paini, tuli k koto khepiyechi..
Amr abr maz-ratre
Sei kola bou dekhte ichhe kore
Haa, valo kotha, dada kuno kaah peyeche?
Nokulbabu je bolechilo, bohrompur niye jabe
Dada-k bolo ami or upor raag korini
Raag pushe rakhle manuser boro kosto
Amr sorire ar raag nei,
Ami ar ek puta’o kadi na
Maa, ami ruj dukaner khabar khai, potol baja’o khai
Hotel’e kintu kokhono shak ranna hoy na.
Pukur paar theke tuli ar ami
Tule antam komli sak
Ki valo, ki valo, bina poysay
Kunodin ar komli sak amr baigge jutbe na.
Joor hawa dele taal gacher pata sor-sor kore thik bristir moto sobdo hoy.
Ei baddoor mashe taal paake dib dib kore taal pore.
Barir taal gach duto aache tho?
Kalu taaler bora boro valobashe, ekdin baniye dio
Teler khub daami jani! Tobou ekdin dio…
Amake bikri kore dye 6000 taka peyechilo
Ta deye ekta goru kena hoyeche tho?
Sei goruta valo dud de?
Amr moton meyer cheye goru-o oonek valo
Gorur dud bikri kore songsar hoy
Gorur basur hoy, ta’teo koto anondo hoy!
Barite konna sontan thakle koto jala!
Du’bela baat daw re, sari daw re,
Biyer jugar koro re.
Habul, mijan, Sridhor der thaba teke meyeke bachaw re.
Ami ki buji na? Sob buji.
Keno amy bikri kore dele ta’o buji
See lessSe jonno to amr kuno raag nei, abhiman nei.
Ami to valo’i aachi, kheye pore aachi.
Tumra oi takay bari ghor sariye nio thik-thak.
Kalu-volu k school’e patio.
Tulike brozen daktarer ousod khai’o.
Tumi ekta saari kino, babar jonno ekta duti dadar ekta ghorir shok, ta o ki takay kulabe?
Ami kichu taka jomiyechi, sunar dul goriyechi .
Ekdin ki holo jano maa?
Akashe khub meg jome chilo,
diner belay gurgutti ondhokar.
Monta hothat kemon kemon kore uthlo.
Dupurbela chupi chupi beriye trene chepe boslam.
Statione neme dekhi ekta matro cycle riksha!
Khub icche holo ekbar barita dekhe ashi.
Rothtolar more ashtei jeno chechiye utlo-
ke jay? Ke jay?
Dekhi je Habul-Sridharder songe asha tash khelche dada.
Amake bollo, haramjadi, keno fire eshechis?
Ami bhoy peye bollam,
fire ashini go, thakteo ashini
ekbar shudu dekhte eshichi.
Habul bollo, eta ekta bebusshe magi
ki kore janlo bolo to ta ki amar gaye lekha ache?
Ar ekta chele, chini na,
bollo, chi chi chi, gayer bodnam!
Habul riksha-walake chokh rangiye bollo, fire jaa
ami bollam, dada, ami mayer jonno kota taka enechi ar
Tulir jonno….
Dada tene ekta chor koshalo amar gale.
Amake bikrir taka hoker taka
ar amar rojgarer taka nongra taka.
dada sei paper taka chobe na, chiniye nilo Sridhar.
Amake o dur dur kore tariye dilo.
Ami tobu dadar upor rag korini.
dada to thik koreche,
ami to ar dadar bon noi,
tomar meye nei, Tulir didi noi
amar taka nile tomader songsharer okolyan hobe
na, na ami chai tomra sobai bhalo thako
goruta bhalo thakuk,
talgach duto bhalo thakuk pukure mach hok,
khete dhan hok, jhinge machay ful futuk
ar konodin oi grame opobitro korte jabo na.
Ami khat- bichanay shui, nil ronger moshari,
durgoray paposh ache, dewale ma durgar chobi
almarir bhorti kacher glass.
Bonbon kore pakha ghore. Saban mekhe roj chan kori,
ekhankar kulurgulo sara rat gheu gheu kore
taholei bujcho, kemon aramae achi ami?
Ami ar tomar meye noi, tobu tumi amar maa
Tomar aro chlel-meye ache ami r maa paho kothay?
Sei jonno tomake chthi likchi, maa
tomar lache ekta khub onurudh ache
Tulike ektu jotno koro, o bechari boro durbol.
Jotoi obhab hok, tobe Tulike tomra…
tomar paye pori maa, tumi babake bujhiye bolo,
Tulikeo jeno amar moton aramer jibone na pathay
jemon kore hok, tulir ekta biye dio.
Or ekta nijossho ghor songshar, ekjon nijer manush.
Ar jodi kunorokom-e or biye dite na paro?
Oke bolo golay dori diye morte
morleo beche jabe.
লিরিক্সঃ আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো | Amar Bhaier Rokte Rangano Ekushe Eebruary lyrics in Bengali?
Nibedita Paul
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী রচয়িতাঃ আব্দুল গাফফার চৌধুরী আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি।ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়ায়ে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি।আমার সোনার দেশের রক্তে জাগালো ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রRead more
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী
রচয়িতাঃ আব্দুল গাফফার চৌধুরী
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়ায়ে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।আমার সোনার দেশের রক্তে জাগালো ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।
জাগো নাগিনীরা জাগো নাগিনীরা জাগো কালবোশেখীরা
শিশু হত্যার বিক্ষোভে আজ কাঁপুক বসুন্ধরা,
দেশের সোনার ছেলে খুন করে রোখে মানুষের দাবী
দিন বদলের ক্রান্তিলগ্নে তবু তোরা পার পাবি?
না, না, না, না খুন রাঙা ইতিহাসে শেষ রায় দেওয়া তারই
একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।।
সেদিনও এমনি নীল গগনের বসনে শীতের শেষে
রাত জাগা চাঁদ চুমো খেয়েছিল হেসে;
পথে পথে ফোটে রজনীগন্ধা অলকনন্দা যেন,
এমন সময় ঝড় এলো এক ঝড় এলো খ্যাপা বুনো।।
সেই আঁধারের পশুদের মুখ চেনা,
তাহাদের তরে মায়ের, বোনের, ভায়ের চরম ঘৃণা
ওরা গুলি ছোঁড়ে এদেশের প্রাণে দেশের দাবীকে রোখে
ওদের ঘৃণ্য পদাঘাত এই সারা বাংলার বুকে
ওরা এদেশের নয়,
দেশের ভাগ্য ওরা করে বিক্রয়
ওরা মানুষের অন্ন, বস্ত্র, শান্তি নিয়েছে কাড়ি
একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।।
তুমি আজ জাগো তুমি আজ জাগো একুশে ফেব্রুয়ারি
আজো জালিমের কারাগারে মরে বীর ছেলে বীর নারী
আমার শহীদ ভায়ের আত্মা ডাকে
জাগো মানুষের সুপ্ত শক্তি হাটে মাঠে ঘাটে বাটে
দারুণ ক্রোধের আগুনে আবার জ্বালবো ফেব্রুয়ারি
একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।।
In English Font:
Amar Bhaier Rakta Rangano ekushe February
Amar Bhaier Rakta Rangano ekushe February
Ami ki bhulite pari.
Chelehara shoto mayer osru goraye February
Ami ki bhulite pari.
Amar Bhaier Rakta Rangano ekushe February
Ami ki bhulite pari.
Jago naginira jago kalboishakira
Shishu hottar bikkhube aaj kapuk bashundora
Desher sonar chele khun kore rokhe manusher dabi
Din bodoler krantilogne tabu tura paar pabi?
Na,Na, Na,Na khun ranga itihashe shesh ray dewa tari
ekushe February ekushe February
Shedin o emni neel gogoner boshone shiter sheshe
Raat jaga chad chumo kheyechilo heshe;
Pothe pothe fute rajanigandha oloknonda jeno,
Emon shomoy jhar elo ek jhar elo khyapa buno.
Shei adharer poshuder mukh chena,
tahader tore mayer, boner, bhayer charam ghrina
Ora guli chore edesher prane desher dabike rukhe
Oder ghrinno podaghat ei shara banglar buke
Ora edesher noy,
Desher vaggyo ora kore bikroy
Ora manusher onno, bostro, shanti niyeche kari
ekushe February ekushe February
Tumi aaj jago tumi aaj jago Ekushe February
See lessAjo jalimer karagare more bir chele bir nari
Amar shohid bhaier atma dake
Jago manusher shupta shakti hate mathe ghate bate
Darun krudher aagune abar jalbo February
ekushe February ekushe February