Sign Up

Continue with Facebook
Continue with Google
Continue with Twitter
or use


Have an account? Sign In Now

Sign In

Continue with Facebook
Continue with Google
Continue with Twitter
or use


Forgot Password?

Don't have account, Sign Up Here

Forgot Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.


Have an account? Sign In Now

Sorry, you do not have a permission to ask a question, You must login to ask question.

Continue with Facebook
Continue with Google
Continue with Twitter
or use


Forgot Password?

Need An Account, Sign Up Here
Bengali Forum Logo Bengali Forum Logo
Sign InSign Up

Bengali Forum

Bengali Forum Navigation

  • Home
  • বিভাগ
  • বিষয়
  • ব্লগ
Search
Ask A Question

Mobile menu

Close
Ask a Question
  • ইতিহাস
  • বিনোদন
  • সাহিত্য
  • রাজনীতি
  • শিক্ষা
  • সাস্থ্য
  • জীবনযাপন
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • খাদ্য
  • খেলা ধুলা
  • ধৰ্ম ও সংস্কৃতি
  • মতামত
  • বিবিধ

আজিই যুক্ত হোন বাংলা ফোরামের সাথে

জিজ্ঞেস করুন আপনার যে কোনো প্রশ্ন আর যুক্ত থাকুন সবসময়

Create A New Account

Discy Latest Questions

In: সাহিত্য

সারাংশ – গুপ্তধন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Guptodhon Rabindranath Tagore Summary

  1. Nibedita Paul

    Nibedita Paul

    • India
    • 32 Questions
    • 38 Answers
    • 5 Best Answers
    • 81 Points
    View Profile
    Nibedita Paul
    Added an answer on October 5, 2020 at 12:19 am

    গুপ্তধন ‘গুপ্তধন’ কথাটির অর্থ লুকোনাে সম্পদ, যে সম্পদ মানুষের দৃষ্টির বাইরে থাকে, তাকেই ‘গুপ্তধন’ বলে। রবীন্দ্রনাথ দেখিয়েছেন যে এই গুপ্তধন কখনই মানুষের কাছে মঙ্গলকর নয়, এর মধ্যেই লুক্কায়িত থাকে মৃত্যুর অমােঘ হাতছানি। রবীন্দ্রনাথ এভাবে ধন প্রাপ্তিতে শ্রদ্ধাশীল ছিলেন না। যে ধন থাকে মনুষ্যচক্ষুর অন্Read more

    গুপ্তধন

    ‘গুপ্তধন’ কথাটির অর্থ লুকোনাে সম্পদ, যে সম্পদ মানুষের দৃষ্টির বাইরে থাকে, তাকেই ‘গুপ্তধন’ বলে।
    রবীন্দ্রনাথ দেখিয়েছেন যে এই গুপ্তধন কখনই মানুষের কাছে মঙ্গলকর নয়, এর মধ্যেই লুক্কায়িত থাকে মৃত্যুর অমােঘ হাতছানি। রবীন্দ্রনাথ এভাবে ধন প্রাপ্তিতে শ্রদ্ধাশীল ছিলেন না। যে ধন থাকে মনুষ্যচক্ষুর অন্তরালে সে ধনকে তিনি বলেছেন ‘মরা ধন’। এই ধনের প্রতি আকর্ষণ তিনি সহ্য করতে পারেন নি। এর প্রতি আকর্ষণ কীভাবে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনকে বিপর্যস্ত করে তারই ছবি ‘গুপ্তধন’ গল্পে লেখক অঙ্কন করার চেষ্টা করেছেন।

    গুপ্তধন গল্পটির শুরুতেই একটি চমক আর সেই চমকের মাধ্যমেই মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিকতার উন্মােচন একটা পরিচয়কে প্রতিষ্ঠা করেছে। মৃত্যুঞ্জয় নিষ্ঠাবান, সদাচারী ও নিতান্ত সাধারণ কিন্তু লােভ লালসার উর্ধ্বে নয়। বিত্তের স্বাভাবিক লােভের কারণে অনন্যমনা অধ্যবসায়ী, ফলে গুপ্তধনের আবিষ্কারে মনপ্রাণ সমর্পণ করেছে। সেই আবিষ্কারের মূল সূত্রটিই যখন রহস্যজনকভাবে উধাও হয়, লেখক সেই মানসিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জীবন্ত করে তুলেছেন এবং একই সঙ্গে পাঠকমনও মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে সঙ্গে রহস্য উদঘাটনে সঙ্গী হয়েছে। নামকরণে থাকে বিষয়বস্তুর ইঙ্গিত, গল্প শুরু হয় প্রথম পঙক্তি থেকেই। গুপ্তধন গল্পও এর ব্যতিক্রম নয়।

    আসলে এই গল্পের নামকরণের মধ্য দিয়ে মানুষের অন্তরের সুপ্ত এক সম্পদের কথাই বলা হয়েছে, ইন্দ্রিয়ের তাড়নায় ও বাসনায় মােহজালে আবদ্ধ হয়ে যা ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে। এক্ষেত্রে শংকর ও মৃত্যুঞ্জয়ের উদ্দেশ্য এক – গুপ্তধনের সন্ধান। অবশ্য একসময়ে তার সন্ধান পেয়েও তারা তা গ্রহণ করেনি। সন্ন্যাসী শংকর একসময় স্বরূপানন্দ স্বামীর মাধ্যমে মৃত্যুঞ্জয় সম্পদের লােভে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করল। আবার এই শংকরই মৃত্যুঞ্জয়ের গুপ্তধনের মােহমুক্তি ঘটালেন, আলাে বাতাসে ছড়িয়ে থাকা প্রকৃত সম্পদকে চেনালেন।

    রবীন্দ্রনাথ একসময় বলেছিলেন, “সুখের উপায় বাহিরে নাই, তাহা অন্তরেই আছে, তাহা উপকরণজালের বিপুল জটিলতার মধ্যে নাই, তাহা সংযত চিত্তের নির্মল সরলতার মধ্যে জটিলতার মধ্যে নাই, তাহা সংযত চিত্তের নির্মল সরলতার মধ্যে বিরাজমান।” এই দৃষ্টিভঙ্গী থেকেই বিশ্বব্যপী অক্ষয় সম্পদের সন্ধান পেলেন মৃত্যুঞ্জয়, ত্যাগ করলেন গুপ্তধনের বিপুল সম্পদ, যা এতদিন অন্তদৃষ্টির বন্ধনে আবদ্ধ ছিল আজ তা আলাে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ল – শংকর আর মৃত্যুঞ্জয়ের প্রকৃত গুপ্তধন অর্থাৎ মনের ঐশ্বর্যের সন্ধান মিলল। আর এই তাৎপর্যই গুপ্তধন গল্পটি ব্যঞ্জনা বা ইঙ্গিতবহ হয়ে উঠেছে

    See less
    • 0
  • 1
  • 933
  • 0
Answer
In: শিক্ষা

সুখ পাওয়া যায় অনেকখানি কবির মতে সুখ লাভের উপায়টি কী?

  1. Nibedita Paul

    Nibedita Paul

    • India
    • 32 Questions
    • 38 Answers
    • 5 Best Answers
    • 81 Points
    View Profile
    Best Answer
    Nibedita Paul
    Added an answer on August 12, 2020 at 2:39 am

    তেমন করে হাত বাড়ালে, সুখ পাওয়া যায় অনেকখানি।’ উল্লিখিত অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বোঝাপড়া কবিতার অন্তর্গত। কবি এখানে বলতে চাইছেন যে, আমরা যদি আমাদের মধ্যে ভেদাভেদ, দ্বন্দ্ব না রেখে একে অপরের সাথে ভ্রাতৃসুলভ, বন্ধুসুলভ আচার-আচরণ রাখি তাহলে সেই বিষয়টি অনেক সুখের। অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ বলতে চাRead more

    তেমন করে হাত বাড়ালে,

    সুখ পাওয়া যায় অনেকখানি।’

    উল্লিখিত অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বোঝাপড়া কবিতার অন্তর্গত।
    কবি এখানে বলতে চাইছেন যে, আমরা যদি আমাদের মধ্যে ভেদাভেদ, দ্বন্দ্ব না রেখে একে অপরের সাথে ভ্রাতৃসুলভ, বন্ধুসুলভ আচার-আচরণ রাখি তাহলে সেই বিষয়টি অনেক সুখের। অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ বলতে চাইছেন যে মানুষের মধ্যে মনোমালিন্য, ভেদাভেদ থাকাটা স্বাভাবিক কিন্তু তা নিয়ে অযথা বাড়াবাড়ি ঠিক নয়। বরং মতভেদ, ঈর্ষা, হিংসা ইত্যাদি ছেড়ে দিয়ে শ্রদ্ধার সহিত একে অপরের সহিত মিলেমিশে থাকাই উত্তম। তাতে করে মনে শান্তি আসে এবং অনেক সুখ পাওয়া যায়।

    See less
    • 1
  • 1
  • 2,435
  • 0
Answer
In: শিক্ষা

সেইটা সবার চেয়ে শ্রেয় কবির মতে সবার চেয়ে শ্রেয় কি

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 155 Answers
    • 5 Best Answers
    • 786 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on August 20, 2020 at 2:13 pm

    তেমন করে হাত বাড়ালে, সুখ পাওয়া যায় অনেকখানি।’ উল্লিখিত অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বোঝাপড়া কবিতার অন্তর্গত। কবি এখানে বলতে চাইছেন যে, আমরা যদি আমাদের মধ্যে ভেদাভেদ, দ্বন্দ্ব না রেখে একে অপরের সাথে ভ্রাতৃসুলভ, বন্ধুসুলভ আচার-আচরণ রাখি তাহলে সেই বিষয়টি অনেক সুখের। অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ বলতে চাইছেন যRead more

    তেমন করে হাত বাড়ালে,

    সুখ পাওয়া যায় অনেকখানি।’

    উল্লিখিত অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বোঝাপড়া কবিতার অন্তর্গত।
    কবি এখানে বলতে চাইছেন যে, আমরা যদি আমাদের মধ্যে ভেদাভেদ, দ্বন্দ্ব না রেখে একে অপরের সাথে ভ্রাতৃসুলভ, বন্ধুসুলভ আচার-আচরণ রাখি তাহলে সেই বিষয়টি অনেক সুখের। অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ বলতে চাইছেন যে মানুষের মধ্যে মনোমালিন্য, ভেদাভেদ থাকাটা স্বাভাবিক কিন্তু তা নিয়ে অযথা বাড়াবাড়ি ঠিক নয়। বরং মতভেদ, ঈর্ষা, হিংসা ইত্যাদি ছেড়ে দিয়ে শ্রদ্ধার সহিত একে অপরের সহিত মিলেমিশে থাকাই উত্তম। তাতে করে মনে শান্তি আসে এবং অনেক সুখ পাওয়া যায়।

    See less
    • 0
  • 1
  • 1,014
  • 0
Answer
In: শিক্ষা

সেইটে সবার চেয়ে শ্রেয় কবির মতে সবার চেয়ে শ্রেয় কি? (বোঝাপড়া- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 155 Answers
    • 5 Best Answers
    • 786 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on July 26, 2020 at 4:32 pm
    This answer was edited.

    বোঝাপড়া- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রশ্নে উল্লেখিত অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত বোঝাপড়া কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। কবি কবিতায় উল্লেখ করেছেন যে- ভেসে থাকতে পারাে যদি, সেইটে সবার চেয়ে শ্রেয়। অর্থাৎ অপ্রত্যাশিত আঘাতে বিচলিত না হয়ে, হতাশ না হয়ে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে অস্তিত্ব রক্ষা করাকেই কবি 'ভেসে থাকাRead more

    বোঝাপড়া- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

    প্রশ্নে উল্লেখিত অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত বোঝাপড়া কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

    কবি কবিতায় উল্লেখ করেছেন যে- ভেসে থাকতে পারাে যদি, সেইটে সবার চেয়ে শ্রেয়। অর্থাৎ অপ্রত্যাশিত আঘাতে বিচলিত না হয়ে, হতাশ না হয়ে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে অস্তিত্ব রক্ষা করাকেই কবি ‘ভেসে থাকা অর্থে প্রকাশ করেছেন। আর সেই কাজটিই কবি সবচেয়ে শ্রেয় অর্থাৎ ভালাে এমন দাবি জানিয়েছেন।

    বোঝাপড়া কবিতার অন্যান্য প্রশ্ন উত্তর এই লিংকে 

    See less
    • 1
  • 1
  • 2,341
  • 0
Answer

গল্প : বলাই (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Bolai Short story in Bengali by Rabindranath Tagore?

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 155 Answers
    • 5 Best Answers
    • 786 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on August 23, 2020 at 3:52 pm

    বলাই - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মানুষের জীবনটা পৃথিবীর নানা জীবের ইতিহাসের নানা পরিচ্ছেদের উপসংহারে, এমন একটা কথা আছে। লোকালয়ে মানুষের মধ্যে আমরা নানা জীবজন্তুর প্রচ্ছন্ন পরিচয় পেয়ে থাকি, সে কথা জানা। বস্তুত আমরা মানুষ বলি সেই পদার্থকে যেটা আমাদের ভিতরকার সব জীবজন্তুকে মিলিয়ে এক করে নিয়েছে-- আমাদের বাঘ-গোরRead more

    বলাই – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

    মানুষের জীবনটা পৃথিবীর নানা জীবের ইতিহাসের নানা পরিচ্ছেদের উপসংহারে, এমন একটা কথা আছে। লোকালয়ে মানুষের মধ্যে আমরা নানা জীবজন্তুর প্রচ্ছন্ন পরিচয় পেয়ে থাকি, সে কথা জানা। বস্তুত আমরা মানুষ বলি সেই পদার্থকে যেটা আমাদের ভিতরকার সব জীবজন্তুকে মিলিয়ে এক করে নিয়েছে– আমাদের বাঘ-গোরুকে এক খোঁয়াড়ে দিয়েছে পুরে, অহি-নকুলকে এক খাঁচায় ধরে রেখেছে। যেমন রাগিনী বলি তাকেই যা আপনার ভিতরকার সমুদয় সা-রে-গা-মা-গুলোকে সংগীত করে তোলে, তার পর থেকে তাদের আর গোলমাল করবার সাধ্য থাকে না। কিন্তু, সংগীতের ভিতরে এক-একটি সুর অন্য সকল সুরকে ছাড়িয়ে বিশেষ হয়ে ওঠে– কোনোটাতে মধ্যম, কোনোটাতে কোমলগান্ধার, কোনোটাতে পঞ্চম।

     

    আমার ভাইপো বলাই– তার প্রকৃতিতে কেমন করে গাছপালার মূল সুরগুলোই হয়েছে প্রবল। ছেলেবেলা থেকেই চুপচাপ চেয়ে চেয়ে দেখাই তার অভ্যাস, নড়ে-চড়ে বেড়ানো নয়। পুবদিকের আকাশে কালো মেঘ স্তরে স্তরে স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়ায়, ওর সমস্ত মনটাতে ভিজে হাওয়া যেন শ্রাবণ-অরণ্যের গন্ধ নিয়ে ঘনিয়ে ওঠে; ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ে, ওর সমস্ত গা যেন শুনতে পায় সেই বৃষ্টির শব্দ। ছাদের উপর বিকেল-বেলাকার রোদ্‌দুর পড়ে আসে, গা খুলে বেড়ায়; সমস্ত আকাশ থেকে যেন কী একটা সংগ্রহ করে নেয়। মাঘের শেষে আমের বোল ধরে, তার একটা নিবিড় আনন্দ জেগে ওঠে ওর রক্তের মধ্যে, একটা কিসের অব্যক্ত স্মৃতিতে; ফাল্গুনে পুষ্পিত শালবনের মতোই ওর অন্তর-প্রকৃতিটা চার দিকে বিস্তৃত হয়ে ওঠে, ভরে ওঠে, তাতে একটা ঘন রঙ লাগে। তখন ওর একলা বসে বসে আপন মনে কথা কইতে ইচ্ছে করে, যা-কিছু গল্প শুনেছে সব নিয়ে জোড়াতাড়া দিয়ে; অতি পুরানো বটের কোটরে বাসা বেঁধে আছে যে একজোড়া অতি পুরানো পাখি, বেঙ্গমা বেঙ্গমী, তাদের গল্প। ওই ড্যাবা-ড্যাবা-চোখ-মেলে-সর্বদা-তাকিয়ে-থাকা ছেলেটা বেশি কথা কইতে পারে না। তাই ওকে মনে মনে অনেক বেশি ভাবতে হয়। ওকে একবার পাহাড়ে নিয়ে গিয়েছিলুম। আমাদের বাড়ির সামনে ঘন সবুজ ঘাস পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নিচে পর্যন্ত নেবে গিয়েছে, সেইটে দেখে আর ওর মন ভারি খুশি হয়ে ওঠে। ঘাসের আস্তরণটা একটা স্থির পদার্থ তা ওর মনে হয় না; ওর বোধ হয়, যেন ওই ঘাসের পুঞ্জ একটা গড়িয়ে-চলা খেলা, কেবলই গড়াচ্ছে; প্রায়ই তারই সেই ঢালু বেয়ে ও নিজেও গড়াত– সমস্ত দেহ দিয়ে ঘাস হয়ে উঠত– গড়াতে গড়াতে ঘাসের আগায় ওর ঘাড়ের কাছে সুড়সুড়ি লাগত আর ও খিলখিল করে হেসে উঠত।

     

    রাত্রে বৃষ্টির পরে প্রথম সকালে সামনের পাহাড়ের শিখর দিয়ে কাঁচা সোনারঙের রোদ্‌দুর দেবদারুবনের উপরে এসে পড়ে– ও কাউকে না বলে আস্তে আস্তে গিয়ে সেই দেবদারুবনের নিস্তব্ধ ছায়াতলে একলা অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, গা ছমছম করে– এই সব প্রকাণ্ড গাছের ভিতরকার মানুষকে ও যেন দেখতে পায়। তারা কথা কয় না, কিন্তু সমস্তই যেন জানে। তারা-সব যেন অনেক কালের দাদামশায়, ‘এক যে ছিল রাজা’দের আমলের।

     

    ওর ভাবে-ভোলা চোখটা কেবল যে উপরের দিকেই তা নয়, অনেক সময় দেখেছি, ও আমার বাগানে বেড়াচ্ছে মাটির দিকে কী খুঁজে খুঁজে। নতুন অঙ্কুরগুলো তাদের কোঁকড়ানো মাথাটুকু নিয়ে আলোতে ফুটে উঠছে এই দেখতে তার ঔৎসুক্যের সীমা নেই। প্রতিদিন ঝুঁকে পড়ে পড়ে তাদেরকে যেন জিজ্ঞাসা করে, ‘তার পরে? তার পরে? তার পরে?’ তারা ওর চির-অসমাপ্ত গল্প। সদ্য গজিয়ে-ওঠা কচি কচি পাতা, তাদের সঙ্গে ওর কী যে একটা বয়স্যভাব তা ও কেমন করে প্রকাশ করবে? তারাও ওকে কী একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবার জন্য আঁকুপাঁকু করে। হয়তো বলে, ‘তোমার নাম কী।’ হয়তো বলে, ‘তোমার মা কোথায় গেল।’ বলাই মনে মনে উত্তর করে, ‘আমার মা তো নেই।’

     

    কেউ গাছের ফুল তোলে এইটে ওর বড়ো বাজে। আর-কারও কাছে ওর এই সংকোচের কোনো মানে নেই, এটাও সে বুঝেছে। এইজন্যে ব্যথাটা লুকোতে চেষ্টা করে। ওর বয়সের ছেলেগুলো গাছে ঢিল মেরে মেরে আমলকি পাড়ে, ও কিছু বলতে পারে না, সেখান থেকে মুখ ফিরিয়ে চলে যায়। ওর সঙ্গীরা ওকে খ্যাপাবার জন্যে বাগানের ভিতর দিয়ে চলতে চলতে ছড়ি দিয়ে দু পাশের গাছগুলোকে মারতে মারতে চলে, ফস্‌ ক’রে বকুলগাছের একটা ডাল ভেঙে নেয়– ওর কাঁদতে লজ্জা করে পাছে সেটাকে কেউ পাগলামি মনে করে। ওর সব-চেয়ে বিপদের দিন, যেদিন ঘাসিয়াড়া ঘাস কাটতে আসে। কেননা, ঘাসের ভিতরে ভিতরে ও প্রত্যহ দেখে দেখে বেড়িয়েছে– এতটুকু-টুকু লতা, বেগনি হল্‌দে নামহারা ফুল, অতি ছোটো ছোটো; মাঝে মাঝে কন্টিকারি গাছ, তার নীল নীল ফুলের বুকের মাঝখানটিতে ছোট্ট একটুখানি সোনার ফোঁটা; বেড়ার কাছে কাছে কোথাও-বা কালমেঘের লতা, কোথাও-বা অনন্তমূল; পাখিতে-খাওয়া নিমফলের বিচি পড়ে ছোটো ছোটো চারা বেরিয়েছে, কী সুন্দর তার পাতা– সমস্তই নিষ্ঠুর নিড়নি দিয়ে দিয়ে নিড়িয়ে ফেলা হয়। তারা বাগানের শৌখিন গাছ নয়, তাদের নালিশ শোনবার কেউ নেই।

     

    এক-একদিন ওর কাকির কোলে এসে বসে তার গলা জড়িয়ে বলে, ‘ওই ঘাসিয়ারাকে বলো-না, আমার ওই গাছগুলো যেন না কাটে।’

     

    কাকি বলে, ‘বলাই, কী যে পাগলের মতো বকিস। ও যে সব জঙ্গল, সাফ না করলে চলবে কেন।’

     

    বলাই অনেকদিন থেকে বুঝতে পেরেছিল, কতকগুলো ব্যথা আছে যা সম্পূর্ণ ওর একলারই– ওর চার দিকের লোকের মধ্যে তার কোনো সাড়া নেই।

     

    এই ছেলের আসল বয়স সেই কোটি বৎসর আগেকার দিনে, যেদিন সমুদ্রের গর্ভ থেকে নতুন-জাগা পঙ্কস্তরের মধ্যে পৃথিবীর ভাবী অরণ্য আপনার জন্মের প্রথম ক্রন্দন উঠিয়েছে– সেদিন পশু নেই, পাখি নেই, জীবনের কলরব নেই, চার দিকে পাথর আর পাঁক আর জল। কালের পথে সমস্ত জীবের অগ্রগামী গাছ, সূর্যের দিকে জোড় হাত তুলে বলেছে, ‘আমি থাকব, আমি বাঁচব, আমি চিরপথিক, মৃত্যুর পর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে অন্তহীন প্রাণের বিকাশতীর্থে যাত্রা করব রৌদ্রে-বাদলে, দিনে-রাত্রে।’ গাছের সেই রব আজও উঠছে বনে বনে, পর্বত প্রান্তরে, তাদেরই শাখায় পত্রে ধরণীর প্রাণ বলে বলে উঠছে, ‘আমি থাকব, আমি থাকব।’ বিশ্বপ্রাণের মূক ধাত্রী এই গাছ নিরবচ্ছিন্ন কাল ধরে দ্যুলোককে দোহন করে; পৃথিবীর অমৃতভাণ্ডারের জন্যে প্রাণের তেজ, প্রাণের রস, প্রাণের লাবণ্য সঞ্চয় করে; আর উৎকণ্ঠিত প্রাণের বাণীকে অহর্নিশি আকাশে উচ্ছ্বসিত করে তোলে, ‘আমি থাকব।’ সেই বিশ্বপ্রাণের বাণী কেমন-এক-রকম করে আপনার রক্তের মধ্যে শুনতে পেয়েছিল ওই বলাই। আমরা তাই নিয়ে খুব হেসেছিলুম।

     

    একদিন সকালে একমনে খবরের কাগজ পড়ছি, বলাই আমাকে ব্যস্ত করে ধরে নিয়ে গেল বাগানে। এক জায়গায় একটা চারা দেখিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করলে, ‘কাকা, এ গাছটা কী।’

     

    দেখলুম একটা শিমুলগাছের চারা বাগানের খোওয়া-দেওয়া রাস্তার মাঝখানেই উঠেছে।

     

    হায় রে, বলাই ভুল করেছিল আমাকে ডেকে নিয়ে এসে। এতটুকু যখন এর অঙ্কুর বেরিয়েছিল, শিশুর প্রথম প্রলাপটুকুর মতো, তখনই এটা বলাইয়ের চোখে পড়েছে। তার পর থেকে বলাই প্রতিদিন নিজের হাতে একটু একটু জল দিয়েছে, সকালে বিকেলে ক্রমাগতই ব্যগ্র হয়ে দেখেছে কতটুকু বাড়ল। শিমুলগাছ বাড়েও দ্রুত, কিন্তু বলাইয়ের আগ্রহের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে না। যখন হাত দুয়েক উঁচু হয়েছে তখন ওর পত্রসমৃদ্ধি দেখে ভাবলে এ একটা আশ্চর্য গাছ, শিশুর প্রথম বুদ্ধির আভাস দেখবামাত্র মা যেমন মনে করে আশ্চর্য শিশু। বলাই ভাবলে, আমাকেও চমৎকৃত করে দেবে।

     

    আমি বললুম, ‘মালীকে বলতে হবে, এটা উপড়ে ফেলে দেবে।’

     

    বলাই চমকে উঠল। এ কী দারুণ কথা! বললে, ‘না, কাকা, তোমার দুটি পায়ে পড়ি, উপড়ে ফেলো না।’

     

    আমি বললুম, ‘কী যে বলিস তার ঠিক নেই। একেবারে রাস্তার মাঝখানে উঠেছে। বড়ো হলে চার দিকে তুলো ছড়িয়ে অস্থির করে দেবে।’

     

    আমার সঙ্গে যখন পারলে না, এই মাতৃহীন শিশুটি গেল তার কাকির কাছে। কোলে বসে তার গলা জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললে, ‘কাকি, তুমি কাকাকে বারণ করে দাও, গাছটা যেন না কাটেন।’

     

    উপায়টা ঠিক ঠাওরেছিল। ওর কাকি আমাকে ডেকে বললে, ‘ওগো, শুনছ। আহা, ওর গাছটা রেখে দাও।’

     

    রেখে দিলুম। গোড়ায় বলাই না যদি দেখাত তবে হয়তো ওটা আমার লক্ষ্যই হত না। কিন্তু, এখন রোজই চোখে পড়ে। বছরখানেকের মধ্যে গাছটা নির্লজ্জের মতো মস্ত বেড়ে উঠল। বলাইয়ের এমন হল, এই গাছটার ‘পরেই তার সব-চেয়ে স্নেহ।

     

    গাছটাকে প্রতিদিনই দেখাচ্ছে নিতান্ত নির্বোধের মতো। একটা অজায়গায় এসে দাঁড়িয়ে কাউকে খাতির নেই, একেবারে খাড়া লম্বা হয়ে উঠছে। যে দেখে সেই ভাবে, এটা এখানে কী করতে! আরও দু-চারবার এর মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব করা গেল। বলাইকে লোভ দেখালুম, এর বদলে খুব ভালো কতকগুলো গোলাপের চারা আনিয়ে দেব।

     

    বললেম, ‘নিতান্তই শিমুলগাছই যদি তোমার পছন্দ, তবে আর-একটা চারা আনিয়ে বেড়ার ধারে পুঁতে দেব, সুন্দর দেখতে হবে।’

     

    কিন্তু কাটবার কথা বললেই বলাই আঁতকে ওঠে, আর ওর কাকি বলে, ‘আহা, এমনিই কী খারাপ দেখতে হয়েছে!’

     

    আমার বউদিদির মৃত্যু হয়েছে যখন এই ছেলেটি তাঁর কোলে। বোধ করি সেই শোকে দাদার খেয়াল গেল, তিনি বিলেতে এঞ্জিনিয়ারিং শিখতে গেলেন। ছেলেটি আমার নিঃসন্তান ঘরে কাকির কোলেই মানুষ। বছর দশেক পরে দাদা ফিরে এসে বলাইকে বিলাতি কায়দায় শিক্ষা দেবেন বলে প্রথমে নিয়ে গেলেন সিমলেয়– তার পরে বিলেত নিয়ে যাবার কথা।

     

    কাঁদতে কাঁদতে কাকির কোল ছেড়ে বলাই চলে গেল, আমাদের ঘর হল শূন্য।

     

    তার পরে দু বছর যায়। ইতিমধ্যে বলাইয়ের কাকি গোপনে চোখের জল মোছেন, আর বলাইয়ের শূন্য শোবার ঘরে গিয়ে তার ছেঁড়া একপাটি জুতো, তার রবারের ফাটা গোলা, আর জানোয়ারের গল্পওয়ালা ছবির বই নাড়েন-চাড়েন; এতদিনে এই-সব চিহ্নকে ছাড়িয়ে গিয়ে বলাই অনেক বড়ো হয়ে উঠেছে, এই কথা বসে বসে চিন্তা করেন।

     

    কোনো এক সময়ে দেখলুম, লক্ষ্মীছাড়া শিমুলগাছটার বড়ো বাড় বেড়েছে– এতদূর অসংগত হয়ে উঠেছে যে, আর প্রশ্রয় দেওয়া চলে না। এক সময়ে দিলুম তাকে কেটে।

     

    এমন সময়ে সিমলে থেকে বলাই তার কাকিকে এক চিঠি পাঠালে, ‘কাকি, আমার সেই শিমুলগাছের একটা ফোটোগ্রাফ পাঠিয়ে দাও।’

     

    বিলেত যাবার পূর্বে একবার আমাদের কাছে আসবার কথা ছিল, সে আর হল না। তাই বলাই তার বন্ধুর ছবি নিয়ে যেতে চাইলে।

     

    তার কাকি আমাকে ডেকে বললেন, ‘ওগো শুনছ, একজন ফোটোগ্রাফওয়ালা ডেকে আনো।’

     

    জিজ্ঞাসা করলুম, ‘কেন।’

     

    বলাইয়ের কাঁচা হাতের লেখা চিঠি আমাকে দেখতে দিলেন।

     

    আমি বললেম, ‘সে গাছ তো কাটা হয়ে গেছে।’

     

    বলাইয়ের কাকি দুদিন অন্ন গ্রহণ করলেন না, আর অনেকদিন পর্যন্ত আমার সঙ্গে একটি কথাও কন নি। বলাইয়ের বাবা ওকে তাঁর কোল থেকে নিয়ে গেল, সে যেন ওঁর নাড়ী ছিঁড়ে; আর ওর কাকা তাঁর বলাইয়ের ভালোবাসার গাছটিকে চিরকালের মতো সরিয়ে দিলে, তাতেও ওঁর যেন সমস্ত সংসারকে বাজল, তাঁর বুকের মধ্যে ক্ষত করে দিলে।

     

    ঐ গাছ যে ছিল তাঁর বলাইয়ের প্রতিরূপ, তারই প্রাণের দোসর।

    See less
    • 0
  • 1
  • 2,057
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

রবীন্দ্রসংগীত : তুমি কোন কাননের ফুল | Tumi Kon Kanoner Phool lyrics in Bengali with English Translation?

  1. Nibedita Paul

    Nibedita Paul

    • India
    • 32 Questions
    • 38 Answers
    • 5 Best Answers
    • 81 Points
    View Profile
    Nibedita Paul
    Added an answer on May 30, 2020 at 4:32 am

    তুমি কোন কাননের ফুল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাগ: মিশ্র পিলু-বারোয়াঁ তাল: দাদরা রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1886 স্বরলিপিকার: জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর তুমি কোন কাননের ফুল কোন গগণের তারা তোমায় কোথায় দেখেছি যেন কোন স্বপনের পাড়া কবে তুমি গেয়েছিলে আঁখির পানে চেয়েছিলে ভুলে গিয়েছি.. শুধু মনের মধ্যে জেগে আছে ওই নয়নের তারাRead more

    তুমি কোন কাননের ফুল

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    রাগ: মিশ্র পিলু-বারোয়াঁ
    তাল: দাদরা
    রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1886
    স্বরলিপিকার: জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর

    তুমি কোন কাননের ফুল
    কোন গগণের তারা
    তোমায় কোথায় দেখেছি
    যেন কোন স্বপনের পাড়া

    কবে তুমি গেয়েছিলে
    আঁখির পানে চেয়েছিলে
    ভুলে গিয়েছি..
    শুধু মনের মধ্যে জেগে আছে
    ওই নয়নের তারা..
    তুমি কোন কাননের ফুল
    কোন গগণের তারা।

    তুমি কথা কয়ো না
    তুমি চেয়ে চলে যাও
    ওই চাঁদের আলোতে
    তুমি হেসে গলে যাও
    আমি ঘুমের ঘোরে চাঁদের পানে
    চেয়ে থাকি মধুর প্রানে…
    তোমার আঁখির মতন দুটি তারা
    ঢালুক কিরণধারা…

    তুমি কোন কাননের ফুল
    কোন গগনের তারা
    তোমায় কোথায় দেখেছি
    যেন কোন স্বপনের পাড়া..
    তুমি কোন কাননের ফুল
    কোন গগণের তারা।

    →কানন- বাগান
    →গগন- আকাশ
    →আঁখি- চক্ষু
    →পানে – দিকে
    →নয়ন- চক্ষু
    →কিরণ- আলো, রশ্মি

    English Translation:

    Rabindranath Tagore

    Which garden do you belong O’ flower?
    Which sky do you belong O’ star?
    Where did I saw you!
    May be in my world of fantasy.

    When did you sing last
    Staring at my eyes,
    I don’t remember .
    Only thing left in my heart
    Is the sparkle of your eyes .

    You don’t speak at all
    Just offer a glimpse on your passage .
    You melt away in this moonlight
    while smiling.
    I gaze at the moon
    And keep wondering while sleeping .
    Let two stars, resembling your eyes
    May downpour streams of rays.

    Which garden do you belong O’ flower?
    Which sky do you belong O’ star?
    Where did I saw you!
    May be in my world of fantasy.
    Which garden do you belong O’ flower?
    Which sky do you belong O’ star?

     

    English Transliteration:

    Tumi Kon kanoner ful
    Kon Gogoner tara
    tomay kuthay dekeschi
    Jeno kuno shopner para

    Kobe tumi Geyechile
    Aakir pane cheyechile
    Bhule giyechi
    Shudu moner moddhe jege aache
    Oi nayaner tara
    Tumi Kon kanoner ful
    Kon Gogoner tara

    Tumi Kotha Koyo na
    tumi cheye chole jao
    oi chader aalote
    tumi heshe gole jao
    Ami ghomer ghure chader pane
    cheye thaki madhur prane
    Tumar aakhir moton duti tara
    Daluk kirondhara

    Tumi Kon kanoner ful
    Kon Gogoner tara
    tomay kuthay dekeschi
    Deno kuno shopner para
    Tumi Kon kanoner ful
    Kon Gogoner tara

     

    See less
    • 0
  • 1
  • 1,946
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

কবিতা : পরশ পাথর (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Parash Pathar Poem by Rabindranath Tagore in Bengali?

  1. Nibedita Paul

    Nibedita Paul

    • India
    • 32 Questions
    • 38 Answers
    • 5 Best Answers
    • 81 Points
    View Profile
    Nibedita Paul
    Added an answer on May 30, 2020 at 11:05 pm

    পরশ-পাথর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থ : সোনার তরী খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর। মাথায় বৃহৎ জটা ধূলায় কাদায় কটা, মলিন ছায়ার মতো ক্ষীণ কলেবর। ওষ্ঠে অধরেতে চাপি অন্তরের দ্বার ঝাঁপি রাত্রিদিন তীব্র জ্বালা জ্বেলে রাখে চোখে। দুটো নেত্র সদা যেন নিশার খদ্যোত-হেন উড়ে উড়ে খোঁজে কারে নিজের আলোকে। নাহি যারRead more

    পরশ-পাথর

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    কাব্যগ্রন্থ : সোনার তরী

    খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর।
    মাথায় বৃহৎ জটা ধূলায় কাদায় কটা,
    মলিন ছায়ার মতো ক্ষীণ কলেবর।
    ওষ্ঠে অধরেতে চাপি অন্তরের দ্বার ঝাঁপি
    রাত্রিদিন তীব্র জ্বালা জ্বেলে রাখে চোখে।
    দুটো নেত্র সদা যেন নিশার খদ্যোত-হেন
    উড়ে উড়ে খোঁজে কারে নিজের আলোকে।
    নাহি যার চালচুলা গায়ে মাখে ছাইধুলা
    কটিতে জড়ানো শুধু ধূসর কৌপীন,
    ডেকে কথা কয় তারে কেহ নাই এ সংসারে
    পথের ভিখারি হতে আরো দীনহীন,
    তার এত অভিমান, সোনারুপা তুচ্ছজ্ঞান,
    রাজসম্পদের লাগি নহে সে কাতর,
    দশা দেখে হাসি পায় আর কিছু নাহি চায়
    একেবারে পেতে চায় পরশপাথর!

    সম্মুখে গরজে সিন্ধু অগাধ অপার।
    তরঙ্গে তরঙ্গ উঠি হেসে হল কুটিকুটি
    সৃষ্টিছাড়া পাগলের দেখিয়া ব্যাপার।
    আকাশ রয়েছে চাহি, নয়নে নিমেষ নাহি,
    হু হু করে সমীরণ ছুটেছে অবাধ।
    সূর্য ওঠে প্রাতঃকালে পূর্ব গগনের ভালে,
    সন্ধ্যাবেলা ধীরে ধীরে উঠে আসে চাঁদ।
    জলরাশি অবিরল করিতেছে কলকল,
    অতল রহস্য যেন চাহে বলিবারে।
    কাম্য ধন আছে কোথা জানে যেন সব কথা,
    সে-ভাষা যে বোঝে সেই খুঁজে নিতে পারে।
    কিছুতে ভ্রূক্ষেপ নাহি, মহা গাথা গান গাহি
    সমুদ্র আপনি শুনে আপনার স্বর।
    কেহ যায়, কেহ আসে, কেহ কাঁদে, কেহ হাসে,
    খ্যাপা তীরে খুঁজে ফিরে পরশ-পাথর

    একদিন, বহুপূর্বে, আছে ইতিহাস–
    নিকষে সোনার রেখা সবে যেন দিল দেখা–
    আকাশে প্রথম সৃষ্টি পাইল প্রকাশ।
    মিলি যত সুরাসুর কৌতূহলে ভরপুর
    এসেছিল পা টিপিয়া এই সিন্ধুতীরে।
    অতলের পানে চাহি নয়নে নিমেষ নাহি
    নীরবে দাঁড়ায়ে ছিল স্থির নতশিরে।
    বহুকাল স্তব্ধ থাকি শুনেছিল মুদে আঁখি
    এই মহাসমুদ্রের গীতি চিরন্তন;
    তার পরে কৌতূহলে ঝাঁপায়ে অগাধ জলে
    করেছিল এ অনন্ত রহস্য মন্থন।
    বহুকাল দুঃখ সেবি নিরখিল, লক্ষ্মীদেবী
    উদিলা জগৎ-মাঝে অতুল সুন্দর।
    সেই সমুদ্রের তীরে শীর্ণ দেহে জীর্ণ চীরে
    খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর।

    এতদিনে বুঝি তার ঘুচে গেছে আশ।
    খুঁজে খুঁজে ফিরে তবু বিশ্রাম না জানে কভু,
    আশা গেছে, যায় নাই খোঁজার অভ্যাস।
    বিরহী বিহঙ্গ ডাকে সারা নিশি তরুশাখে,
    যারে ডাকে তার দেখা পায় না অভাগা।
    তবু ডাকে সারাদিন আশাহীন শ্রান্তিহীন,
    একমাত্র কাজ তার ডেকে ডেকে জাগা।
    আর-সব কাজ ভুলি আকাশে তরঙ্গ তুলি
    সমুদ্র না জানি কারে চাহে অবিরত।
    যত করে হায় হায় কোনোকালে নাহি পায়,
    তবু শূন্যে তোলে বাহু, ওই তার ব্রত।
    কারে চাহি ব্যোমতলে গ্রহতারা লয়ে চলে,
    অনন্ত সাধনা করে বিশ্বচরাচর।
    সেইমতো সিন্ধুতটে ধূলিমাথা দীর্ঘজটে
    খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর।

    একদা শুধাল তারে গ্রামবাসী ছেলে,
    “সন্ন্যাসীঠাকুর, এ কী, কাঁকালে ও কী ও দেখি,
    সোনার শিকল তুমি কোথা হতে পেলে।’
    সন্ন্যাসী চমকি ওঠে শিকল সোনার বটে,
    লোহা সে হয়েছে সোনা জানে না কখন।
    একি কাণ্ড চমৎকার, তুলে দেখে বার বার,
    আঁখি কচালিয়া দেখে এ নহে স্বপন।
    কপালে হানিয়া কর বসে পড়ে ভূমি-‘পর,
    নিজেরে করিতে চাহে নির্দয় লাঞ্ছনা;
    পাগলের মতো চায়– কোথা গেল, হায় হায়,
    ধরা দিয়ে পলাইল সফল বাঞ্ছনা।
    কেবল অভ্যাসমত নুড়ি কুড়াইত কত,
    ঠন্ ক’রে ঠেকাইত শিকলের ‘পর,
    চেয়ে দেখিত না, নুড়ি দূরে ফেলে দিত ছুঁড়ি,
    কখন ফেলেছে ছুঁড়ে পরশ-পাথর।
    তখন যেতেছে অস্তে মলিন তপন।
    আকাশ সোনার বর্ণ, সমুদ্র গলিত স্বর্ণ,
    পশ্চিম দিগ্বধূ দেখে সোনার স্বপন।
    সন্ন্যাসী আবার ধীরে পূর্বপথে যায় ফিরে
    খুঁজিতে নূতন ক’রে হারানো রতন।
    সে শকতি নাহি আর নুয়ে পড়ে দেহভার
    অন্তর লুটায় ছিন্ন তরুর মতন।
    পুরাতন দীর্ঘ পথ পড়ে আছে মৃতবৎ
    হেথা হতে কত দূর নাহি তার শেষ।
    দিক হতে দিগন্তরে মরুবালি ধূ ধূ করে,
    আসন্ন রজনী-ছায়ে ম্লান সর্বদেশ।
    অর্ধেক জীবন খুঁজি কোন্ ক্ষণে চক্ষু বুজি
    স্পর্শ লভেছিল যার এক পল ভর,
    বাকি অর্ধ ভগ্ন প্রাণ আবার করিছে দান
    ফিরিয়া খুঁজিতে সেই পরশ-পাথর

    English Transliteration: 

    Porosh pathor
    Rabindranath Tagore

    Khapa khuje khuje fire porosh pathor
    Mathay brihot jota dhulay kaday kota,
    Molin chayar moto khin kolebor.
    Oshte Odhorete chapi ontorer daar jhapi
    Ratridin tibro jala jele rakhe chokhe.
    Duto netro shoda jeno nishar khodyet heno
    Ure Ure khoje kare nijer aloke
    Nahi njar chalchula gaye makhe chaidhula
    Kotite jorano sudhu dushor koupin
    deke kotha koy tare keho nai ei sonshare
    Pother vikhari hote aaro dinhin,
    Tar eto oviman, sonarupa tucchogyan,
    Rajshompoder lagi nohe she kator,
    Dosha dekhe hashi pay aar kichu nahi chay
    Ekebare pete chay poroshpathar
    Shommukhe goroje shindhu ogadh opar.
    tarange taranga uthi heshe holo kutikuti
    Sristichara pagoler dekia byapar.

    Akashe royeche chahi, nayane nimesh nahi,
    Hu Hu kore shomiron chutche obad.
    Surja uthe pratohkale purba gogoner bhale,
    Shondhya bela dhire dhire uthe aashe chada.
    jolrashi obirol Koriteche kolkol,
    Otol rohoshyo jeno chahe bolibare.
    kammyo dhan aache kutha jane jeno shob kotha
    She bhasha je buje shei khuje nite pare
    Kichute bhrukkhep nahi, Moha gatha gaan gahi
    Shamudra aaponi shune aapnar shor.
    Keho jay, keho aashe, keho kade, keho hashe
    Khapa khuje khuje fire porosh pathor
    Ekdin bahupurbe, aache itihash-
    Nikoshe shonar rekha shobe jeno dilo dekha-
    Akashe prothom sristi pailo prokash.
    Mili jata shura shur koutohole bharpur
    Eshechilo pa tipiya ei shindutire.
    Otoler pane chahi nayane nimesh nahi
    Nirobe darayechilo stir natoshire.
    Bahukal shabdo thaki shunechilo mude aakhi
    Ei mohashamudrer giti chironton
    tar pore koutuhole japaye ogad jole
    Korechilo e ononto rahoshyo monthon.
    bahukal dukkho shebi Nirokhilo, lakkhidebi
    Udila jagath-majhe otul sundar.
    Shei shamudrer tire shirno dehe jirno chire
    Khapa khuje khuje fire porosh pathor
    Etodine bujhi tar guche geche aasha.
    Khuje khuje fire tobo bisram na jane kabhu
    Asha geche jay nai khujar obhyash
    Birohi bihongo dake shara nishi tarushakhe,
    Jare dake tar deka pay na ovaga.
    tabu dake sharadin aashahin srantihin
    Ekmatro kaj tar deke deke jaga
    Aar shob kaj bhuli akashe taranga tuli
    Shamudra na jani kare chahe obiroto
    Jata kore hay hay konokale nahi pay,
    Tabu shunnen tule bahu, oi tar broto.
    kare chahi byomtole grohotara loye chole
    Ononto shadona kore bisshochorachor
    Sheimoto shindutote dhulimakha dhirgojote
    Khapa khuje khuje fire porosh pathor
    Ekoda shudalo tare grambashi chele,
    Shonnashithakur, E ki, kakale o ki o deki,
    Sonar shikol tumi kutha hote pele.
    Shonnashi chomki othe shikol sonar bote,
    Loha she hoyeche sona jane na kakhan.
    Eki kando chomotkar, tule dekhe bar bar,
    Aakhi kochaliya dekhe e nohe shopon.
    Kopale hania kor boshe pore bhumi por,
    nijer korite chahe nirdoy lanchona;
    pagoler moto chay- kotha gelo, hay hay,
    Dhora diye polailo shofol banchona.
    kebol obhyashmoto nuri kuraito koto,
    Than kore thekaito shikoloer por,
    Cheye dekito na, nuri dure fele dito churi,
    kakhan feleche chure porosh pathar
    Takhan jeteche oste molin tapan.
    Akash sonar borno, samudra golito shorno,
    poshim digdu sonar shopon.
    Shonnashi abar dhire purbapothe jay fire
    Khujite natun kore harano ratan.
    She shokti nahi aar nuye pore deho bhar
    Antar lutay chinno tarur moton
    puratan dhirgo poth pore aaache mritobot
    Hetha hote koto dur nahi tar shesh.
    Dik hote digontore marubali dhu dhu kore,
    Aashonno rajani-chaye mlan sorbodesh.
    Ordek jibon khuji kon khone chakkhu buji
    sparsho lovechilo jar ek pal bhar
    baki ordho vogno pran abar koriche daan
    Firiya khujite shei porosh pathar.

    See less
    • 0
  • 1
  • 3,580
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

কবিতা : নিষ্কৃতি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Nishkriti by Rabindranath Tagore in Bengali?

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 155 Answers
    • 5 Best Answers
    • 786 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on September 5, 2020 at 2:37 am

    নিষ্কৃতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মা কেঁদে কয়, "'মঞ্জুলী মোর ঐ তো কচি মেয়ে, ওরি সঙ্গে বিয়ে দেবে?--বয়সে ওর চেয়ে পাঁচগুনো সে বড়ো;-- তাকে দেখে বাছা আমার ভয়েই জড়সড়। এমন বিয়ে ঘটতে দেব নাকো।" বাপ বললে, "কান্না তোমার রাখো! পঞ্চাননকে পাওয়া গেছে অনেক দিনের খোঁজে, জান না কি মস্ত কুলীন ও যে। সমাজে তো উঠতে হবে সেটা কিRead more

    নিষ্কৃতি

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

    মা কেঁদে কয়, “‘মঞ্জুলী মোর ঐ তো কচি মেয়ে,
    ওরি সঙ্গে বিয়ে দেবে?–বয়সে ওর চেয়ে
    পাঁচগুনো সে বড়ো;–
    তাকে দেখে বাছা আমার ভয়েই জড়সড়।
    এমন বিয়ে ঘটতে দেব নাকো।”

    বাপ বললে, “কান্না তোমার রাখো!
    পঞ্চাননকে পাওয়া গেছে অনেক দিনের খোঁজে,
    জান না কি মস্ত কুলীন ও যে।
    সমাজে তো উঠতে হবে সেটা কি কেউ ভাব।
    ওকে ছাড়লে পাত্র কোথায় পাব।”

    মা বললে, “কেন ঐ যে চাটুজ্যেদের পুলিন,
    নাই বা হল কুলীন,–
    দেখতে যেমন তেমনি স্বভাবখানি,
    পাস করে ফের পেয়েছে জলপানি,
    সোনার টুকরো ছেলে।
    এক-পাড়াতে থাকে ওরা–ওরি সঙ্গে হেসে খেলে
    মেয়ে আমার মানুষ হল; ওকে যদি বলি আমি আজই
    এক্খনি হয় রাজি।”

    বাপ বললে, “থামো,
    আরে আরে রামোঃ।
    ওরা আছে সমাজের সব তলায়।
    বামুন কি হয় পৈতে দিলেই গলায়?
    দেখতে শুনতে ভালো হলেই পাত্র হল! রাধে!
    স্ত্রীবুদ্ধি কি শাস্ত্রে বলে সাধে।”

    যেদিন ওরা গিনি দিয়ে দেখলে কনের মুখ
    সেদিন থেকে মঞ্জুলিকার বুক
    প্রতি পলের গোপন কাঁটায় হল রক্তে মাখা।
    মায়ের স্নেহ অন্তর্যামী, তার কাছে তো রয় না কিছুই ঢাকা;
    মায়ের ব্যথা মেয়ের ব্যথা চলতে খেতে শুতে
    ঘরের আকাশ প্রতিক্ষণে হানছে যেন বেদনা-বিদ্যুতে।

    অটলতার গভীর গর্ব বাপের মনে জাগে,–
    সুখে দুঃখে দ্বেষে রাগে
    ধর্ম থেকে নড়েন তিনি নাই হেন দৌর্বল্য।
    তাঁর জীবনের রথের চাকা চলল
    লোহার বাঁধা রাস্তা দিয়ে প্রতিক্ষণেই,
    কোনোমতেই ইঞ্চিখানেক এদিক-ওদিক একটু হবার জো নেই।

    তিনি বলেন, তাঁর সাধনা বড়োই সুকঠোর,
    আর কিছু নয়, শুধুই মনের জোর,
    অষ্টাবক্র জমদগ্নি প্রভৃতি সব ঋষির সঙ্গে তুল্য,
    মেয়েমানুষ বুঝবে না তার মূল্য।

    অন্তঃশীলা অশ্রুনদীর নীরব নীরে
    দুটি নারীর দিন বয়ে যায় ধীরে।
    অবশেষে বৈশাখে এক রাতে
    মঞ্জুলিকার বিয়ে হল পঞ্চাননের সাথে।
    বিদায়বেলায় মেয়েকে বাপ বলে দিলেন মাথায় হস্ত ধরি
    “হও তুমি সাবিত্রীর মতো এই কামনা করি।”

    কিমাশ্চর্যমতঃপরং, বাপের সাধন-জোরে
    আশীর্বাদের প্রথম অংশ দু-মাস যেতেই ফলল কেমন করে–
    পঞ্চাননকে ধরল এসে যমে;
    কিন্তু মেয়ের কপালক্রমে
    ফলল না তার শেষের দিকটা, দিলে না যম ফিরে,
    মঞ্জুলিকা বাপের ঘরে ফিরে এল সিঁদুর মুছে শিরে।

    দুঃখে সুখে দিন হয়ে যায় গত
    স্রোতের জলে ঝরে-পড়া ভেসে-যাওয়া ফুলের মতো,
    অবশেষে হল
    মঞ্জুলিকার বয়স ভরা ষোলো।
    কখন শিশুকালে
    হৃদয়-লতার পাতার অন্তরালে
    বেরিয়েছিল একটি কুঁড়ি
    প্রাণের গোপন রহস্যতল ফুঁড়ি;
    জানত না তো আপনাকে সে,
    শুধায় নি তার নাম কোনোদিন বাহির হতে খেপা বাতাস এসে,
    সেই কুঁড়ি আজ অন্তরে তার উঠছে ফুটে
    মধুর রসে ভরে উঠে’।
    সে যে প্রেমের ফুল
    আপনি রাঙা পাপড়িভারে আপনি সমাকুল।
    আপনাকে তার চিনতে যে আর নাইকো বাকি,
    তাইতো থাকি থাকি
    চমকে ওঠে নিজের পানে চেয়ে।
    আকাশপারের বাণী তারে ডাক দিয়ে যায় আলোর ঝরনা বেয়ে;
    রাতের অন্ধকারে
    কোন্ অসীমের রোদনভরা বেদন লাগে তারে।
    বাহির হতে তার
    ঘুচে গেছে সকল অলংকার;
    অন্তর তার রাঙিয়ে ওঠে স্তরে স্তরে,
    তাই দেখে সে আপনি ভেবে মরে।
    কখন কাজের ফাঁকে
    জানলা ধরে চুপ করে সে বাইরে চেয়ে থাকে–
    যেখানে ওই শজনে গাছের ফুলের ঝুরি বেড়ার গায়ে
    রাশি রাশি হাসির ঘায়ে
    আকাশটারে পাগল করে দিবসরাতি।

    যে ছিল তার ছেলেবেলার খেলাঘরের সাথি
    আজ সে কেমন করে
    জলস্থলের হৃদয়খানি দিল ভরে।
    অরূপ হয়ে সে যেন আজ সকল রূপে রূপে
    মিশিয়ে গেল চুপে চুপে।
    পায়ের শব্দ তারি
    মরমরিত পাতায় পাতায় গিয়েছে সঞ্চারি।
    কানে কানে তারি করুণ বাণী
    মৌমাছিদের পাখার গুনগুনানি।

    মেয়ের নীরব মুখে
    কী দেখে মা, শেল বাজে তার বুকে।
    না-বলা কোন্ গোপন কথার মায়া
    মঞ্জুলিকার কালো চোখে ঘনিয়ে তোলে জলভরা এক ছায়া;
    অশ্রু-ভেজা গভীর প্রাণের ব্যথা
    এনে দিল অধরে তার শরৎনিশির স্তব্ধ ব্যাকুলতা।
    মায়ের মুখে অন্ন রোচে নাকো–
    কেঁদে বলে, “হায় ভগবান, অভাগীরে ফেলে কোথায় থাক।”

    একদা বাপ দুপুরবেলায় ভোজন সাঙ্গ করে
    গুড়গুড়িটার নলটা মুখে ধরে,
    ঘুমের আগে, যেমন চিরাভ্যাস,
    পড়তেছিলেন ইংরেজি এক প্রেমের উপন্যাস।
    মা বললেন, বাতাস করে গায়ে,
    কখনো বা হাত বুলিয়ে পায়ে,
    “যার খুশি সে নিন্দে করুক, মরুক বিষে জ্বরে
    আমি কিন্তু পারি যেমন ক’রে
    মঞ্জুলিকার দেবই দেব বিয়ে।”

    বাপ বললেন, কঠিন হেসে, “তোমরা মায়ে ঝিয়ে
    এক লগ্নেই বিয়ে ক’রো আমার মরার পরে,
    সেই কটা দিন থাকো ধৈর্য ধরে।”
    এই বলে তাঁর গুড়গুড়িতে দিলেন মৃদু টান।
    মা বললেন, “‘উঃ কী পাষাণ প্রাণ,
    স্নেহমায়া কিচ্ছু কি নেই ঘটে।”
    বাপ বললেন, “আমি পাষাণ বটে।
    ধর্মের পথ কঠিন বড়ো, ননির পুতুল হলে
    এতদিনে কেঁদেই যেতেম গলে।”

    মা বললেন, “হায় রে কপাল। বোঝাবই বা কারে।
    তোমার এ সংসারে
    ভরা ভোগের মধ্যখানে দুয়ার এঁটে
    পলে পলে শুকিয়ে মরবে ছাতি ফেটে
    একলা কেবল একটুকু ঐ মেয়ে,
    ত্রিভুবনে অধর্ম আর নেই কিছু এর চেয়ে।
    তোমার পুঁথির শুকনো পাতায় নেই তো কোথাও প্রাণ,
    দরদ কোথায় বাজে সেটা অন্তর্যামী জানেন ভগবান।”

    বাপ একটু হাসল কেবল, ভাবলে, “মেয়েমানুষ
    হৃদয়তাপের ভাপে-ভরা ফানুস।
    জীবন একটা কঠিন সাধন–নেই সে ওদের জ্ঞান।”
    এই বলে ফের চলল পড়া ইংরেজি সেই প্রেমের উপাখ্যান।

    দুখের তাপে জ্বলে জ্বলে অবশেষে নিবল মায়ের তাপ;
    সংসারেতে একা পড়লেন বাপ।
    বড়ো ছেলে বাস করে তার স্ত্রীপুত্রদের সাথে
    বিদেশে পাটনাতে।
    দুই মেয়ে তার কেউ থাকে না কাছে,
    শ্বশুরবাড়ি আছে।
    একটি থাকে ফরিদপুরে,
    আরেক মেয়ে থাকে আরো দূরে
    মাদ্রাজে কোন্ বিন্ধ্যগিরির পার।
    পড়ল মঞ্জুলিকার ‘পরে বাপের সেবাভার।
    রাঁধুনে ব্রাহ্মণের হাতে খেতে করেন ঘৃণা,
    স্ত্রীর রান্না বিনা
    অন্নপানে হত না তার রুচি।
    সকালবেলায় ভাতের পালা, সন্ধ্যাবেলায় রুটি কিংবা লুচি;
    ভাতের সঙ্গে মাছের ঘটা
    ভাজাভুজি হত পাঁচটা-ছটা;
    পাঁঠা হত রুটি-লুচির সাথে।
    মঞ্জুলিকা দুবেলা সব আগাগোড়া রাঁধে আপন হাতে।
    একাদশী ইত্যাদি তার সকল তিথিতেই
    রাঁধার ফর্দ এই।
    বাপের ঘরটি আপনি মোছে ঝাড়ে
    রৌদ্রে দিয়ে গরম পোশাক আপনি তোলে পাড়ে।
    ডেস্কে বাক্সে কাগজপত্র সাজায় থাকে থাকে,
    ধোবার বাড়ির ফর্দ টুকে রাখে।
    গয়লানী আর মুদির হিসাব রাখতে চেষ্টা করে,
    ঠিক দিতে ভুল হলে তখন বাপের কাছে ধমক খেয়ে মরে।
    কাসুন্দি তার কোনোমতেই হয় না মায়ের মতো,
    তাই নিয়ে তার কত
    নালিশ শুনতে হয়।
    তা ছাড়া তার পান-সাজাটা মনের মতো নয়।
    মায়ের সঙ্গে তুলনাতে পদেপদেই ঘটে যে তার ত্রুটি।
    মোটামুটি–
    আজকালকার মেয়েরা কেউ নয় সেকালের মতো।
    হয়ে নীরব নত,
    মঞ্জুলী সব সহ্য করে, সর্বদাই সে শান্ত,
    কাজ করে অক্লান্ত।
    যেমন করে মাতা বারংবার
    শিশু ছেলের সহস্র আবদার
    হেসে সকল বহন করেন স্নেহের কৌতুকে,
    তেমনি করেই সুপ্রসন্ন মুখে
    মঞ্জুলী তার বাপের নালিশ দন্ডে দন্ডে শোনে,
    হাসে মনে মনে।
    বাবার কাছে মায়ের স্মৃতি কতই মূল্যবান
    সেই কথাটা মনে ক’রে গর্বসুখে পূর্ণ তাহার-প্রাণ।
    “আমার মায়ের যত্ন যে-জন পেয়েছে একবার
    আর-কিছু কি পছন্দ হয় তার।”

    হোলির সময় বাপকে সেবার বাতে ধরল ভারি।
    পাড়ায় পুলিন করছিল ডাক্তারি,
    ডাকতে হল তারে।
    হৃদয়যন্ত্র বিকল হতে পারে
    ছিল এমন ভয়।
    পুলিনকে তাই দিনের মধ্যে বারেবারেই আসতে যেতে হয়।
    মঞ্জুলী তার সনে
    সহজভাবেই কইবে কথা যতই করে মনে
    ততই বাধে আরো।
    এমন বিপদ কারো
    হয় কি কোনোদিন।
    গলাটি তার কাঁপে কেন, কেন এতই ক্ষীণ,
    চোখের পাতা কেন
    কিসের ভারে জড়িয়ে আসে যেন।
    ভয়ে মরে বিরহিণী
    শুনতে যেন পাবে কেহ রক্তে যে তা’র বাজে রিনিরিনি।
    পদ্মপাতায় শিশির যেন, মনখানি তার বুকে
    দিবারাত্রি টলছে কেন এমনতরো ধরা-পড়ার মুখে।

    ব্যামো সেরে আসছে ক্রমে,
    গাঁঠের ব্যথা অনেক এল কমে।
    রোগী শয্যা ছেড়ে
    একটু এখন চলে হাত-পা নেড়ে।
    এমন সময় সন্ধ্যাবেলা
    হাওয়ায় যখন যূথীবনের পরানখানি মেলা,
    আঁধার যখন চাঁদের সঙ্গে কথা বলতে যেয়ে
    চুপ ক’রে শেষ তাকিয়ে থাকে চেয়ে,
    তখন পুলিন রোগী-সেবার পরামর্শ-ছলে
    মঞ্জুলিরে পাশের ঘরে ডেকে বলে–
    “জান তুমি তোমার মায়ের সাধ ছিল এই চিতে
    মোদের দোঁহার বিয়ে দিতে।
    সে ইচ্ছাটি তাঁরি
    পুরাতে চাই যেমন করেই পারি।
    এমন করে আর কেন দিন কাটাই মিছিমিছি।”

    “না না, ছি ছি, ছি ছি।”
    এই ব’লে সে মঞ্জুলিকা দু-হাত দিয়ে মুখখানি তার ঢেকে
    ছুটে গেল ঘরের থেকে।
    আপন ঘরে দুয়ার দিয়ে পড়ল মেঝের ‘পরে–
    ঝরঝরিয়ে ঝরঝরিয়ে বুক ফেটে তার অশ্রু ঝরে পড়ে।
    ভাবলে, “পোড়া মনের কথা এড়ায় নি ওঁর চোখ।
    আর কেন গো। এবার মরণ হ’ক।”

    মঞ্জুলিকা বাপের সেবায় লাগল দ্বিগুণ ক’রে
    অষ্টপ্রহর ধরে।
    আবশ্যকটা সারা হলে তখন লাগে অনাবশ্যক কাজে,
    যে-বাসনটা মাজা হল আবার সেটা মাজে।
    দু-তিন ঘন্টা পর
    একবার যে-ঘর ঝেড়েছে ফের ঝাড়ে সেই ঘর।
    কখন যে স্নান, কখন যে তার আহার,
    ঠিক ছিল না তাহার।
    কাজের কামাই ছিল নাকো যতক্ষণ না রাত্রি এগারোটায়
    শ্রান্ত হয়ে আপনি ঘুমে মেঝের ‘পরে লোটায়।
    যে দেখল সে-ই অবাক হয়ে রইল চেয়ে,
    বললে, “ধন্যি মেয়ে।”

    বাপ শুনে কয় বুক ফুলিয়ে, “গর্ব করি নেকো,
    কিন্তু তবু আমার মেয়ে সেটা স্মরণ রেখো।
    ব্রহ্মচর্য- ব্রত
    আমার কাছেই শিক্ষা যে ওর। নইলে দেখতে অন্যরকম হ’ত।
    আজকালকার দিনে
    সংযমেরি কঠোর সাধন বিনে
    সমাজেতে রয় না কোনো বাঁধ,
    মেয়েরা তাই শিখছে কেবল বিবিয়ানার ছাঁদ।”

    স্ত্রীর মরণের পরে যবে
    সবেমাত্র এগারো মাস হবে,
    গুজব গেল শোনা
    এই বাড়িতে ঘটক করে আনাগোনা।
    প্রথম শুনে মঞ্জুলিকার হয় নিকো বিশ্বাস,
    তার পরে সব রকম দেখে ছাড়লে নিশ্বাস।
    ব্যস্ত সবাই, কেমনতরো ভাব
    আসছে ঘরে নানা রকম বিলিতি আসবাব।
    দেখলে বাপের নতুন করে সাজসজ্জা শুরু,
    হঠাৎ কালো ভ্রমরকৃষ্ণ ভুরু,
    পাকাচুল সব কখন হল কটা,
    চাদরেতে যখন-তখন গন্ধ মাখার ঘটা।

    মার কথা আজ মঞ্জুলিকার পড়ল মনে
    বুকভাঙা এক বিষম ব্যথার সনে।
    হ’ক না মৃত্যু, তবু
    এ-বাড়ির এই হাওয়ার সঙ্গে বিরহ তাঁর ঘটে নাই তো কভু।
    কল্যাণী সেই মূর্তিখানি সুধামাখা
    এ সংসারের মর্মে ছিল আঁকা;
    সাধ্বীর সেই সাধনপুণ্য ছিল ঘরের মাঝে,
    তাঁরি পরশ ছিল সকল কাজে।
    এ সংসারে তাঁর হবে আজ পরম মৃত্যু, বিষম অপমান–
    সেই ভেবে যে মঞ্জুলিকার ভেঙে পড়ল প্রাণ।

    ছেড়ে লজ্জাভয়
    কন্যা তখন নিঃসংকোচে কয়
    বাপের কাছে গিয়ে,–
    “তুমি নাকি করতে যাবে বিয়ে।
    আমরা তোমার ছেলেমেয়ে নাতনী-নাতি যত
    সবার মাথা করবে নত?
    মায়ের কথা ভুলবে তবে?
    তোমার প্রাণ কি এত কঠিন হবে।”

    বাবা বললে শুষ্ক হাসে,
    “কঠিন আমি কেই বা জানে না সে?
    আমার পক্ষে বিয়ে করা বিষম কঠোর কর্ম,
    কিন্তু গৃহধর্ম
    স্ত্রী না হলে অপূর্ণ যে রয়
    মনু হতে মহাভারত সকল শাস্ত্রে কয়।
    সহজ তো নয় ধর্মপথে হাঁটা,
    এ তো কেবল হৃদয় নিয়ে নয়কো কাঁদাকাটা।
    যে করে ভয় দুঃখ নিতে দুঃখ দিতে
    সে কাপুরুষ কেনই আসে পৃথিবীতে।”

    বাখরগঞ্জে মেয়ের বাপের ঘর।
    সেথায় গেলেন বর
    বিয়ের কদিন আগে, বৌকে নিয়ে শেষে
    যখন ফিরে এলেন দেশে
    ঘরেতে নেই মঞ্জুলিকা। খবর পেলেন চিঠি পড়ে
    পুলিন তাকে বিয়ে করে
    গেছে দোঁহা ফরাক্কাবাদ চলে,
    সেইখানেতে ঘর পাতবে ব’লে।
    আগুন হয়ে বাপ
    বারে বারে দিলেন অভিশাপ।

     

    In English Font:

    Nishkriti
    Rabindranath Tagore

    Ma kede koy, “‘manjuli mor ai to koci meye,
    Ori sange biye debe?–Boyoshe or cheye
    Pachguno se boṛo;–
    Take dekhe bacha amar bhaye’i jaṛasaṛa.
    Emani biye ghaṭ te debe nako.”

    Bap bolle, “kanna tomar rakho!
    Pancanan ke pawa geche anek diner khoje,
    Jano na ki masta kulina o je.
    Samaje to uṭh-te hobe seṭa ki ke’u bhabo.
    Oke chaṛle patra kothay pabo.”

    Ma bolle, “keno ai je chatudera pulin,
    Na’i ba halo kulin,–
    Dekhte jemon temon sbabhbakhani,
    Pash kare pher peyeche jalpani,
    Sonar ṭukro chele.
    Ek-paṛate thake ora–ori saṅge heshe khele
    Meye amar manuṣh holo; oke jadi boli ami aji
    Ekhoni hoy raji.”

    Bap bolle, “thamo,
    Are are Ramo.
    Ora ache samajer sab talay.
    Bamun ki hoy paite dile’i galay?
    Dekhte śunte bhalo hole’i patra holo! Radhe!
    Sribud’dhi ki śastre bole sadhe.”

    Jedin ora gini diye dekhle koner mukh
    Sedina theke manjulikar buk
    Prati poler gopan kaṭay holo rakte makha.
    Mayer sneho antarjamī, tar kache to roy na kichu’i ḍhaka;
    Mayer byatha meyer byatha cholte khete śute
    Gharer akash pratikhaṇe hanche jeno bedana-bidyute.

    Aṭalatar gabhīr garba baper mon jage,-
    Sukhe dukhe dbeṣhe rage
    Dharma theke naṛen tini na’i heno daurbolya.
    Tar jīboner rather chaka chollo
    lohar badha rasta diye pratikhane e
    konomate’i incikhanek edik-odik ekṭu habar jo ne’i.

     

    See less
    • 0
  • 1
  • 2,275
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

কবিতা ; ক্যামেলিয়া (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Camellia Poem by Rabindranath Tagore in Bengali lyrics?

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 155 Answers
    • 5 Best Answers
    • 786 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on June 28, 2020 at 2:14 am
    This answer was edited.

    ক্যামেলিয়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাম তার কমলা,দেখেছি তার খাতার উপরে লেখা।সে চলেছিল ট্রামে, তার ভাইকে নিয়ে কলেজের রাস্তায়।আমি ছিলেম পিছনের বেঞ্চিতে।মুখের এক পাশের নিটোল রেখাটি দেখা যায়,আর ঘাড়ের উপর কোমল চুলগুলি খোঁপার নীচে।কোলে তার ছিল বই আর খাতা।যেখানে আমার নামবার সেখানে নামা হল না।এখন থেকে সময়ের হিসাবRead more

    ক্যামেলিয়া

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

    নাম তার কমলা,
    দেখেছি তার খাতার উপরে লেখা।
    সে চলেছিল ট্রামে, তার ভাইকে নিয়ে কলেজের রাস্তায়।
    আমি ছিলেম পিছনের বেঞ্চিতে।
    মুখের এক পাশের নিটোল রেখাটি দেখা যায়,
    আর ঘাড়ের উপর কোমল চুলগুলি খোঁপার নীচে।
    কোলে তার ছিল বই আর খাতা।
    যেখানে আমার নামবার সেখানে নামা হল না।

    এখন থেকে সময়ের হিসাব করে বেরোই–
    সে হিসাব আমার কাজের সঙ্গে ঠিকটি মেলে না,
    প্রায় ঠিক মেলে ওদের বেরোবার সময়ের সঙ্গে,
    প্রায়ই হয় দেখা।
    মনে মনে ভাবি, আর-কোনো সম্বন্ধ না থাক্,
    ও তো আমার সহযাত্রিণী।
    নির্মল বুদ্ধির চেহারা
    ঝক্ঝক্ করছে যেন।
    সুকুমার কপাল থেকে চুল উপরে তোলা,
    উজ্জ্বল চোখের দৃষ্টি নিঃসংকোচ।
    মনে ভাবি একটা কোনো সংকট দেখা দেয় না কেন,
    উদ্ধার করে জন্ম সার্থক করি–
    রাস্তার মধ্যে একটা কোনো উৎপাত,
    কোনো-একজন গুণ্ডার স্পর্ধা।
    এমন তো আজকাল ঘটেই থাকে।
    কিন্তু আমার ভাগ্যটা যেন ঘোলা জলের ডোবা,
    বড়ো রকম ইতিহাস ধরে না তার মধ্যে,
    নিরীহ দিনগুলো ব্যাঙের মতো একঘেয়ে ডাকে–
    না সেখানে হাঙর-কুমিরের নিমন্ত্রণ, না রাজহাঁসের।
    একদিন ছিল ঠেলাঠেলি ভিড়।

    কমলার পাশে বসেছে একজন আধা-ইংরেজ।
    ইচ্ছে করছিল, অকারণে টুপিটা উড়িয়ে দিই তার মাথা থেকে,
    ঘাড়ে ধরে তাকে রাস্তায় দিই নামিয়ে।
    কোনো ছুতো পাই নে, হাত নিশ্পিশ্ করে।
    এমন সময়ে সে এক মোটা চুরোট ধরিয়ে
    টানতে করলে শুরু।
    কাছে এসে বললুম, “ফেলো চুরোট।’
    যেন পেলেই না শুনতে,
    ধোঁওয়া ওড়াতে লাগল বেশ ঘোরালো করে।
    মুখ থেকে টেনে ফেলে দিলেম চুরোট রাস্তায়।
    হাতে মুঠো পাকিয়ে একবার তাকালো কট্মট্ ক’রে–
    আর কিছু বললে না, এক লাফে নেমে গেল।
    বোধ হয় আমাকে চেনে।
    আমার নাম আছে ফুটবল খেলায়,
    বেশ একটু চওড়া গোছের নাম।
    লাল হয়ে উঠল মেয়েটির মুখ,
    বই খুলে মাথা নিচু করে ভান করলে পড়বার।
    হাত কাঁপতে লাগল,
    কটাক্ষেও তাকালে না বীরপুরুষের দিকে।
    আপিসের বাবুরা বললে, “বেশ করেছেন মশায়।’
    একটু পরেই মেয়েটি নেমে পড়ল অজায়গায়,
    একটা ট্যাক্সি নিয়ে গেল চলে।

    পরদিন তাকে দেখলুম না,
    তার পরদিনও না,
    তৃতীয় দিনে দেখি
    একটা ঠেলাগাড়িতে চলেছে কলেজে।
    বুঝলুম, ভুল করেছি গোঁয়ারের মতো।
    ও মেয়ে নিজের দায় নিজেই পারে নিতে,
    আমাকে কোনো দরকারই ছিল না।
    আবার বললুম মনে মনে,
    ভাগ্যটা ঘোলা জলের ডোবা–
    বীরত্বের স্মৃতি মনের মধ্যে কেবলই আজ আওয়াজ করছে
    কোলাব্যাঙের ঠাট্টার মতো।
    ঠিক করলুম ভুল শোধরাতে হবে।

    খবর পেয়েছি গরমের ছুটিতে ওরা যায় দার্জিলিঙে।
    সেবার আমারও হাওয়া বদলাবার জরুরি দরকার।
    ওদের ছোট্ট বাসা, নাম দিয়েছে মতিয়া–
    রাস্তা থেকে একটু নেমে এক কোণে
    গাছের আড়ালে,
    সামনে বরফের পাহাড়।
    শোনা গেল আসবে না এবার।
    ফিরব মনে করছি এমন সময়ে আমার এক ভক্তের সঙ্গে দেখা,
    মোহনলাল–
    রোগা মানুষটি, লম্বা, চোখে চশমা,
    দুর্বল পাকযন্ত্র দার্জিলিঙের হাওয়ায় একটু উৎসাহ পায়।
    সে বললে, “তনুকা আমার বোন,
    কিছুতে ছাড়বে না তোমার সঙ্গে দেখা না করে।’
    মেয়েটি ছায়ার মতো,
    দেহ যতটুকু না হলে নয় ততটুকু–
    যতটা পড়াশোনায় ঝোঁক, আহারে ততটা নয়।
    ফুটবলের সর্দারের ‘পরে তাই এত অদ্ভুত ভক্তি–
    মনে করলে আলাপ করতে এসেছি সে আমার দুর্লভ দয়া।
    হায় রে ভাগ্যের খেলা!

    যেদিন নেমে আসব তার দু দিন আগে তনুকা বললে,
    “একটি জিনিস দেব আপনাকে, যাতে মনে থাকবে আমাদের কথা–
    একটি ফুলের গাছ।’
    এ এক উৎপাত। চুপ করে রইলেম।
    তনুকা বললে, “দামি দুর্লভ গাছ,
    এ দেশের মাটিতে অনেক যত্নে বাঁচে।’
    জিগেস করলেম, “নামটা কী?’
    সে বললে “ক্যামেলিয়া’।
    চমক লাগল–
    আর-একটা নাম ঝলক দিয়ে উঠল মনের অন্ধকারে।
    হেসে বললেম, “ক্যামেলিয়া,
    সহজে বুঝি এর মন মেলে না।’
    তনুকা কী বুঝলে জানি নে, হঠাৎ লজ্জা পেলে,
    খুশিও হল।
    চললেম টবসুদ্ধ গাছ নিয়ে।
    দেখা গেল পার্শ্ববর্তিনী হিসাবে সহযাত্রিণীটি সহজ নয়।
    একটা দো-কামরা গাড়িতে
    টবটাকে লুকোলেম নাবার ঘরে।
    থাক্ এই ভ্রমণবৃত্তান্ত,
    বাদ দেওয়া যাক আরো মাস কয়েকের তুচ্ছতা।

    পুজোর ছুটিতে প্রহসনের যবনিকা উঠল
    সাঁওতাল পরগনায়।
    জায়গাটা ছোটো। নাম বলতে চাই নে–
    বায়ুবদলের বায়ু-গ্রস্তদল এ জায়গার খবর জানে না।
    কমলার মামা ছিলেন রেলের এঞ্জিনিয়র।
    এইখানে বাসা বেঁধেছেন
    শালবনে ছায়ায়, কাঠবিড়ালিদের পাড়ায়।
    সেখানে নীল পাহাড় দেখা যায় দিগন্তে,
    অদূরে জলধারা চলেছে বালির মধ্যে দিয়ে,
    পলাশবনে তসরের গুটি ধরেছে,
    মহিষ চরছে হর্তকি গাছের তলায়–
    উলঙ্গ সাঁওতালের ছেলে পিঠের উপরে।
    বাসাবাড়ি কোথাও নেই,
    তাই তাঁবু পাতলেম নদীর ধারে।
    সঙ্গী ছিল না কেউ,
    কেবল ছিল টবে সেই ক্যামেলিয়া।

    কমলা এসেছে মাকে নিয়ে।
    রোদ ওঠবার আগে
    হিমে-ছোঁওয়া স্নিগ্ধ হাওয়ায়
    শাল-বাগানের ভিতর দিয়ে বেড়াতে যায় ছাতি হাতে।
    মেঠো ফুলগুলো পায়ে এসে মাথা কোটে,
    কিন্তু সে কি চেয়ে দেখে।
    অল্পজল নদী পায়ে হেঁটে
    পেরিয়ে যায় ও পারে,
    সেখানে সিসুগাছের তলায় বই পড়ে।
    আর আমাকে সে যে চিনেছে
    তা জানলেম আমাকে লক্ষ্য করে না বলেই।

    একদিন দেখি নদীর ধারে বালির উপর চড়িভাতি করছে এরা।
    ইচ্ছে হল গিয়ে বলি, আমাকে দরকার কি নেই কিছুতেই।
    আমি পারি জল তুলে আনতে নদী থেকে–
    পারি বন থেকে কাঠ আনতে কেটে,
    আর, তা ছাড়া কাছাকাছি জঙ্গলের মধ্যে
    একটা ভদ্রগোছের ভালুকও কি মেলে না।

    দেখলেম দলের মধ্যে একজন যুবক–
    শট্-পরা, গায়ে রেশমের বিলিতি জামা,
    কমলার পাশে পা ছড়িয়ে
    হাভানা চুরোট খাচ্ছে।
    আর, কমলা অন্যমনে টুকরো টুকরো করছে
    একটা শ্বেতজবার পাপড়ি,
    পাশে পড়ে আছে
    বিলিতি মাসিক পত্র।

    মুহূর্তে বুঝলেম এই সাঁওতাল পরগনার নির্জন কোণে
    আমি অসহ্য অতিরিক্ত, ধরবে না কোথাও।
    তখনি চলে যেতেম, কিন্তু বাকি আছে একটি কাজ।
    আর দিন-কয়েকেই ক্যামেলিয়া ফুটবে,
    পাঠিয়ে দিয়ে তবে ছুটি।
    সমস্ত দিন বন্দুক ঘাড়ে শিকারে ফিরি বনে জঙ্গলে,
    সন্ধ্যার আগে ফিরে এসে টবে দিই জল
    আর দেখি কুঁড়ি এগোল কত দূর।

    সময় হয়েছে আজ।
    যে আনে আমার রান্নার কাঠ।
    ডেকেছি সেই সাঁওতাল মেয়েটিকে।
    তার হাত দিয়ে পাঠাব
    শালপাতার পাত্রে।
    তাঁবুর মধ্যে বসে তখন পড়ছি ডিটেকটিভ গল্প।
    বাইরে থেকে মিষ্টিসুরে আওয়াজ এল, “বাবু, ডেকেছিস কেনে।’
    বেরিয়ে এসে দেখি ক্যামেলিয়া
    সাঁওতাল মেয়ের কানে,
    কালো গালের উপর আলো করেছে।
    সে আবার জিগেস করলে, “ডেকেছিস কেনে।’
    আমি বললেম, “এইজন্যেই।’
    তার পরে ফিরে এলেম কলকাতায়।

     

    In English Font:

    Camellia

    Rabindranath Tagore

    Tar naam Komola
    Dekhechi tar khatar upore lekha.
    se cholechilo trame, tar bhai ke niye colleger rastay
    Ami chilem pichoner benchite.
    Mukher ek pasher nitol rekhati deka jay,
    Ar gader upor kumol chulguli khupar niche.
    Kole tar chilo boi ar khata.
    jekhane amar nambar shekhane nama holo na.

    Ekhon theke somoyer hishab kore beroi-
    Se hishab amar kajer songe thikti mele na ,
    pray thik mele oder berobar somoyer songe,
    prai e hoy dekha.
    Mone mone bhabi, aar-kuno shmmondho na thak,
    O to amar shohojatrini.
    Nirmal buddhir chehara
    jhakjhak korche jeno.
    Sukumar kopal theke chul upore tula,
    ujjal chokher dristi nishonkoch.
    Mone bhavi ekta kono shonkot dekha jay na keno,
    Uddhar kore janmo sharthok kori
    Rastar moddhe ekta kono utpat
    Kono ekjon gundar spordha.
    Emon to aajkal ghotei thake
    Kintu amar vagyota jeno ghula joler duba
    Boro rokom itihash dhore na tar moddhe
    niriho dingulo benger moto ekgeye dake
    Na shekhane hangor-kumirer niyontron, na rajhasher.
    Ekdin chilo theltheli bhir.

    Komolar pashe boseche ekjon adha Engraj
    Icche korchilo, okarone tupita uriye dei tar matha theke,
    Ghare dhore take rastay di namiye.
    Kuno chut pai ne, Hath nimpish kore.
    Emon shomoye she ek mota churot dhoriye
    Tante korle shuru.
    Kache eshe Bollum, “Felo churot”.
    Jeno pelei na shunte,
    Dhuwa orate laglo besh ghuralo kore.
    Mukh theke tene fele dilem churot rastay
    Hath mutho pakiye ekbar takalo kotakkho kore
    Ar kichu bolle na, ek lafe neme gele
    Budh hoy amake chine.
    Amar naam aache football khelay,
    Besh ektu chora gocher naam.
    Lal hoye uthlo meyetir mukh,
    Boi khule matha nichu kore van korle porbar
    hath kaple laglo,
    kotakkheo takale na birpurusher dike.
    Aapisher babura bolle, “Besh korechen moshay”
    ektu porei neme porlo ojaygay,
    Ekta taxi niye chole gelo

    See less
    • 0
  • 1
  • 2,813
  • 0
Answer
In: সাহিত্য

কবিতা : দেবতার বিদায় (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Debotar Biday by Rabindranath Tagore?

  1. Hridoy

    Hridoy

    • 16 Questions
    • 155 Answers
    • 5 Best Answers
    • 786 Points
    View Profile
    Hridoy
    Added an answer on September 8, 2020 at 2:03 am
    This answer was edited.

    দেবতার বিদায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাব্যগ্রন্থ- চৈতালি    দেবতামন্দিরমাঝে ভকত প্রবীণজপিতেছে জপমালা বসি নিশিদিন।হেনকালে সন্ধ্যাবেলা ধুলিমাখা দেহেবস্ত্রহীন জীর্ণ দীন পশিল সে গেহে।কহিল কাতরকণ্ঠে “গৃহ মোর নাইএক পাশে দয়া করে দেহো মোরে ঠাঁই।”সসংকোচে ভক্তবর কহিলেন তারে,“আরে আরে অপবিত্র, দূর হয়ে যারে।”সে কহিল,Read more

    দেবতার বিদায়

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

    কাব্যগ্রন্থ- চৈতালি   

    দেবতামন্দিরমাঝে ভকত প্রবীণ
    জপিতেছে জপমালা বসি নিশিদিন।
    হেনকালে সন্ধ্যাবেলা ধুলিমাখা দেহে
    বস্ত্রহীন জীর্ণ দীন পশিল সে গেহে।
    কহিল কাতরকণ্ঠে “গৃহ মোর নাই
    এক পাশে দয়া করে দেহো মোরে ঠাঁই।”
    সসংকোচে ভক্তবর কহিলেন তারে,
    “আরে আরে অপবিত্র, দূর হয়ে যারে।”
    সে কহিল, “চলিলাম”—চক্ষের নিমেষে
    ভিখারি ধরিল মূর্তি দেবতার বেশে।
    ভক্ত কহে, “প্রভু, মোরে কী ছল ছলিলে!”
    দেবতা কহিল, “মোরে দূর করি দিলে।
    জগতে দরিদ্ররূপে ফিরি দয়াতরে,
    গৃহহীনে গৃহ দিলে আমি থাকি ঘরে।”

     

    In English Font: 

    Debotar biday

    Rabindranath Tagore

    Debota mandiro-majhe bhakata prabiṇ
    Japiteche japamala bosi nishidin.
    Henokale sandhyabela dhulimakha dehe
    Bastrahīna jirṇa deen pashilo se gehe.
    Kahilo katar-kaṇṭhe “griha mor na’i
    Ek paśhe daya kore deho mor ṭhai.”
    Sosangkoche bhaktabar kahilen tare,
    “are are apabitra, dur hoye jare.”
    Se kahilo, “chalilam”—chakker nimiṣhe
    Bhikhari dharilo murti debatar beshe.
    Bhakta kahe, “prabhu, mōre ki chal chalile!”
    Debata kahilo, “more dur kori dile.
    Jagate daridrarupe firi doyatore,
    Grihohine griha dile ami thaki ghore

    See less
    • 0
  • 1
  • 2,331
  • 0
Answer
Load More Questions

Sidebar

আরও দেখুন

  • জন্মভূমি আজ কবিতার সারমর্ম | Jonmobhumi Aj Summary in Bengali?
  • জয় গোস্বামীর নুন কবিতার বিষয়বস্তু | Nun Bengali Poem Summary?
  • তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা (শামসুর রহমান) কবিতার সারমর্ম ও বিষয়বস্তু | shadhinota tumi summary in bengali
  • সিঁড়ি (সুকান্ত ভট্টাচার্য ) কবিতার সারমর্ম ও বিষয়বস্তু | bengali poem siri summary
  • রানার (সুকান্ত ভট্টাচার্য ) কবিতার সারমর্ম ও বিষয়বস্তু | ranar poem summary in bengali
  • বনলতা সেন কবিতার সারমর্ম ও বিষয়বস্তু | bonolota sen poem explanation in bengali
  • কবিতা: হাওয়ার রাত (জীবনান্দ দাস) সারমর্ম ও বিষয়বস্তু | windy night poem by jibanananda das summary
  • আবার আসিব ফিরে কবিতার সারমর্ম ও বিষয়বস্তু | abar asibo phire poem summary in bengali
  • আবার আসিব ফিরে সারাংশ | abar asibo phire poem summary
  • রাস্তা কারো একার নয় কবিতার সারাংশ | Rasta Karo Ekar Noy Poem Summary in Bengali?
  • আঠারো বছর বয়স কবিতার সারমর্ম | Atharo Bochor Boyosh Poem Summary in Bengali?
  • অমলকান্তি কবিতার সারমর্ম বিষয়বস্তু | Amalkanti Poem Summary in Bengali?
  • ভোরাই (সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত) সারাংশ ও মূলভাব | Bhorai Poem Summary in Bengali?
  • Mountain and Squirrel কবিতার বাংলা সারাংশ ও মূলভাব | Fable Poem Summary in Bengali?
  • রূপসী বাংলা কবিতার সারমর্ম ও বিষয়বস্তু | ruposhi bangla poem summary
  • বনলতা সেন কবিতার সারাংশ ও মূলভাব | bonolota sen kobita summary in bengali
  • রবীন্দ্রসংগীত : তুমি কোন কাননের ফুল | Tumi Kon Kanoner Phool lyrics in Bengali with English Translation?
  • কবিতা : পরশ পাথর (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Parash Pathar Poem by Rabindranath Tagore in Bengali?
  • কবিতা : নিষ্কৃতি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Nishkriti by Rabindranath Tagore in Bengali?
  • কবিতা ; ক্যামেলিয়া (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) Camellia Poem by Rabindranath Tagore in Bengali lyrics?

বিষয়

All Bangla Paragraph (105) Bangla Kobita (150) Bangla Rachana (105) Bengali Essay (105) bengali lyrics (82) Bengali Poems (124) Bengali Rachana (99) bengali song lyrics (83) bengali song lyrics in bengali (83) Kobita (143) অনুচ্ছেদ (127) বাংলা কবিতা (164) বাংলা গানের লিরিক্স (83) বাংলা প্রবন্ধ (97) বাংলা রচনা (127)

Footer

© 2020 Bengali Forum · All rights reserved.

Add Bengali Forum to your Homescreen!

Add