রচনা: বাংলাদেশের নদ নদী | Bangladesher Nod Nodi Essay
Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.
Please briefly explain why you feel this question should be reported.
Please briefly explain why you feel this answer should be reported.
Please briefly explain why you feel this user should be reported.
রচনা: বাংলাদেশের নদ নদী
ভুমিকা : প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর আমাদের বাংলাদেশের অন্যতম একটি অংশ এখানকার নদনদী। নদীবিহীন সবুজ বাংলাদেশের কল্পনা অসম্ভব । বাংলাদেশকে অপরূপ সৌন্দর্য্যে সৌন্দর্য মন্ডিত করার পিছনে নদ নদী গুলির ভূমিকাই প্রধান। নদী গুলি বাংলাদেশের প্রকৃতিকে এনে দিয়েছে বৈচিত্র্য, প্রাচুর্য্য তৎসঙ্গে করেছে সমৃদ্দ। তাই বাংলাদেশ নদীর দেশ বা নদীমাতৃক দেশ।
বাংলাদেশের নদ নদী : বাংলাদেশে নদী, উপনদী ও শাখানদী মিলিয়ে মোট ৭০০ থেকে বেশি নদী রয়েছে, যে গুলি প্রবাহিত হয়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল দিয়ে। বাংলাদেশের প্রধান নদী গুলির মধ্যে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র উল্লেখযোগ্য। এই নদীগুলির বেশিরভাগ প্রবাহিত হয়েছে দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ মুখী হয়ে। এই প্রধান নদীগুলি ছাড়াও কর্ণফুলী, কপোতাক্ষ, তিতাস, গোমতী, শীতলক্ষ্যা বাংলাদেশের অন্যতম নদনদী।
পদ্মা : বাংলাদেশের প্রধান বৃহত্তম নদী যাহার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৬৬ কিলোমিটার। ইহা হিমালয়ের হিমবাহ থেকে উৎপত্তি লাভ করে ভারতবর্ষের বুকে সুদীর্ঘ অঞ্চল প্রবাহিত হয়ে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে পদ্মা নদী নামে। তারপর পদ্মা নদী গোয়ালন্দে গিয়ে মিলিত হয়েছে যমুনার সাথে । মিলনের এই ধারা অব্যাহত রেখে মেঘনার সাথে আবার মিলিত হয় চাঁদপুরে এবং শেষমেষ মেঘনা নামেই বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।
মেঘনা : মেঘনার উৎপত্তিস্থল ভারতবর্ষের মনিপুর রাজ্যে। এই নদী উৎপত্তিস্থল থেকে বরাক নদী নামে প্রবাহিত হয়ে পৃথক দুইটি শাখা কুশিয়ারা ও সুরমা নামে বাংলাদেশে সিলেট অঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করেছে। এই দুইটি শাখা আজমিরীগঞ্জে আবার মিলিত হয়েছে কালনী নদীর ধারায়। পরে কিছুদূর এগিয়ে এই তিনটি নদী মেঘনা নামে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। মেঘনার উপনদী গুলি হচ্ছে গোমতি, তিতাস, মনু বাউলাই ইত্যাদি।
ব্রহ্মপুত্র : ব্রহ্মপুত্র হিমালয়ের কৈলাস শৃঙ্গ থেকে উৎপত্তি লাভ করে প্রথমে তিব্বত এবং পরে ভারতবর্ষের আসাম রাজ্য অতিক্রম করে কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। পরে এই নদী দুইটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যমুনা এবং মেঘনা নদীতে মিলিত হয়। ব্রম্মপুত্রের প্রধান উপনদী গুলি হল ধরলা এবং তিস্তা।
যমুনা : যমুনার উৎপত্তি ব্রহ্মপুত্র নদের একটি শাখা থেকে। ইহা দেওয়ানগঞ্জের কাছে ব্রম্মপুত্রের প্রধান শাখা থেকে যমুনা নামে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয় এবং পরে আবার মিলিত হয় পদ্মার সঙ্গে। ইহা বাংলাদেশের প্রশস্ততম নদী। যমুনার উপনদী গুলি হল ধরলা, তিস্তা, করতোয়া, আত্রাই ইত্যাদি।
জনজীবনে নদীর প্রভাব : বাংলাদেশের জনজীবনে নদ নদীর ভূমিকা অপরিসীম। বাংলাদেশের সভ্যতা সংস্কৃতি এবং অর্থনীতিতে বিশেষ প্রভাব ফেলেছে এখানকার নদীগুলি। নদী তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছে বিশাল বিশাল নগর ও বন্দর, গড়ে উঠেছে নৌপথ। যা সহজ করে দিয়েছে ব্যবসা বাণিজ্য ও আদান প্রদানের কাজ। আর অন্যদিকে এই নদীর জল বাংলার মাটিকে করেছে উর্বর। চাষাবাদের ক্ষেত্রে এখানকার নদীগুলিই যোগান দিচ্ছে অধিকাংশ জল। তাছাড়া শিল্প কারখানা, মৎস্য সম্পদ, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন এবং পরিবহন ব্যবস্থায় নদ-নদী পালন করছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
নদী ভাঙ্গন ও বিপর্যয় : প্রকৃতির দান এই নদ নদী গুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষের মঙ্গল সাধন করে থাকলেও কখনো কখনো এই নদীগুলি মানুষের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বর্ষাকালে নদী অতিরিক্ত প্রবাহের কারণে ভাসিয়ে নিয়ে যায় তীরবর্তী ফসলের মাঠ, ডুবে যায় জনপদ। নদীর ভাঙ্গনের ফলে ধ্বংস হয় ঘরবাড়ি, মানুষ হয়ে ওঠে অসহায়।
উপসংহার : নদ নদী গুলি আমাদের জাতীয় সম্পদ। বাংলার মাটিকে পরিপূর্ণতা দান করেছে এই নদ-নদীগুলি। নদীর জলধারা থেকে আমরা নানাভাবে উপকৃত হয়েছি অনাদিকাল থেকে। তাই আমাদের দায়িত্ব নদী গুলির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ।