মাতা-পিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য ভূমিকা: মাতাপিতার কাছে তাঁর সন্তানের থেকে বড় কোনো অমূল্য বস্তূ নেই। তাই পৃথিবীর সর্ব শ্রেষ্ট সম্পর্ক হয় সন্তান এবং মাতাপিতার মধ্যে। তাঁদের জন্যই আমরা আজ এই পৃথিবীর আলো দেখেছি । একটি শিশু পৃথিবীতে এসে পিতা-মাতার যথাযথ লালন-পালন, আদর, স্নেহ, মমতা ও শিক্ষা-দীক্ষার মাধRead more
মাতা-পিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য
ভূমিকা: মাতাপিতার কাছে তাঁর সন্তানের থেকে বড় কোনো অমূল্য বস্তূ নেই। তাই পৃথিবীর সর্ব শ্রেষ্ট সম্পর্ক হয় সন্তান এবং মাতাপিতার মধ্যে। তাঁদের জন্যই আমরা আজ এই পৃথিবীর আলো দেখেছি । একটি শিশু পৃথিবীতে এসে পিতা-মাতার যথাযথ লালন-পালন, আদর, স্নেহ, মমতা ও শিক্ষা-দীক্ষার মাধ্যমেই বড় হয়ে উঠে। সুতরাং সন্তানের জীবনে পিতামাতার অবদান অসীম। তাই প্রত্যেক সন্তানের উচিত মাতা-পিতার প্রতি দায়িত্বশীল হয়ে তাহাদের কর্তব্য পালন করা।
মাতা-পিতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্য: একজন পিতা-মাতা যেভাবে আদর যত্নে একটি সন্তান কে মানুষ করে তুলে সেভাবে সন্তানের ও দায়িত্ব মা-বাবার যত্ন নেয়া। তাই একটি সন্তানের সর্বপ্রথম দায়িত্ব পিতা-মাতার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা, তাদের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা। বাবা-মা’র সন্তুষ্টি অনুযায়ী সন্তানের পথ চলা উচিত। প্রত্যেক সন্তানের উচিত সব সময় পিতা-মাতার বাধ্য থাকা এবং তাদের আদেশ নিষেধ মেনে চলা। বাবা-মায়ের যখন বার্ধক্য চলে আসে তখন তারা নবজাতক শিশুর মতোই অসহায় হয়ে পড়েন। এক্ষেত্রে পিতা-মাতাকে বোঝা, না ভেবে তাদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করা সন্তানের দায়িত্ব। প্রায় প্রতিটি ধর্ম মা বাবার প্রতি আনুগত্য
হওয়ার শিক্ষা দে। কিন্তু আজকাল তথাকথিত অভিজাত সমাজে নিজের মূল্যবোধ বজায় রাখতে গিয়ে সন্তানের কাছে তার নিজের বৃদ্ধ বাবা-মার স্থান হয় বৃদ্ধাশ্রম। আমাদের শিক্ষিত সচেতন সমাজের উচিত এটা রোধ করা একান্ত কর্তব্য।
শ্রদ্ধাশীল মহান ব্যক্তিদের দৃষ্টান্ত: ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় পৃথিবীতে মরেও যারা অমর এবং চিরস্মরণীয় হয়ে মানুষের হৃদয়ে আজও বেঁচে আছেন। তাঁরা সকলেই মাতৃ ও পিতৃভক্তির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নাম ইতিহাসে মাতৃভক্তদের তালিকায় চিরকালই স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। রাম পিতৃসত্ব পালনের উদ্দেশ্যে চৌদ্দবছর বনবাস কাটিয়েছিলেন। জর্জ ওয়াশিংটন ও আলেকজান্ডার প্রমুখ মহান ব্যক্তিগণ মাতা-পিতার প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে ইতিহাসে যুগ-যুগান্তর ধরে চির স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন এবং থাকবেন।
প্রধান কয়েকটি দায়িত্ব: প্রধান দায়িত্বের মধ্যে মা বাবার প্রত্যাশা পূর্ণ করা হচ্ছে অন্যতম। প্রত্যেক মা-বাবাই তার সন্তানদের বিভিন্ন আশা ভরসায় লালন পালন করে। তারা চায় তাদের সন্তান জীবনে সাফল্য অর্জন করুক এবং সুখী জীবন যাপন করুক। এর জন্যই মা-বাবা প্রত্যেক সন্তানের পিছনে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। এইজন্য সন্তানের দায়িত্ব তার মা-বাবার আশা-প্রত্যাশা পূর্ণ করে দায়িত্ব পালন করা।
দ্বিতীয়তঃ মা-বাবার প্রতি সন্তুষ্ট থাকা। সর্ব অবস্থায় মা-বাবার প্রতি অনুগত থাকা। তাদের নেয়া বিচারের উপর আস্থা রাখা।তাদের প্রতি বিনয়ী আচরণ করা আমাদের একান্ত কর্তব্য।
তৃতীয়তঃ পিতামাতার আদর্শ ও সম্মান বজায় রাখা। প্রত্যেক সন্তানেরই উচিত তাদের পিতামাতার আদর্শ ও ন্যায়নীতি অনুসরণ করে চলা। সমাজে তাদের মান সম্মান ক্ষুন্ন হয় এমন কোনো কাজ না করে যে কাজে মা বাবার সম্মান বৃদ্ধি পায় সেই কাজ করা।
উপসংহার: মাতা-পিতার সন্তানের পরম বন্ধু সন্তানের জন্য মা বাবার মতো কেহই আপন নহে। সুতরাং ইহকালীন এবং পরকালীন মুক্তির পথ সুগম করতে হলে পিতামাতার প্রতি কর্তব্যগুলো যথাযত পালন করা সন্তানের একান্ত কর্তব্য।
See less
Hridoy
শীতের সকাল বা একটি শীতের সকালের বর্ণনা ভূমিকা : শীতকাল বলতে পৌষ ও মাঘ মাসকে বুঝানো হলেও প্রকৃতপক্ষে শীতের আগমন শুরু হয় অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম দিকে। পৌষের শেষের দিকে শীতের প্রকোপ তীব্র হয়ে উঠলেও ফাল্গুন মাস পর্যন্ত শীতের আমেজ থাকে। সাধারণত এ সময় ফসল কাটা হলে চারিদিকে এক উৎসব মুখর আবহাওয়া লক্ষ্য করাRead more
শীতের সকাল বা একটি শীতের সকালের বর্ণনা
ভূমিকা : শীতকাল বলতে পৌষ ও মাঘ মাসকে বুঝানো হলেও প্রকৃতপক্ষে শীতের আগমন শুরু হয় অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম দিকে। পৌষের শেষের দিকে শীতের প্রকোপ তীব্র হয়ে উঠলেও ফাল্গুন মাস পর্যন্ত শীতের আমেজ থাকে। সাধারণত এ সময় ফসল কাটা হলে চারিদিকে এক উৎসব মুখর আবহাওয়া লক্ষ্য করা যায় । শীতের সময় কাবু হয়ে পড়লেও শীতের সকালে রয়েছে এক বিশেষ আমেজ । এজন্যেই শীতকালের সকলগুলি সবার কাছে পছন্দনীয় ।
শীতের সকালের বর্ণনা : শীতের সকালের কল্পনা ঘন কুয়াশা আর জড়ো সড়ো করা আবহাওয়া ছাড়া অসম্ভব । কুয়াশা ঘন চাদরের ফাক দিয়ে উকি মেরে ঘােষণা করে সে তার হিম-শীতল আগমনী বার্তা। প্রকৃতির সর্বত্র দেখা যায় এ ধরনের আঁকালাে শুষ্কতার জমজমাট রেশ। প্রকৃতি তার রূপ-রস-বর্ণ ঝেড়ে ফেলে দিয়ে সন্ন্যাসব্রত পালনে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। পশুপাখি ও জীবজন্তুর জীবন হয়ে ওঠে পাণ্ডুর ও বিবর্ণ। এর মাঝে নীরবে পদচারণা করে শুভ্রসুন্দর আর নির্মল পবিত্রতা। শীতের রাত অত্যন্ত দীর্ঘ, যেন শেষ হতে চায় না। তাই কাক ডাকা ভাের হতে সবাই অপেক্ষা করে একটু মিষ্টি মধুর সূর্যালােকের পরশের জন্য। কিন্তু কুয়াশার ঘন প্রাচীর ভেদ করে ওকে ভীষণ বেগ পেতে হয় একটু একটু আলােক ছড়ানাের জন্যে।
গ্রাম্য শীতের সকাল: গ্রামে শীতের সকাল গুলি হয় অনন্য। প্রকৃতি যেন তার সমস্ত সৌন্দর্য ঢেলে দেয় চারিপাশের আবহাওয়ায়। ভুলগুলোসকালগুলো হয় ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন, মাঠের অপরপ্রান্তে তাকালে বিস্তীর্ণ সাদা রাশি ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না। কিন্তু এই ঠান্ডা উপেক্ষা করেও কৃষক তার মাঠের দিকে এগিয়ে যায়। গ্রামের মানুষেরা ঠান্ডার কবল থেকে রক্ষা পেতে আগুন পোহায়। তৈরি হয় নানা ধরনের খাবার বিশেষ করে খেজুরের রস দিয়ে তৈরি হয় অনেক সুমিষ্ট পিঠা পুলি।গ্রামে মানুষ সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে রোদের আলোয় দাঁড়িয়ে উষ্ণতার আমেজ নেয়।
শহরাঞ্চলে শীতের সকাল: গ্রাম থেকে শহরাঞ্চলের চিত্র হয় ভিন্ন। তুলনামূলকভাবে শহরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ কম হয়। গ্রামের মতো মানুষ শহরাঞ্চলে সূর্যের আলোয় উষ্ণতার আমেজ নেয়ার সুযোগ পায় না। অনেককেই ঘরের মধ্যে হিটার বা অন্য যন্ত্র চালিয়েই শীত নিবারণের চেষ্টা করে। শীতের সকালে শহরাঞ্চলে বিভিন্ন তাজা
শাকসবজি দিয়ে বাজার সাজানো হয় এবং শহুরে মানুষেরা ছুটে চলে বাজারের উদ্দেশ্যে।
উপসংহার: কুয়াশাঘেরা এক মধুর দৃশ্য নিয়ে উপস্থিত হয় শীতের সকাল। সকালবেলা সূর্য তার উষ্ণ আলোয়, শিশির ভেজা পাতায়, নানা রকম সুস্বাদু খাবার সব মিলিয়ে আমাদেরকে দিয়ে যায় এক অনন্য আমেজ। তাই শীতের সকালের আনন্দ অন্যান্য ঋতুর সকালের তুলনায় ভিন্ন ও মাধুর্য।
See less