সারাংশ – গুপ্তধন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Guptodhon Rabindranath Tagore Summary
Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.
Please briefly explain why you feel this question should be reported.
Please briefly explain why you feel this answer should be reported.
Please briefly explain why you feel this user should be reported.
গুপ্তধন
‘গুপ্তধন’ কথাটির অর্থ লুকোনাে সম্পদ, যে সম্পদ মানুষের দৃষ্টির বাইরে থাকে, তাকেই ‘গুপ্তধন’ বলে।
রবীন্দ্রনাথ দেখিয়েছেন যে এই গুপ্তধন কখনই মানুষের কাছে মঙ্গলকর নয়, এর মধ্যেই লুক্কায়িত থাকে মৃত্যুর অমােঘ হাতছানি। রবীন্দ্রনাথ এভাবে ধন প্রাপ্তিতে শ্রদ্ধাশীল ছিলেন না। যে ধন থাকে মনুষ্যচক্ষুর অন্তরালে সে ধনকে তিনি বলেছেন ‘মরা ধন’। এই ধনের প্রতি আকর্ষণ তিনি সহ্য করতে পারেন নি। এর প্রতি আকর্ষণ কীভাবে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনকে বিপর্যস্ত করে তারই ছবি ‘গুপ্তধন’ গল্পে লেখক অঙ্কন করার চেষ্টা করেছেন।
গুপ্তধন গল্পটির শুরুতেই একটি চমক আর সেই চমকের মাধ্যমেই মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিকতার উন্মােচন একটা পরিচয়কে প্রতিষ্ঠা করেছে। মৃত্যুঞ্জয় নিষ্ঠাবান, সদাচারী ও নিতান্ত সাধারণ কিন্তু লােভ লালসার উর্ধ্বে নয়। বিত্তের স্বাভাবিক লােভের কারণে অনন্যমনা অধ্যবসায়ী, ফলে গুপ্তধনের আবিষ্কারে মনপ্রাণ সমর্পণ করেছে। সেই আবিষ্কারের মূল সূত্রটিই যখন রহস্যজনকভাবে উধাও হয়, লেখক সেই মানসিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জীবন্ত করে তুলেছেন এবং একই সঙ্গে পাঠকমনও মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে সঙ্গে রহস্য উদঘাটনে সঙ্গী হয়েছে। নামকরণে থাকে বিষয়বস্তুর ইঙ্গিত, গল্প শুরু হয় প্রথম পঙক্তি থেকেই। গুপ্তধন গল্পও এর ব্যতিক্রম নয়।
আসলে এই গল্পের নামকরণের মধ্য দিয়ে মানুষের অন্তরের সুপ্ত এক সম্পদের কথাই বলা হয়েছে, ইন্দ্রিয়ের তাড়নায় ও বাসনায় মােহজালে আবদ্ধ হয়ে যা ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে। এক্ষেত্রে শংকর ও মৃত্যুঞ্জয়ের উদ্দেশ্য এক – গুপ্তধনের সন্ধান। অবশ্য একসময়ে তার সন্ধান পেয়েও তারা তা গ্রহণ করেনি। সন্ন্যাসী শংকর একসময় স্বরূপানন্দ স্বামীর মাধ্যমে মৃত্যুঞ্জয় সম্পদের লােভে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করল। আবার এই শংকরই মৃত্যুঞ্জয়ের গুপ্তধনের মােহমুক্তি ঘটালেন, আলাে বাতাসে ছড়িয়ে থাকা প্রকৃত সম্পদকে চেনালেন।
রবীন্দ্রনাথ একসময় বলেছিলেন, “সুখের উপায় বাহিরে নাই, তাহা অন্তরেই আছে, তাহা উপকরণজালের বিপুল জটিলতার মধ্যে নাই, তাহা সংযত চিত্তের নির্মল সরলতার মধ্যে জটিলতার মধ্যে নাই, তাহা সংযত চিত্তের নির্মল সরলতার মধ্যে বিরাজমান।” এই দৃষ্টিভঙ্গী থেকেই বিশ্বব্যপী অক্ষয় সম্পদের সন্ধান পেলেন মৃত্যুঞ্জয়, ত্যাগ করলেন গুপ্তধনের বিপুল সম্পদ, যা এতদিন অন্তদৃষ্টির বন্ধনে আবদ্ধ ছিল আজ তা আলাে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ল – শংকর আর মৃত্যুঞ্জয়ের প্রকৃত গুপ্তধন অর্থাৎ মনের ঐশ্বর্যের সন্ধান মিলল। আর এই তাৎপর্যই গুপ্তধন গল্পটি ব্যঞ্জনা বা ইঙ্গিতবহ হয়ে উঠেছে