সাম্যবাদী কবিতার বিষয়বস্তু ও মূলভাব | Samyabadi Poem Summary in Bengali
Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.
Please briefly explain why you feel this question should be reported.
Please briefly explain why you feel this answer should be reported.
Please briefly explain why you feel this user should be reported.
সাম্যবাদী কবিতার বিষয়বস্তু ও মূলভাব:
এই কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক মানবসমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। কবির বিশ্বাস মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে পরিচিত হয়ে ওঠা সবচেয়ে সম্মানের। নজরুলের এ আদর্শ আজও প্রতিটি মানুষের জীবনপথের প্রেরণা। কিন্তু মানুষ সম্প্রদায়কে ব্যবহার করে রাজনীতি করে, দুর্বলকে শােষণ করে, এখনও একের বিরুদ্ধে অন্যকে উস্কে দেয়। এক জনের প্রতি অন্য জনকে বিমুখ করার ষড়যন্ত্র করে।
নজরুল এ কবিতায় বলেছেন- “মানুষেরই মাঝে স্বৰ্গনরক মানুষেতে সুরাসুর।” নজরুল জোর দেন অন্তর ধর্মের ওপর। ধর্মগ্রন্থ পড়ে অর্জিত জ্ঞান যথার্থভাবে উপলব্ধি করতে প্রয়ােজন মানবিকতাবােধ। কবি বলেছেন মানুষের হৃদয়ের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কোন মন্দির কাবা নেই। কবি সকল মত, সকল পথের উপরে স্থান দিয়েছেন মানবিকতা। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলিম সকলকে একই মায়ের সন্তানের মতাে ভেবেছেন। নজরুল মানবিক মেলবন্ধনের জন্য সংগীত রচনা করেছেন। বাণী ও সুরের মাধ্যমে মানবতার সুবাস ছড়ানাের চেষ্টা করেছেন।
নজরুল ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় মন্দির, মসজিদ, গির্জা বা অন্যান্য তীর্থক্ষেত্রের মতাে পবিত্র মনে করেছেন মানুষের হৃদয়কে। এ হৃদয় যদি পবিত্র থাকে, হৃদয়ে যদি কারাে প্রতি হিংসা, বিদ্বেষ না থাকে, সকলের প্রতি সমদর্শিতা থাকে তাহলে পৃথিবী হবে সুখের আবাসস্থল। সাম্যবাদ মানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ বিৰ্বিশেষে রাষ্ট্রের সকল মানুষের সমান অধিকার থাকা উচিত এ মতবাদ। কাজী নজরুল ইসলাম তার সাম্যবাদী’ কবিতায় সব ধরনের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সাম্যবাদের বাণী প্রচার করেছেন।
শব্দার্থ ও টীকাঃ
আরব-দুলাল– আরব সন্তান, এখানে হযরত মুহম্মদ (স) কে বােঝানাে হয়েছে। ইহুদি- প্রাচীন হিব্রু বা জু-জাতি ও ধর্মসম্প্রদায়ের মানুষ।
কনফুসিয়াস– চিন দেশের একজন প্রখ্যাত দার্শনিক। এখানে তাঁর অনুসারীদের বােঝানাে হয়েছে।
কোরানের সাম্য-গান– পবিত্র কোরানের সাম্যের বাণী।
কাশী, মথুরা, বৃন্দাবন, গয়া– হিন্দুদের পবিত্র ধর্মীয় কয়েকটি স্থান।
গারাে– গারাে পর্বত অঞ্চলের অধিবাসী ক্ষুদ্র নৃ-গােষ্ঠীবিশেষ।
চার্বাক– একজন বস্তুবাদী দার্শনিক ও মুনি। তিনি বেদ, আত্মা, পরলােক ইত্যাদিতে আস্থাশীল ছিলেন।
জেরুজালেম বায়তুল-মােকাদ্দস, ফিলিস্তিনে অবস্থিত এই স্থানটি মুসলমান, খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের নিকট সমভাবে পুণ্যস্থান।
জেন্দাবেস্তা – পারস্যের অগ্নি উপাসকদের ধর্মগ্রন্থ আবেস্তা এবং তার ভাষা জেন্দা।
জৈন– জিন বা মহাবীর প্রতিষ্ঠিত ধর্মমতাবলম্বী সম্প্রদায়।
দেউল– দেবালয়, মন্দির।
নীলাচল – জগন্নাথক্ষেত্র, নীলবর্ণযুক্ত পাহাড়। যে বিশাল পাহাড়ের পরিসীমা নির্ধারণ করা যায় না।
পার্সি– পারস্যদেশের বা ইরানের নাগরিক।
বাঁশির কিশাের গাহিলেন মহা-গীতাহিন্দুধর্মের অবতার শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত বাণীই শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা।
মসজিদ এই, মন্দির এই, গির্জা এই হৃদয়– মানুষের হৃদয়ই মসজিদ, মন্দিও, গির্জা বা অন্যান্য তীর্থক্ষেত্রের মতাে পবিত্র।
যুগাবতার– বিভিন্ন যুগে অবতীর্ণ মহাপুরুষ।
শাক্যমুনি – শাকবংশে জন্ম যার, বুদ্ধদেব।
সাম্য– সমদর্শিতা, সমতা।
সাম্যবাদ– জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে রাষ্ট্রের সকল মানুষের সমান অধিকার থাকা উচিত এই মতবাদ।
সাঁওতাল, ভীল– ভারতীয় উপমহাদেশের আদিম নৃগােষ্ঠীবিশেষ।
হিয়া– হৃদয়।