বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ছিলেন একজন প্রকৃতি প্রেমিক। তাঁর রচনায়, কাব্যে বার বার ফুটে উঠেছে প্রকৃতির সুন্দর্য আর মাদুর্য।বর্ষাকাল বা বৃষ্টির দিনের পরিবেশ সবাইকে ছুঁয়ে যায় দিয়ে যায় এক বিশেষ আবেদন। তাই রবীন্দ্রনাথ তাঁর রচনাবলীতে এই বিষয়টিকে বিশেষ ভাবে একটি স্থান দিয়েছেন।তিনি রচনা করেছেন অনেক গান ও কবিতা যাহা আজও প্রতিটি প্রকৃতি প্রেমী হৃদয়কে নাড়া দেয়। তার মধ্যে থেকে কয়েকটি গান এখানে দেয়া হলো।
৩য় গান ও টি খুব বেশি চর্চিত একটি গান এটি ও ‘প্রকৃতি’ কব্যগ্রন্থ নেয়া।
পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে
পাগল আমার মন জেগে ওঠে॥
চেনাশোনার কোন্ বাইরে যেখানে পথ নাই নাই রে
সেখানে অকারণে যায় ছুটে॥
ঘরের মুখে আর কি রে কোনো দিন সে যাবে ফিরে।
যাবে না, যাবে না–
দেয়াল যত সব গেল টুটে॥
বৃষ্টি-নেশা-ভরা সন্ধ্যাবেলা কোন্ বলরামের আমি চেলা,
আমার স্বপ্ন ঘিরে নাচে মাতাল জুটে–
যত মাতাল জুটে।
যা না চাইবার তাই আজি চাই গো,
যা না পাইবার তাই কোথা পাই গো।
পাব না, পাব না,
মরি অসম্ভবের পায়ে মাথা কুটে॥
৪ য় গান টি তাঁর প্রসিদ্ধ কাব্যগ্রন্থ ‘সোনার তরী’ থেকে নেয়া ।
গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা।কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা।
রাশি রাশি ভারা ভারা
ধান কাটা হল সারা,
ভরা নদী ক্ষুরধারা
খরপরশা।
কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা।
একখানি ছোটো খেত, আমি একেলা,
চারি দিকে বাঁকা জল করিছে খেলা।
পরপারে দেখি আঁকা
তরুছায়ামসীমাখা
গ্রামখানি মেঘে ঢাকা
প্রভাতবেলা–
এ পারেতে ছোটো খেত, আমি একেলা।
গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে,
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ভরা-পালে চলে যায়,
কোনো দিকে নাহি চায়,
ঢেউগুলি নিরুপায়
ভাঙে দু-ধারে–
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ওগো, তুমি কোথা যাও কোন্ বিদেশে,
বারেক ভিড়াও তরী কূলেতে এসে।
যেয়ো যেথা যেতে চাও,
যারে খুশি তারে দাও,
শুধু তুমি নিয়ে যাও
ক্ষণিক হেসে
আমার সোনার ধান কূলেতে এসে।
যত চাও তত লও তরণী-‘পরে।
আর আছে?– আর নাই, দিয়েছি ভরে।
এতকাল নদীকূলে
যাহা লয়ে ছিনু ভুলে
সকলি দিলাম তুলে
থরে বিথরে–
এখন আমারে লহ করুণা করে।
ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই– ছোটো সে তরী
আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি।
শ্রাবণগগন ঘিরে
ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে,
শূন্য নদীর তীরে
রহিনু পড়ি–
যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী।
Hridoy
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ছিলেন একজন প্রকৃতি প্রেমিক। তাঁর রচনায়, কাব্যে বার বার ফুটে উঠেছে প্রকৃতির সুন্দর্য আর মাদুর্য।বর্ষাকাল বা বৃষ্টির দিনের পরিবেশ সবাইকে ছুঁয়ে যায় দিয়ে যায় এক বিশেষ আবেদন। তাই রবীন্দ্রনাথ তাঁর রচনাবলীতে এই বিষয়টিকে বিশেষ ভাবে একটি স্থান দিয়েছেন।তিনি রচনা করেছেন অনেক গান ও কবিতা যাহা আজও প্রতিটি প্রকৃতি প্রেমী হৃদয়কে নাড়া দেয়। তার মধ্যে থেকে কয়েকটি গান এখানে দেয়া হলো।
১ম টি তাঁর ‘প্রকৃতি’ কব্যগ্রন্থ নেয়া।
আজ বারি ঝরে ঝরঝর ভরা বাদরে,
আকাশ-ভাঙা আকুল ধারা কোথাও না ধরে॥
শালের বনে থেকে থেকে ঝড় দোলা দেয় হেঁকে হেঁকে,
জল ছুটে যায় এঁকে বেঁকে মাঠের ‘পরে।
আজ মেঘের জটা উড়িয়ে দিয়ে নৃত্য কে করে॥
ওরে বৃষ্টিতে মোর ছুটেছে মন, লুটেছে এই ঝড়ে–
বুক ছাপিয়ে তরঙ্গ মোর কাহার পায়ে পড়ে।
অন্তরে আজ কী কলরোল, দ্বারে দ্বারে ভাঙল আগল–
হৃদয়-মাঝে জাগল পাগল আজি ভাদরে।
আজ এমন ক’রে কে মেতেছে বাহিরে ঘরে॥
২য় টি খুব বেশি বিখ্যাত একটি গান এটি ও ‘প্রকৃতি’ কব্যগ্রন্থ নেয়া।
আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদরদিনে
জানি নে, জানি নে কিছুতে কেন যে মন লাগে না ॥
এই চঞ্চল সজল পবন-বেগে উদ্ভ্রান্ত মেঘে মন চায়
মন চায় ওই বলাকার পথখানি নিতে চিনে॥
মেঘমল্লার সারা দিনমান।
বাজে ঝরনার গান।
মন হারাবার আজি বেলা, পথ ভুলিবার খেলা– মন চায়
মন চায় হৃদয় জড়াতে কার চিরঋণে॥
৩য় গান ও টি খুব বেশি চর্চিত একটি গান এটি ও ‘প্রকৃতি’ কব্যগ্রন্থ নেয়া।
পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে
পাগল আমার মন জেগে ওঠে॥
চেনাশোনার কোন্ বাইরে যেখানে পথ নাই নাই রে
সেখানে অকারণে যায় ছুটে॥
ঘরের মুখে আর কি রে কোনো দিন সে যাবে ফিরে।
যাবে না, যাবে না–
দেয়াল যত সব গেল টুটে॥
বৃষ্টি-নেশা-ভরা সন্ধ্যাবেলা কোন্ বলরামের আমি চেলা,
আমার স্বপ্ন ঘিরে নাচে মাতাল জুটে–
যত মাতাল জুটে।
যা না চাইবার তাই আজি চাই গো,
যা না পাইবার তাই কোথা পাই গো।
পাব না, পাব না,
মরি অসম্ভবের পায়ে মাথা কুটে॥
৪ য় গান টি তাঁর প্রসিদ্ধ কাব্যগ্রন্থ ‘সোনার তরী’ থেকে নেয়া ।
গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা।কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা।
রাশি রাশি ভারা ভারা
ধান কাটা হল সারা,
ভরা নদী ক্ষুরধারা
খরপরশা।
কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা।
একখানি ছোটো খেত, আমি একেলা,
চারি দিকে বাঁকা জল করিছে খেলা।
পরপারে দেখি আঁকা
তরুছায়ামসীমাখা
গ্রামখানি মেঘে ঢাকা
প্রভাতবেলা–
এ পারেতে ছোটো খেত, আমি একেলা।
গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে,
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ভরা-পালে চলে যায়,
কোনো দিকে নাহি চায়,
ঢেউগুলি নিরুপায়
ভাঙে দু-ধারে–
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ওগো, তুমি কোথা যাও কোন্ বিদেশে,
বারেক ভিড়াও তরী কূলেতে এসে।
যেয়ো যেথা যেতে চাও,
যারে খুশি তারে দাও,
শুধু তুমি নিয়ে যাও
ক্ষণিক হেসে
আমার সোনার ধান কূলেতে এসে।
যত চাও তত লও তরণী-‘পরে।
আর আছে?– আর নাই, দিয়েছি ভরে।
এতকাল নদীকূলে
যাহা লয়ে ছিনু ভুলে
সকলি দিলাম তুলে
থরে বিথরে–
এখন আমারে লহ করুণা করে।
ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই– ছোটো সে তরী
আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি।
শ্রাবণগগন ঘিরে
ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে,
শূন্য নদীর তীরে
রহিনু পড়ি–
যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী।
৫ম টি ও তাঁর ‘প্রকৃতি’ কব্যগ্রন্থ নেয়া।
মন মোর মেঘের সঙ্গী,
উড়ে চলে দিগ্দিগন্তের পানে
নিঃসীম শূন্যে শ্রাবণবর্ষণসঙ্গীতে
রিমিঝিম রিমিঝিম রিমিঝিম॥
মন মোর হংসবলাকার পাখায় যায় উড়ে
ক্বচিৎ ক্বচিৎ চকিত তড়িত-আলোকে।
ঝঞ্জনমঞ্জীর বাজায় ঝঞ্ঝা রুদ্র আনন্দে।
কলো-কলো কলমন্দ্রে নির্ঝরিণী
ডাক দেয় প্রলয়-আহ্বানে॥
বায়ু বহে পূর্বসমুদ্র হতে
উচ্ছল ছলো-ছলো তটিনীতরঙ্গে।
মন মোর ধায় তারি মত্ত প্রবাহে
তাল-তমাল-অরণ্যে
ক্ষুব্ধ শাখার আন্দোলনে॥